কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

 মিনিং

মিনিংগুলি ছড়ায়া যাইতেছে,
রাতের আন্ধারের মতোন
এতো এতো ল্যাম্পপোস্ট, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, গাড়ির হেডলাইট
ফোকাস দিতে দিতে
যাইতেছে, আসতেছে… কিন্তু
মিনিংয়ের যে আন্ধার, তারা
থাইকাই যাইতেছে
একটা হরাইজনে একটা রিয়ালিটি’র মতো

একটা মিনিংয়ের আন্ধার আসলো
আর নিয়া গেলো, তোমারেও।

 

গতকালকে রাত্রে

গতকালকে রাত্রে আমি একটা স্বপ্ন দেখছি। আর স্বপ্নটা আমারে দেখতেছে। কি রকম ফ্রেজাইল! গইলা গইলা পড়তেছি আমি। মাটির কলসি ফুটা হয়া পড়তে থাকা গুড়ের সিরা’র মতোন। ঘন, কালো, লিকুইড। আমি একটু একটু কইরা গড়ায়া গড়ায়া পড়ে যাইতেছি, স্বপ্নটার ভিতর। স্বপ্নটা আমারে দেখতেছে। আর আফসোস কইরা কইতেছে, কি রকম ফ্রেজাইল এই মানুষের জীবন।

 

প্রাণি জগৎ

একটা লোনলিনেসের ভিতরে একশ’টা ইন্দুর দৌড়াইতেছে
কুট কুট করতেছে আর কইতেছে,
“বিলাই’টা যে কই গেছে!”

 

Continue reading

প্রেম ও কবিতার মফস্বল – আমাদের খঞ্জনপুর।

।। আমাদের খনজনপুর ।। মঈনুল আহসান সাবের ।। পেইজ ৮৮।। পয়লাবার ছাপা হয় ২০০৪-এ।।

স্যাড, রোমান্টিক একটা উপন্যাস। একটু একঘেঁয়েমি আছে, কাহিনি’টা পয়লা আগায় না, পরে আগাইতে গিয়া আবার শেষ হয়া যায়। কাব্যিকতা থিকা বাইর হইতে পারে না। যেইটা এর বড় স্ট্রেংথ মনে হইতে যাইতেছিলো, সেইটাই দেখা যায় এর সমস্যা। কাব্যিকতা জিনিসটা মেবি ভালোই, কিন্তু কোন উপন্যাসরে তার কাব্যিকতার ভিতরে আটায়া ফেলতে পারাটা ভালো জিনিস মনেহয় নাই।

না-বলা প্রেমরেও যে গ্লোরিফাই করা লাগছে – এইটাও ‘ম্লান’, ‘ম্রিয়মাণ’ হইছে পরের দিকে আইসা, এতো যে টাইম লাগছে, এইটাই ঘটনা বরং; মানে, না হইয়া তো আর কোন উপায় নাই, এই রবি-ভূত আর বেশি দূর টাইনা নিতে পারা’র কথা তো না। যেইখানে জীবন, চারপাশ ‘বাস্তব’ হয়া উঠতেছে, উনাদের (মানে, নায়ক, নায়িকার) ‘রোমান্টিক’-ই থাকতে হইতেছে, এইটা একটা প্যারা-ই। না পাইরা শেষে ‘বাস্তব’-এ নিজেদেরকে অ্যাকোমোডেড করতে চাইছেন। তো, ওই কাব্যিকতার কারণেই এতোটা ডিলে হইছে মেবি। এইটা খারাপ বা ভালো – তা না; কাহিনি হিসাবে কম বিলিভেল হইতে পারছে।

আরেকটা জিনিস চোখে পড়ছে, বাংলা-ভাষায় কবিতা যেহেতু ‘লিখিত’ একটা ঘটনা, সেইটারে মানুষের মুখে আনার চেষ্টাটা দুয়েকটা জায়গায় সিরিয়াস হইতে গিয়া ফানি হয়া গেছে। যেমন, খনজনপুরের নাম কেমনে খনজনপুর হইলো এইরকম একটা জায়গায় বলা হইতেছে যে, বাজার বসতো আর ওইখানে ভিক্ষা করার লাইগা খঞ্জরা আসতো; তখন বাজারি’রা কইতো যে, “খঞ্জরা আসছে, খঞ্জরা আসছে…”; তো, বাংলাদেশে কোন জায়গায় লোকজন ‘খঞ্জ’ কয়, এইটা আমার এক্সপেরিয়েন্সের মধ্যে নাই। আবার একটা জায়গায় একজন লোক মাঝ রাইতে মাইনেষে চিল্লায়া চিল্লায়া রাস্তায় জিগান, “ও, মানুষ তোমার বাড়ি কই…” এইরকম। মানে, মঞ্চনাটকে এইরকম হইতে পারে, কিন্তু কাহিনি হিসাবে একটু ফানিই লাগছে, “ভাই” না বইলা “মানুষ” বলাটা। এইটা এক রকমের ‘কাব্যিকতা’র ধারণা থিকাই আসছে মেবি।
Continue reading

#ইজতেমা #এয়ারপোর্ট #বাণিজ্যমেলা #বইমেলা #নরমালইজঅ্যাটেরর

এই জিনিসটা নিয়া কথা বলাটা অনেক রিস্কি, কারণ ব্যাপারটা খুব ডিফাইনড কিছু না। এই কারণে ডিসক্লেইমার দিয়া শুরু করতে চাইতেছি। যে, এইটা কোন পারসোনাল পছন্দ-অপছন্দের জায়গা থিকা বলা না। যদিও এই স্টেটম্যান্ট কোন হেল্প করবে কিনা শিওর না। তা-ও বইলা রাখতে তো কোন সমস্যা নাই।

বেশ কয়েকদিন আগের ঘটনা। দেখার পরেই চোখে পড়ছিলো জিনিসটা (কমেন্টে দিতেছি স্ট্যাটাস’টা), তখনই মনে হইছিলো আবার, যেইটা সবচে বেশি সার্টেন, সেইটাই চোখে পড়ে না। এইরকম। যেমন, আমার মতোন যারা এইটিসে মফস্বলে থাকছেন, দেখার কথা যে, বাসার কাজের লোকদেরকে রিকশায় প্যাসেঞ্জারের ঠ্যাংয়ের কাছে বসানো হইতো, সিটে না বসায়া। এইটা আনইউজ্যুয়াল ব্যাপার ছিলো না কোন। বা আরো ব্রডার উদাহারণের কথা কইলে, আঠারোশো শতকে ইউরোপে শাদা কাপল’রা নাকি তাদের ব্ল্যাক কাজের লোকদের সামনেই লাভমেইক করতে পারতো, যেইরকম বিলাই-কুত্তার সামনে করা যাইতো। মানে, ব্যাপারগুলি সোশ্যাল নর্মসের মধ্যে ‘বাজে’ কিছু না।

এইরকম ইজতেমা’র ব্যাপারটা নিয়া টিটকারি করা বা মকারি করা বা কমপ্লেইন করাও না; এইটা যে একটা হ্যাসেল, ঝামেলা – এইটা জাস্ট বলা; মনে করায়া দেয়া। বাজে কিছু না।

এইরকম ধরেন, বাণিজ্যমেলা নিয়াও থাকার কথা (কম হইলেও, যদিও আমি দেখি নাই খুবএকটা); আর বইমেলা নিয়া মনেহয় কোন কমপ্লেইন নাই। সবগুলি জমায়েতের জ্যাম লাগাইবার ক্ষমতাও একইরকমের না। তারপরেও। এই যে ধরেন, প্রসঙ্গ হিসাবেই বইলা রাখা; এইটারে সবচে ডেঞ্জারাস কিসিমের জিনিস বইলা লাগে আমার কাছে। এইখানে ভিজিবল হেইট্রেটও নাই কোন, ভঙ্গি’টা খুবই নরোম; আর ব্যাপার’টা তো সত্যিও, দেখেন! এই প্রিপারেশন তো নেয়াই লাগে, আমার এয়ারপোর্টে যাইতে হইলে এইরকমই করতে হইতো। কিন্তু এই যে, বইলা রাখা ইস্যু হিসাবে (মানে, উল্লেখ করা, ফেব্রুয়ারি মাস, বাংলা-ভাষা) – এর যে টেরর, ইজতেমা এবং এয়ারপোর্ট-গোয়িং পিপলের যেই ডিসট্যান্স’টা এই বলা’টা ক্রিয়েট করে – এইটারে না-দেইখা থাকতে পারাটা খুবই অসম্ভব মনে হইছে আমার কাছে। মানে, বইমেলা, বাণিজ্যমেলা, ইজতেমা – একই ঘটনা যে না, এইটা তো আমরা জানি। কিন্তু বলার ভিতর দিয়া, ধরেন একটা শব্দ দিয়া বা একটা টোন – অ্যাপ্রিশিয়েট করা, ইগনোর করা বা স্রেফ বইলা রাখার ভিতর দিয়া যেমনে আলাদা করা যায়, এইটা কি আসলেই চোখে পড়ে না? Continue reading

কবিতা: জানুয়ারি, ২০১৯

শব্দগুলি এক একটা অন্ধকার

তার
পরে
তারো
পরে
তারও
পরে

রক্ত
হয়া
ঝইরা যাবে
আমাদের
ঘাম

আমরা ভাববো,
আমরা
মহান!

কতগুলি
অহেতুক
শব্দ
দিয়া
এইটা
এইটা
এইটা

আমরা
রিপ্লেইস
করে
দিতেছিলাম

সাইকেল
একটা
তাউরাইতেছিলো

মোটরসাইকেল
হর্ণ
দিতে দিতে
তারে
দেখাইলো
আমারে

বাঁইচা
আছে
সে
ঠিকঠাকমতোন

আমি
হাঁটতে
হাঁটতে
একটু
দূরে
যাই

আবার
আসি

একটু
হাসির
মতোন
কান্দা
তার

ছড়াইতেছে

একটা
জানালা
চুপচাপ
একটা
গাছ’রে
দেখতেছে

সন্ধ্যার
অন্ধকারে
মুইছা
যাওয়ার
আগে

অরা
কইলো,
গেলাম!

 

প্রাণি জগৎ

‘তুমি আসলে কেমন বাঘ?’
– জিগাইলো একটা বিলাই আমারে।

ভাগ্য ভালো, আমি যে ইন্দুর – এইটা সে জানে না।

Continue reading

টিয়ার্স ইন হ্যাভেন

আমার একটা মুশকিল আছে, খালি ‘কারণ’ বলতে ইচ্ছা করে। গতকালকে হাসনাত শোয়েব একটা স্ট্যাটাসে জিগাইলেন ইমাজিন নাকি টিয়ার্স ইন হ্যাভেন? ভোট না ঠিক, প্রেফারেন্সই জানতে চাইছেন হয়তো, আমি টিয়ার্স ইন হ্যাভেন লিখছি কমেন্টে, অনেকেরই কমেন্ট টিয়ার্স ইন হ্যাভেন। তখন বা তার আগেও মনে হইতেছিলো, কেন টিয়ার্স ইন হ্যাভেন।

ইমাজিন আমার পছন্দ না, এর সেকুল্যার, এনলাইটমেন্টের ড্রিমের কারণে, এইটা নিয়া লিখছিও আমি। কিন্তু টিয়ার্স ইন হ্যাভেনের সাথে যদি কম্পেয়ার করেন, একটা হইতেছে, পলিটিক্যাল আর আরেকটা পারসোনাল ফিলিংসের ঘটনা (গ্রসলিই বলতেছি)। তার মানে এইটা না যে, পারসোনাল জিনিসগুলি বেটার আর্ট হইতে পারে বা এইরকমকিছু; বরং এই যে পারসোনাল – এইটা অনেকবেশি ইন্ডিভিজ্যুয়াল, পিপল যেইটারে কানেক্ট করতে পারে; ইমাজিনে যেইরকম কমন একটা জায়গা, যেইখানে ইন্ডিভিজ্যুয়াল’রে কানেক্ট করতে কয়। একটা পেইন অলরেডি আছে, আর একটা ড্রিম সাবস্ক্রাইব করতে বলে। একটা ‘অন্যায়’ ইমিডিয়েটলি ফিল করা যায়, যেইখানে ‘ন্যায়’ জিনিসটা চেইঞ্জ হইতে পারে। এইরকম।

দুইটাই ফিউচার নিয়া বলা, কিন্তু ইমাজিন’টা উইথইন টাইম, আর টিয়ার্স’টা হইতেছে টাইমের পরে গিয়া বলা। Continue reading