রাষ্ট্র ত একটা এজেন্সী ছাড়া আর কিছুই না!

টাইটেলের কথাটা মনে হইছিল কয়েকদিন আগে। যে বিষয়টাতে মনে হইতেছিল, সেইটা নিয়া একটা নোট এবং একটা স্ট্যাটাস দিছেন, মাহবুব মোর্শেদ; তাই নতুন কইরা আবার মনে হইলো।

এখন মাহবুব মোর্শেদ যেইটা বলেন, সেইটা কিন্তু গ্রাউন্ডটা চেইঞ্জ কইরা বলেন না; বলেন একই গ্রাউন্ডে দাঁড়াইয়া। সেই গ্রাউন্ডটা কী? গ্রাউন্ডটা হইলো, রাষ্ট্রের ক্ষমতা! আর এইখানেই আমার আপত্তি। রাষ্ট্র ত একটা এজেন্সী ছাড়া আর কিছু না।

যারা বলেন, মন্ত্রীদের পদত্যাগ করা দরকার, তারা ত আসলে রাষ্ট্ররে গুরুত্বপূর্ণ কইরা তোলেন। যেন মন্ত্রীরা চেইঞ্জ হইলেই বিদ্যমান ‘বিষাদ’গুলার ‘আনন্দ’-এ পরিবর্তিত হওয়া সম্ভব! মাহবুব মোর্শেদের কথাতেও এই জায়গাটাতে [রাষ্ট্ররে গুরুত্বপূর্ণ ভাবাটাতে] কোন আপত্তি নাই, বরং উনার কথায় মনে হইছে যে, রাষ্ট্র ব্যাপারটা ত অ-গুরুত্বপূর্ণ না-ই, বরং রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলের জায়গাটারে মেরামত করা লাগবো। তাইলেই একটা কিছু হইবো।

যদিও (টাইগার) বামপন্থী ফারুক ওয়াসিফের সাথে উনার তর্কাতর্কি দেখি ফেসবুকে, জাহাঙ্গীরনগরের ধর্ষণ-বিরোধী আন্দোলন বিষয়ে [এইটার অসারতা নিয়াও চিন্তা আছে আমার, বলবো নে পরে] কিন্তু উনাদের ঐক্যের জায়গাটারেই বিরাট বইলা মনে হয়। দুইজনেই শুধুমাত্র রাষ্ট্র-ক্ষমতার দখলটারে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন বইলা না, রবং উনারা যেইভাবে চিন্তা করেন, সেই জায়গাটা একইরকম বইলা। Continue reading

‘আলোচনায় প্রবৃত্ত’ হওয়া বিষয়ে

একটা স্ট্যাটাসে (http://web.facebook.com/imrul.hassan/posts/10150227887597093) আলাপ করতে গিয়া মজনু শাহ ‘আলোচনায় প্রবৃত্ত’ হওয়া/না-হওয়া বিষয়ে উনার অবস্থান জানাইছেন আর আমার কাছেও আমার অবস্থানটা জানতে চাইছেন। আমার মনে হইছে, আরেকটা কমেন্ট না কইরা একটু গুছাইয়া উত্তর করতে পারলে ভালো হয়। নিজের অবস্থানটা হয়তো আরো বিস্তারিত করা যাইবো, ফরম্যাটের কারণেই।

মজনু শাহ’র কমেন্ট থিকাই মনে হইতে পারে যে, ‘আলোচনায় প্রবৃত্ত’ হওয়া বিষয়ে আমাদের পরস্পর-বিরোধী অবস্থান আছে। ‘বিরোধ’ একটা আছে, কিন্তু সেইটা যতোটা না ‘আলোচনা’র জায়গাতে, তার চাইতে ‘আলোচনা’ থিকা আমরা কি ‘প্রত্যাশা’ করি, সেই জায়গাটাতে।

 

‘আলোচনা’ কেন করতে চাই?

মজনু শাহ’র মূল যে অ্যাজামশন সেইটা হইলো: আলোচনা আমরা করি জানার জন্য, কিন্তু এইভাবে জানতে গেলে সময় নষ্ট হয়, এর চাইতে এই বিষয়ে পড়াশোনা কইরা আরো ভালোভাবে জানতে পারি। এই ভাবনার সাথে আমার দ্বিমতটা হইলো, শুধুমাত্র জানার জন্যই ‘আলোচনায় প্রবৃত্ত’ হই না আমি। পলিমিকস বিষয়ে ফুকো’র একটা মতামত অনেক আগে থিকাই আমি সাবস্ক্রাইব করি। মানে, জানার জন্য আলোচনা কোন পজিটিভ উপায় কিনা সেই জায়গাটাতে আমার সন্দেহ আছে। তাইলে কেন আমি আলোচনা করি বা করতে চাই? Continue reading

ব্লগ ও সাহিত্য: ক্ষুদ্রত্বের আকাংখা এবং আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা

কমিউনিটি ব্লগে ত লিখছি কিছুদিন; সম্ভবত ২০০৬/৭ থিকা ২০১০ এর মাঝামাঝি সময়টাতে; সচলায়তন-এ নিয়মিতই, প্রায় ৮/১০মাস; আমার ব্লগ-এ ২/৩মাস, আর এর ফাঁকে সামহোয়ারইন ব্লগ-এ কিছুদিন ছাড়াছাড়া-ভাবে; এরমধ্যে গুগল-এও একটা নিজের ব্লগ অ্যাকাউন্ট করছিলাম, একধরণের আর্কাইভিং এর জন্য। কোনকিছুই কনটিনিউ করা হয় নাই, শেষপর্যন্ত।

কেন যে হয় নাই, এই বিষয়টা নিয়া মোটামুটি একটা ধারণা আমার হইছে।

একটা কারণ যে আমি ‘সাহিত্য’ লিখতে চাই, ‘ব্লগ’ লিখতে চাই না। সাহিত্য এবং অন্যান্য লিখিত ফর্ম (সংবাদ প্রতিবেদন, এনজিও গবেষণা-পত্র…) এর মধ্যে নানান পার্থক্য আছে, প্রধান পার্থক্যটা মনেহয় উদ্দেশ্যের দিক থিকা। উদ্দেশ্য বলতে খুব ডেফিনিট কিছু না যে, আপনি আসলে কি করতে চাইতেছেন, কেন, কার জন্য ইত্যাদি… এইসব প্রশ্নের সমাধান কইরা ত আর লেখালেখি হয় না, কিন্তু একটা ধারণা আসলে থাকেই বা লিখতে লিখতেই তৈরি হইতে থাকে। ‘কেন’ জিনিসটা রিফ্লেক্টেট হয় মোস্টলি ‘কিভাবে’-এর ভিতর দিয়াই; আলাদা কইরা ‘কেন’ মনেহয় হয় না। Continue reading

অবিচ্ছিন্নতার দিকে

ফ্রিদা: ট্রটস্কির কাহিনি

ফ্রিদা সিনেমার একটা জায়গায় দেখা যায়, ট্রটস্কি স্ট্যালিন আর হিটলার’রে নিয়া বলতেছেন যে, দুইটাই দানব, কিন্তু হিটলার এর এটলিস্ট মানুষজনরে প্রভাবিত করার ক্ষমতা আছে, আর স্ট্যালিন এর ত এইটাও নাই। এই সংলাপ শোনার পর প্রথমেই মনে হইতেছিল, রাইটার ২০০২ সালে এইটা লিখছেন বইলাই হয়তো এত স্পষ্টভাবে ট্রটস্কির মুখে এই ডায়ালগ দিতে পারছেন। ১৯৭০/৮০তে, সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের আগে এইটা করা কতোটা সম্ভব হইতো? মানে, ট্রটস্কির স্ট্যালিন-বিরোধিতাটা ত আছেই, কিন্তু স্ট্যালিনের পারসেপশনটা সোভিয়েত ইউনিয়ন নাই হওয়ার আগে ত ক্লিয়ার ছিলো না এতো।  দুইটা পারসেপশনই ছিল – দানবের এবং মহানায়কের; কিন্তু ১৯৯০ এর আগে এবং পরে ব্যাপারটা একইরকম না, সময়ের চিন্তা বলে ত একটা বিষয় আছেই।

দ্বিতীয়ত, মনে হইতেছিল ট্রটস্কি যদি সত্যি সত্যিই এই চিন্তাটা কইরা থাকেন, তাইলে সময়ে কেন সেইটা রিকগনাইজ হইলো না? রাজনৈতিক ক্ষমতার কারণে স্ট্যালিন টিকে গেছেন, কিন্তু ট্রটস্কির স্ট্যালিন সর্ম্পকে চিন্তার জায়গাটা কেন ইগনোরড হইলো? রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন ছাড়া তত্ত্ব-চিন্তার টিকে থাকার কি কোন সামর্থ্য নাই? নাকি ওই সময়টাই তৈরী ছিল না, এই ধরণের চিন্তারে স্পেস দেয়ার লাইগা?  Continue reading

লেখকের পেশা, জীবন-যাপন, ভণ্ডামি…

একজন কবি’র পেশা আসলে কী হওয়া উচিত, বাংলাদেশে, এই টাইমে? মানে, ভ্যাগাবন্ড বা বিপ্লবী হওয়া ছাড়া উনারে যদি কোন সামাজিক পেশায় কাজ করা লাগে কামাই করার লাইগা? স্টুডেন্ট লাইফেই এই প্রশ্নটা নিয়া একটা সময় আমি খুব টেনশনে থাকতাম। পরে চাকরি করতে গিয়া তো আরো বিপদে পড়ছিলাম, কোন প্রাইভেট কোম্পানিতে সেলস-এ চাকরি কইরা কবিতা-লেখা কেমনে সম্ভব? আপনার লাইফ-স্টাইল, সোশ্যাল অ্যাপিয়েরেন্স, কাজকাম যেইটা কিনা পুঁজি’র গোলামিতে নিয়োজিত, সেইরকম একটা সামাজিক পজিশনে থাইকা, আপনি কি কবিতা লেখার সাহস করতে পারেন? বা করাটা কি উচিত? বিশেষ কইরা, যখন এক ধরনের আবশ্যিক শর্ত সোসাইটিতে এগজিস্ট করতেছে যে, কবিতা মানেই এক ধরনের প্রতিবাদ- বিদ্যমান ক্ষমতা-কাঠামো’র, খুব স্থুল বা সূক্ষ্ম, যে কোন অর্থেই; সেইটা খালি কবিতা লিইখা করলেই হবে না, লাইফ-স্টাইল দিয়া প্রমাণও করা লাগবে! এইসব জিনিস তো ফেইস করা লাগছে আসলে পারসোনাল লাইফে, একটা টাইমে, বেশ সিরিয়াসলি।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

বাংলাদেশের সোশিও কালচারাল কনটেক্সটে কবি হইতে পারেন আসলে – কলেজ বা ইউনির্ভাসিটির টিচার (প্রাইমারি বা হাইস্কুল হইলে হবে না; তবে পিএইচডি স্টুডেন্ট হইলে আরো বেশি হওয়া যাবে…), সাংবাদিক (এই এরিয়াটা এখন ব্যাপক, বলা ভালো, মিডিয়া-কর্মী), এনজিও-কর্মী বা রিসার্চার, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হইলেও চলে বা অ্যাডফার্মের কপি রাইটার থিকা শুরু কইরা ক্রিয়েটিভ ডাইরেক্টর’রেও মেবি মাইনা নেয়া যায়। এইরকম কিছু সিলেক্টিভ লিস্ট আছে, যারা কম-বেশি এলাউড। পাবলিকরে কনভিন্স করা যাইতে পারে ‘কবি’ হিসাবে । সরকারি-আমলারাও আছেন হয়তো, কিছু ডাক্তার বা কর্পোরেটের বড় অফিসার। কিন্তু এই সেকেন্ড ক্যাটাগরিটার হিসাব আবার ভিন্ন; কবি/লেখক হিসাবে পরিচিত হওয়া এবং কবিতা লেখা। প্রকৃত লেখক/কবি বইলা যে সামাজিক-চরিত্র, উনি সবসময় টিচার, জার্নালিস্ট, এনজিও-কর্মী… এই ক্যাটাগরিটা। উনারা ডেডিকেটেড লেখক/কবি; বাকিরা পাওয়ার প্রাকটিসের জায়গা থিকাই লিখেন [টাকা-পয়সা বেশি হইলে যেইরকম মসজিদ-মাদ্রাসা বানায়, দান-খয়রাত করে এইরকম…], ব্যাপারটা মিথ্যা না, কিন্তু আমার কনসার্নটা এইরকম লিনিয়ার ট্রুথের জায়গাটা নিয়া। Continue reading