নোটস: জানুয়ারি ২০২০

১.

ব্যাপারটা এইরকম না যে, ঘটনাগুলা খুব আনপ্রেডিক্টেবল জায়গা থিকা ঘটে। বা উল্টাদিক দিয়া কইতে গেলে, খুব লজিক্যাল সিকোয়েন্স ফলো করে; কিন্তু কম-বেশি টের তো পাই আমরা, কি ঘটতেছে বা ঘটতে পারে। আমরা একদমই টের পাই না বা খুব হঠাৎ কইরা ঘটে – এইরকম কখনোই না, বরং আমরা ভাবি যে, এইরকম হয়তো ঘটতেই পারে, কিন্তু আমরা আশা করি যে, ঘটবে না মনেহয় এইরকম। (ক্লাইমেট চেইঞ্জের ঘটনাটাই ধরেন, আমরা তো জানি যে, সমস্যা একটা তৈরি হইছে আর এইটা ঘটতে যাইতেছে, কিন্তু যখন ঘটে, তখন ‘অবাক’ হইতে থাকি, আরে, কি হইলো এইটা!)

এইরকম মনে হওয়া’টা ইর্ম্পটেন্ট। আর এইরকম মনেহয় বইলা বা এক্সপেক্টশন থাকে বইলা আমরা ভাবতে পারি যে, এইরকম যেহেতু ঘটার কথা, ঘটবো না মনেহয়।

তো, আমরা যা ভাবি, তার ইমপ্যাক্ট তো আছেই কিছুটা; মানে, আমরা তো কিছু চাইতেই পারি, আর সেইটার বেসিসে ভাবতেই পারি, যত খারাপ বা ভালো ঘটার সম্ভাবনাই থাকুক, এতোটা খারাপ বা ভালো ঘটবে না মনেহয়। মানে, আশা (Hope) আর ভয় (Fear) স্ট্রং দুইটা ফিলিংস, কিন্তু ঘটনা আমাদের এক্সপেক্টশন বা ফিলিংসের উপ্রে এতোটা ডিপেন্ড করে না আর কি!

ঘটনাগুলার এফেক্ট আমাদের উপ্রে পড়ে ঠিকই, আর আমাদের চিন্তা-ভাবনাও ঘটনার উপ্রে ইমপ্যাক্ট ফেলে, কিন্তু যে কোন ঘটনা-ই আমাদের চিন্তা-ভাবনার উপ্রে এতোটা ডিপেন্ড করে না আসলে।

ঠিক নিয়তিবাদী জায়গা থিকা বলতেছি না, বরং আন্দাজ করার জায়গা থিকাই বলতে চাইতেছি।…

Continue reading

বার্থডে নিয়া…

খালেদা জিয়ার নাকি ৩টা বার্থডে আছে। আমার ২টা। তার মধ্যে একটা ছিল গতকালকে, ২৫ শে জুন। এইটা আমার এনআইডি’তে আছে, সার্টিফিকেটে, পাসপোর্টে, আরো নানান হাবিজাবি কাগজপত্রে। এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করার সময় এই জন্মতারিখ জন্ম নিছে। সরকারি সবকিছু যেহেতু জুলাই টু জুন সেশন, জুন জুলাইয়ের দিকে বার্থডে’টা থাকলে বয়স হিসাব করতে সুবিধা হইবো। – এইরকম একটা ধারণা থিকা আমার বাপে এইটা করে দিছিলেন।

আরেকটা বার্থডে, যেইটারে আমি ‘অরিজিনাল’ দাবি করি সেইটাও আমার বাপের বা মা’র কাছ থিকাই জানি আমি, প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় লেখা হইছিল মনেহয়। সেইটা মনেও ছিল না আসলে। যখন এই বার্থডে বানানো হইতেছিল তখন মনেহয় জিগাইছিলাম, ‘আসল’ বার্থডে তাইলে কোনটা? তখন মেবি জানছিলাম যে, আমার ‘আসল’ বার্থডে হইতেছে, ২৫ শে সেপ্টেম্বর। (দেখেন, ফেইক করতে গিয়া আমার জানা লাগলো, কোনটা আসল। এমনিতে ‘আসল’ তো আছে আসলেই, কোন না কোন বা থাকেই। মানে, আমি জন্মাইছিই। এইটা নিয়া ডাউট করাটা ঠিক হবে না আর কি!)

তো, আমাদের জেনারেশনে এইরকম দুইটা বার্থডেওলা মানুষের সংখ্যা কম হওয়ার কথা না। আমাদের যারা বাচ্চা-কাচ্চা, তাদের ব্যাপারে আমরা বাপ-মা হইয়া এইরকম ‘ঝামেলা’ করি নাই আর। আমরা বুঝতে পারছি যে, এইটা একটা ঝামেলা। দুই নাম্বারি। এইগুলার চাইতেও আরো বড় সমস্যা হইতেছে, লোকজন তো হাসে, বুইঝা ফেলে, আরে এইটা তো আগের পুরান জেনারেশনের লোক! যাদের বার্থডে দুইটা!

আবার আমাদের যারা আগের জেনারেশন, উনাদের সমস্যাটা আরো জটিল, কারণ ‘আসল’ কোন বার্থডে’র কথা-ই উনারা জানেন না। আমরাও তো তাও জাইনা নিছি, কিছু রেফারেন্সও দিতে পারি, জানার; কিছু কারণের কথাও কইতে পারি, এইসব হাবিজাবি আছে। কিন্তু দেখবেন উনাদের বার্থডে একটা সার্টেন ডেইটের – ১লা জানুয়ারি, ৩১ শে ডিসেম্বর, ৩০শে জুন… এইরকম আর এর এগেনেস্টে তেমন কোন ‘আসল’ বার্থডেও নাই। মানে, অফিসিয়াল বার্থডে জিনিসটা তো অফিসের কাজকামের লাইগা; সুতরাং যেইটা সুবিধা হয়, সেইটা দিতে পারাটাই তো বেটার, তাই না! ‘অরিজিনাল’ হওয়ার কোন প্রেশারই উনাদের ছিল না।

Continue reading

অন বাঁইচা থাকা

মইরা যাওয়ার চাইতে বাঁইচা থাকা’টা ভালো। মানে, চাইলে তো মইরা যাওয়া যায়-ই। এইটা আমার হাতেই আছে। আমি পারি। অনেককিছুই আমি করতে পারি। কিন্তু পারি বইলাই কইরা ফেলতে হবে, এইরকম না। বরং কি কি আমি করতে পারি, কিন্তু করি না, সেইটাই ঘটনা, বেশিরভাগ সময়।

বেশিরভাগ সময়ই লাইফ আনবিয়ারেবল। মানে, লাইফ নিয়া যদি আপনি ভাবতে চান। মিনিংলেস তো! জোর কইরা কোন মিনিং ইম্পোজ করারও কিছু নাই। অইটা আরেকটা প্রেশার। চারপাশ এতো প্রেশার দিতে চাইবে আপনারে। এইটা করেন, অইটা করেন! এইটা ভালো, এইটা খারাপ! কিন্তু এইসবের তো কোন দরকার নাই। বলারও দরকার নাই, আমি এইসব কেয়ার করি না। আমি পাত্তা দেই বা দেই না। এই জিনিসটাই আজাইরা। বাঁইচা থাকার মতোই।

বাঁইচা থাকাটারে না বলাটা সহজ, হ্যাঁ বলাটাই কঠিন। কোন মানে নাই, তারপরও বাঁইচা আছেন – এইরকম অ্যাবসার্ড না; মিনিংটা জরুরি না। কোন মিনিং যদি থাকে, যদি ক্রিয়েট করা যায় তো ভালো; কিন্তু জরুরি না। না চাইলেও বাঁইচা থাকা যায় তো! মরা’র লাইগা বরং ‘কারণ’ দরকার! যে কোন কারণেই মইরা যাওয়া যায়। যেহেতু যায়, মরবোই, খুবই সার্টেন একটা ঘটনা। আমি এর লাইগা আর ওয়েট করি না। আমি চাই কোনদিন সে-ই আমারে খুঁইজা নিক। আমি না চাইলেও নিবে। আমার চাওয়া, এতো ইর্ম্পটেন্ট কিছু না। এইরকম ইনসিগনিফিকেন্ট হইতে সাহস লাগে। এই কারণে, Continue reading

অন কনফেশন

কনফেশন কখনোই পছন্দের জিনিস না আমার। কনফেশনে যেইটা হয় আপনি খালি আপনার একটা ভার্সনই কইতে পারেন। আধুনিক ব্যক্তি যখন ব্যক্তি হয়া উঠতেছেন তখন এইরকম স্টেটমেন্ট অনেক জরুরি জিনিস ছিল। আমার ধারণা, সিক্সটিইজেই এই জিনিস মারা গেছে। মানে, ব্যক্তি বইলা ব্যক্তিরে আপহোল্ড করার কিছু নাই। ব্যক্তি বরং সার্টেন ইমেজ বা কনফার্মেশন অফ সার্টেন থটের ভিতরে নিজেরে এক রকম বাইন্ধা ফেলতে পারছে। ব্যক্তি বইলা কিছু নাই, তা না, ব্যক্তি জিনিসটা মেবি ব্যক্তিত্ব টাইপ একটা ঘটনাতে গিয়া শেষ হইছে। বাজেই হইছে এইটা। যার ফলে, কনফেশন ব্যাপারটা ব্যক্তির এক্সটেনশন আর ঘটাইতে পারে না, বরং কনফার্মেশনের জায়গাটাতেই ফিরা যাইতে থাকে।…

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, এই ব্যক্তি হিসাবে আমার স্বীকার করার কিছু নাই। অথচ চারপাশের একটা চাপ সবসময়ই থাকে ব্যক্তির উপরে, যে, আপনি কনফেশন করেন! স্বীকার করেন বা অস্বীকার করেন! এইটা বাদে আপনি ব্যক্তি হিসাবে আপনার কোন পজিশন আপনি ক্লেইম করতে পারবেনই না! কিন্তু এই স্বীকার করা বা অস্বীকার করাটা কোনকিছুই মিন করে না। এই কনফেশনাল অ্যাটিটুডটারে বরং ব্যক্তিরে একটা পাপেট বানায়া রাখার ফ্রেমওয়ার্ক বইলা সন্দেহ হয় আমার। Continue reading

আমাদের অ্যাভারেজ লাইফ খুব কমই আমাদের অরিজিনাল ফিলিংগুলারে অ্যাকোমোডেড করতে পারে

জুলিয়ান বার্নসের দ্য অনলি স্টোরি নভেলটার সেকেন্ড পার্টের শেষের দিকে একটা সিন আছে, যেইখানে মেইন যে কারেক্টার, সে তার ডিসিশানটা নিতে পারে। একটা হোটেল রুমে ভ্যান গগেঁর গমক্ষেতে কাকের ছবিটা টাঙানো দেইখা ভাবে, এইটা যদি অরিজিনাল ছবিটা হইতো, তাইলে মুশকিলই হইতো, ঠিকঠাকমতো সে রিড করতে পারতেছে কিনা, ঠিক এক্সপ্রেশন দিতে পারতেছে কিনা, যেইভাবে দেখতে পারার কথা সেইভাবে দেখতে পারতেছে কিনা… এইসব নিয়া একটা টেনশনেই পড়তে হইতো। অথচ এইটা ফেইক বা কপি বইলা এইরকম কোন টেনশন নাই, জাস্ট অন্য যে কোন একটা ছবির মতোই দেয়ালে ঝুলানো আছে। তারে এভেয়ড কইরা, ডেইলি লাইফের মতোই একটা জিনিস ভাইবা নিজেদের কাজকামগুলা করা যাইতেছে।…

তো, এইরকম ফেইক বা কপি টাইপ ইমোশনগুলার কাছেই আমাদের থাইকা যাইতে হয়, এইটা মোর ইজিয়ার, টু লিভ বাই। বাঁইচা থাকাটারে এতোটা কমপ্লিকেটেড কইরা তোলে না। অরিজিনাল বইলা যে কিছু নাই, তা না, সেইটা রেয়ার ঘটনাই। আর আমরার যখন এইরকম কোন অরিজিনাল আর্ট বা ফিলিংসের সামনে হইতে হয় তখন একটু টেনশনে পইড়া যাইতে হয়।

কিন্তু মুশকিল মেবি তার পরের ঘটনাটা, যখন এই টেনশনের টাইমটা বা বিহ্বলতার টাইমটা পার হয়, তখন তারে এড়ায়া চলতে হয়, এইটাই মেবি তরিকা, অ্যাভারেজ লাইফস্টাইলের। আরো এক কদম আগায়া, ফেইক ইমোশনগুলার ভিতর ঘুরপাক খাইতে খাইতে যখন ট্রু কোন ইমোশনের সামনাসামনি আমরা হই, তখন বরং নিজেরে বুঝ দিতে থাকি, আরে এইটা তো আরেকটা কপিই! ফেইক জিনিসই! দেখেন না, এইটা এইটা তো ভুল! 🙂

এইভাবে ভাবতে পারাটা, নো ডাউন, আমাদেরকে হেল্প করে। কিন্তু লাইফটারে ধীরে ধীরে অন্ধও কইরা তোলে মনেহয়। একটা সেন্স অফ ট্রুথ বা অরিজিনালিটিরে অ্যাপ্রিশিয়েট করার অ্যাবিলিটিটা আমরা হারায়া ফেলি, সারা জীবনের লাইগাই।

অরিজিনালরে কপি বা কপিরে অরিজিনাল – এইরকম প্যাঁচ লাগায়াও বাঁইচা থাকতে হইতে পারে। মানে, এই ইল্যুশনগুলা জরুরি। এইটা একটা গ্রেটার পার্ট, লাইফের।
Continue reading