নোটস: সেপ্টেম্বর, ২০২১ [পার্ট ১]

সেপ্টেম্বর ১, ২০২১

আপনি কোন পক্ষ নিবেন, কার বিপক্ষে থাকবেন – এইগুলা ডিসাইড করা খুব কঠিন কোন জিনিস না; সবাই কম-বেশি ঠিক ডিসিশানই নিতে পারেন বইলা আমি মনে করি। কিন্তু মুশকিল হইতেছে, ‘ঠিক পক্ষ’ নিলেও দেখবেন তেমন কিছু যায়-আসে না। কারণ কাজ হইতেছে, অ্যাপ্রোপিয়েট ক্যাটাগরি ঠিক করা বা আসল প্রশ্নের জায়গাটাতে আসতে পারাটা। এইটাই বেশিরভাগ মানুশ মিস করেন বা ভাবতে চান না আসলে।…

একটা ভুল বা ইনসাফিশিয়েন্ট প্রশ্ন বা ক্যাটাগরির পক্ষে থাকেন আর বিপক্ষে থাকেন, দুইটাই সমান বাজে ঘটনা। কারণ সেইটা কোর ইস্যুটারেই এড্রেস করতে পারে না এবং এইভাবে প্রশ্ন না করার ভিতর দিয়া, এড়ায়া যাওয়ার ভিতর দিয়া জুলুমের জায়গাটারে সাসটেইন করতে একভাবে হেল্পই করে।

এই জায়গাগুলাও ধীরে ধীরে একটা সময়ে স্পষ্ট হইতে শুরু করে। যেমন ধরেন, যখন জামাত-শিবির মারা হইতেছিল, তখন অনেকেই ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলছিল; ২% লোক টিকা দিয়াও ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলছিল; পুলিশ কাস্টডিতে মুশতাক আহমেদের খুনের পরে সাংবাদিক রোজিনা আক্তারের জামিনের পরেও অনেকে কষ্ট কইরা হইলেও ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলতে পারছিল; কিন্তু এখন পরীমনির জামিনের পরে ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বললে নিজেদের কাছেই উইয়ার্ড লাগার কথা!

কারণ এইটা কোনদিনই ‘থ্যাংকিউ পিএম’র কাজ ছিল না। বরং এইখানে কোন সিস্টেম যে ফাংশন করে না, এবং মিনিমাম কোন বিচার-ব্যবস্থা যে নাই – এই জায়গাটারে আন-কোশ্চেনড রাখা হইছে, হইতেছে দিনের পরে দিন, বছরের পর বছর। আর এই জিনিসটারে এড্রেস না করতে পারা, লুকায়া রাখাটা কোনদিনই সমস্যাটার সমাধান করতে পারে নাই, কোনদিন করতে পারবেও না!

তো, পক্ষ-বিপক্ষ নিয়া ‘তর্ক’ কইরেন না! এইটা মোটামুটি অদরকারি জিনিস। আসল প্রশ্নটা করেন! ঠিক ক্যাটাগরি’টারে ভিজিবল করেন! উত্তর আপনা-আপনি চইলা আসবে আপনার সামনে। প্রশ্ন ঠিক না হইলে, কোন উত্তরই সঠিক হবে না।

#########

ড্রাগস হইতেছে আসলে পুলিশের বিজনেস।

বাংলাদেশে যদি বলা হয়, ইচ্ছমতো কেউ ড্রাগস ইউজ করতে পারবেন, এইটা কোন ক্রাইম না; তাইলে লাখ লাখ লোক ড্রাগস নিতে শুরু করবে না; বরং ‘মাদক’ মামলায় হাজার হাজার লোকরে গ্রেফতার কইরা পুলিশের টাকা-খাওয়া বন্ধ হয়া যাবে। (ড্রাগস বিজনেসের কমিশনের কথা বাদ-ই দেন! মেইন কস্টিং তো আসলে অইটাই।)

ড্রাগ-এডিক্ট লোকের সংখ্যা সিগনিফিকেন্টলি বাড়বেও না, কমবেও না। যেহেতু ‘ভাব’ দেখানো যাবে না এবং কম-দামি জিনিস হয়া উঠবে, বিপ্লবী-ক্রেইজ হিসাবে এর সেক্স-অ্যাপিল বরং কমারই কথা কিছুটা, তখন।…

মাইকেল মুর উনার ডকুমেন্টারিতে (হোয়ার টু ইনভেড নেকস্ট) দেখাইতেছিলেন, আম্রিকাতে ড্রাগস হইতেছে ব্ল্যাক-অপ্রেশনের একটা মেজর উইপেন। পর্তুগালে ড্রাগস নিলে কোন পুলিশ আপনারে গ্রেফতার করবে না; ড্রাগস নেয়ার জন্য চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই করলে সেইটা ভিন্ন ঘটনা।…

মানে, এই জিনিসটা খেয়াল করাটা দরকার যে, কোনকিছুরে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করার ভিতর দিয়া, সেইটারে বন্ধ করা বা কন্ট্রোল করা হইতেছে না, বরং একটা অপ্রেশনের টুল বা জুলুমের একটা হাতিয়ার হিসাবেই ইউজ করা হইতেছে বেশিরভাগ সময়।
ড্রাগস বা মাদক, এইরকমের একটা ঘটনা, বাংলাদেশে এখন।

#########

– সুলতানা’স ড্রিম ২ –

অফিসের পাশে কোজি একটা কনফেকশনারি আছে, মাঝে-মধ্যে স্ন্যাকস খাইতে যাই; ছোট্ট একটা দোকান, দুইজন মোটামুটি বসা যায়, এইরকম অ্যারেঞ্জমেন্ট আছে। আজকে বিকালে কিছু জিনিস কিনতে গেছিলাম। আগে থিকা দুইজন ফিমেইল অফিস-কলিগ বইসা স্যান্ডউইচ খাইতেছিলেন। উনাদের কথা একটু ওভার-হিয়ার করা লাগলো। উনারা ইকনোমিক ড্রিম ফুলফিলের জায়গা নিয়া মোটামুটি একসাইটেড; একজন বলতেছিলেন, কোন গাড়ি কিনবেন, জামাই তো জিপ কিনতে চায়, উনি বলছেন সেডান-ই ভালো, পার্টস এভেইলেবল সবসময়। এইরকম। কিন্তু আমি আসাতে মনেহয় আলাপ একটু সংক্ষিপ্ত করা লাগলো। (মানে, নাও হইতে পারে, আমার জাস্ট মনে হইলো আর কি!) খাওয়াও শেষ যেহেতু, বিল-টিল দিয়া চইলা গেলেন।

সপ্তাহখানেক আগেও কাছাকাছি রকমের একটা ঘটনার কথা মনে হইলো। অফিস শেষে আমরা ১০/১২জন একটা রেস্টুরেন্টে বসছিলাম, সবাই বেটা-মানুশ। তখন অইখানে দুইজন নারী আসলেন, একজনরে চিনি আমি, আমার পরিচিত একজনের ওয়াইফ, আমার চে বড় পোস্টে চাকরি করেন। রেস্টুরেন্টে ঢুকতে ঢুকতেই মোবাইল ফোনে কথা বলতেছিলেন, তোমার একঘন্টার মধ্যে শেষ হবে তো? আমি …’রে নিয়া বসতেছি তাইলে…। কিন্তু ৪/৫ মিনিট পরে উইঠা চইলা গেলেন উনারা। হয়তো মেনু পছন্দ হয় নাই। কিন্তু আমরা এমনকিছু করি নাই যে, উনারা ডিস্টার্বড ফিল করবেন; কিন্তু অস্বস্তি লাগার কথা মেবি।

তখন আমার পুরান আইডিয়াটার কথা মনে হইলো। 🙂 কয়েকজনরে বলছি আমি এইটা।

যে, একটা ক্যাফে চালু করতে পারেন কেউ “সুলতানা’স ড্রিম” নামে। খালি ফিমেইলস আর এলাউড। দোকানের সবাইও নারী থাকবেন – বার্বুচি, ওয়েটার, ক্যাশিয়ার। চাইলে কেউ বেটামানুশ নিয়া আসতে পারেন, কিন্তু সাথে কোন ফিমেইল না থাকলে ঢুকতে পারবেন না। এইরকম। এখন লিগ্যালি তো ‘না’ করা যাবে না। এনভায়রনমেন্ট’টা ক্রিয়েট করতে হবে আর কি যেইখানে গেলে মনে হবে, আরে এইটা তো ‘নারীস্থান’! আমার ধারণা, বিজনেস হিসাবেও প্রফিটেবল হওয়ার কথা। যেই দুইটা ঘটনার কথা বললাম, উনারা মোর কমর্ফোটেবলি বসতে পারতেন এইরকম জায়গা থাকলে, আড্ডা দিতে পারতেন।

কিন্তু আমার ধারণা, এর একটা সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট তৈরি হইতে পারার কথা, এর ভিতর দিয়া। এমন না যে, ৮/১০টা সুলতানা’স ড্রিম চালু হইলে সব নারী’রা অইখানে চইলা আসবেন, আর অন্য কোথাও যাবেন না, বা কমন-স্পেইসটারে ছাইড়া দিবেন বেটা-মানুশদের দখলে। বরং উল্টাটা হবে বইলা আমার মনেহয়। এইরকম দুয়েক্টা স্পেইসে মেয়েরা ফ্রিলি বসতে শুরু করলে, উনাদের এই ফ্রিডমটারে উনারা কমন-স্পেসগুলাতেও এক্সারসাইজ করতে পারবেন।

তার চে বড় ইমপ্যাক্ট হইতে পারে যে, অইটার এফেক্ট হিসাবে কমন-স্পেইসগুলাতে ফিমেইল প্রেজেন্সটারে ‘নরমাল’ হিসাবে দেখতে পারবে সবাই। যে, কমন-স্পেইসগুলাতে যদি অই এনভায়রনমেন্টটা না থাকলে ফিমেইল কাস্টমাররা আসতে রাজি থাকবে না তখন! আর এইটা নরমাল রেস্টুরেন্টে ‘কেবিন’ বসায়া কাউন্টার দেয়া যাবে না আসলে। অই ‘প্রাইভেসি’র বেইল নাই আর! অইটা যে কমন-স্পেইস থিকা বরং সরায়া দেয়া সেইটা টের পাওয়া যায় বইলাই অইটা আর নাই।… কিন্তু এইখানে ঘটনাটা বরং একটা কাউন্টার কমন-স্পেইস তৈরি হওয়ার কথা, সুলতানা’স ড্রিমে।

এর বাইরে, স্মোকারদের জন্য তো অইটা হ্যাভেন হবে বইলা আমার ধারণা। ডেটিং-প্লেইস হয়া উঠলে, বুজিং-প্লেইস উঠলে একটু বিপদ হইতে পারে। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা বিজনেস প্লেইস হিসাবে অ্যামেজিং একটা ব্যাপার হইতে পারে। মানে, যদি সোশ্যাল কনসার্নগুলারে মাথায় রাইখা ব্যাপারটা চালু করা যায়। এমনকি আমার ধারণা, অন্য শহরগুলাতেও ‘সুলতানা’স ড্রিম’ বইলা জায়গা তৈরি হইতে পারে! যেইটা কমন-স্পেইসগুলা, যেইখানে এনাফ ‘ফিমেইল-ফ্রেন্ডলি’ এনভায়রনমেন্ট নাই, সেইগুলারে কনভার্ট করতে একরকমের অল্টারনেটিভ হিসাবে কাজ করতে পারবে।…

জাস্ট আইডিয়া হিসাবেই বইলা রাখা। আইডিয়া টু ইমপ্লিমেন্টশন তো বড় একটা জার্নিই। তারপরও ব্যাপারটা আমার মনে হইছে, ট্রাই করতে পারেন কেউ। কিন্তু কোর অবজেক্টিভ হিসাবে বিজনেস হইতে হবে, প্রফিট থাকতে হবে; ‘এনজিও’ বা ‘সোশ্যাল-ওয়ার্ক’ হইলেই জিনিসটা আর হবে না!

Continue reading

নোটস: অগাস্ট, ২০২১ [পার্ট ৩]

অগাস্ট ২১, ২০২১

ট্রুথ এন্ড ফ্রিডম

একটা সত্য বা ঘটনা, আপনি কতোটা বলতে পারতেছেন বা পারতেছেন-না, বুঝতে পারতেছেন বা পারতেছেন-না, সেইটার উপরে ডিপেন্ড কইরা কখনোই ঘটে না বা রিভিল হয় না।

কিন্তু ফ্রিডম একই জিনিস না। আপনি যতক্ষণ না বলতে পারতেছেন, অ্যাক্ট হিসাবে প্রাকটিস করতে পারতেছেন, ততক্ষণ সেইটা ফ্রিডম না।

 

অগাস্ট ২২, ২০২১

“হোয়ার টু ইনভেড নেকস্ট”

তিউনিশিয়ার কাহিনি’টা ভাল্লাগছে। (“হোয়ার টু ইনভেড নেকস্ট” ডকুমেন্টারি’টাতে।) একটা মুসলিম দেশ, আফ্রিকার। এবরশন লিগ্যাল অই দেশে। আরো অনেক উইমেন-ফ্রেন্ডলি আইন-কানুন আছে। তো, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরে পিপলের ভোটে যখন একটা ‘ইসলামি দল’ রাষ্ট্র-ক্ষমতায় আসলো, তখন দলের মুফতিদের লগে লিডারদের মত-বিরোধ দেখা দিল। মেয়েরা তো আন্দোলন শুরু করলো যে, ‘সমান অধিকার’ দিতে হবে। এইদিকে দলের লিডার’রাও কনভিন্স করতে পারতেছিল না নিজেদেরকে মুফতিদেরকে; তখন কইলো, ঠিকাছে আমরা তাইলে পদত্যাগ করি! কারণ আমরা তো পিপলের ভোটে ক্ষমতায় আসছি, এখন পিপলের দাবি-দাওয়া যদি মানতে না পারি, আমাদের তো ক্ষমতায় থাকা ঠিক না!

তো, সোশ্যাল অবস্থা যা-ই থাক, রাষ্ট্রীয়ভাবে এবরশন অই দেশে ক্রাইম না, হিজাব পরাও মেন্ডেটরি না। তিউনিসিয়ার যিনি রাষ্ট্র-প্রধান (২০১৪/১৫ সালে), উনি বলতেছিলেন, মানুশ তার নিজের ঘরের ভিতরে কি করবে – রাষ্ট্র তো সেই ব্যাপারে কথা বলতে পারে না। রাষ্ট্র হইতেছে পাবলিক ম্যাটারগুলা নিয়া ডিল করবে।… মানে, এইগুলা ওয়েস্টার্ন ডেমোক্রিসির ঘটনা না, বেসিক ডেমোক্রেটিক নর্মস।

আজকে সেক্যুলার বাটপারিগুলা যখন আমাদের সামনে এক্সপোজড হয়া যাইতেছে, আমরা ডরাইতেছি যে, খুব রিজিড ‘ইসলামি শাসন’ কায়েম হয়া যাইতে পারে বাংলাদেশে; কিন্তু এইটা আমার কাছে প্রব্লেমেটিক মনেহয় না, বরং এই নয়া বাকশালি আমলে পিপলস এজেন্সিগুলা যে পুরাপুরি ধ্বংস করা হইছে, সেইগুলা যেন কখনোই ফোর্স হিসাবে সমাজে এক্টিভ থাকতে পারবে না – সমস্যা হইতেছে এই চিন্তাটা। যদি পিপলের কথা-বলার, কাজ-করার স্পেইস না থাকলে তাইলে সেইটা সেক্যুলার নাকি ইসলামি নাকি কমিউনিস্ট সরকার – সেইটা দিয়া কিছু যায় আসে না, সবকিছু একইরকমের বাজে শাসন হওয়ার কথা।

২.
আরেকটা ইন্টারেস্টিং উদাহারণ হইতেছে, আইসল্যান্ড। দেখানো হইছে, উইমেন-এমপাওয়ারমেন্ট হইতেছে অইখানে হায়েস্ট লেভেলে আছে। আছে দুয়েক্টা আইনের কারণেই। যে, কোন কোম্পানিতে এটলিস্ট ৪০% নারী বা পুরুষ থাকতে হবে! খুবই অ্যামেজিং একটা জিনিস মনে হইছে এইটা। (বাংলাদেশে দেখেন, সরকারি চাকরিতেই কোটা-সিস্টেম বাতিল করা হইছে, বেসরকারি অফিসগুলাতে তো কোন নিয়মই নাই, এইসবের।)

এখন আইন কইরাই এইগুলা এস্টাবলিশড করা যায় না সবসময় (যেমন বাংলাদেশে উত্তরাধিকার আইনে বইনদেরকে এখনো বাপ-মায়ের সম্পত্তির ভাগ দেয়া হয় না, সোশ্যালি ‘লোভী’ ঘটনাও; আমার ধারণা, ‘যৌতুক’ জিনিসটাও টিইকা আছে, এই জায়গা থিকাই), কিন্তু আইন না থাকলে সোশ্যাল বিহেভিয়ারগুলারে ড্রাইভ করাটা মুশকিল হওয়ার কথা। পর্তুগালে যেমন, ড্রাগস নেয়া বা ড্রাগস রাখা ক্রাইম না কোন, বরং এরে ক্রাইম না-ভাবার ভিতর দিয়া ড্রাগস নেয়ার যে সেক্সিনেস, বিপ্লবী-পণা তারে খারিজ কইরা দেয়া হইছে। (আর বাংলাদেশে, ড্রাগস তো কাজে লাগে বিরোধীদলের লোকজনরে ক্রসফায়ারে দেয়ার লাইগা, বা কারো পকেটে ইয়াবা ঢুকায়া মামলা দেয়ার লাইগা।…) Continue reading

নোটস: অগাস্ট, ২০২১ [পার্ট ২]

অগাস্ট ১২, ২০২১

খারাপ-কাজ, পাপ এবং অন্যায়

ধরেন কেউ একজন রিকশার ড্রাইভাররে, সিএনজি’র ড্রাইভাররে বা রাস্তার পাশের কোন দোকানদাররে গালি-গালাজ করলো, তার লোয়ার সোশ্যাল-ক্লাসের ফায়দা নিয়া নিজের রাগ তার উপরে ঝাড়লো। এইটা খারাপ কাজ। কিন্তু একস্ট্রিম পর্যায়ে না গেলে দুইজন মানুশের ঘটনাই। মাফ চাইলে বা সরি বললে অনেক সময় ঘটনার শেষও হয়া যায়।

আবার ধরেন, কেউ একটা ম্যারিটাল রিলেশন বা কমিটেড রিলেশনের মধ্যে থাইকা তারে না জানায়া অন্য মানুশদের সাথে সেক্সুয়াল রিলেশনে জড়াইলো এবং কন্টিনিউয়াসলি করতে থাকলো; এইটা খালি ‘খারাপ কাজ’ না, একটা ক্রাইম না হইলেও ‘পাপ’ বা ‘অনৈতিক’ ঘটনা। ইভেন, পরে জানাইলেও জিনিসটা একইরকম না। পলিগ্যামাস রিলেশনেও, আমার ধারণা, না-জানানোটা এথিক্সের বাইরের ঘটনাই, বা এইরকম আন-ইথিক্যাল কিছু জায়গা আছে নাস্তিকতাতেও, যারে ‘পাপ’ না কইলেও ‘অনৈতিক’ বলা যায়। মানে, নৈতিকতার কোডগুলা আলাদা হইতে পারে, কিন্তু নৈতিক বইলা কিছু নাই – এইটা ঠিক না। এইটা খালি ‘খারাপ কাজ’ না, কারণ এইটা দুইজন মানুশরেই ঘটনা না, এইখানে অন্য আরো মানুশ-জনও এফেক্টেড হয়। রাষ্ট্রীয় আইনে এর কোন শাস্তি না হইলেও, সমাজে মোটামুটি নিন্দার জিনিস।

কিন্তু ধরেন, সেই গোপন রিলেশনের মেজেস, অডিও, ভিডিও ফাঁস করার থ্রেট দিয়া কেউ হয়রানি করতে থাকলো, টাকা-পয়সা চাইতে থাকলো এবং নিতে থাকলো। এইটা আর ‘পাপ’ হিসাবে থাকে না তখন। এইটা হয়া উঠে ক্রাইম। কারণ, এইরকম কাজবাজ যদি বন্ধ করা না যায়, তখন অনেক মানুশই সাফার করবে। কিন্তু বাংলাদেশে যেইখানে সরকারিভাবে অর্গানাইজড ক্রাইম চলে, সেইখানে মনে হইতে পারে এইটা তো কিছুই না! একটা সমাজ, একটা রাষ্ট্র যখন অ্যাজ অ্যা হোল, ক্রিমিনালিটিরে গ্লোরিফাই করতে থাকে, ক্ষমতার একটা গর্ব হিসাবে শো করতে থাকে, তখন এইসব ছোট-খাট ক্রাইমরে জাস্টিফাইড মনে হওয়াটা নরমাল।

কিন্তু এই তিনটা জিনিসরে ব্লার কইরা ফেললে, মিশায়া ফেললে ‘বিচার’ এর জায়গাটা মুশকিল হবে। এইরকম আরো অনেক উদাহারণ অবশ্যই আছে। আমার ধারণা, যখন কেউ খারাপ-কাজগুলা করতে করতে অভ্যস্থ হয়া পড়েন, পাপের জায়গাতে পা দেয়া সহজ হয় তার জন্য; আর যখন কেউ পাপের জায়গাটাতে ডুইবা যান, ক্রাইমের সেন্সটারে গুলায়া ফেলেন, বা নিজের পজিশনরে অই পাপের জায়গা থিকা বুঝায়া ফেলতে পারেন, যার ফলে সহজ হয়, ক্রাইম করাটা।

সমাজে খারাপ-কাজ যেমন আছে, পাপের ঘটনা যেমন আছে, ক্রাইমও থাকবেই। বরং জায়গাগুলারে আমরা যতোটা স্পষ্ট এবং কনশাস করতে পারবো, তত বেটার; ব্যক্তির জায়গাটাতে।

২.
এখন আসেন, সমাজের জায়গাটাতে। যেইটা একটু বলতেছিলামও উপরে। একটা সমাজে এবং রাষ্ট্রে ক্রাইমগুলা যখন নরমালাইজ হইতে থাকে; ‘পাপ’ বা ‘অনৈতিক কাজ’ তখন প্রকাশ্য হইতে পারার একটা ভ্যালিডিটি পায় এবং খারাপ-কাজ করাটাই নর্মস হয়া উঠতে থাকে।
একটা উদাহারণ শেয়ার করতে পারি, কয়েকবছর আগে খেয়াল করছিলাম; ঢাকা শহরে অপরিচিত কারো সাথে একটু এগ্রেসিভ টোনে কথা-বলাটা হইতেছে নরমাল; তা নাইলে অপরপক্ষ ভাবতে পারে যে, আপনি মনেহয় কোন ফেভার চাইতেছেন বা সাবমিশন করতেছেন। লো-ভয়েস, কমপ্যাশনেট বিহেভ… এইগুলা মোটামুটি ‘ভীতিকর’ ব্যাপারই। এইরকম অভিযোগও শুনবেন, ভালো কইরা কথা বলতেছি বইলা কি দোষ করছি নাকি! মানে, এইরকমের একটা ব্যাপার খুব বেশি ভিজিবল না হইলেও একটা মেন্টাল স্ট্যাটাস হিসাবে আছে, বা থাকতে পারে।
তবে, সবচে বাজে যেই জিনিসটা হয় একটা বড় বড় ক্রাইম দিয়া ছোট ক্রাইমগুলারে জাস্টিফাই করার একটা স্পেইস তৈরি হয়। যে, রেইপেরই বিচার হয় না, উনি আসছে ম্যারিটাল রেইপ নিয়া কথা কইতে! এইরকম। 🙁

আর ‘পাপ’ বা ‘অনৈতিক’ বইলা যেই ব্যাপারগুলা, অইগুলাও চেইঞ্জ হয় তো! এমনকি অনেকসময় ভুলভাবেও আইডেন্টিফাইড হয়। স্পেশালি সমাজের মজুলম ক্লাস – গরিব এবং মেয়েদের ব্যাপারে। (মেয়েরা তো গরিব বইলাই অপ্রেসড আসলে। সমাজের কত % সম্পত্তির মালিক মেয়েরা? ৫% বেশি হওয়ার কথা না।…)

হিন্দু-সমাজে ‘অচ্ছুত’ যেইরকম, বাংলাদেশে গরিব’রা এইরকম সোশ্যালি আউটকাস্ট; দেখবেন, বাসার কাজের বুয়া এবং মালিক একই ধরণের প্লেট, কাপে খাবে না; বয়সে ছোট কেউও ইকনোমিক ক্লাসের কারণে তার চাইতে গরিব কারো সাথে খারাপ-বিহেভ করার ‘অধিকার’ রাখে। এইটা খুবই ডিপ-রুটেড একটা জিনিস। নারীদের বেলায় যেইরকম ভিজিবল যে, একটা সময় ‘নারী-শিক্ষা’ ছিল হারাম! গরিবদের জন্য হারাম না, কিন্তু কি দরকার অদের! এইরকম।

এইরকম ‘ট্রেডিশন’র জায়গা থিকা, এস্টাবলিশড ক্রাইমের জায়গা থিকা ‘পাপ’ ও ‘খারাপ কাজ’র জায়গাগুলা আইডেন্টিফাইড হয়, নরমালাইজ হয়।

আমি বলতে চাইতেছি, খারাপ-কাজ, পাপ আর অন্যায় একই জিনিস না এবং ব্যক্তির এই কাজগুলা সমাজের ভিজিবল বাস্তবতার সাথে রিলেটড ঘটনা, সবসময়।

৩.
এইটা পড়ার সময় পরীমনি’র কনটেক্সট’টারে মিলায়া ফেললে ভুল হবে। উনার সাথে যা করা হইছে, সেইটা উইথ-আউট এনি ডাউট একটা রাষ্ট্রীয় ক্রাইম। আপনি যত বড় সেলিব্রেটিই হন, যতই ‘আম্মা’ ডাকেন, এই জুলুমবাজ সরকারের ও তাদের সহযোগীদের কাছে মাথা নোয়াইয়া চলতে হবে – এইরকম ‘দৃষ্টান্ত’ তৈরি করার একটা ঘটনা। এর বাইরে অন্য কোনভাবে দেখতে চাওয়াটা হইতেছে মোস্টলি ইন্টেলেকচুয়াল বদমাইশি একটা।

অগাস্ট ১৩, ২০২১

বইপড়া

মানুশ যে কতো অদ্ভুত জায়গা থিকা সান্ত্বনা পাইতে পারে। আমি কয়দিন আগে সান্ত্বনা পাইলাম, টি. এস. এলিয়টের কথা পইড়া।

এইরকম ডিলেমা তো আছে, “বই পড়া দরকার” ভার্সেস “বই পইড়া কি সব জানা যাবে নাকি!” টাইপ। তো, অই জায়গাতে এলিয়ট শেক্সপিয়রের কথা কইতেছিলেন, শেক্সপিয়র এক প্লুটার্ক পইড়া যতটা জানতে পারসিলেন, অন্য কেউ পুরা ব্রিটিশ মিউজিয়াম পইড়াও সেইটা জানতে পারতো না। মানে, এই জায়গাটাতে আমিও বিশ্বাস করি, একটা জিনিস যদি আপনি ঠিকমতো পড়তে পারেন, সেইটা থিকা যা জানতে পারবেন, অই একটা লার্নিং দিয়াই অনেককিছু এক্সপ্লোর করা যায় আসলে।

“অনেক কিছু পড়তে হবে” – এইটা জরুরি জিনিস মনেহয় না আমার কাছে, বরং যেই জিনিসই পড়া হোক, সেইটারে নিতে পারার, (মানতে পারা বা না-পারার না, বা কাজে-পরিণত-করারও না, বরং বলা যায়) একরকম transcend করার একটা ব্যাপার থাকে, একজন ক্রিয়েটিভ/ইন্টেলেকচুয়াল পারসনের জন্য, অইটা ইম্পর্টেন্ট।
Continue reading

নোটস: অগাস্ট, ২০২১ [পার্ট ১]

অগাস্ট ০১, ২০২১

কোন রিস্ক ছাড়া কোন সত্যি কথা বলা কোনদিনই কি সম্ভব?

এমন না যে, রিস্কি কথা-বার্তা মানেই ‘সত্যি কথা’; বরং যখন আপনি কোন না কোন সত্যি কথা বলবেন, দেখবেন সেইটা অনেকের জন্য ভালো হইলেও, এইটা কোথাও না কোথাও কারো না কারো ক্ষতি করতেছে; তখন সেইটা রিস্কি হয়া উঠে। কে যে আপনার দুশমন হয়া উঠতেছে, আপনি নিজেও জানবেন না।

সত্যের যেহেতু নিজের একটা ক্ষমতা আছে, সত্য ক্ষমতার জন্য সবসময়ই রিস্কি। অবৈধ ক্ষমতার জন্য তো আরো বেশি।

কিন্তু যখন অনেক মানুশ সত্যি কথাগুলা একসাথে বলার সাহসটা করতে পারবে, বলতে শুরু করবে, এই রিস্কটা কমতে থাকবে; আর সত্য-কথা বলার জিনিসটা একটা ‘সামাজিক অভ্যাস’ হিসাবে তৈরি হইতে পারবে। এই বলতে-পারা এবং বলতে-না-পারার স্ট্রাগলটা যে কোন সমাজে কম-বেশি সবসময়ই আছে। আর আমাদেরকেও সবসময় চেষ্টা করতে হবে, সত্য যেন সহজে অ্যাপিয়ারড হইতে, সেই সমাজ তৈরি করার জন্যে। আর যত মিনিমাম লেভেলেই হোক, সত্য বলার ভিতর দিয়াই এই কাজটা করতে হবে, আমাদেরকে।

#########

জ্ঞানের, বা আর্টের বা যে কোন ডিসিপ্লিনের চিন্তার কোন অথরিটি কি নাই? আমার কথা হইতেছে, আছে। যে কোন বিষয়েই আমার চাইতে কম-জানা লোক যেমন আছেন, বেশি-জানা লোকও আছেন। জ্ঞানের বা চিন্তার বা আর্টের ভিতরে যত ডুববেন, তত টের পাইবেন এই জিনিসগুলা।

কিন্তু মুশকিল হইলো, সেইটা সামাজিক অথরিটির জায়গাগুলার সাথে গুলায়া ফেললে টের পাওয়া যাবে না এতোটা। এই অথরিটির মধ্যে অনেক বই-পড়া লোক আছেন, ভার্সিটির টিচার আছেন (রমিলা থাপার যেমন, আর্লি এইজ ইন্ডিয়ান হিস্ট্রির একজন অথরিটি); কিন্তু কেউ বই পড়ছেন বইলাই, ভার্সিটির টিচার বইলাই অথরিটি না (টি.এস. এলিয়ট যেমন মর্ডান পোয়েট্রির একজন অথরিটি, এইরকম আরো আছেন, বা থাকার কথা)।

[যেমন হুমায়ূন আজাদের চাইতে আহমদ ছফা বাংলা-সাহিত্যের বড় অথরিটি ছিলেন (আমার ধারণা), একটা সময়। এখন এই অথরিটি ভালো না খারাপ, বা কেমনে তৈরি হয় এবং বাতিল হয়, এইগুলা পরের আলাপ আসলে।…]

এই জায়গাটা রিকগনাইজ করতে পারাটা সবসময় দরকারি। তা নাইলে আমরা নতুন চিন্তা না পাইয়া, সবসময় চিন্তার নতুন নতুন অথরিটি পাইতে থাকবো। যেইটা সবসময়ই বাজে ব্যাপার একটা।
Continue reading

কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০২২

ভাষা ও কনটেক্সট

বিস্টির ফোঁটাও
জমিনে
একটু তেরছা হয়া পড়ে

 

এক্সপেরিয়েন্স

তামার তার হওয়ার পরে
লোকটা বলতেছে তার নিচের দিকে তাকায়া

হে বাল, তুমি পাইকো না আর!


কনটেক্সট অফ ফ্রিডম

আমরা কথা বলতেছি,
কিন্তু কেউ কারো কথা শুনতেছি না

কারণ কথাগুলারে ট্রান্সমিট করার লাইগা
এইখানে কোন বাতাস নাই


রইদের দিন

আমি হইতেছি রইদের দিনে
রাস্তায় শুইয়া থাকা কুত্তাটা

তুমি আমার মাথার নিচের পাত্থরটা


বাবল-লাইফ

বড় একটা বাবলের ভিতর বইসা
ছোট ছোট বাবল ফাটাই

মনেহয়, “এই জীবন তো মিছে নয়”…

Continue reading