বর্ষাকাল
বিস্টি ভালো, বাতাসও ভালো
ভালো শুয়ে শুয়ে জানালা দিয়া দেখা বিস্টি ও বাতাস
তোমার কথা-ভাবা আর কোনদিনই দেখা-না-হওয়া
সন্ধ্যায় লেখা সকালের কবিতা
কতকিছু যে লেখার বাকি রইয়া গেলো!
তারপরে মনে হয়, এতোসব লেখারও তো কিছু নাই!
সময় যাইতেছে ধীরে ধীরে সকালের রিকশাটার মতো,
তারপরে উল্টায়া যাইতেছে আবার, সন্ধ্যায়
সূর্য যেইরকম উঠলো আর ডুইবা গেল
ওয়েটিং রুম
“কেউ নেই”র হাতে আমরা নিজদেরকে সইপা দিলাম,
টিভি’তে দেখাইতেছিল ক্রিকেট খেলা
কোন কিছুর দিকে তো চায়া থাকতে হবে আমাদেরকে
তাই আমরা দেখতেছিলাম
বাথরুমের দরজার সামনে দুইটা সেন্ডেল
দুইটা চোখ হয়া দেখতেছিল আমাদেরকে
আমরা অদেরকে না-দেখার ভান করতেছিলাম
আর তখন টিভিতে নিউজ-প্রেজেন্টার মেয়েটা
চোখ বড় বড় কইরা মারামারি’র খবর পড়তেছিল
বলতেছিল, এই, তুমি ভয় পাও না কেন! কি সমস্যা তোমার!
আমি কি মজার আরেকটা খবর পড়বো তাইলে এখন?
তাঁর ঝিঁকিমিকি দাঁতের হাসি
কু ঝিকঝিক কু ঝিকঝিক কুঝিকঝিক
প্লাটফর্ম ছাইড়া চলে যাইতেছে ট্রেন
গোরস্থান
এইখানে আছে শিয়ালগুলি
আর এইখানে আছে আমার কবর
অরা মাটি খামচায়া বাইর করতেছে আমার লাশ
চান্দের আলোতে চক চক করতেছে অদের চোখ, ঘৃণায়
আর তাড়াহুড়া করতেছে
স্টেশন থিকা রাত বারোটার লাস্ট লোকাল ট্রেইন
ছাইড়া যাওয়ার আগেই যেন শেষ করতে হবে অদের কাজ
কবরের ভিতরে আমার লাশ
আমার কবর খুঁড়তেছে কয়েকটা শিয়াল, সা রা রা ত
জীবনানন্দ X জসীমউদ্দীন
“পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।”
“কাল সে আসিবে, মুখখানি তার নতুন চরের মতো”
সন্ধ্যাতারা
ফুল হইলেন চন্দ্রবাবু
ফুলে ফুলে লাগিল টক্কর
অতিকায় অন্ধকার নারিকেল গাছের আগায়
হায়-হুতাশ করতে করতে কইলো,
বাংলা-ভাষায় মন নাচতে চায় না আর,
লাগে নয় মণ ঘি, তারপরে
উঠান থাকে বাঁকা হয়া
এই কথা শুইনা
কমলা সুন্দরী যে, পিংক বার্বি’র মতো
পিট পিট করলো চোখ
যেন সন্ধ্যাতারা
নিরব গাইতেছে তাঁর গান
আর ঝিঁ ঝিঁ পোকারা ক্রিটিক করতেছে তারে,
“শোন, তোমার কবিতা লেখা তো হয় না, বুঝছো…”
পেয়ারার সুবাস
কি যেন ভালোবাসার মতো
আসে সকালে
পেয়ারা গাছের নিচে
দেয়ালের অইপার থিকা কিছু পাখি দেখে
চলে আসে এইপারে, খুঁইটা খুঁইটা খায়
আর বলে, “কি আজিব, এই ভালোবাসা!”
একটু একটু রইদ সবকিছুরে জাগায়া তোলে
রং বদলাইতে থাকে, পেয়ারা গাছের নিচে
পইড়া থাকে আমাদের দিন আর রাত, যেন কোনদিন শেষ হবে না
দুপুরের পরে
কি সুন্দর রইদের দিন!
রাস্তার পাশে, গাছের ছায়ায়
একটা কুত্তার মতো শুয়ে থাকার দিন।
অচিন পাখি
খাঁচার বাইরে বইসা
খাঁচাটার দিকে তাকায়া থাকতে থাকতে
পাখিটা বললো, না থাক, যাই গা!
সন্ধ্যাবেলায়
অনেক অনেক দিন আরো শুইয়া থাকতে চাই সন্ধ্যাবেলায়
অনেক অনেক দিন যেন আর কিছুই করার নাই
একটু দূরে, একটা বিল্ডিংয়ে কাজ করতেছে রাজমিস্ত্রি
ইটের পরে ইট গাঁথতেছে সে,
সন্ধ্যার আলোর সাথে সেও ভেসে যাইতেছে
কোথাও জবা, কোথাও গোলাপ ফুটতেছে চুপেচাপে
আমার ঘুমের ভিতর থিকা যেন সন্ধ্যা নেমে আসতেছে
অনেক অনেক দিনের পরে, এই পৃথিবীতে
থিংক ইন ইটসেলফ
হেইট্রেট তাদেরকে আরো কাছাকাছি নিয়া আসতেছে
আর ফেইলওর আমারে ডাবায়া দিতেছে দশ হাত মাটির নিচে
অথবা সামথিং ইম্পর্টেন্ট কিছু নিয়া আমরা ভাবতেছি,
ভাবতেছি আর ভাবতেছি
সাগরের পানিতে নুন হয়া ডুবে থাকতেছি
প্রেমের কবিতা
এক লাইনে তো ভালোবাসা-ই যায়,
দুই লাইনেও যায়; না বইলাও পারা যায়
তারপরও হাজার হাজার শব্দ লেখলাম আমি,
লেখলাম এমনিতেই, লেখলাম – ভালোবাসি না
ভালোবাসা – এইটুকই,
শাদা রুমালে রঙিন সুতায় লেখা:
“পারো যদি করে দিও ক্ষমা”
সকাল
সকাল তো হইলো,
কিন্তু সকাল হইলো না এতোটা
বাইরে দুপুরের মতো রইদ
আর ঘরের ভিতর পর্দা টাইনা দিলে
রাতেরই তো মতো
সকাল, ব্রেকফার্স্টের টেবিলে
চা-কফির কাপে নিজেরে সকাল বলতেছে;
বলতেছে, এইটাই আসল সকাল!
বাকি সব রাত আর দুপুর,
গাছের পাতায় পাতায়, সামনের রাস্তায়
ছড়ায়া যাইতেছে,
একটা সকালের ভিতর থিকা যেন
আরো দূর, আরো দূরে সইরা যাইতে হবে তারে
ফিরা আসার আগে
সকাল তো হইলো!
সকাল বলতেছে আমারে।
তার মানে হইলো, আমারেও চলে যাইতে হবে অন্য কোন দিকে
সকালবেলার রইদ
আমি যে তোমারে দেখি, এই দেখার কোন শেষ নাই
সকালের রইদ গড়াইতে গড়াইতে বারান্দা থিকা ঘরে চলে আসে
আমি যে তোমার কথা ভাবি, এর কোন শেষ নাই
Leave a Reply