নোটস: ডিসেম্বর, ২০২১ [পার্ট ১]

ডিসেম্বর ১, ২০২১

মারামারি করার অভ্যাস তো ছিল আমার, যদিও বেশিরভাগ সময় মাইর-ই খাইতে হইছে, তারপরও মারতে যে পারি নাই পরতিপক্ষরে, তা না; কিছু তো মারছিই। একবার বেশ সিরিয়াস হয়া গেছিল। (ছোটবেলার কথা-ই, ১২/১৩ বছর বয়সে যা হয়।)

হকি খেলতে গিয়া শালার বল টার্গেট কইরা হকিস্টিক ঘুরাইছি, আর আরেক পোলার নাকে গিয়া লাগছে সেই বাড়ি। নাক ফাইটা রক্ত বাইর হইতে লাগলো। যতো না ব্যথা পাইছে, তার চাইতে রক্ত দেইখা অর কান্দা গেলো বাইড়া। অর মা’রে ডাইকা নিয়া আসলো। অর মা-ও চিল্লাচিল্লি শুরু করলো! আসলে অই পোলা এর আগেও মাইর খাইছে আমার হাতে, এখন চান্স পাইয়া পাড়ার লোক জড়ো করতেছিল। অর মা’রও জিদ ছিলো। আমার আম্মারে গাইল্লাইতে গাইল্লাইতে বাসার সামনে চইলা আসলো। পোলারে মানুশ করতে পারে নাই! এই-সেই। এক কেলেংকারির ঘটনা আর কি।

আমি বুঝলাম পালাইতে হবে। দৌড় মাইরা একটা চিপায় চইলা গেলাম। এক চোট ঝগড়া-ঝাটি হইলো। আমি ভাবছিলাম, পাবলিকলি পিটানি খাইতে হবে আমার। কিন্তু নাটক হইলো না কোন। আম্মা অই পোলার মা’রে কইলেন, চিল্লাচিল্লি বন্ধ করতে। অন্যের কথায় নিজের পোলারে মারবেন কেন! উনার যা বিচার করার সেইটা উনি করবেন। সিন-ক্রিয়েট যেন না করা হয়, বাসার সামনে। দপ কইরা আগুন’টা নিইভা গেল। পোলার বিচার করে না, শাসন করে না, কি রকম মা! – এইরকম গুজুর-গুজুর ফুসুরফুসুর হইলো কিছু।

কিন্তু আমি বুঝলাম কপালে গর্দিশ আছে আজকে। খিদার চোটে বাসার বাইরে থাকার তো কোন উপায় নাই, বিকালের দিকে ফিরলাম বাসায়। কিন্তু কি আজব! আম্মা কোন মাইর-টাইর দিলো না! গোসল-টোসল কইরা খাওয়া-দাওয়া করলাম। দ্যান, উনি খুব শান্তভাবে থ্রেট’টা দিলেন, আর যদি কোনদিন অই পোলাপাইনের লগে খেলতে যাই তাইলে কোনদিন আর এই বাসায় ঢুকতে পারবো না। আর বুঝাইলেন, মানুশের কথায় উনি মাইন্ড করেন নাই, কিন্তু আমার কারণে উনারে যে এতোগুলা কথা শোনা লাগলো, সেইটা যেন আমি মনে রাখি। আর আমিও বুঝলাম আসলে, যারা সবসময় এইরকম গায়ে পইড়া ঝামেলা করতে চায়, অদের সাথে চলা-ফেরা করার তো কোন দরকার নাই।…

২.
তো এই ঘটনার কথা মনে হইলো, MR. ROBOT’এর একটা সিন দেইখা। এক কাস্টমার আইসা দোকানদার বাপের কাছে কমপ্লেইন করে যে তার পোলা ম্যানিব্যাগ থিকা টাকা চুরি করছে; বাপ তো অবাক হয়, পোলা টাকা চুরি করছে! তখন কাস্টমার’টা এক্সপ্লেইন করতে থাকে, চেইতা যাইতে থাকে। বাপ’টা তখন কয়, না, আমার পোলার বিচার আমি করমু না, আপনে বাইর হন! কাস্টমার তো অবাক হয়া যায়, এইটা কেমনে সম্ভব! বাপ হয়া পোলারে চুরি করতে দিবে! বিচার করবে না কোন!

কাস্টমার’টা চইলা যাওয়ার পরে বাপ’টা পোলারে ডাকে, কয়, টাকা’টা দে! পোলা পয়লা চুরি’র কথা না কইলেও, পরে টাকাটা দেয় বাপরে। বাপে কয়, এই টাকা দিয়া কি করবো, চল, সিনেমা দেইখা আসি! পোলা কয়, পাল্প ফিকশন দেখবে! 🙂

[এই সিনটা একটা ইমাজিনেশনই পোলার, চাইল্ড-হুড মেমোরি’র।]

৩.
তো, এইগুলা আসলে ফান বা সিরিয়াস ঘটনা না, বা অ-বিচারও না। বরং আমরা সবাই মনেহয় বুঝি যে, পাবলিকরে খুশি করাটা কোন বিচার না; মোরালিটি এইরকম স্ট্রেইট-ফরোয়ার্ড জিনিস না। ইট হ্যাজ ইটস অউন কার্ভস! কিন্তু মোরালিটির কার্ভগুলা একটা জাস্টিসের দিকেই ঝুঁইকা থাকে, সবসময়। আর এইগুলা পারসন টু পারসন আলাদা আবেগের ঘটনা না। একটা ইউনিভার্সাল জায়গা থিকাও এই জিনিসগুলা ফিল করতে পারি আমরা।

#########

আর্টের কাজ আর চিন্তার কাজ কাছাকাছি হইলেও একই না।

চিন্তার লাইগা কোন কোশ্চেনটারে সে ডিল করতেছে, জরুরি কইরা তুলতে পারতেছে – সেইটা তার প্রাইমারি এরিয়া। এই কারণে যে কোন ফিলোসফার’রে আমরা মনে রাখি তার কোশ্চেনের এরিয়া, ইন্টারপ্রিটেশনের তরিকাগুলা দিয়া; কি উত্তর উনি দিলেন – এইটা মেইন কনসার্নের জায়গা না, বরং কোশ্চেনগুলারে ডিল করতে গিয়া কোন এক্সপ্লোরেশনগুলারে উনি রিলিভেন্ট কইরা তুললেন, সেইসব জিনিস অনেক বেশি খেয়াল করার মতো ঘটনা।

অন্য দিকে, একজন আর্টিস্টের ব্যাপারে, কোন নতুন কোশ্চেনরে উনি ডিল করতে পারতেছেন – সেইটা উনার এক্সিলেন্সের জায়গা না; বরং একজন গ্রেট আর্টিস্ট বা একটা গ্রেট আর্ট দেখবেন খুব কমন কোশ্চেনরে ডিল করেন, আর এমন জায়গাটাতে আমাদেরকে নিয়া যাইতে পারেন, যেইটা চিন্তা দিয়া পৌঁছানো যায়-না – এইরকম না, কিন্তু এক্সপ্লোরেশনের ঘটনাগুলাই আলাদা রকমের।

চিন্তার কাজ যদি হয় একটা পয়েন্ট অফ কনসার্নরে জাগায়া তোলা, আর্টের কাজ হইতেছে যে কোন কনসার্নের প্রসেসটারে বিউটিফুল কইরা তোলা।

দুইটা জিনিস একই হইতে পারবে না – তা না; বরং বেশিরভাগ সময় দেখবেন ওভারল্যাপই করে কিছুটা। কিন্তু তারপরও এই ডিফরেন্সের জায়গাটা বেশ ক্লিয়ারলি নোটিশ করা যায় বইলা মনেহয়।

যেমন ধরেন, René Magritte’র আর্টে চিন্তা কি নাই? বা ধরেন, রলাঁ বার্থ, পোয়েটিক না উনার লেখা? তারপরও চিন্তাটাই মার্গারেটের আর্ট না, পোয়েটিক হইতে পারাটা বার্থের চিন্তার জায়গাটা না।

এই মিল আর অ-মিলের জায়গাগুলা নিয়া একজন আর্টিস্ট এবং একজন ইন্টেলেকচুয়াল যতো কনশাস হইতে পারেন, ততটাই বেটার হওয়ার কথা, উনাদের আর্ট এবং উনাদের চিন্তাগুলা।

 

ডিসেম্বর ২, ২০২১

ফেবল: ডাকাত দলের কাহিনি

এক গেরামে ছিল একটা ডাকাত দল। অরা গেরামের ভিতরেই থাকতো। রাইতের বেলা তাহাজ্জুদের নামাজ পইড়া ডাকাতি করতে নামতো। অই ডাকাতির কথা কেউ বলতে সাহস করে নাই দেইখা অদের সাহস আরো বাইড়া যায়। দিনে-দুপুরেই ডাকাতি করে অরা এখন। গেরামের লোকজন ডরে ডরে থাকে বরং, আদাব-সালাম দিয়া কথা কয়। যারা পারে আরেক গেরামে পালায়া যায়, কিন্তু অনেকের তো থাকা লাগে, অনেকে তো যাইতেও চায় না।

তো, সবাই জানে যে, ডাকাত দলের লোকজন খারাপ। গেরামে কয়েকটা মাইক আছে, ডাকাত দলের লোকজনই লাগাইছে। অইখান থিকা সারাদিন গান-বাজনা বাজানো হয় – উন্নয়ন, উন্নয়ন! উন্নয়ন, উন্নয়ন! মাদারের উন্নয়ন! (লোকজন অবশ্য মনে মনে তাল মিলায় মাদার-ফাকার উন্নয়ন।)

ডাকাত দলের লোকজনও এইগুলা বুঝে। এই কারণে মাইকগুলারে কয়, ‘গঠনমূলক সমালোচনা’ করবা।

মাইকগুলা এই কারণে কয়দিন পরে পরে আওয়াজ তুলে – ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য চেইঞ্জ করা দরকার। কারণ
১. এরা ডাকাতি করার সময় হাসে। মুখটা করুণ কইরা রাখবে না একটু!
২. আবার অনেক সময় চিমটি মারে! গুম করবে, খুন করবে, পিটাবে ভালো কথা; চিমটি কেন মারবে! ব্যথা লাগে না!
৩. মেয়েদের রেইপ করবে, ঠিকাছে; মেয়েদেরকে তো রেইপ করা-ই যায়, বেটাদেরও পুটকি মারে! কি জঘন্য অরাজকতা!

এইরকম ‘কঠিন’ সমালোচনা করার পরে আবার সাবধান হয়া যায়। এইটা ডার্ক-সাইড অফ দ্য মুন। যতো যা-ই হোক, ডাকাত দলের সর্দার তো ভালো! এমন ভালো যে, যাঁর (জ্বী, চন্দ্রবিন্দু ছাড়া হবে না, পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হবে, এই বেয়াদবি করলে। বানাম ভুল সহ্য করা হবে না!) কোন বিকল্প নাই! আর উনি ভালো হবেন না কেন! দেখেন,

১. সবচে বড় কথা, উনি তো নারী! কোন নারী কি কোনদিন খারাপ হইতে পারে! হাজার হোক, মায়ের জাত তো! নারী নিয়া কোন বাজে কথা বলা হইলে মিসোজনিস্ট শুয়োরের বাচ্চাদের জিব্বা টাইনা ছিঁড়া ফেলা হবে।

২. উনার বাপ তো ভালো ছিলেন! আলেমের ঘরে কোনদিন জালেম দেখছেন! উনার বাপ’রে ভালো থিকা আরো ভালো বানানো হবে। যার মূর্তি বেশি, সে-ই তো তত বড় মানুশ। তাই না!

৩. আর উনার কথা-বার্তা দেখছেন, কি (বানাম-ভুল) সুশীল! কোন ‘উগ্র সাজ’ করেন নাই কোনদিন।…

তো, ডাকাতদলের কয়েকজন সদস্য খারাপ হইতে পারে, কিছু কাজ ভুল করতে পারে। ম্যান ইজ মরটাল। কিন্তু ডাকাত দলের সর্দার, খালি ভালো-ই না, ভালো’র মা ও বাপ, এবং চৌদ্দ গুষ্টি। আর এই কারণে এইরকম বাজে একটা ডাকাতদলরে উনি সিধা কইরা রাখছেন।

আমাদের গেরামরে এখন আমরা শহর বানায়া ফেলবো। লন্ডন, প্যারিস, নাইলে দুবাই শহর। গেরাম মরুভূমি হইলে হোক! মানুশ-জন না থাকলে থাক। লোকজন তো এমনিতেই খারাপ। জেলাস। অন্যের ভালো দেখতে পারে না। এরা গেরামের গর্ভমেন্টরে কয় ডাকাত-দল। বজ্জাত কোনখানকার!

#########

একটা বোতল থিকা আরেকটা বোতলে পানি ঢালতে গিয়া মনে হইতেছিল, যেই বোতল থিকা পানি ঢালা হইতেছে সেইটা মুখ যদি ছোট হয় তাইলে ভালো; কিন্তু এতো ছোট হওয়া যাবে না যাতে কইরা পানিই পড়তে পারে না ঠিকমতো; মানে, মাঝারি-সাইজের হইলে বেটার। কিন্তু যেই বোতলে পানি ঢালতেছি, সেইটার মুখ যেইটা দিয়া পানি ঢালা হইতেছে, সেইটার চাইতে একটু বড়, এটলিস্ট ডাবল হইলে বেটার।
দেয়ার সময় কঞ্জুসি কইরা দিতে হবে না, তবে একটা লিমিট থাকা বেটার। আর যিনি নিবেন, তারে একটু ওয়াইডার হইতে পারলে ভালো, নেয়াটা সহজ হয় তখন।

আরো কতোকিছু যে আছে, দেখার মতন…

 

ডিসেম্বর ৩, ২০২১

এই জিনিসটা আমি খেয়াল করছি, যেই লোক লাইফের একটা সত্যিরে ফিল করতে পারেন, উনি অনেক ব্যাপারের সত্যিগুলারেই জানতে পারেন। রবার্ট ফ্রস্ট যে একটা সময়ের ইম্পর্টেন্ট কবি ছিলেন, এর কারণ এইটাই না যে, উনি কিছু ভালো-কবিতা লেখছেন, বরং এইটাও যে, ভালো-কবিতা লেখার ভিতর দিয়া কবিতার ব্যাপারে কিছু ট্রুথ উনি রিভিল করতে পারছেন। উনার প্যারিস রিভিউ’র ইন্টারভিউ’টা পড়লে অই জায়গাগুলা টের পাওয়া যায় কিছু। এই লিংকে ইন্টারভিউ’টার কিছু অংশ ছাপানো হইছে।

সুন্দর সুন্দর শব্দ দিয়া পারসোনাল ইমোশন এক্সপ্রেস করার নাম যে কবিতা না, এইটা এটলিস্ট ফিল করতে পারবো মনেহয় আমরা। মানে, কবিতা-লেখা খুব জটিল পদ্ধতির ঘটনা না, কিন্তু একইসাথে এইটা ওহী নাজিল হওয়ার জিনিসও যে না – এইটা খেয়াল করতে পারাটা বাংলাদেশের আর্ট-কালচারের কনটেক্সটে এইটা মেবি দরকারি একটা ঘটনা।

আরেকটা জিনিস হইলো, ‘গার্মেন্টস মালিক সমিতি’র মতো বাংলাদেশে কিছু ‘অনুবাদ মালিক সমিতি’ গজাইতেছে, যেন অদের লাইসেন্স ছাড়া, ‘শুদ্ধ-ভাষা’ ছাড়া আপনি কোনকিছু তরজমা করতে পারবেন না, বা করলেও অইগুলা ‘হবে না’! কারণ আপনার তো সার্টিফিকেট নাই! তো, আর্ট করতে কোনদিনই কোন সার্টিফিকেট লাগে নাই, লাগবেও না। (এইগুলা হইতেছে কন্ট্রোলের সোসাইটিতে থাকতে থাকতে কন্ট্রোলড-স্লেইভ না হইতে চাওয়াটারে একটা ‘বাজে ঘটনা’ হিসাবে দেখার একটা ঘটনা।) যারা এইগুলা করতে চান, উনাদের উদ্দেশ্য কখনোই অন্য ভাষায় চিন্তার জায়গাগুলারে এক্সপ্লোর করা না; বরং বাংলা-ভাষায় ‘পরিবেশ-দূষণ’ ঠেকাইতে চান উনারা। কিন্তু ভাষার বনসাই হয় না কখনো। ভাষার জঙ্গলে হারায়া যাওয়ার ডর নিয়াও উনারা হাঁটতে শিখতে রাজি হইতে পারবেন – এই এক্সপেক্টশনই রাখতে পারাটাই মনেহয় বেটার।

#########

আগের দিনে, মানে ২০/৩০ বছর আগেও ছিল এই অবস্থাটা যে, নতুন সিনেমা ‘মুক্তি’ [ইন্টারেস্টিং না টার্মটা? রিলিজের বাংলা হিসাবে…] পাইলে ফার্স্ট শো’টা দেখা লাগবে। সিনেমা হলের সামনে ধাক্কাধাক্কি, মারামারি লাগায়া দিয়া সামনের লোকজনরে সরায়া দিয়া লাইনে ঢুইকা টিকেট কাটা, ব্ল্যাকে দাম-দর করা… মানে, একসাইটিং একটা জিনিস! নতুন সিনেমা রিলিজ হইছে, ফার্স্ট শো দেখা লাগবে!

সিনেমার এই জিনিসটা কমতে কমতে নাই-ই হয়া গেছে মনেহয় এখন। লাস্ট টাইম “হাঙ্গার গেইমসের” ফার্স্টদিনের শো দেখতে দুই ঘন্টা আগে টিকিট কাটতে গেছিলাম; কয়েক বছর আগের ঘটনা। এখন দুই সিজন ধইরা মানি হেইস্ট দেখার লাইগা প্রিপারেশন নিয়া রাখতেছি। 🙂 আজকে দুপুরে ২টা ১ মিনিটে স্ট্রিমিং শুরু হবে এইটার। বাইছা বাইছা শুক্রবার দিনে যে রিলিজ দেয়, এইটাও ভালো।

মানি হেইস্ট হইতেছে আসলে নেটফ্লিক্সের বাংলা-সিনেমা। বাংলা-সিনেমা কি জিনিস? খুব উল্টা-পাল্টা জিনিস দেখানো (টেকনিক্যাল এফিশিয়েন্স নাই বইলা তামিল একশন মুভিগুলার মতো পারেও না এখন), বা কাহিনির মিল না-থাকা না; বরং বাংলা-সিনেমার মেজর একটা জিনিস হইতেছে – ইমোশনাল হাউকাউ। আবেগি জিনিসপত্র, আর এর উপ্রে বেইজ কইরা কড়া ডায়ালগ দিতে থাকা। ধরেন, মান্নার ‘চৌধুরী সাহেব!’ হুমায়ূন ফরিদীও কড়া কড়া ডায়ালগ দিতে পারতেন বইলাই ‘দর্শকপ্রিয় অভিনেতা’ হইতে পারছিলেন।… আর এই কারণে দেখবেন, আর্ট-মারানিরা বাংলা-সিনেমারে কইতো, যাত্রা-সিনেমা।

সো-কল্ড বাংলা আর্টফিল্মে দেখবেন এই কারনে খুব ‘মৃদুমন্দ’ ঢংয়ে কথা কওয়া লাগে, জোরে চিল্লান দিলেই উনাদের অর্গাজম (মানে, বীর্যপাত) হয়া আর্ট-ফার্ট ফাইট্টা যাওয়ার ডর থাকে, সবসময়। আমার ধারণা, অন্য অনেককিছুর লগে এইটা আসছে ইংরেজি-পূজা থিকা। একজন জার্মান-ইংলিশ ট্রান্সলেটর কইতেছিলেন, জার্মান থিকা ইংলিশে ট্রান্সলেট করার একটা ক্রুশিয়াল ইস্যু হইতেছে, জার্মানে আবেগ-ইমোশন বুঝাইতে হইলে এক কথা তিনবার কওয়া লাগে, আর ইংলিশে দেয়া লাগে তিনটা ফুলস্টপ।

তো, যেই কারণে যে কোন ভিজ্যুয়ালের টোনটা লাউড হইলেই আমাদের মনে হইতে পারে, আরে, এইটা তো পুরা বাংলা-সিনেমা! মানি হেইস্ট দেইখাও এইরকম বাংলা-সিনেমা দেখার আরাম পাওয়া যায় অনেকসময়। আজকের ফার্স্ট শো মিস দেয়া যাবে না!

#########

এই জিনিসটা কয়েক মাস আগে মনে হইছিল। কতো কথা যে বলি আমি 🙂 তারপরও কতো কথা যে বলা হয় না। তো, এইটা মনে হইতেছিল ইবন আরাবী’র লাইফ ইভেন্টগুলা খেয়াল করতে গিয়া।

উনার লাইফে একটা ঘটনা ঘটছিল, যেইটা ফরিদউদ্দিন আত্তারের দ্য কনফারেন্স অফ দ্য বার্ডস’র (মানতিকুত তোয়ারের) একটা কাহিনির লগে মিলে। পরে শুনছি, অইটা সত্য ঘটনাই মোটামুটি। ফরিদউদ্দিন আত্তারের ওস্তাদের লাইফের ঘটনা। এক স্বপ্ন দেইখা দূর দেশে গিয়া এক ক্রিশ্চিয়ান কিশোরী মেয়ের পেরমে পইড়া ক্রিশ্চান হয়া গেছিলেন উনি; উনার সাগরেদ’রা উনারে ছাইড়া মক্কায় ফিরা আসছিল। তখন বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী কইলেন, কি রকম সাগরেদ তোমরা, ওস্তাদরে ছাইড়া চইলা আসছো! পরে উনারা অনেক জিকির, দোয়া কইরা এই অবস্থার ফয়সালা করছিলেন। তো, ইবন আরাবীও বেশ অনেক বয়সেই কবিতা লেখতে শুরু করেন। (এরাউন্ড ৪০ বছর বয়সের দিকে মনেহয়।) উনি মক্কাতে এক পারসিয়ান মেয়েরে দেইখা কবিতা-লেখার ব্যাপারটা ফিল করছিলেন। তারে ডেডিকেট কইরাই কবিতা লেখছিলেন অনেকগুলা। কিন্তু উনার ঘটনা’টা এতো টেরিবল ছিল না, বরং অনেক শান্তির ব্যাপার ছিল মনেহয়। অই মেয়ে’র বাপ এবং ফুপু অনেক বড় স্কলার ছিলেন। ইবন আরাবী উনাদের মুরিদ ছিলেন, এইরকম।

মানে, অলমোস্ট একই ধরণের অনেক ঘটনা ঘটতেছে তো আমাদের চারপাশে; একটা সোশিও-ইকনোমিক-পলিটিক্যাল-ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রেমওয়ার্কের ভিতরে যেহেতু আমরা থাকি একটা টাইমে এবং স্পেইসে ঘটনাগুলাও মোটামুটি কাছাকাছি ধরণেরই হয়। সিক্সটিইজের বোহেমিয়ান, এইটিসের কালচারাল ডিফরেন্স, এখনকার ডিপ্রেশনের একটা কমন চেহারা আছে, কম-বেশি। মানে, একটা সময়ের মানুশের লাইফের ঘটনাগুলা খুব কমই একসপেশনাল হয়, কিন্তু এক্সপ্লোরেশনগুলা আলাদা হইতে পারে, অনেক সময়।

 

ডিসেম্বর ৪, ২০২১

ট্রাডিশনাল বুর্জোয়া ক্লাস আর গ্লোবাল-কালচারাল ক্লাস একই জিনিস না; ক্লাস ডিফরেন্সটা দিনে দিনে আরো ক্লিয়ার হবে। কিন্তু এখনই কিছু জিনিস দেখা যাইতেছে মনেহয়। স্পেশালি এন্টারটেইমেন্ট বা বিনোদনের জায়গাটাতে।

জমিদার-শ্রেণীর জায়গায় যখন বুর্জোয়া-ক্লাসটা এমার্জ করতেছিল, শুরুর দিকে, যখন টাকা-পয়সার দিক দিয়া পাওয়ারফুল হয়া উঠে নাই, তখন বুর্জোয়ারা আলাদা হইছিল তাদের কালচারের ভিতর দিয়া। জমিদারদের ‘অশ্লীল’ [যেমন, বাঈজী নাচানো, মজমা বসানো…] ও ‘উচ্চ-মার্গীয় আর্ট’ [যেমন, উচ্চাঙ্গ সংগীত, রাগ-মিউজিক…] যেইখানে আর্ট ও এন্টারটেইনমেন্টের একমাত্র টার্গেট হইতেছে একজন সুপিরিয়র পারসনরে খুশি করা, সেইখান থিকা বুর্জোয়া উপাদান ছিল ‘সুস্থ বিনোদন’ [যেমন, সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম, থিয়েটার…] এবং ‘শিক্ষিত লোকদের সাহিত্য’ [যেমন, বই-পড়া, দেশাত্মবোধক গান…], যেইটা একজনের জন্য না, বরং একটা এডুকেটেড ক্লাসের জিনিস। মোর লিবারাল জিনিস।

এখন এই জিনিসটা মোর রিফাইনড হইতেছে। এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাটেরিয়ালগুলা খালি কাউরে খুশি করার উপাদান হইলে সেইটারে আমি মার্ক করতে চাই পুরাতন বুর্জোয়া-ক্লাসের ঘটনা হিসাবে, যেইখানে গ্লোবাল-কালচারাল ক্লাসের জন্য এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাটেরিয়ালে একটা ‘অ্যাড-অন’ মাস্ট। হোক সেইটা রেসিজমরে এড্রেস করা, ফেমিনিজমরে প্রমোট করা অথবা এনভায়রমেন্টাল ইস্যুরে প্রায়োরিটি দেয়া। মানে, এইগুলা খারাপ জিনিস তো না-ই, বরং জরুরি ঘটনা। [মনে রাখবেন, বুর্জোয়া আর্টও ‘খারাপ’ ছিল না, অই সময়ের কনটেক্সটে।…] কিন্তু আর্ট খালি আর্ট হয়া থাকতে পারবে না। এন্টারটেইনমেন্ট আর খালি এন্টারটেইনমেন্টের ঘটনা না। একটা ‘মেসেজ’ যে আছে, বা থাকেই, অইটাই আর্ট এবং এন্টারটেইনমেন্টের মেইন ঘটনা। মানে, এই জায়গাটা এতোদিনে আমাদের সামনে ক্লিয়ার হইতে পারছে বইলা মনেহয়।

২.
আরেকটা জিনিস হইলো, পুঁজির গ্লোবালাইজেশনের ফলে এই ক্লাসটা এমার্জ করতেছে – এইটা প্রাইমারি কন্ডিশন হিসাবে ঠিকাছে, কিন্তু পুঁজির গ্লোবালাইজেশন কোনভাবেই টিইকা থাকবে না যদি না এই গ্লোবাল-কালচারের জায়গাগুলা এক্সপ্লোর না করতে পারে। লিটারেচার, গান, সিনেমার ভিতর দিয়া এইরকম গ্লোবাল কালচারাল ঘটনাগুলা দিন দিন আরো সুপিরিয়র আর্ট হয়া উঠতে থাকবে বইলা আমার ধারণা।

৩.
ও, আর এই গ্লোবাল কালচারাল ক্লাস নিয়া আগেও আরো কিছু কথা আমি কইছি, যদিও পুরাপুরি ডিফাইনিং একটা জায়গাতে যাওয়া হয় নাই, কিন্তু টেনডেন্সির জায়গা থিকা এইটারে একটা (ইকনোমিক ও কালচারাল) ক্লাস হিসাবে আইডেন্টিফাই করাটা দরকার।

 

ডিসেম্বর ৫, ২০২১

অনেক সময় ডর হইতেছে একটা কাভার-আপ ফিলিংস।* এইটার হাতে-নাতে উদাহারণ পাইয়া গেলাম গতকালকে। ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেনের কথার পোতিবাদ করছিলেন যারা (উনি মাফ চাওয়ার পরেও) তাদের একজন ডা. মুরাদের কথার ব্যাপারে কথা বলতে পারতেছেন না ‘ডর’-এর কারণে। 🙂

এখন এই ‘ডর’ যে নাই – তা তো না, ডরের চাইতেও বড় ব্যাপার হইতেছে যে, যার ক্ষমতা নাই তারে দুইটা কথা শোনায়া দেয়া যায়, চড়-থাপ্পড়ও মারা যায়, কিন্তু যার ক্ষমতা আছে, তারে নিয়া একটা কথা কইতেও ‘ডর’ লাগে তো! কিন্তু এইটা জাস্ট ডরের মামলা না, ক্ষমতার পারপাসরে সার্ভ করার ঘটনাও। মানে, আমি খালি তখনই ডরাই যখন সেইটা ক্ষমতার এগেনেস্টে যায়। ক্ষমতার কোলে বইসা, পুলিশ পাহারায় মিছিল করার ব্যাপারে আমি খুবই সাহসী! এইরকম।

এইটা না-বোঝা’র ব্যাপারেও ঘটে। যে, আরে, আমি তো বুঝি নাই! বুঝলে এইরকম করতাম নাকি! তো, ব্যাপারগুলা সবসময় না-বোঝা’র ঘটনা না, না-বুঝতে চাওয়ার ঘটনাই বেশিরভাগ সময়।

মানে, ফিলিংস বইলা কিছু নাই না, কিন্তু ফিলিংগুলা আমাদের জানা-বোঝার এবং কোন জায়গায় কেমনে এক্ট করতে চাই, এইসবকিছুরও আউটকাম। ‘ট্রু ফিলিংস’ বইলা যেই জিনিস, সেইটাও অভ্যাসের ঘটনা হইতে পারে এবং জেনারেট করা পসিবল।

ফিলিংস থাকা বাজে জিনিস না, কিন্তু ফিলিংস জেনারেট করে আপনার যেই জানা-বোঝা, সেইখানে নজর দিতে পারলে বেটার। অই জায়গাগুলারে রিভিউ করতে রাজি হওয়াটা হইতেছে সাহসের ঘটনা।


*মানে, যে কোন ফিলিংসই আসলে। ফিলিংসরে বেইজ করতে গেলে মুশকিলই, কারণ ডর তো অনেক সময় দরকারিও। এইরকম।

 

ডিসেম্বর ৬, ২০২১

আমাদের সমাজে মানুশের মান-সম্মান বা রেসপেক্ট ডিপেন্ড করে দুইটা জিনিসের উপরে – কে কতো টাকা কামাই করেন বা কতো টাকার মালিক, আর পলিটিক্যাল ক্ষমতা কতোটা।

এইখানে নারী, পুরুষ বিভেদ নাই। টাকাওলা বা পলিটিক্যাল পাওয়ারওলা মহিলার বরং হার্শ হওয়া লাগে অনেকসময়, উনার যে টাকা বা ক্ষমতা আছে, সেইটা বুঝানোর লাইগা। মানে, পাওয়ারের কাছে জেন্ডার কোন ইস্যু না, কিন্তু হিস্ট্রিক্যালি নারীদের যেহেতু সম্পত্তিতে ভাগ কম, কামাই করার জায়গাগুলাতে এবং পলিটিক্যাল এক্টভিটিগুলাতে পার্টিসিপেশন কম, খুব বেশি টাকাওলা এবং ক্ষমতাবান নারী আমরা দেখতে পাই না।

আমি বলতে চাইতেছি, প্রাইমারিলি সমস্যা’টা ক্ষমতার, জেন্ডারের না। এই ফ্যালাসির জায়গাটা কন্সিডার করাটা দরকার। টাকা-পয়সা ও পলিটিক্যাল ক্ষমতাটার জায়গাটারে হাইলাইট না কইরা ‘বিটিং এরাউন্ড দ্য বুশ’ পলিটিক্যালি একটা শয়তানি ঘটনাই হওয়ার কথা।

সেকেন্ড জিনিস হইতেছে, ক্ষমতা মানেই খারাপ! যিনি টাকা কামাই করেন বা ইনহেরিয়েট করছেন অথবা যিনি পলিটিক্যালি পাওয়ারফুল, উনি ‘খারাপ-লোক’! এই অনুমান ৯৯% কেইসেও যদি সত্যি হয়, ‘জেনারেল ট্রুথ’ হিসাবে নেয়াটা ঠিক হবে না। এইটা সত্যি যে, ক্ষমতার হেল্প ছাড়া, টাকা-পয়সার ব্যাক-আপ ও পলিটিক্যাল পাওয়ার ছাড়া কোন ক্রাইম কইরা পার পাওয়াটা মুশকিল; কিন্তু ‘এইগুলা হইতেছে ক্রাইম করার টুল’ – এই অনুমান করার সময় সাবধান থাকা দরকার আমাদের।

এইটাও বুঝতে পারা দরকার যে, ক্ষমতারে হেইট করা দিয়া এর কোন সলিউশন নাই, বরং ক্ষমতার জায়গাগুলা যেইভাবে শয়তান হয়া উঠতে পারে, সেই জায়গাগুলারে আমরা চেক করতে পারি নাই, একাউন্টেবল করতে পারি নাই। আমাদের কাজটা এই জায়গাটায়।

#########

১৯৯০/৯১’র ঘটনাগুলা নিয়া এখনো পর্যন্ত কোন ইন্টেলেকচুয়াল বিচার নাই আমাদের দেশে। আমি দুয়েকবার বলার ট্রাই করছি যে, কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট ছিল বাংলাদেশের পলিটিক্সে সবচে সুইসাইডাল ডিসিশন; এর ভিতর দিয়া ডেমোক্রেসিরে পিপলস ডেমোক্রেসির দিকে নিয়া না আইসা, আমলা-পুলিশ-মিলিটারি-মিডিয়ার ইভিল-গ্রুপের হাতে তুইলা দেয়া হইছে। এইটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হইতে পারছে যে, এই ‘সুশীল সমাজ’রে হাতে রাখতে পারলেই ‘ডেমোক্রেসি’ কায়েম হয়, ভোটেরও দরকার পড়ে না!

এরশাদের পতন হইছে, কিন্তু ডেমোক্রেটিক সিস্টেম আমরা বানাইতে পারি নাই। আমলা-পুলিশ-মিলিটারি-মিডিয়ার মিকচারে এমন একটা বুরোক্রেটিক সিস্টেম আমরা পাইছি, যেইটা এরশাদের চাইতেও খারাপ।

দুই-চাইর-দশহাজার পজিশনে ‘নিজেদের’ লোকজনরে রাখতে পারলে বা অই লোকগুলারে খুশি রাখতে পারলেই গর্ভমেন্ট ফর্ম করা যায়, টিকায়া রাখা যায়। ইলেকশনের জায়গায় সিলেকশনের ডেমোক্রেসি চালু হইছে। যেইটা আইয়ুব খানের “বেসিক ডেমোক্রেসি”র চাইতেও খারাপ জিনিস। এইটা সম্ভব হইছে, অন্য অনেক কিছুর পাশাপাশি, ১৯৯১-এ কোন সাসটেইনেবল মডেল বা সরকারি-ব্যবস্থার কথা আমরা ভাবতে পারি নাই বইলা। এই জায়গাটা এখনো এড্রেস করা হয় নাই। কিন্তু ‘এরশাদের পতনের’ পরে ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের’ নামে সমাজের ‘আপার-ক্লাসের’ এই যে ইভিল-প্যাক্ট’টা তৈরি হইছে – এইটারে এটলিস্ট রিকগনাইজ করাটা দরকার।

 

ডিসেম্বর ৭, ২০২১

যে কোন জালিমের মতোই বাকশালের সবচে বিপদ হইতেছে – কোন exit পয়েন্ট নাই। পালানোর রাস্তা নাই।

গত ২৬শে মার্চে মাদরাসার স্টুডেন্টরা যখন মোদি’র ভিজিটের বিরোধিতা করতেছিল তখন পুলিশের থানাগুলার সামনে ট্রেঞ্চ বানায়া যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা হইছিল। এখনো যে কোন মুভমেন্ট হইলেই, এমনকি পাবলিক ট্রান্সপোর্টে হাফ-ভাড়ার কথা কইলেও, সেইটারে একস্ট্রিম পর্যায়ে নিয়া যাওয়া হয়, যেন গৃহযুদ্ধ লাগানোর কথা হইতেছে! (এইরকম একটা চেহারা দেয়ার ট্রাই করে বাকশালি-মিডিয়া।)
আর বাকশালও চায় একটা ‘গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করতে, সবসময় একটা প্যারানয়া জারি রাখতে; কারণ এইটা ছাড়া এর টিইকা থাকার কোন উপায় নাই। (টক্সিক লোকেরা যেইরকম কোনরকম ড্রামা ছাড়া কোন রিলেশন টিকায়া রাখতে পারে না, অনেকটা এইরকম।)

কিছু বলদ-বিপ্লবীরাও এতে তাল দিতে থাকে, একস্ট্রিম হওয়ার মদদ দিতে থাকে পলিটিক্যাল ফোর্সগুলারে। কিন্তু বিরোধিতার নামে এরা বাকশালের সাপ্লিমেন্টারি ফোর্স হিসাবেই কাজ করে। কারণ, একটা ‘জরুরি অবস্থা’ জুলুমের জন্য সবচে দরকারি জিনিস।

রোমানিয়ায় চশেস্কু’র পতনের ভিডিও আছে একটা। একটা লোক চশেস্কু’র কথার বিরোধিতা করে, তারপরে মিটিংয়ে শ’য়ে শ’য়ে লোক চেইতা যাইতে থাকে। তো, জালিমের পাওয়ার এইরকম একটা ফুঁ দিলে উইড়া যাবে আসলে। জাস্ট স্পার্ক লাগে একটা।

বাকশাল স্মার্ট না, বাকশালের কোন এগজিট পয়েন্ট নাই। কোন জালিমেরই সেইটা থাকে না। যার ফলে ড্রামার পরে ড্রামা বানায়া তারে বাটপারিগুলা টিকায়া রাখতে হয়। টোন উঁচা থিকা আরো উঁচা করা লাগে। মনে হইতে পারে, কি সুরে না জানি গান গাইতেছে! আসলে তার গলা ফাইট্টা যাইতেছে। রক্ত উইঠা মারা যাবে।

দে আর নট প্লেয়িং স্মার্ট, দে আর ট্রাইয়িং টু ক্রিয়েট অ্যা এগজিট পয়েন্ট। কিন্তু আনফরচুনেটলি, এইটা নাই। কোন জালিমের জন্যই পতন ছাড়া কোন এগজিট নাই, থাকে না।

#########

বেশ ডিস্টোপিয়ান টাইপের একটা এক্সপেরিয়েন্স হইলো আজকে। অনলাইনে ছোট একটা জিনিস অর্ডার করছিলাম। অরা বললো যে, নরমালি ২৪ ঘন্টাতেই ডেলিভারি দেয়, কিন্তু অর্ডারের চাপ আছে ৪৮ ঘন্টায় দিবে। ওকে! সাউন্ডস লজিক্যাল।

তো, গতকালকে রাতেই দেখি কুরিয়ার থিকা মেসেজ আসছে যে, উনারা আমারে দেয়ার লাইগা একটা প্রডাক্ট পাইছেন, যেইটা আমি অনলাইনে ট্র্যাক করতে পারি চাইলে। গুড! আমি দারোয়ানের কাছে টাকা দিয়া গেলাম সকালে। দুপুরে ভাবলাম মেসেজের লিংকটাতে ঢুইকা দেখি আসছে কিনা। ঢুইকা দেখি এলাহি কান্ড! রাত ১০:০৪ মিনিটে রিসিভ করছে, রাত ২:৩০ মিনিটে সেন্ট্রাল ডেসপাচে গেছে, ভোর ৪:১০ মিনিটে ডেলিভারি গোডাউনে গেছে, সকাল ১০:২৪ মিনিটে প্রডাক্ট ডেলিভারি হইছে, এবং টাকা বুইঝা পাইছে। এইরকম ডিটেইল ট্র্যাকিং দেইখা খুবই ইমপ্রেসড হয়া গেলাম।

রাতে ৯টায় বাসায় ঢুইকা দেখলাম, কেউ কিছু কয় না। মেয়ে’রে জিগাইলাম, কিছু পাইছে নাকি কুরিয়ার থিকা। কইলো, না। আমি সেকেন্ড টাইম জিগাইলাম, আসলেই কিছু দিয়া যায় নাই? বিরক্তই হইলো শে। কুরিয়ার থিকা কেন কিছু আসবে? আর দিলে তো বলতোই! আমি তখন অবাক হয়া দারোয়ানরে ইন্টারকমে ফোন লাগাইলাম, কিছু ডেলিভারি দিয়া যায় নাই! সে-ও না করলো। আমি তারেও জিগাইলাম, আসলেই দিয়া যায় নাই কিছু! যদিও তার ফল্ট না, কিন্তু সে সরি-ই হইলো, তার কোন দোষ আছে কিনা, বুঝতেছিল না।

অই পেইজে মেসেজ দিলাম, প্রডাক্ট তো পাই নাই, আজকে ডেলিভারি দেয়ার কথা ছিল। একটু পরে অরা সরি বইলা রিপ্লাই দিলো, আগামীকালকে ডেলিভারি দিবে। কিন্তু আমার অবাক হওয়ার ঘটনাটা তো অদেরকে বুঝাইতে পারার কোন উপায় নাই।

মানে, আমার বিশ্বাসই হইতেছিল না! এতো সুন্দর ট্র্যাকিং! সবকিছু এতো ঠিকঠাক, প্রডাক্ট’টাই খালি নাই! ঘটনাটা বর্ণনা সব ডিটেইল আছে, বাস্তবেই ঘটে নাই!

#########

বিপ্লব বা revaluation [পড়েন, নয়া বাকশালের পতন] কোনদিন হবে, কেমনে হবে – এইটা নিয়া ভাবার কিছু-নাই না, বরং এইগুলা নিয়া আলাপ তো হইতেই পারে; কেমনে এই জালিমের জন্ম হইলো, কেমনে এইটা টিইকা আছে, আর ফাংশন করতেছে।… মানে, পাস্ট অ্যান্ড প্রেজেন্ট – আলাপের বিষয় হইতে পারবে না, এইটা আমার পজিশন না।

কিন্তু আমার মেজর কনসার্ন হইতেছে বিপ্লবের পরের দিন [পড়েন, নয়া বাকশালের পতনের পরে] কি হবে? অইটা হইতেছে সবচে ক্রুশিয়াল।

এমন না যে কোন ‘বিকল্প’ নাই, বরং এতো জুলুম, জালিয়াতি আর ডিসরেসপক্টের কারণে যেকোনকিছুই, এনিথিং অ্যান্ড এভরিথিং এই আন-ফেয়ার সিস্টেমের চাইতে বেটার – এইরকম একটা জায়গাতে আমরা পৌঁছাইতে পারছি এখন। এরপরে যেইটাই আসবে, সেই পলিটিক্যাল ফোর্সটা যদি কিছু না-ও করে, সেইটারে বেটার মনে না হওয়ার কোন কারণ নাই।

আবার এইটাও না যে, বেটার কোনকিছুর কথা আমরা ভাবতে পারতেছি না বইলা এই জুলুমের শেষ হইতেছে না, বা কোন নেতা নাই বইলা… এই সেই। আমি বলতে চাইতেছি, ধরেন, বিপ্লব [পড়েন, নয়া বাকশাল নাই] হয়া গেল, এর পরের দিন কি চাইতেছেন আপনি?

যা চাইতেছেন তার সবগুলা যে হইতে হবে – তা না, কিন্তু এই চাওয়াটারে যতদূর পর্যন্ত ডিফাইন করা যাবে, ততদূর পর্যন্তই আমাদের ফ্রিডমের এরিয়া আসলে। এই কারণে যতটা ডিটেইল হইতে পারা যায়, ততটাই বেটার।…

 

ডিসেম্বর ৮, ২০২১

– বাংলায় তরজমা করার সময় যেই জিনিসগুলা খেয়াল করতে পারেন –

[আমি ট্রান্সেলটর না। কিন্তু আমি মনে করি, সব রাইটারই আসলে একটা লেভেলের ট্রান্সলেটর, কিছু না কিছু তরজমা করতেছেন, লেখতেছেন। নিজের লেখার পরে, ইন্টারপ্রেট করার পরেও চিন্তার একটা জায়গা আছে তরজমা করার; যেইটা এই দুইটা জিনিসরেও ইনক্লুড করে।

এইরকম জায়গা থিকা কিছু জিনিস আমি ট্রান্সলেট করছি। করতে গিয়া কিছু জিনিস খেয়াল করছি। তো ভাবলাম, বইলা রাখা যাইতে পারে। যিনি বা যারা তরজমা করেন, উনারা নিজেদের মতো কইরা এই জিনিসগুলারে অনুবাদ কইরা নিতে পারবেন – এই আশা আমার আছে।]

১. শব্দের তরজমা করবেন না। কথা বা মিনিংয়ের তরজমা করবেন। আরো ভালো হয় যদি সুরের তরজমা করতে পারেন।

২. দুইটা কনটেক্সটই খেয়াল করবেন। কোন সময়ে, কোন সমাজে, কার জন্য এইটা লেখা হইছিল। আর আপনি কোন সময়ে, কোন সমাজে বইসা, কার জন্য কথাগুলা আবার শোনাইতে চাইতেছেন। [মানে, সব কাজ তো নিজের জন্যই – এই মহান ফাইজলামির বাইরেই।]

৩. একজন ট্রান্সলেটর হইতেছেন একজন এডভান্স রিডার, ইন্টারপ্রটারও অনেক সময়।

৪. রেফারেন্স বা সুতাগুলা খেয়াল করবেন। একটা লেখার বা কথার রেফারেন্সগুলাতে যত যাইতে পারবেন, তত এর লগে ভালো কানেক্ট করতে পারবেন।

৫. কানেকশনটাই আসল, তবে স্কিলটাও অদরকারি না।

৬. তরজমা করতে গিয়া নতুন শব্দ বা টার্ম বানানোর চাইতে ভাষার পুরান শব্দগুলারে নতুন মিনিংয়ে নিয়া আসার ট্রাই করবেন। এইটা বেটার প্রাকটিস। না পারলে অই ভাশার শব্দটাই রাখবেন। এইটা সেকেন্ড চয়েস।

৭. নিজের ইমোশন ইনসার্ট করবেন না। এইটা কবিরা গুনাহ। বরং টেক্সটের সুরটারে ফলো করবেন, যতোটা পারা যায় নিজেরে অই সুরটার কাছাকাছি নিবেন।

৮. একটা ইন্ট্রো লেখবেন। আপনি নিজে কেমনে পড়ছেন, সেই পড়া’টা রিডার’রে হেল্প করবে পড়তে। রিডার তার মতো কইরা পইড়া নিতে পারবে তখন। অই জায়গাটা ক্রিয়েট হবে।

৯. তরজমা করা মানে মূল লেখাটার নকল করা বা একটা ইনফিরিয়র ভার্সন তৈরি করা না, একটা মোর রিডেবল জিনিস তৈরি করা বরং।

১০. এইগুলা কোন জেনারেল রুলস না। ২০২১ সালে বাংলায় তরজমা করতে হইলে এই জিনিসগুলা খেয়াল করতে পারেন। এইরকম।

#########

ভার্সিটিতে পড়ি তখন। একদিন বাসে কইরা বাড়ি থিকা ঢাকায় আসতেছি। বাসে আমার পাশে বসছেন সিনিয়র একজন বড়ভাই। উনি ল’তে পড়তেন। পরে জজ হইছেন। উনি আমারে অনেক সাজেশন দিতেছিলেন। আমিও শুনতেছিলাম। যখন বাসের কন্টাক্টার ভাড়া নিতে আসলো আমি আনইজি ফিল করতেছিলাম; আমি উনার ভাড়া’টা দিবো নাকি উনি আমার ভাড়া’টা দিবেন? এইরকম হেসিটেশন হইতেছিল। উনি-ই আমারে এই চিন্তার হাত থিকা মুক্তি দিলেন; কইলেন, তুমি তোমার ভাড়াটা দাও, আমি আমার’টা দিতেছি। হি ওয়াজ অ্যা গুড জাজ।

বিচার করা ইমোশনলেস কোন কাজ না, বরং সমাজের মানুশের ইমোশনরে ঠিক রাস্তায় নিয়া যাওয়ার একটা কাজ।

ফেসবুকে বেশি লাইক, শেয়ার পাওয়ার মতো লোকজনরে খুশি করা পলিটিক্সের কাজ হইতে পারে, কিন্তু সেইটা যদি একটা দেশের আইনের বিচার হয়া উঠে, বুঝতে হবে দেশে আইনের বিচার নাই।

আর একেকটা অবিচার, একেকটা অন্যায় আরেকটা অবিচার, আরেকটা অন্যায়রেই উসকানি দেয়, রিভেঞ্জরে একমাত্র বিচার বানায়া ফেলে, সমাজের ‘বিচার’ বানাইতে থাকে। জাস্টিসের জায়গাটারে আরো ন্যারো কইরা তোলে।

যে কোন মিডিয়া-ট্রায়ালের, মব-জাস্টিসের বিরোধিতা করার মতো জাস্টিসের এগেনেস্টে যে কোন পপুলার-বিচারের নামে পলিটিক্যাল এজেন্ডা ফুলফিল করার জায়গাটাতেও আমাদের সাবধান থাকাটা আরো বেশি জরুরি।

#########

পলিটিক্যালি আবরারের খুনের বিচার তখনই হবে, যখন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের রাজনীতি ব্যান করা যাবে। মানে, যতদিন বাকশালি শাসন আছে, যতদিন ছাত্রলীগ আছে, ততদিন এইরকম আরো খুন হওয়ার সম্ভাবনা তো সবসময়ই আছে, থাকতেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ছাত্র-সংগঠন যে এই দাবিটাও করতে পারে নাই, এইটারে একটা ‘সাহসের অভাব’ হিসাবে না দেইখা বাকশালি ন্যারেটিভ’টারে (যেইটা এই জুলুমের কোর, তারে) মাইনা না নিতে পারার ভুল হিসাবে দেখতে পারাটাই মনেহয় ঠিক হবে।

 

ডিসেম্বর ৯, ২০২১

আগে আমি অবাক হইতাম, এখনো অবাক হই, যখন খেয়াল কইরা দেখি যে, কিছু মানুশ খুবই ভালো ডিসিশান নিতে পারেন; ভালো বলতে যেইটা যুক্তির দিক দিয়া ন্যায়সঙ্গত, সবার জন্য ভালো এবং নৈতিকভাবেও খুবই ঠিক। তো, এইটা কন্টিনিউয়াসলি, বারবার কিভাবে নেয়া সম্ভব? ভাবতে গিয়া মনে হইছে, যার লং-টার্ম ভিশন ক্লিয়ার, তার শর্ট-টার্ম একশনগুলাও ঠিকঠাক হয় অনেক।

একটা ‘সেন্স অফ গুড’-এর ব্যাপার তো থাকাই লাগে ব্যাকগ্রাউন্ডে; তারপরে এক্টের জায়গাতে যে কোন শর্ট-টার্ম একশনে যাইতে গেলেও যদি লং-টার্ম ইমপ্যাক্টগুলারে, ফ্যাক্টরগুলারে যতবেশি কন্সিডার করা যায়, তখন এক্টের জায়গাগুলাতে মেবি কম-ভুলের একটা প্রাকটিসে যাওয়া পসিবল।

মানে, ব্যাপার’টা এন্ডলেস প্যারামিটারের কম্বিনেশন না, বরং দুই-চাইরটা জিনিসই শেষমেশ, যেইগুলা অনেক বড় ডিফরেন্সের জায়গাগুলারে তৈরি করে।

একটা উদাহারণ দেই, বাংলাদেশের গর্ভমেন্টে যেই পলিটিক্যাল পার্টিই আসে, উনাদের উদ্দেশ্য কখনোই পিপলের জন্য ভালো কিছু করা না, বরং কিভাবে ক্ষমতায় থাকা যায় এবং ধইরা রাখা যায়, সেইটা এনশিওর করা। এখন উদ্দেশ্য হিসাবেই যদি এইটা না থাকে, আপনি কেমনে তারে ‘ইন-এফিশিয়েন্ট’ দাবি করতে পারেন! যে, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে স্টুডেন্টদের জন্য হাফ-পাসের ব্যবস্থা করে না, রোড-ঘাটে সেফটির জন্য কাজ করে না। মানে, এইটা তো তার কাজকামের উদ্দেশ্যের মধ্যেই নাই! বা ততটুকই আছে, যতটা তারে ক্ষমতায় থাকতে হেল্প করবে।… এইরকম, এইটা একটা প্যারামিটার; যে আপনি কি করতে চাইতেছেন আসলে। যদি তার উদ্দেশ্যেই হয় ক্ষমতায় থাকা, পিপলের ভালো করতে চাইলে তো এই গর্ভমেন্টরে সরাইতে হবে আগে, তা নাইলে তো হবে না!

তো, এইরকম ৪/৫টা জিনিসরেও যদি খেয়াল করা যায়, পুরাটা না হইলেও অনেক দূর পর্যন্ত ক্ল্যারিটি পাওয়া পসিবল।…

#########

এই জিনিসটা এখন একটা বাজে টেনডেন্সি হিসাবে এস্টাবলিশড হইছে যে, যে কোন কিছুর আরেকটা ‘পারসপেক্টিভ’ হাজির করতে পারতেছেন বা ‘সমালোচনা’ করতে পারতেছেন বইলা যেন অই জিনিসটারে বাতিল কইরা দিতে পারতেছেন!

কোনকিছুর ‘সমালোচনা’ করা যাবে না, বা অন্য কোন পারসপেক্টিভের খোঁজ করা যাবে না – তা তো না-ই; এইটা না করতে পারাটাই বরং বড় একটা সমস্যা, যা চলতেছে, তারে মাইনা নেয়াটা; কিন্তু একইসাথে একটা জিনিসের কিছু ফ্ল আছে বইলাই সেইটা বাতিল – এইটারেও একটা প্রবলেম হিসাবে মার্ক করতে চাই আমি। কারণ এই টেনডেন্সিটা খালি এক্ট করার জায়গা থিকা আমাদেরকে দূরে সরায়া রাখে না, বেশিরভাগ একটা অজুহাত হিসাবে কাজ করে, কথার প্লেজারের মাঝখানে বন্দি-থাকার জায়গাটাতে আটকায়া রাখে। এমনকি একটা ‘তর্ক’ করার টেনডেন্সি অনেকসময় ইগো-বুস্ট করা ছাড়া তেমনকিছু করতেও পারে না। মানে, এই জায়গাগুলারে ‘ভালো ভালো’ ‘পোস্টমর্ডান’ ‘জ্ঞানের তরিকা’ এই-সেই দিয়া গ্লোরিফাই করার লগে লগে অন্য ইউজগুলা নিয়া সাবধান থাকাটা ভালো। হকিস্টিক দিয়া হকি না খেইলা মারামারি করলে, চাপাতি দিয়া গরুর মাংস না কাইটা মানুশ খুন করলে হকিস্টিক বা চাপাতি’র দোষ না আর কি! এইরকম।

এইখানে একটা কাহিনি মনে হইলো। মাওলানা রুমি’র কবিতাতে আছে, নবী মুহাম্মদ (স.)-এর কাহিনি। কোন হাদিস না এইটা। উনি কোন একটা সোর্স থিকা শুইনা বলছেন। ঘটনা’টা এইরকম – নবী মদিনা’তে কয়েকজন গোত্রের হেড-পারসনদের লগে জরুরি একটা আলাপ করতেছিলেন, তখন একজন ভিখারি আইসা উনার লগে কথা কইতে চাইতেছিল, উনি পরে কথা বলবেন এইটা দুই-তিনবার বলার পরেও সে তাগাদা দিতেছিল; তখন উনি একটু কড়া গলাতেই কইলেন, দেখো আমি একটা ইম্পর্টেন্ট আলাপ করতেছি এইখানে, তোমার লগে পরে কথা কইতেছি! অই লোকজন এবং ভিখারি চইলা যাওয়ার পরে একজন নবী’রে কইলো, সব মানুশ তো আপনার, অই গরিব লোকের লগে এইরকম করাটা কি ঠিক হইলো আপনার? তখন রুমি কইতেছিলেন, এই যে অভিযোগ’টা এইটা হক-কথা বলার ঘটনা না, বরং অপমান করার টেনডেন্সি একটা।

এই ডিফরেন্সগুলা খেয়াল করতে পারা, আলাদা করতে পারাটা দরকারি একটা ঘটনা, সবসময়।

 

ডিসেম্বর ১০, ২০২১

একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালের কাজ আসলে লোকজনরে খেপায়া দিতে পারা বা ইমোশনালি মুভ-অন করানো না এতোটা; মানে, করতে পারলে তো ভালোই, কিন্তু এইটা তার প্রাইমারি টাস্ক না বইলাই আমি মনে করি। বরং ‘পয়েন্ট অফ কনসার্নগুলারে’ হাইলাইট করতে পারাটা হইতেছে ঘটনা। মানে, কমিউনিকেশনের চাইতে ক্রিয়েশনের জায়গাটাতে নজর দিতে পারাটা তার কাজ। এমনিতে মিডিয়ামগুলাতে পারফর্ম করতে পারাটা তো অনেক সময় অন্য একটা স্কিল সেটেরই ঘটনা।…

#########

রাস্তা-ঘাটে বাইর হইলেই দেখা যায়, লোকজনের আন-হ্যাপি ফেইস। সবাই বিরক্ত, কোন না কোন কারণে। হাসি-খুশি মানুশ-জন যে নাই – তা না, কিন্তু তাদের ডিস-স্যাটিসফেকশনগুলাও চোখে পড়ে।

দেশের, সমাজের, চারপাশের এইরকম একটা বাজে টাইমে লোকজন যে হাসি-খুশি হইতে রাজি নাই, বা স্যাটিসফাইড হইতে হইলে যতোটা dumb ও asshole হইতে হয়, ততটা হওয়ার জায়গাতে যাইতে পারতেছে না, অইটা একটা আশা বা হোপফুল হওয়ার জায়গাই মনেহয়।

মানে, আমার ওভার-প্রজেকশন তো আছেই কিছু এইখানে; কিন্তু কিছুটা রিয়ালিটিও থাকতে পারার কথা। এই ডিস-স্যাটিসফেকশন কোন ভালো জিনিস না, কিন্তু অ-দরকারিও মনেহয় না কোন সময়।

Leave a Reply