নোটস: মার্চ, ২০২৩ [পার্ট ১]

মার্চ ২, ২০২৩

এইরকম আলাপ তো মাঝে-মধ্যে দেখি ফেইসবুকে যে, আপনার পড়া ফার্স্ট বই কোনটা? বা আপনার পড়া ফার্স্ট রিমার্কেবল বই কোনটা? বা কোন বইটার কথা আছে? বা কোন বইটা দিয়া “গল্পের বই” পড়া হইছে আপনার? এইরকম।

তো, এইগুলাতে খুব বেশি এনগেইজড হওয়া হয় না। কিন্তু মনে হইতেছিল, আমাদের জেনারেশনে সবারই কম-বেশি “বই পড়া” শুরু হইছে আসলে সেবা-প্রকাশনী’র বইগুলা দিয়া। (হুমায়ূন আহমেদ তখনো সেলিব্রেটি হন নাই, তার কিছুদিন পরেই হইছেন।) কারো হয়তো তিন গোয়েন্দা, কারো হয়তো ওয়েস্টার্ন, কারো হয়তো মাসুদ রানা দিয়া। মানে, “সেবা প্রকাশনী”র বই বইলা একটা কেটাগরি এগজিস্ট করে এখনো বাংলাদেশের বইয়ের মার্কেটে।

তো, বইগুলা কেমন ছিল? 🙂 হার্ডকাভার তো অবশ্যই না, অত বেশি মোটা-কাগজেরও না; ছিল নিউজপ্রিন্ট কাগজে ছাপানো। ছাপানো খারাপ না, তবে এভারেজই। ফন্ট-টন্টও ছোটই। কাভার তো বিদেশি ছবি মাইরা দিয়া বসানো। মানে, কোয়ালিটি সেন্সে যদি বলেন, আদর কইরা “এভারেজ”-ই বলা যাবে, এর বেশি বললে সেইটা সত্যি-কথা বলা হবে না।

মানে, বই বলতে যেই সফিশটিকেশন আমরা বুঝি, কোয়ালিটি আমরা বুঝি, সেই পেরামিটারগুলাতে টেকনিকাল সেন্সে “ভালো বই” না। সাহিত্য হিসাবেও “বাজে বই” কেটাগরিতেই ফেলা হইতো। কিন্তু আমাদের টিনএইজ বয়সে অইগুলাই ছিল আমাদের বই।

আমি বলতে চাইতেছি, টেকনিকাল এফেশিয়েন্সি কোন খারাপ জিনিস না, কিন্তু একটা বই দেখতে সুন্দর বইলাই সেই বই আমরা পড়ি না। এমনকি এগজিসটিং সাহিত্য-ধারণার লগে মিলে বইলাই সেইটা ভালো-বই না।

বরং আমি যেইটা মনে করতে পারি, সেবা প্রকাশনীর বই যে পড়তে ভালো-লাগতো, এর একটা মেজর কারণ ছিল বইগুলাতে সাহিত্যিক-বর্ণনার চাইতে ঘটনার বর্ণনা বেশি থাকতো। ঘটনা তরতর কইরা আগায়া যাইতো। পড়তে কোন সমস্যা হইতো না। এমন একটা শব্দও ছিল না, যেইটা আমরা বুঝতাম না। স্মুথ একটা রিডিং এক্সপেরিয়েন্স দিতো। যেইটা সাহিত্য-পড়া লোকজন খুব একটা পছন্দ করতো না বইলা “খারাপ-বই” বলতো।

এখন অই সিউডো-তর্কে আমি যাইতেছি না। আমি বলতে চাইতেছি, যে কোন জায়গাতেই টেকনিকাল এফিশিয়েন্সটাই ঘটনা না। মিনিমাম একটা টেকনিকাল কোয়ালিটি থাকাটা বা সেন্স থাকাটা ভালো অবশ্যই, কিন্তু এইগুলা দিয়া কোন জিনিসরে বিচার করতে যাওয়াটা হাইট দেইখা বা কালার দেইখা মানুশের ভালো-মন্দ যাচাই করতে যাওয়ার মতোই আজাইরা ঘটনা অনেকটা।

বদরুউদ্দিন উমর মোটামুটি সবসময়ই ছিলেন (রেভুলেশনারি না, বরং) ইলিওশনারি লোক। মানে, একটা থিওরির জায়গা থিকাই দুনিয়ার ঘটনাগুলারে দেখছেন উনি। এই কারণে যেই জিনিস উনার থিওরেটিকাল-রিয়ালিটির লগে মিলে না, তারে রিকগনাইজ করতে রাজি হইতে পারেন নাই উনি। পারসপেক্টিভ হিসাবে মাঝে-মধ্যে ইন্টারেস্টিং মনে হইলেও পলিটিকাল রিয়ালিটি হিসাবে বেশিরভাগ সময় দূরের একটা ব্যাপার হয়া থাকার কথা।

কয়দিন আগে উনার একটা কথা ভাইরাল হইলো যে, ১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশে কোনকিছুই হয় নাই, আর কিছু মানুশ খুশিও হইলো এই কথা শুইনা। কিন্তু ১৯৭১-র পরে কিছু হয় নাই না, বরং ১৯৭৬ – ১৯৯০ পর্যন্ত টাইমটা হইতেছে বাংলাদেশের পলিটিকাল, কালচারাল এবং ইকোনমিক আইডেন্টিটি তৈরি হওয়ার টাইম। এইটা বদরুদ্দিন উমরের মতো আইডিয়ালিস্টরা দেখেন-না না, এর ভিতর দিয়া বাংলাদেশরে একটা পজিশন হিসাবে ইনফিরিয়র কইরা তোলার এজেন্ডারেই সার্ভ করেন।

১৯৪৭-রে মহান বানাইতে গিয়া ১৯৭১-রে বাতিল করাটা আরেকটা ব্লাফ বা বুজরুকি। যারা ১৯৪৭-রে মানতে পারেন নাই, তারাও ১৯৭১-রে অ-দরকারি বানাইতে চান এখন।

মার্চ ৩, ২০২৩

– “সাকিবের দোকানে ১৫০০ টাকা দিয়ে দিও” –

ভার্সিটির এক স্টুডেন্ট ক্লাসে টিচারের বকা খাইয়া সুইসাইড করতে গেছিল। (টিচার তারে ক্লাসে বকছিলেন এক ক্লাসমেটরে প্রেমের প্রপোজাল দিয়া রিজেক্ট হওয়ার পরে অই মেয়ের ডিস্টার্ব করার কারণে।)

ঘটনাটা এতোটা ভাইরাল হইতে পারে নাই। নিউজপেপার, ওয়েব-পোর্টালে নিউজ হইলেও ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্ট সার্কেলেই এখনো আছে ঘটনাটা।

কিন্তু ইন্টারেস্টিং হইতেছে দুইটা জিনিস এইখানে। এক, সুইসাইড করার সময়ে স্টুডেন্ট প্রাইম মিনিস্টার-রে চিঠি লেখছে। এবং দাবি করছে, সে ছাত্রলিগ করে বইলা টিচার তারে অপমান করছেন। আর এর কারণে ছাত্রলিগ অই টিচারের বিচার চাইছে, মিছিল-মিটিং করছে! টিচার একটু চাপেই আছেন এখন, যদিও উনার পক্ষে অন্য স্টুডেন্টরা কথা-টথা বলতেছে!

তো, এইটা মোটামুটি একটা ট্রেডমার্ক ঘটনা নয়া বাকশালের আমলে। মিছিলে গুলি কইরা মানুশ মারার পরে অই মানুশদের নামেই মামলা করা। কিন্তু এইটা পলিটিকাল-ঘটনা হিসাবেই ছিল এতোদিন, সোশাল-জায়গাগুলাতেও যে এই ধরণের ব্ল্যাকমেইলিংগুলা ঘটে আসতেছে, সেইটা এতোটা ভিজিবল ছিল না এতোদিন, এই ঘটনার ভিতর দিয়া সেইটা স্পষ্ট হইলো কিছুটা।

সেকেন্ড হইতেছে, ফেইসবুকে সুইসাইড-পোস্ট লেখার সময় একজন কমেন্ট করলে সুইসাইড-এটেম্পট করা স্টুডেন্ট রিপ্লাই দিছিল – “সাকিবের দোকানের ১৫০০ টাকা দিয়ে দিও” মানে, ছাত্রলিগ করলেও সে যে “মানবিক” এই উদারতা তার ছিল। কিন্তু মুশকিল হইতেছে, অইখানে সবাই মোটামুটি “হা হা…” রিএক্টই দিতেছে!

“মানবতার” আসলেই কোন দাম নাই! মানুশ-জন অনেকবেশি ক্রুয়েল হয়া উঠতেছে! – এই ডিসিশান-ই নিতে পারার কথা আমাদের, আমরা যারা ঘটনার কনটেক্সট’টার চাইতে অনেক দূরে আছি। যে, একজন স্টুডেন্ট সুইসাইড করার সময় ভার্সিটির দোকানদারের পাওনা টাকা দেয়ার জন্য বলতেছে, এইরকম করুণ জায়গাতেও লোকজন হাসতেছে!

কেনো! এইটা কোন পাজল না আর কি! ভার্সিটিগুলাতে ছাত্রলিগ যে রক্ষীবাহিনির কাজটা করে এবং এই রক্ষীবাহিনির ক্ষমতা যে আরো বাড়ানো দরকার – তার একটা আকুতি হিসাবে দেখতে পারলে এই ঘটনাতে বরং একটু ডরানোই উচিত স্টুডেন্টদের।

মার্চ ৫, ২০২৩

রমেশ শীল

“দেখলে ছবি পাগল হবি,
ঘরে রইতে পারবি না”

– এই গান তো অনেকেই শোনার কথা। কবিয়াল রমেশ শীলের নামও অনেকের জানার কথা। কিন্তু এইটা যে রমেশ শীলের গান, এইটা আমি জানতাম না। আমার ধারণা, অনেকেই জানেন না।

যেমন রমেশ শীল’রে রাজনীতি-সচেতন গণসঙ্গীত-গায়ক হিসাবে ট্যাগ দিতে দেখছি; কিন্তু উনি যে মেইনলি মাইজভান্ডারি গানের লোক – এইটাও তত একটা জানা ছিল না আমার।

একবার এক সিএনজি ড্রাইভারের মোবাইলে একটা গান শুনছিলাম “সন্ধ্যা হল, ডাক দিলি না মোরে, প্রাণো বন্ধু রে…” খুবই ভালো লাগছিল। বুঝতে পারতেছিলাম যে, মাইজভান্ডারির গান, কিন্তু এইটাও যে রমেশ শীলের লেখা গান সেইটা ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারির দরবারে গিয়া উনার গানের বই কিইনা টের পাইলাম।

তো, এইগুলা কোন আজব, অদ্ভুত ঘটনা না!

খেয়াল করলে দেখবেন, বাংলাদেশে বৃষ্টির/বিস্টির গান তেমন নাই ৫০-৬০ বছর বা ১০০ বছর আগে; কারণ বিস্টি কেউ কইতো না, কইতো – মেগ/মেঘ; যেমন ধরেন “আল্লা মেগ দে…”, এইরকম। একইভাবে “বসন্ত” যত না পাইবেন “ফাগুন” পাইবেন তার চাইতে বেশি।

মানে, খেয়াল করা বা না-করাগুলা একটা বা কয়েকটা রেফারেন্স সিস্টেমের ভিতর দিয়া কাজ করে। একটু কমিউনিস্ট না হইতে পারলে কাউরে সাহিত্যিক হিসাবে নিতে রাজি ছিলাম না আমরা, কয়দিন আগেও। মাইজভান্ডারিও কবি পরিচয়ে একটা কালিমা বা কলঙ্কের ঘটনাই কিছুটা, যে গরিব ছিলেন বইলা পীরের দরগায় গেছিলেন। এইরকম কিছু।

আবার, মাইজভান্ডার-রে সেন্টার করার ভিতর দিয়া দেখা যাবে রমেশ শীলের অন্য যে এক্সপ্লোরেশনগুলা আছে, সেইগুলারে বাতিল করা লাগতে পারে! মানে, যতদিন একটা ডেফিনেশন বা স্থির-আইডিয়ার জায়গা থিকা জিনিসগুলারে আমরা দেখতে থাকবো, ঘটনাগুলা এইরকম কপার্টমেন্টালই হয়া থাকবে।

ঘটনাগুলা সবসময় একটা ফ্লো’র ভিতর দিয়া ঘটে। ১৫-১৬ শতকের দিকে দেখবেন যারা কবি ছিলেন পারস্যে, তারা মেডিসিনের কিছু জিনিস জানতেন। রমেশ শীলের সময়ে কবি মানে ছিল যে দুই-তিনটা শাস্ত্র জানে। একই সময়ে কলোনিয়াল-বাংলাতে যারা কবি ছিলেন, তাদের খালি কবিতা না, গান-ও লেখা লাগতো! যেইটা ধরেন গত ১০০ বছরে গিয়া নাই হইছে। কিন্তু এক ধরণের চাপ তৈরি হইছে যে, কবি-রে ইন্টেলেকচুয়াল হওয়া লাগবে! মানে, যেই কবি গায়ক ছিলেন উনি পন্ডিত না হইলেও বুঝদার একজন লোক হবে – এই এক্সপেক্টশন আসছে।

তো, এই জায়গাগুলারে ফিক্সড কইরা ফেললে মুশকিল। একটা রেফারেন্স-সিস্টেমের ভিতর দিয়াই আমরা দেখবো, কিন্তু অই বাটখারাটার/ডেফিনেশনের ওজন দিয়া মন-রে মাপা যাবে না! এই হিসাব ভুল। আসল হিসাব ভিন্ন।

মার্চ ৭, ২০২৩

অন শিট-পোস্টিং

ফেসবুকের দিন তো শেষ হয়া আসতেছে, কিন্তু ফেসবুক নিউজফিডের আল্টিমেট যেই কাজ – শিট-পোস্টিং, সেইটা ঠিকঠাক মতো করা হইলো না! এই আফসোস মনেহয় আমার কিছুটা থাইকা যাবে।

মানে, শিট-পোস্টিং তো করি কিছু, কিন্তু অইগুলা তেমন লিমিট ছাড়াইতে পারে না। যার ফলে, সোবার একটা ইমেজও মনেহয় রয়া গেছে আমার।

সবাইরে দিয়া তো সবকিছু হবে না – এই জায়গা থিকা ব্যাপারটা মাইনা নিছি কিছুটা। কিন্তু আমার চেষ্টা জারি আছে। মাঝে-মধ্যে ট্রাই করি শিট-পোস্টিং করার। অইরকম হয় না আর কি! মানে, হয় তো কিছু, কিন্তু ভালো শিট-পোস্টিং হয় না।

আমার অনেকগুলা না-পারা মধ্যে এইটাও একটা।

মার্চ ১৪, ২০২৩

অবিচুয়ারি: মোশাররফ স্যার

আসলে আমরা বেশিরভাগ জিনিস তো আমাদের চারপাশের মানুশ-জনের কাছ থিকাই শিখি। আমি খেয়াল কইরা দেখলাম, আমি যে ছোট-বড় সবাইরে ‘আপনি’ কইরা বলি, এইটা আমি শিখছি মোশাররফ স্যারের কাছ থিকা।

স্যার মারা গেছেন মাস খানেক আগে। তখন ফোন কইরা কয়েকজন জানাইছেন আমারে। এর আগেও কয়েকজন আমারে বলছে যে, স্যার আমার কথা জিগাইছেন। দেখা করতে যাওয়া হয় নাই আর।

মোশাররফ স্যার ছিলেন আমাদের হাইস্কুলের অংকের টিচার। এখন তো স্কুলের টিচার’রা ব্যাচ কইরা কোচিং সেন্টারে বা নিজের বাসাতে/জায়গায় পড়ান, কিন্তু তখন (১৯৮০-দশকে) অনেক টিচার বাসায় আইসাও পড়াইতেন। আমাদের বাসায় আমরা ৩-৪ জন (আমার বড়ভাই, ছোটমামা, চাচাতো ভাই) উনার কাছে পড়তাম। উনি সন্ধ্যার দিকে পড়াইতে আসতেন।

তখন তো নিয়মিতই কারেন্ট থাকতো না। আসতো-যাইতো। ইউপিএস’র জামানাও শুরু হয় নাই। হ্যারিকেন জ্বালানো লাগতো। তো, এইরকম একদিন কারেন্ট চলে গেছে। স্যার বললেন, হ্যারিকেন আনতে হবে। আমি বললাম, না স্যার, লাগবে না, এখনই চইলা আসবে কারেন্ট। এবং কি আশ্চর্য! ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই কারেন্ট চলে আসলো। স্যার তো অবাক! আপনি কি করে জানলেন! আমি তো মিটিমিটি হাসতেছি। কিন্তু স্যার খুবই অবাক! উনি যেন ম্যাজিক দেখলেন, আর সেইটা বুঝতে পারতেছেন না! আমি পরে না পাইরা বললাম, না স্যার, অইরকম কিছু না, গত কয়েকদিন ধইরাই এইরকম হইতেছিল তো, এই কারণে ধরে নিছি বেশিক্ষণ দেরি করবে না। কিন্তু স্যার মানলেনই না! পরের দিন স্কুলে ক্লাসে গিয়া কাহিনিটা সবাইরে বললেন!

অবশ্য এর আগেও স্যার আমারে পছন্দ করতেন। উনার বউ-বাচ্চা নিয়া আমাদের বাসায় বেড়াইতে আসতেন। কোনদিন আইসাই আম্মারে বলতেন, ভাবী, আজকে ভর্তা দিয়া ভাত খাবো! স্যার খুবই উঁচা-লম্বা মোটা-মানুশ ছিলেন। খুবই জলি মাইন্ডের।

আমি অংক তেমন পারতাম না। স্যার অনেক সময় নিয়া টেকনিকগুলা বুঝায়া দিতেন। টিচার হিসাবে খেয়াল করতেন স্টুডেন্টরা বুঝতে পারতেছে কিনা। স্কুলে পপুলার টিচার ছিলেন উনি। পরে যা হয়, ঢাকায় ভালো কোন স্কুলে চলে আসছিলেন।

তো, আই ফিল ব্লেসড যে, আমি উনার স্টুডেন্ট ছিলাম, এবং একটা ভালো-জিনিস উনার কাছ থিকা শিখতে পারছিলাম।

মার্চ ১৫, ২০২৩

এইটা মোটামুটি ভুল-কথাই যে, ধর্ম বা রিলিজিয়ন হইতেছে পারসোনাল ঘটনা, বরং ধর্ম হইতেছে একটা পাবলিক এফেয়ারসের ঘটনা। (মানে, আমি তো এই দাবিও করতে চাই যে, একটা সময়ে ধর্ম ছিল রাজাদের ঘটনা; রাজা যদি বৌদ্ধ হন তাইলে প্রজারাও বৌদ্ধ, রাজা হিন্দু হইলে প্রজারাও হিন্দু… এইরকম। ধর্ম মেবি ছিল সেন্ট্রাল ঘটনা, এর বাইরে লোকাল-কালচার ছিল। যেইগুলারে প্যাগান বলছে খ্রিস্টানরা, নিচু-জাত বলছে নিউ-হিন্দুরা। মানে, লোকাল-রিচুয়ালগুলা কখনোই ধর্ম ছিল না, পারসোনাল মোরালিটির জায়গাগুলা তো কখনোই না।)

এইটা মনে হইতেছিল, ধর্মে মেয়েদের কথা খুব বেশি নাই কেনো – এই জিনিসটা খোঁজ করতে গিয়া। তো, এইটারে এখনকার ডমিনেটিং ধর্মগুলার উইক-পয়েন্ট হিসাবে দেখার একটা টেনডেন্সি আছে। কিন্তু যেই সময়ে ধর্মের রীতি-নীতিগুলা শেইপ-আপ হইতেছিল তখনকার সমাজের পাবলিক-এফেয়ারসে মেয়েদের পার্টিসিপেট করার উদাহারণ তো কম-ই ছিল। যার ফলে, এইটা মিসিং না, বরং পাবলিক এফেয়ারসে এতোটা রিলিভেন্ট ব্যাপার ছিল না।

মানে, এইটা “ধর্ম ও নারী” বিষয়ে কোন আলাপ না, কিন্তু অই আলাপটা পাবলিক-এফেয়ারসের জায়গাটারে সেন্টার কইরা করলে, ব্যাপারটারে ‘ভুল’ বইলা মনে হবে-না না, বরং কনটেক্সট’টার কাছাকাছি যাওয়া যাইতে পারে।

Leave a Reply