বছর তিরিশের আগের কথা হবে মনেহয়। সিক্স-সেভেনে পড়ি, ঢাকায় বেড়াইতে আসছি খালার বাসায়, মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে। খালাতো বোন আমার চে কয়েক বছরের ছোট। আমরা যে বেড়াইতে আসছি ওর তো খুব ইচ্ছা করতেছে আমাদের সাথে খেলতে; কিন্তু সকালবেলা ওরে বাসার পাশের মাদ্রাসায় যাইতে হবে ঘণ্টাখানেকের লাইগা, আরবি পড়তে। ও আমারেও সাথে নিয়া গেলো। কইলো, আপনি মাদ্রাসার বাইরে ৫/৭ মিনিট দাঁড়ান, আমি চলে আসতেছি। ঠিকই চলে আসলো ও একটু পরে। আমি কইলাম, কি ঘটনা চইলা আসলা কেন! কয়, হুজুর’রে বলছি, বাসায় মেহমান আসছে, আব্বা চইলা যাইতে বলছে, কিন্তু আপনি বাসায় গিয়া এইটা বইলেন না। ও বাসায় গিয়া কইলো, ছুটি দিয়া দিছে। ওর বাপ-মা তো বেশ অবাকই হইলো। একটু পরে যখন ওর বাপ বারান্দায় দাঁড়ায়া সিগ্রেট খাইতেছে তখন দেখে যে, মাদ্রাসা থিকা পোলাপাইন বাইর হইতেছে। তখন বেচারা বোনের লাইগা খারাপ-ই লাগলো আমার, খামাখা অনেক ঝাড়ি খাইলো বাপের কাছে। পরে মা-খালা’রা আইসা বাঁচাইলো ওরে।
ঘটনা এইটা না যে, শে মিথ্যা কথা বলছে। ঘটনা এইটাও না যে, শে একটা কাজ করছে কিন্তু বাপের কাছে লুকাইছে বা তারে বলার দরকার মনে করে নাই। ঘটনা এইরকম যে, বাপ ফিল করছে ওর একটা সেপারেট ডিসিশান মেকিংয়ের ব্যাপার আছে আর বাপ-মা’রে এড়াইয়া গিয়া শে এইটা করতে পারে। বাপ-মা তারে করতে দিবে না – এইটা অনুমান করতে পারে বইলা শে এইটা করছে। বা ভাবছে, এইটুক ফ্রিডম তো শে নিজেরে দিতেই পারে। এইভাবে একটা সময় শে হয়তো তার ইন্ডিভিজ্যুয়ালিটি ক্লেইম কইরা ফেলতে পারে।…