চে গুয়েভারা

চে গুয়েভারা’র চাইতেও মেবি অনেক ত্যাগী, ডেডিকেটেড ও ইন্টিলিজেন্ট বিপ্লবী ছিলেন, কিন্তু উনার মতো আর কেউ বিপ্লবের আইকন হয়া উঠতে পারে নাই।

উনি তিনটা জায়গা থিকা কমিউনিস্ট বিপ্লবের আইকন হয়া উঠছিলেন।

এক, কিউবান বিপ্লবের সাকসেস। পলিটিক্সে জিততে পারাটা একটা ঘটনা, এটলিস্ট একবার হইলেও; তাইলে মনে হবে যে, উনি তো পারেন! (চিন্তা, ইন্টেলেকচুয়ালিটি বা ক্রিয়েটিভ ব্যাপারে সাকসেস এইরকম জরুরি ঘটনা না সবসময়।…)

সেকেন্ড হইলো, সেটেল না হওয়া, এক্সপ্লোর করতে থাকা। উনি যদি কিউবা’তেই থাইকা যাইতেন, ফিদেল কেস্ট্রো’র “সহযোগী” হিসাবেই থাকতেন হিস্ট্রিতে। উনার এই এক্সপ্লোর করতে চাওয়াটা উনারে কমিউনিস্ট আইডিওলজির বাইরেও কালচারালি “বোহেমিয়ান” একটা জায়গাতে নিয়া যাইতে পারছে।

থার্ড আর মোস্ট ক্রুশিয়াল ঘটনা’টা হইতেছে, এই জায়গা থিকা উনারে নিয়া মিথ ও কাহিনিগুলা তৈরি হইতে পারছে তখন। উনারে নিয়া নেরেটিভ’টা একটা পার্টি-সিস্টেমের মধ্যে আটাকায়া থাকে নাই আর। আর এইরকম কথা তো আছেই যে, ওয়েস্টার্ন মিডিয়া উনার মিথগুলা দিয়া বিপ্লবরে পণ্য বানাইছে, সেক্সি কইরা তুলছে, থিওরির লগে একটা ডিসকানেকশন তৈরি করছে।
Continue reading

রুনা লায়লা

রুনা লায়লা হইতেছেন ফার্স্ট সিঙ্গার, যিনি বাংলাদেশি আইডেন্টিটি’রে সামনে নিয়া আসতে পারছেন। কথাটা বাড়াবাড়ি মনে হইলেও আসলে সত্যি। দেখেন, আব্বাসউদ্দিনরে দিয়া শুরু এক রকমের বাংলাদেশি গানের; কিন্তু অইটা লোকগীতি বা ফোকলোর হিসাবেই রয়া গেছে। জসীমউদ্দিন’রাও অই টোনেই লেখছেন এবং অই ‘লোকগীতি’ আইডেন্টিটি নিয়া খুশি ছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামও কলকাতার ‘বাঙালি মুসলমান’ একটা আইডেন্টিটি, যারে পরে বাংলাদেশের লগে নেয়া গেছে। এই দুইজন হইতে পারতেন স্ট্রং কন্টেনডার। কিন্তু বাংলাদেশ তখনো ‘বাঙালি’ আইডেন্টিটি থিকা বাইর হইতে পারে নাই।* পাকিস্তান আমলে গিয়া একটু একটু কইরা স্পষ্ট হইতে শুরু করছে, অই জায়গাটা।

তো, ইন্টারেস্টিং জিনিস হইলো, রুনা লায়লার জন্ম বাংলাদেশের সিলেটে হইলেও, উনি কিন্তু থাকছেন, বড় হইছেন, সিঙ্গার হিসাবে এস্টাবলিশ হইছেন, নাম কামাইছেন পশ্চিম পাকিস্তানে, করাচিতে। কিন্তু অইখানে ‘বাঙালি’ আইডেন্টিটি নিয়াই ছিলেন। নুরজাহান যে রুনা লায়লারে হেইট করতেন, এই আইডেন্টিটিই এর একটা বড় কারণ হওয়ার কথা। যেমন দেখবেন, বলিউডে কোন পাকিস্তানি গায়ক গিয়া সুবিধা করতে পারে নাই। এইটা রুনা লায়লাও টের না পাওয়ার কথা না। এই কারণে ১৯৭৪ সালে উনি ঢাকাতে চইলা আসছিলেন পারমানেন্টলি।

কিন্তু ঢাকার লোকজন ‘বাঙালিপণা’র জায়গা থিকা উনারে নেয় নাই। চিন্তা করতে পারেন, রেডিও’র লোকজন উনারে অডিশন দিতে কইছিল, এনলিস্টেট সিঙ্গার হওয়ার লাইগা! কিন্তু এইগুলা কইরা নিজেরাই ছোট হইছে আসলে। কারণ রুনা লায়লার ঢাকার বা বাঙালি গায়িকা হওয়ার কোন দরকার ছিল না। এর আগে থিকাই উনি ‘ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গার’ ছিলেন। মুম্বাইয়ে উনি গান গাইছেন, হিট ছিলেন। (খেয়াল করেন, কলকাতা না রিজিওনাল কোন স্পেইস না।) করাচি’তে উনি মশহুর ছিলেন। ঢাকায় আইসা উনার প্রমাণ করার কিছু ছিল না।
তারপরও বাংলাদেশি গানে উনার মেজর কিছু কন্ট্রিবিউশন আছে। এটলিস্ট তিনটা সিগনিফিকেন্সের কথা আমি এইখানে বলতে পারি।

ফার্স্টেই উনার “ফোক সং”য়ের** কথা আসবে। “ফোক সং” বা “লোকগীতি” বলতে যেই বিষাদ, গ্রামীন দুঃখবোধগুলারে আমরা চিনি (ইনক্লুডিং লালন-সঙ্গীত), রুনা লায়লা অই জায়গা থিকা কমপ্লিট একটা ডিপার্চার। খুবই হাসি-খুশির, ইরোটিক-ইশারাঅলা গানগুলা উনি গাইছেন। “বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িত গেলাম…” “ইস্টিশনের রেলগাড়িটা…” “আগে জানলে তোর ভাঙ্গা নায়ে চড়তাম না…” এইগুলা তো উনার সিগনেচার সং। এই সব গানেই সেলিব্রেশনের একটা ঘটনা আছে। এই সেলিব্রেশন যে “ফোক সংগুলা”তে ছিল না – তা না, কিন্তু এই আনন্দ’টা যে আছে, সেইটা ট্রান্সফর্ম হইতে পারে নাই, রেডিও’তে, টিভি’তে, মিডলক্লাসের কালচারাল রিকগনিশনের জায়গাগুলাতে। রুনা লায়লা এই কাজটা করছেন। এই কারণে উনারে হেইটও করা হইছে আসলে। ঢাকার রবীন্দ্র-পূজারী’রা না পারছেন উনারে নিতে, না পারছেন উনারে ফালায়া দিতে। আর উনাদের নেয়া বা না-নেয়াতে কিছু যায়-আসে না আসলে। এইখানে একটা জিনিস খুব ইন্টারেস্টিং, খেয়াল করবেন, নজরুল গীতি গাইলেও রবীন্দ্র-সঙ্গীত কখনোই গান নাই রুনা লায়লা। গান গাইতে আইসা, আর্ট করতে গিয়া অই নাক-উঁচা এলিটগিরি উনারে করা লাগে নাই কখনোই। বরং উনার গায়কী’র মধ্যে যে জয়ফুলনেস, অইটা এক রকমের “রবীন্দ্র-বিরোধী” একটা ঘটনাই। Continue reading

Karnan

Karnan না দেইখা তো আর থাকা গেল না!

ভাল্লাগছে সিনেমাটা। এখন আমার যা হয়, সিনেমার টেকনিক্যালিটির চাইতে কাহিনির সোশ্যাল রিলিভেন্সের দিকে নজর বেশি যায়। তো, তিনটা ঘটনার কথা বলি। (স্পয়লার থাকবে একটু।)

এক নাম্বার ঘটনা হইলো, মিলিটারিতে ভর্তি-পরীক্ষা দিয়া বাসে যখন ফিরতে নেয় নায়ক-নায়িকা, তখন বাস-কন্টাক্টার যে অদের গ্রামের নামে যে গ্রাম আছে, সেইটাই মানতে চায় না। কয়, আরে এই নামে কোন গ্রাম আছে নাকি! এই-সেই। তো, দেখেন, ব্যাপার’টা “ক্যান সাব-অল্টার্ন স্পিক?” না, বরং আপনি-আমি তো নাই আসলে। আমরা যত কথাই বলি, জীবন দিয়া দিলেও কিছু যায় আসে না। ইনসিগনিফেকেন্সের লেভেলটা এইরকমের।

সেকেন্ড ঘটনা হইলো, কাবাডি খেলাতে রেফারি যে দুই নাম্বারিটা করে, তখন নায়ক যে খেইপা যায়; তখন নায়করে দোষ দেয় সবাই। যে, সে এইটা মাইনা নেয় না কেন! মানে, বাটপার বাটপারি করবে, আর সেইটা আপনে বলতেও পারবেন না। বলতে গেলে, দোষ আপনার। তো, পরিচিত লাগতেছে ব্যাপার’টা, কিছুটা? 😛

থার্ড হইলো, পুলিশ যে কয়, ঠিকাছে, বাস-মালিক মামলা তুলে নিছে, কিন্তু থানা’তে গিয়া একটা স্টেটম্যান্ট দেয়া লাগবো। অইটা হইতেছে ট্রিক’টা। এইটা মনে রাখবেন, শয়তানের লগে কোন নেগোশিয়েশন করা তো দূর কি বাত, শয়তান থিকা সবসময় দশ হাত দূরে থাকবেন। চাল দিয়া, ট্রিকস কইরা, ষড়যন্ত্র কইরা শয়তানের মোকাবেলা হয় না। জিতেন আর হারেন শয়তানের লগে সবসময় ফাইটই করতে হয়। এইটা ছাড়া অন্য কোন রাস্তা নাই।

তো, অবভিয়াসলি এইগুলা এই সিনেমার ‘শিক্ষা’ না 🙂 এর বাইরেও আরো অনেক কাহিনি আছে। Continue reading

কবিতার বই: গান

We are ugly, but we have music – Leonard Cohen

…………………

গান গাই আমার মন’রে বুঝাই
মন তাকে পাগল-পারা

/শাহ আবদুল করিম
………….

গান ১

কার জানি, কি জানি
কই ও কোথায়
আসলো পৌষ ও মাঘ
হরে দরে দৃশ্য বিলাইতেছে
ক্যামেরাগুলা
শাট! শাট! শাট!
লে-অফ হইতেছে পাটকল
লে-অফ হইতেছে চিনিকল
আসতেছে চুতমারানিরা
কল কল ছল ছল
গান গাইতে গাইতে
ভিজা যাইতেছে
জামা জুতা মোজা
একে তো শীতকাল
বসন্ত আসলে না জানি
শুরু হবে আবার কোন চোদা!

গান ২

এই গান, বুঝছো
আমরা গাবো
গোবেচারা গোরুগুলি
একটু দূর থিকা
বড় বড় চোখ নিয়া
আমাদেরকে দেখবে
(অদেরকে লাগবে, সিনে
অডিয়েন্স হিসাবে)
আর আমরা এই গান
গাবো, বুঝছো?
কতো সুখ
কতো আনন্দ
শীতের দিনের
গরম পেশাবের মতো
আমরা বাইর হয়া যাবো
সারারাত সা রা রা ত
এই গান গাবো
চাঁদ নিয়া মাথার উপ্রে
ধীরে ধীরে হাঁটবো
গলিতে কুত্তার ডাকে
হা হা হাইসা উঠবো
কু কু কু গান
আমরা মনে নিয়া
বলবো, এই গান
এই গানটাই, বুঝছো!

গান ৩

ঝরে পড়তেছে তোমার
বুঝতে পারা’র ঝোল
কাঁচা হাড়ি ফুটা হয়া
টপা টপ টপ

আর মন-মাঝি
গাইতেছে গান
শুকায়া যাওয়া নদীতে
নিয়া বৈঠা ও বোট
ও মন চোদনা রে…

Continue reading

কবিতা: জানুয়ারি, ২০২১

না-বলা প্রেম

:এতোই যদি জানেন,
ব্যাখ্যা, আপনি ঘটনা হন না ক্যান!

:যতদূর ব্যাখ্যা আমি,
ঘটনা, আপনি কি তার বাইরে গিয়াই ঘটেন?

 

গান ৪

শরীর পবিত্র
তার চাইতে পবিত্র হৃদয়
নিয়া চুদাচুদি শুরু করার আগে

জিগায়া নিবা, কন্ডম আনছেন তো?

তা নাইলে বলবা, মাল ভিত্রে পড়লে
আমি কিন্তু এবরশন করায়া নিবো
খামাখা আবেগ কমায়া রাখা তো ভালো
আর তখন কমন নিরবতার ভিত্রে
হাসাহাসি শুরু হওয়ার আগে
বাবা-খাওয়ার পরের গান
গাইয়া উঠবেন

নুসরাত ফতেহ আলী খান

দমা দম মাসকালান্দার…

 

গান ৭

এই যে আমরা, আমাদের হাসি-খুশি মন নিয়া

বইসা থাকলাম না, জোকস-টোকস কইলাম না
সিগ্রেটের ধোঁয়ার মতন সময়রে উড়ায়া দিলাম না
কইলাম না যা কিছু কইতে পারতাম, বা বারবার

বলতে বলতে যা আর বলতে ইচ্ছাও করে না

আমরা, যাদের আমরা বইলা কিছু নাই আর
যারা ভুলে গেছি, যারা কোনদিনই ভুইলা যাবো না
বইলা ঠিক করছি, কে ছিলাম, কি ছিলাম বইলা

কোন কবিতা লিখলাম না, গান গাইলাম না…

কষ্ট কি একটু কম হইলো আমাদের?

 

ব্রেথ

নিয়তির সামনে আমি দাঁড়ায়া আছি, একটা অভিশাপ
পাহাড় উড়ায়া নিয়া যাবো যেন, এমন একটা উতলা বাতাস
একটা শব্দরে তার সোশ্যাল মিনিংয়ের ভিতর

হারায়া যাইতে দিবো না – এমন একটা ব্যাখ্যার ফাঁদ…

আর, নিয়তির ঘটনা ঘটে যাইতেছে তার মতো
পাহাড় দাঁড়ায়া থাকতেছে, শব্দটাও নড়তেছে না
খালি আমি ধীরে ধীরে মুছে যাইতেছি
যেমন বাঁইচা থাকতে হইলে, শ্বাস নিতে হইলে
বেশিক্ষণ থাকতে পারে না কোন দীর্ঘশ্বাস…

 

কথা

উর্দু ভাষায় কিছু বলতে ইচ্ছা করতেছে। ধরো যেই উর্দু নাই তারে অনুবাদ কইরা বাংলায় বললাম, এমন কাহাওত আছে, তোমার লগে আমার দেখা হয় না, এমনকি তোমার তকদিরের লগে অন্য কারো তকদিরেরই দেখা হইতেছে। কিন্তু উর্দুতে বা ইংলিশে লেইখা হবে না আসলে, অন্য কোন অপরিচিত ভাষায় লেখার ইচ্ছা হইতেছে, যেই ভাষা ধরো গুগুল ট্রান্সলেটেও নাই। কিন্তু তাই বইলা বুং বাং কিছু না… মিনিং আছে কোন, আবার সুরেলাও, উচ্চারণ কইরা পড়া যায় রোমান হরফে বা বাংলায়, কিন্তু সুরটাই মিনিং না। খুব গভীর বা গোপন কিছু না। মানে, খালি বলাটা ডিফরেন্ট। অন্য একটা ভাষায় আমি কথা বলতেছি যেন। একই কথা। বারবার। বারবার। তুমি ভাববা, আরে আমি জানি তো জিনিসটা, কিন্তু বুঝতে পারতেছি না কেনো! একটা বকুল ফুলের গন্ধের কথা যেমন আমরা লিখতে পারতেছি না। একটা শরীরের ক্ষত শুকায়া গেলেও যেমন দাগটা মুছে যাইতেছে না পুরাপুরি। আমি কথা বলতে চাইতেছি, এই কথাটাই বলতেছি ধরো, অন্য কোন ভাষায়। তুমি শুনতেছো। বুঝতেছো না। আর বলতেছো, “এইটা কোন কথা!”


মৌমাছিগণ

শোনেন ভাই, আমরা

‘যাই মধু আহরণে’

আপনারে চুদার টাইম তো নাই

 

Continue reading