নোটস: নভেম্বর, ২০২২ [পার্ট ১]

নভেম্বর ০৪, ২০২২

হিস্ট্রিতে খেয়াল করলে দেখবেন, কোন পলিটিক্যাল লিডার কোন কথা কইছিলেন, অইগুলা খুব ইম্পর্টেন্ট কিছু না। (দরকারি তো অবশ্যই।) যেমন ধরেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা বা জিয়াউর রহমানের ১১ দফা, এইগুলা তো কাগজে-কলমে আছেই, কিন্তু এই নীতি-আদর্শ-এজেন্ডা দিয়া উনাদেরকে এতোটা যাচাই করি না আমরা। একজন লিডার’রে আমরা চিনি তার কাজকাম দিয়া। (আবদুল হামিদ খান ভাসানী ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলাতে কোন ডিসিশান নিতে পারেন নাই, উনি ভালো-মানুশ এবং রেসপেক্টবল-পারসন হওয়ার পরেও গ্রেট লিডার হইতে পারেন নাই। যা-ই হোক, সেইটা অন্য আলাপ-ই একটা…) কি কি কাজ একজন পলিটিক্যাল লিডার করছেন বা করতেছেন – এইটা হইতেছে ক্রুশিয়াল ঘটনা।

এখন কাজ তো আর চিন্তা-ভাবনা ছাড়া হয় না। যা-ই উনারা ভাবছেন, সেইটার এক্সিকিউশন কেমনে করছেন, কতোটা এফেক্টিভলি করছেন, ইমপ্যাক্টফুল হইতে পারছেন, সেইটা হইতেছে উনাদের গ্রেটনেসের ঘটনা।

আবার দেখেন, শেক্সপিয়র কয়টা বিয়া করছেন? তলস্তয় কতজন কৃষকরে পিটাইছেন? হেমিংওয়ে কয়টা খুন করছেন ওয়ার-ফিল্ডে? বা শিম্বোরোস্কার কয়টা বয়ফ্রেন্ড ছিল? এইগুলা জানার বা বলাবলির একটা প্লেজার থাকলেও এইগুলা খেয়াল করার দরকার পড়ে না আমাদের, ততো একটা। উনাদের কি বলছেন বা লেখছেন – সেইটা মোর ইম্পর্টেন্ট, উনারা কি করছেন, তার চাইতে। কারণ উনারা কাজই করছেন আইডিয়ার জায়গাগুলা নিয়া।

আমি বলতে চাইতেছি, একজন পলিটিক্যাল-লিডারের রাইটিংস এবং একজন রাইটারের এক্ট (বা কাজকাম) ইম্পর্টেন্ট না – তা না, এর ইমপ্যাক্ট তো থাকেই সবসময়ই; কিন্তু এইগুলা পয়েন্ট অফ কনসার্ন না। এইগুলা বেশিরভাগ কেইসেই প্রফেট বানায়া তোলার ক্রাইটেরিয়া, বা ইমপ্যাক্টের জায়গাগুলারে ছোট-কইরা দেখানোর ঘটনা।

মানে, সব ইনফিনিটি যেমন একই না, সব গ্রেটনেসই তো সমান না! ডিফরেন্ট ক্রাইটেরিয়ার ভিতর দিয়া যে আমরা দেখি, সেইটা খালি ইনকমপ্লিট ঘটনা না, বরং মোর ‘হিউম্যান’ একটা অবস্থাও।…

***

আহমদ ছফা’র আরেকটা বাজে-বাণী আছে এইরকমের যে, বুদ্ধিজীবীদের কথা শুনলে বাংলাদেশ কোনদিন স্বাধীন হইতো না, এই টাইপের।
তো, ইন্টেলেকচুয়ালদের কথা, পলিটিশিয়ানদের এক্ট আর পিপলের মর্জি – এইগুলা তো কোনদিনই একই জিনিস না! বরং আগের দুইটা পরেরটারে ইনফ্লুয়েন্সই করতে চায়। এবং কোন না কোনভাবে শেইপ-আপ করে। কোন সময় পারে, কোন সময় পারে না।

আর এইগুলা লিনিয়ার বা একতরফা জিনিস না। সব বুদ্ধিজীবীদের কথা একই রকম না। সব পলিটিক্যাল পার্টির আদর্শ, আইডিওলজি, এক্টিভিটিও।

তবে এইটা তো আন-ফরচুনেট ঘটনাই যে, বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালরা বাংলাদেশের মানুশের পালস বা মর্জিরে কখনো ধরতে পারেন নাই, বা কাছাকাছি যাওয়ার ট্রাইও করতে পারেন নাই। কারণ আমাদের সোসাইটিতে এমন একটা গ্রুপ অফ পিপলই ‘বুদ্ধিজীবী’ হয়া আছেন বা হইতে পারেন যারা পিপলের লগে কানেক্টেড হইতে পারেন না, বরং সুপিরিয়র সোশ্যাল পজিশন নিতে পারেন। আর এইটা এক ধরণের ডিস-কানেকশনের ভিতর দিয়াই উনাদের বুদ্ধিজীবীতা এফেক্টিভ থাকে। মানে, বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীতা বা ইন্টেলেকচুয়ালিটির স্পেইসটা এই রকমের একটা ঘটনা।

যার ফলে, বুদ্ধিজীবীদের কথা শোনার খুব একটা দরকার পড়ে না আসলে বাংলাদেশের মানুশের। অইটা কম-বেশি আজাইরা আলাপ বা এন্টারটেইমেন্টেরই ঘটনা, ফাংশনের দিক থিকা।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের মানুশ বুদ্ধিজীবীদের কথা শোনে নাই – ঘটনা এইটা না, বরং এইখানে বুদ্ধিজীবীরা মানুশের লগে কথাও কয় না, তাদেরকে ইনফ্লুয়েন্স করতে চায়-না না, ফ্যান-ফলোয়ার হিসাবেই চায়। ইন্টেলেকচুয়াল শেইপ-আপের কোন ঘটনা এইখানে নাই তেমন একটা।

তো, আহমদ ছফা যেই জায়গা থিকা দেখছেন, সেইটা একটা আইডিয়াল জায়গা, যে একটা সমাজের বুদ্ধিজীবীরা সেই সমাজের মানুশের ফর-এ কথা বলবে! হাউএভার, এই ঘটনাটাই এইখানে ঘটে না। মোরওভার, উনার এই যে একটা আইডিয়াল, সহি বা অরিজিনাল জায়গা থিকা দেখতে চাওয়া, সেইটা মেবি উনি উনার গুরু আবদুর রাজ্জাকের কাছ থিকাই পাইছেন। যেইটা চিন্তার পদ্ধতি হিসাবে এক রকমের অবস্টেকলই একটা।…

নভেম্বর ০৬, ২০২২

ম্যাসেঞ্জারে নরমাল-মেসেজ থ্রেডের বাইরে তো আরেকটা ফোল্ডার আছে “পিপল ইউ মে নো” নামে, কিন্তু এর পরে যে spam একটা ফোল্ডার আছে, অইটা খেয়াল করি নাই আগে। তো, অইখানে একটা ইন্টারেস্টিং মেসেজ পাইলাম। মাসখানেক আগের হবে।

একজন জানাইতেছেন যে, আমার পোস্ট অনেক সময় উনি কপি কইরা নিজের ওয়ালে দেন, আমার নাম না দিয়া। সেইটা আমারে জানাইছেন। (উনি হয়তো এই পোস্ট’টাও দেখবেন, যেহেতু কপি করেন।) তো, জিনিসটাতে অবাক হওয়া বা রাগ হওয়ার চাইতে ইন্টারেস্টিংই লাগলো। উনার ওয়ালে গিয়া দেখলাম, আসলেই ঘটনা সত্য! উনার কিছু ফ্রেন্ডদের রি-একশন, কমেন্টও আছে। কিন্তু আমার আইডি’র মতোই অবস্থা, খুব একটা যে পপুলার হইতে পারতেছেন, তা না!

অনেকের লেখা/পোস্ট তো শেয়ার করি-ই আমরা। অনেক সময় যার লেখা, সে যদি খুব বেশি পরিচিত না হয় বা তারে যদি ‘বিখ্যাত’ না কইরা তুলতে চাই তাইলে “কোটেশন” মার্ক দিয়া শেয়ার করা হয়, কালেক্টেডও লেখা হয়। কিন্তু নিজের লেখা দাবি করাটা তো বাজে-ঘটনাই।
স্কুল-কলেজে দেখছি নজরুল-রবীন্দ্রনাথের কবিতা অনেকে নিজে লেইখা ছাপাইতো। কিন্তু যেহেতু অইগুলা অনেকে জানে বা পড়ছে, পরে কম-পরিচিত রাইটারদের লেখা (ধরেন, রবীন্দ্র গোপ) অনেকে দিতেন। মানে, অন্য অনেক কিছুর লগে একটু কবি-পরিচয়ের 🙁 ডিজায়ারও থাকতে পারে, অনেকের মনে।

তো, এইটা একটা মন-খারাপের ঘটনাই। যে, একজন লেখক-পরিচয় চাইতেছেন একটু, আর সেইটার জন্য কম-পরিচিত একজনের লেখা কপি করে যাইতেছেন, যারে তার ফ্রেন্ড-সার্কেলের কেউ তেমন একটা চিনে না! মানে, লেখক হিসাবে আমি যে কম-পরিচিত 🙂 এই দুক্খের জায়গা থিকা বলতেছি না! 😛 জিনিসটা একটা মিক্সড ফিলিংসই দিছে আমারে।

তবে আরেকজন কবি’র কান্ড-কারখানা দেইখা মেজাজ খারাপ হইছিল। সে করতো কি, আমার কয়েকটা লাইনের আগে-পরে নিজের কয়েকটা লাইন জোড়া দিয়া, কবিতা লেখতো। বইও ছাপাইছে বেশ পরিচিত একটা পাবলিশার থিকা! আমি ব্লক কইরা দিছি দেইখা। এখন অন্য আইডি দিয়া স্টক করলে আমার তো কিছু করার নাই। সে নিজেই কবিতা লেখতে পারে। আমার কবিতার লাইন নেয়ার কোন দরকার তার ছিল না!
এইরকম জিনিস লেখালেখির শুরুতে হয়। এমনকি একজনের আইডিয়া নিয়াও আরেকজন লেখে। একজনের ধারণারে নিয়া আরেকজন। কিন্তু জিনিসগুলা টের পাওয়া যায়, একটা স্টেইজের পরে। ধার-করা আইডিয়া, প্যাটার্ন, ভঙ্গিমা নিয়া বেশিদূর পর্যন্ত তো যাওয়া যায় না। আবার, একজন রাইটার যার নিজের একটা জায়গা আছে, অন্যদেরটা নিলেও নিজের জায়গাটা থাইকাই যায়।… বেশ কিছু আলাদা রকমের ঘটনাই এইখানে আছে।

মানে, সবকিছুই কপি না। বা কপি করতে করতে একটা নতুন কিছু তৈরি হইতেছে না। অনেক সময় কিছু লাইনও ক্রস কইরা যাইতে পারে। একই সময়ে রেডিও দুইজন আবিষ্কার করছিলেন না! এইরকমও হইতে পারে।

তো, আমি আসলে একটু শরমিন্দাও। এইরকম কপি হইতে পারাটা কোন প্লেজার আমারে দিতেছে না আর কি! বরং এর মধ্যে যে মালিকানা থাকতেছে, সেইটা নিয়া একটা কনফিউশন যে তৈরি হইতে পারে, রিডার’স পারসপেক্টিভ থিকা, সেইখানে গিয়া ভাবতেছি, মোটামুটি খামাখা জিনিসই একটা!

***

একজন ফ্রেন্ড জিগাইতেছিলেন, বাংলাদেশে অফিসিয়ালি দুর্ভিক্ষ ডিক্লেয়ার করা হবে কখন? 🙂

তো, উনারে বললাম, দুর্ভিক্ষ তো এখনই চলতেছে! গর্ভমেন্ট কি আর স্বীকার করবে সেইটা! দাম যে বাড়তেছে জিনিসপত্রের, সেইটাই তো একটা ইন্ডিকেশন যে, সাপ্লাই নাই!

পরে বললাম, মেবি এই মাসের ৩০ তারিখের দিকে বাজারে জিনিসপত্র নাই হইতে শুরু করবে। কারণ, বাজারের ফ্লোর স্টক মাসখানেকের মতো থাকার কথা, ইমপোর্ট তো বন্ধ এখন মোটামুটি (নাকি?); তো, মাসখানেকের মধ্যে সাপ্লাই না থাকাটা স্পষ্ট হইতে পারবে। সেইটারে “অফিসিয়াল” ডিক্লারেশন বলা যাইতে পারে।

এখন কোন আইটেমের কতো মজুত আছে, সেইটা তো আমরা জানি না; মানে, আমাদেরকে জানানো হয় না। ইমপোর্টেরও ব্যাপারেও একই অবস্থা, মানে, কোন ইনফরমেশন আমরা জানি না। আন্দাজ কইরাই বললাম।

তো, এখন বেশি বেশি জিনিস কিইনা স্টক কইরা রাখলে এর থিকা বাঁচা যাবে না, বরং প্যানিকই হবে সেইটা। কি জানি একটা কথা আছে – “নগরে আগুন লাগলে দেবালয় কি রক্ষা পায়!” তো, এইটা পুরাপুরি ঠিক না। ৩০ টাকার আটা ৭০ টাকায় অনেকে কিনতে পারতেছেন, ১০০ টাকা দিয়াও অনেকে পারবেন। রুটি না থাকলে কেক খাইবেন, এইরকম লোক তখনো থাকবে।

কোন দুর্ভিক্ষই মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চলে না। কিন্তু এর মধ্যেই অনেক মানুশ না-খাইয়া, কম-খাইয়া, রোগে-শোকে মরার দিকে যাইতে থাকবে। দুর্ভিক্ষ তো শেষ হবেই। তবে দুর্ভিক্ষ যখন চলতেছে তখন তারে গোপন করতে পারাটাই হইতেছে ঘটনা। যার ফলে, বাংলাদেশে ‘অফিসিয়ালি’ দুর্ভিক্ষ কখনোই আসবে না!

তবে আমার ভয় হইতেছে, একটা লং-টাইম দুর্ভিক্ষের মধ্যে পইড়া যাইতে পারি আমরা। বাংলাদেশের মানুশের একটা বড় অংশ একবেলা খায়া না-খায়া থাকার অবস্থাতে পইড়া যাইতে পারে, যদি ইকোনোমিক অবস্থাটা এইরকম লুটপাটের ভিতর দিয়াই চলতে থাকে।

নভেম্বর ০৮, ২০২২

রাশিফল

১৯৯০’র দিকেও সাপ্তাহিক/পাক্ষিক ম্যাগাজিনগুলাতে রাশিফল ছাপা হইতো। এমনকি বইও ছাপা হইতো পঞ্জিকার মতো, নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে। নিউজ-স্ট্যান্ডগুলাতে বেচা হইতো। কাওসার আহমেদ চৌধুরী’র রাশিফল তো একটু ‘সাহিত্যিক’ ছিলই, কিন্তু পপুলার ছিল মনেহয় ‘মহাজাতক’র।

তো, খালি সবগুলা রাশি’র প্রেডিকশনই ছাপা হইতো না, সেলিব্রেটিদের, এমনকি পলিটিক্যাল নেতাদেরও ব্যাপারেও বলা হইতো। ১৯৯০’র পরে বা আগে মনেহয় এইরকম একটা রাশিফল ছাপা হইছিল খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার। খুব আবছাভাবে মনে আছে, একজন জোতিষী (মহাজাতক কিনা শিওর না) বলতেছিলেন, খালেদা জিয়া পলিটিক্যাল ক্যারিয়ারে খুব বিপদে পড়বেন ২০১০’র পরে, আর শেখ হাসিনা খুবই পাওয়ারফুল পজিশনে থাকবেন, এইরকম। মানে, আমার ধারণা, ১৯৮৬-৮৭ টু ১৯৯৪-৯৫ এই সময়ের পত্রিকাগুলার বাৎসরিক রাশিফলগুলা খুঁজলে এই জিনিসগুলা কেউ পাইবেন।…

কিন্তু এইটা আমার কথা না যে, কোন একজন জোতিষী ‘সত্যি-কথা’ বলছিলেন, বা ফিউচার প্রেডিক্ট করতে পারছিলেন কোন সময়! বরং ব্যাপারগুলা যেইরকম দেখায় দূর থিকা কখনো একইরকম না!

এইটার ভালো একটা উদাহারণ হইতেছে ভাইকিংস সিরিজের কয়েকটা ঘটনা। অইখানে রেগনারের বড় ভাই রোলো খুবই বাজে-অবস্থায় থাকে, তখন জোতিষী তারে বলে তুমি তো প্যারিসের রাজা হইবা! সে আসলেই প্যারিসের রাজা হয়, কিন্তু অইটা আরো ওরস্ট একটা ঘটনা আসলে। আবার জোতিষী লাগার্তারে বলে যে, তার জামাই রেগনারের কোন পোলা তারে খুন করবে, কিন্তু অইটা খুবই একসিডেন্টাল একটা ঘটনাই হয়, লাগার্তার রেসপেক্টবল ডেথ না হইলেও সেইটা খুব অসম্মানের ঘটনা হয় না।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ফিউচার খালি একটা ইভেন্ট না। একটা স্ট্রিম অফ ইভেন্টসের মধ্যে একজন মানুশের পারসোনাল এচিভমেন্টগুলার ভিতর দিয়া এতোটা বুঝতে পারবো না আসলে আমরা। এতোদিনের পলিটিক্যাল ‘ফেইলওর’ এবং ‘সাকসেস’ দিয়া খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার জায়গাটারে যেমন আমরা ধরতে পারবো না আসলে, যেইরকমটা বলা হইছিল, রাশিফলের জায়গাটাতে।

***

কয়দিন আগে কলিম শরাফী’র মৃত্যু-বার্ষিকী আছিলো মনেহয়, আমার ফেইসবুকের নিউজফিডে কিছু পোস্ট দেখছিলাম। উনার গাওয়া “পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে” গানের ভিডিও’টা শেয়ার দিছিলেন কয়েকজন। তো, বলা যাইতে পারে, কলিম শরাফীরে মনে রাখার একটা কারণ হইতেছে এই গানটা।

কিন্তু এই গানটা লেখছেন কে? সুর দিছেন কেডা? 🙂 যেই লোক এই গানটা লেখছেন, সুর দিছেন, তিনি আরো গ্রেট আর্টিস্ট হওয়ার কথা না? বা সিনেমার সিন’টাও সুন্দর, এসথেটিক একটা ব্যাপার আছে। তো, সিনেমার ডিরেক্টরও প্রেইজ পাওয়ার কথা না?*

মানে, কলিম শরাফী’র ভরাট গলা তো ভালোই। কিন্তু এই গানটাই যদি উনার আর্টিস্টিক ব্রিলিয়ান্সের ঘটনা হয়া থাকে তাইলে খান আতাউর রহমান এবং সালাহউদ্দিনরেও তো এর চাইতে বেশি ক্রেডিট দেয়া দরকার! অথচ দেখবেন, উনাদের নাম-ই পাবলিক বলাবলি’র মধ্যে নাই। এবং কলিম শরাফী’র প্রেইজিংও এই গানের কারণে চালু নাই।

বরং উনি বাংলাদেশ-প্রবাসী কলোনিয়াল-কলকাতা-সাহিত্য-সমাজের লোক ছিলেন বইলা উনারে গ্রেট বানানোর একটা টেনডেন্সি বাংলাদেশের ‘শিক্ষিত’ মিডল-ক্লাস সমাজে চালু আছে। উনি ছিলেন ছায়ানটের লোক। রবীন্দ্র-পুরোহিত। এবং খান আতাউর রহমান সেইটা ছিলেন না। যার ফলে, খান আতাউর রহমানরে এতোটা গ্রেট ভাবতে আমাদের শরম লাগে। হোয়ার অ্যাজ, উনার লেখা লিরিকসে এবং মিউজিকে গান গাওয়া লোকরে সহজে গ্রেট মনে করতে পারি না আমরা।

তো, এইটা আর্টের রিকগনিশনের ঘটনা না এতোটা, সোশ্যাল-রিকগনিশনের ঘটনা আসলে। যেইটা আমাদের আর্টের জায়গাটাতে একটা অবস্টেকল হিসাবে কাজ করতেছে।

যেমন কয়দিন আগে মাসুম আজিজ নামে একজন অভিনেতা মারা গেছেন, তখন থিয়েটারের লোকজন অনেক উঁহ-আহ্ করছেন। তো, উনার আর্টিস্টিক ব্রিলিয়ান্সের ঘটনা হিসাবে হাইলাইট করা হইছিল যে, ভুপেন হাজারিকার একটা গান খুব দরদ দিয়া উনি গাইছিলেন! মানে, চিন্তা করেন! নিজে কোন গান লেখেন নাই, আরেকজনের আরেকটা গান সুন্দর কইরা গাইছেন বইলা উনি গ্রেট আর্টিস্ট!

মানে, খালি সিংগার বইলা বা অভিনেতা বইলা কেউ গ্রেট হইতে পারবেন না – এইরকম না, কিন্তু উনাদের এচিভমেন্টের জায়গাগুলা দেখেন! একটা কোন কাজও নাই তাদের নিজেদের, বলার মতো! আর এই ধরণের লোকজনরে আমরা গ্রেট বানায়া রাখতেছি, হাইলাইট করতেছি!
এই কারণে না যে, এর চে গ্রেট কোন ক্রিয়েশন নাই আমাদের লিটারেচারে, আর্টে; বরং অই ধরণের আর্ট-কালচারের জায়গাগুলারে ইনফিরিয়র কইরা রাখার জন্যই আর্টিস্টদের জায়গায় পারফর্মারদেরকে হাইলাইট করার ঘটনাগুলা ঘটে।

মানে, এইটাই পুরা ঘটনা না, কিন্তু এইটা সিগনিফিকেন্ট একটা পার্ট, আমাদের আর্ট-কালচারের জায়গাগুলার।

নভেম্বর ১০, ২০২২

বাংলাদেশের এখনকার পলিটিক্স নিয়া যারা কথা-বার্তা বলতেছেন, আমি বলবো এই ৭টা পয়েন্ট আপনারা খেয়াল কইরেন বা কন্সিডার করতে পারেন –

১. এখনকার যে নয়া-বাকশালের অবৈধ সরকার, তারা ১/১১’র অবৈধ-সরকারেরই একটা কন্টিনিউশন। অই সরকারের লগে হাত মিলায়া, তাদেরকে ইনডেমনিটি দিয়াই ক্ষমতাতে আসছে এবং থাকতেছে।

২. বাংলাদেশের সো-কল্ড গণমাধ্যম বা মেইনস্ট্রিম মিডিয়া এই নয়া বাকশালের একটা ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট। ডিজিএফআই’র ডরে এরা কথা বলতে পারে নাই এতোদিন – এইটা পুরাপুরি সত্যি কথা না। বরং নয়া বাকশালের ভোট-ডাকাতিরে এরাই বৈধতা দিয়া আসছে, এবং এখনো দিতেছে।

৩. দূতাবাসের রাজনীতি নিয়া সাবধান থাকা দরকার, সেইটা ইন্ডিয়া, ইইউ, আম্রিকা বা চীন, যেইটাই হোক। দূতাবাস-ব্যাকড যে কোন গর্ভমেন্ট বাংলাদেশরে একটা আ ফা ঘা নি স্তা ন বানানোর দিকেই নিয়া যাবে।

৪. অনেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি-শক্তির দোহাই দিতে চান এবং এইগুলা নিয়া অনেক অংক মিলাইতে চান। কিন্তু বাংলাদেশে যদি পিপল-এজেন্সিগুলা নতুন কইরা তৈরি করা না যায়, কোন বিদেশি-শক্তির সমর্থন বা অসমর্থন কিছুই মিন করবে না। বাংলাদেশে পিপল-এজেন্সিগুলারে ইন-এফেক্টিভ রাখার ভিতর দিয়াই নয়া-বাকশালের ক্ষমতার জায়গাটা লম্বা করা হইতেছে।

৫. জাতীয় পার্টির মতো কিংস-পার্টি বানানো হবে আরো কতগুলা, যারা এই ভয়েডটারে ফুলফিল করার কাজটা করে, ডামি-বিরোধীদল হিসাবে। এরা ডামি-পিপলের রোলটা প্লে করে। যেই পলিটিক্যাল পার্টিগুলার কোন পিপল-বেইজ নাই, তাদের পক্ষে ভাগ-বাটোয়ারা করা, কন্সপিরেসি করা সহজ।

৬. পিপল-পার্টিসিপেশনের জায়গাগুলা সংবিধান ঠিক কইরা, নতুন কইরা লেইখা, নতুন নিয়ম-কানুন বানায়া ঠিক করা যাবে না। চিন্তা-করা, কথা-বলা অবশ্যই জরুরি কাজ, কিন্তু পলিটিক্যাল এক্ট তার চাইতে বেশি জরুরি। দেশের মানুশ-জন যখন পলিটিক্যালি এক্ট করতে পারবে তখন পলিটিক্যাল চিন্তাগুলার লগে একটা রিলেশন তৈরি হবে। ব্যাপারটা আদার ওয়ে রাউন্ড না, এতোটা।

৭. নয়া বাকশালের চাইতে বিএনপি কোন বেটার অপশন না – এইটা ভুয়া কথা। বরং সবচে খারাপ ডেমোক্রেটিক শাসনও বাকশালি (ফ্যাসিস্ট) শাসনের চাইতে বেটার ঘটনা। আর বাঁচতে হইলে বাংলাদেশের মানুশের এখনকার একমাত্র পলিটিক্যাল কাজ হইতেছে নয়া-বাকশালের শাসনের বিরোধিতা করা, এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আজাবের হাত থিকা রক্ষা পাওয়া।

নভেম্বর ১২, ২০২২

– ইকোনোমিক থিওরি ও পলিটিক্যাল পাওয়ার –

কয়দিন ধইরা বাংলাদেশের এখনকার অবস্থা নিয়া ইকোনোমি-থিওরি বেইজড যেইসব আলাপ সেইখানে যে আমার না-রাজি এবং আপত্তিগুলা জানাইতেছিলাম, সেইটা Clara Mattei আরো স্পষ্টভাবে এক্সপ্লেইন করতে পারছেন বইলা আমার মনে হইছে। Ibrakor Jhilli-র শেয়ার করা একটা ভিডিও’তে গিয়া পয়লা উনার দেখা পাইলাম কয়দিন আগে। এর পরে উনার আরো দুয়েকটা ইন্টারভিউ/লেকচার শুনলাম। ইকোনোমিক থিওরি যে একটা পলিটিক্যাল টুলেরই কাজ করে – সেইটা আমি একটা দাবি হিসাবে কইলেও উনি তথ্য-উপাত্ত দিয়া সেইটা পরমাণ করছেন। ডিটেইলে বলতেছেন।

তো, উনার কথা-বার্তা শুইনা আরো তিনটা জিনিস মনে হইছে আমার –

১. চিন্তা-পদ্ধতি: ব্যাপারটা পুরাপুরি এইরকম না যে, একটা ফ্যাসিজমের এগেনেস্টে একটা লিবারালিজম এমার্জ করছিল, বা নিও-লিবারালরা ফেইল মারতেছে বইলা নিও-ফ্যাসিস্ট জায়গাগুলা তৈরি হইতেছে, বরং এই জায়গাগুলা কম-বেশি একই গ্রাউন্ডের, একটা সোশ্যাল-স্ট্রাকচারই খালি না, থট-প্যার্টানেরও ঘটনা। যার ফলে, কে কার পক্ষে বা বিপক্ষে আছে, সেইটা তেমন কিছু মিন করে না, অ্যাজ লং অ্যাজ চিন্তার ফ্রেম-ওয়ার্কটারে ভ্যালিড রাখা হইতেছে। কিন্তু মার্কসের ফ্রেমওয়ার্কটারে না নিয়া কোন উপায় ছিল না। ক্যাপিটালিজম এইটা নিতে পারছিল কেইন্সের ভিতর দিয়া।

২. কেইন্স: কেইন্স একটা স্ট্রং রেফারেন্স-পয়েন্ট, যেইটা আমার ধারণা মার্কসিস্টরা ওভার-লুক কইরা গেছেন। কেইন্স হইতেছে ক্যাপিটালিজমের পলিটিক্যাল-ইকোনোমি’র জায়গাটারে ওপেন করছেন। ইকোনোমি’তে স্টেইটের ইন্টারভেনশনের জায়গাটারে ক্রুশিয়াল কইরা তোলার ভিতর দিয়া ক্যাপিটালিজমরে একটা সেন্ট্রাল-কন্ট্রোলের দিকে আগায়া নিয়া যায় নাই, বরং পাওয়ার-স্ট্রাকচারের লগে রিলেটেড জায়গাগুলারে ইন্ট্রিগ্রেট করছে।

৩. অলিগার্কি (Oligarchy): ফ্যাসিজমে তো আছেই, লিবারালিজমেও যেইটা হয় পিপলস রিপ্রেজেন্টেশনের নামে একটা অলিগার্কিই তৈরি হয়। এই অলিগার্কি খালি পলিটিক্যাল অলিগার্কি না, কালচারাল এবং একাডেমিক অলিগার্কি’রও ঘটনা। ব্যাপারগুলা একসাথে ইন্ট্রেগ্রেটেড ওয়েতে কাজ করে, একটা আরেকটারে ফুয়েল দেয়, বাঁচায়া রাখে।

নভেম্বর ১৩, ২০২২

আমি খেয়াল কইরা দেখছি, মানুশের যেইটা সবচাইতে স্ট্রং-পয়েন্ট, সেইটাই হইতেছে তার সবচে বেশি ধরা-খাওয়া বা ভুল-করার জায়গাটা। (উল্টাটাও কিছুটা সত্যি, যেইটা একজন মানুশের সবচে উইক-পয়েন্ট, সেইখানেই সে ফ্লারিশ করতে পারে, সবচে বেশি না হইলেও, মোটামুটি অবাক-করার মতো কিছু কইরা ফেলতে পারে।)

যেমন ধরেন, কেউ খুব হিউমারাস, ভালো ফান করতে পারে, জোকস-টোকস বলতে পারে। দেখা যাবে, ফান করতে করতেই অনেককিছুরে ফার্সিক্যাল বানায়া ফেলতেছে! মানে, ‘ফান করতে হবে’ – এইটা সহজ-স্বাভাবিক হইতে হইতে লিমিট’টারে বাড়ায়া না নিলে সেইটা আর কাজ-ই করতেছে না, তার ক্ষেত্রে। (অবশ্য খুব জেনারেলি বলতেছি – এইরকম একটা ভঙ্গিতে কইলেও, কারো না কারো কথা ভাইবাই বলতেছি। 🙁 আমি দোষী এইখানে।) বা ধরেন, একজন মানুশ অনেক জানেন, এতো জানেন যে, জানার রেফারেন্সের বাইরে আর যাইতে পারতেছেন না! (এইটা আমার ধারণা, কেউ কেউ গেইস করতে পারবেন, কার কথা বলতেছি।)

তো, আমার এইরকম একটা স্ট্রং (এবং ঝামেলার) জিনিস হইতেছে, আমি অনেক লেখতে পারি। এই কারণে অনেক কিছু লেখতে গিয়াও নিজেরে আটকাইতে চাই। কিন্তু ব্যাপারটা এইভাবে কাজ করে না আসলে। জানলেও, বা টের পাইলেও জিনিসটারে সবসময় একটা লিমিটের ভিতরে নিয়া আসা যায় না।

আমার ধারণা, যারা কিছুদূর পর্যন্ত ভাবতে পারেন নিজেরে নিয়া, তারা ব্যাপারটা ধরতে পারবেন কিছুটা।

নিজের লেখালেখি’র এক্সপেরিয়েন্স থিকা এই কারণে আমার একটা সাজেশন এইটা যে, একটা সময়ে পচ্চুর লেখতে পারাটা জরুরি। নিজের কাছেই নিজেরে পরমাণ করার একটা ঘটনা আছে যে, লেখতে পারি তো আমি! আর লেখতে-পারার পরের ঘটনাটা হইতেছে, সবকিছুই না লেখা! 🙂 ব্যাপারটা ঠিক সিলেক্টিভ হওয়ার না, বরং কোন লেখাটা জরুরি, সেই জায়গাটারে আরো ভালো-ভাবে টের পাওয়া।

নভেম্বর ১৪, ২০২২

ফেসবুকের নিউজফিডে ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়া মানুশের টেনশন দেইখা মনে হইতে পারে, মানুশের হাতে টাকা মনেহয় উপচায়া পড়তেছে! 🙂 তবে জিনিসটা তিনটা কারণে ভুল।

এক হইতেছে, বাংলাদেশের টপ ১%-২% টাকাঅলা লোকরা আমাদের ফেসবুক-ফ্রেন্ড না হইলেও, টপ ১০%-২০% বাইরে আমাদের রিচ নাই। মানে, আমার-আপনার নিউজফিড আপার-মিডলক্লাস, মিডল-ক্লাস, লোয়ার-মিডলক্লাসের পপুলেশনেরই একটা রিফ্লেকশন। বাংলাদেশের বাকি ৮০% লোকজন এইখানে নাই। ৮০% লোকের ব্যাংকে রাখার মতো কোন টাকা নাই। ইভেন আমাদের এই ১০%-২০% লোকজনেরও সেভিংস নিয়া টানাটানি চলতেছে। কারণ ভ্যাট-ট্যাক্সের নাম দিয়া গর্ভমেন্ট এই টাকা থিকাও টাকা নিয়া যাইতেছে। মানুশের রক্ত ও ঘামের টাকা লুট করতেছে।
সেকেন্ড হইতেছে, যাদের কাছেই অল্প-কিছু টাকা আছে, ব্যাংকে টাকা রাখা বা সঞ্চয়পত্র কেনা ছাড়া আর কোন অপশন নাই। শেয়ার-মার্কেটে গিয়া জুয়া খেইলা টাকা নষ্ট করা পসিবল না, কোন বিজনেস করতে পারবেন না, অল্প টাকা দিয়া কোন এসেট করাও টাফ। যার ফলে ব্যাংকে টাকা রাখা ছাড়া আর কোন অপশন তো নাই!

থার্ড বা মোস্ট ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, ব্যাংকিং-সিস্টেমের বাইরে তো আপনি যাইতে পারবেন না! টাকা জমা রাখা বা ছোটখাট লেনদেনই না, বড় যে কোন বিজনেসই ব্যাংকিং-সিস্টেমের উপরে ডিপেন্ডেড, আর আমরা যারা চাকরি কইরা জীবন চালাই, আমাদের ইনকাম অই সিস্টেমের লগে রিলেটেড তো!

মানে, এইটা খালি টাকা-থাকার সমস্যা না, মনিটারি-সিস্টেমের ঘটনা। এই জায়গা থিকা টেনশনের ঘটনাটা এমার্জ করছে অনেকটা।
[ও, আরেকটা ছোট গ্রুপের হাতে টাকা অবশ্যই আছে। যেইসব বাকশালিরা এখনো টাকা-পাচার করতে পারে নাই! কিন্তু তারা ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়া এতো টেনশিত হওয়ার কথা না, ধরা না পড়লেই খুশি হওয়ার কথা 🙂 ]

***

জুডিয়াশিয়াল সিস্টেম

আমার ধারণা, আদালতে বা বিচারে জুরি থাকাটা বেটার। ব্রিটিশ-সিস্টেম বা আম্রিকান-সিস্টেম কোনটাই তো হুবহু কপি করা যাবে না, করাটা ঠিকও না। কিন্তু আদালতে জুরি থাকলে, তাদের বিচার ভুল হইলেও, সেইটা সমাজের বিচার হইতে পারবে অনেকটা। মানে, এলাকার মানুশ-জন দিয়া জুরি-বোর্ড বানানো, যে কোন এডাল্ট লোকই সেইটা হইতে পারবেন, এইরকম। জুরি মানে যারা এখন গেরামে ‘বিচার’ করেন, অইরকম মেম্বার-চেয়ারম্যান বা তাদের লোকজন না।

ধরেন, বাদী-বিবাদী দুইজনই ৪-৫ জন কইরা মানুশ ঠিক করবে বা তাদেরকে ‘নিউট্রাল’ এবং ‘বুঝদার’ মানুশ হিসাবে মাইনা নিবে, যারা মামলার লগে রিলেটেড কোন পার্ট না, বা তাদের কোন ফ্যামিল, ফ্রেন্ডস না। এইরকম ৮-১০ জনের একটা জুরি থাকবে। সেইখানে জেন্ডার, এইজ গ্রুপ অনুযায়ী লোক থাকবে। এটলিস্ট ৪০% মহিলা থাকবে, ২০% সিনিয়র-সিটিজেন, ২০% ইয়াং-পিপল, মামলার লাইনে জানা-শোনা লোকজন (জমির মামলা হইলে ভূমি-অফিসে চাকরি করা লোক, চুরির মামলা হইলে রিটায়ারড পুলিশ…) এই-সেই। মানে, মামলার ধরণ অনুযায়ীও জুরি-বোর্ডের ধরণ ঠিক হইতে পারে। জজ-ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে জুরি’র ব্যাপারে না-রাজি জানাইতে পারবে, এবং তার কাজ হবে খালি আইন-অনুযায়ী শাস্তির মাত্রা ঠিক করা, কিছু প্রশ্ন-টশ্ন করা। বা বিচার নিয়া সিরিয়াস কোন ডাউট থাকলে আরেক কোর্টে ট্রান্সফার করা। এইভাবে একটা লিমিট পর্যন্ত এলাকার বিচার, এলাকার মধ্যেই, এলাকার মানুশ দিয়াই করার একটা প্রাকটিস করা যাইতে পারে।

এতে কইরা পুলিশের মাস্তানি, আদালতে পলিটিক্যাল-পাওয়ার আর টাকা দিয়া রায় নেয়ার যেই সমস্যাটা আছে, সেইটার সমাধান হয়া যাবে – তা না, সমাজে বিচার-এর ব্যাপারে একটা ওভারঅল কনশাসনেস বাড়তে পারে।

এইগুলা নিয়া আইন-আদালতের লোকজন তো কথা-বার্তা বলার কথা… অইরকম সিরিয়াসলি কি পরস্তাব-টস্তাব দেন নাই কেউ এখনো? বিচার জিনিসটারে এতোটা ডরের এবং থিয়েরেটিক্যাল ঘটনা না বানায়া একটু ইনফরমাল করতে পারাটা তো দরকার!

বিচার না বইলাও সালিশ বলা ভালো, জুরি না বইলা কাজী।… মানে, টার্ম চেইঞ্জ করা-ই না খালি, বিচার যে রিভেঞ্জের বা প্রতিশোধের ঘটনা হয়া আছে সমাজে, সেইটা থিকা সরার একটা ট্রাই করা তো দরকার।…

***

কথা ও ইমেজ

মেয়েদেরকে গতকালকে রাতে বুঝাইতেছিলাম যে, সময়ের আগে চিন্তা করা লাগবে, তোমার ক্লাস যদি ৮টার সময় তোমারে তো ৭:৩০টার সময় বাসা থিকা বাইর হইতে হবে, ৮টার সময় ক্লাসটা ঘটনা, কিন্তু অই ঘটনাটাতে পৌঁছাইতে হইলে চিন্তাটা শুরু করতে হবে এর আগে। কাজটাও। মানে, সময়ের আগে গিয়া সময়ের চিন্তাটা তোমারে করা লাগবে। অইটার বেসিসে কাজটা করা লাগবে। এখন তুমি যদি সময়ের আগে গিয়া ভাবতে না পারো, সময়টা তো তোমার সামনে চইলা আসবে, ইউ উইল বি drowned, ডুবে যাবা তো তুমি সময়ের ভিতর! সময়ের ঢেউটা আইসা তোমারে খায়া ফেলবে! এর ভিতরে নিয়া নিবে।

ডুইবা যাওয়ার আগ পর্যন্ত ঠিকঠাকই, মানে, মোটামুটি পাত্তা না দিয়াই কথা শুনতেছিল, কিন্তু যেই ডুইবা যাওয়ার ব্যাপারটা আসলো, তখন কইলো, আরে, তাই নাকি!

মানে, ইমেজটা তারে স্ট্রাইক করলো। কথা তো কতো-ই বলি আমরা। কিন্তু কথার ভিতর দিয়া যেই ইমেজটারে কন্সট্রাক্ট করি, সেইটা গিয়া কথাটা হয়া উঠে আসলে। যেই ফিলিংসটা এইটা ক্যারি করে।

Leave a Reply