নোটস: ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

০৪.০২.২০২৪

রোগ যত লুকায়া রাখা হয়, ডেমেজ তত বেশি হয়; এখনকার ইকনোমিক ক্রাইসিস ফলস-ডেটা দিয়া যত কাভার-আপ করার ট্রাই করা হবে, অবসথা তত খারাপ হবে আসলে

০৫.০২.২০২৪

আপনি পক্ষে আছেন না বিপক্ষে আছেন, সেইটা তেমন কোন ঘটনা না; বরং কোন ঘটনা নিয়া কিভাবে কনসার্নড হইতেছেন, ডিল করতেছেন, সেইটা ঠিক কইরা দেয় আপনার পজিশন’টা

ভাষা এমনিতেই বাঁকা, তারে আর বাঁকানোর দরকার নাই কবিতাতে, বরং নানান লেয়ার তৈরি করার নামে সিউডো-গভিরতা অনেক হইছে, cliche’র লেভেলও পার হয়া গেছে আসলে; ‘অনেক কথা বইলা কিছুই না-বলা’ জিনিসটা অনেকটা বাকশালি-নিউজগুলার মতো ‘মিনিংলেস’-ই না খালি, পলিটিকালি ill-motivated একটা ঘটনা; এমন একটা কালচারাল কারখানা, যা মানুশের কথা-বলার জায়গাগুলারে নিরবতার ভিতর ঠেইলা দেয়ার দিকে আগায়া দিত আগে, কিনতু এখন চুপ করায়া রাখতে চায় – এইরকম ইভিল জায়গাতে গিয়া রিচ করছে।

অনেক সময়, বাইরে থিকা মনে হইতে পারে, দুনিয়া মালটি-লেয়ারড, কিনতু ইন ইটস কোর এইখানে শাদা আর কালা’র জায়গাটা আছে, যেইখান থিকা কালারগুলা তৈরি হইতেছে; অইখানের পজিশনটা না নিতে পারাটা পলিটিকাল ইন-এবিলিটি না, পোয়েটিক ইন-জাসটিসের ঘটনা; অইটাতে না পৌঁছায়া কবিতা লেখা যায় না; মানে, এইখানে একজন কবি’র কথা-ই বলতে চাইতেছি আমি, ভাষা ও আইডিয়া নিয়া টেকনিকালি-স্কিলড কিছু লোকের কথা না…

এইখানে আমি টি.এস.এলিয়ট ভারসেস পাবলো নেরুদা’র ঘটনারে রেফার করতেছি না, যেইখানে ট্রেডিশন থিকা সরতে পারাটারে পিপল থিকা ডিটাচড হইতে পারা হিসাবে দেখা হইছিল, বা পিপলের সাথে এনগেইজমেনটের জায়গাটারে মবের কাছে সাবমিট করা হিসাবে দেখা হইছিল; অই ‘তর্ক’ পার হয়া আসছি আমরা; বা লোরকা যেই ‘দুয়েন্দে’র কথা কইতেছিলেন, সেইটা আর ম্যাজিক না কোন, একটা এসকেইপের জায়গা-ই; মানে, অই বেইজ থিকা কবিতারে দেখতে যায়-না না, অই দেখাটা অনেককিছুরে মিস কইরা যায়, যা আর রিলিভেনট রাখতে পারে না নিজেরে; কবিতারে জাসট একটা টুল বানায়া রাখে…

অই জায়গাগুলারে মার্ক না কইরা, দেইখাও না-দেখার ভান কইরা থাকতে পারাটা, একনোলেজ না-করাটা এভারেজ ভালো-কবিতা লেখা কনটিনিউ করতে থাকাটা ভাড়া-খাটা ইনটেলেকচুয়ালদেরই জাসট একটা একসটেনডেড উইং, এর বেশি কিছু না।

এই বইলা ‘সিরিয়াস-কবিতা’ বাদ দিয়া ‘পপুলার-কবিতা’ লেখতে থাকবো আমরা – এইটা জাসট একটা টিটকারি মাইরা কনফ্লিকটের জায়গাটারে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই একটা; ডিসিশান দেয়া যেমন কবিতার কাজ না, একইভাবে একটা ইন-ডিসাইসিভ মুড’রে এনেবল করাটাই কবিতার ঘটনা না; ইন প্লেইন সাইট মনে হইতে পারে, এইগুলা জরুরি কোন জিনিস তো না-ই, বরং ফাঁপা কিছু আলাপ, কিনতু যেই জায়গাগুলারে আমরা খেয়াল করতে রাজি না, সেই জায়গাগুলা নাই না, বরং আমাদের না-খেয়াল করতে পারার বা চাওয়ার ঘটনাই…

কবিতা, এমনকি যে কোন কিছুই, যা আমরা জানি, সেইটা একটা না-জানার ঘটনা না, অনেক সময় জানার জায়গাগুলারে একরকম ঢাইকা রাখার ঘটনাও হয়া উঠতে পারে; মানে, জানা এবং না-জানা, দেখা এবং না-দেখার মধ্যে একটা পর্দা তো আছেই, কিনতু শব্দের কাজ কোনকিছুরে গোপন করা না, বা একটা বলার ভিতরে তারে ন্যারো কইরা তোলা না, রিভিল করার ঘটনা; এইটা পুরানা কথা, কিনতু তাই বইলা মিথ্যা না আর কি…

আমি বলতে চাইতেছি, কবিতা – যা আমরা আন-ডিফাইনড, ম্যাজিকাল কোন ঘটনা বইলা মনে করতে চাই, এর এগেনেসটে টেকনিকাল বা মেথডলজিকাল কোন জিনিস তো না-ই, বরং এই যে বাইনারি’ ভিতর তার আলাপটারে আটকাইতে চাওয়া, এমনকি মালটিপ্লিসিটি’র ভিতরে তারে ছড়ায়া দিতে চাওয়া, সেইটা কবিতার কোর এনগেইজমেনটের জায়গাটারে বেশিরভাগ সময়ে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই হয়া উঠে কিনা, সেইটা খেয়াল করাটা যে কোন সময়ের চাইতে এখন জরুরি একটা ঘটনা…

যদিও এই কথাগুলা ইসপেসিফক না হইয়া একটা ওভারঅল ইসটেইটমেনট হইতে গিয়া, আরো ঝাপসা হইছে, আরেকটা ক্লিশে হওয়ার দিকেই রওনা হইছে, তারপরও বলতে-পারাটা, বলার ইচ্ছাটা নিরবতার চাইতে বেটার না হইলেও, অনেক হাউকাউয়ের ভিতরে হারায়া গেলেও, এই ট্রাই করাটা আমরা বাদ দিয়া দিতে পারি না; একটা জানা দিয়া যেমন কমপ্লিট হয়া থাকতে পারি না, একটা না-জানা দিয়া এমপটি হয়া থাকাও পসিবল না…আমরা জানি যে, আমরা জানি না; আর সেই না-জানাটারে আর্টিকুলেট করার ট্রাইটা কইরা যাইতে হবে

অনেক না-বলার জায়গাগুলার ভিতর দিয়া কোন একটা কিছু বলার জায়গাটাতে যাওয়ার দিকে যাইতে হবে আসলে; কবিতা একটা টুল না, শব্দের; মিনিংয়ের বাঁইকা যাওয়াটারে সোজা কইরা দেয়া না, ডেফিনিট কইরা তোলা না, বরং আমাদের কথাগুলা যেন তার মিনিংগুলারে হারায়া না ফেলে, সেই কোশিশ করতে থাকার ঘটনা, এই জায়গা থিকা দেখলে।

/কবিতা কোমপানি পাবলিক লিমিটেড

(২৪.০১.২০২৪ – ০৪.০২.২০২৪) Continue reading

নোটস: জানুয়ারি, ২০২৪

০১.০১.২০২৪

পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ?

পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ? – এই নিয়া একটা আলাপ কয়দিন ধইরাই চলতেছে। কিনতু এইটা কোশচেন হিসাবে ন্যারো এবং মেইন জায়গাটারে আলাপের বাইরে রাখে বইলাই আমার কাছে মনেহয়। বরং কোশচেন’টা হইতেছে যে, বাংলাদেশে কোন ঘটনা সেলিব্রেট করতে চাইলে, কেমনে সেলিব্রেট করবো আমরা?

রাসতায় কি বাইর হইতে দিবে? মাঠে, পার্কে কি ফেমিলি, ফ্রেনডস নিয়া বইসা থাকতে পারবেন? মানে, আপনি যে সেলিব্রেট করতে চান, সেই খুশিটা আপনি দেখাইবেন কেমনে? কেমনে শো করবেন? [নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করা যাবে কি যাবে না? – এইটা হইতেছে আরেকটা মাদারবোর্ড কোশচেন…]

আসল কথা হইতেছে, বাংলাদেশে যে কোন পাবলিক গেদারিং’রে, যে কোন সেলিব্রেশনরেই একটা খারাপ কাজ হিসাবে পোর্টেট করে এনটি-পিপল মিডিয়া এবং মিডিয়া-জম্বি পিপলরা। এইটা হইতেছে পয়লা কথা।

দুসরা কথা হইতেছে, তার মানে অবশ্যই এইটা না যে, পটকা ফুটানো দরকার বা এইটা খুব ভালো কাজ, বরং বাংলাদেশে সেলিব্রেশনের কোন উপায় নাই – এই জায়গাটারে হাইড করাটা কোন ভালো-কথা যে না, সেই কথাটাই বলা।

এইটা শুরু হইছে গত ১০-১৫ বছর ধইরা, যখন রাসতায় না নামতে পাইরা, বাসার ছাদে ছাদে সেলিব্রেশন শুরু হইছে। এখন ইদে-চানদেও পটকা ফুটানো হয়, আগেও হইতো, এখন এইটা বাড়ছে। কারন পাবলিক সেলিব্রেশনের উপায়গুলা বনধ কইরা দেয়া হইছে। রাসতায় নামলে খালি পুলিশ পিটাইবো না, ছাত্রলিগের কুততাগুলার হাত থিকা রেহাই পাওয়া যাবে না। একটা ডরের সমাজে আমরা আছি। চুপচুপ থাকাটা হইতেছে নিয়ম। এখন যদি বলাও হয়, কোন সমস্যা নাই রাসতায় নাইমা হাউকাউ করেন, বাজি ফুটাইয়েন না, তাইলেও ছাত্রলিগের ডরে কেউ টিএসসি’তে যাবে না, পাড়ার রাসতায় নামবে না; এবং এইটা বনধও হইছিল ছাত্রলিগের কু-কির্তির কারনেই (যারা জানেন, তারা মনে করতে পারবেন স্পেসিফিক ঘটনাটা)।

মানে, যে কোন সেলিব্রেশনই কিছুটা এনোনিয়ং, রেগুলার লাইফের চাইতে লাউড এবং ডিফরেনট। কিনতু এইটা ততটাই ‘নরমাল’ মনে হইতে পারে যতটা ‘নরমাল’ লাইফ আমাদের সেলিব্রেশনরে এলাউ করে। আনফরচুনেটলি, জুলুমের সমাজে যে কোন সেলিব্রেশনই পারভাশন ও উইয়ার্ড মনে হইতে থাকার কথা, বা একটা থোবড়ানো ঘটনাই হয়া উঠার কথা দিনে দিনে।

সেলিব্রেশন আমরা করতে পারবো-না না, সেলিব্রেশন করাটা যেন পাপ – এই খুঁতখুঁতানি আমাদের মনের মধ্যে সবসময় থাইকা যাওয়ার কথা। বাংলাদেশের এখনকার কনটেকসটে ব্যাপারটা কখনোই একটা ভালো-উপায়ে সেলিব্রেট করার ঘটনা না, বরং সেলিব্রেশন করাটা নিয়া ডরানোর ঘটনাই মেইন। যেইটা নিয়া আমার ধারনা, আমরা কথা বলতে নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না।

থার্ড এবং ক্রুশিয়াল জায়গা হইতেছে, এইরকমের সেলিব্রেশন খালি একটা ‘রেজিসটেনস’ না, একইসাথে একটা ‘রিপ্রেজেনটেশন’ও যে, মানুশ-জন তো ভালো আছে! কিছু এসথেটিক ছবি দরকার আমাদের। এবং সবচে ভালো হয় যদি আওয়াজ ছাড়া পটকা বানানো যায়। 🙂 পুলিশ-মিলিটারি যদি সরকারিভাবে এইগুলা সাপলাই দিতে পারে, বাজারে। যেইরকম ধরেন, গাজাতে মানুশ খুন করতে পারবে ইজরাইল, কিনতু কোন নিউজ হবে না, বা ছবি কেউ তুলতে পারবে না! ক্রসফায়ার যেই কারনে ‘সাকসেসফুল’ ছিল, যে এর কোন ছবি ছিল না; এখন ‘পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার’ও কোন ছবি পাইবেন না। এই ছবি না-থাকাটা ক্রুশিয়াল। একইভাবে, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের ছবিটা হইতেছে কোর-ঘটনা। খালি আওয়াজটা আমরা চাই না।

প্রিজনড-সেলিব্রেশন নিয়া কোন প্রবলেম নাই আমাদের। আমরা জাসট কোন হাউকাউ চাই না। পাখি মরে, বুড়া-মানুশ ও বাচ্চাদের সমস্যা হয়-না না, এইগুলা সাইডলাইনেরই আলাপ।

ধরেন, একজন মানুশ হাঁইটা যাইতেছে, তার গায়ে আপনি গু মাখায়া দিলেন। এতে কইরা লোকটার যত না অপমান হইলো, আপনি বরং বুঝতে পারলেন যে, জিনিসটা হইতেছে একটা গু।

তো, ছয়মাসের জেল দেয়ার মানে হইতেছে গায়ে গু মাখায়া দেয়া। বাংলাদেশের আইন-আদালত হইতেছে একটা টাট্টিখানা। এই টাট্টিখানার গু’য়ের গনধে সারা দুনিয়া মউ মউ করতেছে এখন।

০৪.০১.২০২৪

বাংলা-ভাষা কি নতুন চিনতার জন্য অসুবিধার?

এই আলাপে আমার পয়েনট দুইটা। এক হইতেছে, কোন ভাষায় কোন চিনতা নাই না, বরং কোন জায়গা থিকা আমরা দেখতেছি, সেইটা হইতেছে জরুরি ঘটনা, কোন ঘটনাগুলারে ‘চিনতা’ বইলা মার্ক করতেছি আমরা। এইটা হইতেছে অনেকটা মাওলানা রুমির এনেকডোটসের মতন যে, দুইটা গরু সারাদিন বাগদাদ শহরে ঘুরলো, কিছু খড়-বিচুলি ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইলো না!

যেমন ধরেন, এক ধরনের আলাপ আছে, পাকিসতান পিরিয়ডে (১৯৪৭ – ১৯৭১) বাংলাদেশে তেমন কোন ইনটেলেকচুয়াল কাজ-কাম হয় নাই, অথচ অই সময়টারে কেমনে দেখতে হবে – অই দেখার নজরটাই আমরা তৈরি করতে পারি নাই এখনো। তার মানে, এইটা না যে, অনেক বড় বড় কাজ হয়া গেছে, যেইগুলা আমরা দেখতে পাইতেছি না, বরং কেমনে দেখবো – অই জায়গাটা তৈরি না হইলে, জিনিসগুলারে লোকেটই করতে পারার কথা না আমাদের।

দুসরা ঘটনা হইতেছে, সেনস অফ অরিজিনালিটির চিনতা’টা থিকা সরতে পারাটা ভালো; একেকটা ভাষায় চিনতার একটা হিসট্রি আছে, যেইটা একইরকম না; এই ডিফরেনসগুলারে মাইনা নিতে পারাটা বেটার, এক কইরা ফেলার চাইতে। অনেক ভাষায় অনেক কিছু নাই, অনেক ভাষায় অনেক কিছু থাকবেও না।

যেমন ধরেন, আলস্কায় এসকিমোদের ভাষায় বরফের ১০টা নাম আছে, এখন বাংলাদেশে তো এইটা থাকবে না! বা বাংলাদেশে যা ছিল ধানের/ভাতের ১০টা ভেরিয়েশন আছে (সেদ্ধ, আতপ, জাউ, পান্তা, খুদ, পোলাও…)।

মানে, সব ভাষারই আলাদা গঠন আছে, এবং ঘটনা হইতেছে ভাষাটা এনাফ ফেক্সিবল কিনা, নতুন চিনতা বা আইডিয়া আপনি সেইখানে নিয়া আসতে পারেন কিনা। এইখনে বাংলা-ভাষাতে ঘটনা হইতেছে, ভাষারে রিজিড কইরা রাখাটারে যে ‘শুদ্ধতা’ বইলা চালানো হয় – এইটা অথরিটির সমস্যা, ভাষার না।

বাংলাদেশে যেই ভাষায় আমরা কথা কই, সেই ভাষাতে লেখতেই আমরা ডরাই। আর অই ভাষাতে চিনতা করতে পারবো – এই সাহসটাই করতে পারি না। তো, এইটা যতটা না ভাষার সমস্যা, তার চাইতে নিজের ভাষারে ক্লেইম না করতে পারার ঘটনাটাই বেশি ঘটে আসলে।

বিদেশি ভাষায় যেইরকম বেশিদূর পর্যনত চিনতা করতে পারবেন না আপনি, কলোনিয়াল বাংলা-ভাষাতেও ফ্রিলি চিনতা করতে পারার কথা না আমাদের। ভাষা এইখানে অবসটেকল হিসাবে কাজ করে, মিডিয়াম হিসাবে না। সমস্যাটা এই জায়গাটাতে।

তারপরও নিজের ভাষাতে চিনতা করতে পারলেই নতুন নতুন চিনতা তৈরি হবে অটোমেটিকালি – তা না, বরং দুনিয়ার অন্য চিনতাগুলার লগে এনকাউনটার যত বেশি হবে, সেইটা ঘটতে পারার চানস তত বাড়বে আসলে। ভাষা খালি চিনতার জায়গাটারে আগায়া দেয় না, বরং নতুন নতুন চিনতা ভাষার জায়গাটারে এক্সপানড করে। যখন আপনার কনসার্ন হবে ‘শুদ্ধ-ভাষায়’ লেখা, সেইটা কখনোই ‘নতুন-চিনতা’র জায়গাগুলাতে রিচ করতে পারার কথা না; কারন যেই ইসটেনডারড অলরেডি তৈরি হয়া আছে, যেই নিয়ম অলরেডি আছে তারে এজ ইট ইজ রাইখা নতুন ইসটেনডারড, নতুন নিয়ম তো তৈরি হইতে পারে না!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলা-ভাষার সমস্যাটা মেইনলি ‘শিকখিত-গিরির’ সমস্যা, যেইটা একটা সমস্যা অবশ্যই, কিনতু সেইটারে বাংলা-ভাষার সমস্যা হিসাবে মার্ক করাটা চিনতা করতে পারার সাহস না-থাকারই ঘটনা অনেকটা।

Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২৩

০১.১২.২০২৩

ফিল-গুড এক্টিভিজম ৩

কিছুদিন আগে জিজেকের একটা ভিডিও দেখতে গিয়া জিনিসটা খেয়াল করতেছিলাম, একটা মাহফিলে (সেমিনারে) ওয়েস্টার্ন পিপলদের সামনে, যদিও উনি ওয়াজ (কথা-বলার) করার শুরুতেই বইলা নিছেন যে, হামাসের হামলা’রে উনি সার্পোট করেন না, এবং এরপরে বলতেছেন ইজরাইল যা করতেছে তা আরো জঘন্য, ব্লা ব্লা ব্লা… কিন্তু উনার কথা উনি শেষ করতে পারেন নাই, অডিয়েন্স থিকা উনারে কোশ্চেন করা শুরু করছে, এই কথা কেমনে বলেন আপনি! (আমাদের এইখানে যেইরকম ‘জামাত-বিএনপি’ বানায়া হাউকাউ লাগায়া দেয়া হয়…)

তো, এইরকম আমিও বইলা নিতে চাই যে, ইন এনি সেন্স ইজরাইলি হামলা ও খুনগুলারে সার্পোট করার কোন গ্রাউন্ডই নাই, এবং থাকতে পারে না। কিন্তু, মাই গড (হে খোদা না এতোটা, বরং অনেকটা জিজেকের বুলি), আজকে বাংলাদেশে “পালেস্টাইন-সংহতি” কি পারপাস সার্ভ করে আসলে? – এই জায়গাটারে যদি এড়ায়া যাই, সেইটা তো খালি একটা ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারির ঘটনা না খালি, পালেস্টাইনের ট্রু ক’জের জায়গাটারেও শ্যালো বানায়া দেয়ার ঘটনাও একইসাথে। মানে, বাংলাদেশে থাইকা পালেস্টাইনের প্রতি সার্পোট আপনি দেখাইতে পারবেন না, বা দেখাইলেই সেইটা শ্যালো ব্যাপার হয়া যাবে – তা না; কিন্তু এইটা কি মিন করে আসলে? – সেই জায়গাটাতে কি চোখ বন্ধ কইরা রাখবো আমরা?

আমি বলতেছি না, আপনি নয়া বাকশালের এগেনেস্টে কথা কইতে গিয়া জেলে ঢুইকা যান, আপনার বাড়িতে আইসা ছাত্রলিগ যুবলিগের লোকজন লুটতরাজ করুক, রাস্তা-ঘাটে অদের মাইর-ধর খান; কিন্তু চোখের সামনে এইসব জিনিসরে ইগনোর কইরা “পালেস্টাইনের প্রতি সংহতি” পালন করতে করতে নিজেরে কি কিছুটা ডাম্ব লাগার কথা না? আবারো বলি, ডোন্ট গেট মি রং, যারা পালেস্টাইন নিয়া কনসার্ন উনাদেরকে ইমোশনালি ব্যাড ফিল করাইতে চাই না আমি। কিন্তু কেমনে পারেন উনারা! ব্যাপারটা খালি কন্ট্রাডিক্টরই না, উইয়ার্ডও না! যে, নিজের দেশের অন্যায়-অত্যাচারে আমি চোখ বন্ধ কইরা রাখতে পারি, কিন্তু আফ্রিকায় কোন শিশু মারা গেলে, তার লাইগা আমার পরাণ কান্দে! কারণ অই কান্দাটা মোর গ্লোবাল, লোকাল না এতোটা!

এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, মিডল-গ্রাউন্ড’টা দুনিয়াতে নাই হয়া যাইতেছে না, বরং এইটা নতুন ফর্মে এপিয়ারড হইতেছে বইলা আমি মনে করি। আপনি চুপ কইরা থাকবেন না, বরং অন্য কিছু নিয়া হাউ-কাউ করবেন, যেইটা নিয়া কথা কইলে রিস্ক কম। যেমন ধরেন, ব্রিটিশ আমলে আপনি নীরদ শ্রীচোধুরি’র মতো ফিউডালিজমের এগেনেস্টে মর্ডানিটির পক্ষ নিলেন; এইরকম, অটোক্রেসি ও ডেমোক্রেসি’র বদলে আপনি নারী-অধিকার নিয়া সরব হইলেন! জিনিসগুলা যে অ-দরকারি – তা না, বরং অনেকবেশি ক্রুশিয়ালও, কিন্তু আপনি যেইটা করতেছেন, লোকাল কনটেক্সট’টারে আমলে না নিয়া গ্লোবাল একটা পারসপেক্টিভ থিকা আলাপটা দিতেছে, এবং এইটা করতে গিয়া “জ্ঞানগত” একটা সুপিরিয়রিটিও ফিল করতে পারেন যে, আমিও “বিশ্ব মানবতার” কথা কইতেছি! বাদবাকি ছোট-খাট জিনিস নিয়া তুমরা, যারা গরিব-লোকজন আছো, তুমরা কথা বলো না কেন! 🙂

ব্যাপারটা এইরকমও না যে, আপনি যেহেতু পালেস্টাইনের পক্ষে ভোকাল আছেন আপনারে বাকশাল-বিরোধী কথাও কইতে হবে! এইটা আমার পয়েন্ট না। সবগুলা জিনিস নিয়া সবারই কনসার্ন থাকতে হবে – এইটা তো জরুরি না! বা সিলেক্টিভ হইতে পারার ব্যাপারও না। বরং একেক সময় একেকটা জিনিস নিয়া কনসার্নড হওয়াটা একটা ওয়ে-আউটের ঘটনা হয়া দাঁড়ায়। ফ্রেন্ডস সিরিজটা দেখলে এইটা টের পাইবেন। বেশিরভাগ সময়, অন্য একটা ইস্যু আইসা চোখের সামনের একটা ভিজিবল ইস্যু থিকা কারেক্টারগুলারে বাঁচায়া ফেলে; বা এটলিস্ট এই টেকনিক’টা অরা ট্রাই করে; পারুক, বা না-পারুক।

আমি জাস্ট মনে করতে চাই যে, পালেস্টাইনের প্রতি বাংলাদেশে আমাদের কনসার্নটা এইরকম কাভার-আপ না, ইস্যু ঘোরানোর একটা ইস্যু না। কিন্তু আমার মন তো খারাপ, খারাপ খারাপ জিনিস মনেহয় আর কি! আমি শিওর, যারা বাংলাদেশে পালেস্টাইনের পক্ষে ফাইট করতেছেন, তাদের মনে আমার মতো এই খারাপ-চিন্তাগুলা নাই বা থাকবে না।

০৪.১২.২০২৩

আমি ডিসাইড করছি বাংলা বানানের ব্যাপারে এখন থিকা এই কয়টা নিয়ম ফলো করবো*, যেইটা ট্রেডিশনাল বানানে ‘ভুল’। মানে, আমি কিছু বানাম-ভুল করতে চাই। এই কারণে ডিসাইড করছি যে, এই ৯টা নিয়ম ট্রাই কইরা দেখবো আগামি ছয় মাস বা এক বছর:

১. ন ণ এর জায়গায় ন
২. জ য এর জায়গায় জ
৩. ৎ এর জায়গায় ত

৪. ই ঈ এর জায়গায় ই
৫. উ ঊ এর জায়গায় উ

৬. ি ী এর জায়গায় ি
৭. ু ূ এর জায়গায় ু

৮. যুক্‌তাক্‌খর যত কম রাখা যায় (একটা নিচে আরেকটা না বসায়া, বা লগে না জড়ায়া আলাদা হরফ রাখার), তত বেটার। দেখতে একদম দরকারি না হইলে বাদ-ই দিবো।

৯. র-ফলা, য-ফলা যত কমানো যায় বেটার; এতে কইরা উচ্‌চারণ পারফেক্‌ট হয় না, বরং শিক্খিত-গিরি ফলানো হয় আসলে বেশি। [অ্যা না লেইখা আ বা এ… এইরকম]

[তো, আমিই ফার্‌সট না যে এই জিনিসগুলা টেরাই করবো। বানান নিয়া এইরকমের চেষ্‌টা মুহম্মদ শহীদুল্লাহ করছেন, রক মনু’রও একটা পরস্‌তাব আছে। আমি উনাদের এবং আরো কয়েকজনের কিছু সাজেশনরে কন্‌সিডার করতেছি। যদি দরকার পড়ে নিজেও কিছু জিনিস সাজে্‌সট করবো, এর সাথে। এইখানে শেষের চাইরটা মোটামুটি আমার সাজেশন।…]

২.
একটা এনার্কি ক্রিয়েট করার জন্য এইটা করবো – তা না, এর পিছনে কিছু রেশনাল তো আছেই আমার, অইগুলা নিয়াও কথা বলবো কিছু। (আল্‌লা চাহে তো ২০২৪ সালে “বানাম ভুল” নামে একটা বইও লেখতে চাই।) কি্ন‌তু ভাষা হইতেছে প্রাকটিসের ঘটনা, আগে লেইখা দেখি, নিজের জন্য ইজি হয় কিনা। মানে, বানান নিয়া এর আগে যত কাজ হইছে, তার সবগুলাই সাকসেসফুল না হওয়ার একটা মেজর কারণ হইতেছে আগে নিয়ম বানায়া তারপরে সেই হুকুম তামিল করার ঘটনা, উল্‌ট’টা না; যে লেইখা দেখি পুরান নিয়মগুলা রেলিভেন্‌ট কিনা বা নতুন নিয়মগুলা কোন প্রবলেম ক্রিয়েট করে কিনা। তারপরে দেখা যে, রেশনালও কিনা – মানে, এইটা সেকেন্‌ডারি ঘটনাই কিছুটা।

তো, বানানের ব্যাপারে আমার পয়েন্‌ট অফ ভিউ মেইনলি দুইটা –

১. বানান উচ্‌চারন অনুযায়ি হওয়াটা বেটার; বুৎপত্তি [বুতপত্‌তি] বা কোন শব্‌দ কোন জায়গা থিকা আসছে সেই সোর্স-অনুযায়ি না

২. শব্‌দের বা বানানের আলাদা কোন মিনিং নাই, কথার মধ্যে কেমনে ইউজ করতেছি সেইটার উপরেই ডিপেন্‌ড করে মেইনলি। [একই ধরণের উচ্‌চারণ হইলেও এবং একই বানানে লেখা হইলেও মিনিং আলাদাই থাকবে। সব ভাষাতেই এইরকম আছে, এবং থাকার কথা।]

আর এর উদ্‌দেশ্য ঠিক বানান’রে সো-কল্‌ড বিজ্‌ঞানসম্‌মত করা না, বরং যতদূর সম্‌ভব অ-দরকারি জিনিসগুলারে বাদ দেয়া, বা আপডেট করা।…এখন এইগুলা তো একলার কাজ না, কিন্‌তু একইসাথে একটা ইন্‌সটিটিউশনাল বুরোক্রেসির ঘটনা বইলাও আমি মনে করি না; বরং একটা গ্রুপ অফ পিপলেরই কাজ…কিছু জিনিস ডিসাইড করতে পারলে দেখা যাবে নতুন বাংলা কি-বোর্ডই বানাইতে হইতেছে একটা।

এইটা পাবলিকলি বইলা রাখা খালি এই কারণেই না যে, এইগুলা দেখলে আমার বানাম-ভুল ধরতে আইসেন না, বরং আপনিও একটু ভাইবা দেখতে পারেন তো, ঊ, ঈ, ণ, য, ৎ, ী, ূ এর দরকার কতোটা? এইগুলা না থাকলে লেখতে ও পড়তে কোন সমস্যা হয় কিনা…

৩.
বিসমিল্‌লাহ!

#বানামভুল
Continue reading

নোটস: নভেম্বর, ২০২৩

০২.১১.২০২৩

নিরপেক্ষ লিগ: কি ও কারা?

পলিটিকালি বাংলাদেশে আজকে ক্লিয়ারলি দুইটা পক্ষ আছে। এই নিয়া কোন ক্রিটিকাল এনালাইসিস করা যাবে-না না, বরং যখনই এই ধরণের ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলা তৈরি হয় হিস্ট্রিতে, তখনই একটা পক্ষ নিতে পারতে হয় আমাদেরকে, সো-কল্ড নিরপেক্ষ হওয়ার চাইতে। কারণ ‘নিরেপক্ষতা’ বইলা কিছু নাই না, এইরকম ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলাতে ‘নিরেপক্ষতা’ স্রেফ একটা ইন্টেলেকচুয়াল ভন্ডামি।

চিন্তা করেন ১৯৪৭-এর কথা, ব্রিটিশ-শাসনের জাস্টিফিকেশনগুলা হাইলাইট করার মতো কিছু লোক কি ছিল না? (নীরদচন্দ্র চৌধুরীর কথা মনে হইলো…) বা ইভেন এখনো কি নাই? ১৯৭১-এর কথা মনে করেন খালি রাজাকার-ই না, আল মাহমুদের অটোবায়োগ্রাফি-তে আছে ঢাকার কবিরা কিভাবে বাংলাদেশ ধারণার বিরোধিতা করছিলেন। এতো দূরেও যাইতে হবে না, ১৯৯১-এর ঘটনা তো আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে! এরশাদের দালাল তো কম ছিল না, যারা শেষ পর্যন্ত ট্রাই কইরা গেছে। তো, একইভাবে আওমি জুলুমের, নয়া বাকশালের অবৈধ-শাসনরে ইনায়া-বিনায়া, নিরপেক্ষ-লিগ হয়া সার্পোট করার লোকও থাকবে কিছু। এইটা হইতেছে এক নাম্বার পয়েন্ট।

সেকেন্ড হইতেছে, এরা এদের ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারি চালু রাখবে টার্মের ভিতর দিয়া, ঘটনারে বর্ণনা করার টুল ও এপ্রোচ করার ভিতর দিয়া। যেমন ধরেন, বাংলাদেশের মানুশ আজকে BNP ও BAL – এই দুইভাগে বিভক্ত না, বরং বাংলাদেশের মানুশ আজকে ডেমোক্রেসির পক্ষে, আর কিছু লোক লুটপাটের পক্ষে সাফাই গাইতে ব্যস্ত! দুইটারে সমান সমান বইলা দেখানোটাই হইতেছে আই-ওয়াশের ঘটনা’টা।

এইটা খালি BNP’র আন্দোলন না, এইটা বাংলাদেশের মানুশের ডেমোক্রেসির জন্য ফাইট করার ঘটনা। অথচ এই সত্যি-ঘটনাটারে যে কোনভাবে লুকায়া রাইখা দুইটা সমান সমান দল হিসাবে পোর্টেট করার সব চেষ্টা কইরা যাইতেছে বাকশালি-মিডিয়া। এরা পার্ট অফ নয়া বাকশাল, এরা দুইটা দলের মাঝখানে কোন ‘নিরপেক্ষ’ দল না, এরা জুলুমের পক্ষের শক্তি, জালিমের অঙ্গ-সংগঠন, এবং আরো গোঁড়া ও ভয়ংকর! জালিমরে দেখায়া দিবে কারে কারে টার্গেট করতে হবে। এরা হইতেছে লিস্ট সাপ্লাই করার লোক।…

থার্ড এবং ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, এরা ‘ভদ্রলোক’; মানে, এমন একটা এটিটুড নিয়া থাকেন যে, যেহেতু সুন্দর কইরা ও শুদ্দ-ভাষায় উনারা কথা বলতেছেন, উনারা তো সত্যি-কথা বলতেছেন! অথচ ঘটনা হইতেছে, এই এসথেটিকাল সুপিরিয়রিটি’টারে উনারাই তৈরি করতেছেন ক্ষমতা-কাঠামের সাথে খায়-খাতির রাখার ভিতর দিয়া। মানে, এই ‘সুন্দর’ ও ‘শুদ্দতা’ – এইটা আখেরে একটা পাওয়ার-রিলেশনেরই আউটকাম! যেইটা মোরাল করাপশনের ভিতর দিয়া নিজেরে ‘হাই-ক্লাস’ দাবি করার পরে সেইটা দিয়াই মোরাল-জাস্টিফিকেশনের জায়গাগুলারে তৈরি করতে চায়। যার ফলে, ক্ষমতার জায়গাগুলারে সার্ভ করার বাইরে এইটা নিজেদের এগজিসটেন্সটারে ধইরাই রাখতে পারার কথা না!

আমি বলতে চাইতেছি, আজকের বাংলাদেশে যারা নিরপেক্ষ-লিগ, উনারা ক্ষমতার লগে কানেকশনের ভিতর দিয়াই উনাদের এসথেটিকসটারে তৈরি করে, ক্ষমতারে তার সুবিধামতো টার্ম ও নেরেটিভগুলার ভিতর দিয়া সার্ভ করে, এবং এই গ্রুপটা সবসময়ই এন্টি-পিপল একটা পলিটিকাল পজিশন নিয়া থাকে, হিস্ট্রিকালি।

এই জায়গাটারে খালি একটু ভুল-বোঝা, ডিফরেন্ট পারসপেক্টিভ বা কালচারাল সুপিরিয়রিটির জায়গা থিকা দেখতে গেলে বড়সড় রকমের ভুলই করবো আমরা।

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২৩

০৫.১০.২৩

এইটা খুব ভুল কথা যে, কিছু খারাপ লোকের কারণে একটা দেশ বা সমাজ ধ্বংস হয়া যায়; বরং যখন বেশিরভাগ মানুশ চুপ কইরা থাকে তখনই অই দেশ বা সমাজের মরনের শুরু হয়…

– অবিচুয়ারি: আসাদ চৌধুরী –

আমি কবিতা-লেখার আগে থিকাই কবি হিসাবে আসাদ চৌধুরী’রে চিনতাম। উনার কবিতার কারণে না ঠিক, আমাদের এলাকায় একটা প্রোগ্রামে আসছিলেন। স্কুলে পড়ি আমি তখন। অই প্রোগ্রামে এম.সি. (মাস্টার অফ সিরমনি) মানে তখনকার দিনে কইতো – ‘উপস্থাপক’, ছিলাম আমি।

তো, স্টেইজে অতিথিদের সিরিয়াস-মুখ নিয়া বইসা থাকতে হইতো তিন-চাইর ঘন্টা। (মোবাইল টিপাটিপি করারও কোন উপায় ছিল না! মানে, মোবাইল ফোন তো তখন ছিল না।) অন্য বক্তাদের কথা শুনতে হইতো, এবং তেমন কোন এক্সপ্রেশন শো করা যাইতো না। এতোক্ষণ বইসা থাকতে থাকতে উনি মেবি টায়ার্ড হয়া গেছিলেন, এই কারণে একটু পরে উইঠা, পর্দার আড়ালে গিয়া সিগ্রেট ধরাইলেন, কাধের ঝোলা-ব্যাগ থিকা পান বাইর কইরা খাইলেন। (তখনকার দিনে কবি হইতে হইলে ঝোলা-ব্যাগ রাখতে হইতো।) আমি ব্যাক-স্টেইজের চেয়ারে বইসা উনার কাজ-কাম দেখতেছিলাম।

কবি জিনিসটা কি রকম – সেইটা বুঝার ট্রাই করতেছিলাম মনেহয়। স্টেইজে ফিরার সময় যখন আমারে ক্রস করে যাইতেছিলেন, তখন সালাম দিলাম, উনি হাসলেন একটু।

উনি বক্তৃতা দেয়ার সময় খুব রসায়া রসায়া কথা বলতেছিলেন। অডিয়েন্স খুব খুশি হইছিল।

পরে খেয়াল কইরা দেখলাম মোটামুটি ৩০ বছর পরে আমার মেয়ের স্কুলেও উনি একটা প্রোগ্রামে আসছিলেন। মানে, উনি স্কুল-কলেজের নানান প্রোগ্রামে যাইতেন। টিভিতেও ‘অনুষ্ঠান’ করতেন। উনার কথার ভঙ্গি ছিল সুরেলা। টাইনা টাইনা কথা বলতেন। মনে হইতো, পুঁথি পড়তেছেন। উনার কথা শুনতে ভাল-লাগতো। ভাল্লাগতো উনার টোনের কারণেই মনেহয়।

উনার কবিতা তো পড়ছি পরে, কিন্তু কবিতার কথা তেমন মনে নাই। “তবক দেয়া পান” নাম’টাই খালি বলা হয় উনার কবিতার ব্যাপারে। (উনার পয়লা কবিতার বইয়ের নাম এইটা।) কিছু ‘ভালো কবিতা’-ও উনি লেখছেন মেবি, অই সময়ের। কিন্তু কবি-হওয়াটা যে একটা পারফরমেন্সেরও ঘটনা – এই জিনিসটারে উনি কিছুটা ফিরায়া নিয়া আসতে পারছিলেন। মানে, একটা সময়ে কবিতা তো পারফর্ম করা লাগতো, গানের মতো না হইলেও আসরে, মজমায়, আড্ডাতে পড়া লাগতো। একটা ইন্ট্রো, কিছু ঘটনা, কনটেক্সট, রিলিভেন্সসহ। আসাদ চৌধুরী অই জায়গাটাতে ইউনিক ছিলেন।

সাহিত্য-সমাজ এবং কবি-সমাজের লোক তো ছিলেনই, কিন্তু অই গ্রুপগুলা কুটনামিগুলা করার ভিতরেই নিজেদেরকে পুরাপুরি লিমিট করে নাই তখনো; বরং অইখানে পারফরমেন্সের কিছু ঘটনাও ছিল (এখনো কিছু স্পেইস তো আছেই, সবসময় থাকেই কিছু…), অইখানে আসাদ চৌধুরী আমার ধারণা অনেকেরই কিছুটা ‘ঈর্ষার পাত্র’ হইতে পারতেন, কিন্তু মেবি ‘টিটকারি’-ই পাইছিলেন। নিজের কবিতা পড়ার জন্য যারে অন্য গলা ধার করতে হয় নাই! মানে, আবৃত্তিকার খুঁজতে হয় নাই। কিন্তু কবি যদি নিজেই কবিতা পড়েন, আবৃত্তিকাররা কি করবে তাইলে! যে কবিতা পড়ে সে তো ‘আবৃত্তিকার’, কবি তো ততোটা না! এই রিস্ক বা জাজমেন্ট (মানে, টিটকারি তার পাওনা) ছিল।

তো, ‘আধুনিক বাংলা-কবিতা’ অই জায়গাটা হারায়া ফেললেও, সমাজে অই ভ্যাকুয়ামটা এখনো আছে; আমরা এক্সপেক্ট করি যে, একজন কবি সুন্দর কইরা কথা বলতে পারবেন, ভালো ফ্লার্ট করতে পারবেন, খালি কবিতাই লেখবেন না, কবিতা নিয়া কথাও বলতে পারবেন; মানে, রিডারের লগে, অডিয়েন্সের লগে বাত-চিত করবেন। আসাদ চৌধুরী এই কাজটা করতে পারতেন। যদিও স্যাডলি এক ধরণের ‘আধুনিক কবিতা’-ই উনি লেখছেন বা লেখতে চাইছেন। (‘হয় নাই’ যদিও।) “ওপারে ভালো থাকবেন”রেই উনি আপনাইছেন। যারা উনার কথা শুনছেন এবং উনার কবিতা পড়ছেন – এই জিনিসটা টের পাওয়ার কথা যে, এর মধ্যে ব্রিজিংটা উনি তেমন তৈরি করতে পারেন নাই।

কিন্তু একজন কবি কি পারছেন তার চাইতে অনেক সময় কি পারেন নাই – সেইটাও অনেক ইম্পর্টেন্ট ঘটনা হয়া উঠে। মানে, আসাদ চৌধুরী তো একটা কবি-সমাজের ঘটনাই ছিলেন। সমাজে ‘কবি’ পরিচয় নিয়া বাঁইচা ছিলেন। আজকে মারা গেলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!

নুরুল কবির কইতেছিলেন, বিএনপি একটা নেশনাল এম্বেরাসমেন্ট! তো, কথা কিছুটা সত্যি।

ফুটবলে অনেক প্লেয়ার দেখবেন ২০%-৩০% চান্সের জায়গা থিকা কিক কইরাও গোল কইরা ফেলে। লেনিন যখন রাশিয়ায় কমিউনিস্ট বিপ্লব করেন তখন মেবি ১০% চান্স ছিল সাকসেসফুল হওয়ার। জিন্নাহ যখন পাকিস্তান আদায় করেন তখনো উনার চান্স ৫০%’র মতো ছিল মেবি। এরশাদের পতনের সময়ও ৭০%’র মতো ঘটনা ছিল। এখন নয়া বাকশালের এগেনেইস্টে ফাইটে বিএনপি’র পপুলারিটি তার চাইতেও বেশি, ৮০% লোকের সার্পোট আছে এটলিস্ট। আমরা সবাই মোটামুটি জানি যে, দেশে আরেকটা দুর্ভিক্ষ উপহার না দিয়া বিদায় হবে না এইবারের বাকশালও।

কিন্তু তারপরেও বিএনপি এই অবৈধ সরকার’রে ফেলতে পারতেছে না। কেন? Continue reading