নোটস: জানুয়ারি, ২০২২ [পার্ট ১]

জানুয়ারি ১, ২০২২

একটা লিস্ট দেখলাম কয়দিন আগে, যেইখানে ‘হাইপ উঠার কারণে ফেমাস হইছিল, কিন্তু সিনেমা হিসাবে এতোটা ভালো কিছু না’ – এইরকম একটা লিস্ট বানানো হইছে। তো, কম-বেশি ঠিকই আছে জিনিসটা; পুরাপুরি একমত হওয়া তো কঠিনই। কিন্তু এইরকম একটা ক্যাটাগরি যে আছে, বা হইতে পারে – এই জিনিসটা পছন্দ হইছে।

অইখানে একটা সিনেমা ছিল, DUNKRIK; ক্রিস্টোফার নোলানের। অইটা দেখছিলাম আমি, এই কারণে কিছুটা রিলেট করতে পারছি। সিনেমা’টা যে খারাপ – তা না, কিন্তু হাউ-কাউয়ের কারণেই দেখছিলাম, যে আরে, ক্রিস্টোফার নোলানের সিনেমা! সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের কাহিনি! ফেসবুকের নিউজফিডে ১০টা পোস্ট, ম্যাগাজিনগুলাতে রিভিউ, ক্রিটিক’রা কথা কইতেছে, দেখা লাগবে তো! শুরু’র সিনটা ইন্টারেস্টিং ছিল। কিন্তু অই তো, এভারেজ মুভিই মোটামুটি। নোলানের সিনেমা নিয়া কথা কইতে গেলেও এইটা নিয়া খুববেশি কথাও হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু হিট ছিল তখন, আলাপের সাবজেক্ট ছিল একটা, ইনকামও খারাপ হওয়ার কথা না। তো, এইভাবে এভারেজ জিনিসই হিট হয় – তা না, কিন্তু এভারেজ জিনিসও হিট হইতে পারে।

আমাদের চারপাশে যেইসব জিনিস নিয়া কথা-বার্তা হইতেছে, সেইসব নিয়াই ইন্টারেস্টেড হই আমরা। অইগুলাতেই পার্টিসিপেট করি। এর বাইরে গেলে তো আসলে কথা কওয়াই পসিবল না। ধরেন, কয়দিন আগে DONT LOOK UP নিয়া যে মাতামাতি’টা হইলো, অইটা দেইখা মনে হইলো AVATAR যখন রিলিজ হইছিল, শতাব্দীর সেরা সিনেমাও মনেহয় বানায়া দেয়া হইছিল! 🙂 তো, এইরকম হয় আসলে। হওয়াটা দোষের কিছু না। কিন্তু দ্যান এগেইন, ইমোশনালি চার্জড-আপ হইতে পারাটা বা সেনসেশন ক্রিয়েট করতে পারাটাই গ্রেট আর্টের ঘটনা না আর কি সবসময়!
বরং আমি খেয়াল কইরা দেখছি, যে কোন নতুন আর্টের, সুন্দরের ‘হিট’ হইতে একটু টাইম লাগে, (সবসময় না হইলেও) বেশিরভাগ সময়। কারণ এইখানে যেই সুন্দরের ঘটনা’টা, সেইটা আমাদের এক্সপেরিয়েন্সের ভিতরে থাকে-না না, অনেকটা আবছা-ভাবে থাকে, সেইটারে কানেক্ট করতে টাইম লাগে একটু। চিনতে সময় লাগে। [ও, আরেকটা গ্রুপ অবশ্য আছে যে, ও, এই জিনিসটা হিট হয়া যাইতেছে! যাই, দুইটা গাইল দিয়া আসি! 😛 ] এই কারণে যখন কোনকিছু হিট হয়, সেইটা ‘খারাপ’ – তা না, কিন্তু ওভারহুইলমড হওয়ার আগে একটু টাইম নেয়াটা বেটার।

ট্রু আর্ট (লাইক ট্রু লাভ) অলওয়েজ টেইকস টাইম! 🙂

#########

কোন কিছু Accomplishment-এ বা এচিভমেন্টে আমার বিশ্বাস আসলে কমই; যে এইটা আমার জীবনের সেরা কাজ, এইটা এই বছরের এচিভমেন্ট, এই বছরের goal এইগুলা… এইরকম জিনিসগুলা। মানে, এইগুলা যে হয় না – তা তো না; কিছু কাজকাম তো থাকেই, আর এইগুলা করার ভিতরে স্যাটিসফেকশনও আছে, থাকেই। এমনকি পিসফুলও লাগে যে, এই কাজটা আমি করছি। অনেক সময় লোকজনের উপকারও হয়। কিন্তু এর লগে এইটা বুঝতে পারাটাও ভালো যে, এইগুলা’তে তেমন কিছু যায়-আসে না আসলে। ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম যে, কিছু জিনিস তো করা লাগবে আমাদের, আর আমাদের কাছে যেইটা বেস্ট মনেহয় সেইগুলা আমরা করতেছি বইলাই এইগুলা খুব মিনিংফুল হইতে হবে না।

দ্যান এগেইন, লাইফের কোন মানে নাই, সবকিছু হুদাই – এইটা আমার পজিশন না। বরং আমাদের কাছে যেইটা ইম্পর্টেন্ট দুনিয়ার সব মানুশের কাছে সেইটা একইরকম হইতে হবে, বা নোটিশেবল কিছু হইতে হবে – এই জায়গাটারে যতোটা অ-দরকারি করা যায়, ততটা ভালো। মানে, অন্য মানুশের ক্ষতি না করলেই হইছে। এক্সপেক্টশন কম-রাখা না, অইটারে প্রায়োরিটি হিসাবে না নেয়াটা। এমনকি ঠিকঠাক মতো কাজটা করতেও হেল্প করতে পারে সেইটা।

মানে, এখন যেইরকম একটা চাপ আছে, রেজাল্ট-অরিয়েন্টেড হওয়ার; দ্য এন্ড জাস্টিফাই দ্য মিনস – এইসব থিকা সরতে পারাটা বেটারই মনেহয়।

 

জানুয়ারি ২, ২০২২

মাঝখানে এই জিনিসটা বেশ পপুলার হইছিল, এখনো আছে মনেহয় ফ্যাশন হিসাবে, হিস্ট্রিক্যাল ঘটনাগুলারে পারসোনাল জিনিস হিসাবে রিডিউস কইরা রিড করা। যে, হিটলারের তো বিচি ছোট ছিল, স্ট্যালিন বেশি গাঞ্জা খাইতেন, আর এই কারণে উনারা জালিম হয়া উঠছিলেন! বা, যা-ই বলেন, মুসোলিনী’র ভাষণ যেই সুন্দর, শুনছেন! বা, হাজার হোক, আমাদের প্রাইম-মিনিস্টার তো মা, একজন নারী!…

মানে, এইরকম পারসোনাল জায়গাগুলা যে নাই – তা না, কিন্তু এইগুলারে হিস্ট্রিক্যাল ঘটনাগুলার চাইতে বড় কইরা তোলা’টা সার্টেন পলিটিক্যাল এজেন্ডারই ঘটনা। যেন কারো কোন পারসোনাল ট্রমা’র কারণে এইরকম হিস্ট্রিক্যাল ঘটনাগুলা ঘটতেছে! তা নাইলে ঘটতো না!

তো, এইগুলা কন্সপিরেসি থিওরি’রই আরেকটা ভার্সন, সায়েন্টিফিক ‘কুসংস্কার’-ই মোস্টলি। কোন ক্রিটিক্যাল আলাপের ঘটনা না আসলে।

#########

এই জিনিসটা একটু আজিব-ই লাগে আমার কাছে যে, একজন এভারেজ মানুশ হিসাবে আমি লোকজনের লগে যেইরকম নরমাল ভালো-বিহেভ করি, এইরকম নরমাল টাইপের বাজে-বিহেভই তো করি! কিন্তু মানুশ-জন মনে হইছে আমার বাজে-বিহেভ’টা নিতেই পারে না! অনেকদিন পর্যন্ত মনে রাখে। মানে, কাছের লোকজন তো আছেই, এইসব কম-বেশি হয়ই, ইমোশনাল এটাচমেন্ট থাকে, অইটা মাইনা নেয়া যায়, ফ্যামিলি আর ফ্রেন্ডদের ব্যাপারটা। যে, ভালো-বিহেভ মনে থাকে না, একটা খারাপ-বিহেভ করলে সেইটা মনে নিয়া বইসা থাকবে, দশ বছর পরে গিয়াও খোটা দিবে। কিন্তু ধরেন, একবারের দেখা, একবারের আলাপ, উনারাও খুব মন-খারাপ করেন। এইটা বেশ ঝামেলার।

আজকে সন্ধ্যাবেলায় যেইরকম, একটা দোকান থিকা একটা জিনিস নেয়ার কথা সন্ধ্যা ৭টার সময়। আমি পৌনে আটটার সময় গেলাম।

দেখলাম জিনিসটা রেডি হয় নাই। টং কইরা মেজাজ’টা গেলো খারাপ হয়া, কইলাম, ভাই না দিতে পারলে কইবেন যে, আজকে দিতে পারবো না, এক ঘন্টা পরেও আইসা বইসা থাকতে হবে কেনো! কখন দিতে পারবেন বলেন! কইলো, এই তো ১০/১৫ মিনিট! আবারো মেজাজ খারাপ হইলো, জানি আধা-ঘণ্টার আগে দিতে পারবে না। মুশকিল হইলো, চেহারায় কিছু লুকাইতে পারি না আমি। আমার চেহারা দেইখা যে কেউ বইলা দিতে পারবে আমি খুশি আছি নাকি বেজার; বা কতটুক বেজার হইতেছি। তো, দোকান থিকা বাইর হয়া গেলাম। এইদিক-সেইদিক ঘুরলাম। শপিংমল বন্ধ হয়া আসতেছে। আধাঘন্টা পরে গিয়াও দেখলাম জিনিসটা আসে নাই। দোকানদার ছেলেটা এইটা-সেইটা বইলা সরি বলতেছিল। আমি মুখ-বেজার কইরা বইসাই থাকলাম। কিছু কইলাম না আর। তো, ৫-৭ মিনিট পরে জিনিসটা আসলো। আমি টাকা দিয়া নিয়া নিলাম। কিছু ‘ভালো-ব্যবহার’-ও করলাম। ততক্ষণে মার্কেট মোটামুটি বন্ধ হয়া গেছে। আমি কিছুদূর চইলা যাওয়ার পরে দোকানের ছেলেটা আগায়া আইসা কইলো, কোনদিক দিয়া যাইতে হবে। অর চেহারা দেইখা খারাপ-ই লাগলো। মানে, আমি তো ভাই, অইরকম বাজে-বিহেভ করি নাই!

মানে, লোক হিসাবে আমি এভারেজ ‘বাজে-বিহেভ’-ই করি, কিন্তু লোকজন এতো মন-খারাপ কেনো করে! এইটা ভাইবা আমারও একটু মন-খারাপ হয় আর কি! 🙁

#########

(সব মানুশের যেইরকম থাকে, অইরকম) আমার অনেক দরদ আছে, যেইগুলা আমি আসলে অইভাবে বলতে বা শো করতে পারি না। তো, আমার ধারণা, আমি যখন লেখি, অই জায়গাগুলা আমার লেখার ভিতরে একভাবে থাকে, বা ওয়ে-আউট খুঁইজা পায়। মানে, যখন আমি লেখতেছি, যত খারাপ-ই লেখি, আমি আসলে কাউরে, কোনকিছুরে ভালোবাসার কথাই বলতে থাকি একভাবে। তো, আমার ধারণা, কেউ কেউ সেইটা শুনতেও পায়, হয়তো। যার ফলে একটা কানেকশন তৈরি হইতে পারে অনেক সময়, অনেক রিডারের সাথে। যদিও ফ্রেজাইল, অল্প সময়ের, কিন্তু ট্রু। বা, এইরকম একটা জিনিস, একটা কানেকশন আমি এক্সপেক্ট করি, আমার লেখালেখির ভিতরে।…

#########

এইরকম একটা ধারণা আছে যে, জানা-শোনা খুব অবজেক্টিভ ঘটনা, এবং অবজেক্টিভ মানে হইতেছে ইমোশনলেস হইতে হবে। অথচ ঘটনা হইতেছে মিনিমাম কোন ইমোশনাল (বা সেন্সরি) কানেকশন ছাড়া কিছু জানা’টা মুশকিলই আমাদের। যে কোন জানা-শোনা একটা কানেকশনের ঘটনা।

ব্যাপার’টা এইরকম না যে, সবকিছু এক্সপেরিয়েন্সের ভিতর দিয়া আসতে হবে, বরং অনেকসময় এই এক্সপেরিয়েন্স জিনিসটাই ইল্যুশনারি হয়া উঠতে পারে। যেইভাবে আমরা জানতেছি, সেই জিনিসটা নিয়াই চিন্তায় পড়তে পারি আমরা। কিন্তু সার্টেন ‘এক্সপেরিয়েন্স’-এর ঘটনা আসলে এই জানা-শোনার ব্যাপার। আর কখনোই ইমোশনলেস একটা ঘটনা না।

 

জানুয়ারি ৩, ২০২২

এই যে বছর শেষে, নানান লাভ-ক্ষতির হিসাব হয় বিজনেসগুলার, এইগুলা দেখলে একদিকে হাসি আসে, আবার মেজাজ খারাপও হয়। কারণ, বড় বড় কোম্পানিগুলা কাগজে-কলমে যেই প্রফিট দেখায়, অইগুলা তো প্রফিটের জায়গা না আসলে; বরং অই প্রফিট যত বেশি হয়, তত লস। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হইলে প্রফিটের ভাগ পাবলিক শেয়ারহোল্ডারদের দিতে হয়, ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ে, নানান ঝামেলা।

আসল প্রফিট হইতেছে expenditure বা খরচের জায়গাগুলা। কোম্পানির মালিক হিসাবে নিজে একটা বিল্ডিং বানায়া অইটা ভাড়া দিবেন কোম্পানির কাছে, ১০ লাখ টাকার জায়গায় ৫০ লাখ ভাড়া নিবেন। পুরাটাই লাভ! ইন্টিরিয়র/মার্কেটিং/সফটওয়ার কোম্পানি বানায়া নিজের কোম্পানির কাছে বেচবেন। মানে, যত যা খরচ করবেন, সব নিজেদের পকেটে যাবে, বোর্ডের এবং ম্যানেজমেন্টের উপরের দিকের লোকজনের ছোট ছোট কোম্পানিতে। যত এক্সপেন্ডিচার বাড়াইতে পারবেন, ততই প্রফিট! [নরমাল প্রফিট হবে না – তা না, অইটা দিয়া বিজনেস করতে গেলে বিজনেস কন্টিনিউ করা টাফ হওয়ার কথা।]

ছোট ছোট বিজনেসগুলাতেও, মুদির দোকানের লাভ আসলে কেনা-বেচা’তে না, বরং ওজন কম দিতে পারা’তে। ঠিক ওজনে জিনিস বেচলে প্রফিটই করতে পারবেন না আপনি, মার্কেটের দামের লগে কম্পিট-ই করতে পারবেন না! মানে, যেইসব প্যারামিটার দিয়া বিজনেস পারফর্মেন্স মাপামাপি করা হয়, অইগুলা দিয়া বিজনেস আসলে হয় না এতোটা, বাংলাদেশে।

[তার মানে, পুরাটাই ধান্দাবাজি না; কিন্তু অই এলিমেন্টগুলারে বাদ দিলে বিজনেস-কালচার’রা ধরা যাবে না; ধরা-ই খাইতে হবে।]

 

জানুয়ারি ৪, ২০২২

সব বছরেই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস আসলে দেখবেন এক ধরণের মাতম উঠে, বাংলাদেশের লোকজন বই কিনে না! খুবই ভুয়া কথা এইটা। বাংলাদেশের লোকজন বই কিনে-না না, বাংলাদেশের মানুশদের লাইগা কোন বই লেখা হয় না।*

বাংলাদেশের রাইটার’রা বই লেখেন কলকাতার মরা বাবু-সাহিত্যের ধারা বা ট্রাডিশন মাইনা, এবং ঢাকায় যারা অই সাহিত্য-চিন্তার এজেন্ট সেইসব লোকজনের হাততালি, রিকগনিশন, ‘খুব ভালো হয়েছে’ টাইপের ভং শোনার লাইগা। এইটাতেই মাল-আউট (মানে, অর্গাজম) হয় উনাদের।

ঢাকার বইমেলায় ছাপা-হওয়া ৯৯.৯৯% বই হইতেছে ট্রাশ, হাতে গোণা কয়েকটা একসেপশন ছাড়া। বাংলাদেশে ছাপা-হওয়া গত ১০ বছরের কোন ‘সাহিত্যের’ বই যদি আপনি না-পড়েন, তেমন মেজর কিছুই আপনি মিস করবেন না। যদি বাংলা-ভাষায় কবিতা, ফিকশন, চিন্তার বই লেখতে চান, না পড়াটা বরং বেটার। ফ্রেশ স্টার্ট করাটা সহজ হবে তখন।…

বাংলাদেশে দুই-চাইর’টা পাবলিশার ছাড়া সবাই হইতেছে প্রিন্টিং সার্ভিস দেয়ার লোক। লেখক বই ছাপাইতে চাইতেছে, উনারা বইটা ছাপায়া দেন। পাবলিশার হিসাবে কোন বাছাই, কোন ভ্যালু-এডিশন, কোন ডিফরেন্স পাইবেন না। অনেক ‘পাবলিশারদের’ মেইন বিজনেসই হইতেছে সরকারি অফিসগুলাতে দালাল ধইরা বই সাপ্লাই দেয়া। তা নাইলে একশ বছর আগের কলকাতার বইগুলার রিপ্রিন্ট করা, এমনকি কলকাতা থিকা বই ইমপোর্ট কইরা আইনা বেচা। [কলকাতার ১০,০০০ বই বাংলাদেশে বেচা হইলে বাংলাদেশের ১টা বই বেচা হওয়ার কথা ইন্ডিয়ায়। অনুমান কইরাই কইলাম, কিন্তু হিসাব করলে ঘটনা হয়তো আরো খারাপই হবে মনেহয়।]

এখন কলকাতার সাহিত্যিক’রা ইন্ডিয়ার কথাই তো কইবেন, এইটা উনাদের দোষ না; কিন্তু এইগুলারে ‘বাংলা-সাহিত্য’ বইলা বেচাটা হইতেছে কালচারাল ক্রাইম। কিছু বাটপারদের এই সেন্স থাকলেও বেশিরভাগ বলদদের এই সেন্সটাও নাই। এরা কিছু আরবি-ফার্সি শব্দ ইউজ কইরা (বাংলা না, বরং) ‘মুসলমানি-বাংলা’ হইতে পাইরাই খুশি, বেশিরভাগ সময়।

মানে, কলকাতায় ছাপা-হওয়া বই খারাপ, পড়া যাবে না – ঘটনা’টা এইটা না, বরং অইগুলা তো ইন্ডিয়ারই জিনিস! ইংলিশে লেখা বইলাই বৃটিশ লিচারেটার যেমন আম্রিকান বা কানাডিয়ান লিটারেচার না।

এইখানে বাংলাদেশের কবিতা, ফিকশন, চিন্তার বই যে তৈরি হয় না তার কারণ এইটা না যে, ‘পাবলিক বই কিনে না’! বরং বাংলাদেশের লিটারেচার’রে এখনো কলকাতা-সাহিত্যের একটা সাব-ব্রাঞ্চ হিসাবে ইমাজিন কইরাই রাইটার’রা লেখতে থাকেন। বাংলাদেশের পিপলের কালচারাল আইডেন্টিটি’র জায়গাটারে উনারে নিতে পারেন না, বা নিতে রাজি না।

এই জায়গাগুলারে ‘জাতীয়তাবাদী’ রাজনীতি বইলা এড়ায়া যাওয়াটা সহজ, কিন্তু যেই পরিমাণ গু-গোবর এইখানে জমা হয়া আছে, তা থিকা সরতে পারা অনেকজন রাইটারের অনেকদিনের কাজ। বইমেলা টাইপের শো-অফের ঘটনা দিয়া কিছু হবে না।

বই মানে কনটেন্ট; চিন্তা, ভাষা। ধার-করা ভাষা দিয়া নিজের চিন্তা করতে পারবেন না আপনে, নিজের কথা কইতে পারবেন না, নিজের বইও বানাইতে পারবেন না।


*লেখতে গেলেও দেখবেন বলা হয়, ভাষা শুদ্ধ হয় নাই। মানে, লেখা হয় না – ঘটনা’টা এইটাই খালি না, বরং লেখতে দেয়া হয় না আসলে!

 

জানুয়ারি ৪, ২০২২

এই জিনিসটা আগেও মনে হইছে, কিন্তু Moazzam Azim ভাইয়ের কিছু ছবি’র পোস্ট আর অইখানে একটা কমেন্ট আর রিপ্লাই দেইখা জিনিসটা মনে হইলো আবার। যে, আমি যখন বিয়া’র পরে, চাকরি-বাকরি করার পরেও লেখালেখি কন্টিনিউ করতেছিলাম, তখন লোকজন সন্দেহ করতে শুরু করে “ওর মনে মনেহয় অনেক দুক্খ!” বা খুব অ-সুখী অবস্থায় আছে! কারণ, তা নাইলে লেখালেখি কেনো করবে!

সাইকোলজিস্টরা দেখবেন মেন্টাল প্যাশেন্টদেরকে ডাইরি লেখার সাজেশন দেয়। আবার বিনয় মজুমদারও কইছেন, “দুঃখ ভুলে গেলে কবিতা লেখা যায় না।” মানে, কবি বা রাইটার প্যাথেটিক একটা কারেক্টার তো! কিন্তু এর পুরাটাই সত্যি কথা না, বরং একটা ‘দেখার ভঙ্গিমা’ই আসলে এইগুলা।

খুব সাকসেসফুল লাইফ না কাটাইলেও সমাজের এভারেজ মানুশের মতো কিছু বাজে-ঘটনাসহ ‘হ্যাপি’ এবং ‘পিসফুল’ লাইফ আমি কাটাইছি। কিন্তু ঘটনা যেইটা হইছে ‘হ্যাপি’ হইতে পারাটা বা লাইফরে এনজয় করতে পারাটারে আমার লাইফের মঞ্জিলে মকসুদ বানাইতে পারি নাই। তাই বইলা ক্যাওটিক একটা লাইফ আমি চাইতেছি না। একজন ক্রিয়েটিভ মানুশ সবসময় এক ধরণের মিনিংয়ের [শব্দটা এনাফ না] জন্য স্ট্রাগল করেন। অইটারে এড়ানোর কোন রাস্তা নাই, অইটাই তার রাস্তা। অইটা সুখ বা দুক্খের ঘটনা না। সাফারিংস বা প্লেজারের জিনিস না। এইটা একটা জার্নি, যেইটা একজন ক্রিয়েটিভ পারসন বাইছা নিছেন।

মানে, এইভাবে দেখতে পারা’টা বেটার একটা পারসপেক্টিভ।

#########

ধরেন, ১৯৭৫ সালে বাকশাল না, জাসদ-ই বিপ্লবের নাম দিয়া ক্ষমতা-দখল কইরা ফেললো; বা ধরেন সিরাজ শিকদারই উনার সব ইম্ম্যাচুরিটি নিয়া সাকসেসফুল হয়া গেলেন। আমরা কি বাকশালের চাইতে কম জুলুমের একটা শাসন পাইতাম? নাকি উনারা আরো বড় বাকশাল হইতেন?
আমরা জানি না।

কিন্তু যেইটা বুঝতে পারাটা দরকার আমাদের, উনারা বাকশালেরই আরেকটা ভার্সন হইতেন। মানে, বিপ্লবের নাম দিয়া উনারা নন-ডেমোক্রেটিক কোন শাসনই চালাইতেন।

কোনরকম পিপল-পার্টিসিপেশনের ভিতর দিয়া উনারা দেশ চালাইতেন – এইটা এক্সপেক্ট করার তেমন কোন কারণ আছে বইলা মনেহয় না। এখনো দেখেন, জাসদের লোকজনই এই নয়া বাকশালের পার্ট, সিরাজ শিকদার’রে যারা সার্পোট করেন, উনাদের অনেকেই মনে করেন, ভোট দিয়া কিছু হবে না! জনগণ অশিক্ষিত, এবং নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝে না! [আমি গ্রসলিই বলতেছি। কিন্তু জিনিসগুলা খুববেশি ডিফরেন্টও না মনেহয়।]

তো, এই যে ‘বিপ্লবী-পণা’ করা লোকজন, উনারা ‘খারাপ-মানুশ’ বা ‘বুঝেন না’ – এইসব জায়গার বাইরেও উনাদের আইডিওলজিক্যাল বেইজটা যে একটা এন্টি-পিপল পজিশন হিসাবে জুলুমের সার্পোটিং টুল হিসাবে কাজ করে, এইটা উনারা মানতে রাজি না আসলে। উনারা ‘বিপ্লব’ করতে চান না – ঘটনা এইটা না, বরং উনারা আসলে কখনোই উনাদের এন্টি-পিপল হায়ার্কির (ব্রাহ্মণ্যবাদের, এলিটিজমের) জায়গাটারে ছাইড়া দিতে রাজি না।

এতোদিন পরে আইসাও যদি এই মিলের জায়গাটারে আমরা খেয়াল না করি, ইগনোর করতে থাকি, সেইটা পলিটিক্যালি কোন ভালো কাজ হওয়ার কথা না।

২.
বিপ্লবীরা সব বাকশালি – এইটা আমার কথা না, কিন্তু খেয়াল কইরা দেখবেন নয়া বাকশালের লোকজনও কিন্তু ‘বিপ্লবীদের’কে [কমিউনিস্ট হোক আর ইসলামিস্ট] শত্রু হিসাবে ভাবে না 🙂 বরং “পরে আরো খারাপ কিছু আসতেছে” বইলা যেই প্যারানয়া’টা আছে তারে সাসটেইন করতে যে হেল্প করে অরা। এই কারণে ‘ছোডভাই’ (ছোট বাকশাল) হিসাবে পছন্দই করার কথা।

চারপাশে এতো প্রভোকেশন থাকার পরেও, ইভেন বাকশাল তো ডাইরেক্ট কনফ্রন্টেশন ছাড়া কোন পথই খোলা রাখে নাই, তারপরও, খালেদা জিয়া এবং বিএনপি যে কোন ধরণের ‘বিপ্লবপণা’রে মাস্ট কইরা তোলেন নাই, ভোট দিয়াই গর্ভমেন্ট বদলানোর কথা বলতেছেন সবসময়, এর জন্য বাংলাদেশের লোকজন উচিত শুকরিয়া আদায় করা।

মানে, বিএনপি’রে গালি-গালাজ তো উঠতে বসতেই করতে দেখি অনেক ‘নিরপেক্ষ’ বিপ্লবীদেরকে যে, আন্দোলন করতে পারে না, এই-সেই। কিন্তু উনারা যে জাসদ বা সিরাজ শিকদার হন নাই (চাইলে হইতে পারতেন কিনা, সেইটা আরেকটা আলাপ) সেইটা রিকগনাইজ করাটাও দরকার আমাদের।

##########

ভক্তি-শ্রদ্ধা খুব দরকারি জিনিস। যেই লোকের উপর আপনার কোন রেসপেক্ট নাই, সেই লোক ভালো-কথা কইলেও দেখবেন সন্দেহ হবে, ফেইক মনে হবে। আর যারে ভাল্লাগে, তার এভারেজ জিনিসরে ‘ওয়াও!’ মনে হয় অনেক সময়। মানে, রেসপেক্ট থাকলে নেয়াটা সহজ হয়। যে কোন জানা-শোনা বা লার্নিংয়ের জন্য এইটা জরুরি জিনিস।

তো, আমার এইরকম কিছু পছন্দের লোক আছেন। এর মধ্যে একজন হইতেছেন সাইকোলজিস্ট Dan Ariely. কয়দিন আগে Wall Street Journal-এ ওপেন কোশ্চেনের আনসার দিতেছিলেন উনি। জিনিসটা ইন্টারেস্টিং, লোকজন একটা পারসোনাল জায়গা থিকা কোশ্চেন করতেছে, আর উনি একটা জেনারেল জায়গা থিকা উত্তর দেয়ার ট্রাই করতেছেন। মানে, আরো কিছু অল্টারনেটিভের কথাই সাজেস্ট করতেছেন আসলে।

এর মধ্যে ৩/৪টা কাহিনি আমার ভাল্লাগছে। (সবগুলা উনার ব্লগে গিয়াও পড়া যাবে, কমেন্টে লিংক দিতেছি।) একটা হইতেছে, এক লোক কইতেছে, আমি খুব এনভায়রনমেন্ট-কনশাস মানুশ, লোকজন যে এখন হোম-অফিস করার কারণে কম ড্রাইভিং করে, এইটা ভাল্লাগে আমার কাছে, আর কি করা যাইতে পারে? ডেন কইলো, একজন লোক যে কিনা ডেইলি ৪ ঘন্টা ভিডিও স্ট্রিমিং করে, সে যদি হাই-কোয়ালিটি স্ট্রিমিং না কইরা স্ট্যান্ডার্ড রেজ্যুলেশনে করে তাইলে মাসে ৯৩ মাইল ড্রাইভিং না করার সমান কার্বন সেইভ করতে পারে! 🙂 মানে, যা কিছুই আমরা করি, বেটার ওয়েতে করতে পারি আসলে যদি এনভায়রনমেন্ট বলেন, অন্য যে কোন কিছুই বলেন, যদি সেন্টার/ফোকাসের জায়গাতে রাখতে পারি। মানে, আমার মনে হইছে আর কি!

আরেকজন কইতেছিল, তার গ্রুপের বস হয়া গেছে সে এখন, তো, কলিগদেরকে কেমনে ম্যানেজ করবে? ডেন কইতেছে, থ্যাংকিউ বেশি বলবা, গ্রাটিচুড শো করবা। পাওয়ারফুল লোকজন থ্যাংকিউ কইতে পারে না অন্যরে, মনে করে এইটা খালি তার পাওনা! 🙂 আরেকজন কইলো তার বাচ্চা-মেয়ে টিকটকে একটা ড্যান্স দেখতে দেখতে এতোটাই একসাইটেড হয়া গেছে যে, বলতেছে আমি এইটা করতে পারবো, তো, নাচতে গিয়া আর পারে নাই! খুবই হতাশ হইছে শে। ডেন কইলো, একটা জিনিস হাজারবার দেইখাও শেখা যায় না, কোন কিছু শেখা হইতেছে প্রাকটিসের ঘটনা। খালি চিন্তা-ভাবনা কইরা হয় না, কোন কাজ না করলে পারা যায় না!

এইসব আর কি…

 

জানুয়ারি ৫, ২০২২

[ফেইসবুকে একটা জিনিস ট্রেন্ডি হইছে, লোকজন এডভাইস চাইতেছে: নিজের ভুল থিকা আমারে কিছু সাজেশন দেন – এইরকম। ভালো জিনিস এইটা। স্পেশালি আমার মতো যারা অনেক ভুল করতে চাইছেন, কিন্তু খুব বেশি ভুল করতে পারেন নাই, তাদের জন্য আরো বেশি প্রভোকিং একটা জিনিস, এইটা!

তো, দুইবার নিজেরে আটকাইলেও থার্ড-টাইম আর নিজের temptation আটকায়া রাখতে পারি নাই। উপদেশ দিয়াই দিছি একজনরে। Dan Ariely কইতেছিলেন, কেউ না চাইলে তারে উপদেশ দিতে যাইও না, এইটা কাজ করে না। কিন্তু একবার যেহেতু কইরা ফেলছি ভুলটা, পরেরবার করতে গেলে লজ্জা-শরম কম হয়। বারবার খালি করা যায় না, গলা-ফুলায়া বলাও যায় সেইটা, ‘স্বাধীনচেতা’, ‘একসেপশনাল’, এই-সেই প্রমাণ করার লাইগা। আসলে দেখা যাবে, একটা বা কয়েকটা সার্টেন ভুলের ভিতরেই বান্ধা! দেখা যাবে, একই ধরণের ভুলই বারবার কইরা যাইতেছি আমরা। নতুন কোন ভুলই করতে পারতেছি না। অইগুলা কোন ভুল না আর কি, ব্যক্তিগত অভ্যাসেরই ঘটনা! 🙁 তো, আমার ভুলের নমুনা’টা থাকলো আর কি, এইখানে। এর বেশি কিছু না!]

তেমন কোন রিমার্কেবল ভুল তো আমি করতে পারি নাই লাইফে 🙁 তো, এই এক্সপেরিয়েন্স থিকা বলতে পারি, কিছু ভুল করার ট্রাই করতে পারেন 🙂 মুশকিল হইলো, জাইনা-শুইনা ভুল করা যায় না। হ্যাভ সাম বিউটিফুল অ্যান্ড মিনিংফুল ভুল ইন ইউর লাইফ!

 

জানুয়ারি ৬, ২০২২

বাকশাল চায় ‘ষড়যন্ত্র’ হোক, ‘গুজব’ ছড়াক। কারণ ১৯৭৫ সালের মতো ‘কাঁচা’ না এই নয়া বাকশাল। দে আর রেডি টু প্লে। অরা চায় ‘খেলা হবে!’ ইন ফ্যাক্ট, খেলা [পড়েন, ষড়যন্ত্র, গুজব] না হইলেই ডরায়। বুঝতে পারে না, কি হইতেছে! হেলমেট নিয়া নাইমা পড়ে একটা পাদের আওয়াজ শুনলেই। এরা ষড়যন্ত্ররে ডরায় না। ডরায় দেশের মানুশরে। দেশের মানুশের এক হইতে পারার পসিবিলিটি’টারে।

এই জায়গা থিকা বুঝতে পারবেন পলিটিক্যালি বাকশালি-বাম ও কিংস পার্টিগুলা মোস্টলি বাকশালেরই একটা রিজার্ভ ফোর্স। জাসদের মতোই অনেকটা। নানান ধরণের ষড়যন্ত্র, গুজব ও বিপ্লবী-পণা থিকা এরা সরতে পারে না। আর বাকশালও এইটাই চায়।

আগেও বলছি, আবারো বলি, খালেদা জিয়া ও বিএনপি’র একটা অংশ যে ভোটের মাধ্যমে সরকার বদলাইতে চায়, এইটা বাংলাদেশের জন্য একটা ব্লেসিং।

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে বাকশালের বাইরে কোন পলিটিক্যাল পার্টি ছিল না, কিন্তু ২০২২ সালে এখনো যে বিএনপি আছে বাংলাদেশে, বাকশালের ডর অই জায়গাটাতেই।

সেক্যুলার, ইসলামিস্ট বা সো-কল্ড নিরপেক্ষ যে কোন ইস্যুতে মুভমেন্ট হইলেও যে সরকারের ভিত কাঁইপা উঠে, এর কারণ অই মুভমেন্টগুলার জোরই না, বরং ‘এর পিছনে বিএনপি আছে’ বইলা যে ডরটা বাকশালের, সেইটার কন্ট্রিবিউশন কাল্পনিক কোন ঘটনা না।

বাকশালের ডরের জায়গা হইতেছে বিএনপি। কারণ বিএনপি এখনো ভোটের রাজনীতি করতেছে। এই জিনিসটা রিকগনাইজ করতে রাজি না হওয়াটা আজকের বাংলাদেশে একটা ইন্টেলেকচুয়াল ভন্ডামির ঘটনা।

#########

ভয়ারিজম (voyeurism) আর ট্রুথ

আমাদের ভিজিবিলিটির দুনিয়ায় সবচে কড়া ইল্যুশন’টা হইতেছে যে, সত্য একটা গোপন ঘটনা! যেন খুব গোপনে জিনিসটা ঘটতেছে!

অথচ রিয়ালিটি’টা হইতেছে যে, সবকিছু চোখের সামনেই ঘটে, জাস্ট বেশিরভাগ সময় আমরা দেখতে রাজি না। যা কিছু দেখা যায়, তার মধ্যে সবসময়ই সত্যের ইশারা থাকে। (সরকারি প্রেসনোটগুলাতে কি বলা হইতেছে না, বরং কিভাবে বলা হইতেছে, খেয়াল করলেই কিছু সত্য দেখতে না পারার কথা না।) কিন্তু সত্য কোন ভিজ্যুয়াল জিনিস না। বরং আমরা একটা ভিজ্যুয়াল-দুনিয়াতে আছি বইলা সত্য জিনিসটারে দেখতে চাই। রিয়ালিটি’টা কম-বেশি এইরকম।

অন্যদিক দিয়া, কিছু জিনিস হইতেছে প্রাইভেটলি করার ঘটনা, কিছু জিনিস পাবলিকলি। যেমন, সবার লগে একসাথে বইসা খাইতে চাইবেন আপনি। পায়খানা করতে গেলে একলাই যাবেন; সেক্সও গোপনেই করবেন। মানে, গোপনে করতেছেন বইলাই হাগা-মুতা, সেক্স-ফ্লার্টিং, খাওয়া-দাওয়ার চাইতে বেশি সত্যি ঘটনা না। মানে, দুইটাই আছে।

কিন্তু এই যে সত্য’রে দেখতে চাওয়ার ঘটনা, গোপন’রে জানতে চাওয়ার আর্জ’টা যে খালি একটা ইন্টেলেকচুয়াল একটা ক্রেভিং না, ভয়রারিস্ট প্লেজারেরও ঘটনা হইতে পারে – এই জায়গাটা নিয়া অ্যাওয়ার থাকাটা ভালো।

মানে, দুইটা কমপ্লিটলি আলাদা জিনিসও না। নিজের জন্য লিমিটগুলা মার্ক কইরা রাখতে পারাটা সবসময় দরকারি ঘটনা।

 

জানুয়ারি ৭, ২০২২

ফেসবুক একটা ভালো আয়না। মানে, আপনি যদি রেগুলার ফেসবুক ইউজার হন। (দুইদিনে একটা পোস্ট দেন – এইটা মিনিমাম ক্যাটাগরি হইতে পারে।) তাইলে নিজের গত ২/৩ মাসের বা বছরের লেখা/পোস্ট ব্রাউজ করলেও কিছু ধারণা পাইতে পারবেন, নিজেরে নিয়া। (মেমোরি বইলা জিনিসটা, অইটা দেখলেও খেয়াল করা যায়।)

মানে, অই পোস্টের কথাগুলা বা এক্সপ্রেশনগুলাই আমি বা আপনি না! (এইটা ভাবলে আরো বড় ঝামেলা হবে। 🙁 ) কিন্তু কোন জিনিসগুলা নিয়া আপনি পাবলিকলি কথা কইতে চান, কোন জিনিসগুলা আপনারে ইমোশনালি কানেক্ট করে, এইরকম কিছু জিনিস খেয়াল করতে পারবেন।

আমার নিজের পোস্টগুলা খেয়াল করি আমি 🙂 আসলে করা লাগে। নিয়মিত না করলেও, ফেসবুকে যেই জিনিসগুলা লেখি, সেইগুলা রিভিউ কইরা কিছু আমার একটা সাইটে রাখি। তো, খেয়াল করছি, আমার একটা বেসিক টেনডেন্সি হইতেছে কোনকিছু বুঝতে চাইতেছি। পারি আর না-পারি, ভুল-বলি আর ঠিক-বলি, এইটা করতে থাকি।

এইরকম অন্যদেরও খেয়াল করি। কেউ ধরেন, না চেতলে বা কাউরে দোষ না দিয়া, কোন অভিযোগ না কইরা কোন পোস্টই লেখতে পারেন না। 🙁 কেউ ধরেন, কবিতা লেইখাই যাইতেছে 🙂 কেউ ফটোগ্রাফি, বই, গান, ফ্যামিলি, অফিস, কতকিছু নিয়াই তো কনসার্নড। অইগুলা মাঝে-মধ্যে পাইয়া বসতে পারে আমাদেরকে।… মানে, একটা জায়গাতেই আটকায়া থাকতেছেন – এইরকমও না। দেখবেন, দুই বছর আগে যেইসব নিয়া আপনি পোস্ট দিছেন, অইগুলা নিয়া এখন কোন ইন্টারেস্টও নাই। আপনার পোস্টে যারা লাইক-কমেন্ট করতো, আপনি যাদের ব্যাপারে ইন্টারেস্টেড ছিলেন, অইগুলাও চেইঞ্জ হইছে কিছু, বা অনেক।

মানে, একটা ফ্লো আছে। কিছু জিনিস চেইঞ্জ হইতেছে, কিছু থাইকা যাইতেছে। আয়নায় কিছু জিনিস দেখার মতোই।

আমাদের কাজগুলা, এইভাবে ফিল করা যায়, আমাদের চিন্তা-ভাবনারই একটা আয়না।…

#########

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই জিনিসটা নিয়া আমি ভাবছি, উনার নারী কারেক্টারগুলার ঘটনাটা নিয়া আর কি। পুতুল-মার্কা একটা জিনিস যে বানাইছেন। এইটারে বেটা-মানুশদের তো ভাল্লাগেই, কিন্তু অনেক ফিমেইলদেরও যে ভাল্লাগে, এইটার কারণ হিসাবে ‘পুরুষদের প্রিয়’ হওয়ার ঘটনাই পুরা জিনিস না; (বা বুঝেন না উনারা, এইরকমও না) আরেকটা জিনিসও থাকার কথা।

সেইটা হইতেছে, আমাদের ধারণার মধ্যে এই জিনিস তো আছে যে, সাহিত্য বা আর্ট হইতেছে এক ধরণের কাভার-আপ। 🙂 আর্ট আমাদেরকে একটা প্রটো-টাইপ দিবে, যেইটার মতো হইতে চাইবো আমরা, বা অইরকম হইতে পারাটা ‘সুন্দর’ একটা জিনিস বইলা ধইরা নেয়া হবে। তো, “রবীন্দ্রনাথের নারী” ব্যাপারটা এইরকম একটা জিনিস, যেইটা প্রজেক্ট করাটা ভালো না হইলেও খারাপ জিনিস তো না-ই; বা আইডিয়াল না হইলেও এস্থেটিক্যাল একটা বেইজ “বাঙালি রমণী” ধারণার। ইভেন কেউ “তসলিমা নাসরিন” বা “আনোয়ারা সৈয়দ হক” হইলেও তারে একটু-আধটু “রাবীন্দ্রিক” হইতেই হয়, এপরিয়েন্সের ভিতরে। এইটা না হইলে ব্যাপারটা “বাঙালি রমণী” হইতেই পারে না।

তো, এইরকম ভাবের ভিতর দিয়া ‘কালচারাল’ হওয়াটা মাস্ট যে হয়া উঠছে – এইটা থিওরেটিক্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়েরই ঘটনাই খালি না, কাভার-আপ প্রাকটিসের সিলসিলার জায়গা থিকাও দেখতে পারাটা দরকার।

 

জানুয়ারি ৮, ২০২২

একটা জেনারেল নিয়ম ফলো করা ততক্ষণ পর্যন্তই ভালো, যতক্ষণ পর্যন্ত জিনিসটা আপনি ভালোভাবে জানেন না। যদি একটা জিনিস আপনি ডিটেইলে, ঠিকঠাক মতো জানেন, জেনারেল নলেজ ব্যাপারটা বরং কিছুটা ঝামেলারই।

ঢাকার বাইরের একটা জায়গা থিকা ফিরতেছি। যাওয়ার সময় গুগুল ম্যাপ ফলো কইরা গেছি। কিন্তু ফিরার পথের রাস্তাটা আমি জানি, যে অইখান দিয়া আসলে সময় অর্ধেক কম লাগার কথা। কিন্তু গুগুল ম্যাপ আমারে ঘুরায়া ফিরায়া ‘জেনারেল’ রাস্তাটাতেই নিয়া যাবে! দেখাইতেছিল, আমি যেই রাস্তাটাতে যাইতে চাইতেছি, সেইখান দিয়া যাইতে এক ঘন্টার বেশি টাইম লাগবে।

তো, গুগুল-ম্যাপের হিসাব’টা ভুলই হইছে।

ও, ছোট একটা টুইস্ট আছে। এক মিনিটের রাস্তা একটু রং-সাইড দিয়া আসতে হয়। সব গাড়িই আসে, ঠিক-সাইড দিয়া আসা গাড়ির ড্রাইভার’রাও মোটমুটি এইটা জানে, সাইডও দেয়। কারণ তা নাইলে ৮/১০ মিনিট ঘুইরা আসতে হয়, আর রোড-সাইনও নাই সেইটার, যার ফলে প্যাঁচ লাগে। (অইটা ছাড়াও গুগুলের হিসাব ভুলই। এইটা জাস্ট আরেকটা এডভানটেজ। )

মানে, গুগুল-ম্যাপ তো কখনোই রং-সাইড দিয়া যাওয়ার সাজেশন দিতে পারবে না। রাস্তায় চলতে গিয়াই সেইটা টের পাইতে হবে আপনারে, একভাবে। যে, কোন কোন রং-সাইড এতোটা রং-সাইড না আসলে। 🙂

#########

এইরকম একটা কোশ্চেন কিছুদিন আগে শাহাদুজ্জামানই (টিচার, ফিকশন-রাইটার) করছিলেন মনেহয় যে, ৯/১১’র সময় টুইন টাওয়ারে যারা মারা যাইতেছিলেন, তারা তাদের মোবাইল ফোনে যেই শেষ টেক্সট, কল করতেছিলেন, অইখানে সবচে বেশি টেনডেন্সি ছিল “আই লাভ ইউ” বলার। যে, এনাফ বলতে পারি নাই আমি ভালোবাসার কথা, মরার সময়ে সেইটা বইলা রাখতেছি, এইরকম। এইটা হইতেছে সবচে জরুরি কথাটা তার। হোয়ার অ্যাজ, বাংলাদেশে এই জিনিসটা চালু আছে যে, মরার সময় সবাই বলে যে, মাফ কইরা দিও! মানে, মরার আগে মাফ চাইয়া মরতে পারাটা অনেক শান্তির একটা ঘটনা।

মানে, দুইটা জিনিস কেন আলাদা – এইখানে উত্তর দেয়ার মতো কিছু নাই আসলে। বরং আরো কিছু জিনিসের কথা মনে হইতেছিল, এই কোশ্চেন জায়গাটাতে। যে, একটা হইতেছে “জানার” জায়গাটাতে হাইলাইট করা; আমি তো জানি এইটা, কিন্তু ঠিকঠাক মতো বলতে পারি নাই, বা এনাফ শো করতে পারি নাই, আমার ভালোবাসাটা। আর আরেকটা হইতেছে, “জানি না”র জায়গাটারে হাইলাইট করা। আমি তো জানি-ই কিছু, কিন্তু আমার জানার পরেও বা এর বাইরেও তোমার ফিলিংসরে হার্ট করতে পারি আমি, যেইটা আমার জানা নাই।

একটার ফোকাস “আমি”র উপরে [আমি তোমারে ভালোবাসি], আরেকটার ফোকাস “তুমি”র উপরে [তুমি আমারে মাফ কইরা দিও]। এইরকম আরো কিছু ডিফরেন্সের জায়গা আছে। একটা হইতেছে খুব স্পেসিফিক, আরেকটা হইতেছে খুব ওভারঅল ঘটনা, এইরকমও অনেকটা। … কিন্তু একটা আরেকটার চাইতে বেটার, ভালোবাসার চাইতে শান্তি বেশি দরকারি, এইসব আলাপে চইলা গেলে ঝামেলাই আর কি!

#########

খালি-পেটের চিন্তা আর ভরা-পেটের চিন্তা একই রকম না।

এই কথাটা মনে হইতেছিল, কয়েক দিন আগে। তো, একইরকম ভাবে সমাজে ইকনোমিক ও কালচারাল ক্লাস অনুযায়ী চিন্তা-ভাবনা আলাদাই, একইরকম হওয়ার কোন কারণ নাই।

গরিবের চিন্তা, টাকা-পয়সা থাকা লোকের চিন্তা, মিডল-ক্লাসের চিন্তা, এইরকম আলাদা আলাদা চিন্তা আছে, বা থাকতে পারে। মানে, কোনটা গরিবের-চিন্তা বইলাই যেমন ভালো না (তবে বেশিরভাগ সময়েই ভালো), কোনটা টাকাপয়সা-অলা লোকের চিন্তা বইলাই খারাপ না (তবে বেশিরভাগ সময়েই খারাপ)। আপনি মিডল-ক্লাস একটা লাইফস্টাইল মেইনটেইন কইরা কখনোই গরিব বা টাকাপয়সা-অলা লোকের চিন্তাটা করতে পারবেন না (বা পুরাটা নিতেও পারবেন না), আপনার পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্সটারেই যদি বেইজ হিসাবে ধইরা রাখেন। আবার ক্লাস-পজিশন থিকা কখনোই সরতে পারবেন না – এইটাও কোন কথা হইতে পারে না।

যেইটা হইতে পারে, আপনার যে কোন ক্লাস-পজিশন থিকাই অন্য ক্লাসের কথা আপনি ভাবতে পারেন। ডি-ক্লাসড হওয়াটা কখনো পসিবল বইলা আমার কাছে মনেহয় না। মানে, সবসময় একটা ক্লাস-পজিশন আপনারে বাইছা নিতে হয়, ইভেন চিন্তার জায়গাতেও। তো, সেইটা যতোটা অপ্রেসড বা মজলুম ক্লাসের ফেভারে থাকতে পারে, সেইটাই তত সিগনিফিকেন্ট বা কাজের কথা হইতে পারবে।

যিনি কথা বলতেছেন, তার সোশ্যাল বা ইকনোমিক ক্লাস দিয়া সেইটারে যাচাই করা যাবে-না না, এইসব রিলিভেন্সের কথা বাদ দিয়া অইটারে ঘটনা বানানো হইলে সেইটা বেশিরভাগ সময় পারসোনাল আলাপের ঘটনাই হওয়ার কথা, এর বেশি কিছু হইতে পারার কথা না।

 

জানুয়ারি ৯, ২০২২

এইরকম একটা vivid ইমেজ আছে আমার মনে। বলছিলামও মনেহয়। ঢাকা শহরের এইসব ফ্লাইওভার, মেট্রো-রেল, এক্সপ্রেস হাইওয়ে, বড় বড় বিল্ডিংয়ের জায়ান্ট-স্ট্রাকচারের ফেটিশ নিয়া। এই সবকিছুর পিছনে অনুমানটা তো এইটাই যে, ঢাকা শহরে অনেক মানুশ আছে আর সেইটা বাড়তেই থাকবে।

কিন্তু ধরেন, হঠাৎ কইরা ঢাকা শহরে পানির অভাব দেখা দিলো, সবাই নায়ারণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, আশে-পাশে সেটেল হইতে শুরু করলো; তখন এই জায়ান্ট স্ট্রাকচারগুলার কি হবে?

বা ন্যাচারাল কোন ডিজাস্টার হইলো না; ধরেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের পাওয়ারফুল লোকজনই বুঝতে পারলো যে, জায়ান্ট-স্ট্রাকচার মানেই “উন্নয়ন” না; তখন নীলফামারি বা বরগুনা’তে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বা এক্সপোর্ট ইন্ড্রাস্ট্রি বানাইলে গর্ভমেন্ট ট্রান্সপোর্টের সাবসিডি দিতে রাজি হইলো ৫/১০ বছর; তখন দেখা গেলো ঢাকা শহরের চাইতে বাইরে ইন্ড্রাস্ট্রি বানাইলে লাভ বেশি, লেবারও পাওয়া যায় সবসময়, প্রডাক্টিভিটিও বেশি, সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে ভাত খাইয়া আইসা ওভার-টাইম করতেও রাজি থাকে খুশিমনে 🙂 স্কুল-কলেজ, হসপিটালও সব শহরের লোকেশনের বাইরে চইলা গেলো; “ঢাকা শহরে থাকা”টা ঘটনা হিসাবে থাকলো না আর। তখন এই স্ট্রাকচারগুলারে কি রকমের ‘ভৌতিক’ দেখাবে?
মানে, অনুমান’টা খালি এইটাই না যে, বাংলাদেশের সবাই ঢাকা শহরে চইলা আসবে, বরং ঘটনা’টা হইতেছে, সবকিছুর জন্য ঢাকা শহরেই আসতে হবে আপনারে! বেশি বেশি লোকজন না থাকলে এই স্ট্রাকচারগুলাই বরং মারা যাবে!

আমি জানি না, এইরকম কোন স্টাডি আছে কিনা, কিন্তু ঢাকা শহরের এয়ার-পলিউশনে একটা বড় কন্ট্রিবিউশন থাকার কথা এইরকম জায়ান্ট-স্ট্রাকচারের ফেটিশ বা ‘উন্নয়ন-কর্মকান্ডের’।

চারদিকে এতো ‘উন্নয়ন’ যে আমাদের দমবন্ধ হয়া আসতেছে। (উপমা না খালি, সত্যি সত্যি।)

#########

তর্ক করা

(অনেকে না হইলেও) মাঝে-মধ্যে দুয়েকজন তো আছেন, যারা আমার কথার ভুল ধরতে পারেন বইলা “তর্ক” করতে চান (এখনো), এবং হয়তো মন-খারাপও করেন যে, আমি কেন তর্ক করতেছি না! তো, ব্যাপারটা এইরকম না যে, আমি “তর্ক” করতে চাই না; কিন্তু তর্ক-করার প্রিমাইজগুলা নিয়া কিছু ডিসিশান আমার অলরেডি নেয়া হয়ে গেছে।

তর্ক কইরা সত্য জানা যায় না – এইরকম না, কিছু কোশ্চেন, কিছু স্পার্ক তো হেল্প করেই; কিন্তু তর্ক-করা যে সবসময় একটা “সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই”-এ পরিণত হয়, সেই জায়গাটারে আমি এভেয়ডই করতে চাই। তর্ক-করার লগে সত্য আবিষ্কার করার এবং এমনকি সত্য-প্রতিষ্ঠারও তেমন কোন সম্বন্ধ নাই; এইটা জাস্ট একটা পাবলিক শো-অফের ঘটনা-ই হয়া উঠে বেশিরভাগ সময়। চাইলেও এর থিকা বেশিদূর সরতে পারবেন না আপনি। কারণ এইটা কম-বেশি তর্ক-করা ফর্মটারই একটা ঘটনা।

মিশেল ফুকো’র এই নিয়া কিছু কথা আছে, যেইগুলা ‘সত্যি-কথা’ হিসাবে নিছি আমি, এগ্রি করার মতো, মোস্টলি।

কিন্তু তাই বইলা আমি তর্ক-বিরোধী লোক না। একটা বয়সে বরং তর্ক-করাটা তো জরুরি জিনিসও। কার্ল মার্কসের উপর একটা ডকুমেন্টারি দেইখা মনে হইতেছিল, ইয়াং-বয়সে উনারা, বন্ধু-বান্ধবরা অনেক ‘তর্ক’ করতেন পাবে, পত্রিকা অফিসে। কিন্তু মার্কস যখন তার চিন্তার জায়গাটাতে রিচ করতে পারছেন, তখন তর্ক-করার চাইতে রিসার্চ করার জায়গাটাতেই সময় বেশি দিছেন।… (মানে, অনেকে আবার আটকায়াও যান, নানান পথেই আসলে হারায়া যাওয়া পসিবল।)

TED talk’র একটা আলাপেও ছিল, অন্যের সাথে কনভারসেশনের ভিতর দিয়া নিজের জানা অনেক জিনিস নিয়াও কনফার্ম হওয়া যায়। অইটা অবশ্য ‘তর্ক’ থাকে না আর, আলাপ-ই হয়া উঠে, ফর্ম হিসাবে। কিন্তু অইটার মধ্যে তর্কও ইনক্লুডেড থাকতে পারে।…

তো, চিন্তার কাজ এক ধরণের এনগেইজমেন্ট তৈরি করা, সেই এনগেইজমেন্ট’টা ‘তর্ক-করা’ টাইপের শো-অফ করার জিনিসই হইতে হবে, এইটা জরুরি না আর কি!

 

জানুয়ারি ১০, ২০২২

ঢাকা শহরে নানানরকমের সরকারি অত্যাচার মাইনা নিয়াই আমাদেরকে চলাফেরা করতে হয়; তো সেইটা কন্সিডার করলে আজকে “ঢাকা ম্যারাথন”-এর এরেঞ্জমেন্ট তো বেটার; আগে থিকা বইলা দিছে, কোন কোন রাস্তা বন্ধ থাকবে, কয়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, অল্টারনেটিভ কোন রাস্তায় যাইতে হবে, এইরকম। মানে, ট্রাফিক জ্যাম জাস্ট আরো একটু বাড়বে। হাজার খানেক লোক দৌড়াইবে বইলা কয়েক লাখ লোকের হাঁইটা অফিসে আসতে হইতে পারে (হাতিরঝিলের রাস্তা ইউজ করেন যারা)। 🙂

মানে, “যন্ত্রণা” হিসাবে তো কমই, মেনশন করার মতোই না। কিন্তু আমি ভাবতেছিলাম, দেখেন, এই বাকশালি সরকার ছোট কোন একটা কাজও মানুশের অসুবিধা না কইরা করতে পারে না। ছোট বড় যেই কাজই করুক, বাকশালের যে কোন কাজ ‘এগেনেস্ট দ্য পিপল’ কাজ হয়া যায়!

তো, এইটা ‘হঠাৎ’ কইরা বা কোন ‘ভুল’ থিকা হয় না। বাকশালের বেসিক পজিশনই হইতেছে এন্টি-পিপল পজিশন। দেশের মানুশ ‘অশিক্ষিত’, ‘মুর্খ’, ‘সন্ত্রাসী’ ‘ছোটলোক’ ‘কুসংস্কারচ্ছান্ন’ ‘ষড়যন্ত্রকারী’ ‘নিজের ভালো বুঝে না’… এবং এইসব কারণে ‘ভোট দেয়ার’-ই রাইটস থাকার দরকার নাই!

মানে, ‘জনগণ’ বা ‘দেশের মানুশ’ বইলা যেই ইমাজিনেশন, সেইটা খুবই অ-দরকারি ঘটনা। গরু-ছাগলের মতোই অরা, সদকা দিতে হইলে, ‘মানবতা’ দেখাইতে হইলে মনে হয় (‘হিউম্যান এগজিসটেন্স’ নাই তেমন)। আগের দিনে, ইভেন ২০০ বছর আগেও আম্রিকান ইউরোপিয়ান হোয়াইট’রা নিগ্রোদের যেমনে ট্রিট করতো, অই রেসিয়াল/ব্রাহ্মণবাদের চাইতে খুববেশি আলাদা কিছু না, এই চিন্তার ধরণ। ‘ভালো-বাকশালি’ [মানে, ‘মানুশ’ 🙂 ইউরোপিয়ান হোয়াইট মেইল-ইগো] যারা, তারাও ‘দেশের মানুশরে’ করুণা ও দয়া করতে পারাটারেই দরকারি মনে করেন।

এই চিন্তা-ভাবনা যদ্দিন চালু আছে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন পিপল-এজেন্সি (রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন) তৈরি হওয়াটা কঠিনই হওয়ার কথা।

#########

এই টেকনিকটা বেশ পুরানাই মনেহয়। সো-কল্ড কলোনিয়াল বাংলা-ভাষার বাইরে গিয়া কেউ কিছু লেখতে গেলেই তারে ট্যাগ লাগায়া দেয়া হয় যে, ও, ‘অপ্রমিত-ভাষায়’ লেখতেছো, এর মতো লেখতেছো, ওর মতো লেখতেছো!

ইয়াং-বয়সে এইগুলা আমারেও ফেইস করা লাগছে। যেন অই কলোনিয়াল (কলকাত্তাইয়া লিখিত) বাংলা-ভাষার বাইরে এই কয়টা অপশনই আছে! ‘নিজের মতো’ লেখতে গেলেও অই কলোনিয়াল-ভাষার বাইরে যাওয়া যাবে না! তো, ‘এর মতো’ ‘ওর মতো’ বইলা আসলে কলোনিয়াল (কলকাত্তাইয়া) ভাষার ‘খোঁয়াড়ে’ আটকায়া রাখার কোশিশই করা হয়।

মানে, কেউ ইমরুল হাসানের মতো লেখতেছে, বা ‘বাছবিচার’-এর ভাষায় লেখতেছে – এইগুলা আমার কাছে কখনোই প্রেইজ করার জিনিস মনেহয় না, বরং এইগুলা হইতেছে ডর দেখানোর ঘটনা – ‘এর-ওর মতো’ লেইখা ‘একসেপশনাল’ হওয়ার ট্রাই কইরেন না! যে, যত যা-ই করেন, নিউজপেপারের ল্যাঙ্গুয়েজে, টিভির খবরের ভাষায় না লেখলে ‘বাতিল’ হয়া যাবেন আপনি! অই ঢং’য়ে লেখলে রঠা, জীদা হন না আপনে (মারা গেছে যেহেতু উনারা) বা হইতে পারলেই ‘ভালো’ 🙂 তো, এইগুলা কলোনিয়াল-গোলামদের থ্রেট দেয়ার কায়দা আসলে, মোস্টলি।

কিন্তু ঘটনা হইতেছে, মরা-ভাষায় লেইখা অথরিটির কাছে ‘একসেপ্টেড’ হওয়ার চাইতে ‘একসেপশনাল’ হওয়ার রিস্ক নেয়াটা সবসময়ই বেটার একটা এডভেঞ্চার হওয়ার কথা, লিটারেচার ও চিন্তার জায়গা থিকা। (মানে, ভাষার জায়গাটারেই যদি সেন্টার বইলা ভাবতে চান, যেইটা আসলে ভুল একটা চিন্তাই…।) তো, আমার কথা হইলো, যারা এইরকম ‘এর-ওর মতো লেইখেন না’ বলেন, উনাদের থ্রেটটারে নিয়েন না!
আপনি যা লেখতে পারেন, সেইটা আপনারই লেখা।

#########

ফ্রেন্ডশিপ হইতেছে মোস্টলি একটা মোরাল বন্ডেজের ঘটনা। চোরের লগে চোরের, বাটপারের লগে বাটপারের, সাধু’র লগে আরেক সাধু’রই দোস্ত-দুশমনির ঘটনা ঘটে বেশি। মানে, এর বাইরে যে ঘটে না – তা না, আলগা-পিরিত কি থাকে মানুশের! বা একসেপশনাল ঘটনা? কিন্তু মোরাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং’টা একইরকমের না হইলে, জিনিসটা টিইকা থাকতে পারে না, অনেক সময় ধইরা।

‘দিল চাহতা হে’ সিনেমা’তে অক্ষয় খান্না আর আমির খানের যে দোস্তি ভাইঙ্গা যায়, অই জায়গাটাতেই তো যে, আমির খান মনে করে মিল্ফদের লগে তো সেক্স করা ভালোই, কিন্তু অক্ষয় খান্না যে ডিম্পল কাপাডিয়ার পেরমে পইড়া গেছে, এইটা বুঝতে চায় না। এইটা এস্থেটিক্যাল ঝামেলাই না, মোরাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়েরও ঘটনা। পরে যখন, পিরিতের জায়গা’টা আমির খান বুইঝা নিতে পারে, মানতে পারে, তখন ফ্রেন্ডশিপটা হইতে পারে আবার। মানে, একই ধরণের কাজ করতে হবে – এইটা জরুরি না, সোশ্যাল পজিশন, এপিয়েরেন্স আলাদা হইলেও একজন আরেকজনের কাজকামগুলা বুঝতে পারে, মানতে পারে – এইরকম একটা ঘটনা থাকতে হবে।
এইরকমের একটা মোরাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া দোস্তি পসিবল না আসলে।

২.
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, অনেক লোক আপনার মোরাল পজিশনরে সার্পোট করতেছে বইলাই সেইটা বেটার পজিশন না, বা অনেকে সার্পোট করতেছে না বইলাও। এইটা পপুলারিটির বা পছন্দ-অপছন্দের মামলা না, কমিউনিটি হিসাবে কোনটারে চুজ করতেছেন, সেইটার ঘটনা বরং অনেকটা, আর সেইখানে মিল/অমিলের ঘটনাটার বেইজ হইতেছে মোরাল জায়গাটা। কিন্তু এইগুলাসহ এবং এর বাইরেই, হায়ার মোরাল গ্রাউন্ড বইলা কিছু জিনিস আসলে আছে। আমরা হয়তো প্রাকটিস করতে পারি না, বা অনেক সময় ধরতেও পারি না, কিন্তু এই সার্চিংগুলারে জাস্ট ডিফরেন্ট বইলা এড়ায়া যাওয়াটা আন্ডারমাইন করতে চাওয়ার ঘটনাই।…

৩.
আরেকটা জিনিস হইতেছে, খালি সহজ বইলা এবং অন্য লোকজন করতেছে বইলাই কোন ‘মোরাল-পজিশনে’ আমরা যে সাবস্ক্রাইব করি এইটার বাইরেও, ‘আলাদা হইতে চাওয়ার’ লোভটাও যে কাজ করে না – তা না; অনেককিছুই আছে এইখানে। অনেক মাইজভান্ডারি বা পীরের মুরিদ ছিল একটা সময়, যারা আসলে ‘সংসার-ধর্ম-এ থাকতে চাইতো না; তাবলিগেও অনেকে যাইতো, সমাজ-জীবন থিকা এক ধরণের এস্কেইপের লাইগা। আম্রিকাতে ওশো’র ফলোয়ার খালি ফ্রি-সেক্সের জন্য বাড়ে নাই, বরং অইখানে ফ্রি’তে থাকা-খাওয়া যাইতো। মানে, মোরাল সুপ্রিমেসি নাই অই প্রাকটিসগুলাতে – তা না। কিন্তু ইন রিয়ালিটি, মোরালিটি ঘটনাগুলারে স্ট্রেইটওয়েতে দেখতে চাওয়াটাও সমস্যার ব্যাপারই হওয়ার কথা।…

 

Leave a Reply