কয়েক বছর আগে যখন বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটা রিলিজ হইছিল তখন অনেকের প্রশংসা শুইনা দেখবো ভাবছিলাম, কিন্তু কোন সিনেমা আমাদের পরিচিত ডিস্ট্রিবিউশনের জায়গাগুলাতে (আমার ক্ষেত্রে, যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাহল, নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, পাইরেট ই-বে) না পাওয়া গেলে, দেখা তো কঠিন। আর এই ডিরেক্টরের সিনেমা কান-এ সিলেক্ট হওয়ার পরে এই সিনেমা না দেখার কারণে ‘সিনেমা-ক্রিটিক’ হিসাবে নিজের পজিশন তো রিস্কে পড়ে যাইতেছিল! এই কারণে দেখাটা ফরজ হয়া গেছিল। থ্যাংকস Abir Hasan Eka, হেল্প করার জন্য।
তো, লোকজনের কথা শুইনা আমার মনে হইছিল যে, সিনেমা’টাতে একটা ‘কেওস’ বানানো গেছে, যেইটা ঢাকা শহরের একটা কোর সিগনেচার বইলা আমি মনে করি। কিন্তু সিনেমা’টা আসলে “কম্পাইলেশন অফ ডিজাজস্টার”, কেওস না। মানে, দুইটা দুই জিনিস। যেমন দেখেন, রাস্তার এতো সিন, অথচ জ্যামের কোন ঘটনা নাই তেমন! (একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস খেয়াল করলাম, ‘৭০ দশকের সিনেমাতে শাপলা’র মোড়, দোয়েল মোড় যেইরকম “ঢাকা শহর” ছিল, এখনকার ভিজ্যুয়ালগুলাতে কুড়িল-বিশ্বরোডের ফ্লাইওভার, হাতিরঝিল “ঢাকা শহর” হয়া উঠতেছে। “ডুব” সিনেমাতেও দেখলাম।)
আমি শুইনাই খুব খুশি হইছিলাম যে, শেয়ার-মার্কেটের ডাকাতির ঘটনা কাহিনির বেইজ হিসাবে কাজ করছে। কিন্তু এরপরে ড্রাগস, আদম-পাচার, ভার্সিটির মারামারি, শাহবাগ (মতিঝিল কিন্তু নাই )… এই ব্যাপারগুলা একরকমের ‘অ্যাড-অন’ হিসাবে আসছে, কিছু ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ যেন, একটা স্পেইসে, ঢাকা শহরে, একজন ব্যক্তি-মানুশের লাইফে ঘটতেছে। আর এই ঘটনাগুলাও রিয়ালিটি হয়া উঠতেছে টিভি-রেডিও’র নিউজের ভিতর দিয়া।
সাজ্জাদ আর রেহানার থাপড়া-থাপড়ি’র ঘটনাই দেখেন, যেন সোশ্যাল প্রেশারের কারণে অরা পারসোনাল লাইফে ব্রার্স্ট-আউট করতেছে, এইরকম একটা জায়গাতে ন্যারো করা হইছে। এইটা অই সেন্ট্রাল থিম’টার কারণে করতে হইছে। এইটা ইউরোপিয়ান আইডিওলজিক্যাল মাইন্ডরে সেটিসফাই করার কথা অনেক।
মানে, ঢাকা শহরের ইলিমেন্টগুলা আছে অনেক। (যেমন, ব্যাকগ্রাউন্ডে জেমসের গান, হৈ চৈ…) কিন্তু আরো অনেককিছু ইনসার্ট করা যাইতো আসলে। (যেমন, ঢাকা শহরে এমন বাসা তো কম-ই আছে যেইখানে মসজিদের আজান শোনা যায় না, মানে, রিয়ালিটি হিসাবে এইটা তো আছে, বা রেডিও’তে হিন্দি গান, গলিতে কুত্তার ঘেউ ঘেউ…) তো, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড আছে, কিন্তু মিউজিকের জায়গাটাই নাই! এইটা আমারে খুবই হতাশ করছে যে, বাংলাদেশি ডিরেক্টর’রা চোখে আইডিওলজি’র চশমা পিন্দা রিয়ালিটি’রে দেখেন – এইটা মেইন ঝামেলা না, বরং উনারা উনাদের কান কেমনে বন্ধ কইরা রাখেন! মিউজিক ছাড়া কোন কাহিনি, কোন কারেক্টার কেমনে উনারা ইমাজিন করেন! আমার ধারণা, উনারা যদি উনাদের সিনেমাতে মিউজিকের জায়গাটারে এক্সপ্লোর করতে পারেন, তাইলে উনাদের কাজগুলা মোর ‘দেশি (desi)’ না বরং ন্যারেটিভ হিসাবেও ইউনিক হয়া উঠতে পারবে আসলে।…
তো, নায়ক-নায়িকা’রে ভাল্লাগছে। উনারা কারেক্টারের সাথে খুবই এনগেইজ ছিলেন।
ফারুকী’র গুলশান-বনানী’র সাজানো-গোছানো ঢাকার এগেনেস্টে সাদের ঢাকা তেজগাঁ-মহাখালি-শাহবাগের। এইটারে সাদের সাকসেস হিসাবে না দেইখা সেইম গ্রাউন্ডেরই একটা “এনকাউন্টার” হিসাবে দেখাটাই বেটার মনেহয়।
মানে, আমি রিকোয়েস্ট করবো, আপনারা (বাংলাদেশের আর্ট-ফিল্ম ডিরেক্টর’রা) যে কোন আইডিয়ারে ভিজ্যুয়ালাইজ করার চেষ্টা’টা যদি একটু কমাইতে পারেন, ভালো হবে সেইটা। সিনেমা’তে ভিজ্যুয়ালগুলারেই তৈরি করেন, দেখেন এরা কোন আইডিয়ারে রিলিভেন্ট কইরা তুলতে পারে কিনা! আর্টে নানান আইডিয়া তো থাকেই, কিন্তু অইগুলারে আপনার আর্টের দখল নিতে দিয়েন না। আমাদের সময়ে, এইটা যে কোন আর্টিস্টের জন্য একটা কোর স্ট্রাগলের জায়গা।…
যা-ই হোক, যা-ই হোক, দেখলাম বইলা দুইটা কথা বললাম আর কি
Leave a Reply