কবিতা: এপ্রিল, ২০২৩

অনেকগুলা বন্ধ দরজা

অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি। দরজাগুলারে দেখতেছি। কোন দরজাই আপনা-আপনি খুইলা যাবে না। আমারে বলবে না, আসো! আমার কাছেও চাবি নাই কোন। বইসা থাকতে থাকতে ভাবতেছি আমার মরণ হইতেছে সেই চাবি। যেই চাবি থাকলে পরে সবগুলা দরজাই খুইলা যাবে। তার আগ পর্যন্ত অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি আমি। থাকবো।

একটা না-লেখা কবিতা

ধরো, অন্য রকমের একটা কবিতাই লেখলাম আমি
(মানে, যেইটারে কবিতা বলা যায়,
পারবো না আমি জানি,
তারপরও ধরো, লেইখা ফেললাম)
আমার কবিতাটা কি কবিতা হইতে পারবে?

“আপনার উঠান তো বাঁকা!”
কমলা-সুন্দরী তখন বলবেন।

আমি জানি, একটা কবিতা আমি
লেখতে পারবো না আর কোনদিনই

বাল্য শিক্ষা

ডিএসএ অই আসছে তেড়ে
সাংবাদিকতার-স্বাধীনতা’টি আমি খাবো পেড়ে
Continue reading

কবিতা: মার্চ, ২০২৩

উদাসি শিয়ালদের কবিতা

“আমরা তোমাদেরকে সিকিওরিটি দিতেছি,
তোমাদের উন্নয়ন করতেছি,
আর কি চাও তোমরা!”

মুর্গিগুলারে বুঝাইতেছে কয়েকটা শিয়াল,
আর বলতেছে, “এতো অকৃতজ্ঞ কেনো তোমরা!”

আগে তো লেখতা – “দেশ আমার, দোষ আমার”
এখন এইরকম কালচারাল এক্টিভিটিসও দেখি না!

“না, মুর্গিগুলা আর মানুশ হইলো না’ – এইরকম উদাস
হয়া কবিতা লেখতে বসলো আবার, শিয়ালগুলা

শামসুর রাহমান

ক্রিঞ্জ হিউমারগুলা পার হয়া আসো
সিউডো তর্কগুলা পার হয়া আসো
আসো পারসোনাল পার্ভাটনেস নিয়া তোমার

বোরিং ইন্টেলেকচুয়ালিটি পার হয়া আসো
স্মুথ সেলিব্রেটি গেইমগুলা পার হয়া আসো
আসো লুসিড মেলানকলিয়া নিয়া তোমার

আর যদি তুমি হারায়া যাও
ক্রিঞ্জ, সিউডো, বোরিং, স্মুথনেসের ভিতর
মনে রেখো, আমিও ছিলাম, তোমার এই না-থাকায়

আমার একটু তাড়াহুড়া আছে

অনেকেই বলেন, তাদের কোন তাড়াহুড়া নাই,
কোন কিছু তারা এচিভ করতে চান না, লাইফ যেমনে চলতেছে,
যেইভাবে চলতেছে, চলে যাইতেছে তো… কিন্তু আমার একটু তাড়াহুড়া
আছে, কিছু কাজ আমার আছে, যা আমি করতে চাই
আমার এই আন্দাজও আছে যে, যা কিছু আমি করতে চাইতেছি
তার সবকিছু আমি না করতে পারলেও এর একটা মিনিং
তৈরি হইতে থাকবে, কাজগুলা শেষ না হইলেও এর শেইপটা
তার মতো তৈরি হইতে থাকবে, ইনকমপ্লিটনেসগুলা টের
পাওয়া যাবে, তারপরও কাজগুলা যে আমি করতে চাই

– এই একটু তাড়াহুড়া আমার আছে, থাকাটা দরকারি বইলাও
মনে করি আমি যে, বাঁইচা থাকতে হইলে কিছু কাজ করা লাগবে
না খালি, কিছু কাজ করার জন্যও বাঁইচা থাকাটা দরকারি

এইগুলা করা বা না-করার লগে কোনকিছু এচিভ করার বা
না-করার কোন রিলেশন নাই, কিন্তু একটু তাড়াহুড়া আমার
আছে, আর সামহাও থাকাটাও দরকারি… কিন্তু আমি এইটাও
বিলিভ করি, আমার কপালে কি লেখা আছে আমি জানি না,
দেখা গেলো, যেই কাজটা আমি করতে পারলাম না, সেইটা
আরো ভালোভাবে কেউ কইরা ফেললো, বা না-করাটাই ভালো;
মানে, আমি তো জানি না, কিন্তু আমি ভাবি যে আমার কিছু
কাজ আছে, আর এর জন্য একটু তাড়াহুড়াও আছে আমার

যাদের কোনকিছুই করার নাই – সেই শান্ত-শিষ্ট নদীর পাড়
থিকাও আমি একটু দূরে থাকতে চাই, যেন আমি একটা কিছু
করতেছি, একটা কিছু করতে করতে আমি ওয়েট করতেছি,
আমাদের-কোন-তাড়াহুড়া-নাই’রা যেইরকম তাড়াহুড়াদের দেখতেছে
নিজেদের ব্যাপারে খুশি হইতে পারতেছে – অই খুশিটারে আমি
এড়ায়া গিয়া আমারে বুঝাইতেছি, কয়েকটা কাজ তো আছে আমার
কয়েকটা কাজ তো কইরা যাওয়া লাগবে আমারে, তাই না?

Continue reading

কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাছের কাঁটা

আমার গলায় মাছের কাঁটা লাগছে
একটা বিলাই বলতেছে

শুইনা ভাজা মাছটাও হাইসা উঠলো, বাটিতে
বিলাইটা চেইতা গিয়া তখন অই মাছটারেও খাইলো

তারপরে বাটি’টাও হাইসা উঠলো,
বিলাইয়ের গলার কাঁটা তা-ও সরলো না

পিরিতি, মাছের কাঁটা
থাকলে থাকে না, না থাকলেই থাকে
কিন্তু, বিলাই-রে এই কথা কে বুঝাইবে!

লাভ লেটার

রসের বন্ধু আল মাহমুদ,

অনেকগুলা আইটেমের মধ্যে আমি হইতেছি তাইলে
আরেকটা আইটেম!

আপনার মন-খারাপের উপাদান, যারে
আপনি পাইতে পারেন না,
এই কারণেই রসের আলাপ করেন!

হাঙর, কুত্তা, বিলাই, অধ্যাপক, সম্পাদক
দুনিয়ার কেউ আপনারে পাত্তা দেয় না,
তাই আপনে খালি কবিতা-ই লেখেন,
আর ঢেউ গুনতে থাকেন আমার শরীরের,
চোখ বন্ধ কইরা

আমিও লেখছি একটা কবিতা,
আপনারে লইয়া, পড়েন –

“ও পাড়ার পুংটা মাহমুদ
কথায় কথায় যার কবিতার সুর,
তবু পোলা, পিরিতি বোঝে না।”

ইতি,
সুন্দরী রোজেনা

ক্যারিয়ার

রেট-রেইসে হাঁটতে হাঁটতে একটা ইন্দুর বলতেছে,
“এতো তাড়াতাড়ি কোথাও পৌঁছাইতে চাই না আমি”

অন্য ইন্দুরগুলা হাসতেছে, ভাবতেছে ক্যারিয়ার শেষ অর,
তা নাইলে অন্য কোন ফন্দি-ফিকিরই করতেছে মনেহয়…

যেহেতু ইন্দুর, কোন না কোন রেট-রেইসেই তো আমরা আছি!

Continue reading

কবিতা: জানুয়ারি, ২০২৩

বাকশালি-প্রেমের কবিতা

তোমার চুল নীল।
তাই তোমার পাদে গন্ধ নাই।
তোমার হাসি সুন্দর।
তাই তুমি পায়খানা না কইরা থাকতে পারো সাতদিন।
তোমার চোখ মায়াবী, উদাস, গভীর।
তোমার হিসু তাই শব্দহীন।
তোমার শরীর মোম, গলতে গলতে আবার জমা হয়।
তাই কোন ব্যথার আঘাত তুমি পাও না।

তথাপি তুমি অসহায়।
আমি ছাড়া তোমার কোন গতি নাই।

তুমি অসহায় রাজকন্যা।
আমি বীর যোদ্ধা!

তুমি টিভি-উপস্থাপিকা।
আমি টক-শো সেলিব্রেটি!
তুমি বাকশালি-ফেমিনিস্ট।
আমি বাম-বুদ্ধিজীবী!

আমি আমি আর আমরা আমরাই তো এই দুনিয়া!

বাকি যারা আছে সবাই বিএনপি ও জামাত।
অদের পাদে গন্ধ।
খাইতে পায় না তা-ও ডেইলি দুইবার হাগে।
চোখে ইশারা নাই, কথায় ইঙ্গিত-উপমা নাই কোন!
বাড়ি মারলে ব্যথা পায়।
সুফি-প্রেমও বুঝে না।

অদের কথা আমরা বলবো না কবিতায়।
অরা বস্তুজগতের অহেতুক বাস্তবতা।

কবিতা তো হবে লাইফের ফাইনার ফিলিংগুলা।
ঝকঝকা তকাতকা সুন্দর সুন্দর ছবির মতো একেকটা।

আমরা যেই কবিতা লেখবো তারে আবার বইলা বইসো না কিন্তু
বাকশালি-প্রেমের কবিতা!

ভুলে যেও না (ফরগেট মি নট)

যদি তুমি
কখনো
আমার কথা
ভাবতে চাও

এমন ভাবে
ভাববা

যেন একটা
পুরান গানের সুর
তুমি মনে করতে পারতেছো না

তুমি হাসতেছো

তুমি হাসতেছো
তোমার ফেইক হাসি
শীতের সকালের সূর্যের মতো
একটু একটু কইরা
রিয়েল হয়া উঠতেছে

তোমার
এই এইটুক রইদ
আমি কি যে ভালোবাসতেছি

তুমি হাসতেছো

Continue reading

কবিতা: ডিসেম্বর, ২০২২

পিংক ফ্লয়েড

আমরা
দুইটা ফিশ-বৌল

দুইটা আলাদা দুনিয়ায়
একটাই মাছের স্বপ্ন
দেখে যাইতেছি

সা রা জী ব ন

টাকার কবিতা

আমরা টাকা চিবায়া খাবো
অনেক অনেক টাকা থাকবে আমাদের কাছে
ব্যাংকে যদি টাকা না থাকে
নতুন কইরা ছাপায়া দিবে তো গর্ভমেন্ট

টাকা নাই মানে! টাকা ছাপানো কোন ঘটনা নাকি!

টাকা দিয়া ফুলকপি, টমেটো বানাবো আমরা
টাকা দিয়া বাজারে বাজারে ডিসপ্লে কইরা রাখবো
ডিম, মাছ, মুর্গি আর গরুর মাংস
পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ, তেল
আর যা যা কিছু লাগে আমাদের

টাকা দিয়া বানানো ব্যাগে
টাকা-ভর্তি কইরা টাকার জিনিসপত্র নিয়া আসবো!

আর কতো টাকা লাগবে দেশের মানুশের!
এতো এতো টাকা ছড়ানো সারাদেশে
মানুশ টাকা চিবায়া খাইতেছে না কেনো, এখনো!

খালি টাকা আর টাকা আর টাকা দিয়াই তো দুনিয়া ভরা!

এরপরেও গরিব, ছোটলোকগুলা নাকি টাকাঅলা হইতে পারতেছে না!
এরা কোনদিনও বড়লোক হইতে পারবে না!

আমাদের মতো টাকা চিবায়া খাইতে পারে না এরা
খালি ভাত খাইতে চায়, ভোট দিতে চায়

টাকার মূল্য বুঝে না!
আরে, টাকা থাকলেই তো হয়!

অনেক অনেক টাকা ছাপাইতেছি আমরা
এখন থিকা ভাতের বদলে টাকা খাবা তোমরা

এতোদিন উন্নয়ন খাইছো, এখন টাকা খাও,
বাংলাদেশের মূর্খ, অশিক্ষিত জনগণ! Continue reading