কবিতা: অক্টোবর, ২০২১

একটা কবিতা

একটা কবিতা
হইতে চাইতেছে
রিমার্কেবল কোটেশন একটা

ময়ূরপাখি তার লেজ লুকায়া
কাক তবু
হইতে পারতেছে না

কাকগুলা হাসতেছে
কয়, তুমি আর
লোক হাসাইও না!

গান

এইখানে
এমন কোন গান
নাই
যা আমার মন’রে
সাত্বনা দিবে
বলবে,
দুনিয়াতে
এমন কোন দুঃখ
নাই, যা
গানের সুর
ভুলায়া দিতে
পারে না

অই গানটা
আমি খুঁজে
পাইতেছি না

অথবা
একটা গান
বিজি অন্য কোথাও
আমার কথা
শে মনে রাখে নাই
আর

পঁচিশ বছর

সবকিছুরই এক্সপায়ারি ডেইট আছে,
তোমার মেমোরি’র আর
আমার বাঁইচা থাকার

অনেক কিছু খুব তাড়াতাড়ি মারা যায়
অনেক কিছু মরতে অনেক সময় নেয়

কারো কারো পঁচিশ বছর
কারো কারো একটা মোমেন্ট

ফিকশন রাইটার ২

বান্দরটারে বলা হইলো,
খবরদার, কলা খাবা না!

বান্দরটার মনে হইলো,
হায়, হায়! যেই কলা খাবো না আমি
সেই কলা কই পাই এখন!

তাহাজ্জুদের নামাজ

আকাশ তখনো অন্ধকার।
সারারাত জাইগা থাকার পরে
উনি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া শুরু করলেন।

ফজরের আজানের আগেই সব ভোট দেয়া শেষ হইলো।

পাখিগুলা ডাকলো, সূর্য উঠলো, কিন্তু
তাহাজ্জুদের নামাজের সময়ের অন্ধকারটা রয়া গেলো।

সবাই বুঝলো, দেশে এখন তাহাজ্জুদের টাইম
তাই সবাই এখন তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে, সবসময়।
ঘুমায়া বা না-ঘুমায়াই।

একজন আরেকজনরে ডাকে,
আসেন, আমরা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ি, ভাই!

পাখি ও পেঁপে

পেঁপে’টা পাকা হয়া উঠলো
পাখি’টা কইলো, পেঁপে আমি খাই না।

২.
কতগুলা পাখি কতগুলা পেঁপে খাইতেছে
আমাদের তবু
‘পাখি পাকা পেঁপে খায়’ বলতে গেলে জিব্বা আউলায়।

৩.
অরা পাখি না আসলে
যারা পেঁপে খায় না।
অরা পেঁপে না আসলে
যেইগুলারে পাখি খায় না।
পেঁপে আর পাখি নিজেদেরকে বুঝায়
হেইট্রেটের জালে আটকা পইড়া।

৪.
শেয়াল’টা কয়, পেঁপে কখনো টক হয় না।
কোটেশনগুলা হাসে, কয়, হ, কিছুটা তো মিলছে…

৫.
কলের পাড়ে
পেঁপে গাছটার নিচে
পইড়া আছে একটা শাদা-ময়লা রুমাল
নীল-হলুদ-রেড সুতায়
তার কোণায় লেখা –
“ভুলে যেও না”

শরত আর হেমন্ত

শরতের শেষে
বৃষ্টির পরের
আকাশ
বাংলা-মদের মতো ঘোলা

বিকালটা গড়াইতে গড়াইতে
সন্ধ্যা হইতেছে
জেগে উঠতেছে দোকানগুলার আলো
গাড়ির হর্ণ আর হেডলাইটগুলা
রাস্তার পানিরে রিফ্লেট করতেছে,
অরাও মদের কালার,
বিদেশি অথবা কেরু

কিন্তু সবাই জাগায়া তুলতেছে
আমাদের মনে একই রকম মন-খারাপ,
হেমন্তের সন্ধ্যার

জানা আর না-জানা

যাইতে চাইলে যাইতে দিতে হবে
থাকতে চাইলেও বলা যাবে না, থাকো!

ভালোবাসা আর ‘আমি কেয়ার করি না’ – একই জিনিস না
দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনা

যে জানে শে জানে, যে জানে না শে জানে না

দেবী আসছেন

দেবী আসছেন
কলোনিয়াল হ্যাং-ওভারে
ডিকন্সট্রাকশনের আঙিনায়

বনানী কবরস্থান রোডে
কোম্পানি-স্পন্সরড শামিয়ানায়

দেবী আসছেন
প্রতিমা-ভাঙ্গার নিউজ দিয়া
ইসলামি মৌলবাদ তবু
ঠেকানো যাইতেছে না আর

সেক্যুলার টিপ আর ট্যাটু
হয়া উঠতে চাইতেছে হিজাবের কাউন্টার
শো-রুমের বাইরে ম্যানিকুইনগুলা বলতেছে
আর কতোকাল!
আমরা হয়া থাকবো কালচারাল হেজিমনির
ডিসপ্লে সেন্টার?

পায়ের নিচে থাকা অসুর চিন্তিত অনেক
শ্রেণী-সংগ্রাম কি ডেড?
রেভিউলেশন কি হয়া থাকবে
এলিট-ক্লাস মহিলাদেরই অরনামেন্ট, চিরকাল?

দেবী আসছেন
শরত মেঘের আকাশে দেখা যাইতেছে
শাড়ির নীল পাড়
তোমরা জমিনে জুলুম লেখো,

দেবী বলতেছেন, ইনকিলাব জিন্দাবাদ!
স্বাধীনতা তুমি, সবার!

শামসুর রাহমান

স্বাধীনতা তুমি,
‘বিদেশে পলাতক’ সাংবাদিকের বোন,
ক্রিস্টাল মেথ, পাসপোর্ট আর
‘রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্টসহ
একটি মোবাইল ফোন’

একটা নিউজ কনটেন্ট,
রির্পোট রাইটিং স্কিল,
মরা কিছু শব্দ আর উপমা দিয়া
দেখানো ডর: ‘জ্বী হুজুর, জ্বী হুজুর!’

ভালোবাসা কি জিনিস? (বুক অফ থটস)

সিগ্রেট আমি কখনোই খুববেশি খাইতাম না। করোনার টাইমে তো আরো কইমা গেছে। তো, অফিসের সামনে একজন বয়স্ক লোক সিগ্রেট বেচেন। উনার কাছ থিকাই বেশিরভাগ সময় সিগ্রেট কিনি আমি, উনি মেবি খেয়াল করছেন যে আমি ছোট প্যাকেট’টা কিনি (১২টার’টা) সবসময়। ছোট প্যাকেট না থাকলে জিগাই, ছোট’টা নাই? উনি দুয়েকবার উনার ব্যাগ খুঁইজা বাইর কইরা দিছেন। এরপরে যখনই সিগ্রেট কিনতে গেছি, ৭দিনে/১০দিনে একবার, ছোট প্যাকেট’টা পাইছি। আমি কোনদিন উনারে বলি নাই যে, ছোট প্যাকেট’টা রাইখেন বা উনিও বলেন নাই যে, আপনার জন্য রাখছি। মাঝে উনারে কিছুদিন দেখি নাই। আমি কখনো জিগাই নাই, এতোদিন কোথায় ছিলেন? আমিও যে আজকে এক/দেড়মাস পরে সিগ্রেট কিনতে গেছি, উনিও জিগান নাই, এতোদিন কোথায় ছিলেন? কিন্তু আমারে দেইখা মনে হইলো খুশি হইছেন। দেখি, পাশে একটা বোলে সিঙ্গারা-সমুচা বেচতেছেন; জিগাইলাম, এখন এইগুলাও বেচেন নাকি? উনি বললেন, আরে, একজন বানায়া এইখানে দিয়া যায়…এইরকম টুকটাক কথাও আমরা কই। উনার নাম আমি জানি না। আমার নামও উনার জানার কোন কারণ নাই।
তো, ভালোবাসা ব্যাপারটা এইরকম, বেশিরভাগ সময়; স্ট্রেইঞ্জ এবং আন-নোন।

চিন্তা কি জিনিস? (বুক অফ থটস)

চিন্তা হইতেছে বটগাছের মতন। এর বীজ বাতাস থিকা আসে। পাখিরা নিয়া আসে। আর এইটা বাইড়া উঠে কোন না কোন জিনিসরে আশ্রয় কইরা, জড়ায়া ধইরা। তারপরে সেইটা মাটিতে, বৃষ্টির পানিতে, রইদে নিজে নিজে বড় হইতে থাকে। নিজেই হয়া উঠে একটা আশ্রয়। চুপচাপ নিজেরে ছড়ায়। ঝুল বাইর করে। বয়স্ক বটের ছায়ার নিচে বইসা অনেকে শান্তি পায়। অনেক পাখিরা বাসা বান্ধে। কিন্তু কোন ফল নাই। ফুল নাই তার। যা আছে, সেইটা খাওয়ার জন্য না, কাউরে ইমপ্রেস করার জন্য না। বটগাছের ফুল আর ফল হইতেছে আরেকটা বটগাছেরই বীজ। চিন্তার ভিতরে এইরকম ফুল ফুটে সবসময়, আরেকটা চিন্তার।

মেটাফোর

বল্লমের ঘাই দিয়া
যেন মাইরা ফেলা যাবে
একটা বাইম মাছ,
এইরকম চুপচাপ
ট্রান্সপারেন্ট
বিকালের বাতাস

বাংলাকবিতা২০২১

ভাত দে হারামজাদা, তা নাইলে রফিক আজাদ খাবো!

অল্টারনেটিভ

তারপরে,
মার্সে (মানে, মঙ্গলগ্রহে)
গেলে
আমরা মনেহয়
একটু শান্তি পাবো,
তাই না?

নাকি কানাডা’তে শান্তি আছে?
নিউজিল্যান্ডে?
কোন ‘গ্রামের বাড়ি’তে
পুকুরের পাড়ে?

অথবা কোন
প্যারালাল ইউনিভার্সে,
দেখা গেলো
অলরেডি আমরা
সুখে-শান্তিতে
বসবাস করতেছি…

এলগারিদম

তোমাদের ভাষা, চিন্তা আর
লাইফের ঘটনাগুলার এলগারিদম
খুঁইজা পাবে অন্য কাউরে আবার

তোমরা একই গান শুনবা
একই সিনেমা নিয়া গল্প করবা
একই রকম হরমোন
ছড়াইতে থাকবে শরীরে তোমাদের

তোমাদের ভাষা, চিন্তা আর
লাইফের ঘটনাগুলার এলগারিদম
নতুন নতুন দুনিয়ায় নিয়া যাবে তোমাদের,
নতুন নতুন মানুশ আর নতুন নতুন মনের কাছে

খুঁইজা পাবে আমারই মতো অন্য কাউরে,
যে কিনা আমি না, কখনোই

গাছেদের আলাপ

আমি একটু দূর থিকা দেখি
যেইভাবে একটা গাছ আরেকটা গাছরে দেখে

অন্য গাছগুলাও আমারে বার্তা পাঠায় বাতাসে
আমরা কথা বলি, আমাদের নিরবতাগুলা হাসে

‘হেই, হেই তুমি কি টাল হইছো নাকি?’
দুপুরবেলায় আশ্বিনের টাল-খাওয়া বাতাস বলে

আমরা তো আমাদেরকে দেখি একটু দূর থিকাই

বাতাসের অইপারে বাতাস
আকাশের অইপারে আরেকটা আকাশ ক্রিয়েট করে

মেটাফোর ১০

একটা মরা তেলাপোকারে
টেনে নিয়া যাইতেছে অনেকগুলা পিঁপড়া

যেইভাবে একটা ফেসবুক সেলিব্রেটির পোস্টরে
টেনে নিয়া যাইতেছে অনেকগুলা লাইক আর শেয়ার

গরুরচনা

সেক্যুলার-বলদই থাকবো নাকি ইসলামিস্ট-ষাঁড় হবো?

একটা শব্দের পরে একটা শব্দ

সময় চলে যাইতেছে, সাধন আর হবে না
যার হয়, তার এমনেই হয়, টের পাওয়া যায়
আমার হইতেছে না, আমার হবে না

আমি বুঝে গেছি, আবুল হাসান
আপনার মতন কাব্যিক হইতেও আর ইচ্ছা করে না,
শব্দগুলা জাস্ট ফিরা ফিরা আসতেই থাকে
জট পাকাইতেই থাকে,
একটা শব্দের পরে একটা শব্দ আর
আরেকটা শব্দের পরে আরেকটা শব্দ
আইসা দাঁড়ায়া থাকে

কি যে খারাপ লাগে আমার অদের জন্য,
আমার হয় না, আমার আর হবে না, বুঝছো!

সময় চলে যাইতেছে, সময় চইলা যাবে
আমার হয় নাই কিছু, হইলেও বা কি এমন আর হইতো…

বিষুদবার

থাকে শুধু অন্ধকার
মুখোমুখি বসিবার
কেরুর জিন

শাহবাগ ৫

চোরের কাছে চুরির বিচার চাইলেন।
চোর কইলো, আগে বাপ ডাক!

আপনি কইলেন, “ওকে বস,
প্রতিবাদ কইরা বাপ ডাকবো আমরা
আজকে শাহবাগ।”

আয়না

তিনশ ফিট রোডের মাঝখানে
সকাল ৭টার সময়
মাথায় টুপি, মুখে মাস্ক আর
হাতে লাঠি নিয়া
বুড়া একটা লোক
ভিক্ষার লাইগা
হাত পাইতা
দাঁড়ায়া আছে

অই লোকটা হইতেছে আমি

সাধারণ মেয়ে

একটা অসাধারণ মেয়ে
একটা সাধারণ ছেলে’রে বলতেছে,
“আমি সাধারণ মেয়ে
আমার জন্য
একটা কবিতা লেখবেন!”

বাজার

কম দামে বেচা হওয়া কেউ
বেশি দামে নিজেরেই কিনে নিতেছে আবার

হেমন্ত

বাতাস ভারী হয়া আসতেছে
বাতাস জাইগা উঠার আগে
আবার ঘুমায়া পড়তে চাইতেছে

কার্তিকের মাঠে, কুয়াশার বুকে

শীত হয়া যেইরকম ঘুমায়া ছিল শে
ধান কাটা হয়া গেলে পরে…

ভাষা-শিক্ষার নিয়ম

ছোটবেলায় মায়ের লবজে কথা বলবা।
টিনএইজ বয়সে বন্ধু-বান্ধবের ল্যাঙ্গুয়েজই হইতেছে তোমার বুলি।
যৌবনে মনে রাখবা প্রেমিকা আর প্রেমিকের ভাষাই আসল।
বুড়া বয়সে ফলো করবা তোমার মেয়েদের কথা-বলার ধরণ।

বাংলা-ভাষা এইভাবেই শিখছি আমি।
এইভাবেই বলি আর লেখি।

দুনিয়াতে ভাষা-শিক্ষার এইটাই নিয়ম।

ইয়াং কাপল

বৃষ্টির পরে
একটা মেয়ে
পা টিইপা টিইপা
হাঁটতেছে

তাঁর কষ্ট দেইখা
রাস্তার পানি
বলতেছে তারে,
সরি! তোমার কষ্ট হবে,
বুঝতে পারি নাই…

হেমন্ত ৩

দেয়ালের সাথে শুধু দেয়ালটারই কথা হয়।
শুওরের সাথে শুওরের।
গরুর সাথে গরুটার।
বিলাইটার সাথে বিলাইটাই ম্যাঁও ম্যাঁও করে।
কুত্তাটার সাথে চিল্লায় কুত্তাটাই।
আমি গাছটার ছায়ায় দাঁড়ায়া থাকি,
গাছটা জিগায় আমারে, কি রে ভাই
তুমিও কি আরেকটা গাছ নাকি?

হেমন্ত ৪

আমি কেউ না

বর্ষাকাল শেষে
শুকায়া যাওয়া খালটার মতো

দুপুরের ঘ্রাণের শেষে
নিভতে থাকা রইদটার মতো

গ্রে হইতে হইতে
অন্ধকারে হারায়া যাওয়া
তোমারই একটা ছায়া

আমি কেউ না

সন্ধ্যার মতো সাপ

ভালো-লাগার ভিতরে বইসা আছে একটা সাপ,
বলতেছে, আচ্ছা, আচ্ছা, তাই নাকি…

ভালো-লাগাটা গা এলায়া বইসা থাকতেছে,
তার পিঠ বাইয়া উঠতেছে সাপ’টা

একটা ছোবলের মতন বইসা আছে
শিরশির একটা সন্ধ্যাবেলা

এক্সপেক্টশনের সাপ

আর্টের কলা ১

ভুল মিনিংয়ের
কলার ছোকলায়
পা পিছলায়া পইড়া গিয়া
রিডার’টা গাইল দিয়া উঠলো,
বালের আর্ট এইটা!

আর্টের কলা ২

কেউ পা পিছালায়া
পড়লো না দেইখা
কলার ছোকলা’টা কইলো,
আর্ট তো সবার জন্য না!

শীতের বাতাস

বাতাস অচেনা, পুরানা

বাতাস আমারে বলতেছে,
তুমি ভুলে গেছো আমারে, তাই না?

হেমন্ত ২

তুমি বইসা আছো
একটা গাছ
তার পাতাগুলা
ফেলে দিতেছে মাটিতে;
বাতাস বলতেছে,
“দেখছো, দেখছো..”
যেন তার দোষ
নাই কোন,
একটা বিলাই
ইন্দুরের ডরে
লুকাইতে চাইতেছে
তোমারই ছায়ায়

তুমি বইসা আছো
রইদ নিভে যাইতেছে
ছায়াগুলা
মুছে দিতেছে
আমারেই
আবার

অরিজিনালিটি

লিফটে দাঁড়ায়া ছিলাম পাশাপাশি আমরা
রোবট’টা জিগাইলো আমারে,
আপনি একটা ফেইক-রোবট, না?

প্রশ্ন আর উত্তর (বুক অফ থটস)

সোনা দিয়া অলঙ্কার বানাইতে গেলে একটু খাদ লাগে, এইরকম আর্ট করতে গেলেও একটু স্নবারি জমা হয়; কিন্তু অইটাই আর্ট না। আবার, কিছু জানতে গেলেও সন্দেহ লাগে; কিন্তু সন্দেহ করতে পারাটাই ‘জ্ঞান’ না। একটা সময়ের পপুলার এবং গ্রেট-আর্ট একটা জায়গাতেই থাকে, দুইটা সমান জ্বলজ্বল করে; কিন্তু দুইটা একই জিনিস না। চোখের সামনে একটা অন্যায় দেখলে অনেক সময় চেইতা যায় লোকে, নিজেরে সামলানো যায় না। চোর ধরা পড়ার পরেও চেইতা যায় অনেকসময়, এরে-তারে গালি-গালাজ করতে থাকে; অইটা প্রতিবাদ না। এইরকম অনেককিছু মিইলা-ঝুইলা থাকে। অনেক কিছু আলাদা কইরা দেখার দরকার নাই। কিন্তু অনেককিছু আলাদা কইরা দেখতে পারতে হয়, তা নাইলে দেখা’টা হয় না।

কিন্তু দুনিয়া তো একটাই! একটা দুনিয়ার ভিতর দিয়াই অনেকগুলা দুনিয়া দেখতে পাওয়া যায়। যে অনেকগুলা পারসপেক্টিভ থিকা দেখতে চায়, সে আসলে চোখ খুলতে পারতেছে না। চোখ খুইলা রাখলেও অনেকে দেখতে পাইতেছে না। চোখ বন্ধ কইরা আবার বলতেছে কেউ, কই, সবকিছুই তো দেখা যায়! যা কিছু দেখা যায়, দেখা যায় বইলাই সত্যি না। একটা ছায়া ধীরে ধীরে মিলায়া যাইতেছে আরেকটা ছায়ার ভিতর। ছায়াগুলা তর্ক করতেছে, কোনটা বড় অন্ধকার! একটা অন্ধকারের ভিতর ডুইবা যাওয়ার আগে। অন্ধকারও একটা না। কিন্তু অই অতোদূর পর্যন্ত, যেইখানে সবকিছু এক, সেইটা কে আর দেখতে পারে! ধইরা নিতে হয় আসলে, বা বিশ্বাসই করতে পারতে হয় যে, আমাদের ভাবতে পারার বাইরেও, অনুমানের বাইরেও কিছু আছে, যেইখানে এই প্রশ্নগুলা নাই, উত্তরগুলারও এই কারণে দরকার নাই আর তখন।

প্যাস্টোরাল লাইফ

দুনিয়াতে সবারই একটা পছন্দের জায়গা আছে,
আমার পছন্দের জায়গা হইতেছে, কোথাও না-থাকা

Leave a Reply