২০০৪/৫-এর ঘটনাই হবে মনেহয়। ঢাকা শহরে বন্যা হইছিলো। খিলগাওঁ-য়ের মায়াকানন-এ থাকি তখন। যেই বাসায় থাকি তার কাছকাছি চইলা আসছিলো পানি। মতিঝিল গর্ভমেন্ট স্কুল ছুটি দিয়া লঙ্গরখানা (ত্রাণ শিবির; ছাত্র শিবির বা লেখক শিবিরও না 🙁 ) বানানো হইছিলো। তো, তখন ‘কবিসভা’ নামে একটা ইয়াহু ইমেইল গ্রুপ ছিলো (সামহোয়্যার ইন ব্লগের আগের ঘটনা), ওইখানে অনেককিছু নিয়া তর্ক হইতো, তো ওই টাইমে ভাষা বা অন্যকিছু নিয়াই তর্কাতর্কি করতেছিলাম। তখন কেউ একজন (কাজী জেসিন কিনা শিওর না) আইসা কইলেন, সারাদেশ বন্যায় ভাইসা যাইতেছে আর আপনারা সাহিত্য করতেছেন!
আমি একটা রিপ্লাই লিখছিলাম উনার অ্যাঙ্গারমূলক চিঠির। বেশ ‘সাহিত্যিক’-ই আছিলো সেইটা। মেবি এইরকম যে, সবকিছু নিয়াই সেনসেশন আমার ক্যান থাকা লাগবে আমার আর সেইটা কওয়াও লাগবে! বন্যার পানি’র চাইতে অনেকদিন পরে সকালবেলা যে একটু একটু রইদ উঠতে নিছিলো সেইটা দেইখা আমার ভাল্লাগতে পারে, কবিতা লিখতে ইচ্ছা করতে পারে। বা ধরেন, রিলিফের কাজ আমারও করা লাগছে, চান্দাও দিছি – কিন্তু এইসবকিছু আমারে সব জায়গায় বলা লাগবেই কেন? বা বন্যা হইছে বইলা বন্যা নিয়াই কবিতা লেখা লাগবে, তা নাইলে বন্ধ কইরা দিতে হবে? অ্যাজ অ্যা ইন্টেলেকচুয়াল আমার যে রেসপন্সিবিলিটি আর অ্যাজ অ্যা সোসাইটি পারসন – সবসময় একই তো না! এখন ব্যাপারটা পুরাপুরি একইরকম মনেহয় না। মানে, সমস্যাটার আরো কয়েকটা ডাইমেশন ভাবা যায়।
২.
জিজেক এক ওয়াজ মাহফিলে কইতেছিলেন, উনি গেছেন নিউইয়র্কে না কই জানি ওয়াজ করতে তখন উনার দেশে যুদ্ধ চলতেছে, তো অডিয়েন্স থিকা একজন তারে জিগাইলো, আপনার দেশে যুদ্ধ চলতেছে, রেইপ হইতেছে আর আপনি এইগুলি ফালায়া আইছেন ওয়াজ করতে, আপনার শরম করে না? তো, উনি কইলেন যে, করে না। বরং এইটা যে কতোটা বাজে জিনিস, এই ‘করুণা’ দেখানোটা, যে, আফ্রিকাতে কেউ না খাইয়া মরতেছে, সো আপনিও খাওয়া-দাওয়া স্টপ কইরা দিলেন, অ্যাজ ইফ আপনি কিছু কইরা ফেললেন। এইটা একটা লিবারাল বদমাইশি ছাড়া আর কিছু না! এইরকম পলিটিক্যাল কিছু কইছিলেন। মানে, এই ‘দান’ করতে পারাটা খালি ‘মহৎ’ কোন ঘটনা – তা না, এইটা এক ধরণের স্যাটিসফাই করাও না খালি নিজেরে, বরং যারা তাদের রেসপন্সিবিলিটি নেন নাই, তাদেরকে সেইভ করার ধান্দাও। তাই বইলা আমরা কেউ হেল্প (সাহিত্যিকদের লাইগা ব্রাকেটে ‘সাহায্য’ও লিখলাম) করবো না তা না, কিন্তু হেল্প করার ভিতর দিয়া কোন পলিটিক্যাল এজেন্ডাটারে সার্ভ করতেছি, সেইটা নিয়াও যাতে কনসার্ন থাকতে পারি আমরা। Continue reading