জানুয়ারি ১, ২০২৩
নিউজ-মিডিয়ার “পজিটিভ নিউজ”
বাংলাদেশে নিউজ-মিডিয়াতে, মানে পত্রিকা-টিভি-ওয়েবপোর্টালে “পজিটিভ নিউজ” পাবলিশ করার ট্রেন্ড অফিসিয়ালি শুরু হয় মেবি ২০১৪-২০১৫ সালের দিকে। এইরকম একটা ভাইব তোলা হয় যে, দুনিয়াতে কি খালি সব খারাপ জিনিসই ঘটে নাকি! দেশের সব খবরই কি খারাপ! গর্ভমেন্ট কি খালি সব খারাপ কাজ করে! ভালো কিছুই কি নাই!
তখন ভালো-ভালো কিছু নিউজ করার ট্রেন্ড চালু হইলো 🙂 এখন তো মোটামুটি ৮০% – ৯০% নিউজ-ই “উন্নয়ন”-এর। (“ডিজিএফআই নিউজ” কি বলা যাইতে পারে টার্ম হিসাবে?) যেইটা একটা অল-আউট প্রপাগান্ডা হিসাবে শুরু হইছে ২০১৮ সালের পরে।
তো, এলান বাদিউ’র একটা কথা ছিল এইরকম যে, সমাজে যখন জাস্টিস থাকে, ভালো-বিচার হয়, তখন সেইটা নিয়া হাউকাউ করার কোন ঘটনা কিন্তু ঘটে না, বরং যখন কোথাও ছোট-খাট একটা অন্যায় ঘটে, ভুল-বিচার হয় তখন সেইটা নিয়া মানুশের কথা বলা লাগে, তা নাইলে অ-বিচারের জায়গাটারে আইডেন্টিফাই করা যায় না, তার কোন সলিউশন করা যায় না।
একইরকমভাবে নিউজ-মিডিয়ার কাজ ছিল (এখনো কিছু জায়গাতে আছে) “নেগেটিভ নিউজ” প্রচার করা না, বরং সমাজের অই অ-বিচারের জায়গাগুলারে তুইলা ধরা, শাউট-আউট করা। কারণ “উন্নয়ন” যদি ঘটেই, বিচার যদি থাকেই সেইটারে আলাদা কইরা বলার দরকার পড়ে না। সেইটা আপনি-আমি আমাদের ডেইলি লাইফের ভিতর দিয়া কম-বেশি টের পাওয়ার কথাই। আলাদা কইরা বলা যাবে-না না, অইটা একটা প্রপাগান্ডা-মেশিনের বাইরের কোন জিনিস আর হয়া উঠতে পারে না।
তো, নিউজ-মিডিয়া ভর্তি “পজিটিভ নিউজ” (পড়েন, সরকারি-প্রপাগান্ডা) দেখতে দেখতে মানুশ আসলে টায়ার্ড। [যেইরকম দেখবেন, ফেইসবুক ভর্তি ‘সুখের ছবি’ আমাদেরকে খুব বেশি আনন্দ দেয় না, এই কারণে না যে, মানুশ জেলাস! বরং আমরা জানি, এইগুলা পার্শিয়াল জিনিসই, পুরা ঘটনা না, আমাদের লাইফের।…]
এখন মানুশ “নেগেটিভ নিউজ” চায় না, কিন্তু এই “পজিটিভ নিউজগুলার” একটা উদ্দেশ্য যে হইতেছে, অন্যায়-অবিচারের ঘটনাগুলারে হাইড করা, সেইটা আমরা টের পাই।
যেই কারণে “পজিটিভ নিউজ” খালি ভুয়া জিনিসই না, ধীরে ধীরে “অশ্লীল” একটা আইটেমে পরিণত হইছে এখন।
…
সুখে শান্তিতে থাকা
আমি ভাবতেছিলাম, একজন মিনিমাম সেন্সিবল মানুশের জন্য বাংলাদেশে এই সময়ে বাঁইচা থাকার সবচে বড় শাস্তি কোনটা?
আমার কাছে মনে হইছে, দেশ-সমাজ-রাষ্ট্র নিয়া চোখ বুইজা থাকা, এট এনি কস্ট “পলিটিক্স” না করা, এবং চারপাশের অন্যায়-অত্যাচার-জুলুম-নিযার্তন নিয়া কোন টু-শব্দটা না কইরা একজন (ইউরোপিয়ান, আসলে কলোনিয়াল) “ইন্ডিভিজুয়াল” হয়া থাকা! অ্যাজ ইফ কোনকিছুই ঘটতেছে না! যা কিছুই ঘটতেছে, তা নিয়া আমার কিছু যায় আসে না!
এইরকম একটা পজিশন নিয়া কতো মানুশ যে তাদের ডেইলি লাইফ পার কইরা দিতেছে! “সুখে শান্তিতে” থাকতেছে! অথচ আমি ভাবতেছি যে, এর চে টেরিবল জিনিস আর কি হইতে পারে!
জানুয়ারি ৪, ২০২৩
বাকশালি-মিডিয়ার কনটেন্ট নিয়া
বাকশালি-মিডিয়াতে দুই ধরণের “দেশের” নিউজ পাইবেন – এক, “দেশ এগিয়ে যাচ্ছে” টাইপের ফেইক “পজিটিভ” নিউজ; সেকেন্ড হইতেছে আজাইরা “সেলিব্রেটি” নিউজ!
পয়লা টাইপের জিনিসটা খুবই সিরিয়াস! এই ডেটা, সেই ডেটা, মুখে ফেনা তুইলা ফেলার মতো ব্যাপার-স্যাপার! আর বলতেছেও বিরাট-বিরাট ডিগ্রিওলা লোকজনেরা। কিন্তু মোটামুটি সবগুলাই ভুয়া, মানে মেনুফেকচারড ডেটা। যার লগে রিয়ালিটির কোন মিল নাই। মানে, দেশে “উন্নয়ন” হইলে ডেটা দেইখা বুঝার কোন দরকার তো নাই, বাজারে গেলে, রাস্তা-ঘাটে চলাফেরা করলে, দুই-চাইর-দশজন মানুশের লগে কথা কইলেই টের পাইবেন, কি মাইরের “উন্নয়ন” যে হইতেছে!
অইগুলা কিছু মিডিয়া-জম্বি লোকজন ছাড়া কেউ বিলিভ করে না। মানে, বুঝে, মুখস্ত জিনিস বলতেছে! ভাষণ দিতে উঠলে কিছু কথা তো বলা লাগে, এইরকম। এইগুলা ভ্যালুলেস, মিনিংলেস নিউজেই পরিণত হইছে।
সেকেন্ড হইতেছে, ছোট ছোট জিনিস নিয়া বড় বড় ইমোশনাল কাহিনি-করা! ফেইসবুক-নিউজ বলতে পারেন অনেকটা 🙂 এইগুলা কেন করে? কিছু জানে না বইলা, বা বুঝে না বইলা? তা তো না! উনারা নিজেরাও জানেন, এইগুলা ‘হাস্যকর’! কিন্তু আপনারে তো নিউজ ছাপানো লাগবে! একটা কিছু দিয়া পিপলরে অকুপাই রাখতে হবে!
তো, এইগুলা নিউজ না, বরং যেহেতু যেইসব জিনিস নিয়া কথা-বলা দরকার, সেইগুলা নিয়া “কথা বলা যাবে না” (আসলে কথা বলবো না আমরা), এই কারণে ভ্যাকুয়ামটারে ফিলাপ করা। এইগুলা আর “সেলিব্রেটি নিউজ” না, বরং এক ধরণের “অশ্লীলতা”; যেইটা দিয়া মনে হইতে পারে যে, পিপলরে অকুপাই রাখাটা পসিবল! প্রিন্সেসের ড্যান্স দিয়া যাত্রা-শিল্পরে বাঁচায়া রাখার চেষ্টার মতন!
সিরিয়াস-জিনিস হয়া উঠছে ফানি, আর ফানি জিনিসগুলা হয়া উঠছে ভালগার।
ইন অ্যা নাটশেল, বাকশালি-মিডিয়া হইতেছে ওয়ান অফ দ্য মোস্ট ক্রুয়েলেস্ট শো অন আর্থ!
জানুয়ারি ৫, ২০২৩
বাংলাদেশের_রাজনীতির_অআকখ ২
…
৩.
বাঙালি জাতীয়তাবাদ কি?
বাঙালি জাতীয়তাবাদ হইতেছে উনিশ শতকের কলকাতা-বেইজড একটা পলিটিকাল প্রপাগান্ডা, যেইটা মেইনলি ১৯০৫ সালে “বঙ্গভঙ্গ” আন্দোলনের সময় কয়েন করা হইছিল। বাংলাদেশের “দেশপ্রেমের” গান অই সময়টাতেই লেখা শুরু হয়, ইনক্লুডিং আমাদের জাতীয় সংগীত। (যদিও এই “বঙ্গভঙ্গ”-এর পলিটিকাল চালের ভিতর দিয়া ইংরেজরা অই বছরেই কলোনিয়াল ইন্ডিয়ার রাজধানী কলকাতা থিকা দিল্লিতে সরায়া নিতে পারছিল, কোন রেজিসটেন্স ছাড়া।) এর আগে কলকাতার শিক্ষিত বাঙালিদের লেখা-পত্রে ইন্ডিয়ান হিস্ট্রির কথা যেইভাবে পাইবেন ‘বাঙালি’ জিনিসটা এতোটা পাইবেন না সেন্টার-পয়েন্ট হিসাবে।
জেনারেলি, এই টার্ম দিয়া বাংলা-ভাষায় যারা কথা বলেন, অইরকম একটা ইউনিটিরে ইঙ্গিত করা হয়।
এখন এক ভাষাতে তো নানান দেশের লোকই কথা বলে, যেমন ইংলিশ, স্পেনিশ, পর্তুগিজ, তামিল, পাঞ্জাবি। আবার এক দেশের সব মানুশও একটা ভাষাতেই কথা বলে না; যেমন বাংলাদেশের সবাই বাংলায় কথা বলে না – উর্দু, চাকমা, মনিপুরি, আরো অনেক ভাষায় কথা মানুশও আছেন। ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এই ডাইবারসিটির দিকে একটা হুমকি। যেইটা এমার্জ করে ১৯৭১ সালের পরে। যদিও দাবি করা হয় ষাইটের দশকে (১৯৬১ – ১৯৭০) এইটা রিভাইব হইছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিতর দিয়া। কিন্তু বাংলাদেশের আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার মেইন স্পিরিট কখনোই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ ছিল না। পরে এইটারে ‘পুনরাবিষ্কার’ করছেন কলকাতা-ফেরত বাকশালি বুদ্দিজীবীরা। ১৯৮০-৯০ এর দিকেও “হাজার বছরের সংস্কৃতি” নামে কিছু জিনিস ইনক্লুড করার কায়-কারবার চালু আছে। কিন্তু এখনকার বাংলাদেশে এইটা মোস্টলি একটা প্রো-ইন্ডিয়ান একটা প্রপাগান্ডা টুল, পলিটিকালি এবং কালচারালি।
…
৪.
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ কি?
‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ মোকাবেলায় এই টার্মটা কয়েন করা হয় সত্তরের দশকের শেষের দিকে (১৯৭৬ – ১৯৭৯), স্পেশালি এই ধারনার বেসিসে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করার পরে। কিন্তু এর আইডিওলজকাল বেইজও স্পষ্ট না তেমন। রাষ্ট্র এক ধরণের ন্যাশনালিজমের জন্ম দেয়, কিন্তু একটা রাষ্ট্রের বেইজ ন্যাশনালিজম-ই হইতে হবে – এই ফ্যালাসি ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের’ মধ্যেও ইনক্লুডেড। তবে জুলুমের টুল হিসাবে লেস হার্মফুল।
ন্যাশনালিজম ইন ইটস কোর কলোনিয়ালিজমের একটা বাই-প্রডাক্ট। এখন সেই জায়গাটারে দখল করতেছে কর্পোরেট গ্লোবালাইজেশন ও গ্লোবাল মিডল-ক্লাস কালচার। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, বাঙালি জাতীয়তাবাদের তুলনায় বেটার প্রডাক্ট হইলেও ন্যাশনালিজম মোটামুটি একটা বাতিল মাল। তবে পলিটিকাল পরিচয় হিসাবে ‘বাঙালি’ যতোটা ন্যারো এবং ভেইগ একটা জিনিস, তার তুলনায় পরিচয় হিসাবে ‘বাংলাদেশ’-রে সেন্টার করতে পারাটা অনেকবেশি ইনক্লুসিভ এবং স্পষ্ট একটা এপ্রোচ।
জানুয়ারি ৬, ২০২৩
– বাংলাদেশের বামদের কেন আমি বাটপার বলি –
বাংলাদেশের বামদেরকে (সিপিবি, জাসদ ও এইরকমের পার্টি ও প্রতিষ্ঠান এবং পারসোনাল-পজিশনগুলারে) বাটপার বলার কারণ মোটামুটি তিনটা। এক হইলো, উনারা এমন একটা টোনে আওমি লিগরে সাজেশন দিতে থাকেন যেন বাংলাদেশে আর কোন পলিটিকাল পজিশনই নাই! উনারা নিজেরাও কিছু করতেছেন বা করতে চাইতেছেন – তা না, উনাদের মেইন কাজ হইতেছে আওমি লিগরে সাজেশন দেয়া। আর এইভাবে তাদের লুটপাটরে পলিটিকাল ভ্যালিডিটি দেয়া। “চোরের সাক্ষী বাটপার” – এইটা হইতেছে উনাদের পলিটিকাল রোল।
সেকেন্ড হইতেছে, উনাদের মেইন অভিমান – আওমি লিগ কেন বুঝতেছে না! কে যেন কারে ভুল বুঝাইতেছে! মানে, ঘটনাটা লুটপাটের না, বাটপারির না, বরং বিপ্লব যেন! আর যেইটারে ফুঁসলায়া রাইট-ডিরেকশনে 🙂 নিয়া যাইতে হবে! এইটা কোন না-বুঝার জায়গা থিকা ঘটে বইলা আমি বিলিভ করি না। পলিটিকালি একটা বাটপারির পজিশনে না যাইতে পারলে এইটা করা পসিবল না।
থার্ড এবং মোস্ট ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, আমরা তো সৎ! – এই মোরাল জায়গাটারে একটা ইন্টেলেকচুয়াল সুপিরিয়রিটি হিসাবে ক্লেইম করা ও এস্টাবলিশ করা। মানে, উনারা সৎ কি অসৎ, মানুশ হিসাবে ভালো কি খারাপ – এইটা তো পয়েন্ট অফ কনসার্ন হইতে পারে না! পলিটিকাল পজিশন হিসাবে জুলুমের খালি সহযোগি না, বরং ইন্টিগ্রাল পার্ট উনারা – এই জায়গাটারে আইডেন্টফাই না করলে বড় রকমের ভুলই হবে সেইটা।
জানুয়ারি ৮, ২০২৩
একটা সময় ডিসেম্বর মাসে অনেক আয়োজন কইরা অনেক কর্পোরেট-কোম্পানি এবং সামাজিক-সংগঠন “শীতবস্ত্র বিতরণ” করতো। এখন মনেহয় পিআর এক্টিভিটি এবং নিউজ-আইটমে হিসাবে এর গ্ল্যামার কইমা গেছে একটু। তারপরও এই বছর অনেকে এই কাজ করছে মেবি। কিন্তু এতো বছর ধইরা এতো “শীতবস্ত্র বিতরণের” পরেও শীতে মানুশের কষ্ট পাওয়া কমে না।
তার মানে এইটা না যে, এই “শীতবস্ত্র বিতরণ” খারাপ জিনিস, কিন্তু অইটা শো-অফের ঘটনাই, কম-বেশি। মানুশের শীতের কষ্ট কমানোর জন্য একটা এফেক্টিভ চেষ্টা না এতোটা। কারণ খালি শীতের কাপড় দিয়া তো শীত কমানো যায় না! যদি কারো ঘর-বাড়ি না থাকে, খোলা আকাশের নিচে ঘুমানো লাগে। বেড়ার ফাঁক দিয়া, টিনের ফুটা দিয়া যদি শীতের বাতাস ঢুকে ঘরে।
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, দান-খয়রাত করা খারাপ জিনিস না, কিন্তু এর পারপাস বেশিরভাগ সময় এই সেটিশফেকশনের ঘটনাই যে – আমরা দান-খয়রাত করতেছি! কিন্তু তাই বইলা এইটুক করাটা অবশ্যই খারাপ কাজ না, যতোটা সম্ভব করতে পারাটা দরকার, সবারই। কিন্তু একইসাথে কোন সমস্যার সমাধান করাও যে না – এই বুঝটাও দরকারি আর কি!
জানুয়ারি ৯, ২০২৩
আওমি লিগ “আইয়ুব খানকে উৎখাত” করে নাই। আইয়ুব খান ক্ষমতায় আসেন ১৯৫৮ সালে, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম-পাকিস্তানে পিপলস পার্টির রাজনীতি শুরু হওয়ার পরে বরং বিপদে পড়েন আইয়ুব খান। আইয়ুব খানের “উৎখাত” মোস্টলি পশ্চিম-পাকিস্তানের ইন্টারনাল রাজনীতির ঘটনা। যখন জুলফিকার আলী ভুট্টো একজন পলিটিকাল লিডারের ফিগার হয়া উঠতে পারছেন। (যেই হিস্ট্রি এখনকার বাংলাদেশে ‘গোপন’ করা হয়। মানে, পাবলিক বলাবলির মধ্যে নাই।)
আওমি লিগ “ইয়াহিয়া খানকে যুদ্ধে পরাজিত করে” নাই, বরং কলকাতায় বইসা ইন্ডিয়ার কাছে দেশ বর্গা দেয়ার বেবস্তা করতেছিল! ১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশের মানুশের পলিটকাল এবং ইকোনোমিকাল ফ্রিডম বাতিল কইরা বাকশালের নামে অবৈধভাবে এক-দলীয় শাসন চালু করছিল। জিয়া আইসা আওমি লিগরে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দিছিল।
আওমি লিগ “এরশাদকে উৎখাত” করে নাই। এরশাদের অবৈধ শাসনরে ভ্যালিডিটি দিছিল ১৯৮৬ সালের ইলেকশনে পার্টিসিপেট করার ভিতর দিয়া। পরেও এরশাদের পার্টিরে বি-টিম বানাইছে। বড় শয়তান যেইরকম ছোট শয়তানদেরকে পালে, এইরকম কইরা আগলায়া রাখছে।
১৯৯৬ সালে সরকারি-আমলাদের দিয়া ক্যু করাইছিল। ২০০৮ সালে মিলিটারি-মিডিয়ার সরকারের লগে আতাঁত কইরা ক্ষমতায় আসছিল।
আওমি লিগের রাজনীতির ইতিহাস হইতেছে ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, লুটপাটের ইতিহাস এবং দেশ-বেইচা দেয়ার ইতিহাস। অই ইতিহাসরে রিপিট হইতে না দেয়াটা হইতেছে আজকের বাংলাদেশে, ২০২৩ সালে আমাদের হিস্ট্রিকাল টাস্ক!
জানুয়ারি ১২, ২০২৩
ধরেন, আপনি রাস্তায় হাঁটতে বাইর হইছেন রাতের বেলায়, একদল পাগলা কুত্তার সমানে পইড়া গেলেন, কুত্তাগুলা আপনার দুই পা কামড়ায়া রক্তাক্ত কইরা ফেললো। আপনারে মাইরা ফেলার দশা। তখন আপনি কি করবেন?
ভাববেন যে, দৌড় দিয়া কি হবে? অন্য রাস্তাতেও তো আরো কুত্তাই থাকতে পারে। পইড়া পইড়া কুত্তার কামড় খাবেন? আর কবিতার লাইন আওড়াইবেন, “কুকুরের কাজ কুকুর করেছে…” 🙂
এই সিচুয়েশনে, মানুশটারে ভাবেন বাংলাদেশ, আর পাগলা কুত্তাগুলারে নয়া বাকশালের ডাকাত; এদের হাত থিকা বাংলাদেশরে বাঁচানোটা হইতেছে ফরজ কাজ।
এরপরে যদি আরো পাগলা-কুত্তাদের হাতে পড়তে হয়, তখনো কাজ হবে অদের হাত থিকা বাঁচা। ইন ফ্যাক্ট, তখন হাতে লাঠি রাখা। মানে, পরের কাজ তো পরে। আগে তো বাঁচতে হবে আপনারে।
তো, যারা কয়, বিএনপি আসলেও একই কাজ করবে – এরা কোন সন্দেহ ছাড়াই বাকশালের দালাল। কারণ এরা ক্লিয়ারলি এই কথাই কয় যে, নয়া বাকশালের অবৈধ-শাসন মাইনা নেন! এরা অই পাগলা-কুত্তাদেরই ব্রাদার এন্ড সিস্টারস!
জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
অস্কার ওয়াইল্ড মেবি খুব স্মার্ট লোক ছিলেন। ট্রুমান কেপোটিও মনেহয় স্মার্ট পার্টি-গাই ছিলেন। মানে, মানুশের মুখের উপ্রে কথা বইলা দিতে পারতেন, বেকুব বানাইতে পারতেন, যেইটা উনাদের আশে-পাশের লোকজন এনজয় করতো। মানে, উনাদের এইরকম একটা ইমেজ আছে, উনাদের নিয়া কিছু কাহিনি-টাহিনি পইড়া এইরকম মনে হইছে।
আবার বোর্হেস তো মোটামুটি বেকুবই ছিলেন মনেহয়। এইরকম এক কাহিনি পড়ছিলাম যে, অই সময় আর্জেন্টিনার ডিক্টেটর প্রেসিডেন্ট পিনোচোট উনারে ডিনারের দাওয়াত দিছে, উনার ফ্রেন্ডরা বলতেছে, আপনি যাইয়েন না! (গেলে তো পলিটিকালি বাজে হবে জিনিসটা, নোবেল প্রাইজ দিবে না 🙂 ) বোর্হেস কইলো, প্রেসিডেন্ট দাওয়াত দিছে, না-যাওয়াটা তো ঠিক হবে না! এইরকম।
বাংলাদেশেও, নজরুল তো মজলিসী লোক ছিলেন, জীবনানন্দ ছিলেন ভ্যাবাচেকা-মার্কা লোক। শহীদ কাদরী নাকি লোকজনরে ভালো পচাইতে পারতেন, আল মাহমুদ নাকি আড্ডাতে ছিলেন “গো-বেচারা”।
মানে, নানান স্বভাবের কবি-সাহিত্যিকই আছেন দুনিয়ায়।
আপনি স্মার্ট বইলা যেমন খারাপ-কবি না, গো-বেচারা বইলাই ভালো-কবি না আর কি! 😛 বা ধরেন, অহঙ্কারী বইলা ভালো আর বিনয়ী বইলা খারাপ – এইরকম না। এইগুলা মোস্টলি সোশাল-এপিয়েরেন্সের ঘটনাই।
…
বাংলাদেশে হিন্দু মানেই হিন্দুত্ববাদী না। কিন্তু ‘বামপন্থী’ হইতে হইলে যে হিন্দুত্ববাদী হইতে হবে – এতে সন্দেহ করার মতো উদাহারণ আসলে নাই, বা খুবই কম।
…
– আর্ট-মারানিদের অভিমান –
বাংলাদেশের সিনেমার দুনিয়ায় দুইটা ঘটনা ঘটছে, কয়দিন ধইরা দেখতেছি।
এক হইতছে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী’র “শনিবার বিকেল” নাকি রিলিজ দিতেছে না সেন্সর বোর্ড অনেক দিন ধইরা।
কিন্তু নিউজ-টিউজে ঘটনা যেইটা দেখলাম, সেন্সর বোর্ড আসলে একরকমের “নিষিদ্ধ”-ই করছিল, বইলা দিছিল “ছাড়পত্র” দিবে না, কিন্তু একটু সন্দেহ রাখছিল এইভাবে যে, পারমানেন্টলি নিষিদ্ধ করে নাই, রিকমেন্ড করছিল খালি, যেই কারণে আশা ছিল, বা এইভাবে হাইলাইট করা হইছিল যে, ডিসিশান দিতেছে না! কিন্তু ডিসিশান তো দিছিল আসলে।
এখন একই কাহিনি নিয়া যেহেতু ইন্ডিয়াতে আরেকটা সিনেমা রিলিজ হইতেছে মার্চ মাসের ৩ তারিখে, এই কারণে একটু “অভিমান” কইরা “সংগ্রাম” শুরু করছেন “শনিবারের বিকেল”-এর লোকজন, শেষবারের মতন।
কিন্তু এইটা তো মনেহয় একভাবে জানানোই হইছে যে, দুইজন পুলিশ অফিসার যে মারা গেছে, অই “বীরত্বের” কথা সিনেমাতে নাই তেমন, অইটা রাখলে বা হাইলাইট করলে “ছাড়পত্র” দিতে পারে। (মানে, দিবে আসলে।)
আমার ধারণা, ফারুকী অইটা করতে রাজি হইতে পারেন। [গোপনেই রাজি হইলেন।] “প্রডিউসারের চাপে” বা “সরকারি রিকোয়েস্টে” একটু উদাস উদাস ভাবও নেয়া লাগবে মেবি। ছয়দিনে সিনেমার শুটিং করতে পারলে ২-৪টা সিন কি উনি ৮-১০ দিনে বানাইতে পারবেন না! একটু চেষ্টা করলেই পারবেন! 🙂
তবে যেইটা করতে পারেন, উনি উনার ইন্ডিয়ান-লবি দিয়া বুঝাইতে পারেন যে, এইটা তো একটা ইন্ডিয়ান সিনেমাই! তাইলে ব্যাপারটা সহজ হইতে পারে, অনেকটা। অই ট্রাই যে করেন নাই – তা মনেহয় না, কিন্তু এইটারে বাংলাদেশি-সিনেমা না বইলা আলমগীর কবিরের মতন ইন্ডিয়া-বাংলাদেশের “যৌথ প্রযোজনা” কইতে পারতেন! তাইলে মেবি এই ঝামেলাটাও হইতো না।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়াও কিন্তু ইন্ডিয়ার লোকজন দিয়াই “যৌথ প্রযোজনার” সিনেমাই বানানো হইছে।
ফারুকী গং-এর লোকজন এইগুলা জানেন না – এইটা আমার মনেহয় না, কিন্তু বুসান-টুসান পাওয়ার প্রাইড থিকা মনেহয় বাইর হইতে পারেন না। (যেহেতু সরকাররে সার্পোট করেন এই কারণে নিজেদেরকে দেশের মানুশের চাইতে একটু বেশি “স্বাধীন”ও মনে করেন মেবি।) কিন্তু অইটা যে একটা নেগেটিভ জিনিস, সেইটা নোবেল পাওয়ার পরে একজনের কি অবস্থা হইছে সেইটা দেইখাও যে বুঝতে চান না, সেইটা না-বুঝা না আর কি এতোটা!
তো, আশা করি, ইন্ডিয়ায় পড়াশোনা করা এবং ইন্ডিয়ার হেল্প নেয়া লোকজন (মানে, র) বেশি পাওয়ারফুল নাকি বাংলাদেশি-পুলিশ বেশি পাওয়ারফুল – “ফারাজ” এবং “শনিবার বিকেল”-এর এই “দ্বৈরথের” ভিতর দিয়া আরো ভালোভাবে জানতে পারবো আমরা! 😛
২.
সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, গিয়াসউদ্দিন সেলিম নাকি এক সিনেমা নিয়া পাঁচ বছর রিসার্চ করার পরে সেইটার টাকা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুরে দিয়া দিছে! কি স্যাড ঘটনা!
তো, এইখানেও আমার কথা হইতেছে, গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভাবছেন যে, উনি তো ভালো-সিনেমা বানান, উনি কেন সরকারি টাকা পাইবেন না!
কিন্তু এই ভালো-সিনেমা বানানো তো হইতেছে আরেকটা বিপদের কথা, উনি তো দালালদেরকে বেশি টাকা দিবেন না তাইলে! দেলোয়ার জাহান ঝন্টু ২৩ কোটি টাকার মধ্যে ২০ কোটি টাকাই দিয়া দিতে পারবেন, আশা করা যায়। গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভালো-সিনেমা বানানোর নাম কইরা তো ৫-৭ কোটির বেশি কমিশন দিবেন না। তাইলে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুই ভালো না! সিনেমা তো একটা বানানো হইতেছেই!
মানে, যারা এই “প্রতিবাদের নাটকগুলা” করতেছেন, উনারা এইসব জিনিস দেখতে পান না – এইটা আমার মনেহয় না। বরং বলদ সাইজা থাকাটারেই পলিটিকালি কারেক্ট থাকা, মানে “সেইফ” থাকা মনে করেন মেবি।
৩.
তো, এই দুইটা ঘটনাটাতেই আমার কথা হইছে, বাংলাদেশের এখনকার পলিটিকাল রিজিমে আর্ট করার আগে গোলামি করতে শিখেন! এইটা হইতেছে গোড়ার কন্ডিশন।
আর্টের নাম দিয়া, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার’র নাম দিয়া দেশের মানুশরে ইন্ডিয়ার গোলাম বানাইছেন, বাকশালের অবৈধ-শাসনরে ভ্যালিডিটি দিতেছেন বইলা কেউ রাজা হয়া যান নাই! বাংলাদেশের সিটিজেন মানেই আপনি বাকশালের গোলাম।
তো, গোলামের বাচ্চারা গোলামের মতন থাকেন! নাকে খত দিয়া বাকশালরে বাপ ডাকতে শিখেন। তখন আর্ট-করার স্বাধীনতা পাইবেন না, আর্টের অভিমান একটু কম করতে শিখবেন।
আমার আশা আছে, আপনারা পারবেন!
Leave a Reply