নোটস: এপ্রিল, ২০২২ [পার্ট ১]

এপ্রিল ০৩, ২০২২

– মিডিয়া-রিয়ালিটির সিউডো তর্ক নিয়া –

কিছুদিন পরে পরেই এই রকমের জিনিসগুলা ভাইরাল হয়, নারী-অধিকার ভার্সেস ইসলামের ঘটনাগুলা। এখন এই ঘটনাগুলা যে ঘটে না – তা না, কিন্তু এই টাইপটারে আমি বলতে চাই ‘মিডিয়া রিয়ালিটি’র ঘটনা। এই ঘটনাগুলাতে খুব উদাস-ভাবে পাওয়ারের জায়গাটারে হাইড করা হয়। যেমন, ঘটনা’টা যেন পুলিশ ভার্সেস পিপল না!

তো, পাওয়ার’রে রেয়াত বা ইনডেমনিটি দেয়া আগেও ছিল, কিন্তু ২০১৩ সালের শাহবাগের পরে এই জিনিসটা খুব ক্লিয়ারলি লোকেট করা যায় যে, এইটা যতোটা না নারী-অধিকার ভার্সেস ইসলামি-শাসনের ‘তর্ক’ তার চাইতে অনেক বেশি হইতেছে বাকশালি-জুলুমরে আড়াল করার ঘটনা। যেন এইগুলা হইতেছে সমাজের ‘বার্নিং ইস্যু’, ‘ক্রিটিক্যাল আলাপ’! অথচ এর পক্ষে-বিপক্ষে থাকাটা তেমন কিছু মিন করে না আসলে। বরং একটা জেনারালাইজেশনের ভিতর দিয়া অডিয়েন্স হিসাবে জম্বি, জঙ্গি অথবা বড়জোর মডারেট-মুসলিম টাইপের একটা আইডেন্টিটির দিকে ঠেইলা দিতে থাকে। এইটাই এই ‘তর্ক’টার মেইন পারপাস আসলে।…

মানে, এইরকমের কোন ‘দ্বন্দ্ব ও বিষাদ’ নাই – এইটা আমার পজিশন না, এইগুলা হইতেছে সিউডো-পলিটিক্যাল ঘটনা। পলিটিক্সের মতন ‘নোংরা’ জিনিস নিয়া কথা না বইলা একটু কালচারাল-পলিটিক্স করা। (অন্য অনেক কিছু লগে) বেসিকালি, পাওয়ারের জায়গাটারে আন-কোশ্চেনড ও সেইফ রাখার একটা তরিকা।

Continue reading

নোটস: মার্চ ২০২২ [পার্ট ৩]

মার্চ ২১, ২০২২

– এনার্কিস্ট অ্যাজ অ্যা জমিদারের বাচ্চা –

বাংলাদেশে আপনি যদি পাওয়ারফুল লোক হন, তাইলে সেইটা পাবলিকরে বুঝানোর উপায়’টা কি?
আমি ভাইবা দেখলাম, সবচে সহজ উপায় হইতেছে, নিয়ম না মানা!* যে, রাস্তায় বামদিক দিয়া গাড়ি চালায়া যাওয়াটা হইতেছে নিয়ম, আপনি গেলেন ডাইনদিক দিয়া! এইটা খালি নিয়ম না-মানা না, নিজেরে পাওয়ারফুল হিসাবে দেখানোরও উপায়, যে দেখ! আমার নিয়ম মানা লাগে না। টিকেট কাটতে লাইনে কেনো দাঁড়াবো, আমি এলাকার মাস্তান না! টেন্ডারে আমি সিরিয়াল দিবো কেনো, পলিটিক্স কি এর লাইগা করি নাকি! এসপি, এমপি হইছি কি ট্রাফিক জ্যামে বইসা থাকার লাইগা নাকি! এইরকম। মানে, আপনি যে জমিদারের বাচ্চা একটা, এইটা বুঝাইবেন নিয়ম না মাইনা।

(একটু বাড়ায়া বলা মনে হইতে পারে, কিন্তু রিলিভেন্স মনেহয় না থাকার কথা না, যেই কারণে) বাংলাদেশের এনার্কিস্টদের নিয়ম না-মানা যতোটা না ফিলোসফিক্যাল চয়েস, তার চাইতে জমিদারের বাচ্চা হওয়ার খায়েশও কম বইলা মনেহয় না। আমি বলতেছি না যে, আপনি নিয়ম-মানা গোলাম হয়া উঠেন, কিন্তু এর কালচারাল সিগনিফিকেন্সটারে না মানলেও কন্সিডার করতে পারেন পয়েন্ট’টা।**
মানে, নিয়ম না-মানাটা অবশ্যই আমাদেরকে পাওয়ারফুল হিসাবে শো করে, কিন্তু এইটা ক্লাস-হেইট্রেটের ঘটনাও হয়া উঠতে পারে তো! আমি বলতে চাইতেছি, যে কোন আইডিওলজিক্যাল জিনিসরেই কালচারের কনটেক্সট থিকা বাইর কইরা দিয়া এবসুলেট জায়গা থিকা দেখাটা ঠিক হবে না। এই মিনিমাম জায়গাটার কথাই।

*মানে, আরো অনেক উপায় তো থাকতেই পারে। গেরামে বা ছোট শহরগুলাতে এইটা ছিল বাজারে গিয়া বড় মাছটা কিনা। পাড়ার সবচে সুন্দরী মেয়েটার লগে পিরিত করা। একটা মসজিদ বানানো, মাদরাসা দেয়া, আকিকা-খতনা-বিয়া-চল্লিশার বড় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা, এলাকার মানুশের বিচার-করা, নানান কিছুই… মানে, আপনার যে টাকা আছে বা পাওয়ার আছে, সেইটা যদি শো না করতে পারেন, তাইলে তো সেইটা না-থাকার মতোই ঘটনা…

**ইন্দোনেশিয়ায় সুহার্তো সরকারের আমলে ৫ লাখ কমিউনিস্টরে যারা মারছিল, সেই মিলিশিয়া বাহিনির এক নেতা কইতেছিল, আমরা তো আউট-ল পারসন, একটু উরাধুরা (ভাগ্য ভালো এনার্কিস্ট বলে নাই)। একইভাবে ‘৮০ বা ইভেন ‘৯০-এর দশকে যারা পাড়ার মাস্তান ছিল, উনারা এইরকম আউট-ল, এনার্কিস্ট হিরোই ছিলেন। হুমায়ূন আহমেদের “কোথাও কেউ নেই”র বাকের ভাই’রে দেখেন। এনার্কিস্ট তো কারেক্টার’টা, জমিদারের বাচ্চা হইতে পারে নাই আর কি এরা… কিন্তু অনেকে পারছে তো… ফার্স্ট এনার্কিস্ট দ্যান জমিদারের বাচ্চা, ফার্স্টে কমিউনিস্ট দ্যান বাকশালি… এইরকম।

Continue reading

নোটস: মার্চ, ২০২২ [পার্ট ২]

মার্চ ১১, ২০২২

এলাকার একটা ফেসবুক গ্রুপে আমি মেম্বার হিসাবে আছি। ফেসবুক আমার ধারণা লোকেশন জিনিসটারে বেইজ কইরাই নিউজফিডে বেশি পোস্ট সাপ্লাই দেয়, যেই কারণে অই গ্রুপের পোস্ট নিয়মিতই দেখতে পাই আমি। ভালো জিনিসই অইটা।

অইখানে কয়দিন পরে পরেই ‘জনসচেতনতা-মূলক’ পোস্ট দেন অনেকে। মানে, ফান করতে করতে একটু টায়ার্ড লাগে তো মাঝে-মধ্যে আমাদের, একটু ‘সিরিয়াস’ হইতেও ইচ্ছা করে।

তো, এর মধ্যে একটা কমন ‘সাবধানতা-মূলক’ পোস্ট হইতেছে, রিকশাঅলারা মিছা কথা কইয়া টাকা নিতেছে। নানান কাহিনি কয় এরা, নিজের অসুখ, ফ্যামিলির সমস্যা, মেয়ের বিয়া, ছেলের পরীক্ষা, ছোট বাচ্চা… এইরকম। আর একই রিকশাঅলা একেকবার একেক কাহিনি বইলা জালিয়াতি কইরা টাকা নিতেছে। মানে, এইরকম কোন সমস্যা উনাদের নাই! ভুয়া কাহিনি এইগুলা!

অনেক সময় রিকশাঅলাদের চেহারার বর্ণনাও দিয়া রাখেন, যাতে লোকেট করতে পারেন অন্যরা।

কাহিনিগুলা যে সত্যি না – তা তো না, এইরকম আমার লগেও হইছে। একই রিকশাঅলা কিনা খেয়াল করি নাই। কারণ উনারা যখন এইরকম কথাগুলা বলার মতো ভারানারেবল হয়া উঠেন, তখন উনাদের চেহারার দিকে তাকানোর সাহস আমি করতে পারি না।

লোকটা মিছা-কথা বলুক আর সত্যি-কথা, তারে যে এইরকম বলা লাগতেছে, এইটা বিচার করতে পারার লাইগা যেইরকমের ডাম্ব না, বরং শিমার হইতে হয়, সেইটা অনেক কঠিন কাজ তো!

কিন্তু ‘নরমাল’ হিসাবেই নিতে পারতেছি আমরা ঘটনাগুলারে যে, চোর ধরতেছি! আমার ধারণা, মিডিয়ার ‘জনসচেতনতা’ নামের জিনিসগুলা হেল্প করতেছে আমাদেরকে। সত্যি-মিথ্যার নামে একটা সিউডো-মোরালিটি দিয়া মানুশের দুরাবস্থারে ইগনোর করার রাস্তা ওপেন কইরা দিয়া। ভালোই মনেহয় এইটা। ভালো না?

#########

ল্যাঙ্গুয়েজ আর লিটারেচার

এইগুলা নিয়া তো অনেক কথাই আমি কইছি, পরেও আরো বলবো হয়তো। মানে, এইখানে তো অনেক কথাই বলার আছে আমার। তো, এখন একটা জিনিস নিয়া বলি।

এইখানে খুবই ভুল একটা জিনিস চালু আছে যে, কবি-সাহিত্যিকদের লেখা বা ভাষা যেন কোন ভাষারে বাঁচায়া রাখে বা রাখতেছে। কিন্তু ঘটনা বেশিরভাগ সময় উল্টাটাই ঘটে। একটা ভাষার ট্রাডিশন বরং কিছু কবি-সাহিত্যকদেরকে বাঁচায়া রাখে। দুনিয়াতে কোন ভাষায় লোকজন কথা কয় বা ইউজ করে বইলাই অই ভাষার সাহিত্য আমরা পাই। ল্যাটিন, সংস্কৃত বা আরো অনেক ভাষায় কেউ লেখে না, কারণ অই ভাষাগুলা ডেড। পড়ার বা শোনার কোন লোক তো নাই! তো, একটা ভাষার লোকজনই অই ভাষার রাইটারদেরকে বাঁচায়া রাখেন, উল্টাটা খুব কমই হয়।
কম রাইটারই ভাষার বেরিয়ারটারে পার হয়া গিয়া বা এর ভিতর দিয়া একটা ইউনিভার্সালিটিতে পৌঁছাইতে পারেন। ইভেন এইটা করতে হইলেও ভাষার জায়গাটাতে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ হয়া এইটা হয় না, বরং উনাদের ‘স্বতঃস্ফূর্তা’টা কোন না কোন কালচারাল পলিটিক্সের লগে এলাইন হইতে হয়। মানে, ঘটনাটা এতোটা ‘নিয়ত-নির্ভর’ জিনিস না, বা কিছু দূর পর্যন্ত লোকেট তো করতে পারি আমরা।

বাংলা-ভাষার ব্যাপারেই দেখেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আধুনিক বাংলা-ভাষা’ তৈরি করেন নাই, বরং কলোনিয়াল আমলে কলকাতার বাবু-সমাজের ভাষাটারে উনি লেখায় নিয়া আসছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র হিস্ট্রিক্যাল কারণেই সেইটা পারেন নাই। বঙ্কিমের লেখাপত্রে এইরকম জিনিস পাইবেন যে, যেই বাংলা-ভাষার ওকালতি উনি করতেছেন, সেই বাংলা’টা উনি লেখতে পারতেছেন না। কারণ লিখিত বাংলা-ভাষার শুরুই হইছে একটা ডিকশনারি-বেইজড জায়গা থিকা, উনি অই ‘শুদ্দ ভাষার’ কারিগর। সাহিত্য মানে হইতেছে শিক্ষিত-সমাজের একটা জিনিস – এই ধারণার বাইরে যাইতে পারাটা সহজ ছিল না উনার টাইমে। যার ফলে বঙ্কিমের বাংলা শাস্ত্র-সম্মত একটা জিনিসই হইতে চাইছে। রবীন্দ্রনাথ এইখানে কলকাতার বাবু-সমাজের এন্ট্রি দিছেন। এই কারণে কলকাতার কলোনিয়াল টাইমের রেফারেন্স ছাড়া এই বাংলা-ভাষা অচল।

ভাষা সবসময় একটা কালচারের রেফারেন্স। অই কালচারগুলা যখন সমাজ থিকা নাই হয়া যায়, ভাষাতেও বাতিল হইতে থাকে। লেখাগুলা ‘পুরান’ হইতে থাকে, রাইটার’রাও মারা যান। রবীন্দ্রনাথ যেই কালচারের চৌকিদার ছিলেন, অইটা এখন ‘আধুনিক’ তো না-ই, বরং বাংলা-ভাষার সবচে বড় বেরিয়ার, দুশমন। নয়া ব্রাহ্মণবাদের শেষ অজুহাত হইতেছেন রবীন্দ্রনাথ। উনার গল্প-কবিতা-গান ভালো কি খারাপ, এর চাইতে জরুরি আলাপ হইতেছে বাংলা-ভাষার বেইজ হিসাবে কলকাতার বাবু-সমাজের কালচাররে, এলিটপণারে টিকায়া রাখার রেফারেন্স পয়েন্ট হইতেছে উনার লিটারেচার।

পরমিত-বাংলায় লেখা যাবে-না না, অই কালচারাল বেইজটারে মাইনা নেয়া যাবে না। তাইলে নিজেদের কথা কইতে পারবো না আমরা। বারবার আটকায়া যাবো।

তো, এই কলোনিয়াল বাংলারে বানানো হইতেছে ‘নরমাল’। এর বাইরে গিয়া আপনে কবিতা লেখতে পারবেন, কারণ অইটা হইতেছে ‘কাব্য-ভাষা’ [মাই ফুট!]। বা নাটকের সংলাপে ‘আঞ্চলিক-ভাষা’ [আরেকটা বলদামি এইটা] ইউজ করতে পারবেন। কিন্তু সিরিয়াস-লেখা আপনারে কলকাতার বাবুদের মুখের বুলি’র মতো ‘বাংলা-ভাষায়’ লেখতে হবে!
Continue reading

নোটস: অগাস্ট, ২০২১ [পার্ট ১]

অগাস্ট ০১, ২০২১

কোন রিস্ক ছাড়া কোন সত্যি কথা বলা কোনদিনই কি সম্ভব?

এমন না যে, রিস্কি কথা-বার্তা মানেই ‘সত্যি কথা’; বরং যখন আপনি কোন না কোন সত্যি কথা বলবেন, দেখবেন সেইটা অনেকের জন্য ভালো হইলেও, এইটা কোথাও না কোথাও কারো না কারো ক্ষতি করতেছে; তখন সেইটা রিস্কি হয়া উঠে। কে যে আপনার দুশমন হয়া উঠতেছে, আপনি নিজেও জানবেন না।

সত্যের যেহেতু নিজের একটা ক্ষমতা আছে, সত্য ক্ষমতার জন্য সবসময়ই রিস্কি। অবৈধ ক্ষমতার জন্য তো আরো বেশি।

কিন্তু যখন অনেক মানুশ সত্যি কথাগুলা একসাথে বলার সাহসটা করতে পারবে, বলতে শুরু করবে, এই রিস্কটা কমতে থাকবে; আর সত্য-কথা বলার জিনিসটা একটা ‘সামাজিক অভ্যাস’ হিসাবে তৈরি হইতে পারবে। এই বলতে-পারা এবং বলতে-না-পারার স্ট্রাগলটা যে কোন সমাজে কম-বেশি সবসময়ই আছে। আর আমাদেরকেও সবসময় চেষ্টা করতে হবে, সত্য যেন সহজে অ্যাপিয়ারড হইতে, সেই সমাজ তৈরি করার জন্যে। আর যত মিনিমাম লেভেলেই হোক, সত্য বলার ভিতর দিয়াই এই কাজটা করতে হবে, আমাদেরকে।

#########

জ্ঞানের, বা আর্টের বা যে কোন ডিসিপ্লিনের চিন্তার কোন অথরিটি কি নাই? আমার কথা হইতেছে, আছে। যে কোন বিষয়েই আমার চাইতে কম-জানা লোক যেমন আছেন, বেশি-জানা লোকও আছেন। জ্ঞানের বা চিন্তার বা আর্টের ভিতরে যত ডুববেন, তত টের পাইবেন এই জিনিসগুলা।

কিন্তু মুশকিল হইলো, সেইটা সামাজিক অথরিটির জায়গাগুলার সাথে গুলায়া ফেললে টের পাওয়া যাবে না এতোটা। এই অথরিটির মধ্যে অনেক বই-পড়া লোক আছেন, ভার্সিটির টিচার আছেন (রমিলা থাপার যেমন, আর্লি এইজ ইন্ডিয়ান হিস্ট্রির একজন অথরিটি); কিন্তু কেউ বই পড়ছেন বইলাই, ভার্সিটির টিচার বইলাই অথরিটি না (টি.এস. এলিয়ট যেমন মর্ডান পোয়েট্রির একজন অথরিটি, এইরকম আরো আছেন, বা থাকার কথা)।

[যেমন হুমায়ূন আজাদের চাইতে আহমদ ছফা বাংলা-সাহিত্যের বড় অথরিটি ছিলেন (আমার ধারণা), একটা সময়। এখন এই অথরিটি ভালো না খারাপ, বা কেমনে তৈরি হয় এবং বাতিল হয়, এইগুলা পরের আলাপ আসলে।…]

এই জায়গাটা রিকগনাইজ করতে পারাটা সবসময় দরকারি। তা নাইলে আমরা নতুন চিন্তা না পাইয়া, সবসময় চিন্তার নতুন নতুন অথরিটি পাইতে থাকবো। যেইটা সবসময়ই বাজে ব্যাপার একটা।
Continue reading

পারসন অফ দ্য ইয়ার ২০২১

গত বছর থিকা এইটা শুরু করছি আমি। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে “পারসন অফ দ্য ইয়ার ২০২০” ডিক্লেয়ার করছিলাম। আমার মতে, ডা. জাহাঙ্গীর কবির ছিলেন বাংলাদেশের “পারসন অফ দ্য ইয়ার ২০২০”। বাংলাদেশে সবাই (মানে, মিডল-ক্লাসই আর কি) মোটামুটি উনার নাম জানে, আর উনার কথা-বার্তা, কাজকামের একটা পজিটিভ ইমপ্যাক্ট সমাজে আছে। মোটা দাগে, এইরকম একটা জায়গা থিকা ভাবছিলাম।

এইবার, ২০২১ সালের বাংলাদেশের “পারসন অফ দ্য ইয়ার” হিসাবে মনে হইছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী’র নাম। উনার ডাক্তারি বা মেডিকেল-এক্টিভিজমের কারণে না, বরং উনার পলিটিক্যাল পজিশনের কারণে। ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের মতো উনি কোন দিশা দেখাইতে পারেন নাই, কিন্তু যেইখানেই একটু আগুন আছে, সেইখানে উনি বাতাস দিয়া জ্বালানোর ট্রাই করছেন, করতেছেন। একটা দালাল-বাটপার গোষ্ঠীর লোকজন ছাড়া আজকে বাংলাদেশের সব মানুশের দশা উনার মতোই, মর মর অবস্থা, হুইলচেয়ার বইসা চলা-ফেরা করতে হয়; কিন্তু আশা মরে নাই! উনার জেনারেশনের আর কেউ [মানে, কোন পাবলিক ফিগার] উনার মতো কইরা বাংলাদেশের অবস্থাটারে আমলে নিতে, কথা বলতে রাজি নাই।

এইরকম ট্রাই করতে থাকার, দাঁড়ায়া-থাকাটার একটা দাম আছে। যেইদিন আমরা একজন মানুশের সৎ-সাহসের, সত্যি-কথা বলার, ভালো-কাজ করার তাগিদ’টারে ভালো-গুণ হিসাবে কদর করতে পারবো, তখন আমাদের নিজেদের মধ্যেও এর কণা দেখতে পাইলে তারে একটা ইমপ্যাক্টফুল জায়গাতে নিয়া যাইতে পারবো। এই জায়গা থিকা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী’রে বাংলাদেশের জন্য ইম্পর্টেন্ট লোক হিসাবে ভাবতে চাই আমি। Continue reading