আমার ফ্রেন্ডের বউ ড্রাইভ করতে পারে। শে আমারে ড্রাইভ কইরা নিয়া গেলো নিউমার্কেটে। যাওয়ার সময় আমি তারে কইলাম, আমার গাড়ি কিন্তু ব্যাকে যায় না, ইঞ্জিন পুরান হইতেছে তো, মেইনটেইনসও নাই। এই কারণে শে বাইরে পার্ক করলো। আমরা ড্রাইভার’রে নেই নাই গাড়িতে তখন, নিউমার্কেট যাওয়ার সময়। পরে যখন পার্ক করা হইলো রাস্তায়, সে আইসা হাজির। ফ্রেন্ডের বউ এর আগে গাড়ির দরোজাও লক করতে পারতেছিল না ঠিকমতো। তখন আমি কইলাম, চাবি ড্রাইভার’রে দিয়া দাও। রাস্তায় গাড়ি রাখা এমনেও রিস্কি। সে থাকবো নে গাড়ির সাথে। এর আগেই অবশ্য শে গাড়ির দরোজা লক করতে পারতেছিল। আর ড্রাইভার, যারও নিজের কোন নাম নাই, চাবিটা হাতে পাইয়াই সামনের দিকে হাঁইটা চইলা গেলো, এমন একটা ভাব যেন পরে ফেরত আসবো আর গাড়ি’র কাছেই থাকবো, এই মোমেন্ট খালি আরেকটা কাজ পইড়া গেছে বা আমার অর্ডার খুব একটা পাত্তা না দিলেও চলে এইরকম একটা ব্যাপারও থাকতে পারে। আমি ওরে ঝাড়ি দিবো কি দিবো না এইটা ডিসাইড করার আগেই সে চইলা গেলো আর ফ্রেন্ডের বউ আগাইয়া আইসা আমার হাতে ধরলো। আমি ড্রাইভারের কথা ভুইলা গেলাম। Continue reading
:: ফিকশন ::
সন্ধ্যা-রাত-সকাল
১.
ডাক্তার সুমনরে রিপোর্টগুলা দেখাইয়া শুভ্র’র লাইগা ওয়েট করতেছিলাম। দুইবার মোড়ের সামনে দিয়া হাঁটাহাঁটি করলাম। বিকালবেলায় কিছু খাই নাই, খিদাও লাগতেছিল। মোড়ে একটা চটপটি ফুচকা’র দোকানের সামনে দিয়া একবার ঘুইরা গেলাম। একটা কাপল বইসা খাইতেছিল। প্রথমে ভাবলাম যে, খাবো না। পরে ঘুইরা আইসা ভাবলাম, খাই। ত্রিশ টাকা প্লেট। দশটার মতো ওঠে পার প্লেটে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]
একজন নারী তার মে’রে নিয়া যাইতেছিল পাশের রাস্তা দিয়া, শে ফুচকাওয়ালারে কইলো আমাদের জন্য একটা চটপটি বানান, কম ঝাল দিয়া। শি ওয়াজ স্পন্টিনিউয়াস। এইদিকেই মনেহয় তার বাসা। এইখানে হয়তো শে ফুচকা-চটপটি খাইতে আসে। এই অর্ডার দেয়া ভাল্লাগলো আমার। আমার ফুচকা রেডি হওয়ার পরে দাঁড়াইয়া খাইতেছিলাম। একটু পরে শে আইসা বসলো। মনেহয় পাশের দোকানে গ্রোসারি কিনতে গেছিল। কইলো, এখনো বানান নাই! ফুচকাওলা বানাইতে শুরু করলো তখন চটপটি। মা-মে প্লাস্টিকের লাল চেয়ারে বইসা গল্প করতেছিল। আমি সিচুয়েশনটা ভাবার চেষ্টা করলাম। হোমওয়ার্ক করতে বসার আগে মে’রে হয়তো শে বলছিলো, তাড়াতাড়ি হোমওয়ার্ক শেষ করতে পারলে তারে চটপটি খাওয়াইতে নিয়া যাবে; মানে তার নিজেরই হয়তো একটু ইচ্ছা করতেছিল। হয়তো জামাই বাসায় আসতে আসতে দশটা। এই সময়টা, সন্ধ্যাটা মে’রে নিয়া নিজের সাথে ঘুরলো একটু শে। এই অবসরটা ভাবতে পাইরা ভাল্লাগলো আমার। Continue reading
দেখা, অ-দেখা, না-দেখা
Ken Laidlaw-এর আঁকা ছবি।
———————
সে যে আমারে দেখে নাই, এইটা সে আমারে মনে করায়।
আমি কই, থাক, থাক; সেইটার ত দরকার নাই। আমি মনেহয় দেখছিলাম, আপনি যে দেখেন নাই।
না, না, আমি ত আপনারে দেখি-ই নাই। মানে, দেখার মত ভিজিবল আপনি হইতে পারেন নাই।
ঠিক আছে, সমস্যা নাই। যেহেতু আপনি দেখার এরিয়া বাড়াইতেছেন, ছোটখাট, ভিজিবল-হইতে-না-পারা জিনিসগুলারে ইগনোর করতে পারাটা ভালো। খামাকা টাইম নষ্ট হয় না।
না, না, আপনি জিইতা গেলে ত হবে না। এত বয়স হইছে তারপরও আপনি যে ভিজিবল হইতে পারতেছেন না, এইটা নিয়া বেদনা থাকবো না আপনার। ধরেন, মদ একটু বেশি খাইলেন; একটা কবিতা বেশি লিখলেন…
তা ত করাই যায়। করবো নে। আপনারে কি ট্যাগ দিবো? যাতে ব্যাপারটা বোঝা যায়?
দিতে পারেন। তারপরও আমি কিন্তু আপনারে দেখি নাই।
হুম, না-দেখায় অ-দেখারে ত আমরা ভুইলাই যাই।
ব্যাপারটা তা না, এইটা আপনার শান্তিবাহিনী’র ভাবনা! আপনারে দেখি নাই আমি, আপনি আর অ-দেখাতে নাই, না-দেখায় ট্রান্সফার হয়া গেছেন অলরেডী! এইটা আমার দেখা-ই, আপনি দেখতে পাইতেছেন না!
তাইলে ত ব্যাপারটা দেখার চেষ্টা করতে হবে। মানে, আমার অ-দেখাটা আর ভ্যালিড নাই, আপনার না-দেখাটাই ভ্যালিড?
জ্বি ভাইজান, এইটা বুঝাইতে আপনারে এতোক্ষণ লাগলো!
তাইলে ত সাবজেক্টিভিটি নিয়া কবিতা লিখতে হবে।
হেহেহে… লেখেন না, লেখেন! কতকিছুই ত লেখলেন, এইটাও লিইখা রাখেন!
লিখছিলাম ত মনেহয়: …কেউ কাউরে দেখি না; না-দেখায়, অ-দেখায় ভুলেই যাই… Continue reading
বিলাই ও কুত্তার হৃদয়
এইটা ত ঊনিশো চুয়াত্তর সাল না; তারপরও কুত্তাটা দুর্ভিক্ষের কান্দা কানতেছে, সকাল হইতে না হইতেই। একটানা। কিসের লাইগা কান্দে সে; শিরিন-আরা ভাবার চেষ্টা করেন। দারোয়ানগুলা ঠিকমতো খাইতে দেয়া না ওরে? খিদা লাগছে? নাকি দেশের লাইগা ওর পেট পুড়ে? বসুন্ধরা রেসিডেনশিয়াল এলাকায় বেশিরভাগই কুকুর; কুত্তা কমই দেখা যায়। কুকুরগুলা এক একটা বাঘের লাহান, গলায় বেইল্ট লাগানো, চেইন লাগানো; দেখা যায়, যখন এরা হাঁটতে বাইর হয়, বিকালবেলায়। ছোটখাট বিলাইয়ের মতো কুকুরও আছে কিছু, কিন্তু ওইগুলা রাস্তায় বাইর হয় না, এইজন্য কম কম দেখা যায়। বাইরে বাইর হইলে এদের গায়ে ময়লা লাগে। এরা গাড়িতে কোলের উপ্রে সাইজা-গুইজা বইসা থাকে। এইরকম একটা কুকুর-সমাজে বাসার দেশি-কুত্তাটা একটা রেয়ার পিস। ওর ত একলা লাগার কথা, বিদেশ-বিদেশ লাগার কথা; কান্দে কি এর লাইগাই, তাইলে! শিরিন-আরা ভাবেন উনার লাইগা কে কানবে আর! যদি নাতি-নাতনি থাকতো তাইলেও না হয়, মরা’র পরে বিলাই পালতো তার নামে। এই দুঃখে তার বিলাই হৃদয়ও কানতে চায়, এইরকম স্ট্যাবল জিডিপি গ্রোথের টাইমে। রিসার্চ কইরা যাঁরা গল্প লিখতে বসেন তাঁরা আরো স্পেসিফিক ডাটা নিতে পারতেন এই জায়গাটাতে। আমরা এভয়েডই করি বরং! Continue reading
টাইগার
এক্সটার্নাল অডিট করতে আসছেন সুশ্রুতি হাসান (সুহা)। যেহেতু উনার নাম এইরকম, উনি সুন্দর কইরা কথা বলার চেষ্টা করেন। যেমন, উনার নাম যদি হইতো প্রজ্ঞা লাবণ্য, তাইলে উনারে চুপচাপ ধরণের হইতে হইতো, যাতে একটু একটু কথা বলবেন, আর তারে ইর্ম্পটেন্ট মনে হইতে হইবো সামহাউ। উনি আমারে কইলেন, আপনি যে আমার চে বেশি বেতন পান, দ্যাট ডাজন্ট নেসেসারিলি মিন যে, আপনি আমার চে একজন বেটার মানুষ! হয়তো এইটা সত্যিই বা সত্যি বইলাই তো জানতাম; কিন্তু একটা সত্যি আর একটা সত্যি-বলা’র অ্যাক্ট – দুইটা যে ভিন্ন জিনিস সেইটা আরো স্পষ্টভাবে টের পাইতে থাকি। আমি অ্যাজ রাসেল সালেহ (রাসা), রস উৎপাদনের দিকটা নিয়া মনোযোগী হইতে থাকি।
সুহা কেন আসছেন এইখানে? উনি এমনিতে বয়সে ছোট, আমর চে। তারপরে আবার জাফরিন নাবিলা (জানা’র) ফ্রেন্ড। জানা খালি জর্জরিত হইতে চায়, নানানরকমের কষ্টে। কয়, দেখো সাহিত্য ভইরা গেছে ছোটলোকে! যাঁরা ঠিকমতো ভদ্রতা জানে না, গ্রাম্য; এক দুই পুরুষ আগে গ্রাম থিকা শহরে আসছে, তারা খালি তাদের কাহিনি বলে, কত গরিব-দুঃখী ছিলো তারা, এখন শহরে থাকে; তারপরেও চান্স পাইলে বাপ-দাদা’র গ্রামে তারা চইলা যাইবো; বাপ-দাদারা নাই যেহেতু উনাদের সম্পত্তি ত আছে, আর এই কারণেই আসলে ওইটাই ভালো! শহরে ত ওরা এখনো ফ্ল্যাট কিনতে পারে নাই বা পারবোও না রিসেন্ট ফিউচারে। আর আমরা যাঁরা গ্রামের বাড়ি বেইচা ফেলছি অনেক আগেই বা দান কইরা দিছি, লন্ডনের সাব-আর্বে একটা বাড়ি থাকলেও, ঢাকাতেই থাকি বেশিরভাগ সময়, মাঝে-মধ্যে হাঁসফাঁস লাগে বইলা গাজীপুরে একটা গ্রামের-বাড়ি বানাইছি, আমাদেরকে লাইফ-ষ্টাইল সাজেস্ট করতে থাকে, থ্রু তাঁদের গ্রাম্য বিষণ্ণতা। এখন সাহিত্যে আমাদেরকে আমাদের ট্রু সেলফকে ডিপিক্ট করা লাগবে, রি-ইনভেন্ট করা লাগবে; এইভাবে একটা ক্লাসরে ডমিনেন্ট রাখা যাবে না আর! আমরা কি মানুষ না! আমাদের জীবন নিয়া কেন আমরা সাহিত্য লিখতে পারবো না!
সাহিত্য ব্যাপারটা যদি অট্টুকই হয়, তাইলে ত ঠিকই আছে। এইখানে আমি কি বলতে পারি! আমি বুঝি যে, জানা আমারে অফেন্ড করতে চায় না। শে তার নিজের একটা অবস্থান চায়, বাংলা-সাহিত্যে। কবি-গল্পকার-সমালোচক-সম্পাদকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং বিশ্বাস করে যে, বাস্তব অভিজ্ঞতা বাইরে গিয়া কখনোই গল্প লিখা সম্ভব না। তার গল্পে বেশিরভাগ সময়ই ভিলেনের রোল’টা আমার জন্য বরাদ্দ থাকে। এমন একজন, যে সফল; ব্যবসা কইরা বহুত টাকা কামাইছে, বা বড় চাকরি কইরা অনেক টাকা বেতন পায়; কিন্তু রুচি খুব খারাপ, গল্পের একদম শেষদিকে গিয়া দরাম কইরা পাদ-দেয়ার মতো তার গ্রাম্যতা এক্সপোজড হয়া যায়! সেইটা ঠিক আছে, মানে একভাবে ত এইরকম দেখাই যায়। কিন্তু আমি তারে কখনোই বলার চেষ্টা করি নাই, এই যে দেখা, এইটাও একটা গল্প-ই আসলে। Continue reading