আল মাহমুদের কবিতা তো ভালো। 🙂 (মানে, আমি উনার কবিতার একটা ক্রিটিক করতে চাইতেছি আসলে, এইজন্য আগে-ভাগে মাফ চাওয়ার মত বইলা নেয়া যে, উনার কবিতা ‘ভালো’।) কিন্তু উনার কবিতার এস্থেটিক্যাল যেই জায়গা, সেইটাতে আমার না-রাজি’র জায়গা’টা আগেও বলছিলাম মনেহয়; এখন আরেকবার বইলা রাখতে চাইতেছি।
আমার ধারণা, আল মাহমুদ’রে যে কলকাতা-পন্থী এস্থেটিক্সরাও নিতে পারেন, এর একটা মেজর কারণ হইতেছে, বাংলাদেশ’রে ‘গ্রাম-বাংলা’ হিসাবে দেখানোর যে তরিকা, সেইখানে উনার কবিতা খুবই ভালোভাবে ফিট-ইন করতে পারে। মানে, বাংলাদেশে যে গ্রাম-বাংলা নাই – তা তো না 🙂 কিন্তু ‘বাংলাদেশ মানেই যে গ্রাম-বাংলা’ – এই নজির হিসাবে উনার কবিতারে অনেকবেশি নেয়া যায়। মানে, ‘আল মাহমুদের কবিতা হইতেছে বাংলাদেশের কবিতা’ – এইরকম স্টেটম্যান্ট পাইবেন। তো, কোন বাংলাদেশ? বা কেমনে বাংলাদেশ? – এই জিনিসগুলা নিয়া ভাবতে গেলে, ব্যাপারটা দেখতে পারাটা আরো ইজি হইতে পারে মনেহয়।
তো, এর এগেনেস্টে শহীদ কাদরী’র ‘শহুরে’ বা শামসুর রাহমানের ‘মফস্বলী’ বা ‘মিডল-ক্লাসে’র ‘বাংলাদেশ’ বেটার – এই কথা আমি বলতে চাইতেছি না। 🙁 বরং এই যে ‘গ্রাম-বাংলা’রে ‘হাজার বছরের বাংলাদেশের ঐতিহ্য’র গর্তের ভিতরে ফালানোর চেষ্টা, বা এইভাবে রিড করাটারে খুবই বাজে জিনিস বইলা মনে করি। আর এই জিনিস বা এই ‘বাংলাদেশ’ কলকাতার কলোনিয়াল কালচারের বানানো একটা জিনিস।
আল মাহমুদ এই জিনিস জানতেন না – সেইটা আমার মনেহয় না। তখনকার (১৯৬০ – ১৯৮০) ঢাকার পাওয়ারফুল আরবান মিডল-ক্লাসের (যারা আসলে ছিলেন কলোনিয়াল কলকাতার মিনিয়েচার, এখন মারা যাইতেছেন) ভেড়ার দলে না ঢুইকা ‘খাঁটি’ বাংলাদেশি হইতে চাইছেন উনি। উনার এই উদ্দেশ্যরে ‘মহৎ’ বা ‘চালাকি’ ভাবার চাইতে, এইটা যে একটা ‘ট্রাপ’ এই জিনিসটা মনেহয় আমাদের বুঝতে পারাটা দরকার। 🙁
মানে, ‘গ্রাম-বাংলা’ নিয়া কবিতা লেখা যাবে না – তা না; কিন্তু বাংলাদেশের ‘হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্য’ নিয়া কবিতা লেখা বা অই প্যাটার্নটারে গ্লোরিফ্লাই করার আগে, আরেকটু ভাবতে পারা তো দরকার। নাকি না?
Leave a Reply