রাত পোহাবার আর কত দেরি, পাঞ্জেরী!

বলতে পারাটাই আসলে গান। আপনি একটাকিছু বললেন, নট দ্যাট যে যেইটা মনে হইতেছে সেইটাই বললেন; যে কোন একটাকিছু যে বলা যায়, এইটা মনে-হওয়াটাই গান।

রাতটা থাইমাই ছিলো। ইলেকট্রিকের বাতি’র সুইচ অফ কইরা দিযাও আপনি বলতে পারেন, প্রদীপ নিভে গেলো। সেইটাও ঠিক আছে। কিন্তু যখনই কিছু বলার কথা মনে হইলো, তখনই মিউজিক আসলো, গানটা শুরু হইতে পারলো।

কাজলের মা তনুজা’র জাওয়ানি ছিলো তখোন। আর দেবানন্দ ত জওয়ান ছিলেন সত্তর বছর বয়স পর্যন্ত। (খেয়াল করেন কেমনে অ্যাডজেক্টিভ তার জায়গা বদলায় জেন্ডারের পারসপেক্টিভে।) তনুজা বলতেছেন যে, বলতেই পারেন! কিন্তু দেবানন্দ শুনতেছেন, করতেই পারেন! আর্টের টেনশনটা এই জায়গাটাতে আইসাই থামছে।

এখন তনুজা ত জানেন যে, দেবানন্দ এইটা শুনতেই পারেন। এই যে এইটা শুনতে পারেন, এইটা ভাবতে না পাইরা উনি কি বলতে পারতেন? বা উনি যদি না ভাবেন তাইলেও কি দেবানন্দ ‘বলতেই পারেন’রে ‘করতেই পারেন’ শুনতে পারেন? যে কোনকিছুই পসিবল আসলে। কিন্তু বলার পরেই এইটা শুরু হইলো, এই কনফিউশন বা কনফেশনাল আর্টের পসিবিলিটিটা। না বললে এইখানে কিছুই নাই আসলে। যেহেতু বলা হইছে, আর্টের ব্যাপারটা আসতে পারতেছে। এইজন্য দেখবেন কি রকম সুরেলা হয়া উঠে, টানটা; বলার জায়গাটাতে আইসা। যে, বলেন না! এই বলা আসলে বলার অতিরিক্ত একটাকিছু, বলাটারেই একসিড কইরা ফেলতে পারতেছেন আশা ভোঁসলে বইলা ফেলার ভিতর দিয়া।

চিন্তা করাটা তো একটা কাজ, এই কাজটারে যখন বইলা ফেলতে পারেন তখন এইটা আর্টও হইতে পারে।

বললেই কি আর করা হয়া গেলো বলেন! কিন্তু আর্ট এইটাই, আপনি যে বললেন এবং বলার কথা যে ভাবলেন সেইটা করার চাইতেও অনেক পাওয়ারফুল একটা ব্যাপার হইতে পারে।

আর এইটা তো ফান। দেখেন তনুজা তাই এক কান থিকা আরেক কান-এর কাছেই যান। বলা-ই তো তাইলে এইটা। দেবানন্দ ঘামতে থাকেন। যেহেতু সময় আছে আর থার্ড পার্টি কেউ নাই তখোন কি কি বলতে পারি আমরা, এইটা ভাবতে ভাবতেই তার কান ঝালাপালা হয়া যাইতেছে।

মানে, দেবানন্দ তনুজারে এইভাবেই দেখতেছেন এবং দেখতে পারতেছেন, এই সিনেমার প্রডিউসারও আবার উনি-ই। উনি এই রিয়ালিটি ভাইঙা পালাইতেও চাইছেন, আরো আগেই চাইছিলেন, প্রথম থিকাই; কিন্তু তনুজা খালি শুনতেই চায়, যাইতে দেয় না উনারে। চাইলে তো শক্তি দেখাইয়া, মাইর-ধর কইরা বাইর হয়া যাইতে পারতেন, কিন্তু উনি যেহেতু পুরুষ, এইসব মেয়েলি ঝামেলা উনি সহ্য-ই করেন। যখন তনুজা উনারে জোর কইরা ধইরা নিয়া গেলো, তখন উনি ফাইনাল দৌড়টা দিলেন। আপনিও ভাবলেন, হায়, এইরকম জোর আমারে ক্যানো করে না কেউ বা জোর করার কেউ নাই ক্যানো! আপনার ভাবনার কাছেই হয়তো চইলা আসলেন উনারা, জানালায় ভিতর দিয়া দেইখা আটকাইয়া গেলেন শেষে। দুইজনেই।

গানটা তো সুন্দর, ডেফিনেটলি:
জো ভি চাহে কাহিয়ে
জো ভি চাহে কাহিয়ে…

তুম হে হো না সাহি
মুঝে তুমসে মোহাব্বাত হ্যায়

তুম আজ মেরি লিয়ে রুক যাও
রুথ ভি হ্যায়, ফুরসত ভি হ্যায়

মোহাব্বাত কি ইজাজত হ্যায়
তো চুপ কিউ রহিয়ে

জো ভি চাহে কাহিয়ে…

ইটস অলওয়েজ গুড যে, জীবনে কথা-বলার টাইম আমাদের অনেক কম; যতটুকই আছে, না-বলা তো আছে তার চাইতে অনেক অনেক বেশি।

গানটা প্রথম দেখছিলাম ইন্ডিয়ার দূরদর্শন চ্যানেলে শুক্রবার বা বুধবার রাতে রাত সাড়ে আট’টার চিত্রাহার নামে গানের অনুষ্ঠানে; উনিশো সাতাশি বা আটাশি’তে। আর এখন তো ইউটিউবে চাইলেই শোনা যায়।

রিমিক্সটাতে অবশ্য নায়কের বর্তমান প্রেজেন্সটারে আরো ডিপে নিয়া যাওয়া হইছে; সে ফিজিক্যালি গায়েব, কিন্তু তবু সে আছে, থাইকাই যাইতেছে, নায়িকার মেমোরিতেই; যেহেতু সে কিছুই করে নাই, করতে চায় নাই, এত চাপাচাপির পরেও, এই কারণেই তার না-করা না-বলা হইয়া থাকতে পারতেছে!

 

Leave a Reply