নোটস: নভেম্বর, ২০২২ [পার্ট ২]

নভেম্বর ১৬, ২০২২

ঘটনা এইটা না যে, খালি রিজার্ভ নিয়া এই অবৈধ-সরকার মিছা-কথা বলছে, বরং অন্য অনেক কিছু নিয়াই মিছা-কথা বলছে, আর বইলা যাইতেছে।

এখন কিছু ‘যুক্তিবাদী’ আছে, যারা কয়, আপনি কি মিছা-কথা কন না? কোন গর্ভমেন্ট কি মিছা-কথা কয় না? এই বলদ’দের চোখে ঠুলি-পড়া। এরা বাকশাল ছাড়া কোন ‘বিকল্প’ দেখে না। এদেরকে ‘যুক্তি’ দিয়া বুঝানোর কিছু নাই। কারণ যুক্তিরও একটা কনটেক্সট লাগে, এরা কনটেক্সটারেই ম্যানিপুলেট করে।

দুনিয়ার কোন দেশে ২০১৮ সালের মতো রাতের-ভোটের ইলেকশন হয় নাই। এইটা দুনিয়ার ডেমোক্রেসির হিস্ট্রিতে সবচে জঘন্য ঘটনাগুলার একটা। ২০১৮ সালের ইলেকশন নিয়া যেই মিছা-কথাটারে এস্টাবলিশড করা হইছে, না-বলার ভিতরে রাখা হইছে, সেইটা হইতেছে এখনকার সব মিছা-কথাগুলার গোড়া।

যতদিন না পর্যন্ত বাকশালি-মিডিয়া এইটা নিয়া খোলাখুলি কথা বলতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত বাকি সব মিছা-কথাগুলারে ব্যাক-আপই দিয়া যাইতে হবে তাদেরকে। আর কম-বেশি এই কাজটাই করতেছে বাকশালি-মিডিয়াগুলা।

আর বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়াও যারা কথা কইতেছেন, তাদেরকে ২০১৮ সালের ইলেকশন নামের ভাওতাবাজি নিয়া স্পষ্ট কইরা, বারবার কথা বইলা যাইতে হবে। কারণ এইটা হইতেছে, কোর ঘটনাটা, যেইখান থিকা এখনকার মিছা-কথার কনটেক্সট’টারে তৈরি করা হইছে। ২০১৮ সালের ইলেকশনরে জায়গাটারে এক্সপোজ না কইরা এই মিছা-কথার জায়গাগুলারে কখনোই বাতিল করা পসিবল হবে না। এই বুঝ’টা জরুরি।

নভেম্বর ১৭, ২০২২

চোরের সাক্ষী বাটপার। আর নয়া বাকশালের সাক্ষী হইতেছে পরথম আলো, ডেইলি স্টার।

এই কথাটা নতুন কইরা মনে হইলো ডেইলি স্টারের আজকের নিউজ দেইখা, ডলারের হিসাব নিয়া। এখন এইসব হিসাব তো মোটামুটি ভ্যালুলেস। কারণ আপনার কাছে ২৭ বিলিয়ন ডলার আছে, কিন্তু তেল কেনার টাকা নাই, এলসি’র পেমেন্ট দিতে পারেন না, আমদানি করতে দেন না, এমনকি এডুকেশন ফি-ও দিতে দিতেছেন না স্টুডেন্টদের! মানে, আমার পকেট-ভর্তি ডলার, কিন্তু ভাত-খাওয়ার উপায় নাই! এইটা কেমনে সম্ভব!

২০১৮ সালের ইলেকশনের পরেও আই-ওয়াশের বা ভাওতাবাজির ন্যারেটিভ তৈরির কাজটাও উনারাই করছিলেন। ডেইলি স্টারের আজকের রিপোর্ট’টা দেইখা অই জিনিসটা মনে হইলো। যে, আমরা তো অথেনটিক সোর্স থিকা ডেটা দিতেছি! হিসাবও মিলায়া দিতেছি! মানে, কাজির গরু যে খাতায় লেখা আছে, অই কাজটা উনারা অনেক দিন আগে থিকাই নিষ্ঠার সাথে করে যাইতেছেন।

Continue reading

নোটস: নভেম্বর, ২০২২ [পার্ট ১]

নভেম্বর ০৪, ২০২২

হিস্ট্রিতে খেয়াল করলে দেখবেন, কোন পলিটিক্যাল লিডার কোন কথা কইছিলেন, অইগুলা খুব ইম্পর্টেন্ট কিছু না। (দরকারি তো অবশ্যই।) যেমন ধরেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা বা জিয়াউর রহমানের ১১ দফা, এইগুলা তো কাগজে-কলমে আছেই, কিন্তু এই নীতি-আদর্শ-এজেন্ডা দিয়া উনাদেরকে এতোটা যাচাই করি না আমরা। একজন লিডার’রে আমরা চিনি তার কাজকাম দিয়া। (আবদুল হামিদ খান ভাসানী ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলাতে কোন ডিসিশান নিতে পারেন নাই, উনি ভালো-মানুশ এবং রেসপেক্টবল-পারসন হওয়ার পরেও গ্রেট লিডার হইতে পারেন নাই। যা-ই হোক, সেইটা অন্য আলাপ-ই একটা…) কি কি কাজ একজন পলিটিক্যাল লিডার করছেন বা করতেছেন – এইটা হইতেছে ক্রুশিয়াল ঘটনা।

এখন কাজ তো আর চিন্তা-ভাবনা ছাড়া হয় না। যা-ই উনারা ভাবছেন, সেইটার এক্সিকিউশন কেমনে করছেন, কতোটা এফেক্টিভলি করছেন, ইমপ্যাক্টফুল হইতে পারছেন, সেইটা হইতেছে উনাদের গ্রেটনেসের ঘটনা।

আবার দেখেন, শেক্সপিয়র কয়টা বিয়া করছেন? তলস্তয় কতজন কৃষকরে পিটাইছেন? হেমিংওয়ে কয়টা খুন করছেন ওয়ার-ফিল্ডে? বা শিম্বোরোস্কার কয়টা বয়ফ্রেন্ড ছিল? এইগুলা জানার বা বলাবলির একটা প্লেজার থাকলেও এইগুলা খেয়াল করার দরকার পড়ে না আমাদের, ততো একটা। উনাদের কি বলছেন বা লেখছেন – সেইটা মোর ইম্পর্টেন্ট, উনারা কি করছেন, তার চাইতে। কারণ উনারা কাজই করছেন আইডিয়ার জায়গাগুলা নিয়া।

আমি বলতে চাইতেছি, একজন পলিটিক্যাল-লিডারের রাইটিংস এবং একজন রাইটারের এক্ট (বা কাজকাম) ইম্পর্টেন্ট না – তা না, এর ইমপ্যাক্ট তো থাকেই সবসময়ই; কিন্তু এইগুলা পয়েন্ট অফ কনসার্ন না। এইগুলা বেশিরভাগ কেইসেই প্রফেট বানায়া তোলার ক্রাইটেরিয়া, বা ইমপ্যাক্টের জায়গাগুলারে ছোট-কইরা দেখানোর ঘটনা।

মানে, সব ইনফিনিটি যেমন একই না, সব গ্রেটনেসই তো সমান না! ডিফরেন্ট ক্রাইটেরিয়ার ভিতর দিয়া যে আমরা দেখি, সেইটা খালি ইনকমপ্লিট ঘটনা না, বরং মোর ‘হিউম্যান’ একটা অবস্থাও।…

***

আহমদ ছফা’র আরেকটা বাজে-বাণী আছে এইরকমের যে, বুদ্ধিজীবীদের কথা শুনলে বাংলাদেশ কোনদিন স্বাধীন হইতো না, এই টাইপের।
তো, ইন্টেলেকচুয়ালদের কথা, পলিটিশিয়ানদের এক্ট আর পিপলের মর্জি – এইগুলা তো কোনদিনই একই জিনিস না! বরং আগের দুইটা পরেরটারে ইনফ্লুয়েন্সই করতে চায়। এবং কোন না কোনভাবে শেইপ-আপ করে। কোন সময় পারে, কোন সময় পারে না।

আর এইগুলা লিনিয়ার বা একতরফা জিনিস না। সব বুদ্ধিজীবীদের কথা একই রকম না। সব পলিটিক্যাল পার্টির আদর্শ, আইডিওলজি, এক্টিভিটিও।

তবে এইটা তো আন-ফরচুনেট ঘটনাই যে, বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালরা বাংলাদেশের মানুশের পালস বা মর্জিরে কখনো ধরতে পারেন নাই, বা কাছাকাছি যাওয়ার ট্রাইও করতে পারেন নাই। কারণ আমাদের সোসাইটিতে এমন একটা গ্রুপ অফ পিপলই ‘বুদ্ধিজীবী’ হয়া আছেন বা হইতে পারেন যারা পিপলের লগে কানেক্টেড হইতে পারেন না, বরং সুপিরিয়র সোশ্যাল পজিশন নিতে পারেন। আর এইটা এক ধরণের ডিস-কানেকশনের ভিতর দিয়াই উনাদের বুদ্ধিজীবীতা এফেক্টিভ থাকে। মানে, বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীতা বা ইন্টেলেকচুয়ালিটির স্পেইসটা এই রকমের একটা ঘটনা।

যার ফলে, বুদ্ধিজীবীদের কথা শোনার খুব একটা দরকার পড়ে না আসলে বাংলাদেশের মানুশের। অইটা কম-বেশি আজাইরা আলাপ বা এন্টারটেইমেন্টেরই ঘটনা, ফাংশনের দিক থিকা।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের মানুশ বুদ্ধিজীবীদের কথা শোনে নাই – ঘটনা এইটা না, বরং এইখানে বুদ্ধিজীবীরা মানুশের লগে কথাও কয় না, তাদেরকে ইনফ্লুয়েন্স করতে চায়-না না, ফ্যান-ফলোয়ার হিসাবেই চায়। ইন্টেলেকচুয়াল শেইপ-আপের কোন ঘটনা এইখানে নাই তেমন একটা।

তো, আহমদ ছফা যেই জায়গা থিকা দেখছেন, সেইটা একটা আইডিয়াল জায়গা, যে একটা সমাজের বুদ্ধিজীবীরা সেই সমাজের মানুশের ফর-এ কথা বলবে! হাউএভার, এই ঘটনাটাই এইখানে ঘটে না। মোরওভার, উনার এই যে একটা আইডিয়াল, সহি বা অরিজিনাল জায়গা থিকা দেখতে চাওয়া, সেইটা মেবি উনি উনার গুরু আবদুর রাজ্জাকের কাছ থিকাই পাইছেন। যেইটা চিন্তার পদ্ধতি হিসাবে এক রকমের অবস্টেকলই একটা।…

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২২ [পার্ট ৩]

অক্টোবর ২১, ২০২২

– পলিটিক্স আর কালচারের কানেকশন: এ কে ফজলুল হক এবং আব্বাসউদ্দিন আহমেদ –

এইটা খুবই ভুল-কথা যে, জিন্নাহ’র কারণে বাংলাদেশের লোকজন পাকিস্তানে যোগ দিছিল; বরং এর পুরা ক্রেডিটই ছিল এ কে ফজলুল হকের। জমিদারি-প্রথা বাতিল করা হবে বইলা পাকিস্তানে গেছিল বাংলাদেশের মানুশ। আর এই দাবি এস্টাবলিশড করছিলেন এ কে ফজলুল হক। এই জায়াগাটারে দেখবেন বাংলাদেশের ইতিহাসের আলাপে তোলাই হয় না! যেন হুট কইরা, কোন একটা ভুল কইরা পাকিস্তানের লগে গেছিল বাংলাদেশের মানুশ-জন!

অথচ এইটা একটা লম্বা সময়েরই ঘটনা। ১৯৩৭-৩৮’র সময় থিকাই, মানে এ কে ফজলুল হক বাংলা-প্রদেশের (ইনক্লুডিং পশ্চিমবঙ্গ) প্রাইম-মিনিস্টার সময় থিকাই পাকিস্তানের আলাপ উঠতেছিল। ১৯৪২ সালে আবুল মনসুর আহমেদ আর বুদ্ধদেব বসু তর্ক করতেছেন পাকিস্তানে বাংলা-সাহিত্য হইতে পারবে কি পারবে না, এই-সেই। কিন্তু ঘটনা তারও আগে থিকাই আছে।

পলিটিক্স আলাদা সিঙ্গুলার কোন ঘটনা না, বরং এর লগে সবসময় কোন না কোন কালচারের একটা যোগাযোগ থাকেই। বাংলাদেশের কালচার যে কলোনিয়াল-কলকাতার কালচারের চাইতে আলাদা একটা ঘটনা, এইটা শুরু হইছিল একভাবে কাজী নজরুল ইসলাম এবং আব্বাসউদ্দিন আহমেদের ভিতর দিয়া।

আব্বাসউদ্দিন আহমেদ হইতেছেন ফার্স্ট মুসলমান, যিনি “আসল-নাম”* দিয়া গ্রামোফোন রেকর্ড বাইর করতে পারছেন। মানে, এর আগে বাংলাদেশের মুসলমানরা গান গাইতে জানতেন – তা না, মুসলমান নাম নিয়া গান গাইলে সেইটা রেকর্ড কোম্পানি মেবি বাইরই করতো না! (ইভেন, ১৯৪৬ সালে ওয়াবেদ-উল-হক “দুঃখে যাদের জীবন গড়া” নামে দুর্ভিক্ষের উপরে সিনেমা বানানোর পরে রিলিজ দিতে পারেন নাই, হিন্দু-ডিস্ট্রিবিউটররা সিনেমা ডিস্ট্রিবিউট করতে রাজি হন নাই। পরে উনার নাম লেখতে হইছিল “হিমাদ্রি চৌধুরী”।) কিন্তু আব্বাসউদ্দিনের গান হিট হওয়ার পরে যেইটা হইলো, হিন্দু-সিঙ্গার’রাও মুসলমান নাম নিয়া রেকর্ড বাইর করতে থাকলেন! মানে, ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং!…

আব্বাসউদ্দিনের এই রেকর্ডগুলা কিন্তু বাইর হইতেছিল ১৯৩০’র দিকে। যেইটা একটা কালচারাল বেইজ তৈরি করতেছিল, বা অই জায়গাটারে জাগায়া তুলতেছিল। অই জিনিসটারে আরো ছড়ায়া দিছিলেন এ কে ফজলুল হক। এ কে ফজলুল হক যখন গ্রামে গঞ্জে মিটিং করতে যাইতেন, তখন লগে আব্বাসউদ্দিনরে নিয়া যাইতেন। মিটিংয়ের আগে গান গাইতেন আব্বাসউদ্দিন আহমেদ। আমরা যে কলোনিয়াল-কলকাতার গোলাম না, জমিদারদের প্রজা না – এইটার একটা সুর, এইটা একটা ভাষা জাগায়া তুলছিলেন আব্বাসউদ্দিনরা। এবং এ কে ফজলুল হক রাজনীতির জায়গা থিকা অই কালচারাল বেইজটারে রিলিভেন্ট করতে পারছিলেন।

মানে, আপনি রাজনীতি’র পক্ষে গান-কবিতা-কাহিনি লেখবেন – ব্যাপারটা এইরকম না; এইরকম প্রপাগান্ডা তো হয়-ই। বলিউডে বিজেপি করতেছে না! কিন্তু এইগুলা না হয় কোন আর্ট, না কামে লাগে পলিটিক্সের, বেশিরভাগ সময় একটা স্পেইসরে অকুপাই কইরা রাখার কাজটাই করে। পলিটিক্স এবং কালচার – দুইটা আলাদা ঘটনাই, কিন্তু অনেকসময় পলিটিক্যাল-বিচার সার্টেন কালচারাল এলিমেন্টরে রিলিভেন্ট কইরা তোলে, আবার কালচারাল বেইজটা থিকাও পলিটিক্সের জায়গাগুলা তৈরি হইতে পারে।

জমিদারি-প্রথা’র এগেনেস্টে এ কে ফজলুল হকের পলিটিক্স এবং আব্বাসউদ্দিনের পুব-বাংলার গানের কালচার কাছাকাছি একটা জায়গায় ছিল, যেইটার ভিতর দিয়া বাংলাদেশ একটা আলাদা পলিটিক্যাল এবং কালচারাল আইডেন্টিটি হয়া উঠতে চাইছে। এই জায়গাটারে আরো ভালো কইরা খেয়াল করার দরকার আছে আমাদের।

বাংলাদেশ-আন্দোলনের সময়ও খান আতাউর রহমানের “নবাব সিরাজদ্দৌলা”র (১৯৬৭) “বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা…” একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা ছিল। “জীবন থেকে নেয়া” (১৯৭০) খালি পরের ঘটনাই না, বরং এর রিচ একটা মিডল-ক্লাস সোসাইটির বাইরে অইভাবে থাকারও কথা না। আবার রবীন্দ্র-সঙ্গীত গাইয়া কেউ মুভমেন্ট করে নাই। বরং মিউজিকে আবদুল লতিফ একটা ‘বাংলাদেশি’ সিগনেচার তৈরি করতেছিলেন।… বাংলাদেশ হওয়ার পরে সেইখানে ছিলেন আজম খান, আনোয়ার পারভেজ, আলাউদ্দিন আলী; সিনেমাতে আমজাদ হোসেন, সোহেল রানা’রা (মাসুদ পারভেজ) একটা কালচারাল স্পেইস তৈরি করছিলেন। মানে, এই যে জায়গাগুলা, এইগুলা মিস-রিডিংয়ের ভিতরেই আছে, রিভিলড হওয়ার অপেক্ষাতেই আছে, এখনো।…


*আসল-নাম এবং ডাক-নামের জায়গাটাও এইখানে কিছুটা খেয়াল করা দরকার আমাদের। ডাক-নাম কিন্তু দেখবেন বেশিরভাগ সময়ই রিলিজিয়ন-স্পেসিফিক না; যেমন ধরেন, স্বপন, মিলন, বিপ্লব… স্বপ্না, বর্ণা, পারুল… এইরকম ডাক-নামগুলা দেখলে আপনি মুসলমান না হিন্দু – এইটা ধরতে পারবেন না। এইটা এক ধরণের রেজিসট্যান্সের ঘটনা বইলা আমি মনে করি, ধর্মের এগেনেস্টে না, বরং জাত-পাত ও ক্লাস-স্ট্যাটাসের জায়গাটাতে। যে, একটা ডাক-নাম আমার আছে, যেইটাতে বংশ-পরিচয় ম্যাটার করে না। আবার একটা আসল-নাম থাকা হইতেছে, ক্লাস-স্ট্যাটাসের ঘটনা। গরিবের কোন আসল-নাম থাকে না! এইরকম।…

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২২ [পার্ট ২]

অক্টোবর ১১, ২০২২

১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে যারা বিটিভি দেখতেন এবং দৈনিক-বাংলা পড়তেন, তাদের পক্ষে জানা সম্ভবই ছিল না যে, সারা দেশে কি হইতেছে! কোথায় গুলি চলতেছে, মানুশ মারতেছে এরশাদ-সরকারের পুলিশ।

বা দৈনিক পাকিস্তানের কথাই চিন্তা করেন, (১৯৭১ সালের) ১৭ ডিসেম্বরে হঠাৎ কইরা হয়া গেলো – দৈনিক বাংলা! এর আগে মুক্তিযুদ্ধ নামে কোনকিছুর কোন হদিসই পাওয়ার কথা না, অই পত্রিকায়। বা রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা-স্টেশনেও। কিছু ‘জঙ্গি’ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাইতে পারে।

তো, বাংলাদেশের এখনকার বিটিভিগুলা, দৈনিক বাংলাগুলা, দৈনিক পাকিস্তানগুলা, রেডিও পাকিস্তানগুলার দিকে তাকায়া থাকলে কি বাংলাদেশের অবস্থা জানতে পারবো আমরা! এইটা কি সম্ভব কোনদিন!

১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষও দেখেন, দৈনিক-বাংলা, বাংলার বাণীতে কি কিছু আছে? হালকার উপ্রে ঝাপসা কিছু থাকতে পারে, বড়জোর। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ট্রুথ তো রেফারেন্স-বেইজড কোন ঘটনা না! যে, বইয়ে আছে বইলা আছে, বইয়ে নাই বইলা নাই!

সরকারি-প্রেসনোট এবং সরকারি-মিডিয়ার বাইরে গিয়াই ঘটনাগুলা ঘটছে, আর এখনো ঘটতেছে; সবসময়ই তা হয়া আসছে।

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২২ [পার্ট ১]

অক্টোবর ০১, ২০২২

ফেস্টিভল হিসাবে দুর্গাপূজা কবে থিকা শুরু হইছে বাংলাদেশে? ১৬১০ সালে কলকাতার একটা রেফারেন্স পাইলাম, তারপরে ১৭৫৭ সালে, কলকাতায় রাজা নবকৃষ্ণ দেব লর্ড ক্লাইভের সম্মানে “বিজয়-উৎসব”-এর আয়োজন করছিলেন। মানে, এইটা ব্রিটিশ-বাংলার সময়ের ঘটনা, এই দুর্গাপূজার ফেস্টিভল’টা। [“পহেলা বৈশাখ উদযাপন” যেইরকম কম-বেশি ১৯৮০’র দশকের ঘটনা, ঢাকা শহরের। এর আগে ছিল চৈত্র-সংক্রান্তির মেলা।…]

বাংলাদেশে যতদূর জানি, কালী পূজা বেশি হইতো, পুরান কালী মন্দিরও দেখছি অনেক… দুর্গাপূজা ফার্স্ট কবে হইছে, সেইটার কোন কথা কোথাও পাইতেছি না।

তাই বইলা দুর্গাপূজা করা যাবে না – এই কনক্লোশন কেউ ড্র কইরেন না প্লিজ। আমি বলতে চাইতেছি, দুর্গাপূজা “হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির” কোন ঘটনা না মেবি; মানে, এর পক্ষে কোন তথ্য-প্রমাণ আমি পাইতেছি না। মিথ তো পুরানাই, কিন্তু ফেস্টিভল হিসাবে চালু হওয়ার ব্যাপারটা ব্রিটিশ আমলেরই ঘটনা। আর এইটা যে আমরা কম-বেশি জানি না – তা না, বরং এই জিনিসটা আমাদের বলাবলির মধ্যে নাই।

২০১২ সালের হিন্দি-সিনেমা “কাহানি” সিনেমা নিয়া লেখছিলাম একবার (এখন খুঁজে পাইতেছি না লেখাটা), যে সিনেমার ১৬ মিনিটের সময় আছে ডায়ালগ’টা, যখন বিদ্যা বালনরে হোটেলে পৌঁছায়া দিতে যাইতেছে পুলিশ-অফিসার তখন জিগাইতেছে, ও আপনি, দুর্গাপূজার কথা জানেন? বিদ্যা বালন কয়, জামাই বাঙালি, দুর্গাপূজার কথা জানবো না!

মানে, দেখেন, বাঙালি নেসেসারিলি হইতেছে হিন্দু, আলাদা কইরা বলা লাগে না কিন্তু! বাঙালি কইলেই হয়। ব্যাপারটা এতোটাই অটোমেটিক। যদি বাঙালি-হিন্দু বলেন, তাইলে বরং বাড়তি লাগতে পারে। বা যদি হিন্দু বলেন, ইন্ডিয়ার অন্য হিন্দুরা দুর্গাপূজা এতোটা করে না তো!
আমি বলতে চাইতেছি, বলা এবং না-বলার কিছু সিগনিফিকেন্স এইখানে আছে।

***

প্যারেন্টিং নিয়া অনেক লেখা-পত্র চোখে পড়ছে আমার। অনেক বই-পত্র থাকার কথা, যে বাচ্চাদের লগে কি কি করা যাবে, কি কি করা যাবে না, এইরকম। ত্রিভুজ আলম একটা লেখতেছেন, অইটাও পড়ছি কিছু। ইন্টারেস্টিং লেখা।

কিন্তু আমি ভাবতেছিলাম, বই বা সাজেশন আসলে দরকার সেই মা-বাপদের জন্য, যাদের বাচ্চা-কাচ্চারা টিনএজার, ইয়াং-এডাল্ট। মানে, এই বয়সটাতে আইসা ডিটাচমেন্ট’টার শুরু হয় মা-বাপদের সাথে ছেলে-মেয়েদের। ধরেন, ১৩-১৪ টু ২৪-২৫, এইরকম এইজটা। আমার মনে হইছে, মা-বাপ’রা সবচে বেশি পাজলড থাকেন তাদের বাচ্চাদের এই বয়সটাতে।

হাউ টু লেট গো! কেমনে ছাইড়া দিতে হবে! এইটা মেবি সবচে ক্রুশিয়াল পার্ট প্যারেন্টিংয়ের! (মেবি যে কোন রিলেশনেরই।)

Continue reading