কবিতা: এপ্রিল, ২০২৩

অনেকগুলা বন্ধ দরজা

অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি। দরজাগুলারে দেখতেছি। কোন দরজাই আপনা-আপনি খুইলা যাবে না। আমারে বলবে না, আসো! আমার কাছেও চাবি নাই কোন। বইসা থাকতে থাকতে ভাবতেছি আমার মরণ হইতেছে সেই চাবি। যেই চাবি থাকলে পরে সবগুলা দরজাই খুইলা যাবে। তার আগ পর্যন্ত অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি আমি। থাকবো।

একটা না-লেখা কবিতা

ধরো, অন্য রকমের একটা কবিতাই লেখলাম আমি
(মানে, যেইটারে কবিতা বলা যায়,
পারবো না আমি জানি,
তারপরও ধরো, লেইখা ফেললাম)
আমার কবিতাটা কি কবিতা হইতে পারবে?

“আপনার উঠান তো বাঁকা!”
কমলা-সুন্দরী তখন বলবেন।

আমি জানি, একটা কবিতা আমি
লেখতে পারবো না আর কোনদিনই

বাল্য শিক্ষা

ডিএসএ অই আসছে তেড়ে
সাংবাদিকতার-স্বাধীনতা’টি আমি খাবো পেড়ে

লাস্ট মোলাকাত

তোমারে কিডন্যাপ কইরা নিয়া আসছি। কিডন্যাপ মানে জোর কইরা তো আর আনি নাই, বাসা থিকা যখন বাইর হইছো তখন শহরের বাইরে নিয়া আসছি। ব্যাটারি রিকশা দিয়া আসছি। শহরের বাইরে ছোট একটা ব্রিজের উপর দাঁড়ায়া আছি। তোমার সাথে তোমার পাড়ার ছোটভাইও আছে। শহরের এক গুন্ডার লগে তোমার প্রেম। সে এলাকার বাসস্ট্যান্ড কন্ট্রোল করে। অর লগে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তোমার। সে জানে তোমার এক প্রেমিক ঢাকায় থাকে। এতোক্ষণে সে খবর পাইয়া গেছে। তুমি আমার জন্য পেরেশানিতে পইড়া গেছো। পাইলে সে কি মাইরটাই না আমারে দিবে! আমাদের আর কোন এফেয়ার নাই এখন। ফয়সালা শেষ। এমন না যে তুমি আমারে ভালোবাসো না, কিন্তু আমার তো চাকরি নাই কোন, পড়াশোনাই শেষ হয় নাই! বাস্তবতা অনেক কঠিন। তুমি আমারে বুঝাইছো। আমিও বুঝছি। মন-খারাপ হইছে একটু। এখন তুমি শহরে ফিরা যাবা। তোমার প্রেমিকের এমনিতেই অনেক রাগ। তারেও অনেককিছুু বুঝাইতে হবে তোমার। আমরা একটা খালি ব্যাটারি রিকশা খুঁজতেছি। আমি বাসট্যান্ডের আগে কোথাও নাইমা যাবো। আমি তোমার দিকে তাকাইতে পারতেছি না। তুমি মায়া-ভরা চোখে আমার দিকে তাকায়া আছো। যেন এই জীবনে, শেষবারের মতো আমারে দেখতেছো।

আর্টের কান

আমার কান যে নাই এইটা বুঝার লাইগা
একটা চিলের উইড়া যাওয়াটা তো দরকার!

আমি দৌড়াইতে থাকবো আর বলবো,
চিলে তো আমার কান নিয়া গেছে ভাই!

মিরর

একটা মাটি-লেপা ঘরের ভিতরে পাটি বিছায়া খাইতে বসছি,
দরজার বাইরে একটা বিড়াল দাঁড়ায়া আছে, উঁকি দিতেছে
আমাদের খাওয়া শেষ হইলে মাছের কাঁটাগুলা সে খাবে,
বাটিতে দুধও দেয়া হবে

বিলাই’টা আমার দিকে তাকায়া আছে,
যেইরকম কবিতা তাকায়া থাকে জীবনের দিকে

শেষ কবিতা

আমার কবিতা লেখা তো শেষ হইছে একভাবে,
আমি বলি।

“শেষ?” কবিতাগুলা আবার জিগায় আমারে
তাকায়া থাকে

আমরা চুপ থাকি, আমাদের নিরবতাগুলা
কথা কইতে থাকে

কবিতাগুলা তখন নিজেদেরকে লেখতেছে
যখন আমরা কবিতা লেখতেছি না আর

আমাদের কবিতা-লেখার দিন তো শেষ হইছে একভাবে…

Leave a Reply