নোটস: ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ [পার্ট ২]

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩

– আমার সাহিত্যিক-দুশমনরা, প্লিজ, আমারে পপুলার বানায়া দিয়েন না! –

লাইফের এই স্টেইজে আইসা আমার লগে কারো “কবি-বন্ধু” টাইপের রিলেশন নাই। আর এইটা একটা ব্লেসিংই মনে করি আমি।*

কিন্তু তাই বইলা কোন দুশমনিও আমি এসপেক্ট করি না। তারপরও নানান ধরণের “সাহিত্যিক আড্ডায়” আমারে গালি-গালাজ করার ও আমার ব্যাপারে পারসোনাল রেইজের কথা শুনতে পাই। এমনকি যাদের লগে আমার ভালো-মন্দের কোন যোগাযোগ নাই, জীবনে কোনদিন কথাও হয় নাই, এইরকম লোকজনও শুনি জাত-দুশমনি নিয়া বইসা আছেন!

তো, কেন উনারা দুশমনি করেন? এইটা ভাবতে গিয়া দুইটা সম্ভাবনার কথাই মনে হইলো।

এক হইতেছে, আমাদের সমাজে পাওনাদাররে গালি-গালাজ করার একটা প্রাকটিস আছে। যে কেউ টাকা-পয়সা পাবে, তারে ছোট-করা কথা-বলা যাতে কইরা সে যে টাকা-পয়সা পায়, অইটা আর ইস্যু হিসাবে সামনে আসতে না পারে। তো, আমি কারো কাছে টাকা-পয়সা পাই না। মানে, দেয়ার মতো টাকা-পয়সা তো না-ই আমার তেমন। কিন্তু এইখানে একটা ঘটনা ঘটছে বইলা মনেহয়।

যেইসব কবি-সাহিত্যিকরা পারসোনাল আড্ডাতে আমার “মুন্ডুপাত” করেন, উনারা কম-বেশি এইরকম একটা সাহিত্য-ভাষাতে লেখেন যেইটা আমার লেখালেখির ধরণের উল্টা তো না-ই, বরং বেশ কাছাকাছি রকমেরই ঘটনা! যেই কারণে উনারা মেবি আমারে “পাওনাদার” ভাবতে পারেন! যে, ‘ইমরুল হাসানের ভাষায়’ লেখতেছেন! এই টিজ-টিটকারি আমি করতে দেখছি কয়েকজন বুড়া-কবিরে।

একশ-দেড়শ বছরের পুরানা কলোনিয়াল-ভাষায় লেইখা, ফটোকপির ফটোকপির ফটোকপি হইলে কোন সমস্যা নাই! এর বাইরে গেলেই এরমতো-ওরমতো হয়া যাইতে হয়! এইটা হইতেছে অই গোলামির ঘটনা আসলে। অই গোলামির বাইরে গিয়া অনেকেই লেখার ট্রাই করছেন, করতেছেন, করবেনও এবং আমি এক্সপেক্ট করি, অই জায়গাগুলা আরো ক্লিয়ার হইতে থাকবে দিন দিন।

এইখানে “ইমরুল হাসানের ভাষা” বইলা কিছু নাই। মানে, আমি কারো পাওনাদার না!

(অনেক দেরিতে হইলেও কিছু লিটারারি টেকনিকের জায়গাগুলারে আমি টের পাইতে শুরু করছি এবং একটা পলিটিকাল-পজিশন তৈরি করার দিকে চিন্তা-ভাবনা করতেছি। ঘটনা এইটুকই।)

এখন এক্সপ্লোর করতে গেলে, এর-অর লগে মিল থাকেই কিছু, নিজের জায়গা তৈরি হইলে পরে অইগুলা আর কোন ঘটনা না। তো, এইটা আসলে একটা ট্রিক্স, বুড়া-কবিদের, এবং কলোনিয়াল-ভাষার গোলামদের। আমার লেখালেখির লগে এর কোন রিলেশন নাই।

সেকেন্ড হইতেছে, আমারে নিয়া দুইটা বাজে-কথা কইলে যদি কারো কাছে পছন্দের হওয়া যায়, তাইলে তো কোন প্রবলেম নাই আমার। কিন্তু এইরকম “কবি-বন্ধু” থাকা বা না-থাকাটা তেমন কিছু মিন করে না আসলে। আমারে খারাপ বইলা যদি কারো কোন লাভ হয়, আমার তো লস নাই কোন! কিন্তু আমার অইরকম পাওয়ারফুল দুশমন তো দেখি না, যারা কোন লাভ দিতে পারবে।

কিন্তু মুশকিল হয়া হইতেছে, এইসব ঘটনায় আমার লাভ হয়া যাইতেছে। এর-ওর গালি-গালাজ শুইনা লোকজন আমার নাম জানতেছে, লেখা পড়তেছে। আমার নাম ছড়ায়া যাইতেছে। মানে, আমার “কবি-বন্ধুরা” আমার যেই ‘উপকার’ করেন নাই, আমার “সাহিত্যিক-দুশমনরা” আমারে সেই সার্ভিস দিতেছেন! মেবি না-জাইনাই। তো, এই কথা জানানোর জন্য এইটা লেখা।

হে আমার (ইনভিজিবল) সাহিত্যিক-দুশমনরা, প্লিজ, আমারে আর পপুলার বানায়া দিয়েন না!


*এমন না যে দোস্তি জিনিসটা বাজে, কিন্তু “কবি-বন্ধু” জিনিসটা মোস্টলি চুলকানি টাইপের জিনিসই কিছুটা, স্যাডলি 🙁 তারপরও ইন্টেলেকচুয়াল এক্সচেইঞ্জ তো দরকারি জিনিসই, সেইটা সবসময় সাহিত্যিক-রিলেশন দিয়াই হইতে হবে – এই এক্সপেক্টশন আমার সবসময় কমই।

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩

ব্যাপারটা এইরকম না যে, চাইলেই আপনি মিডিওকার হইতে পারবেন না! মানে, আমাদের এইখানে তো স্টার-হওয়া ব্যাপারটারে একটা মিডিওকার ঘটনা বানায়া রাখা হইছে। যার ফলে, টম ক্রুজ, শাহরুখ খানের মতন কোন স্টার/ব্র্যান্ড আমাদের নাই-না, এর যেই এসেন্স সেইটারে আমরা মোর অর লেস পারসিভ করতেই আসলে রাজি না। এবং এই ধরণের ট্রাই যারা করেন, তাদেরকে নিয়া হাসি-ঠাট্টা, হিউমার করাটা হইতেছে ‘নিয়ম’! তো, এইটা মোস্টলি এই ডিফরেন্সটা করতে না পারারই ঘটনা।

আর এই স্টার হওয়ার ব্যাপারটা খালি একজন ব্যক্তির ঘটনা না, বরং একটা কালচারাল-সিস্টেমেরই আউটকাম। যেইটা ওভার দ্য পিরিয়ড অফ টাইম একই জিনিস না।

এই রকম ঘটনা আছে যে, কেউ কোন জিনিসরে সুন্দর কইলো, তখন মনেহয়, আসলেই ব্যাপারটা তো সুন্দর আছে! বা এটলিস্ট খেয়াল করা হয়, বা অই জায়গা থিকা দেখার ঘটনাটা ঘটে যে, ব্যাপারটা সুন্দর কিনা! এই কারণে কোন কিছু বলাটা দরকারি ঘটনা, খালি প্রাইভেটলি না, পাবলিকলিও।

তো, এখনকার একটা টেনডেন্সি দেখবেন, বাংলাদেশের নয়া বাকশালি সরকার যে অবৈধ-সরকার, দেশের মানুশের ভোটে ইলেক্টেড না; বা যেই বদমাইশিগুলা করে তাদের পালা-কুত্তাগুলারে (নিউজ-মিডিয়া ও ডামি-আন্দোলনকারীদের) দিয়া – এইটা নিয়া কথা বলতে গেলে অনেকে বইলা উঠেন, এইটা বলার কি আছে! আমরা তো জানি-ই এইটা!

কিন্তু এইটা খালি “জানার” ঘটনা না, আপনি যে এইটা বলতেছেন, এই বলাটারে আটকায়া দেয়ার ঘটনাই বরং।

ভালো’রে ভালো এবং খারাপ-রে খারাপ বলাটা দরকারি ঘটনা। না বললে ভালো-রে যেমন এপ্রিশিয়েট করা হয় না, খারাপ-রে ডিস-কারেজ করা হয় না। একটা স্ট্যাটাস-কো’রে ধইরা রাখার পক্ষেই সার্পোট দেয়।

সবারই সবসময় এই কাজ করা লাগবে – তা না, কিন্তু কোনসময় কেউ-ই যদি এইটা না করেন, সেইটা একটা বাজে ঘটনা।

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩

কেউ যদি বাংলাদেশের পলিটিকাল-কালচারের জায়গাটাতে চেইঞ্জ আনতে চান তাইলে আমার ধারণা হইতেছে, সামাজিক-সংগঠনের জায়গাটারে শক্তিশালি কইরা তোলা লাগবে আবার।

যেইটা একটা সময়ে বাংলাদেশে কিছুটা ছিলও। কিন্তু বাম-ঘরানার পলিটিকাল চিন্তাগুলা অই জায়গাগুলারে বিপ্লবের নামে পলিটিকাল-দলগুলার লেজ হিসাবে ফাংশন করতে শিখাইছে। যেইটা এখনো কন্টিনিউ হইতেছে। অবস্থা এই লেভেলের খারাপ হইছে যে, খালি স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন, বা ছরমিক-সংগঠনই না, যদি এলাকায় কোন লাইব্রেরি/পাঠাগার/ক্লাব বানান, তাইলেও কোন না কোন পলিটিকাল এফিলিয়েশন লাগবে! বা কেউ যদি এইগুলা করতে আগায়া আসে তাইলে সন্দেহ করা লাগবে যে, কোন পলিটিকাল কারণে এইটা করতেছে মনেহয়, যেইখানে সোশাল-সংগঠনটারে সে ইউজ করবে। আর বেশিরভাগ কেইসে এইটা সত্যিও।

যেই কারণে আমাদের সমাজে কোন সোশাল-অর্গানাইজেশন আর নাই। থাকতে পারে – এই বিশ্বাসটাও নাই। ব্যক্তি-অধিকারের জায়গাটারে সেন্টার করার ভিতর দিয়া রাষ্ট্রের এগেনেস্টে ফাইটে সমাজের মানুশরেও দুশমন হিসাবে মার্ক করা হয় নাই, বরং যে কোন ধরণের জমায়েতরে সন্দেহ করার এবং ভিলিফাই করার একটা “রিয়ালিটি” তৈরি করা হইছে।

এখন সমাজের কোন সংগঠনই একটা পলিটিকাল এলিনেশনের ভিতর দিয়া তৈরি হইতে পারে না, কিন্তু তাই বইলা এর যে পলিটিকাল-যোগাযোগ, সেইটাই যদি এর মেইন সিগনিফিকেন্স হয়া উঠে, তাইলে সেইটা আর ফাংশন করতে পারার কথা না। যেই কারণে বাংলাদেশে স্টুডেন্টদের, ছরমিকদের, মার্কেটের দোকানদারদের, যে কোন সংগঠনেরই কাজ হইতেছে একটা সার্টেন পলিটিকাল দলের “আনুগত্য” এস্টাবলিশ করা, তারপরে অন্য কিছু। যার ফলে সোশাল ইউনিটির স্পেইসগুলা খালি নাই-ই হয়া যায় নাই, এর উপরে সমাজের মানুশ-জনের কোন কনফিডেন্সও আর নাই।

এর পাশাপাশি, এনজিও-এক্টিটিভির ভিতর দিয়া “সমাজের উন্নতি”রে একটা “সমাজ-বর্হিভূত” ঘটনা বানায়া ফেলা হইছে। মানে, ধরেন ১৯৮০-৮৫’র দিকেও আমরা দেখছি যে, পুকুরে কচুরিপনা জমছে, এলাকার ইয়াং লোকজন মিইলা হৈ হৈ কইরা সেইটা সাফ কইরা ফেলছে। এখন লেবার ছাড়া এইটা করা পসিবল না, কমন পুকুর বইলাও কিছু নাই, সেইটা সরকারি-সম্পত্তিই, যার ফলে মেম্বার-চেয়ারম্যানের “নির্দেশ” ছাড়া কেউ এইটা করতে পারবে না। বা “বৈজ্ঞানিক” না হইলেও ‘স্বাস্থ্যকর” ও “অর্গানিক” উপায়ে করতে হইলে একটা এনজিও-প্রজেক্ট করা লাগবে।

মানে, আমি যেইরকম বলতেছি, এইরকম সহজ-সরল ঘটনা তো না! অবশ্যই এর ভিতরে আরো অনেক ঘটনা আছে। কিন্তু মোটাদাগে, পলিটিকাল-স্ফিয়ারে সোশাল-অর্গানাইজেশনগুলার নাই হয়া যাওয়াটা, বার্গেইনিং পাওয়ার না-থাকার যেই ভ্যাকুয়ামটা তৈরি হইছে, সেইটা ব্যক্তি-অধিকারের জায়গাটারেও আরো ভারনারবেলই কইরা তোলার কথা।

[একটা বাড়তি পয়েন্ট হইতেছে, যেইখানে রাষ্ট্রের বা পলিটিকাল পার্টির (বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে দুইটা একই ঘটনা হয়া উঠতেছে) বাইরে যেই স্পেইসগুলা আছে সমাজের মানুশ-জন অই জায়গাগুলাতেই শেল্টার খুঁজতেছে। যেমন, র্ধমীয় অর্গানাইজেশন, পীর-দরগা। যার ফলে, অইগুলারও পলিটিসাইজেশন হইতেছে এক রকমের। আর আবারও বলি, পলিটিক্স থাকাটা বাজে-ঘটনা না, বাজে-ঘটনা হইতেছে অইটুকেই আটকায়া থাকাটা, মেইন-পারপাস হিসাবে এমার্জ করার ভিতর দিয়া একটা কন্ট্রোল-টুল হয়া উঠাটা।]

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩

– একুশে ফেব্রুয়ারি হইতেছে একটা মর্সিয়া সুররে রিলিভেন্ট কইরা তোলার ঘটনা –

মহরমের মর্সিয়ার লগে সুরটা মিলে বইলাই “আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো…” গানটা গাওয়ার সময় দরদ উথলায়া উঠে আসলে।

মানে, আবদুল গাফফার চৌধুরী’র কবিতাটা পইড়া দেইখেন, অই সময়ের এভারেজ একটা কবিতা-ই অইটা। এমনকি পরের প্যারাগ্রাফগুলার “গণসঙ্গীত”-টাইপের যেই সুরটা আছে, অইটাও এভারেজ ঘটনাই মোটামুটি। কিন্তু শুরুর ছয় লাইনে যেই মর্সিয়ার/মাতমের ব্যাপারটা অইটুকই আসলে গানটা।

তো, এইখানে আরেকটা আজিব ব্যাপার হইতেছে, এই জিনিসটা আলতাফ মাহমুদের পরের (আগে তেমন গানের সুর নাই উনার। এইটা ১৯৫৪ সালের সুর। উনার মিউজিক ক্যারিয়ার ছিল করাচীতে। ১৯৬৩ সালে করাচি থিকা ঢাকায় সেটেলড হন উনি।) গানগুলাতে এই জিনিসটা (মর্সিয়া বা দেশি-সুরের ঘটনাটা) মিসিং-ই অনেকটা। “বাণিজ্যিক” কারণে সিনেমার দুয়েক্টা গানে হয়তো “বাধ্য” হয়া রাখছেন। [উনার আনোয়ারা (১৯৬৭) সিনেমার মিউজিক সিগনিফিকেন্ট একটা জিনিস, দরূদ-শরীফ গাওয়াইছেন আঞ্জুমান আরা বেগমরে দিয়া।] কিন্তু মোস্টলি “আধুনিক গানের সুরকার”-ই হইতে চাইছেন। যার ফলে, আলতাফ মাহমুদের সুর বইলা তেমন সিগনিফিকেন্ট কোন সিগনেচার পাইবেন না।

যেইটা আবদুল লতিফের মিউজিকে ভরপুর আছে। ইভেন “অরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়” হইতেছে স্পিরিট’টা, যেইটা বাংলাদেশের মানুশরে কানেক্ট করছিল। এখনো রিলিভেন্ট। বাংলা-একাডেমির বাংলা-ডিকশনারি দেখতে গিয়া একবার নোটিশ করছিলাম “কাইড়া” শব্দটা অই “অভিধানে” নাই! [ইন্টারেস্টিং না ব্যাপারটা!]

আবদুল লতিফের সুরটা যেহেতু শুনি নাই, অইটা নিয়া কিছু বলতে পারতেছি না। কিন্তু হিস্ট্রিকাল জিনিস হিসাবে কোথাও আর্কাইভ করা দরকার ছিল। অনলাইনে কোথাও পাইলাম না।

তো, আমার কথা এইটা না যে, আলতাফ মাহমুদ খারাপ, আর আবদুল লতিফ ভালো 🙂 বরং উনারা দুইজন কাছাকাছি সময়ের মিউজিশিয়ান (আবদুল লতিফ একটু সিনিয়র), এবং উনাদের মিউজিকাল যেই প্রেফারেন্স সেইখানে আবদুল লতিফের যেই সিগনেচার (বা টেনডেন্সি) সেইটার দিকে আলতাফ মাহমুদ যতটা ঝুঁকতে পারছেন, উনার মিউজিক তত কানেক্ট করতে পারছে। একজন বড় আরেকজন ছোট, ঘটনাগুলা এইরকম না।

যেইরকম ধরেন, জহির রায়হানরে বড় বানাইতে গিয়া খান আতাউর রহমানরে আমরা দেখি না। এইগুলা জহির রায়হানরেও ছোট করার ঘটনা।
এমনিতে আবদুল গাফফার চৌধুরী’র “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো…” গানটা একটা শহুরে-সেন্টিমেন্টেরই জিনিস, যেইখানে মর্সিয়াটা হইতেছে ঘটনা। গানের কথাও যদি ধরেন “ছেলে হারা শত মায়ের…” কথাও তো ভুল, একশ লোক তো মারা যায় নাই!
অবশ্য একটু বাড়ায়া বলা-টাই তো “সাহিত্য” আমাদের! এইটা মাইনা-নেয়াটাই বেটার।

ঢাকা শহরে আগে দেখার জায়গা ছিল চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক। এখন হইতেছে মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার। মানে, এইগুলা তো যতটা না নেসিসিটি, তার চাইতে বেশি লোক-দেখানোর ঘটনাই।

কয়দিন আগে ঢাকার মিরপুরের কালশী-তে কি নাকি একটা ফ্লাইওভার বানাইছে, পত্রিকায়-টত্রিকায় বিশাল বিশাল ছবি ছাপাইছে। কিন্তু মিরপুরের লোকজন দেখি কেউ থ্যাংকিউ পিএম কয় না! কি ঘটনা?

মিরপুরের একজনরে জিগাইলাম, সে কইলো, ভাই, অইটা তো ডিওএইচসের জন্য বানাইছে, ডিওএইচএস দিয়া উঠছে, ডিওএইচএস গিয়া নামছে, মিরপুর ১১ বা ১২’র লোকজন তো অইটা অইরকম ইউজ করতে পারবে না!

(এই অ-দরকারি ইনফরমেশনটা কোন নিউজেই পাইবেন না 🙂 যেইরকম মিঠামইনের হাওরের রাস্তা যে কোন হাইওয়ের লগে কানেক্টেড না, কোন বাস-টাস চলে না, এইটা “এস্থেটিক রাস্তার” “বাজে-ক্রিটিকের মতো” যেমন কেউ “বলে না”, অইরকম অনেকটা।)

তার মানে হাজার-বারোশ কোটি টাকা খরচ কইরা এমন একটা জিনিস বানানো হইছে যেই রাস্তা কমন-পিপল ইউজই করতে পারবে না! যেইরকম পদ্মা-সেতুর টোল মোটামুটি মিডল-ক্লাস লোকজনের এফোর্ড করতেই পাছা ফাইট্টা যায়।

তো, এইগুলা কোন টেকনিকাল ফল্ট না, যেইরকম বাকশালি-বাটপারগুলা আমাদেরকে বুঝাইতে চায় যে, অইখানে একটা ইউ-লুপ করলে, অইখানে একটা কানেকশন করলে, জিনিসটা ভালো হইতো, ব্লা ব্লা ব্লা…

মানে, ব্লাডি-সিভিলিয়ানদের জন্য কেন এইরকম করবে এক্স-মিলিটারি এবং আমলা-এলিটের যোগসাজশে বানানো অবৈধ-গর্ভমেন্ট! এই বাটপারগুলা এই সার্ভিসটা দিয়া আসলে কম-বেশি অই দলের খাতাতেই নাম লেখাইতে চায়।

যা-ই হোক, যা-ই হোক…

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩

একুশে ফেব্রুয়ারি যে কিছুটা ফাঁপানো ঘটনা – এইটা মনেহয় এখন বলার টাইম হইছে।

মানে, পাকিস্তানের রাষ্ট্র-ভাষা কি হবে? – এইটা নিয়া তর্ক ১৯৪৭ সাল থিকাই ছিল, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে নরমাল একটা প্রটেস্টে কোন উসকানি ছাড়াই পুলিশের গুলি চালাইছিল, মানুশ মারা গেছিল, ঢাকায় এবং কিছু জেলা শহরে আন্দোলন হইছিল তখন। পরে ১৯৫৬ সালে বাংলা-ভাষা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র-ভাষা হইছিল। এরপরে, এটলিস্ট ১৯৭০-৭১’র আগ পর্যন্ত তেমন কোন সিগনিফিকেন্ট ঘটনা ছিল না।

মানে, ২১ শে ফেব্রুয়ারি কবে থিকা সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হইছে? এই ইনফরমেশন কোথাও পাইলাম না। প্রতি বছর তো শ’য়ে শ’য়ে লেখা ছাপা হয়, কিন্তু এই ইনফরমেশন পাবলিকলি এভেইলেবল না তেমন। (বিসিএস পরীক্ষায়ও আসে না মনেহয়।) পাকিস্তান আমলে হয় নাই মেবি, বাংলাদেশেও ১৯৭২-ই কি হইছিল?

তারপরে, একুশে ফেব্রুয়ারির লিটারেচারে পাইবেন ১৯৫৩ সালে পয়লা “প্রভাতফেরী” হইছিল। জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০) সিনেমা-তে সিন আছে একটা। এর মধ্যে কোন “প্রভাতফেরী” হয় নাই – তা না, কিন্তু সারা বাংলাদেশে, সব স্কুলে-কলেজে শহীদ মিনার বানায়া খালি পায়ে হাঁইটা গিয়া ফুল দেয়ার রিচুয়ালটা শুরু হইছে কবে? মানে, ১৯৫৫ থিকা ১৯৭০, এই সময়ে যারা স্কুল-কলেজে পড়ছেন, ঢাকার বাইরে, তাদের বায়োগ্রাফিতে কি পাইছেন? ধরেন, হুমায়ূন আহমেদের ছোটবেলার কোন একুশে ফেব্রুয়ারি-র স্মৃতি?

একুশে ফেব্রুয়ারি সিগনিফিকেন্ট হইতে শুরু করছে অবশ্যই বাংলাদেশ হওয়ার পরে। এমনকি ১৯৮০-এর দশক থিকাই মনেহয়। সব স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি, জেলা ও উপজেলা শহরে পারমানেন্ট শহীদ-মিনার বানানো শুরু হয়। এর সবগুলাই মোটামুটি ১৯৭০ তো অবশ্যই, ১৯৮০-দশকেরই ঘটনা মেবি। (নিজেদের এলাকায় খোঁজ নিলেই জানা যাবে।)

আমি বলতে চাইতেছি, একুশে ফেব্রুয়ারি’র এখনকার যেই ন্যারেটিভ, সেইটা বাংলাদেশ হওয়ার পরে ধীরে ধীরে “বাঙালি-জাতীয়তাবাদের” ঘটনা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হইছে।

কিন্তু আমার ধারণা, ঘটনা এইরকম ছিল না। কারণ ভাষা-আন্দোলনের দাবি ১৯৫৬ সালেই মাইনা নেয়া হইছিল, রাষ্ট্রীয়ভাবে। কিন্তু ব্রিটিশরা চইলা যাওয়ার পরে, দেশ স্বাধীন (মানে, পাকিস্তান) হওয়ার পরেও কেন পুলিশ গুলি করলো – অই দাগা ছিল পুব পাকিস্তানের মানুশের মনে।
কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনাটা কখনোই আরেকটা রাষ্ট্র হওয়ার বাসনাতে অপারেট করে নাই, বরং যখন বাংলাদেশ আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার দিক যাইতে শুরু করছে তখন ১৯৫২’র ২১শে ফেব্রুয়ারি-রে একটা রেফারেন্স পয়েন্ট হিসাবে নেয়াটা শুরু হইছে। ঘটনাটা এক ধরণের “পুনরাবিষ্কার” হইছে, সোসাইটিতে ন্যারেটিভ হিসাবে এস্টাবলিশ করার দরকার পড়ছে।

তো, একুশে ফেব্রুয়ারি-রে এখনো অই ক্রিটিকাল জায়গা থিকা দেখার ব্যাপারে পলিটিকাল ট্যাবু থাকার কথা। কিন্তু জিনিসটারে আরো পবিত্র কইরা তোলার আগেই এই নিয়া আলাপ করতে পারাটা ভালো।…

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩

উত্তর কোরিয়া-তে যদি দুর্ভিক্ষ হয়, সেই খবর কি আমরা জানতে পারবো? বাংলাদেশের মানুশের একটা বড় অংশ যে একবেলা, আধাবেলা খাইয়া দিন পার করতেছে, সেই কথা, যারা নিয়মিত পত্রিকা পড়েন, টিভি-নিউজ দেখেন, তাদের কাউরে কি সহজে বিশ্বাস করাইতে পারবেন?
ইনফরমেশন না-থাকাটাই খালি ঘটনা না, কোন একটা ঘটনারে ইনফরমেশন হিসাবে দাবায়া রাখাটা এবং হাউকাউ-গুলারে ইনফরমেশন বানায়া তোলাটা এর চাইতে বাজে-জিনিস না হইলেও কোনভাবেই কম-খারাপ ঘটনা না।

সামনে রোজার দিন আসতেছে। আর কয়দিন পরেই সেকুলার-বাটপারগুলা বলা শুরু করবে, রোজার সময় মুসলমানরা খায় বেশি! বাজারে জিনিস শর্ট ফালায়া দেয়। তাদের জিব্বায় শান দিতেছে। অথচ বাজারে সব জিনিসের দাম হু হু কইরা বাড়তেছে। তেল, গ্যাস, কারেন্টের দামের কারণে আরো বাড়বে।

এইগুলা আমরা জানি-না না, এই জানাগুলা এমনভাবে আমাদের মিডিয়া-রিয়ালিটিতে এবং ভিজিবল কনশাসনেসের জায়গাগুলাতে হাজির আছে যে, এইগুলা তো ঘটনাই না যেন!

মানে, সবকিছুর পরেও “উন্নয়ন” তো হইতেছে, তাই না? 🙂

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩

বাংলাদেশের সবগুলা মোবাইল ফোন কোম্পানি এই অবৈধ নয়া বাকশালি এস্টাবলিশমেন্টের কোলাবরেটর। নিউজ-মিডিয়ার মতন এরাও ভান করে যে, “চাপে পইড়া” এইসব করতেছে! তা নাইলে লাইসেন্স থাকবে না, বিজনেস করতে পারবে না!

তো, এইটা মিছা-কথা না, অনেক সরকারি-নির্দেশ উনাদেরকে মানতে হয়। কিন্তু এদেরকে কি কখনো এইরকম স্টেটমেন্ট দিতে দেখছেন যে, “সরকারি নির্দেশে” নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখতেছি আমরা! বা এইরকম কিছু।

ব্যাপারটা খালি এইরকম না যে, উনারা “সরকারের প্রতি আনুগত্য” দেখাইতেছেন, অইটা কোলাবরেশন করার মতো জায়গাতে এক্সটেন্ড হইছে আসলে। যেইটার উপর বেইজ কইরা নিজেদের জালিয়াতিগুলা উনারা কন্টিনিউ করতে পারতেছেন।

এখন খালি সরকার অবৈধ এবং জুলুমবাজ – এইটাই একমাত্র ঘটনা না, কোম্পানিগুলাও বাটপার। চোরে চোরে মিলছে আর কি!
তবে গ্রামীণ ফোনের কেইসটা আরেকটু স্পেশাল। নয়া বাকশাল যদি নেকস্ট টার্মেও ক্ষমতায় আসে তাইলে এস.আলম বা বসুন্ধরা গ্রুপ বা দরবেশ-বাবার কাছে দেশি-শেয়ার বেইচা দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না মনেহয়।

বাংলাদেশে বিজনেসের নামে ডাকাতি করতে হইলে আসল ডাকাত-দলের সরাসরি কোন স্টেইকহোল্ডার-রে লগে রাখতে হবে। এইটা একটা “অবশ্য পালনীয়” শর্ত হিসাবে সব জায়গাইতেই আছে মোটামুটি, কিন্তু আরো “জোরদার” হইতে থাকবে বইলাই মনেহয়।

মানে, যদি ভালো না লাগে তাইলে “পাকিস্তান চলে যান…” 😛

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩

বাংলাদেশের ইকনোমি’র যেই অবস্থা তাতে কইরা গর্ভমেন্টের খরচ তো কমানো দরকার, আন-নেসেসারি জিনিস তো বাদ দেয়া দরকার। কিন্তু সেইটা না কইরা ডেইলি এই প্রজেক্ট অই প্রজেক্টের নাম কইরা খরচ আরো বাড়ানোই হইতেছে। এবং এইগুলা বেশিরভাগই মিনিং-লেস জিনিস, মানে, তেমন কোন ইমিডিয়েট পাবলিক বেনিফিট নাই। তাইলে এইগুলা কেন করতেছে, এই অবৈধ-সরকার?

কারণ, না কইরা কোন উপায় নাই!

যেই মুহূর্তে “উন্নয়ন-প্রকল্পের” নামে লুটপাটের ফ্লো বন্ধ করবে, অই মোমেন্টেই গর্ভমেন্ট ফল করবে। যারাই এই গর্ভমেন্টের লগে আছে তারা লুটপাট করার জন্যই আছে। যদি এই চান্স না থাকে, তাইলে এই অবৈধ-সরকার থাইকা কি লাভ!

এই কারণে “উন্নয়ন” না, বরং সামনের টার্মে পাওয়ারে আসলেও লুটপাটের চান্স আছে, আরো লুটপাট করা যাবে – এই “মনোবল” ধইরা রাখার জন্য এবং চাঙ্গা করার জন্য সামনের কয়েক মাসে আরো আরো “উন্নয়ন-প্রকল্পের” ঘোষণা আসার কথা।

গর্ভমেন্টের কাছে টাকা থাকুক বা না-থাকুক, ভিক্ষা কইরা টাকা আসুক আর দেশের মানুশের রক্ত চুইষাই আসুক, ইটস অ্যা মাস্ট!

নতুন নতুন “উন্নয়ন”-ই করা হবে না খালি, নেসেসারি জিনিসের উপর নতুন কইরা ভ্যাট-ট্যাক্স বসানো হবে, বিজনেসগুলারে ডাকাতি করার ফ্রি লাইসেন্স দেয়া হবে।

মানে, যে কোন উপায়েই হোক লুটপাট চালু রাখা হবে। লুটপাট করা ছাড়া এই অবৈধ-সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। ভিতর থিকাই ভাইঙ্গা পড়বে।

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩

পোস্ট-মর্ডানিস্ট গরু

একটু আলগা কথা-ই এইটা, কিন্তু মনে যেহেতু হইছে, বইলা রাখি।

এইটা খেয়াল করতেছিলাম যে, আমজাদ হোসেন এবং খান আতাউর রহমানের সিনেমাতে (আরো কারো কারো সিনেমাতেও পাইতে পারেন, যেমন সুভাষ দত্তের সিনেমাতে) অনেক গরু পাইবেন। মানে, রূপক-গরু না, লিটারারি গরু আছে অনেক। যে, ট্রেন যাইতেছে, মাঠে গরু দেখা যাইতেছে। রাস্তার পাশে দাঁড়ায়া নায়ক-নায়িকা কথা কইতেছে, দূরে একটা বা কয়েকটা গরু ঘাস খাইতেছে। এইরকম। মনে হইতে পারে যে, ঠিকমতো শট নিতে পারে নাই, ফ্রেমের ভিতরে গরু ঢুইকা গেছে। মানে, উনারা ইচ্ছা কইরাই রাখছেন নাকি গরু জোর কইরা ঢুইকা গেছে – এই ফয়সালা করাটা কিছুটা কঠিনই।

কিন্তু গরু পাইবেন। এই গরুদের নাম দিতে চাইতেছি আমি – পোস্ট-মর্ডানিস্ট গরু। মানে, পোস্ট-মর্ডানিস্টরা যেইরকম ছোট-খাট জিনিসগুলারে খুব গুরুত্ব দিয়া বুঝায়া ফেলতে পারেন, এইরকম গরুগুলাও তাদের ক্যামেরা-প্রেজেন্স দিয়া সিরিয়াস একটা জিনিস রিভিল করতে পারে, সেইটা হইতেছে, বাংলাদশের সো-কল্ড আর্ট-ফিল্মগুলাতে (ধরেন, আলমগীর কবিরের সিনেমা-তে) কোন গরু পাইবেন না!*

মানে, গরু থাকলে ব্যাপারটা তো এতোটা এসথেটিকাল জিনিস হইতে পারে না! গরু কেনো সিনেমার ফ্রেমে ঢুইকা যাবে! তাইলে সৌন্দর্য্যটাই তো মাটি হয়া যাবে! এই কারণে বাংলাদেশের আর্ট-ফিল্মে (এখন ইন্ডিপেন্ডেড ফিল্ম কয়) গরু-ছাগল সব হাওয়া! ক্যামেরার পিছনে মেবি থাকে।

কিন্তু খান আতাউর রহমান, আমজাদ হোসেনদের ফ্রেমে মাঝে-মধ্যেই গরু আইসা দাঁড়ায়া থাকে। এইটা ভালো কি খারাপ, তার চাইতে জরুরি হইতেছে, এরা পোস্ট-মর্ডানিস্ট গরু! 😎 আর্ট-ফিল্ম দেখতেছে যেন! বা কি রকম গম্ভীর হয়া, কোন আওয়াজ না কইরা কেমনে আর্ট-ফিল্ম কেমনে দেখতে হয়, সেই ব্যাপারে কিছু সাজেশনও যেন দিতেছে আমাদেরকে।

.
*সো-কল্ড আর্ট-ফিল্মের আরেকটা সিগনেচার হইতেছে কোন গান নাই। এবং ইন্ডিয়ান বাংলা-সিনেমাতে কোন ঘোড়া ও তলোয়ারের মারামারি পাইবেন না। এইরকম আরো কিছু জিনিসও আছে।

র-ফলা আর য-ফলা

ইংলিশ বা ইউরোপিয়ান কোন শব্দ পাইলেই দেখবেন র-ফলা আর য-ফলা লাগায়া দেয়া হয়। এতে কইরা উচ্চারণটা পারফেকট হয় না, বরং শব্দটা যে অনেক কঠিন – অই জিনিসটারেও ফুটায়া তোলা হয় আসলে।

মানে, লেখা-শব্দ তো একটা ভিজুয়ালও। যার ফলে নতুন শব্দ পড়তে যত না পবলেম, দেখতে তার চাইতে বেশি মনেহয় যে – বানাম ভুল!
আর ইংলিশ উচ্চারণ-ই যে সটিক, অই ব্যাপারটা তো আছেই। যেইরকম কুসটিয়া, যশোরের উচ্চারণরে শুদ্দ বইলা ভাবতে পারি আমরা, অইরকমেরই ঘটনা।

তো, এই কারণে র-ফলা য-ফলা বাদ দিয়া দিতে হবে – ব্যাপারটা এইরকম না, কিন্তু পারফেকট উচ্চারণের নামে কি কি জিনিস যে করে এই ঘটনাগুলা, অইটাও খেয়াল করাটা দরকারি ঘটনা আর কি!

মানুশ-জন সিনেমা কই দেখে? এই খবর নিতে গিয়া দেখলাম নেটফ্লিক্স, এমাজন, এই-সেই ওয়েব প্লাটফর্ম তো আছেই, কিন্তু এইগুলাসহ চালু এবং নানান কেটাগরির সিনেমা-সিরিজ দেখার জায়গা হইতেছে ওয়াই-ফাই কানেকশনের সার্ভারগুলা। এমনকি রিকোয়েস্ট করলে যে কোন সিনেমা-সিরিজ অরা আপলোড কইরা দেয়। অনলাইনে দেখা যায়, ডাউনলোডও কইরা রাখা যায়। মানে, ভালোই জিনিসটা।

তো, অইগুলাতে একটু ঢুইকা দেখলাম, বাংলাদেশি সিনেমা কি আছে? 🙂

মোটামুটি একটা-দুইটা সিনেমাও নাই। “বাংলা-সিনেমা” আছে কিছু, ইন্ডিয়ার।

এখন বাংলাদেশি-সিনেমার হিউজ ডিমান্ড আছে ব্যাপারটা এইরকম না। কিন্তু হলিউডি-বলিউডি, এমনকি আর্ট-ফিল্ম দেখার পরেও দেখতে চাইতে পারেন তো কেউ, সেইখানে ঘটনা হইতেছে যে, সিনেমাগুলা এভেইলেবল না। ১৯৫০ সালেরও হলিউডি-বলিউডি-আর্টফিল্মগুলা পাইবেন, কিন্তু ১৯৭০-৮০ ক্লাসিক বাংলাদেশি-মুভিগুলা নাই।

ইউটিউবে যেই জিনিসগুলা পাওয়া যায়, খুবই বাজে অবস্থা অইগুলার। মানে, মিনিমাম একটা টেকনিকাল কোয়ালিটি না থাকলে সিনেমা দেইখা তো আরাম নাই। আমার কথা হইতেছে, অই সিনেমাগুলা ভালো-খারাপ যেইরকমই হোক, এখনকার ভিউয়ারদের জন্য দেখার মতো অবস্থায় রাখা নাই।

আর এইটা একটা পবলেম।

মানে, বার্গার, চিকেন-ফ্রাই মানুশ খালি পছন্দ করে বা শহুরেপণা দেখানোর লাইগা খায় না, এইগুলা যে এভেইলেবল এইটাও একটা ঘটনা।
(একটু ইরিলিভেন্ট হইলেও বলি, হোটেলে খাইতে বসলে যে মাছ-মাংস খাওয়া লাগে, এর কারণ এইটা না যে, আমরা সবসময় মাছ-মাংসই খাইতে চাই, বরং কোন মাছ-মাংসের আইটেম যদি না থাকে, তাইলে পার হেড বিলের পরিমাণ তো বাড়ানো যাবে না! খাওয়ার বিজনেস কইরা তো দোকানের পোষাইবো না!)

এখন বাংলাদেশি-সিনেমা এভেইবল করা সার্ভারটা যারা চালান তাদের কাজ না, দেশপ্রেমের ঘটনা হয়া উঠলেও বিপদের কথা। আমি জাস্ট বলতে চাইতেছি, আপনি চাইলেই পুরান বাংলাদেশি সিনেমার দেখার ভালো কোন আরকাইভ পাইবেন না।

ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩

আমাদের মতো যারা ঢাকা শহরের আশে-পাশের ছোট-শহরগুলাতে থাকছেন, তারা এই টেকনিকটা নোটিশ করতে পারার কথা কিছুটা।

যে, নতুন কোন বাস-সার্ভিস চালু করতে হইলে ট্রেনের শিডিউলে গন্ডগোল লাগাইতে হবে আগে, টিকেট নিয়া ঝামেলা বাঁধানোর বেবস্তা করতে হবে…। (রেলের অবস্থা এমনিতে খুব এফিশিয়েন্ট – তা না, কিন্তু আরেকটু খারাপ বানাইতে পারলে তো সুবিধা।) এমনকি বিআরটিসি-র বাস-সার্ভিস থাকলে সেইগুলা বন্ধ করাইতে হবে। তা নাইলে নতুন বাস-সার্ভিস চালু করা যাবে না। এবং পরেও কোন বাস-সার্ভিস যাতে চালু না হইতে পারে, সেইদিকেও “খেয়াল” রাখতে হবে।

মানে, ব্যাপারটা অবশ্যই ট্রেডিশনাল অর্থে মনোপলি না, কিন্তু এমন একটা অবস্থা কইরা রাখতে হবে যাতে পিপলের আর কোন অপশন না থাকে! অন্য অপশনগুলারে আরো বাজে মনে হইতে থাকে এবং নতুন অপশন এমার্জ না করতে পারে। (মানে, ব্যাপারটা পাবলিক-প্রাইভেট, এনজিও-করপোরেট টাইপের “তর্কের” জিনিস না, কোনভাবেই।)

বাংলাদেশের পলিটিক্স বলেন, কালচার বলেন আর বিজনেস বলেন, যত না আইডিওলজিকাল একটা ঘটনা, তার চাইতে এইরকমের টেকনিকগুলার জায়গা থিকা আরো ভালো-ভাবে টের পাইতে ও বুঝতে পারার কথা আমাদের।

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩

নৃবৈজ্ঞানিক তত্ত্বসমগ্র

এই বইটার কথা আমি শুনছি, ছাপা হবে এইরকমও জানছি, ছাপা-হওয়ার খবরও পাইছি। ভালো-খবর এইটা। দুই-তিনটা কথা আমার মনে হইছে এই ব্যাপারে, কিন্তু বলি বলি কইরা বলা হইতেছিল না, প্রিতমের এই লেখাটার কারণে সেইটা বলা যাইতেছে এখন –

১. ভার্সিটি লেভেল বাংলা-বই তো নাই আমাদের। ইভেন “বাংলাদেশ ইকোনোমি”-র ব্যাপারেও ইংলিশ বই-ই পড়া লাগতো আমাদের। এই কারণে যারা ভার্সিটির টিচার আছেন, যেইসব কোর্স উনারা পড়ান, উনারা কিন্তু চাইলেই বাংলা-তে অই সাবজেক্ট-ম্যাটারগুলা নিয়া লেখতে পারেন। যেহেতু ক্লাসে পড়ান এই জিনিসগুলা, কিছু না কিছু তো জানেন, বা জানা তো লাগে। কিন্তু যে কোন সাবজেক্টেই বাংলায় একাডেমিক বই খালি রেয়ার না, নাই-ই আসলে। তো, বাংলায় একাডেমিক বই লেখার ঘটনাটা ভালো। বাংলায় মেনশন করার মতো কিছু একাডেমিক জার্নাল থাকলেও ভালো হইতো…

২. এইখানেই আসে সেকেন্ড পয়েন্ট-টা। কিছু জার্নাল যে নাই – তা মনেহয় না, কিন্তু কোন নতুন-চিন্তা (একাডেমিক ব্রেক-থ্রু অর্থেই) নাই। বরং স্টুডেন্ট থাকার সময়ে যেই কয়টা দেখার সুযোগ হইছিল, অইগুলা ছিল বিদেশ-চিন্তার রিভিউও না, বরং “পরিচয়” করায়া দেয়ার ঘটনা। মানে, বাংলা-ভাষার একাডেমিক জার্নালে আপনি এতো “সাহস” কেমনে করবেন!
বড়জোর এখনকার দুনিয়ায় কি কি চিন্তা ডমিনেন্ট আছে, সেইগুলার পরিচয় করায়া দেয়াটাই তো কাজ! বা আমাদের একাডেমিক ঘটনা!
তো, এইটা বাজে-ঘটনা। যে, বাংলা-ভাষায় কোন একাডেমিক-চিন্তা আপনি করতে পারবেন না! “পরিভাষা”-ই (বাংলায় বললে, টার্মগুলাই) তো নাই! (আরো বাজে-কথা এইটা।)

আর এই বইটা, আমার ধারণা, কম-বেশি এই কেটাগরি-র মধ্যেই অপারেট করে। যদি এর থিকা এক্সটেন্ডেড কোন ভার্সন হইতে পারে, তাইলে তো ভালোই।

৩. থার্ড পয়েন্টটা এই বইয়ের লগে এতোটা রিলেটেড না, বরং ওভারঅল একটা কমেন্ট করা। যে, বাংলা-ভাষায় অন্য সব ভাষার জিনিসপত্র ট্রান্সলেট করা যাবে না, সামারি করা যাবে না, রিভিউ করা যাবে না – ব্যাপারগুলা এইরকম না, বরং এই ঘটনাগুলার ভিতর দিয়া যদি বাংলা-ভাষায় চিন্তার জায়গাগুলাতে কোনরকমের নড়চড় হইতে না পারে – সেইটা বেশ স্যাড একটা ঘটনা।

আমার ধারণা বাংলা-ভাষায় দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনায় এই ব্যাপারটা (ভাষার স্ট্রাকচারে নড়চড়ের ঘটনাটা) কিছুটা ঘটছিল। একটা হইতেছে মস্কো থিকা প্রগতি প্রকাশনী-র রুশ-সাহিত্যের বইগুলা, আরেকটা হইতেছে সেবা প্রকাশনীর কিশোর-ক্ল্যাসিক, ওয়েস্টার্নগুলার ভিতর দিয়া। এইগুলারে খালি তরজমা বা এডাপ্টশন বইলা দেখলে কিছুটা ভুল-ই হবে, এর বাইরেও এর কিছু জায়গা ছিল।

মানে, একটা চিন্তা, থিওরি বা ইমাজিনেশন ট্রান্সেডেন্টাল একটা ঘটনা, এইটা ট্রাভেল করে। একটা ভাষা থিকা খালি খালি আরেকটা ভাষাতে যায় না, একটা কালচার বা সমাজ থিকাও আরেকটা কালচার বা সমাজে ছড়াইতে থাকে। এবং এর ভিতর দিয়া নতুন জায়গাতে অন্য নতুন কোন জিনিসরেও জাগায়া তুলতে পারে। মানে, একটা জিনিস আগে ইংলিশে পড়তাম, এখন বাংলায় পড়তেছি – এইরকম উদ্দেশ্য থাকাটা ঠিক না আর কি! (এই বইটা এই কাজ করছে কি করে নাই – এইটা আমি যাচাই করতে যাইতেছি না। এর উপর বেইজ কইরা এই থার্ড পয়েন্টটার কথা মনে হইলো বইলা বলে রাখা।)

Leave a Reply