কবিতা লেখা

বিনয় মজুমদার মনেহয় এইরকম একটা পদ্ধতির কথা বলছিলেন কবিতার লেখার যে, ধরেন, আপনি রাস্তায় আইসা রিকশা পাইতেছেন না; তখন আপনি তো বলতেই পারেন যে, রাস্তায় আজকে কোন রিকশা নাই। কিন্তু আপনি যদি লিখেন যে, পৃথিবীর রাস্তায় আজকে কোন রিকশা নাই! এইটা কিন্তু কবিতা হইয়া গেলো!! মানে, কবিতা হইলো ক্রিয়েশন অফ ইউনির্ভাসালিটি। সব সময় সব সিচুয়েশনেই এইটা সত্যি মনে হইতে পারে। Continue reading

নায়ক ও ভিলেন এবং নায়িকা

অদৃষ্টের, মানে না-দেখার হাত এতোটাই লম্বা যে, মনে হইতে থাকে যা কিছু দেখাইলাম না, সেইসব কিছু যেন আর ঘটলোই না। অথচ যা ঘটে সেইটা ঘটনা না কখনোই, ঘটনাগুলা সবসময় আমাদের ভাবনার ভিতরেই ঘটতে থাকে। সিনেমা আসার পরে এই মনে-হওয়াগুলা এক্সপ্লয়টেড হইতে পারতেছে আরো।

বাংলা-সিনেমাগুলাতে এক ধরণের সিন আছিলো যে, নায়িকা খুবই কষ্ট পাইছে আর তখন সাইড-নায়ক তারে জড়ায়া ধইরা সাত্বনা দিতেছে, ওই সময় নায়ক আইসা দেইখা ফেলে। সে যেহেতু সবসময় (আসলে সবসময় তো না) কামভাবেই জড়ায়া ধরে নায়িকারে সে ভুলভাবে ভাবতে পারে যে, এই কামভাব-ই এইখানে আছে! পরে অবশ্য ভুলটুল ভাইঙা যায়, কারণ সিনেমার শেষ হইতে হয়। লাইফেরও শেষ হইতে হয়, তবে ভুল-টুল না ভাঙলেও লাইফের খুবএকটা সমস্যা হয় না। কিন্তু সিনেমার টুইস্ট’টা এইখানেই। আপনি আরো ১০জন’রে বলতে পারেন, ‘আই লাভ ইউ’, কিন্তু আপনি ত মিন করেন নাই; আর যেহেতু মিন করেন নাই, সেইটা এগজিস্টই করে না। মানে, সাইড-নায়কের ধোন যদি খাড়ায়ও একটু নায়িকার শরীরের স্পর্শে সেইখানে নায়িকার তো কিছু করার নাই। সাইড-নায়কের ধোন থাকলে এইখানে নায়িকার কি করার থাকতে পারে? আপনি যখন নায়ক তখন আপনারে নায়িকার এইসবকিছু না-বোঝাটারে বুঝতে হইবো। তা নাইলে আপনি কখনোই নায়ক না। নায়ক হইলো উঁচা টাইপের একটা জিনিস। বাইট্টা না কোনমতেই। বাইট্টা মানে আপনি আসলে একটা রিয়েল ভিলেন। এমনকি হিটলারও হইতে পারেন। এখন হিটলার’রে পছন্দ করলে কি তিনিও আর নায়িকা থাকতে পারবেন? Continue reading

বাংলা একাডেমির ভাষায় মতিকণ্ঠের নিউজের অনুবাদ

 

ফেব্রুয়ারি মাস আসতেছে সামনে। চারদিকে বই ছাপানোর নিউজে আমার মনে ভাষা-প্রেম একটু আগেই চইলা আসছে।

মতিকণ্ঠ পড়ছেন তো? বেশ হিউমারাস না! হিউমিলেশনও আছে। আর হিউমিলেশন আছে বইলাই হিউমার করাটা পসিবল হয়, বেশিরভাগ সময়। এই হিউমিলেশন যতোটা না ঘটনার (মানে, নাই যে সেইটা না), তারচে বেশি ভাষা থিকাই আসে।

মানে ঘটনা, সেইটা যা-ই হোক, এর যে রিপ্রেজেন্টশন, সেইটাই হইলো ঘটনাটা। ঘটনা আসলে ভাষার ভিতর দিয়াই ঘটে। আর ভাষারে আপনি যতো কব্জির জোর দিয়া ঘুরাইতে থাকবেন ঘটনা ততোই ঘটতে থাকবো। এমনিতে পত্রিকা-টিভি-রেডিও’র ভাষাই হইলো আমাদের জীবনের ঘটনা। এর বাইরে গল্প-কবিতা ত থাকলোই।

মানে, আপনি জানেন যে, পাখিটারে কয়, বক-পাখি; এখন আপনি বক-পাখি না কইয়া কইলেন, বগা-পাখি। এতে কইরা বক-পাখি ইন্সট্যান্ট বগা-পাখি হয়া যায় না খালি, তার যে দুইটা পা সেইগুলা ঠ্যাং হয়া যাইতে পারে। পাখি হিসাবে আরোবেশি পাতলা, এমনকি পাখি-ই হইতে পারলো না, মনে করেন। মানে, এইরকম মনে করাটা সম্ভব হইতে পারে। খালি বক-পাখি থিকা বগা-পাখি লিখার কারণেই। আবার ধরেন, আকাশে বকপাখি তো ওড়তেছেই। সেই বক-পাখি ওড়ে বইলাই বগা আর কখনোই পাখি হইতে পারে না।

এখন রিডার হিসাবে এনাফ লিটারেট না হইলে আপনি এই বক-পাখি আর বগা-পাখি’রে আলাদা করতে পারবেন না। আর মজাটা এইখানেই এমপ্লিফাই হইতেছে যে, কেউ কেউ হয়তো বুঝতেছেও না! না-বোঝার যদি কেউ না-থাকে, বোঝাটার মিনিং তৈরি হইতেছে না।

আমি মনে হয় ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে পারতেছি না। এইজন্য ভাবলাম, মতিকণ্ঠের ভাষাটারে অনুবাদ কইরা দেই। Continue reading

সাহিত্যে ‘দলাদলি’ নিয়া

ব্যাপারটা যে খুব স্পষ্ট তা না, বরং বেশ ব্যক্তিগত, অস্পষ্ট একটা টেরিটরি, এইখানে যাঁরা জড়িত তাদেরও মুখ বন্ধ রাখাই নিয়ম। তারপরও ব্যাপারটা ত কথা বলার! কারণ, কবি বা লেখক নিজে নিজে লিখলেও তাঁর সাহিত্যের একটা আবশ্যিক কাজ হইলো সমাজের অন্যান্য মানুষজনের সাথে মিনিমাম একটা যোগাযোগরে সম্ভব করা। আর এইটা সম্ভব হয় যোগাযোগের বিভিন্নরকমের প্রতিষ্ঠিত কাঠামোগুলারে এক্সপ্লয়েট করার মাধ্যমেই।

চালু-থাকা যোগাযোগ-কাঠামোটার কোন না কোন বিপর্যয় না ঘটাইয়া শিল্প-সাহিত্য’রে কার্যকর করা সম্ভব হয় না। এই কারণে প্লেটো’র সরল একরৈখিক সমাজের ফাংশনের ভিতর কবি বা লেখকদেরকে অ্যাকোমডেড করাটা কঠিন ছিল; কিন্তু এখনকার বাস্তবতায় এই সাহিত্য-কর্ম সামাজিক জীবনের একটা আবশ্যিক অংশ। যেমন ধরেন, স্কুল-কলেজে সাহিত্য ত পাঠ্য, ইন ফ্যাক্ট সাহিত্য পড়ার ভিতর দিয়াই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার শুরু। দৈনিক পত্রিকাতে থাকে সাহিত্য-পাতা, অনলাইন নিউজসাইটেও; কলেজের ছাত্রসংসদ ইলেকশনে সাহিত্য-সম্পাদক পদ থাকে (এখন মনে হয় ইলেকশন হয় না আর), মানে বিভিন্নভাবে এইটা ভিজিবল একটা জিনিস।

বর্তমান সমাজে সাহিত্যের বিভিন্ন রকমের ব্যবহারযোগ্যতা আছে। এই কারণে সাহিত্যের দুশমন কখনোই সাহিত্য-বিরোধীরা না, কারণ উনারা সাহিত্য নিয়া সচেতনই থাকতে চান না, এইটা থাকলে আছে, না থাকলে নাই। কিন্তু সাহিত্যের সমস্যা সবসময় মাঝারি-মানের সাহিত্য। এই সাহিত্য হইলো সমাজের সবচে’ স্ট্রংগেস্ট এসথেটিকস, যেইটা শুধুমাত্র তার ব্যবহারযোগ্যতার ভিতর দিয়াই সমাজে কার্যকর থাকে বা থাকতে চায়। Continue reading

অ্যাভারেজ কবিতা

 

দুর্জন কবি হইলেও পরিতাজ্য। – Jamil Ahammed

এই বিষয়ে বরং Underground সিনেমাটার একটা জায়গা কথা মনে করা যাইতে পারে; যেইখানে মার্কো, যিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে টিটোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়া উঠেন তার বন্ধুরে আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকাইয়া রাইখা প্রচার করেন ‘বিপ্লবের শহীদ’ বইলা; তো একটা সময় তার সেই বিপ্লবী বন্ধু’র নামে কালচারাল সেন্টার ওপেন করতে গিয়া, একটা কবিতা পাঠ করেন। সিনেমার মধ্যে মার্কো হইলো গিয়া ‘দুর্জন’, যে কিনা আবার কবিতাও লিখে! কিন্তু আপনি যদি কাহিনির এই প্রেক্ষাপটরে বাদ দেন, কবিতাটারে পছন্দ না করার কোন কারণ নাই। খুবই আবেগী, প্রচলিত ধরণের অ্যাভারেজ একটা কবিতা। Continue reading