অক্টোবর ১১, ২০২১
কথা দিয়া আর কয়টা কথা বলা যায়! আমাদের কথা নিরবতা দিয়াই বলতে হয়। এই কারণে দেখবেন, নিরবতার জায়গাগুলারে ম্যানিপুলেট করা হয় সবসময়।
যে, কই পাবলিক তো মাইনা নিতেছে, দুয়েকজন ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বাদে জিনিসপত্রের দাম যে বাড়ছে এই নিয়া তো কেউ কথা কইতেছে না! মানে, কথা-কওয়ার যে কোন অবস্থা নাই, অই নিরবতাটারে এক্সপ্লেইন করা হইতেছে – মাইনা নেয়া!
পারসোনাল লাইফ থিকা শুরু কইরা পাবলিক হিস্ট্রিতে এইরকম বহুত ঘটনা আছে, যেইখানে ট্রুথরে নিরবতার ভিতরে ঠেইলা দেয়া হইছে, হইতেছে। যেমন তুরস্কে, ১০ লাখ আর্মেনিয়দের খুন করছিল টার্কিশরা, অইটা নিয়া পাবলিকলি কথা বলা নিষেধ। মানে, এইরকম কোন আইন নাই যে কথা বলা যাবে না, কিন্তু কথা না-বলাটা হইতেছে ‘নিয়ম’।
খালি নিরবতারে এক্সপ্লেইন করা না, আপনার কথারেও নিরবতার মতন একটা ঘটনা বানায়া দেয়া হয়; যে, রিপ্রেজেন্টেটিভ বা যার-কথার-দাম আছে, এইরকম কেউ তো কথা বলে নাই!
তো, যারা নিরবতারে ব্যাখ্যা করতেছেন, তাদেরও টের পাওয়ার কথা যে, নিরবতাগুলা কথা হয়া উঠতে পারতেছে না বইলাই বাতিল হয়া যাইতেছে না, বরং নিরবতাটা আরো ছড়ায়া পড়তেছে।… যে কোন কথার মানে তার নিরবতাগুলার ভিতর দিয়া বুঝতে পারতে হবে আমাদেরকে।
#########
বিকল্প ২
কোনকিছুর বিকল্প নাই বইলাই সেই জিনিসটা টিইকা থাকে না।
বাংলাদেশে যখন সাহিত্য পত্রিকাগুলা, দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য সাপ্তাহিক সাময়িকীগুলা একেকটা ট্রাশ হয়া উঠতেছিল, দলবাজি’র আখড়া হয়া উঠছিল তখন অনলাইনে লেখালেখি করার/ছাপানোর স্কোপগুলা ছিল না।
তারপরে, কমিউনিটি ব্লগগুলা (স্পেশালি সামহোয়ারইনব্লগ) ফেসবুক আসছে বইলা ইন-এফেক্টিভ হয় নাই, এর আগেই মোটামুটি বাতিল হইতে পারতেছিল, এর ইমপ্যাক্টসহ। একইরকমভাবে, ফেসবুক/ইউটিউব আসছে বইলা টিভি-নিউজপেপার বাতিল হয়া যাইতেছে না, বরং তারা নিজেদের গোলামির জায়গা থিকা বাইর হইতে পারতেছে না। (কোনকিছুই একবারে হারায়া যায় না, ফর্ম হিসাবে ইরিলিভেন্ট হইতে থাকে, ধীরে ধীরে।)
এখন আমরা বুঝতেছি, ফেসবুকও তার এলগারিদম দিয়া যেমনে আমাদের নিউজফিড কন্ট্রোল করতেছে, যেই রিয়ালিটির ফান্দে ফেলতে চাইতেছে, সেইটার ভিতর আটকায়া থাকা যাবে না।
তার মানে এইটা না যে, একটা বিকল্প’র জন্য ওয়েট করতেছি আমরা; বরং এর ভিতর দিয়াই ‘বিকল্প’র জায়গাগুলা এমার্জ করবে। সবসময় এইরকমটাই হইছে। মানুশ তার কথা-বলার জন্য মোর ফ্রিডমের জায়গাগুলাতে শিফট করবে। তৈরি করার ট্রাই করবে।
কিন্তু কোন কিছুই আগের জায়গাতে ফিরা যাবে না।
কোন ‘বিকল্প’ আইসাও আমাদেরকে উদ্ধার কইরা ফেলবে না। বরং এই রিয়ালিটি’রে যে মানতে রাজি হইতেছি না, সেইটা ‘বিকল্প’র জায়গাগুলারে তৈরি করতে থাকবে। মানে, এইরকমই হয়া আসছে বইলা আমি মনে করি।…
অক্টোবর ১২, ২০২১
যে কোন সোসাইটিতেই সফলতা বা সাকসেসের একটা ছবি আছে। বাংলাদেশে যেমন ধরেন ‘ভালো’ একটা চাকরি/পশ একটা বিজনেস করা, একটা সুন্দর (মানে প্রজেন্টেবল) জামাই/বউ বা বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড থাকা, একটা বাড়ি-গাড়ি থাকা, কিছু সোশ্যাল রিকগনিশন এবং কিছু পারসোনাল বেদনা-বোধ (এইটাও লাগে 🙂 ) থাকা, এইরকম।
অন্য সময় হয়তো একটু অন্যরকম হবে ব্যাপারগুলা। কিন্তু কম-বেশি একটা পিকচার থাকে আমাদের সামনে যে, এরা হইতেছে সফল বা সাকসেসফুল মানুশ। ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ছে, পিএইচডি করছে, খুববেশি টাকা না কামাইলেও জীবনে ইম্পর্টেন্ট কিছু কাজ করছে (কথার কথা ধরেন, দুইটা বই লেখছে, একটা সিনেমা বানাইছে, এইরকমও হইতে পারে।)
মানে, বলতে চাইতেছি, সাকসেসের কিছু পিকচার আছে। যার ভিতর দিয়া আমরা সফলতারে দেখি।
একইরকমভাবে, এর উল্টা জিনিসটাও আছে যে, আমি ‘সাধারণ’ হইতে চাইছি! সাকসেসের পিছনে দৌড়াই নাই। জীবনরে ‘উপভোগ’ করছি, করতেছি!
এই জিনিসগুলা যে কি রকমের ‘শ্যালো’ (Shallow)! আমার ধারণা, যারা ‘সাকসেসফুল’ এবং ‘সাধারণ’ হইতে পারছেন – তারা ব্যাপারটারে খুব ভালোভাবে টের পাওয়ার কথা। যে, এইখানে সফল হওয়ার বা সাধারণ হওয়ার কিছু নাই আসলে। বরং এইগুলা এক রকমের আটকায়া যাওয়ার ঘটনাই।
গরু’র ডেফিনেশন দিয়া গরু’রে বুঝতে চাওয়া। যার চাইরটা পা, দুইটা শিং, আর একটা লেজ আছে। যে খালি ঘাস-ই খায়। সফলতার আর ব্যর্থতার। আর মাঝে-মধ্যে ভাবে, ধুর এইগুলা তো কিছু না! 😛
মানে, বলতে চাইতেছি, ধারণাগুলা তো আছেই; কিন্তু ধারণাগুলাই লাইফ না আর কি! কোন সময় হইতেও পারবে না।
#########
জিনিসপত্রের দাম কেন বাড়ে? দুর্ভিক্ষ কেন হয়?
এর উত্তর অনেকদিন আগেই দিছেন অমর্ত্য সেন। আর এই উত্তরের জন্য নোবেল প্রাইজ পাইছেন। উনি বলছেন এইটা প্রডাকশনের সমস্যা না, বরং ডিস্ট্রিবিউশনের সমস্যা। ১৯৪৩-এ বাংলাদেশে বাম্পার ফলন হইছিল, ব্রিটিশ গর্ভমেন্ট সব ধান-চাল কলকাতায় জমা করছিল ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য; বাংলাদেশের মানুশ খাওয়ার মতো চাল ছিল না বাজারে। যখন সরকারি গোডাউন চাল ছাড়া হইলো তখন লাখ লাখ মানুশ মইরা শেষ। (নাম্বারটা বলা হয়, ৩০ লাখ।)
অমর্ত্য সেনের কথার লগে আমার ধারণা, আরো দুইটা জিনিস যোগ করা যায়। এক হইলো, কোন ইনকোমিক ক্লাসের লোকজন মারা গেছিল তখন? এইটা তখনই ট্রিগার হইছিল যখন মানুশ-জন না খাইতে পাইরা শহরের দিকে চইলা আসতেছিল; তখন গিয়া সরকারের লোকজন বিশ্বাস করতে পারছিল যে, ও, লোকজন তো মারা যাইতেছে তাইলে! খালি গরিব না, বরং যখন মিডল-ক্লাসও এফেক্টেড হইতেছিল, তখন। গরিব তো না খায়া-ই থাকবে, তা নাইলে শে আর গরিব কেনো! 🙁
এই ক্লাসের ব্যাপারটা টের পাইবেন ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের ঘটনাটা দিয়া। দুর্ভিক্ষ তো হইছিল, মানুশ-জন তো না-খাইয়া, কম-খাইয়া ছিল, নাকি ছিল না? কিন্তু যদি থাকেই, আপনার ফ্যামিলির কারো মুখে শুনছেন সেইসব ঘটনার কথা? আমার ধারণা, আমাদের মিডল-ক্লাস সমাজে সেইটা ছিল না – তা না, কমই থাকার কথা। এখনো দেখবেন, জিনিসপত্রের দাম যে বাড়তেছে, এইটা আমরা যারা মিডল-ক্লাসের লোকজন আছি, এখনো খুববেশি টের পাই না। সরকারের লোকজন তো অস্বীকারই করতেছেন মনেহয় এখনো যে, ‘ষড়যন্ত্র’ এইগুলা!কারণ, উনাদের কাছে তো দাম অইরকম বাড়ে নাই।
…এইরকম ক্লাস একটা ঘটনা; যেই ক্লাস’টা মিউট, যাদের কথা আমরা ‘শুনতে পাই না’; আসলে যাদের লগে মিডল-ক্লাসের, ক্ষমতার লোকজনের যোগাযোগ’টা নাই, দরকার পড়ে না। যখন এই ঢেউ মিডল-ক্লাস পর্যন্ত আসে, তখন সেইটা অডিওবেল হয়, শোনা যায়। (প্রলেতারিয়েত এখন ক্লাস হিসাবেই ডেড। খালি জানাজা পড়া হয় নাই।)
তো, ফার্স্টের ঘটনাটা যদি হয়, ‘আমরা জানতাম না’, সেকেন্ড হইতেছে – এই না-জানার ঘটনা’টা কেমনে ঘটে, সেই জিনিসটা। এইটা কোন জটিল ইকনোমিক প্রসেসের ভিতর দিয়া ঘটে না, বরং একটা এন্টি-পিপল রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে যখন দেশের ক্ষমতা থাকে তখনই ইকনোমিক সিন্ডিকেশনের সুযোগগুলা তৈরি হয়। এইটা একটা বেসিক রিকোয়ারমেন্ট। আমি ১৯৪৩ আর ১৯৭৪’র ঘটনা মনে রাইখা বলতেছি, কিন্তু আমার ধারণা, আরো কিছু কেইস স্টাডি করলে এইটা শিওর হয়া বলা যাবে।
মানে, পিপলের সাথে ডিটাচড বা পাবলিকের কি হইলো না হইলো – এইটা যখন পরোয়া করার, মাথায় নেয়ার দরকার পড়ে না, তখন এই ডিস্ট্রিবিউশন ক্রাইসিস’টা তৈরি হইতে পারে; এই পলিটিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট বাদ দিয়া এই দুর্ভিক্ষ সিচুয়েশন তৈরি করা সম্ভব না বইলাই আমার ধারণা।
এইখানে থার্ড আরেকটা জিনিস আমি অ্যাড করতে চাই, যেইটা অনেকটা নতুন ফেনোমেনা, সেইটারে বলা যাইতে পারে – পিরিওডিক দুর্ভিক্ষ বা বাজার-ডাকাতি। শেয়ারবাজারে যেইরকম কয়দিন পরে পরে ডাকাতি হয়, এইরকম বাজারেও কিছুদিন পরে পরে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়া পাবলিকের পকেট থিকা টাকা মারা হয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত ব্যাপারটা আন-বিয়ারেবল হয়া উঠে, রিভোল্ট করার মতো জায়গাতে গিয়া পৌঁছায়, ততদিন পর্যন্ত ‘ক্রাইসিস’টা চলতে থাকে। আর যখন এইরকম অবস্থা হয় দেখবেন বিজনেস-সিন্ডিকেটের কথা উঠে, যেন কয়েকজন মানুশ মিইলা এই ধরণের ঘটনাগুলা ঘটাইতেছে! কিন্তু ঘটনা এর উল্টাটাই হওয়ার কথা। একটা আন-জাস্ট পলিটিক্যাল সিস্টেম, একটা জুলুমের শাসনের মদদেই এই দুর্ভিক্ষ-অবস্থাগুলা তৈরি হইতেছে, আর কিছুদিন পরে পরে তৈরি হইতেই থাকবে।
সমস্যাটারে একটা ইকনোমিক ক্রাইসিস হিসাবে দেখাইতে চাওয়াটা এই কারণে খালি একটা ‘ভুল-কথা’ না, বরং জুলুমটারে জারি রাখার জায়গাটাতে একটা ইন্টেলেকচুয়াল প্রতারণারও ঘটনা। বাকশালের লুটপাটের পলিটিক্যাল ইকোনমি’টারে কন্টিনিউ করতে দেয়ার মোরাল সার্পোটের জায়গা।… মনে হইতে পারে যে, আমি বাড়ায়া বলতেছি, যেহেতু ফ্যাক্টগুলা মিসিং অনেক; কিন্তু অনুমানগুলা খুববেশি ভুল না মেবি।
অক্টোবর ১৩, ২০২১
বাংলাদেশের মানুশের খালি ভোটের অধিকার কাইড়া নেয়া হয় নাই, সেলফ-রেসপেক্ট নিয়া বাঁইচা থাকার জায়গাটারে ধ্বংস করা হইছে।
যেই কারণে এই দেশের মানুশ আর নিজেরেই রেসপেক্ট করতে পারে না। অন্য মানুশরেও আর বিশ্বাস করতে পারে না। সম্মান দিয়া কথা কইতে পারে না। ডরায়। ভাবে, এইরকম করলে তারে দুর্বল ভাববে সবাই। একটা এগ্রেসিভনেস না, বরং একটা অবিশ্বাস, ডিসট্রাস্টের জায়গা তৈরি হইছে। ডরানো আর ডর-দেখানো হয়া উঠছে নিয়ম। ডর-পাওয়া মানুশ অন্য আরেকজনরে ডর-ই দেখাইতে চাইতেছে। এই ডরের জায়গা থিকা বাইর হইতে হবে, সবকিছুর আগে।
বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে মুসলমান বইলা কালচারালি ইনফিরিয়র ভাবা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে হিন্দু থাকতে দিতে হবে।মুসলমানদেরকে ‘টেররিস্ট’র জায়গা থিকা ‘গুড মুসলিম’ বানানোর প্রজেক্ট বন্ধ করতে হবে। হিন্দুদেরকে সেক্যুলার বইলা দেখানোর আইডিয়া বাতিল করতে হবে।
এইটা তখনই হবে যখন এই ‘সাম্প্রদায়িকতার’ ন্যারেটিভটারে আমরা ইন্টেলেকচুয়ালি বাতিল করতে পারবো। যখন বুঝতে পারবো, কলোনিয়াল আমল থিকা বাংলাদেশে যেই কালচারাল হেইট্রেট চালু আছে সেইটা খালি ‘মুসলমান-হেইট্রেট’ না, এইটা হইতেছে ‘ছোট জাতের প্রতি হেইট্রেট’।
হিন্দু-ন্যারেটিভে যেইটা ‘ছোট জাতের মুসলমান’ সেইটার এগেনেস্টে হিন্দুদেরকে ‘সেকেন্ড-ক্লাস সিটিজেন’ বানানোর ‘বাঙালি মুসলমান’র ন্যারেটিভ থিকা সরতে হবে (যেইটা বেসিক্যালি আশরাফি বা উঁচা-জাতের মুসলমানেরই একটা নয়া ভার্সন)। কোন একটা জাতীয়তাবাদী আইডেন্টিটির কাছে সারেন্ডার করার চাইতে সমাজের মাল্টিপ্লিসিটির/বহুজাতির আইডেন্টিটি তৈরি করতে হবে আমাদেরকে।
কারো মুসলমান (হিন্দু) হওয়া যদি কারো হিন্দু (মুসলমান) হওয়ারে বাতিল কইরা দেয়, তাইলে ধইরা নিবেন মুসলমান (হিন্দু) হওয়াও তার নিজের এখতিয়ারে নাই। ধর্ম খালি ব্যক্তিগত বা পারসোনাল স্পেইসের ঘটনা না, সমাজের ব্যক্তি-অধিকারের জায়গাগুলা না থাকলে ধর্ম ও বিশ্বাসের জায়গাগুলা মানুশ প্রাকটিস করতে পারবে না।
বাংলাদেশে মানুশের ব্যক্তিগত অধিকারের জায়গাগুলা নাই হয়া যাইতেছে। আমাদের ভোট দেয়ার অধিকার নাই। আমাদের অন্যায়-অবিচার নিয়া কথা-বলার অধিকার নাই। এই অধিকারের জায়গাগুলা মানুশরে ফিরায়া দিতে হবে। রিগেইন করতে হবে। এইটা কেউ আমাদেরকে দিবে না। নিজেদের প্রাকটিসের ভিতর দিয়া এই জায়গাগুলা রি-এস্টাবলিশ করা লাগবে।
আমাদেরকে বুঝতে হবে, টুপি-(সুন্নতি)দাড়ি দেইখা হাসাহাসি করা আর ‘পূজামন্ডপে কোরানের অবমাননা’ একই ন্যারেটিভের ঘটনা। এইগুলা হইতেছে জুলুমের শাসনরে টিকায়া রাখার মোরাল আর কালচারাল উইপেন। এই জুলুমের, অপ্রেশনের, ডরের জায়গা থিকা আমাদের আত্মারে বাঁচায়া রাখতে হবে।
ভালোবাসা বা ঘৃণা না, বরং একটা সামাজিক সমতার জায়গা আমাদেরকে ক্রিয়েট করতে হবে। আর অইটারে ‘সাম্প্রদায়দিক সম্প্রীতি’-মার্কা ভুয়া টার্মিনোলজির লগে গুলায়া ফেললে হবে না।
অক্টোবর ১৪, ২০২১
ঢাকা শহরে বা ইভেন চিটাগাং’য়ে দেখবেন চাঁদপুরের মতো সিপিবি-বামাতি-সেক্যুলার গ্যাং কথিত ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ হয় না। লাস্ট হইছিল মনেহয় ১৯৮৯ সালের দিকে। তো, কেন হয় না, গ্রামের মানুশেরা ‘অশিক্ষিত’ আর শহরের মানুশ-জন বেশি ‘সচেতন’ বইলা? 🙂 পুলিশের নজরদারি বেশি বইলা?…
না, বরং বড় শহরে জমি দখলের প্রসেসটা সেন্ট্রালি/রাষ্ট্রীয়ভাবেই মনিটর করা যায়, ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’র দরকার পড়ে না। এরেঞ্জ করাটাও অনেক বেশি এক্সপেন্সিভ হওয়ার কথা। এই কারণে গ্রামে বা ছোট ছোট শহরগুলাতে ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ তৈরি করাটা কস্ট-এফেক্টিভ। (ইভেন কুমিল্লাতেও জিনিসটা খুববেশি ছড়াইতে পারবে না। )
তবে এর সেন্ট্রাল অবজেক্টিভ হইতেছে সবসময় ডর দেখানো। হিন্দুদেরকে যতোটা না ডরের ভিতরে রাখা (এইটা একটা সময়ে ছিল) তার চাইতে ‘ইসলামি জঙ্গিরা’ আইতাছে! – এই ডরটারে একটা চেহারা দিতে পারা বরং।
এই ক্ষিপ্ততা এবং প্রতিবাদগুলা আখেরে বাকশালি এজেন্ডারেই ফুলফিল করে। যারা ‘অবমাননার’ জন্য ক্ষিপ্ত হইতেছেন এবং ‘সাম্প্রদায়িকতা’র এগেনেস্ট লড়াই করতে চাইতেছেন, উনারা সবাই নিজেদের ছায়ার সাথেই ফাইট করতেছেন।
কারণ ঘটনাগুলা কোনভাবেই ভালোবাসা বা ঘৃণা করার জায়গাতে ঘটে না, বরং দেশে যে আইনের শাসন নাই, কোন বিচার নাই, সেইটার লজিক্যাল আউটকাম একটা; জুলুমের, অপ্রেশনের ন্যারেটিভটারে চালু রাখার একটা হাতিয়ার হইতেছে এই ‘সাম্প্রদায়িকতা’। এইটা হইতেছে এর পলিটিক্যাল সিগনিফিকেন্স।
বাংলাদেশে পলিটিক্যাল ক্রাইসিস কোনভাবেই সেক্যুলার ভার্সেস ইসলামিস্ট দ্বন্দ্বের মধ্যে নাই, এইটা চাপায়া-দেয়া একটা ক্যাটাগরি। বাংলাদেশের পলিটিক্যাল ক্রাইসিস হইতেছে, পিপল ভার্সেস আইডিওলজির। যে কোন ‘আদর্শ’ এইখানে একটা ‘এন্টি-পিপল’ জায়গাটাতে থাকে এবং ক্ষমতার পারপাসরেই সার্ভ করে। (সেইটা জাতীয়তাবাদী হোক, কমিউনিস্ট হোক বা ইসলামি-মতাদর্শ।…) এই ‘সাম্প্রদায়িকতা’ও বাকশালি রিজিমরে জাস্টিফাই করার কাজেই ইউজ হইতেছে।… এইটা কোন আইডিওলজিক্যাল দুর্বলতা না, বরং পিপল-এজেন্সিগুলা না থাকার কারণে জায়গাগুলারে ম্যানিপুলেট করার জায়গা থিকা ঘটে।
তো, বাকশালি বয়ান হিসাবে এরে লোকেট করতে না পারলে এইরকম ডামি-ইস্যু এবং সিউডো-প্রতিবাদগুলা কন্টিনিউ হইতে থাকবে, ফিউচারেও। আর এইটা একটা মন-খারাপের মতো ঘটনাই, শেষমেশ। 🙁
#########
– সেক্যুলারদের ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’র ধারণা কিভাবে জুলুমের ফেভারে কাজ করে –
ব্যাপারটা এইরকম না যে, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ আমরা কেউ চাই না; কিন্তু কোন শব্দের মিনিংই যেমন ডিকশনারি মিনিংয়ে কথার ভিতরে থাকে না, একইভাবে টার্মগুলাও একইরকম জিনিস না। হইলে, রাজাকার, ফ্যাসিস্ট… এই জিনিসগুলা আজকের মিনিংয়ে থাকতে পারতো না। মানুশরে যেমনে আমরা তার কথা না, বরং কাজের ভিতর দিয়া চিনি; শব্দের মিনিং-ও তার হিস্ট্রিক্যাল এপিয়েরেন্সগুলার ভিতর দিয়াই আমাদেরকে বুঝতে হবে। এই ব্যাকগ্রাউন্ড থিকা ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ জিনিসটারে দেখেন।
এর মানে হইতেছে, দেশে যে নানান ধরণের সম্প্রদায় আছে, এদের মধ্যে মিল-মহ্ববত নাই বা থাকতে হবে – এইরকম না, বরং সম্প্রদায় বইলা কোনকিছু যে আছে, তার প্রতি এক ধরণের হেইট্রেট বা ঘৃণার জায়গা থিকা এই টার্মটা আসছে। এই হেইট্রেট হইতেছে যে, সব ধর্মের, বিশ্বাসের মানুশ-জন একসাথে মিইলা-মিইশা থাকবে না, বরং মিইলা-মিইশা এক হইতে হবে সবাইরে, ‘ইউরোপিয়ান এনলাইটমেন্ট মানুশ’ হইতে হবে; আলাদা আলাদা ‘সম্প্রদায়’ বা ‘ধর্ম’ থাকলে এইসব ‘অরাজকতা’ থাকবোই – এইরকম একটা অনুমানের ঘটনা আসলে। যেমন, সব ভাষা/ডাইলেক্ট মিইলা ‘প্রমিত ভাষা’ হয়া যাইতে হবে!
এই ধারণাটা বহুজাতির, বহু-ধারণার এগেনেস্টে একটা লিনিয়ার সমাজ গইড়া তুলতে চায়। ধর্ম যার যার বইলা সোশ্যাল স্পেইস থিকা ধর্মের নিশানাগুলারে মুইছা ফেলতে চায়। কারণ ধর্ম’রে এরা রিড করে রিলিজিয়ন হিসাবে, রিচুয়াল হিসাবে। এইখানেও শব্দেরই কারবার। আপনি যদি ধরম, নীতি বা বিশ্বাসের জায়গা থিকা দেখতে রাজি থাকেন, তাইলে বুঝতে পারবেন যে, ধর্ম ছাড়া কোন সমাজই নাই এবং ধর্ম-বিশ্বাসের জায়গাগুলাও সবসময় মাল্টিপল। ধর্ম পারসোনাল তো না-ই, বরং সোশ্যাল প্রাকটিসের জায়গাগুলারে বাদ দিলে কোন ধর্মই টিইকা থাকতে পারার কথা না। (এইখানে আরো অনেক আলাপ তো আছেই…)
তো, এই ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’-অলা’রা দেখবেন ফার্স্টেই এই ধর্মের জায়গাগুলারে বাতিল বা ইনফিরিয়র কইরা দেখাইতে চায়। এবং এই জায়গাটারেও অস্বীকার করতে চায়, অ্যাজ ইফ, এইটা চায় না! এইরকম একটা ভাব নিয়া কথা কয়। এই জায়গা থিকা এইটা খালি ‘ধর্ম-বিরোধী’ কোন ঘটনা না, বরং জুলুমের জন্য একটা বেইজ তৈরি করে যে, মানুশ তো খারাপ! ধর্ম নিয়া মারামারি করে! মানে, এইটারে কেউ ট্রিগার করতেছে, পলিটিক্যালি ইউজ করতেছে না – তা না, ‘মানুশ খারাপ’ বইলা এইটা করতেছে।…
সেকেন্ড হইতেছে, হিস্ট্রিক্যাল এক্সপেরিয়েন্সের জায়গাগুলারে বাতিল করে, গোপন করে। যেন মুসলমানদের ‘মাথা-গরম’ বইলা, ‘বুদ্ধি কম’ বইলা খেইপা যায়, খেপার কিছু নাই! খুবই ন্যাস্টি একটা অনুমান এইটা। বরং মুসলমানদের খেইপা যাওয়ার যে হিস্ট্রিক্যাল কারণগুলা আছে সেইখানে হিট করা হয় যাতে খেইপা যাওয়ার ঘটনাটা ঘটে। প্রত্যেকটা ধর্মের, প্রত্যেকটা বিশ্বাসের এইরকম সেন্সিটিভ জায়গাগুলা আছে (ইনক্লুডিং সেক্যুলার-ধর্ম)। যবন, মালাউন… এই শব্দ দিয়া টের পাইবেন ঘটনাগুলা। এইগুলা ট্রিগার করা হয় পলিটিক্যাল জায়গা থিকাই, কিন্তু তাই বইলা যে নাই – তা তো না!
‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’র নাম দিয়া এই হিস্ট্রিক্যাল সিগনিফকেন্সগুলারে বাতিল করা হয়, বা যেন খেয়াল করার মতো কিছু এইখানে নাই – এইভাবে পোর্টেট করা হয়। এইটা আরেকটা পিলার, জুলুমের। যে কোন ঘটনারে হিস্ট্রিক্যাল কনটেক্সট থিকা আলাদা কইরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে পোর্টেট করা, দেখানো।
২.
তাইলে আমরা কি করবো – ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’র কথা বলবো না? না, বরং যেই জায়গা থিকা এই ধারণাটারে দেখার রীতি চালু আছে, সেইখানে আমরা সাবস্ক্রাইব করবো না।
মানুশের সাথে মানুশের, সম্প্রদায়ের সাথে সম্প্রদায়ের লাগালাগি, বাদাবাদি আছে, থাকবেই; কিন্তু সমাজে যদি আইনের শাসন থাকে, বিচার থাকে, কোনকিছুই একটা লিমিটের বাইরে যাইতে পারে না। আজকে দুইদিন হইতেছে, মন্দিরের সামনে কোন সিসি-টিভি ছিল কিনা, কোন ফুটেজ আছে কিনা, কোন তদন্ত হইতেছে কিনা – এর কোনকিছুই আমরা জানি না।
‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ হাওয়া থিকা গজায় না। যখন অন্যায়-অবিচার-অনিয়ম সমাজে নিয়ম হয়া উঠে তখন এইটারে ফোকাস পয়েন্ট কইরা তোলাটা জুলুমের বেইজটারে আড়াল করতেই হেল্প করে সবসময়।
অক্টোবর ১৫, ২০২১
একটা জিনিস মনে হইতেছিল, আগের দিনে (মানে, ১৯৬০-৯০) সিনেমার নায়করা ছিল জার্নালিস্ট; মেইনলি অল প্রেসিডেন্টস ম্যান, পেলিক্যান ব্রিফ… এইসব সিনেমার কথা মনে হইতেছিল; যেইখানে সাংবাদিকরা একটা জিনিস আবিষ্কার কইরা সমাজরে, দেশরে বাঁচায়া দিতেছেন। বাঁচান নাই – তা না, কিন্তু এইরকম সিগনেচার ঘটনাগুলা, সিনেমাগুলা প্রফেশনরে তো গ্লোরিফাই করছে, এই লেভেলটাতে নিয়া আসছে।
এখন সেইটা হইতেছে, টেক পিপলদেরকে নিয়া। বিলিয়ন ডলার কোড নামে একটা নতুন ডকু-ফিকশনের নাম দেইখা এইটা মনে হইলো। জুলিয়ান আসাঞ্জ, স্নোডেন, স্টিভ জবস, জুকারবার্গ… কার উপর নাই! একটা স্টার্ট-আপ বানায়া ফেইল মারছেন, এইরকম লোকজনও আছেন। মানে, এইটা খারাপ-ভালো’র বাইরেও ট্রেন্ড হিসাবে নোটিশ করার জন্য বলতেছি।
তো, উনাদের মেইন কন্ট্রিবিউশনটা কি? আমার কাছে মনে হইছে, গোপনীয়তা আবিষ্কার। যেইসব জিনিস মানুশের জানা দরকার, একসেস দরকার, যেইসব জিনিস লুকায়া রাখা হয়, সেইগুলা উনারা সমাজের মানুশের জন্য এভেইলেবল করেন।
কিন্তু এই করতে গিয়া যা হয় উনারা সিক্রেট বা গোপনীয়তা জিনিসটারই একটা পার্ট হয়া উঠেন। সাংবাদিকরা যেমন ওয়ার্ল্ড-ওয়াইডই এখনকার ক্ষমতা-কাঠামোর একটা ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট। ‘সাহসী সাংবাদিক’ নাই না, কিন্তু খুবই রেয়ার প্রজাতি এখন। ইন ফ্যাক্ট, ডেইলি নিউজপেপার এবং অনলাইন নিউজ-পোর্টালের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে এইটা সম্ভবই না।
কয়েক মাস আগে এইরকম একটু ডকুমেন্টারি দেখছিলাম আম্রিকার বড় শহরগুলাতে নিউজপেপারের মালিকানা বদলের ভিতর দিয়া ব্যাপারটা কেমনে কন্ট্রোলড হইতেছে। এমনকি ইন্ডিপেন্ডেড নিউজ-পোর্টালগুলাও সারভাইব করতে পারতেছে না – ইকনোমিক্যালি না, পলিটিক্যালি। যার ফলে সাংবাদিকতা নাই হয়া যাইতেছে না, বরং ইন্সিটিটিউশনাল জায়গা থিকা সরতেছে। এইটা মোর অ্যান্ড মোর ক্লিয়ার হয়া উঠার কথা যে, একজন ভালো জার্নালিস্ট কোন পত্রিকা অফিসের কর্মচারী হয়া তার অই সোশ্যাল-রেসপন্সিবিলিটির জায়গাটারে ফুলফিল করতে পারার কথা না।…
তো, এই জায়গাতে টেক-পিপলরা যেইটা করতেছেন, ইন্ডিভিজ্যুয়ালরে অই সুযোগটা কইরা দিতে পারতেছেন। আর একইভাবে এইটা নতুন নতুন মডেলও তৈরি করতেছেন, সিক্রেসির। মানে, ফর্মটা চেইঞ্জ হইলেও ক্রাইসিসের জায়গাগুলা কম-বেশি এইরকম মোরালিটির জায়গাতেই থাকতেছে।
আপনি আপনার ইন্টেলেকচুয়াল পাওয়ার দিয়া কার পারপাস সার্ভ করতেছেন – এইটা এখন পর্যন্ত একটা বেসিক কোশ্চেন হয়া থাকতেছে। আর ইন জেনারেল, যতক্ষণ পর্যন্ত এইটা কম-বেশি পিপলের ফর-এ কাজ করতে পারতেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেইটা মিডিয়াম হিসাবেও এফেক্টিভ থাকতেছে।
মানে, নায়ক বা হিরো হইতেছেন অলওয়েজ পিপলের হিরো, যারা মানুশের জন্য কিছু করতেছেন। এই কারণে দেখবেন, একজন ডাবওলাও যদি রোগীদের জন্য ডাব প্রতি ১০টাকা কম নেন, তারে নায়ক মনেহয়! এই মনেহওয়াটা ভুল না। বরং নায়ক বা হিরো ব্যাপারটা বেশিরভাগ সময় এইরকম।
একেকটা সময়ে একেকটা প্রফেশনের গোল্ডেন টাইম তো থাকেই, কিন্তু সেই স্বর্ণালী-যুগের ব্যাপারটা মেবি ডিপেন্ড করে এইরকম মানুশের ফ্রিডম এবং ওয়েল-ফেয়ারের জায়গাতে কন্ট্রিবিউশনের জায়গাটার উপরেই।
#########
১. ঘটনা’টা কখনোই ঘৃণা বা ভালোবাসার মামলা না। (ইমোশনাল ইস্যু না।) সমাজে চিন্তা ও কথা-বলার জায়গা, আইনের শাসন এবং বিচার না-থাকার ঘটনা।
যেই কারণে এই ইস্যু নিয়া কথা-বলাই রিস্কি! কথা-বলার মতো অবস্থা নাই। পেট্রোল ঢাইলা দিয়া ম্যাচের কাঠি নিয়া বইসা থাকার মতো পরিস্থিতি। এই অস্থিরতার ইমোশনের সময়টারে পার হইতে দিতে হবে।… ইগনোর কইরা বা এড়ায়া যাওয়ার ঘটনা না এইটা। বরং ‘আগুনে ঘি ঢালা’ বন্ধ করতে হবে। সব নিরবতার মিনিং একই না, কোনসময়েই।
২. একইসাথে ভাবতে পারতে হবে যে, দেশের গর্ভমেন্ট এবং সরকারি দলের লোকজনের এক্টিভ সার্পোট ছাড়া বাংলাদেশে ‘দাঙ্গা’ অর্গানাইজ করা পসিবল না। যেই দেশে গত ১০ বছরে সরকার-বিরোধী কোন মিছিল হইতে পারে না, সেইখানে ‘হামলার’ ঘটনা কারা ঘটাইতে পারে, কেমনে ঘটে? হিন্দু-মন্দিরে হামলা হইলে এবং মুসলমানের লাশ পড়লে কার ফায়দা হয় বেশি?
ইমোশনাল ইমব্যালেন্সে এই দরকারি আলাপও ফালতু লাগে। এই কারণে, আগে থামতে হবে। কোন কথা ও কাজরে পলিটিক্যাল একশন বইলা ভাবতেছেন সেইটারে রিভিউ করতে হবে আগে।
৩. টার্মটা ইম্পর্টেন্ট। ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ বইলা কিছু নাই। ইন্ডিয়াতে মোদি-সরকার এই নাম দিয়া মুসলমান খুন করে, হিন্দু-ভোট কব্জায় রাখে। বাংলাদেশে বাকশালেরও এই ‘ডর’টা নেসেসারি একটা জিনিস, ক্ষমতায় থাকতে হইলে। (সর্প হয়া দংশন করতে হবে এবং ওঝা হয়া ঝাড়তে হয় উনাদেরকে, কতো যে টেনশন…)
এই কারণে টার্মটারে ইনভ্যালিড করতে হবে। এর থিকা বাইর হইতে হবে।
#########
দুনিয়ার কোন দেশে ‘খারাপ-মানুশ’ নাই? তারপরও যেই মানুশ এক দেশে ‘সাম্প্রদায়িক’ আচরণ করে, আরেক দেশে গিয়া করে না কেনো? করতে পারে না কেনো?
যেই দেশে আইন আছে, বিচার আছে, মানুশের বেসিক রাইটস আছে সেই দেশে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হইতে পারে না। এইটা ধর্মের সমস্যা না, যেইরকম সেক্যুলার’রা পোর্টেট করতে চায়। এইটা সামাজিক ন্যায়বিচার না-থাকার সমস্যা। পলিটিক্যাল সমস্যা।
সেক্যুলার’রা এই জুলুমের জায়গাটারে বাদ দিয়া পাবলিকের ঘাড়ে দোষ দিতে পারলে খুশি। ‘সব দোষ পাবলিকের’-মার্কা পাবলিকদের কাছ থিকা সাবধান থাকতে হবে সবচে আগে।
অক্টোবর ১৬, ২০২১
বছর দুয়েক আগে এই কথা বলছিলাম অনুমান কইরা যে, বাংলা-ভাষার আলাপে এর ভিতরে জেন্ডার-ইস্যুর ঘটনাটারে কখনোই রিকগনাইজ করা হয় নাই, আলাপে আনা হয় নাই। ভাষা যে খালি একটা ক্লাস ইস্যু না, জেন্ডারেরও ঘটনা – এইটার পক্ষে রমিলা থাপারের একটা কমেন্ট দেইখা খুশি হইলাম আজকে।
উনি বলতেছিলেন ৩০০-৭০০ শতকের কথা, তখন হাই-ক্লাসের লোকজন সংস্কৃত’তে কথা কইতো এবং লো-ক্লাস এবং সব উইমেন প্রাকৃত’তে কথা কইতো।* তো, আমার ধারণা, সংস্কৃত’রে যে বিশুদ্ধ ভাষা বইলা দাবি কইরা হয়, সেইখানে নিচু জাতে এবং মহিলাদের (উনারা তো নিচু-জাতই, নাকি না? 🙂 ) ‘প্রবেশ নিষেধ’-এর একটা ঘটনা এইখানে ছিল।
মানে, ভাষা সবসময়ই ক্লা-স্ট্যাটাসের একটা মেজর সিম্বল ছিল; যে ‘এই ভাষায় তো বস্তির লোকজন কথা বলে!’ বা ‘এইটা তো ভদ্রলোকের ভাষা না!’ – এই ভেদগুলা অনেক আগে থিকাই আছে; একইভাবে জেন্ডার-রোলগুলাও না থাকার কথা না মনেহয়। রমিলা থাপারের লাইনটারে ফারদার একজামিন করলে এই অনুমানের বাইরেও কিছু জিনিস হয়তো পাইতে পারবো আমরা।
“A notable feature in the Sanskrit plays of this period is that the high-status characters speak Sanskrit, whereas those of low or ambiguous social status, and all the women, speak Prakrit. Status and gender were linked to language.” (page 313, Early India)
##########
– ইনবক্স থিকা ওয়ালে –
সামওয়ান: …বাংলাদেশের ওয়াজ মাহফিলগুলিতে হিন্দুদের ডিহিউম্যানাইজ করাটা তো নিয়মিত ঘটনা। এর সঙ্গে এই মন্দিরে হামলাগুলির কোন সম্পর্ক নাই? আপনার অপিনিয়ন জানতে চাই।
আমি: এমনকি পারসোনালি হিন্দু-বিদ্বেষী, মুসলমান-হেটার্স লোকজন যে নাই – তা তো না, কিন্তু এই জিনিসগুলা হালে পানি পাবে না, এবং ধীরে ধীরে কইমা আসবে যদি সোশ্যাল-জাস্টিস থাকে; এখন (অই জিনিসটা নাই বইলা) বরং ধীরে ধীরে একটা ট্যাবু-ইস্যুতে পরিণত হইছে।
‘ইসলামি জোশ’ জিনিসটা আছে এবং এই জিনিসটাও পলিটিক্যালি-মোটিভেটেড একটা জিনিস। এরা একটা মেজর পলিটিক্যাল ফোর্স বইলাই এদেরকে নিয়া নাড়া-চাড়া করা হয়। মানে, আমি যা বলছি, এইটুকই ঘটনা না। এইখানে তো অনেক বড় একটা আলাপই আছে, যেইটা খুবই ইন্ট্রিগ্রেটেড টোটাল রাজনৈতিক ব্যবস্থাটার সাথে। কিন্তু মোল্লা-মুসলমানরাই মেইন শত্রু – এইটা একটা কমপ্লিট ডিল্যুশন।
#########
বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য, পাহাড়িদের জন্য, বিহারিদের জন্য, সাওঁতালদের জন্য ওভারঅল মাইনরিটিদের জন্য কিছু করতে চাইলে ক্ষমতায় থাকা লোকজনের দিকে নজর দেন! পাওয়ারফুল পলিটিক্যাল ন্যারেটিভটারে প্রশ্ন করেন, যেইটা এই জুলুমটারে সম্ভব কইরা তোলে।…
বছরে দুইদিন মন্দির পাহারা দেয়ার কথা না বইলা শক্র-সম্পত্তি আইনে হিন্দুদের যেইসব জমি, বিল্ডিং দখল করা হইছে, সেইগুলার খোঁজ করেন! অইগুলার বিহিত করেন! অইখানে মসজিদ, মাদরাসা বানানো হয় নাই! কারা দখল করছে, কেমনে দখল করছে, সেই হিস্ট্রি জানার চেষ্টা করেন। পলিটিক্যাল পাওয়ার ছাড়া কারো পক্ষে মাইনরিটি সম্পত্তি দখল করা পসিবল না। অই জায়গাতে ‘কবি নিরব’ হয়া থাইকেন না!
ক্ষমতার প্রভু-ভক্ত কুত্তা হয়া ঘেউ ঘেউ করাটারে ‘প্রতিবাদ’ বানায়া ফেইলেন না! 🙁
অক্টোবর ১৭, ২০২১
– ‘সামাজিক ন্যায়-বিচার’ কেন ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ধারণার চাইতে বেটার? –
ব্যাপারটা এইরকম না যে, সমাজে কোন কালচারাল ডিফরেন্স থাকতে পারবে না, বরং এমন কোন সমাজ দুনিয়াতে আপনি পাইবেন না যেইখানে কনফ্লিক্টিং কালচারাল ইস্যুগুলা নাই। দুনিয়াতে কোন সমাজই লিনিয়ার না। (উপর দিয়া একই দেখা গেলেও কিছু ডিফরেন্স নিয়াই তারে চলতে হয়।) বিভিন্ন সমাজ বিভিন্নভাবে এই কনফ্লিক্টগুলার একটা সুরাহা করে এবং ডিফরেন্সগুলাসহই একটা সমাজ হিসাবে পারফর্ম করে।
কিন্তু সো-কল্ড প্রগতিশীলতা এই ডিফরেন্সগুলার জায়গাগুলারে এক্সপ্লয়েট করে; দাবি করে যে, সোশ্যাল-স্পেইসে এক হইতে হবে। এই ‘এক হওয়ার’ দাবি’টা খালি জবরদস্তিই না, বরং অপমানজনক এবং কনফ্লিক্টগুলারে পলিটিক্যাল পারপাসে ইউজ করার লাইসেন্সটা দেয়। ‘সম্প্রদায়’ হিসাবে পরিচয়গুলারে গোপন (মাইনরিটির ক্ষেত্রে) এবং শো-অফ (মেজরিটির ক্ষেত্রে) লাগে তখন। আইডেন্টিটি হিসাবে ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ একটা নয়া আইডেন্টিটিই তৈরি করতে চায় যেইখানে পুরান কালচারাল ডিফরেন্সগুলা থাকবে না, এর এসেন্সগুলারে কবর দেয়া হবে, কিছু মুখোশ এবং মিথ হিসাবে থাইকা যাবে খালি। ধর্ম যেন খালি রিচুয়াল কিছু! আসল ধর্ম হইতেছে – অসাম্প্রদায়িকতা, কোন ধর্ম না থাকা। (যেইটা আসলে প্যাগান ধর্মের ঘটনা একটা।…)
যেমন আপনি পূজা করবেন, কিন্তু গরুর মাংস খাইবেন; আপনি নামাজ পড়বেন কিন্তু মদ খাইবেন। এইগুলা যে করে না লোকজন – তা না, নানান রকমের ডিফরেন্স একজন মানুশ তার চিন্তায়, কাজে এবং লাইফ-জুইড়াই কন্টিনিউ করে। কিন্তু করতেই হবে – এইটারে তো নিয়ম বানানো যায় না। ‘বিজ্ঞান-চর্চা’র নামে মানুশের ‘ধর্ম-চিন্তা’রে বাতিল করার নাম ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ হইতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে কমিউনিজমের নামে, মর্ডানিটির নামে এইরকম ইভিল একটা জিনিস প্রাকটিস হিসাবে চালু আছে।
তার মানে আবার এইটা না যে, ডিফরেন্স মানেই ডমিনেন্স বা ‘বিদ্বেষ’ চালু রাখা। বরং যখন ‘সম্প্রদায়’ জিনিসটারে সেন্টার করা হয় দেখাদেখির, এইটা এইরকমের ‘বিদ্বেষ’ জিনিসটারে সবসময় ফোকাসের জায়গাতে রাখতেই হেল্প করে। ডিফরেন্স যেইরকম ফোকাস পয়েন্ট হইতে পারে না, একইরকমভাবে ‘এক’ হওয়াটাও কখনোই এর সমাধান না; যেইটা ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ নামের ধারণাটা দিয়া প্রপোজ করা হয়।
একটা সমাজ ফাংশন করে তার ভিতরের ডিফরেন্সগুলারে কেমনে নেগোশিয়েট করে তার ভিতর দিয়া। সামাজিক সমতার, ইক্যুয়ালিটির এবং জাস্টিসের ধারণার ভিতর দিয়া। একটু উইয়ার্ড শুনাইলেও কোন না কোন নতুন এবং পুরাতন ক্রাইসিসের ভিতর দিয়াই মানুশ সমাজে থাকতে থাকে। এমন না যে, ১৯৪৭’র আগে বৌদ্ধ-হিন্দু, হিন্দু-মুসলমান মারামারি ছিল না; কিন্তু সেইটা পলিটিক্যালি মোটিভেটেড ছিল না বইলা আমরা ধারণা।…
সোশ্যাল স্পেইসে এই নেগোশিয়েশনগুলা অনেক সময় কাজ করছে, অনেক সময় করে নাই। আর এর ভিতর দিয়া একটা সোশ্যাল-ফর্মেশন তৈরি হইছে (যেইটা একইসাথে বদলাইতেছেও আবার…)। যার ফলে, পাশাপাশি দুইবাড়িতে দুই ধর্মের লোকজন থাকতে পারতেছে। খেয়াল কইরা দেখবেন, নেইবারহুড-ই হয়া উঠছে আমাদের সামাজিক ঐক্যের জায়গা। পাড়া-মহল্লার লোক হয়া পাড়া-মহল্লার আরেকজনের বাড়িতে আপনি হামলা করতে পারেন না। এইটা আমাদের সোশ্যাল এথিকসের সাথে যায় না।…
তো, এইখানে ডিফরেন্স নাই কইরা দিতে হবে – এইটা একটা চাপায়া দেয়া ঘটনা। যখন ডিফরেন্সগুলারে বাতিল করতে চাওয়া হয় – সেইটা যেমন একটা সমস্যা, এক করতে চাওয়াটাও আরেকটা প্রব্লেমেটিক ঘটনাই, যেইটা ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ধারণার ভিতরে এক রকমের মাস্ট একটা জিনিস। যেইটা নিয়া আমাদের ভাবতে পারাটা দরকার।…সামাজিক নেগোশিয়েশনের স্পেইসগুলারে আরো স্পষ্ট এবং ভাইব্রেন্ট করা দরকার যেইখানে মানুশ তার সম্প্রদায়ের পরিচয়সহ থাকতে বাঁইচা থাকতে ডরাবে না।
বাংলাদেশে হিন্দু হইলে ডরের ভিতরে থাকতে হয়। মাদরাসার স্টুডেন্টদেরকে সবসময় ইসলামিস্ট হওয়ার ডরের মধ্যে থাকতে হয়। নাস্তিক হইলে হামলার ডরে থাকতে হয়। বিএনপি সার্পোট করলে হামলা-মামলার শিকার হইতে হয়। জামাত করলে তারে খুন করা জায়েজ হয়। ইভেন বাকশাল করলেও তারে খাঁটি বাকশাল হওয়ার প্রমাণ দিতে হয়। একটা ডরের সমাজ তৈরি হইছে বাংলাদেশে এখন। কেউ-ই এই ডরের বাইরে নাই।
‘অসাম্প্রদায়িকতা’ এবং এর গোড়া ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এর সমাধান দিতে পারবে না। বরং এই লিনিয়ার জাতীয়তাবাদী ধারণাগুলা এই নয়া বাকশালের গোড়া। এর গোড়ায় পানি ঢাইলা ডর’টারে আরো বড় করা হবে। এই পুরানা ধারণাগুলার খপ্পর থিকা আমাদেরকে বাইর হইতে হবে। সমাজের মাল্টিপ্লিসিটিরে, বহু-জাতীয়তারে, বহু-সম্প্রদায়রে জায়গা দিতে হবে। আর এইটা করতে হইলে, এই লিনিয়ার ধারণাগুলারে বাতিল করতে হবে, সবচে আগে।
অক্টোবর ১৮, ২০২১
কুমিল্লার চাইতে রংপুরের ছবি’টা বেশি সুন্দর হইছে, শেয়ারও হইতেছে বেশি। ছবি’টা কে তুলছে? কেউ কি সোর্সটা জানেন?
জিজেকের একটা কমন কথা আছে, সেইটা হইতেছে: সোভিয়েত ইউনিয়নের পলিটব্যুরো’র মেম্বার’রাই জোকস বানায়া লোকজনের মুখে মুখে ছড়ায়া দিতো, আর নিজেরা মজাও পাইতো তাদের ক্ষমতা নিয়া লোকজন কথা-বার্তা বলতেছে বইলা। সাইকোলজি হিসাবে উইয়ার্ড মনে হইতে পারে, কিন্তু ব্যাপারটা ঘটতে পারার সম্ভাবনা আছে আসলে।
হিন্দুদের ঘর-বাড়িতে যে আগুন দেয়া হইতেছে, এর কোন ছবি/ফটোগ্রাফ যদি না থাকে, ‘লজ্জা’ কি পাইতে পারবো আমরা, ঠিকঠাকমতো?
কিন্তু প্রায় সবগুলা শেয়ারে, আহাজারিতে একটা জিনিস খুবই কমন। কে আগুন লাগাইলো – এইটা নিয়া কোন প্রশ্ন নাই, কেউ গ্রেফতার হইলো না কেন – এইটা নিয়াও কথা নাই। যেন আমরা জানি, কে করছে এইটা; তার/তাদের ধরা পড়ার কোন দরকারও নাই!
ভিটামাটি’তে আগুন লাগানো মোটামুটি ‘হাজার বছরের ঐতিহ্য’ আমাদের দেশের; কারো ভিটা দখল করতে হইলে আগুন লাগানো হইতো, এখনো শহরে বস্তি দখল করতে গেলে, বস্তিবাসীদেরকে সরাইতে হইলে আগুন লাগায়া দেয়া হয়।
কারা লাগায়? যারা আগুন লাগায় তারা কখনোই ধরা পড়ে না। এমনভাবে বলাবলি হয় যেন একসিডেন্ট! অথচ আমরা জানি বা বুঝতে পারি যে, ক্ষমতাবান কেউই এই কাজ করতেছে এবং যারা তাদেরকে ধরার কথা, তারাও এর সাথে জড়িত।
ক্ষমতার জায়গাটারে আমরা কখনোই প্রশ্ন করতে পারি না খালি, তাদেরকে ‘বিব্রত’ না করাটা একটা নিয়মে পরিণত হইছে এখন।
কিন্তু যতদিন ক্ষমতার জায়গাটারে আমরা প্রশ্ন না করতে পারবো, যতদিন আন-কোশ্চেনড রাখা হবে, এই জুলুম জারি থাকবে। এবং বাড়তেই থাকবে। ধর্মের নামে মাইনরিটির উপর, জাতীয়তাবাদের নামে পাহাড়িদের উপর। দিনের পর দিন। আর এইটা কোন ইমাজিনড মানুশ-জন করে না, এরা বাস্তবে আছে, এরা রিয়েল। কিন্তু এদেরকে আড়াল কইরা রাখা হয়। ফেইসলেস করা হয়।
জুলুম করা ক্ষমতাবানদের কাজ, আর ক্ষমতারে প্রশ্ন করা মজুলমের কাজ। এরে-ওরে দোষ দেয়ার সিউডো-প্রতিবাদ বাদ দিয়া ক্ষমতারে প্রশ্ন করেন! জুলুম দেখলে কষ্ট আমাদের সবারই হয়; কিন্তু যতদিন আমরা জালিমরে প্রশ্ন করতে না পারবো, এই জুলুমের হাত থিকা আমাদের মুক্তি নাই।
#########
কুমিল্লার ঘটনায় পারপাস সার্ভ হয় নাই। চাঁদপুর-হাজীগঞ্জ দিয়াও ভাইব’টা তৈরি করা যায় নাই পুরাপুরি। এইজন্যই রংপুরে আগুন লাগানো হইছে। একটা ‘সমস্যা’ হিসাবে পাবলিকের মনে এস্টাবলিশ না করা পর্যন্ত এইটা কন্টিনিউ হইতে থাকার কথা, আরো কিছুদিন।
আমার ধারণা, এই ‘দাঙ্গা’র উদ্দেশ্য হইতেছে স্টেইট-স্পন্সরড টেরিরিজমের একটা লোকাল অবয়ব এস্টাবলিশ করা। স্টেইট-সারভেইলেন্স বা নজরদারি’রে জাস্টিফাই করা। যে, সারাদেশের সব মানুশরে চোখে চোখে না রাখতে পারলে, কন্ট্রোল না করতে পারলে, দেশে ‘দাঙ্গা’ হইতে পারে আবার!
এই ডর থিকা আপনি-আমি (শিক্ষিত মিডল-ক্লাস) বলতে থাকবো, হ্যাঁ, বাঙালি-জাতটাই খারাপ! এদেরকে মাইরের উপর রাখা দরকার! কন্ট্রোল করা দরকার!
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন দিয়া পারপাস সার্ভ হইতেছে না। সরকারি নজরদারির বাইরে কোন ডিজিটাল একসেসই থাকবে না মেবি, ইন ফিউচার। (মানে, যেহেতু মিডিয়াতেও কোন নিউজ নাই, অতীতের ঘটনাগুলার বেসিসে কিছু অনুমানই করতে পারি আমরা।)…
বাকশালি নজরদারি আরো ভয়াবহভাবে চাপায়া দেয়া হবে, এই ‘দাঙ্গা-হামলার’ ঘটনা দিয়া। মানে, এই অনুমানটা সত্যি না হোক – এইটা আমিও চাই। কিন্তু এর বাইরে অন্য কোন পলিটিক্যাল implication’র কথা মনে হইতেছে না, আপাতত।
#########
এখনো কিছু মানুশ আছেন, যারা মনে করেন ‘প্রগতিশীল’ পত্রিকাগুলা ভুল কইরা পাবলিক’রে দোষ দেয়! মনের ভুলে সরকারের কাছে জবাব চাইতে পারে না!
এইরকম প্রগতিশীল-বলদগুলা হইতেছে ‘প্রধানমন্ত্রীকে ভুল-বোঝানো হচ্ছে’-টাইপ সিপিবিগুলার নিউ জেনারেশন। এরা বিপ্লবও করতে চায়, আবার সেইফও থাকতে চায়। পুলিশের একটা দৌড়ানি খাইলে মনে করে, আরে, আন্দোলন তো কইরা ফেললাম! কিন্তু সবসময় মনে করে যে, পাবলিক তো আসলে বুঝে না!
পাবলিকরে উনারা যতোটা বুঝাইতে চান, এর বদলে যদি একটু বুঝার ট্রাই করতে পারতেন তাইলে সোশ্যাল-এলিটদের পা-চাইটা উনাদের পলিটিক্যাল লাইফ পার করতে হইতো না। দ্যান এগেইন, যদি উনারা পাবলিকের কথাই শুনেন, তাইলে আর বেশি-বুঝা লোক কেমনে হইবেন!
পিপল-হেইট্রেট এই প্রগতিশীলদের পলিটিক্যাল কালচারের কোর একটা জিনিস। বাকশালের সাথে বাংলাদেশের সো-কল্ড কমিউনিস্টদের মিল বা ঐক্যের জায়গাটাও এইখানে।
এরা কয় – সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়ান, কিন্তু মইরা গেলেও কইতে পারবে না, বাকশালি শাসন রুখে দাঁড়ান! এরা ‘অসাম্প্রদায়িক’ না, এরা হইতেছে বাকশালের পাহারাদার।
অক্টোবর ১৯, ২০২১
– দুশমনের নাম ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ –
ধরেন আপনি আপনার সেকেন্ড ওয়াইফ/হাজব্যান্ডের লগে ডির্ভোসে গেলেন, তার মানে কি আপনি আপনার ফার্স্ট ওয়াইফ/হাজব্যান্ডের কাছে ফিরা যাইতে চাইতেছেন? তা তো না! ফার্স্টের জনের লগে মিলে নাই বইলাই ডির্ভোসে গেছিলেন; আর ধইরা নেন সমাজে একলা থাকা যেহেতু ঝামেলার, সেকেন্ড ম্যারেজে আপনার যাইতে হইছিল। কিন্তু সেইটা যে কোন সমাধান না, এই ভুল বুঝতে পাইরা আপনি তারপরে একলা না, বরং ইন্ডিপেন্ডেড হইছেন।
এখন এই ইমাজিনারি পারসনের জায়গায় ‘বাংলাদেশ’ নামের আইডেন্টিটি’টারে বসান। প্রাইমারি লেভেল থিকা জিনিসটা টের পাইতে পারবেন কিছুটা। (বিয়া ব্যাপারটাতে ক্রিটিক্যাল হইয়েন না, উপমা হিসাবেই দেখেন।) হিন্দু-জমিদারদের ইকনোমিক এক্সপ্লয়টেশনের কারণেই বাংলাদেশ কলকাতা তথা ইন্ডিয়ার পশ্চিমবাংলার লগে থাকতে পারে নাই, ইন্ডিপেন্ডেডই থাকতে চাইছিল আসাম নিয়া, না পারার কারণে পাকিস্তানে যাইতে হইছিল। কিন্তু অইটা টিকে নাই বইলা তার মানে এইটা না যে, বাংলাদেশ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদে’ ফিরা যাইতে চায়। বাংলাদেশ একটা ইন্ডিপেন্ডেড রাষ্ট্র এবং এই দেশের মানুশ-জন এইটাই থাকতে চায়। কিন্তু এর বেইজ যদি হয় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ তাইলে সেইটা কখনোই সম্ভব না, বা ট্রিকিই হয়া উঠার কথা, তার নতুন আইডেন্টিটি ক্লেইম করার জায়গাটা।
‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ অন্য যে কোন ধারণার মতোই কোন এবসুলেট ধারণা না, বরং একটা সময়ের হিস্ট্রিক্যাল কন্সট্রাকশন। মেইনলি কলকাতা-সেন্ট্রিক হিন্দু কমুনালিজমের একটা ধারণা।* ‘ভাষা-ভিত্তিক’ একটা ন্যাশনালিজম বইলা রিড করলে আসলে ভুলই হবে কিছুটা। কোন ধারণারেই এর পলিটিক্যাল মাজেজটার বাইরে গিয়া রিড করতে গেলে সেইটা অসম্পূর্ণ একটা রিডিং-ই হওয়ার কথা। ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ ব্যাপারেও এইটাই হইছে এবং হইতেছে।
কিন্তু যেই হিস্ট্রিক্যাল টাইম এবং কনটেক্সটে এর শুরু হইছিল, সেইটা আমরা পার হয়া আসছি। যেই কারণে, আহমদ ছফা ‘বাঙালি মুসলমানের’ কথা বইলা ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’রে রিলিভেন্ট করতে চাইছেন।** এই উপমার কনটেক্সটে এইটা হইতেছে ধরেন – ‘বাচ্চা নিয়া নাও, তাইলে কোন ঝামেলা হবে না’-টাইপ ঘটনা। এইটা ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’রে বাতিল করতে চাওয়ার কোন ঘটনা না, বরং যে কোন মূল্যে ধারণাটারে আপগ্রেড করতে চাওয়ার বা টিকায়া রাখতে চাওয়ার ঘটনা। আহমদ ছফার অনেক পজিটিভ কন্ট্রিবিউশন এবং দরদী-চিন্তার বাইরে এই ভুলের কথা আমাদেরকে রিকগনাইজ করতে পারতে হবে।
বাংলাদেশে এখনো মাইনরিটি’র উপরে যে কোন রকমের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন চালু আছে পলিটিক্যালি এই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এবং ‘বাঙালি মুসলমান’ ধারণার উপর ভর দিয়াই। পাহাড়ে, সমতলে আদিবাসীদের জমি দখল অবশ্যই একটা ক্ষমতার ঘটনা, কিন্তু এইটা জাস্টিফাই করা হয় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ ও ‘বাঙালি মুসলমান’ ধারণার বেসিসে। মানে, এই বেইজটা না থাকলে, ঘটনাগুলা ঘটতো না – তা না, কিন্তু এইরকমের উছিলাগুলা যে জরুরি, সেইটা খেয়াল করতে পারাটা দরকার।
একটা আইডিওলজি যতো লিনিয়ার হইতে থাকে, তত সেইটা জুলুমের হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। ব্রিটিশ কলোনির এগেনেস্টে ন্যাশনালিজমের বিজয়ের ভিতর দিয়া জুলুমের লোকালাইজেশন হইছে, জুলুম শেষ হয় নাই। এইটা খুব স্পষ্টভাবে আমাদের বুঝের মধ্যে থাকলেও বলাবলির মধ্যে থিওরেটিক্যাল জায়গাতে ব্যাপারগুলা কম-বেশি মিসিংই। কলোনিয়ালিজমের আইডিওলজি ছিল এনলাইটমেন্ট, যে ইউরোপিয়ান শাদা চামড়ার মানুশ হইলেই আপনি ‘মানুশ’ এবং বেটার হিউম্যান বিইং। ইউরোপিয়ান ভার্সেস নেটিভ। অই আইডিওলজিক্যাল ট্রাপ থিকা আমরা এখনো বাইর হইতে পারি নাই। বাঙালি ভার্সেস পাহাড়ি, বাঙালি ভার্সেস অবাঙালি/বিহারি… এইরকম জিনিসগুলা জারি আছে। মানে, ন্যাশনালিজমের আইডিওলজিতে একটা ন্যাশনাল-প্রাইড’রে বাইছা নিতে হয়, একটা লিনিয়ারিটিরে। যদি এইরকম কোন প্রাইড না থাকে, সেইটা কোন ন্যাশনালিস্ট ইমোশনরে ইন্সপায়ার করতে পারে না। এই কারণে নায়কের দরকার পড়ে সবসময়, ন্যাশনালিজমের। একটা ইনফিরিয়রিটি এবং একই সাথে একটা সুপিরিয়রিটি ছাড়া এই প্রাইড সাসটেইন করতে পারার কথা না।
মানে, আমি যেইটা বলতে চাইতেছি, থিওরেটিক্যাল গ্রাউন্ড থিকা ন্যাশনালিজম কলোনিয়ালিজমের চাইতে আলাদা কোন জায়গাতে এগজিস্ট করে না। যার ফলে রাষ্ট্র-ব্যবস্থাতেও মেজর কোন চেইঞ্জ আসে নাই বা আনার দরকার পড়ে নাই। বরং কলোনিয়াল বুরোক্রেসিটাই কন্টিনিউ হইতে থাকতেছে। যখন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া থিকা আমরা আলাদা হইছি, আমরা টের পাইছি যে স্টিল আমাদের উপরে জুলুমটা আউটসাইডার লোকজনই করতেছে, যেই কারণে পাকিস্তান থিকা আলাদা হওয়াটা একটা কলোনিয়াল ফাইটেরই এক্সটেনশন, এক রকমের; যে, বাইরের শত্রু’র হাত থিকা মুক্তি পাওয়া। কিন্তু তার মানে পুরানা ‘ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের’ সময়টাতে ফিরা যাওয়া না।
হিস্ট্রিতে কখনোই আমরা পুরানা টাইমে ফিরা যাইতে পারি না। যেইরকম পাকিস্তান আমলে ফিরা যাইতে পারি না, একইরকমভাবে ব্রিটিশ ইন্ডিয়াতেও না। কিন্তু অতীতের ভূতগুলা আমাদেরকে কখনোই ছাইড়া যায় না। বরং ফিরা ফিরা আসে। এইরকম একটা ভূত হইতেছে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’, যেইটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উপ্রে সওয়ার হইছে।
খুব ব্রডলিই দেখেন, বাংলাদেশে কিন্তু খালি বাংলা-ভাষায় কথা-বলা লোকজনই থাকে না, আরো কিছু ভাষা আছে। এমনকি বাংলা-ভাষাটারে জাইত্তা ধইরা মাইরা ফেলার, জোর কইরা প্রমিত (আল্টিমেটলি কলকাত্তাইয়া) হওয়ার যেই চেষ্টা সেইটাও এই ‘বাঙালি’ হওয়ার জায়গা থিকাই আসছে। মানে, আইডিওলজি হিসাবে যেহেতু লিনিয়ার এইখানে সবসময় ‘এক’ হইতে হবে – এই চাপটা আছে। থিওরেটিক্যাল জায়গা থিকা এই কারণে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ বাংলাদেশের ভিত্তি তো হইতেই পারে না, বরং দুশমন একটা।
বাংলাদেশ যে একটা বহু-জাতির একটা দেশ হইতে পারে, তার একটা অস্বীকার হইতেছে এই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। যেইটা সবসময় খালি একটা ‘এন্টি-মুসলমান’ আইডেন্টিটি হিসাবে পারসিভ হয়া একটা ‘ইসলামি মৌলবাদী’ জোশ’রে জাগায়া তোলে না, বরং বাংলাদেশের অন্য সব মাইনর আউডেন্টিটিরে নাগরিক-অধিকারের জায়গা থিকা স্পেশাল এবং ভারনারেবল কইরা তোলে।
আইডেন্টিটি এমন একটা জিনিস না যেইটা আমরা ইনহেরিয়েট করি, বরং আইডেন্টিটি এমন একটা জিনিস যেইটা আমাদেরকে তৈরি করতে হবে। আমি বলবো, এই জায়গা থিকা আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল কাজ হইতেছে পুরানো কোন ধারণার কাছে ফিরা যাওয়া না, বরং বাংলাদেশের নতুন, ইনক্লুসিভ এবং বহুজাতির একটা ধারণারে তৈরি করা। আর কোন পুরান টার্ম দিয়া এইটা করা পসিবল না, কখনোই।
(টু বি কন্টিনিউ)
…
*যেই কারণে ‘বাঙালি’ আইডেন্টিটির ভিতরে ‘মুসলিম’ হওয়াটা খালি কঠিন না, বরং বাড়তি একটা জিনিস মনেহয়। এইটা খালি মনে-হওয়ার ঘটনা না আর কি।… আরেকটা জিনিস হইলো, দুনিয়াতে ইসলাম এবং ‘ইসলামিস্ট জঙ্গি’ যেমন একই জিনিস না, একইরকমভাবে হিন্দু-ধর্ম এবং ‘হিন্দু কমুনালিজমরে’ গুলায়া ফেইলেন না! 🙁 যেহেতু বাঙালি জাতীয়তাবাদ কি? – এইটা এইখানে আলাপের মেইন ইস্যু না এইটা নিয়া কথা কইতে গেলে আলাপটা ডাইবার্ট হয়া যাবে; কিন্তু এই নিয়া সাপ্লিমেন্টারি আরেকটা লেখা লেখতে হবে। আই হোপ, সেই চিন্তা করার এবং লেখার সময় পাবো আমি লাইফে।…
**এইটা ছফা সাহেবের আবিষ্কার না, যেই ক্রেডিট উনারে দেয়াটা নিয়ম হয়া দাঁড়াইছে এখন। এইটা ফার্স্ট কইছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পরে যখন যখন কলকাতাতে বাঙালি (হিন্দু) জাতীয়তাবাদের ভাইব উঠছে তখন তখনই মুসলমান মুভমেন্ট শুরু হইছে, ১৯২০ সালের দিকের খেলাফত আন্দোলনের আগেও এর হিস্ট্রি থাকার কথা। ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজ একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা। আহমদ ছফা বাংলাদেশ আমলে জিনিসটারে মোর ওয়ার্কেবল কইরা তুলছেন।
##########
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা দুইটা পারপাস সার্ভ করে –
১. পলিটিক্যালি হিন্দুদেরকে একটা ডরের মধ্যে রাখে
২. একই সাথে মুসলমানদেরকেও কালচারালি ইনফিরিয়র কইরা রাখে
আর এর ভিতর দিয়া মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি যেইটা করে, জালিমরে তার জুলুম কন্টিনিউ করার লাইসেন্সটা রিনিউ করার সুযোগটা দেয়। (জালিম এখনো ‘উদ্ধারকর্তা’ হিসাবে মাঠে নামে নাই বইলা হামলা এখনো বন্ধ হয় নাই। এই হামলা বন্ধ করার ভিতর দিয়া ফারদার লেজিটিমিসিই ক্লেইম করা হবে।…)
এর বাইরে আর কোন আলাপ যে নাই – তা না, কিন্তু এই পলিটিক্যাল জায়গাটারে ইগনোর কইরা যে কোন আলাপই হইতেছে মোস্টলি নন-পলিটিক্যাল বা খুচরা আলাপ।
অক্টোবর ২০, ২০২১
বাংলাদেশে আম-জনতার* কাছে রিচ করতে হইলে ফেসবকু ছাড়া আর কোন রাস্তা আছে? টিভি’র টকশো, পত্রিকায় কলাম-লেখা… কয়জন দেখে এইগুলা এখন, কোন ইন্সফ্লুয়েন্স কি আছে এইগুলার, আর?
এই কারণে দেখবেন গর্ভমেন্টও চায় ফেসবুকের কন্ট্রোল নিতে, বন্ধ করতে পারে না বইলা। ডেইলি-স্টারসহ সরকারি মাউথপিসগুলার ন্যারেটিভ’টা খেয়াল করেন। ফেসবুক ইউজ করার উপরে ট্যাক্স বসানো না হইলেও বা এনআইডি মাস্ট না করা হইলেও, এইখানে ‘সামাজিক ব্যবহার নিশ্চিত’ করার নামে নতুন রেগুলেশন বসতে থাকবে।
মাথা-ব্যথা যে নাই – তা না, কিন্তু যেই জায়গায় মাথা তোলার চান্স আছে, সেই জায়গা ছাঁইটা ফেলা হবে।
…
*একটা অডিয়েন্স পর্যন্তই; মানে, সারা দেশ, সব মানুশ বলতে যে ডিফাইনড কোন এরিয়া নাই, এইটা তো কম-বেশি আমরা জানি। একটা ইমপ্যাক্ট তৈরির করতে পারার কথাই আমি বলতেছি।
#########
গতবছর লকডাউনের সময় লোকজনের যে মসজিদে গিয়া নামাজ পড়ার অভ্যাস বাইড়া গেছিল তখন কইছিলাম এইটা খালি ‘ধর্মভীরুতা’ না, বা মরণের ডর না; লোকজনরে যে বাইর হইতে দেয়া হইতেছে না, মানুশ হিসাবে এই মিনিমাম অধিকার’টা নাই, সেইটারে না-মানা’র ঘটনাও কিছুটা। মানে, অইভাবে রেজিসট্যান্স হিসাবে আলাদাভাবে লোকেট করা যাবে না, কিন্তু এইরকম একটা ফিলিংস থাকার কথা।
একইরকমভাবে, আজকে যে রাস্তায় রাস্তায় ঈদে মিলাদুন্নবী’র মিছিল, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় কোন মিছিল-মিটিং না করতে পারার একটা ফিলিংসও এইখানে থাইকা যাওয়ার কথা, কোন না কোনভাবে। মানে, এরে অবশ্যই ভিজিবিলি লোকেট করতে পারবেন না আপনি বা পলিটিক্যালি দেখা যাবে না; যে, নবী-প্রেমের ঘটনা এইখানে নাই! বা কোন ইসলামি জোশ নাই। এইভাবে দেখলে আরো বড় ভুল হবে সেইটা।
কিন্তু অনেক সময় দেখবেন, নন-পলিটিক্যাল ঘটনাগুলারেও পলিটিক্যালি দেখা লাগতেছে আমাদেরকে। এইটা তখনই হয় যখন সমাজে জুলুমের ভিজিবল কোন রেজিসট্যান্সের ক্ষমতাও মজুলমের থাকে না। বাংলাদেশের মানুশের সামনে গত ৫০ বছরে এতো বড় দুর্দিন আর কোনদিন আসে নাই।
#########
Nightcrawler সিনেমাটা একবারই দেখছি আমি, কিন্তু খুবই ইন্টারেস্টিং সিনেমার সাবজেক্ট’টা। মানে, ধরেন ঈদের সময় রাস্তা-ঘাটে, ট্রেনে, লঞ্চে ‘ঘরে-ফেরা মানুশের দুর্ভোগ’ না দেখাইলে সেইটা কি ঈদের নিউজ হইতে পারবে সেইটা? মিসিং মিসিং লাগবে না, কিছু একটা? ২০১৬ সালে বা এইরকম কোন একটা বছরে ঈদের আগে ৩/৪ ছুটি পইড়া গেছিল, তখন ম্যাসিভ কোন জ্যাম-ট্যাম হইতে পারে নাই। বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টরদের চোখে-মুখে যে কি বিষন্নতা! কোন ঈদ হইলো এইটা!
এইরকম, সামনের কোন পূজা কি আমরা পাবো যেইখানে মন্দিরে মূর্তি-ভাঙ্গার কোন নিউজ থাকবে না? মানে, ‘পাবলিক ডিমান্ড’ বইলা একটা জিনিস তো আছে বাজারে; তো, নিউজ-মিডিয়ার একটা ‘দায়িত্ব’ আছে না, এই জায়গায়!
নাইটক্রাউলার সিনেমাটা এইটা নিয়া ডিল করে; যেমন ধরেন, রেইপের নিউজ লাগবে, খালি রেইপ হইলে হবে না, কোন ব্ল্যাক বা কোন রিফিউজি হোয়াইট উইমেনরে রেইপ করছে – এইরকমের নিউজ লাগবে, তা নাইলে স্টোরির লগে তো ফিট-ইন হবে না!
আমার ধারণা, এইবারের পূজা-মন্ডপের হামলা ও হিন্দু-ঘরবাড়িতে আগুন দেয়ার নিউজ/গুজবে এইরকম ডিটেইলগুলা মিসিং ছিল। পরেরবারে বাদ যাবে না, ইনশাল্লাহ্!
[ফর গডস সেক, ধইরা নিয়েন না যে, বাংলাদেশে ঈদের সময় রাস্তা-ঘাটে জ্যাম লাগে না বা হিন্দুদের পূজার সময় মন্ডপ ভাঙ্গা হয় না! মানে, এইরকম ‘বিপন্ন বিস্ময়’ নিয়া তো আসলে কিছু বলার নাই।]
Leave a Reply