এপ্রিল ১, ২০২৩
এইটা মনে হইতেছিল John Wick 4 দেখতে গিয়াই যে, আসল ভিলেনের লগে মারামারি কিন্তু খুব অল্পই হয় নায়কের। যে কোন একশন-মুভিতে ভিলেনের চেলা-চামুন্ডা, ছোট ছোট ভিলেনরে সামলাইতেই আসলে টাইম লাগে বেশি।
আগে তো ভাবতাম যে, সিনেমারে লম্বা করার লাইগা এইগুলা করে। এখন অইটা তো আছেই, কিন্তু তারপরও ভিলেন নরমালি দলবল নিয়া থাকে, একলা থাকে না। অই দলবল সামলাইতেই টাইম বেশি লাগে আসলে। অই ছোট-মাস্তানগুলারে সাইজ কইরা ফেললে পরে দেখা যায়, ভিলেন এতো “প্রবল পরাক্রমশালী” কিছু না! মানে, একটা লাস্ট ফাইট তো হয়-ই। কিন্তু ভিলেনের সাঙ্গাতগুলারে সাইজ করা লাগে আগে।
মানে, বাংলাদেশের পলিটিকাল অবস্থার লগেও এই জায়গাটারে একটু মিলায়া দেখতে পারেন।
এপ্রিল ২, ২০২৩
– নুন-ভাত হোক, ফেন-ভাত হোক বা মাছ-মাংস-চাইল
গরিবের চাওয়া দালালদের কাছে সবসময় ‘ফানি’ ঘটনাই –
বাকশালি বাটপারগুলা ঘটনাটারে এইভাবে দেখাইতে চায় যে, ১৯৪৩’র সময়ে মানুশ নুন-ভাত চাইতো, ১৯৭৪’র সময়ে চাইতো ফেন-ভাত, আর এখন চাইতেছে মাছ-মাংস-চাইল! তো, এইটা হইতেছে উন্নয়ন!
মানে দেখেন, এরা কিন্তু একসেপ্ট কইরা নিতেছে আজকে বাংলাদেশের অবস্থা ১৯৪৩ বা ১৯৭৪’র মতোই। যে, মানুশ নিজে আর যোগাড় করতে পারতেছে না, কিনতে পারতেছে না! চাইতেছে, হাত পাততেছে! এই পয়েন্টটারে মিস কইরা যাওয়াটা ঠিক হবে না।
সেকেন্ড হইতেছে, ফুড হ্যাবিটের ব্যাপারটারেও কন্সিডার করেন। ঢাকার কোন হোটেলে কি সবজি-ডাল দিয়া খাইয়া আসতে পারবেন, মাছ বা মাংসের কোন আইটেম ছাড়া! মানে, তাইলে তো হোটেল-বিজনেসই বন্ধ হয়া যাবে! আগের দিনে তো পোল্ট্রি ছিল না, ফার্মিং ছিল না; মানুশ নুন-ভাত, ফেন-ভাতই খাইছে। এখন ফকিন্নির বাচ্চাগুলা কেন মাছ-মাংস খাইতে চায়! চেত’টা আসলে এইখানেও! (নুন-ভাত বা ফেন-ভাত খাইতে চাইলে যেন খাইতে দিত, বা তখন দিছে!)
দুইদিন আগেও ভিখারিরা ২টাকা ভিক্ষা চাইতো, এখন ১০ টাকা ভিক্ষা চায়। (পরে পলিসি বদলাইছে, কয় খাওয়ার টাকা দেন। একটা রুটি খাইতেও তো ১০ টাকা লাগে।) এতে কইরা ভিখারিদের ‘উন্নয়ন’ হয় নাই, লিভিং স্যান্ডার্ড বাড়ে নাই, খরচ বাড়ছে, টাকার দাম কমছে। নুন-ভাত, ফেন-ভাত এবং মাছ-মাংস-চাইলের ঘটনাটা এইরকমেরই।
থার্ড বা মেইন ঘটনা হইতেছে, ব্যাপারটা এইরকম না যে, এরা ‘ভুল-কথা’ বলতেছে, এরা জাইনা-শুইনা এই হাউকাউ করতেছে, যাতে কইরা মানুশের দুরাবস্থার কথা কেউ না বলে। এইটা কোন লজিকাল কথা বা পজিটিভ-প্রপাগান্ডাও না, এই স্রেফ একটা থ্রেট!
একটা আগলি ফান! যে, এইগুলা নিয়া কথা বলা যাইবো না! বললে তোমাদেরকে নিয়া সুশীল-হাসি হাসবো, ফান করবো আমরা! তোমাদেরকে আমাদের দলে নিবো না।
মানে, এইটা লজিকাল কোন আর্গুমেন্টই না, বরং এক ধরণের ক্লাস মেনিফেস্ট করা যে, তোমাদের হায়-হুতাশ নিয়াও আমরা হাসি-ঠাট্টাই করি! যার ফলে এই দালালদের কথার কোন জবাব হয় না, এর যে বড় “ফান” কইরাই এর জবাব দেয়া লাগে। আর হইতেছেও সেইটাই।
…
মর্ডানিটির প্যারাডক্স: দুর্জন কি বিদ্বান হইতে পারে? বা বিদ্বান কখনো দুর্জন?
এই প্যারাডক্সে আমরা আনসারটা এইরকম যে, যিনি দুর্জন, তিনি আসলে বিদ্বান হইতে পারেন না। একইভাবে যিনি বিদ্বান তার পক্ষে দুর্জন হওয়াটা পসিবল না।
মানে, এই প্যারাডক্সের বেইজটা হইতেছে যে, আমরা যেন সবকিছু জানি! যেই প্যারামিটার দিয়া আমরা মাপতেছি – কে সুজন আর কে দুর্জন, কে মুর্খ আর কে বিদ্বান – এইটার ব্যাপারে খুবই কনফিডেন্ট না হয়া এইটা ভাবা’টা তো পসিবল না! সবকিছুই যেন আমরা মাপতে পারি, বুঝতে পারি। এক ফোঁটা কনফিউশন থাকলেই এই প্যারাডক্সটা আর পসিবল না।
যেমন ধরেন, সীতাকুন্ড পাহাড়ের (লিটারালি পাহাড়, হিল 🙂 ) ওজন কত? এইটা তো আমরা জানি না, এখন জ্যামিতি-ট্যামিতি কইরা ওজন বাইর করা যাবে-না না, কিন্তু সীতাকুন্ড পাহাড়ের ওজন তো আর তার সিগনিফিকেন্স না! বরং অইখানে একটা মন্দির আছে, জায়গাটা সুন্দর, এইগুলা হইতেছে এর সিগনিফিকেন্স। মানে, মাপামাপির দরকারই পড়তেছে না তেমন। ক্যাটাগরিটাই আলাদা!
আমি বলতে চাইতেছি, যারে দুর্জন বইলা জানি আমরা, তারে বিদ্বান বইলা মানতে পারাটা পসিবল না এতোটা। বা যে বিদ্বান তারেও দুর্জন মনে হইতে পারে না! পজিশন হিসাবে দুইটা একইসাথে আছে – এইটাই বেশিরভাগ সময় ভুল একটা অনুমানের ঘটনা। বা সেই অনুমানরে চ্যালেঞ্জ করতে পারার মোমেন্টটা হইতেছে এইটা।
এমনিতেও আমাদের জানা-বোঝা যদি আমাদের কাজকামে কোন চেইঞ্জ না আনতে পারে সেইটা তো কোন বিদ্যা হইতে পারে না। মানে, দুর্জন লোকরে বিদ্বান হিসাবে নিতে পারবো না আমরা। আর যদি কারো মধ্যে কোন বিদ্যা থাকে, সে এতোটা দুর্জনও হইতে পারার কথা না আসলে।
এখন যে কোন প্যারাডক্সই আসলে পারফর্ম করে বা এক্টিভ থাকতে পারে তার ইনহেরিয়েন্ট প্রিমাইজগুলা দিয়া। যদি অই জায়গাগুলা ধইরা টান দেন, বা কোন ধরণের নড়চড় করতে রাজি থাকেন, তখন সেইটা আর এফেক্টিভ থাকতে পারে না। এইভাবে মর্ডানিটির যেকোন প্রবাদ-প্রবচনই আর কোন কাজে আসে না আমাদের ডেইলি লাইফের এক্সপেরিয়েন্সে, বরং কিছু অলংকারই হয়া থাকে আসলে। এইরকমের প্যারাডক্সগুলা হইতেছে মর্ডানিটির কোর ঘটনা, যেই ভোঁতা ছুরি দিয়া কোন আপেল কাটা যায় না এখন আর।
এপ্রিল ৩, ২০২৩
আমার ভয় এইটা না যে, এই নয়া বাকশালের জুলুমের শাসন শেষ হবে না, বরং এইটা খালি ইকনোমিকালি বাংলাদেশরে দেউলিয়া করে নাই, আইডিওলজিকালিও নিজেরা দেউলিয়া হয়া সারছে। নিজেদেরকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা কইরা যাবে এখন, জুলুমের মাত্রা আরো বাড়াবে। যারা চালাক আছে, তারা বরং নিজেদেরকে ডিস-এসোসিয়েট করতে শুরু করার আর্জ ফিল করার কথা নিজেদের ভিতরে কিছুটা।
কিন্তু আমার ভয় এইটা যে, যেই ইন্টেলেকচুয়াল ও কালচারাল বেইজটার উপর এই জুলুমের শাসন দাঁড়ায়া আছে, সেইটা কন্টিনিউ হইতে থাকবে। হয়তো আরেকটু ফেক্সিবল হবে, বা আরেকটু কঠিন হবে; কিন্তু এর বেইজগুলার খুব বেশি নড়চড় হবে না। যেইরকমটা ১৯৯১’র পরে হইছিল। আমরা ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন পাইছিলাম, কিন্তু প্রো-পিপল গর্ভমেন্ট পাই নাই, আমলা-মিডিয়া-মিলিটারি-বিজনেসপারসনদের গর্ভমেন্ট পাইছিলাম যেইটা এমন ভয়াবহ একটা এলিট-সার্কেল তৈরি করছে, যার রেজাল্ট হইতেছে আজকের এই দুঃশাসন।
অবশ্যই ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশনটা হইতেছে মিনিমাম পয়েন্ট, এইটা দিয়াই শুরু হইতে হবে। কিন্তু একইসাথে এই এলিট-সার্কেলটারে ইন-ট্যাক্ট রাইখা বাংলাদেশে যে কোন গর্ভমেন্টরে ডেমোক্রেটিকালি অপারেশনাল থাকতে পারবে না, এই জায়গাটা নিয়াও কনসার্ন হওয়াটা দরকার।
এপ্রিল ৪, ২০২৩
– নয়া বাকশালের নিজেদের ঝগড়া –
পরথম আলো’র লগে নয়া বাকশালের আইডিওলজিকাল কোন বিরোধ নাই, বরং বাংলাদেশের নিউজ-মিডিয়া এস্টাবলিশমেন্ট হইতেছে এই অবৈধ শাসনের, নয়া বাকশালের অন্যতম “রূপকার”। তারপরও এই “ঝামেলা”টা বাধলো কেন?
কয়েকটা পসিবিলিটি আছে বইলা মনেহয়। সবচে পজিটিভ পসিবিলিটি হইতেছে, এতো জুলুম-লুটপাট তো আর নেয়া যাইতেছে না! একটা লিমিট তো আছে! এখনো যদি কথা না কন উনারা হিস্ট্রিতে তো ভিলেন হয়া থাকবেন। “সাংবাদিকতা” তো একটু হইলেও করা দরকার! একটা বাড়ি মাইরা বুঝলেন যে, পিরিতের (মানে, সাংবাদিকতা’র) বাজার ভালো না!
সেকেন্ড পসিবিলিটি হইতেছে, উনারা আসলেই একটু সরতে চাইতেছেন! যখন জুলুমের দিন শেষ হয়া আসে তখন জালিমের লগে ডিস-এসোসিয়েট করতে পারতে হয়, এরশাদের সার্পোটার’রা দেখবেন লাস্ট মোমেন্টে এরশাদের লগে ছিল না। এইটা সবসময়ই হয়। উনারা একটু আর্লি-মুভ কইরা ফেলছেন কিনা, এই কারণেও একটু পস্তানোর কথা এখন। যেই কারণে জামিন পাওয়াটারে “বিজয়” হিসাবে দেখাইতেছেন। তবে আগামী কিছুদিন এখন উন্নয়ন-জ্বালা মাইনা নিতে হবে মিডিয়া-রিয়ালিটি এডিক্টেডদের।
থার্ড পসিবিলিটি হইতেছে, এইটা আসলে পাতানো-খেলাই ছিল কিছুটা (মানে, কন্সিপিরেসির ঘটনা না, বরং মুভ’গুলা এক্সপেক্টেড ধরণের), বা আরো ক্লিয়ারলি বলতে গেলে, নয়া বাকশালের গেইমগুলা তো এইরকমেরই। একটা ডামি-বিরোধীদলের মতো কিছু ডামি-বিরোধী ফোর্স দরকার এখন। আর পরথম আলো বাটপার-বিপ্লবী হিসাবে সেই রোল প্লে করতে যে রাজি আছে, তার মহড়া দিল একটা।
এইখানে দুই পক্ষই জিতে নাই, বরং পক্ষ একটাই।
এপ্রিল ৮, ২০২৩
– সাপ ও সাপুড়িয়া –
এইরকম একটা জিনিস এখন মোটামুটি অনেকেই ফিল করতে পারতেছেন যে, এই নয়া বাকশালের অবৈধ গর্ভমেন্ট এবং বাংলাদেশে নিউজ-মিডিয়া মোটামুটি একই ঘটনা। এদের পলিটিকাল পজিশন এক – এন্টি-পিপল হওয়া, দেশের মানুশরে ‘অশিক্ষিত’ ‘মুর্খ’ এবং ‘আন-কালচারড’ মনে করা।
তো, এইটা খালি পলিটিকাল মিল না, এস্থেটিকাল বা রুচি’র মিলেরও ঘটনা। বাংলাদেশে আপনারে ‘শিক্ষিত’ ‘প্রগতিশীল’ এবং এমনকি ‘ভালো-ইসলামিস্ট’ হইতে হইলেও এই রুচি বা এস্থেটিক্সের সাবস্ক্রাইবার হইতে হবে, অই দলের লোক হইতে হবে।
মানে, এই পলিটিকাল পজিশনটা একটা প্রবলেম-না না, এইটা যেই রুচির জায়গা থিকা ডিরাইভ করা হয়, অইটা আরো ভয়াবহ এবং ডিপ-রুটেড একটা ঘটনা।
অই মিলের জায়গা থিকা না সরতে পারলে বাকশালের রাজনীতিরে মোকাবেলা করা যাবে বইলা আমার মনেহয় না।
২.
ডেইলি-স্টার, পরথম-আলো’র দাবিটা দেখবেন উনারা জাস্ট ডিএসএ চান না, নয়া বাকশাল তো ঠিকই আছে এমনিতে! মানে, সাপে কি সমস্যা, ছোবল না দিলেই হইছে! বা আমারে কেন ছোবল দিবে! আমি সাপুড়িয়া না! কিন্তু জুলুমের সাপ’টা তো বড় হইছে, তার অনেক খাবার দরকার, তার কোন বাছবিচার করার উপায় নাই এখন। যার ফলে খালি “সার্পোট” দিয়া হইবো না, “পূর্ণ আনুগত্য” লাগবে! একটু নড়াচড়া করলেই ছোবল খাইতে হবে। ডিএসএ না হইলেও অন্য কোন না কোন ফর্মে এইটা থাকবেই, যতদিন জুলুমের শাসন আছে দেশে। আর সাধারণ মানুশ এর সাফারার হবে।
৩.
বাংলাদেশে ‘সাধারণ মানুশ’ হওয়ার ক্রাইটেরিয়াটাও দিনে দিনে চেইঞ্জ হইছে। আমার মতে, এই রকমের একটা ট্রান্সফর্মেশন হইছে –
২০০৮ – ২০১৩: “আমি আওমি লিগ করি না, বিএনপিও করি না”
২০১৩ – ২০১৮: “আমি বিএনপি করি না”
২০১৮ – এখন পর্যন্ত: “আমি আওমি লিগ করি”
মানে, বাংলাদেশে আওমি লিগ না করলে আপনি ‘সাধারণ মানুশ’-ও হইতে পারবেন না এখন! বিএনপি করেন মানে আপনার নামে মামলা দেয়া, গুম করা, খুন করা ঠিকাছে! আওমি লিগ করলে না হয় একটা কথা!
তো, এই সাংবাদিক-সাপুড়িয়াদের কথা দেখবেন, আমরা তো আওমি লিগ করি! আমরা তো ‘সাধারণ মানুশ’ আমাদের নামে কেন মামলা দিবে! কিন্তু এই পলিটিকাল পজিশনটারে নিতে রাজি হওয়াটা ঠিক হবে না।
মানে, নয়া বাকশাল থাকুক, ডিএসএ না থাকলেই হইছে – এইটা কোন পলিটিকাল পজিশনই না! সাপ থাকবে, আরো মোটা-তাজা হবে, খালি আমারে ছোবল দিবে না – এইটা যেমন পসিবল না।
৪.
আমরা তাইলে কি করবো? ডিএসএ বাতিল চাইবো না? কেউ জুলুমের শিকার হইলে তার পক্ষে দাঁড়াবো না?
আমার কথা হইতেছে, “আমার আওমি লিগ করি” এইরকমের “সাধারণ মানুশ” হইতে আমি রাজি না। খালি সাপের ছোবল চাই-না না, সাপটারেও মারতে চাই! ডিএসএ’র বাতিল চাইনা না, এর যে গোড়া নয়া বাকশালের শাসন, তার শেষ চাই। এমনকি যেই রুচি’র উপর ভর দিয়া এই জুলুমের শাসন টিইকা আছে, বারবার ফিরা আসতেছে, সেই জায়গাগুলারেও মার্ক কইরা রাখতে চাই।
আর যারা এইটা চাইতে রাজি না, তাদের কাছ থিকা দূরে থাকতে চাই। এইটারে বাকশালের ইন্টারনাল ঝামেলা হিসাবেই রিড করি আমি। নিজেদের মধ্যে একটা নেগোশিয়েন উনারা কইরা নিতে পারবেন – এই আশাও আমার আছে।
কিন্তু উনারা যতদিন পাবলিকলি বাকশালরে ডিজ-অউন না করতে পারবেন, ততদিন উনাদেরকে সিমপ্যাথি দেখানোটা (যেইটার খুববেশি দরকারও নাই) বাকশালি-শাসনরে আরো টিকায়া রাখতেই হেল্প করবে বইলা আমার ধারণা।
এপ্রিল ৯, ২০২৩
বাংলাদেশি নিউজ-মিডিয়ার পলিটিকাল ইকোনমি
বাংলাদেশের নিউজ-মিডিয়া মানে নিউজপেপার, টিভি-চ্যানেল, নিউজপোর্টালগুলার এভারেজ প্রফিট কতো টাকা? মানে, বছরে কতো টাকা লাভ করেন উনারা? যেহেতু উনারা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি না, এই হিসাবগুলা তো আমরা জানি না। তবে আমার গেইস হইতেছে, বেশিরভাগ-ই লস কনসার্ন। লস কইরাই উনারা উনাদের মালিকদের* প্রফিট করায়া দেন।
আচ্ছা প্রফিট বাদ দেন, ইনকাম সোর্সগুলা কি? পত্রিকা বেচা বা ভিউয়ার/সাব-স্ক্রাইবার? 🙂 সার্কুলেশনের বা ছাপানোর ডেটা মোটামুটি ভুয়াই, সরকারি ডেটার মতন। যদ্দুর জানি, সার্কুলেশনের উপর বেইজ কইরা কাগজ আমদানি করতে পারেন উনারা, ট্যাক্স রিবেট পান; অই কাগজ বাজারে বেইচা দেয়াটা একটা মেজর ইনকাম সোর্স অনেক ‘নাম-সর্বস্ব’ নিউজপেপারের। আর বাংলাদেশের টিভি-চ্যানেল ভিউয়ার’রা তো মনেহয় ইউটিউবেই শিফট করছেন। এভারেজে কি রকম ভিউয়ার আছে একেকটা টিভি-চ্যানেলের? ৫ লাখ, ১০ লাখ? 😛
যেহেতু সাবস্ক্রাইবার নাই, ভিউয়ার নাই, প্রাইভেট কোম্পানিগুলার অ্যাড পাইতে পারার কথা না তেমন। আমার আন্দাজ না হইলেও ৭০% – ৮০% রেভিনিউ ফল করার কথা গত কয়েক বছরে। কারণ মানুশ যেইখানে বেশি কোম্পানিগুলা তো অইখানেই বিজ্ঞাপণ দিবে! এই কারণে মাঝখানে অনেক পত্রিকার একটা সাইড বিজনেস ছিল কোম্পানিগুলার দুর্নীতি নিয়া রিপোর্ট করা। যেইটা এক ধরণের ইন-ডাইরেক্ট থ্রেট হিসাবে কাজ করতো। এর রেজাল্ট হইছে যে, বড় বড় সব কোম্পানিই নিউজপেপার খুইলা বসছে। তা নাইলে কিছু টপ–লেভেলের সাংবাদিক কিইনা নিছে, যারা ডিসিশান-মেকার। নিউজপেপার, টিভি-চ্যানেলগুলার এই থ্রেট বরং ব্যাক-ফায়ারই করছে। তবে মফস্বল-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ‘নতুন দিগন্ত উন্মোচন’ করছে! 🙂
তো, বাদ রইলো সরকারি-বিজ্ঞাপণ। অইটার জন্য তো মন্ত্রি-এমপি-সরকারিদলেরনতাদের পত্রিকাই আছে! অন্যরা কিছু ভাগ-টাগ পায়। আমার ধারণা, এইখানে একটা সিন্ডকেট আছে।
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের নিউজ-মিডিয়ার বিজনেসে কোন প্রফিট নাই, বিজনেস অর্গানাইজেশন হিসাবে এইগুলা খুবএকটা এগজিস্ট করে না; বরং সার্টেন পলিটিকাল এজেন্ডা ফুলফিল করতে পারে বড়জোর।
হিস্ট্রি ঘাঁটলে দেখা যাবে, নিউজপেপারের শুরু কোন না কোন পলিটিকাল আইডিওলজি প্রচারের জায়গা থিকাই। বা একটা ন্যাশনালিজমের প্লেজার দেয়া। আর এই উদ্দেশ্য এখনো আছে। কিন্তু নতুন মোড অফ কমিউনিকেশনগুলা চেইঞ্জ হইতেছে, ন্যাশনালিজমের মেকাপ তো খইসা পড়তেছে। তেমন বেচা-বিক্রি আর হয় না।
নিউজ-পেপার, টিভি-চ্যানেল এবং নিউজ-পোর্টালের মেইন বিজনেস সিগনিফিকেন্স হইতেছে, যত না লস করে তার চাইতে বেশি লস দেখায়া মালিকের ট্যাক্স-বারডেন কমাইতে পারা। পলিটিকালি মেইন কাজ হইতেছে একটা পলিটিকাল দলের বা বড় বিজনেস গ্রুপের ব্যাক-আপ হিসাবে কাজ করা; কিন্তু এইখানে তাদের ইনফ্লুয়েন্স কইমা আসতেছে। একটা সাইনবোর্ড হিসাবেই থাকতেছে বড়জোর। ফিউচারে এই খাতের খরচে আরো ভাগ বসাবে সোশাল-মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা। (হিরো আলমরে হেইট করার এইটাও একটা প্রাইমারি রিজন।)
মানে, আমি তো আমার আন্দাজ দিয়া কিছু জিনিস মার্ক করার ট্রাই করলাম। কিন্তু আমার ধারণা, কিছু ডেটা-টেটা দিয়া কাছাকাছি রকমের কিছু কনক্লোশনেই পৌঁছাইতে পারবো আমরা যে, ইন্ডিপেন্ডেড জার্নালিজমের বেইজটাই বাংলাদেশে মিসিং আসলে। কোন পলিটিকাল-দল বা বিজনেস-গ্রুপের “স্বার্থসিদ্ধি” ছাড়া কোন নিউজ-মিডিয়া হার্ডলি এগজিস্ট করার কথা এইখানে।
…
নিউজ-মিডিয়াগুলার মালিক কারা? মানে, কোন কর্পোরেট কোম্পানি, এমপি-মন্ত্রি, পলিটিকাল নেতাদের বাইরে কোন মালিক কি আছেন নিউজপেপার, টিভি-চ্যানেলের? এই নিয়া কোন ডিটেইল রিপোর্ট দেখছেন কোথাও?
এপ্রিল ১০, ২০২৩
– কলোনিয়াল বাঙালি হওয়া বা না-হওয়াটা বাংলাদেশের মানুশের কোন চয়েস হইতে পারে না –
১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া ঢাকা ভার্সিটির চারুকলা ডিপার্টমেন্টের “মঙ্গল শোভাযাত্রা”রে আমি ৩টা কারণে সার্পোট করি না।
এক, কালচারালি এইটা পয়লা বৈশাখ’রে “বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য” বইলা দাবি করতে চায়। যেইটা খালি ভুল-ই না, বরং এই দেশের মানুশের ইতিহাস নিয়া হাসি-ঠাট্টা করার মতো ঘটনা। পয়লা বৈশাখে ঢোল পিটায়া মহাজনরা তাদের “পাওনা” আদায় করতো, যেইটা জমিদার-মহাজনদের জন্য “উৎসব”র ঘটনা হইলেও সব মানুশের খুশি হওয়ার কোন কারণ ছিল না, এখনো নাই। (এইটা খুব অবাক হওয়ার মত কোন ঘটনা না যে, হাজার বছরের বাংলা গান ও কবিতায় পয়লা বৈশাখ নিয়া কোন গান ও কবিতা পাইবেন না আনটিল রবীন্দ্রনাথ। কারণ এইটা আগে-পরে কখনোই “উৎসব” ছিল না।)
তাই বইলা নতুন কোন “উৎসব” করা যাবে না – এইটা কোন কথা হইতে পারে না, কিন্তু যেই কালচারাল হেরিটেজের কথা বইলা এইটা করা হয়, সেইটা ভুয়া এবং বাজে একটা জিনিস।
“পয়লা বৈশাখ উদযাপন” কমপ্লিটলি একটা আরবান ফেনোমেনা, যেইটা ৯০-র দশকে ঢাকা শহরে, স্পেশালি ভার্সিটি-কলেজগুলাতে শুরু হইছে। এরপরে জেলা-উপজেলা শহরগুলাতে ছড়াইছে “শিক্ষিত মিডল-ক্লাসের” মজমা হিসাবে।
এখন যে কোন সেলিব্রেশনই একটা ক্লাসের ঘটনা হিসাবে শুরু হয়, তারপরে সেইটা ইউনিভার্সাল হইতে শুরু করে।
কিন্তু পয়লা বৈশাখ সব মানুশের ঘটনা হয়া উঠতে পারে নাই পলিটিকাল কারণে। এইটা হইতেছে আমার সেকেন্ড পয়েন্ট’টা।
পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়রনি’টা হইতেছে এইটা এন্টি-এরশাদ একটা পজিশন থিকা শুরু হইলেও পয়লা বৈশাখ তারিখটারে ফিক্সড করা হয় কিন্তু এরশাদ-গর্ভমেন্টের সময়েই। এমনকি পয়লা বৈশাখের ছুটিও এই সময়েই শুরু হইছে কিনা – আমি শিওর না; মেবি ১৯৭১’র পরে কোন সময় শুরু হয়া থাকতে পারে, কিন্তু কোথাও কোন ডেটা পাইলাম না। তবে আগে এইটা ছিল চৈত্র-সংক্রান্তির ছুটি।
তো, নামে এরশাদ-বিরোধি একটা জিনিস হইলেও এইটা “সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধিতার” নামে একটা “বাংলাদেশ-বিরোধি” একটা ঘটনা হিসাবে এমার্জ করছে পলিটিকালি। যেইটারে অনেকে “ইসলাম-বিরোধী” বলতে চান। কিন্তু আমি মনে করি এইটারে ইসলাম-বিরোধী বলা হইলে এর পলিটিকাল সিগনিফিকেন্সরে আন্ডারমাইন করা হয়।
মানে, ব্যাপারটা এইরকম না যে, “মুসলমানরাও বাঙালি!” বরং ‘বাঙালি’ একটা জাতীয়তাবাদী ধারণা হিসাবে যে কলোনিয়াল-কলকাতার প্রডাক্ট – এই ক্রুশিয়াল জায়গাটারে এড়ায়া যাওয়ার রাস্তাটা তৈরি হইতে পারে তখন। ন্যাশনালিজমের পোশাক পরাটাই ভুল হবে এইখানে।
বাংলাদেশ একটা দেশ হিসাবে তৈরি হইছে কোন জাতীয়তাবাদী-ধারণা থিকা না, বরং একটা জিওগ্রাফিকাল লোকেশন এবং রিজিওনাল সাইনার্জির বেসিসে। ভাষা একটা ঘটনা এইখানে, ধর্মও একটা ঘটনা, কিন্তু কোর পলিটিকাল ঘটনা হইতেছে জিওগ্রাফিকাল কোহেরিয়েন্স (coherence)।
ভাষার কথা যদি বলেন, সিঅলটি মাতের লগে বরিশাইল্লা বুলির মিল খুব কমই আছে, এমনকি কে অংপুরের একসেন্ডে কথা কইতেছে আর কে চাঁদপুরের ধরতে পারবেন আপনি। কিন্তু এইগুলারে “আঞ্চলিক ভাষা” বললে ভুল হবে, এইখানে একটা কমন-গ্রাউন্ড আছে বুঝাবুঝির, অই বাংলাটারে বরং ধামাচাপা দিয়া রাখা আছে। বাংলাদেশের বাংলা কোনদিনই কলোনিয়াল-বাংলা ছিল না।
ধর্মের কথাও যদি বলেন বাংলাদেশের মুসলমান-ই পাঞ্জাব ও বিহারের মুসলমানদের চাইতে আলাদা না খালি, বাংলাদেশের হিন্দুও সাউথ-ইন্ডিয়ান হিন্দুদের মত না। বাংলাদেশের মুসলমানরাই অন্য দেশের মুসলমানদের তুলনায় কম-মুসলমান না, বাংলাদেশের হিন্দুরাও লোয়ার-কাস্ট। বাংলাদেশের মুসলমানরা খালি “হিন্দুদের মতো” না, হিন্দুরাও তো “মনেহয় গরু খায়”-টাইপ হিন্দু যেন! এইখানে মুসলমানদের যে “খাঁটি মুসলমান” হওয়ার চাপ আছে, হিন্দুদেরও “মুসলমানদের মতো” হয়া যাওয়ার ডর’টা আছে।
মানে, আমি বলতে চাইতেছি ভাষা এবং ধর্মের জায়গা থিকা কোন মিলের জায়গা নাই না, বরং অইটা সেকেন্ডারি ঘটনাই। যার ফলে যখনই এই দুই জায়গারে বেইজ কইরা কিছু করতে যাওয়া হয়, সেইটা পলিটিকালি সবসময়ই বাংলাদেশের মানুশের কোহেরিয়েন্সের বিরোধি একটা ঘটনা হয়া উঠতে থাকে। “মঙ্গল শোভাযাত্রা”-ও কলোনিয়াল আইডেন্টিটিটারে জাগায়া তুলতে গিয়া অই কাজটাই করতেছে। (আই হোপ যে, আমি পয়েন্ট’টারে ক্লিয়ার করতে পারছি।)
থার্ড পয়েন্ট’টারে মানতে অনেকে রাজি না-ও হইতে পারেন, আর জায়গাটারে যুক্তি-প্রমাণ দিয়া ক্লিয়ার করাটাও কিছুটা মুশকিলের। তারপরও আমি ট্রাই করতে চাইতেছি।
মানে দেখেন, অন্য কেউ না কইরা ঢাকা ভার্সিটির চারুকলাই এই কাজটা কেন শুরু করতে পারলো? আমার ধারণা, পারছে কারণ ঢাকার চারুকলা-ই হইতেছে বাংলাদেশের কোর কলোনিয়াল ইন্সিটিটিউশন, বাংলাদেশের শান্তিনিকেতন। (ছায়ানট না।)
(আর্টের লোকজন আমারে মাফ করবেন যদি ভুল বইলা থাকি) বাংলাদেশের গল্প, কবিতা, গানরে অনেক জায়গাতেই আপনি বাংলাদেশি বইলা কিছু সাইন-সিগনেচার দিয়া আইডেন্টিফাই করতে পারবেন, আলাদা করতে পারবেন; কিন্তু আর্টে এই জিনিসটা তো নাই-ই, বরং মুইছা ফেলার কিছু ঘটনাও থাকতে পারে বইলা আমার আশংকা আছে। মানে, ঢাকার চারুকলার যেই ইন্সিটিটিউশান প্রাইড সেইটা খালি অনেক বেশি “বাঙালি” হওয়ার না, বরং কোনভাবেই “বাংলাদেশি” হইতে রাজি না হওয়ার ঘটনা আসলে।
যেই কারণে ঢাকার চারুকলার ইন্সিটিটিউশন হিসাবে ইন জেনারেল যেই এস্থেটিকাল পজিশন আছে, সেইটাতে সাবস্ক্রাইব করাটা ঝামেলার। এমন না যে উনাদেরকে মোর বাংলাদেশি বইলা একটা কিছু হয়া উঠতে হবে, কিন্তু এই হেইট্রেটের জায়গাটা পার না হইতে পারলে, বাংলাদেশি বইলা একটা কিছু হয়া পড়ার ডর’টা থিকা বাইর না হইতে পারলে, কিছু ক্রিয়েট করাটাও পসিবল হবে না আসলে।
তো, পয়লা বৈশাখ সেলিব্রেট করা যাবে না – এইটা আমার পয়েন্ট না। কিন্তু যেই কালচারাল, পলিটিকাল এবং এস্থেটিকাল জায়গা থিকা আরবান শিক্ষিত মিডল-ক্লাসের প্রোগ্রাম হিসাবে এইটা চালু আছে, সেই জায়গাগুলা থিকা সরতে পারাটা দরকার। তা নাইলে এইটা একটা ফ্রি-স্পেইস ক্রিয়েট করার বদলে একটা এন্টি-পিপল পজিশনই হয়া উঠতে থাকবে দিনে দিনে।
এপ্রিল ১১, ২০২৩
বাকশাল পরথম-আলো বন্ধ করতে চায় না, আরেকটু বেশি কন্ট্রোল করতে চায়।
পরথম-আলো আরো বেটার ওয়ে’তে সার্ভ করতে পারে এই পলিটিকাল এস্টাবলিশমেন্টরে – এই ইশারা মেবি কেউ দিতে পারছেন। যেই কারণে বিনোদন-পাতার ও সাহিত্য-পাতার লোকজনেরা নিজেদেরকে মবিলাইজ করার সাহস’টা করতে পারছেন।
ব্যাপারটা এইরকম না যে, ডেইলি-স্টার পরথম-আলো’র ভিতরে কোন mole আছে; কিন্তু যারা আরেকটু সাবমিসিভ হইতে রাজি আছেন, তারা ব্যাপারটারে সামাল দিতে আগায়া আসতে পারেন বইলা আমার ধারণা। গডফাদার সিনেমার সূত্র অনুযায়ী যিনি এই নেগোশিয়েশনটার অফার দিবেন, তারে-ই mole বইলা ধইরা নেয়া যাইতে পারে অনেকটা 😌
বাকশালের ৪টা পিলারের একটা হইতেছে পরথম-আলো গং। মিলিটারি-পুলিশ, সরকারি-আমলা এবং সিভিল-সোসাইটির এলিটদের মধ্যে যেই “রিফর্ম” এবং “রি-স্ট্রাকচারিং”টা করা হইছে, নিউজ-মিডিয়াতেও এইটা করা দরকার তো!
এইরকম একটা পলিটিকাল নিডের জায়গা থিকা দেখতে পারলে মেবি বেটার।
এপ্রিল ১৪, ২০২৩
ব্যাপারটা এইরকম না যে, আমরা ‘শিক্ষিত’ বইলা সার্টেন জিনিস আমাদের ভালো-লাগে। [যেমন ধরেন, ভ্যান গগেঁর ছবি, বিটেলসের গান… এইরকম জিনিসগুলা।] এইগুলা তো আছেই। বরং বাংলাদেশে ‘শিক্ষিত’ হিসাবে নিজেরে পোর্টেট করতে হইলে, আমাদের সমাজের সার্টেন জিনিস যে আমরা জানি-না বা হেইট করতে পারি – অইগুলা দেখাইতে পারতে হয়। অই না-জানা এবং হেইট্রেটগুলা আসলে আমাদেরকে ‘শিক্ষিত’ কইরা তোলে। [যেমন ধরেন, শাহ আলম সরকারের গান, কে এই লোক, চিনি না তো…]
মানে, আমি বলতে চাইতেছি ‘বিদেশি’ এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল’ জিনিসপত্র আপনি চিনেন, পছন্দ করেন – এইটা বাংলাদেশে ‘শিক্ষিত’ ‘রুচিশীল’ হওয়ার একটা ক্রাইটেরিয়া অবশ্যই, কিন্তু তার চাইতে জরুরি হইতেছে যা কিছু ‘বাংলাদেশি’ [নট ‘বাঙালি’] এবং ‘লোকাল’ বা ‘অশিক্ষিত’ লোকজন পছন্দ করে তারে না-চিনা এবং অ-পছন্দ করা, ডিজ-অউন করা, পাবলিকল স্পেইসগুলাতে, আলাপগুলাতে।
এইটা নরমালি টের পাওয়া যায় ফেইসবুকের গান-কবিতা এইসব শেয়ার-টেয়ার দেইখা। টেস্ট বেসিসে, আপনার নিজের বা নিউজফিডের ১০টা গানের শেয়ার দেখেন 🙂
কেউ যদি বাংলাদেশি-সিনেমার কোনকিছু শেয়ার দেয়, ‘শিক্ষিত’ হিসাবে আপনারে সেইখানে হাহা রিএক্ট দিতে হইবো। মানে, ধইরা নিতে হবে, ‘ফান’ করার জন্য দিছে, বা ব্যাপারটা তো ‘ফানি’-ই, তাই না? 🙂
এপ্রিল ১৫, ২০২৩
ঢাকা শহরে বা বাংলাদেশে যারা জামা-কাপড় বা রেডিমেইড গার্মেন্টসের বিজনেস করেন, তারা আরো ভালো বলতে পারবেন; কিন্তু আমার একটা ধারণা হইতেছে, এইবারের ঈদের বেচা-কেনার অবস্থা আগেরবারের তুলনায় বেশ খারাপ।
মানে, ২০ কোটি মানুশের মধ্যে যারা টপ ১% (২০-২৫ লাখ লোক), উনারা দেশে যেই কেনাকাটা করেন সেইখানে কোন ইমপ্যাক্ট থাকার কথা না; ইভেন উনাদের যাকাতের কেনাকাটাও বাড়ার কথা।
এর নিচে যে মিডল-ক্লাস ৫%-১০% (কম কইরা হইলেও কোটি-খানেক লোক) উনারা স্ট্রাগল করলেও কেনা-কাটা বাদ দেয়ার কথা না।
কিন্তু এর নিচে যেই ৮০%-৯০% লোক আছেন, উনাদের “ঈদের কেনাকাটার” কথা আমি বলতেছি। অইটা মেবি সিগনিফিকেন্টলি কম হইছে/হইতেছে এইবার।
ঈদের তো আর এক সপ্তাহ বাকি আছে। নরমালি ১৫-২০ রোজার দিকেই ঈদ সেল শুরু হয়, কিন্তু এই সময়টাতে আইসাও অইভাবে “ঈদের কেনাকাটার” নিউজ আমরা দেখতে পাইতেছি না। অনেকেই আছেন ঈদের সময়টাতেই কেনাকাটা করেন। অইটা তো হবে কিছু। কিন্তু কতোটা হইতেছে আসলে? মুশকিল হইলো এইগুলার তেমন কোন ডেটা-টেটা নাই। যেইটার উপর বেইজ কইরা কিছু বলা যাবে।
এই কারণে মার্কেটে যারা বেচা-কেনা করেন উনারা সেইটা বেটার বলতে পারবেন। যদিও বিজনেস নিয়া পাবলিকলি কথা-বলা বিপদেরই জিনিস। কিন্তু হাবে-ভাবে একটু আন-ইউজ্যুয়ালই লাগতেছে।
মানুশ-জন “ঈদের কেনাকাটা” করতেছে না – ব্যাপারটা এইরকম জেনারেল কোন ঘটনা না; কিন্তু একটা বড় অংশ বাদ পইড়া যাইতেছে কিনা, বা বাজেটে কুলাইতে পারতেছে কিনা – এই আলাপগুলা মেবি মিসিং-ই আছে এখনো, পুরাটাই।
Leave a Reply