নোটস: এপ্রিল, ২০২২ [পার্ট ২]

এপ্রিল ১১, ২০২২

অনেক সময় এই জিনিসটা আমার মনেহয়, এই যে “ধর্মীয় উন্মাদনা” “কুসংস্কারচ্ছন্ন লোকজন” “রিপোর্ট করা” এইগুলাতে ফেসবুক-বট, পেইড-আইডি টাইপের জিনিসগুলা অনেকবেশি ইনভলব।

মানে, মব বইলা কিছু নাই না, এই মব’টারে আসলে অনেকবেশি তৈরি করা হয়। আর এইটা অনেক বেশি ডাইরেক্টেড থাকে, যারা মনে করেন যে, না, এইরকমের একটা “গোষ্ঠী” তো আছে! [আবারো বলি, নাই – এইটা আমার ক্লেইম না, কিন্তু] এইটা হইতেছে “প্রমাণ”টা, যে দেখেন! যদি না থাকতো, আপনার আইডি কে রিপোর্ট করতো! কে এইরকম গালি-গালাজ করতো!

তো, আমি যেইটা মনে করি, একজন মানুশ মব-এর পার্ট হয়া উঠার চাইতে এইখানে একটা মব-কালচারটারে ট্রিগার করাটা হইতেছে ঘটনা, আর এইটা খুব অটোমেটিক্যালি ঘটে না, বেশিরভাগ সময় ঘটানোই হয়। যেন আমার মনের ভিতরের মব-ফিলিংসটা জাইগা উঠতে পারে, জাস্টিফাইড হইতে পারে তখন 🙂

মানে, ব্যাপারটারে কন্সপিরেসি থিওরির জায়গা থিকা না দেইখা মিডিয়া-রিয়ালিটির মতোই এক ধরণের রিয়ালিটি-জেনারেটিং মেশিন হিসাবে দেখতে পারলে বেটার। আপনার নিউজফিডে যদি ১০টা পোস্ট আসে একটা সাবজেক্টে তখন আপনারও অইটা নিয়া কথা-বলার, একটা পারসপেক্টিভ প্রোভাইড করার আর্জ তৈরি হইতে থাকার কথা তো।

তো, নিউজফিডে অই স্পেইসটারে কেমনে অকুপাই করা হইতেছে, অই ঘটনাটার কথা বলতে চাইতেছি আর কি…

এপ্রিল ১২, ২০২২

একটা জিনিস খেয়াল কইরা খুব সারপ্রাইজড হইছি, মানে, ব্যাপারগুলা তো চোখের সামনে আছেই, কিন্তু খেয়াল করা হয় না অইভাবে।
ঘটনা’টা হইতেছে, নন-কলোনিয়াল লিটারেচারের যেই ধারা (ধরেন, লালন, রাধারমণ, হাছন) সেইখানে তেমন কোন ফিমেইল-ফিগার পাইবেন না, ১৮ শতকের দিকে, এবং মেবি এখনো নাই। এর আগে খনা, রামী, চন্দ্রাবতী, যেই কয়টা নাম আছে, উনারা মোটামুটি একসেপশনাল ঘটনাই। কমন বা রেগুলার একটা ঘটনা হিসাবে দেখতে পাই না আমরা।

তবে “বঙ্গের মহিলা কবি” বইয়ে যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত ‘অভিজাত নারীদের’-ই মনেহয় জায়গা দিছেন। এইটা মনে হইছিল বিনোদিনী দাসীর নাম না দেইখা। মানে, “সাহিত্য’ তো সবসময় কলোনিয়াল জিনিসই। কলকাতার অভিজাত-সম্প্রদায়ের বাইরের জিনিসগুলারে “গ্রাম্য” “ফোকলোর” বা “মধ্যযুগীয়” ঘটনা হিসাবেই আইডেন্টিফাই করা হয়, সেইটা ধরেন ২০০০ সনে লেখা হইলেও।

তো, সেইখানেও কবি/বয়াতি (মানে, সিঙ্গার বা মিউজিশিয়ান পাইলেও রাইটার) হিসাবে কোন ফিমেইল-ফিগার যে আমরা পাই না, অই ঘটনা’টা মনেহয় খেয়াল করাটা দরকার। মানে, কলোনিয়াল-ধারা’তে ‘নারী কবি’ ক্যাটাগরি নিয়া আমরা হাসি-ঠাট্টা তো করতেই পারি। কিন্তু খারাপ-ভালো কিছু নাম ও কাজ আমরা পাই। বাউল-ভাটিয়ালি-মুর্শিদি যেই ধারাটা আছে সেইখানে এই ঘটনাগুলা কি একদমই নাই?

এটলিস্ট এখনো তো জানি না আমরা। আমি জাস্ট কোশ্চেনটা রাখলাম। যদি থাকেও, সেইটা যে ভিজিবল হইতে পারে না অইটা খালি ট্রাডিশন না, কোন অপ্রেশনের ঘটনাও কিনা…

Continue reading

নোটস: এপ্রিল, ২০২২ [পার্ট ১]

এপ্রিল ০৩, ২০২২

– মিডিয়া-রিয়ালিটির সিউডো তর্ক নিয়া –

কিছুদিন পরে পরেই এই রকমের জিনিসগুলা ভাইরাল হয়, নারী-অধিকার ভার্সেস ইসলামের ঘটনাগুলা। এখন এই ঘটনাগুলা যে ঘটে না – তা না, কিন্তু এই টাইপটারে আমি বলতে চাই ‘মিডিয়া রিয়ালিটি’র ঘটনা। এই ঘটনাগুলাতে খুব উদাস-ভাবে পাওয়ারের জায়গাটারে হাইড করা হয়। যেমন, ঘটনা’টা যেন পুলিশ ভার্সেস পিপল না!

তো, পাওয়ার’রে রেয়াত বা ইনডেমনিটি দেয়া আগেও ছিল, কিন্তু ২০১৩ সালের শাহবাগের পরে এই জিনিসটা খুব ক্লিয়ারলি লোকেট করা যায় যে, এইটা যতোটা না নারী-অধিকার ভার্সেস ইসলামি-শাসনের ‘তর্ক’ তার চাইতে অনেক বেশি হইতেছে বাকশালি-জুলুমরে আড়াল করার ঘটনা। যেন এইগুলা হইতেছে সমাজের ‘বার্নিং ইস্যু’, ‘ক্রিটিক্যাল আলাপ’! অথচ এর পক্ষে-বিপক্ষে থাকাটা তেমন কিছু মিন করে না আসলে। বরং একটা জেনারালাইজেশনের ভিতর দিয়া অডিয়েন্স হিসাবে জম্বি, জঙ্গি অথবা বড়জোর মডারেট-মুসলিম টাইপের একটা আইডেন্টিটির দিকে ঠেইলা দিতে থাকে। এইটাই এই ‘তর্ক’টার মেইন পারপাস আসলে।…

মানে, এইরকমের কোন ‘দ্বন্দ্ব ও বিষাদ’ নাই – এইটা আমার পজিশন না, এইগুলা হইতেছে সিউডো-পলিটিক্যাল ঘটনা। পলিটিক্সের মতন ‘নোংরা’ জিনিস নিয়া কথা না বইলা একটু কালচারাল-পলিটিক্স করা। (অন্য অনেক কিছু লগে) বেসিকালি, পাওয়ারের জায়গাটারে আন-কোশ্চেনড ও সেইফ রাখার একটা তরিকা।

Continue reading

নোটস: মার্চ ২০২২ [পার্ট ৩]

মার্চ ২১, ২০২২

– এনার্কিস্ট অ্যাজ অ্যা জমিদারের বাচ্চা –

বাংলাদেশে আপনি যদি পাওয়ারফুল লোক হন, তাইলে সেইটা পাবলিকরে বুঝানোর উপায়’টা কি?
আমি ভাইবা দেখলাম, সবচে সহজ উপায় হইতেছে, নিয়ম না মানা!* যে, রাস্তায় বামদিক দিয়া গাড়ি চালায়া যাওয়াটা হইতেছে নিয়ম, আপনি গেলেন ডাইনদিক দিয়া! এইটা খালি নিয়ম না-মানা না, নিজেরে পাওয়ারফুল হিসাবে দেখানোরও উপায়, যে দেখ! আমার নিয়ম মানা লাগে না। টিকেট কাটতে লাইনে কেনো দাঁড়াবো, আমি এলাকার মাস্তান না! টেন্ডারে আমি সিরিয়াল দিবো কেনো, পলিটিক্স কি এর লাইগা করি নাকি! এসপি, এমপি হইছি কি ট্রাফিক জ্যামে বইসা থাকার লাইগা নাকি! এইরকম। মানে, আপনি যে জমিদারের বাচ্চা একটা, এইটা বুঝাইবেন নিয়ম না মাইনা।

(একটু বাড়ায়া বলা মনে হইতে পারে, কিন্তু রিলিভেন্স মনেহয় না থাকার কথা না, যেই কারণে) বাংলাদেশের এনার্কিস্টদের নিয়ম না-মানা যতোটা না ফিলোসফিক্যাল চয়েস, তার চাইতে জমিদারের বাচ্চা হওয়ার খায়েশও কম বইলা মনেহয় না। আমি বলতেছি না যে, আপনি নিয়ম-মানা গোলাম হয়া উঠেন, কিন্তু এর কালচারাল সিগনিফিকেন্সটারে না মানলেও কন্সিডার করতে পারেন পয়েন্ট’টা।**
মানে, নিয়ম না-মানাটা অবশ্যই আমাদেরকে পাওয়ারফুল হিসাবে শো করে, কিন্তু এইটা ক্লাস-হেইট্রেটের ঘটনাও হয়া উঠতে পারে তো! আমি বলতে চাইতেছি, যে কোন আইডিওলজিক্যাল জিনিসরেই কালচারের কনটেক্সট থিকা বাইর কইরা দিয়া এবসুলেট জায়গা থিকা দেখাটা ঠিক হবে না। এই মিনিমাম জায়গাটার কথাই।

*মানে, আরো অনেক উপায় তো থাকতেই পারে। গেরামে বা ছোট শহরগুলাতে এইটা ছিল বাজারে গিয়া বড় মাছটা কিনা। পাড়ার সবচে সুন্দরী মেয়েটার লগে পিরিত করা। একটা মসজিদ বানানো, মাদরাসা দেয়া, আকিকা-খতনা-বিয়া-চল্লিশার বড় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা, এলাকার মানুশের বিচার-করা, নানান কিছুই… মানে, আপনার যে টাকা আছে বা পাওয়ার আছে, সেইটা যদি শো না করতে পারেন, তাইলে তো সেইটা না-থাকার মতোই ঘটনা…

**ইন্দোনেশিয়ায় সুহার্তো সরকারের আমলে ৫ লাখ কমিউনিস্টরে যারা মারছিল, সেই মিলিশিয়া বাহিনির এক নেতা কইতেছিল, আমরা তো আউট-ল পারসন, একটু উরাধুরা (ভাগ্য ভালো এনার্কিস্ট বলে নাই)। একইভাবে ‘৮০ বা ইভেন ‘৯০-এর দশকে যারা পাড়ার মাস্তান ছিল, উনারা এইরকম আউট-ল, এনার্কিস্ট হিরোই ছিলেন। হুমায়ূন আহমেদের “কোথাও কেউ নেই”র বাকের ভাই’রে দেখেন। এনার্কিস্ট তো কারেক্টার’টা, জমিদারের বাচ্চা হইতে পারে নাই আর কি এরা… কিন্তু অনেকে পারছে তো… ফার্স্ট এনার্কিস্ট দ্যান জমিদারের বাচ্চা, ফার্স্টে কমিউনিস্ট দ্যান বাকশালি… এইরকম।

Continue reading

নোটস: মার্চ, ২০২২ [পার্ট ২]

মার্চ ১১, ২০২২

এলাকার একটা ফেসবুক গ্রুপে আমি মেম্বার হিসাবে আছি। ফেসবুক আমার ধারণা লোকেশন জিনিসটারে বেইজ কইরাই নিউজফিডে বেশি পোস্ট সাপ্লাই দেয়, যেই কারণে অই গ্রুপের পোস্ট নিয়মিতই দেখতে পাই আমি। ভালো জিনিসই অইটা।

অইখানে কয়দিন পরে পরেই ‘জনসচেতনতা-মূলক’ পোস্ট দেন অনেকে। মানে, ফান করতে করতে একটু টায়ার্ড লাগে তো মাঝে-মধ্যে আমাদের, একটু ‘সিরিয়াস’ হইতেও ইচ্ছা করে।

তো, এর মধ্যে একটা কমন ‘সাবধানতা-মূলক’ পোস্ট হইতেছে, রিকশাঅলারা মিছা কথা কইয়া টাকা নিতেছে। নানান কাহিনি কয় এরা, নিজের অসুখ, ফ্যামিলির সমস্যা, মেয়ের বিয়া, ছেলের পরীক্ষা, ছোট বাচ্চা… এইরকম। আর একই রিকশাঅলা একেকবার একেক কাহিনি বইলা জালিয়াতি কইরা টাকা নিতেছে। মানে, এইরকম কোন সমস্যা উনাদের নাই! ভুয়া কাহিনি এইগুলা!

অনেক সময় রিকশাঅলাদের চেহারার বর্ণনাও দিয়া রাখেন, যাতে লোকেট করতে পারেন অন্যরা।

কাহিনিগুলা যে সত্যি না – তা তো না, এইরকম আমার লগেও হইছে। একই রিকশাঅলা কিনা খেয়াল করি নাই। কারণ উনারা যখন এইরকম কথাগুলা বলার মতো ভারানারেবল হয়া উঠেন, তখন উনাদের চেহারার দিকে তাকানোর সাহস আমি করতে পারি না।

লোকটা মিছা-কথা বলুক আর সত্যি-কথা, তারে যে এইরকম বলা লাগতেছে, এইটা বিচার করতে পারার লাইগা যেইরকমের ডাম্ব না, বরং শিমার হইতে হয়, সেইটা অনেক কঠিন কাজ তো!

কিন্তু ‘নরমাল’ হিসাবেই নিতে পারতেছি আমরা ঘটনাগুলারে যে, চোর ধরতেছি! আমার ধারণা, মিডিয়ার ‘জনসচেতনতা’ নামের জিনিসগুলা হেল্প করতেছে আমাদেরকে। সত্যি-মিথ্যার নামে একটা সিউডো-মোরালিটি দিয়া মানুশের দুরাবস্থারে ইগনোর করার রাস্তা ওপেন কইরা দিয়া। ভালোই মনেহয় এইটা। ভালো না?

#########

ল্যাঙ্গুয়েজ আর লিটারেচার

এইগুলা নিয়া তো অনেক কথাই আমি কইছি, পরেও আরো বলবো হয়তো। মানে, এইখানে তো অনেক কথাই বলার আছে আমার। তো, এখন একটা জিনিস নিয়া বলি।

এইখানে খুবই ভুল একটা জিনিস চালু আছে যে, কবি-সাহিত্যিকদের লেখা বা ভাষা যেন কোন ভাষারে বাঁচায়া রাখে বা রাখতেছে। কিন্তু ঘটনা বেশিরভাগ সময় উল্টাটাই ঘটে। একটা ভাষার ট্রাডিশন বরং কিছু কবি-সাহিত্যকদেরকে বাঁচায়া রাখে। দুনিয়াতে কোন ভাষায় লোকজন কথা কয় বা ইউজ করে বইলাই অই ভাষার সাহিত্য আমরা পাই। ল্যাটিন, সংস্কৃত বা আরো অনেক ভাষায় কেউ লেখে না, কারণ অই ভাষাগুলা ডেড। পড়ার বা শোনার কোন লোক তো নাই! তো, একটা ভাষার লোকজনই অই ভাষার রাইটারদেরকে বাঁচায়া রাখেন, উল্টাটা খুব কমই হয়।
কম রাইটারই ভাষার বেরিয়ারটারে পার হয়া গিয়া বা এর ভিতর দিয়া একটা ইউনিভার্সালিটিতে পৌঁছাইতে পারেন। ইভেন এইটা করতে হইলেও ভাষার জায়গাটাতে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ হয়া এইটা হয় না, বরং উনাদের ‘স্বতঃস্ফূর্তা’টা কোন না কোন কালচারাল পলিটিক্সের লগে এলাইন হইতে হয়। মানে, ঘটনাটা এতোটা ‘নিয়ত-নির্ভর’ জিনিস না, বা কিছু দূর পর্যন্ত লোকেট তো করতে পারি আমরা।

বাংলা-ভাষার ব্যাপারেই দেখেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আধুনিক বাংলা-ভাষা’ তৈরি করেন নাই, বরং কলোনিয়াল আমলে কলকাতার বাবু-সমাজের ভাষাটারে উনি লেখায় নিয়া আসছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র হিস্ট্রিক্যাল কারণেই সেইটা পারেন নাই। বঙ্কিমের লেখাপত্রে এইরকম জিনিস পাইবেন যে, যেই বাংলা-ভাষার ওকালতি উনি করতেছেন, সেই বাংলা’টা উনি লেখতে পারতেছেন না। কারণ লিখিত বাংলা-ভাষার শুরুই হইছে একটা ডিকশনারি-বেইজড জায়গা থিকা, উনি অই ‘শুদ্দ ভাষার’ কারিগর। সাহিত্য মানে হইতেছে শিক্ষিত-সমাজের একটা জিনিস – এই ধারণার বাইরে যাইতে পারাটা সহজ ছিল না উনার টাইমে। যার ফলে বঙ্কিমের বাংলা শাস্ত্র-সম্মত একটা জিনিসই হইতে চাইছে। রবীন্দ্রনাথ এইখানে কলকাতার বাবু-সমাজের এন্ট্রি দিছেন। এই কারণে কলকাতার কলোনিয়াল টাইমের রেফারেন্স ছাড়া এই বাংলা-ভাষা অচল।

ভাষা সবসময় একটা কালচারের রেফারেন্স। অই কালচারগুলা যখন সমাজ থিকা নাই হয়া যায়, ভাষাতেও বাতিল হইতে থাকে। লেখাগুলা ‘পুরান’ হইতে থাকে, রাইটার’রাও মারা যান। রবীন্দ্রনাথ যেই কালচারের চৌকিদার ছিলেন, অইটা এখন ‘আধুনিক’ তো না-ই, বরং বাংলা-ভাষার সবচে বড় বেরিয়ার, দুশমন। নয়া ব্রাহ্মণবাদের শেষ অজুহাত হইতেছেন রবীন্দ্রনাথ। উনার গল্প-কবিতা-গান ভালো কি খারাপ, এর চাইতে জরুরি আলাপ হইতেছে বাংলা-ভাষার বেইজ হিসাবে কলকাতার বাবু-সমাজের কালচাররে, এলিটপণারে টিকায়া রাখার রেফারেন্স পয়েন্ট হইতেছে উনার লিটারেচার।

পরমিত-বাংলায় লেখা যাবে-না না, অই কালচারাল বেইজটারে মাইনা নেয়া যাবে না। তাইলে নিজেদের কথা কইতে পারবো না আমরা। বারবার আটকায়া যাবো।

তো, এই কলোনিয়াল বাংলারে বানানো হইতেছে ‘নরমাল’। এর বাইরে গিয়া আপনে কবিতা লেখতে পারবেন, কারণ অইটা হইতেছে ‘কাব্য-ভাষা’ [মাই ফুট!]। বা নাটকের সংলাপে ‘আঞ্চলিক-ভাষা’ [আরেকটা বলদামি এইটা] ইউজ করতে পারবেন। কিন্তু সিরিয়াস-লেখা আপনারে কলকাতার বাবুদের মুখের বুলি’র মতো ‘বাংলা-ভাষায়’ লেখতে হবে!
Continue reading

কবিতা: ডিসেম্বর, ২০২২

পিংক ফ্লয়েড

আমরা
দুইটা ফিশ-বৌল

দুইটা আলাদা দুনিয়ায়
একটাই মাছের স্বপ্ন
দেখে যাইতেছি

সা রা জী ব ন

টাকার কবিতা

আমরা টাকা চিবায়া খাবো
অনেক অনেক টাকা থাকবে আমাদের কাছে
ব্যাংকে যদি টাকা না থাকে
নতুন কইরা ছাপায়া দিবে তো গর্ভমেন্ট

টাকা নাই মানে! টাকা ছাপানো কোন ঘটনা নাকি!

টাকা দিয়া ফুলকপি, টমেটো বানাবো আমরা
টাকা দিয়া বাজারে বাজারে ডিসপ্লে কইরা রাখবো
ডিম, মাছ, মুর্গি আর গরুর মাংস
পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ, তেল
আর যা যা কিছু লাগে আমাদের

টাকা দিয়া বানানো ব্যাগে
টাকা-ভর্তি কইরা টাকার জিনিসপত্র নিয়া আসবো!

আর কতো টাকা লাগবে দেশের মানুশের!
এতো এতো টাকা ছড়ানো সারাদেশে
মানুশ টাকা চিবায়া খাইতেছে না কেনো, এখনো!

খালি টাকা আর টাকা আর টাকা দিয়াই তো দুনিয়া ভরা!

এরপরেও গরিব, ছোটলোকগুলা নাকি টাকাঅলা হইতে পারতেছে না!
এরা কোনদিনও বড়লোক হইতে পারবে না!

আমাদের মতো টাকা চিবায়া খাইতে পারে না এরা
খালি ভাত খাইতে চায়, ভোট দিতে চায়

টাকার মূল্য বুঝে না!
আরে, টাকা থাকলেই তো হয়!

অনেক অনেক টাকা ছাপাইতেছি আমরা
এখন থিকা ভাতের বদলে টাকা খাবা তোমরা

এতোদিন উন্নয়ন খাইছো, এখন টাকা খাও,
বাংলাদেশের মূর্খ, অশিক্ষিত জনগণ! Continue reading