আন-নোন

দেয়ার ওয়্যার টাইমস যখন আন-নোন হওয়াটাই ছিল অ্যাট্রাকশনের মূল উপায়া। আমি তো তোমারে জানি না – এইটা হৃদয়ে বিরাট সক্রেটিস হাহাকার ক্রিয়েট করতো, সেইরকম টাইমের গল্প এইটা।

আমরা ফিরতেছিলাম। রিকশায়। মনিকা, মানিক আর আমি। রিকশাটা রাখা হইছে আসলে একটা এনশিয়েন্ট ফিলিংস দেয়ার লাইগা। রিকশাওলারাও মানুষ, থ্রি-ডাইমেনশনাল দুনিয়ায়। তবে নিয়েনডার্থাল টাইপ, ফিলিংসের কমপ্লিকেসি নাই, টাইমের নন-লিনিয়ারিটি নাই; লোকাল ইমপ্যাক্টগুলি আছে, ইমোশনালি সাপ্রেসড থাকতে পারে… কমপ্লিকেটেট রোবটগুলির চাইতে অনেক বেটার। আর ড্রাইভার ছাড়া গাড়ির মান-ইজ্জত থাকলেও রিকশাওলা ছাড়া তো রিকশার কোন বেইলই নাই, ইন ফ্যাক্ট রিকশাওলাই মেইন এইখানে, রিকশার চাইতে। আর মানিকের অনেক টাইম-মানি আছে, চাইলেই এনক্যাশ করতে পারে। সো, এইটুক লাক্সারি আমরা এর্ফোড করতেই পারি। রিকশায় ঘুরতে ঘুরতে একটু বাতাস খাইলাম।…

মানিক আমার চাইতে একটু মোটা, এর লাইগা আমি উপ্রের সিটে বসছিলাম রিকশার। মনিকা আর মানিক কাপল। অরা সারাদিন একলগেই আছিল। ফিরার সময় কাভার লাগে তো একটা, আমি এইজন্যে লগে আছিলাম। বা আন-নোন হওয়ার প্লেজারে আমিও পার্টিসিপেট করতে চা্ইতেছিলাম মনেহয়। মনেহয় এই কারণেই ঝামেলাটা বাঁধলো।

বাসার কাছাকাছি আইসাই দেখি, বাসাটা নাই আর। দোতলা ছিল দালানটা, একটা রেললাইনের পাশে। হলুদ কালারের। এখন অন্য কোন ড্রিমের ভিতর অকুপাই হয়া আছে। এমনো হইতে পারে, পথ ভুল করতে চাইতেছিলাম আমরা। অন্য কোন গলিতে ঢুইকা পড়লাম তখন। একটা শেল্টার সেন্টারের সামনে আইসা দাঁড়াইলাম। বুঝতেছিলাম বাঁইচা থাকতে হইলে, কন্টিনিউ করতে হইলে যেকোন একটা বিল্ডিংয়ে ঢুইকা পড়তে হবে আমাদেরকে।

শাদা একটা তিনতলা বিল্ডিং। শিখাদের বাড়ির আশেপাশের কোন দালান। শিখা হঠাৎ কইরা একবার ফার্স্ট হয়া গেলো স্কুলে, তখন ওরে চিনছিলাম। এমনিতে অ্যাভারেজ গার্ল, ঢং ঢাং করতে রাজি আছিলো না কোনসময়ই, শে যে মেয়ে – এই ধারণাটার ভিতরেই মলিন হইয়া গেছিলো। অদের দোতলা দালান, সামনে একটু উঠান। শিখাদের বাড়িতে যাই নাই, কিন্তু বাইরে থিকাই চিনতাম। ধুমকেতু রেইন আসার টাইম হয়া গেছিলো, এর লাইগা আমরা তাড়াতাড়ি কইরা বিল্ডিংয়ের ভিতরে ঢুইকা পড়তেছিলাম। সাইডের গ্যারাজে দেখলাম হেব্বি একটা মোটর সাইকেল, সাইডে দুইটা উইংস আছে, বডির সাথে মিশানো, ইচ্ছা হইলে একটু দূর উইড়াও যাইতে পারে, এইরকম। দেখলেই লোভ লাগে।  

শেল্টার সেন্টার নরমাল বিল্ডিংয়ের মতোনই। শাদা কালার। আলাদা আলাদা রুম। লিনিয়ার টাইমের সিম্বল। নরমাল লোকজন ভাববো, নরমালই এইটা। দোতালায় উইঠা দেখলাম বাইকার লোকটা আছে একটা রুমে। সে জাস্ট রুম থিকা উঁকি দিয়া আমরারে দেখলো। তারপর আবার নাই। আমরা তিনতলার একটা রুমে গিয়া উঠলাম। থাকার লাই্গা তিনতলাটাই বেস্ট।

 

২.

আসলে টেনথ ডাইমেনশনে আমরা আর বাঁইচা থাকতে পারতেছিলাম না। এতো টার্ন আর এতো টিউন। সারাক্ষণই গান বাজতেছে। কাহিল লাগে এতো এট্রাকশন। একরকম পালায়াই আসছি। এতো এতো অপশন। হাঁফ ধইরা যায়। তার চাইতে বড় কথা, প্রেম তো থ্রি ডাইমেনশনাল একটা ব্যাপার। মনিকা আর মানিক এক্সপেরিমেন্ট করতে চাইতেছিলো এইটা নিয়া। আর আমারেও ইন্সফ্লুয়েন্স কইরা ফালাইছিলো। কোন অবজারভার না থাকলে ঘটনা ঘটতে পারে না। সো, আমারে লাগতোই ওদের। আমিও ভাবছিলাম, খারাপ কি! পুরানা দিনের দুনিয়া দেখা হইলো। অরাও এইরকমই কইছিলো আমারে।

কিন্তু ঝামেলাটা বাঁধলো, খালি আমরাই তো না; থ্রি ডাইমেনশনাল দুনিয়ায় আরো অনেকেই তো আছে। ওভার পপুলেটেট হয়া যাইতেছে একদম। চাইরদিকে মানুষ গিজ গিজ করে। মেশিনগুলি তো আরো বেশি। আর ঝামেলা হইলো আলাদাও করা যায় না। আর একবার আইলো তো ব্যাস! থাকবোই। যেমন, এই বাইকার লোকটা উঁকি দিলো, দোতালা থিকা। সে পার্ট অফ দ্য মেমোরি হয়া গেলো। বাতিল হইলো না। টাইমের স্ট্রেইট মিনিংয়ের মজাটা এইরকম। ইরেজ কইরা কইরা আগায়া যাইতে হয়, মেমোরির খোপ বানায়া।

আমরা আমাদের ফ্ল্যাট’টাতে গিয়া দরজা লাগায়া দিলাম।

 

৩.

এত ধকল গেছে যে ভাবলাম, ঘুমাই। মানিক আর মনিকা প্রেম করুক।

ঘুম ভাঙ্গার পরে ভাবলাম পানি খাই। তখনই কেমন একটু আন-ইউজ্যুয়াল মনে হইলো – অদের লাভ মেকিং কোন সাউন্ড নাই ক্যান! বা হয়তো ঘুমাইতেছে এখন। আমি গিয়া আরেকবার ঘুমানির ট্রাই করলাম। ঘুম ছুইটা গেছিলো। আসতেছিলো না আর। আবার বাইর হইয়া দেখি অদের রুমের দরজাটা খোলা। বিছানাটাতে সুন্দর কইরা বালিশ বিছানো, কেউ শুয়-ই নাই। মনের মধ্যে কেমন খটকা লাগলো।

সিঁড়িতে গিয়া দেখি, দোতলার লাইট জ্বলতেছে। দরোজাটাও একটু ফাঁক করা।

‘আমার সব, কই ছিলেন আপনি এদ্দিন!’ আমি দেখি আকুল হয়া মনিকা বলতেছে মানিক’রে। মানিকও শক্ত কইরা জড়ায়া ধরছে মনিকারে। মনিকারে খুব খুশি খুশি লাগে।

কিন্তু অরা দোতালা’তে ক্যান?

মানিকরে কেমন জানি মেকানিক্যাল লাগলো আমার কাছে। মানিক তখন পিছন থিকা আমার কান্ধে হাত রাখে। আমি না তাকায়াই বুঝতে পারি, এইটা মানিকের হাত। লিনিয়ারিটির ভিতর মাল্টিপ্লিসিটি’টারে নিয়া আসছে অরা, মোর একসাইটমেন্ট ক্রিয়েট করার লাইগা। পিছনে তাকামু কিনা বুঝতে পারি না। এই ইল্যুশনারি জিনিস দেখা তো ঠিক হইবো না। তারপরও পিছন ফিরি, তাকাই মানিকের দিকে। ও ও তাকায়া রইছে অদের দিকে। আমার দিকে না তাকায়াই কয়, এমনে তাকাইস না! আমি জাইনাই পারমিশন দিছি, ও তো কোনদিন আন-নোন ফিল করে নাই! এদ্দিনের রিলেশন, এইটুক তো করতে পারা দরকার!

পারমিশনের কি হইলো আমি বুঝতে পারি না, দুইটা সেপারেট আইডেন্টিটি না অরা! আর দুইটা টাইমেরই তো ব্যাপার, তা নাইলে রিলেশন কেমনে আছিলো! পরে টের পাই থ্রি-ডাইমেনশন তো একটা পারসপেক্টেভরই ব্যাপার, ওনারশিপ লাগে যে কোনকিছুরই, টাইমেরও। অথরিটি ছাড়া কিছু এগজিস্ট করে না এইখানে। পারমিশন রিকোয়ার্ড। অপজিট এমার্জ না করলে কোনকিছু মিনিংয়ে আইতে পারে না।

আমি কই, চল আমরা তিনতলার যাই তাইলে! মানিক মনেহয় আমার কথা শুনেই না;  হাবিজাবি কইতে থাকে। কয়, বাসনার তো শেষ নাই, টাইমের লিমিটেশন তারে আরো বাড়ায়া দেয়… মনিকা নামতে চাইলো এই এনিমেল ইন্সটিংক্টে, যেইখানে ফিলিংস আছে, ব্যাখ্যা নাই। ব্যাখ্যা তো খুব টাইম-বাউন্ড ব্যাপার, এইখানে টাইম নাই। একটু সইরা গিয়া টাইম থিকা বাইর হইয়া যাইতে হয়… আমি কোন ঘটনা না, কোন একটা অবজেক্টই… একটা ফিলিংস আইসা দখল কইরা ফেলতে পারে… মনিকা সইরা সইরা যাইতে চাইছিলো আসলে, এইজন্য শে আইছে, আমি জানতাম আগেই।… ধরা খাইলে এইরকম বলাটাই নিয়ম। আমিও জানতাম এইটা।

কিন্তু আমাদের জাইনা যাওয়াটা আমাদেরকে আরো আটকাইয়া ফেলতেছে, আমি বুঝতেছিলাম। এনিমেল ইন্সটিংক্টটারে আরো মানবিক হওয়ার ভিতর দিয়া ও মোকাবিলা করতে চাইতেছে। কিন্তু এইটা তো পসিবল না। মানিক’রে আমি ধইরা বাইন্ধা তিনতলায় আইনা ঘুম পাড়ায়া দিলাম। তারপর আমার রুমে গিয়া ঘুমায়া গেলাম। বহুত দেখছি বালের এই প্রেম! আমার আর পোষায় না। ঘুম-ই বেটার।

 

৪.

সকালবেলা দেখি মানিক আর মনিকা জড়াজড়ি কইরা ঘুমাইতেছে। দরজা হা কইরা খোলা। পবিত্র প্রেমের ব্যাপার মনে হইতেছিলো। মেবি আমরা ২০৪৬-এ আছি। এর আগে বা পরে কোথাও যাই নাই। কোন ‘আননোন’ও নাই আমাদের। আমরা জাস্ট ফ্রেন্ড।

আমরা থাকি নাই আর ওইখানে। ঘুইরা ফিরা চইলা আসছি আমাদের দুনিয়াতে আবার।

৫.

পরে আমার মনে হইছে, ব্যাপারটা এইরকমও হইতে পারে যে, আমারই খারাপ লাগতেছিল আসলে। অরা যদি থ্রি-সামই করতে চাইতেছিল তাইলে আমারে কইলেই পারতো! আমার লগেই করতে পারতো! খামাখা একটা জেলাসির ড্রিম পুশ করার কোন মানে ছিলো না তো!

৬.

কে জানে! মানে, যে যা জানে তার জানা নিয়াই সে/শে আছে, থাকতে পারতেছে তো…

 

 

Leave a Reply