সাকসেসফুল হওয়াটা কখনো সাহিত্যের লক্ষ্য হইতে পারে না

ব্যাপারটা এইরকম না যে, সাহিত্য কইরা সাকসেসফুল হওয়া যায় না; কিন্তু সাকসেসফুল হওয়াটা কখনো সাহিত্যের লক্ষ্য হইতে পারে না আর কি!

সাকসেস ইন এভরি সেন্স!

সাহিত্য কইরা টাকা-পয়সা কামানো’টা যে সাকসেস না – তা তো না; তবে কমদামি সাকসেস। :p সোসাইটি’তে লোকজন আপনারে রাইটার হিসাবে চিনলো, লেখা না পড়লেও নামে চিনে, সেলিব্রেটি না হইতে পারলেও কাল্ট এক রকমের; পপুলার মিডিয়া আর আন্ডারগ্রাউন্ড সাহিত্য-গ্রুপগুলা আপনারে চিনে; ‘সাহিত্য সমঝদার’রা’, প্রবীণ ও নবীন 🙂 রাইটার’রা আপনার লেখা নিয়া কথা কয় – এইটাও তো সাকসেস! বা প্রাইজ-টাইজ পাওয়া, বাংলা একাডেমি কিছুটা গ্রাম্য হইতে পারে 🙂 , কিন্তু ধরেন, বুকার-টুকার বাদেও, নেপাল-নিকারাগুয়ার প্রাইজ পাইলেও তো সাকসেস মনে হইতে পারে। আরো কিছু রকম হয়তো আছে, সাহিত্যে সাকসেসফুল হওয়ার।

মানে, সাহিত্য কইরা সোশ্যালি সাকসেসফুল হওয়ার কোন ঘটনা যে নাই – তা তো না! সাকসেসের প্যারামিটারগুলা একটু ডিফরেন্ট। তো, এইরকম সাকসেসফুল হওয়ার লাইগা সাহিত্য করা যায় নাকি! আমার মত হইলো, যায় না। আপনি লিখতে পারেন, আর সেইটা করেন বইলা পাবলিক বা সাহিত্য-সমাজের লোকজন যদি আপনারে চিনে, আপনার লেখা যদি ওয়েল-একসেপ্টেড হয়, কমিউনিকেট করে, প্রাইজ-টাইজ পান, ব্যাপার’টা ভালো তো! কিন্তু এইসব পাওয়ার লাইগা কি কেউ লেখে নাকি? মানে তখন লেখার পুরা পারপাসটাই ডাইলুট হয়া যাওয়ার কথা না? লিটারেচার আর এন্টারটেইনমেন্ট তো একই জিনিস না!…

Continue reading

নোটস: ফেব্রুয়ারি – মার্চ ২০২০

 

ফেব্রুয়ারি, ২৩

দেখবেন এইটা হয়, যখন কোন খারাপ কথা বলে মানুশ বা খারাপ কাজ করে; আর তারপর বুঝতে পারে, তখন কয় যে, ‘ফাইজলামি করছিলাম’ বা ‘বুৃঝি নাই’ 🙂 – এইভাবে এড়ায়।”

এইটা একটা ওয়ে-আউট। ‘ভুল বলছিলাম’ বা ‘সরি’ না বলতে পারা’টা খালি ইগো’র ঘটনা না, একটা ফেইলওরের ঘটনা হিসাবেই দেখতে পারাটা দরকার।

২.
আমি দেখি, সমস্যাটা হইতেছে যে কোন ঘটনা’রে একটা ‘কমন ন্যারেটিভ’-এর ভিতরে আটকানো’টা। যে, এইটার মানে হইতেছে অইটা, অইটার মানে হইতেছে সেইটা – এইরকমের কমন ফেনোমেনাগুলা।

একটা প্রটোটাইপের এগেনেস্টে আরেকটা প্রটোটাইপ দাঁড়া করানোটা কোন কাজের জিনিস বইলা মনেহয় না আমার কাছে। মানে, এইখানে ব্যক্তি বাদ দিয়া অবজেক্টিভ কোন সিস্টেম কাজ করে – তা না; বরং ব্যক্তি অবস্থানগুলারে, অ্যাক্টগুলারে আমরা একটা অবজেক্টিভ সিস্টেমের আন্ডারে যখন নিয়া বন্দী করি, প্রসেস হিসাবে সেইটা একইরকমের হইতে থাকে।

তাই বইলা প্যার্টানগুলা বা জেনারেল ফর্মগুলা যে এগজিস্ট করে না – তা তো না; একটা ন্যারেটিভের জায়গায় আরেকটা ন্যারেটিভ-ই বরং বেস্ট-ফিট করে। কিন্তু মুশকিল হইলো, সব নিয়মগুলাই আবার তাদের একসেপশনগুলা দিয়া ভ্যালিডেড হইতে থাকে। আলাপ আবার, অবজেক্টিভ সিস্টেমের ফাঁক দিয়া ব্যক্তিতেই ফিরা আসে।

ব্যক্তিরে বা তার অ্যাক্টরে যেইরকম একটা জেনারালাইজড প্রসেসের বাইরে দিয়া দেখা সম্ভব না, আবার যখন একটা জেনারালাইজেশনরেই আমরা আল্টিমেট ধইরা নিবো তখন ব্যক্তির অ্যাক্ট করার জায়গাগুলাও ন্যারো হইতে থাকার কথা।…

কোন ব্যক্তিরে বা অ্যাক্টরে ডিফাইন করা যায় না বা যাবে না, এইরকম না; বরং যেই যেইভাবে লোকেট করি আমরা সেইটারে আল্টিমেট হিসাবে না নেয়াটা থিওরেটিক্যালি জরুরি একটা জিনিস, সবসময়ই।

 

ফেব্রুয়ারি, ২৩

‘অটোবায়োগ্রাফিক্যাল’ বা ‘বেইজড অন অ্যা ট্রু স্টোরি’ দেখতে আমার ভাল্লাগে; এই কারণে না যে, এইগুলা ‘সত্যি’ জিনিস বলে, বরং ‘সত্য’ জিনিসটারে কেমনে কন্সট্রাক্ট করে – সেইটা অনেকবেশি ক্লিয়ারলি দেখা যায়, এইরকম ‘পারসোনাল’ ইভেন্টগুলার ভিতরে।

যেমন গতকালকে @Pawn Sacrifice দেখার সময় মনে হইতেছিল; ববি ফিশারের দাবা’তে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ান হওয়ার ঘটনা’টা নিয়া বানানো; অইখানে ববি ফিশার’রে দেখানো হইতেছিল, খুবই প্যারানইয়া টাইপের। খেলার আগে ভাইগা যায়। ফার্স্ট খেলায় হাইরা যাওয়ার পরে কয়, পাবলিকের সামনে খেলবো না, ক্যামেরার আওয়াজে ডির্স্টাব হয়, এই সেই। তো, এইগুলারে প্যারানইয়া মনে হওয়ারই কথা, পাবলিকের, মানে আমাদের। কারণ সে যেইগুলারে তার সমস্যা বলতেছে, অন্যজনের বা আরো অনেকের তো এই সমস্যা নাই! তার কেনো হইতেছে! তার মানে এই সমস্যাগুলা নাই আসলে! 🙂

পরে, তার অপোনেন্ট যখন হারতে থাকে, সেই অপোনেন্টও চেয়ার থিকা উইঠা বসে, কয়, চেয়ারের পায়ার ভিতরে কিছু ঘুরতেছে, সে অই চেয়ারে বসবো না। মনে হইতে পারে, তারও প্যারানইয়া হইছে! 🙂 কিন্তু না, পরে তার’টা প্রমাণ পাওয়া যায়, দেখা যায়, স্টিলের পাত ঠিকাছে, পাতের ভিতরে দুইটা মৌমাছি ঘুরতেছিল আসলেই। 🙂 Continue reading

পাবলিক টয়লেটের সেক্যুলারিজম নিয়া

সেক্যুলার শিব্রামের একটা জিনিস ফেসবুকে নড়াচড়া করতে দেইখা জিনিসটা আবার মনে হইলো। এর আগে ঢাকায় সিটি কর্পোরেশন ইলেকশনের সময় জিনিসটা মনে হইছিল। (ইলেকশন একটা হইছিল কিন্তু কয়েকমাস আগে 🙂 )

তো, শিব্রাম কইছেন, মসজিদ-মন্দির না বানায়া টয়লেট বানাইতে। আর কোন এক মেয়র ক্যান্ডিডেট কইছিলেন, উনি ঢাকা শহরে আরো পাবলিক টয়লেট বানাইবেন। তখন আমার মনে হইছিল, ঢাকা শহরে তো অনেক পাবলিক টয়লেট অলরেডি আছে, অনেক মসজিদে, জাস্ট ফরমালাইজ করা হয় নাই। (ঢাকা শহরে মসজিদের নাম্বারটা কেউ জানলে বইলেন তো, এইরকম ছোটখাট জিনিসের ডেটাও দেখেন ভিজিবল না আমাদের কাছে।)

আর এইরকম কোন মসজিদ পাওয়া যাইবো না যেইখানে অযু করার পাশে পেশাব/পায়খানা করার কোন ব্যবস্থা নাই। টয়লেট অনেক সময় তালা মারা থাকে, কিন্তু পেশাব করার জায়গা খোলা-ই থাকে, সবসময়, বেশিরভাগ মসজিদে। আর কেউ ঢুকলে কখনো কাউরে জিগাইতে দেখি নাই, যে হিন্দু না মুসলমান। (কিছু কিছু মসজিদে মহিলারাও যাইতে পারেন, কিন্তু নাম্বারটা মেবি কম-ই অনেক।)

মানে, সেক্যুলার পাবলিক টয়লেট কিন্তু অলরেডি মসজিদে এগজিস্ট করতেছে, কম-বেশি। আমরা ইউজও করতেছি, কিন্তু সেক্যুলার আইডিয়ার ভিতর দিয়া আমরা অইভাবে দেখতে পাইতেছি না।

২.
তো, আমার কথা ছিল এইরকম যে, মেয়র ক্যান্ডিডেট নতুন আরো পাবলিক টয়লেট না বানানির কথা কইয়া কইতে পারতেন, উনি প্রতিটা মসজিদে টয়লেট সাফ করার লাইগা, ক্লিন রাখার লাইগা মাসে ৫ হাজার টাকা কইরা চান্দা দিবেন; মসজিদ কমিটির লোকজন যদি পাবলিকের জন্য সবসময় টয়লেট খোলা রাখেন। এমনিতে তো রাখেনই, ব্যাপারটা জাস্ট ফর্মাল হইলো, ডোনেশনও পাইলেন, এইরকম। Continue reading

‘নিভৃতচারী’ ব্যাপার’টা নিয়া

এই জিনিসটা নিয়া ইনবক্সে একটু কথা হইতেছিল Milu Hasan‘র লগে। ভাবলাম, পাবলিকলিও বলা যাইতে পারে কিছু জিনিস।

টোনের একটা ব্যাপার তো আছেই, যে – লাউড না এতোটা; হয়তো আপনি অনেক কথা-ই বলতেছেন, কিন্তু কাউরে খুঁচাইতেছেন না, বা হেব্বি ইমোশন দিতেছেন না বইলা মনে হইতে পারে এতোটা ইমপ্যাক্ট তৈরি হইতেছে না; এইরকম কিছু থাকতে পারে। কিন্তু এই জায়গাটারে ঠিক আমলে নিতে চাইতেছি না, এই পারসোনাল অ্যাট্রিবিউট বা ঢং’টারে।

বরং একটা উদাহারণের কথা বলি, ঢাকা ইউনির্ভাসিটির বাংলা ডিপার্টমেন্টের টিচার আহমদ শরীফ ‘মধ্যযুগের বাংলা কবিতা’ নামে একটা বই লিখছিলেন (নাম’টা কিছুটা ভুল হইতে পারে), অই বইয়ে লালন ফকির, শাহ আবদুল করিমসহ অনেকের লেখা রাখছেন ‘মধ্যযুগ’র উদাহারণ হিসাবে। মানে, উনি ‘টাইম’রে সেন্টার ধরেন নাই, একটা ‘টোন’রে (এতোটা অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিস না এইটা) ধরছেন; যেইটা স্পেইস/স্থান হিসাবে কোন পেরিফিরি’র বা গ্রামের ঘটনা, আর ক্লাস হিসাবে লোয়ার ক্লাসের জিনিস।

তো, একইরকমের ঘটনা ‘নিভৃতচারী’র ব্যাপারেও কিছুটা ঘটে মনেহয়। যেমন ধরেন, এই যে লেখাটা আমি লিখতেছি – এইটা তো ‘নিভৃতচারী’ একটা জিনিস হইতেছে 🙂 , এখন এই লেখা যদি ফেসবুকে না ছাপায়া ‘দৈনিক আজাদী’তেও ছাপাই (অন্য সব অর্গানাইজড মিডিয়ার কথা বাদ-ই দিলাম) কিছুটা লাউড মনে হইতে পারবো তো তখন! স্পেইসের কারণেই। ধরেন, বাংলাবাজারের গলিতে চা খাইতে খাইতে কথা-বলাটা তো ‘নিভৃতচারী’ ঘটনা, বাংলা একাডেমির স্টেইজে গিয়া কথা বলার চাইতে। এইরকম।

ব্যাপারটা এইরকম না যে, অর্গানাইজড মিডিয়ার স্পেইসটা বাকি সবকিছুরে সাপ্রেস কইরা রাখতেছে, সেইটা তো একভাবে রাখতেছেই; তার বাইরে আমাদের পারসেপশনের প্যাটার্নটাও আছে এইখানে; কারণ যেইটা আপনার সামনে হাজির হইতেছে, সেইটাই ‘রিয়ালিটি’ হয়া উঠতে পারতেছে। আপনি চাইলেও সেইটারে বাদ দিতে পারবেন না, যখন আপনার চারপাশের মানুশ-জন এইটাতে সাবস্ক্রাইবড হয়া আছে।… মানে, আমরা যে অ্যাপিয়ারেন্সের ভিতর দিয়া রিয়ালিটি’রে কনজিউম করতেছি, সেইটা এই ‘নিভৃতচারী’ ধারণাটাতে কন্ট্রিবিউট করতেছে একভাবে।

Continue reading

যে কোন ভাষাতেই ভালো লেখক তো দুই-চাইরজনের বেশি নাই

আইজ্যাক বাশিভিস সিঙ্গার ইয়েডিশ ভাষাতে লেখেন, এই ভাষাতে কম-বেশি ১৫ লাখ লোক কথা কয়, দুনিয়ায়। মানে ধরেন, ঢাকা শহরের রামপুরা টু নদ্দা এলাকার লোকেরা এর চে বেশি বাংলা-ভাষায় কিচির-মিচির করেন মেবি, ডেইলি।

তো, এক ইন্টারভিউয়ার উনারে জিগাইতেছিলেন, ইয়েডিশ ভাষা’তে তো ভালো রাইটার খুববেশি নাই! উনি কইলেন, হ, দুই-চাইরজন আছে; কিন্তু যে কোন ভাষাতেই ভালো লেখক তো দুই-চাইরজনের বেশি নাই।

উনার কথা আমার কাছে সত্যি বইলা মনেহয়।

তো, অন্য ভাষাগুলাতে যেইটা আছে, অনেক অ্যাভারেজ রাইটার আছেন। এই অ্যাভারেজ রাইটার’রা সাহিত্য-ভাষা’রে বাঁচায়া রাখেন। এই অ্যাভারেজ রাইটার’রা জরুরি – এমন কথা উমবের্তো একোসহ আরো অনেকে কইছেন।

কিন্তু কেন জরুরি? আমার ধারণা, উনারা একটা ইকো তৈরি করতে পারেন, একটা এক্সটেনশন করতে পারেন – গ্রেট রাইটারদের; এই ইকো’র কারণে, এক্সটেনশনের কারণে ব্যাপারগুলা সোসাইটিতে ছড়ায়া পড়তে পারে, ধীরে ধীরে একসেপ্টেড হইতে পারে।

দুই-চাইরজন রাইটার দিয়া কনটেক্সট’টা তৈরি হয় না। অ্যাভারেজ রাইটার’রা এই কনটেক্সট বা ‘সাহিত্যের টেস্ট’টাতে কন্ট্রিবিউট করেন।… Continue reading