কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাছের কাঁটা

আমার গলায় মাছের কাঁটা লাগছে
একটা বিলাই বলতেছে

শুইনা ভাজা মাছটাও হাইসা উঠলো, বাটিতে
বিলাইটা চেইতা গিয়া তখন অই মাছটারেও খাইলো

তারপরে বাটি’টাও হাইসা উঠলো,
বিলাইয়ের গলার কাঁটা তা-ও সরলো না

পিরিতি, মাছের কাঁটা
থাকলে থাকে না, না থাকলেই থাকে
কিন্তু, বিলাই-রে এই কথা কে বুঝাইবে!

লাভ লেটার

রসের বন্ধু আল মাহমুদ,

অনেকগুলা আইটেমের মধ্যে আমি হইতেছি তাইলে
আরেকটা আইটেম!

আপনার মন-খারাপের উপাদান, যারে
আপনি পাইতে পারেন না,
এই কারণেই রসের আলাপ করেন!

হাঙর, কুত্তা, বিলাই, অধ্যাপক, সম্পাদক
দুনিয়ার কেউ আপনারে পাত্তা দেয় না,
তাই আপনে খালি কবিতা-ই লেখেন,
আর ঢেউ গুনতে থাকেন আমার শরীরের,
চোখ বন্ধ কইরা

আমিও লেখছি একটা কবিতা,
আপনারে লইয়া, পড়েন –

“ও পাড়ার পুংটা মাহমুদ
কথায় কথায় যার কবিতার সুর,
তবু পোলা, পিরিতি বোঝে না।”

ইতি,
সুন্দরী রোজেনা

ক্যারিয়ার

রেট-রেইসে হাঁটতে হাঁটতে একটা ইন্দুর বলতেছে,
“এতো তাড়াতাড়ি কোথাও পৌঁছাইতে চাই না আমি”

অন্য ইন্দুরগুলা হাসতেছে, ভাবতেছে ক্যারিয়ার শেষ অর,
তা নাইলে অন্য কোন ফন্দি-ফিকিরই করতেছে মনেহয়…

যেহেতু ইন্দুর, কোন না কোন রেট-রেইসেই তো আমরা আছি!

Continue reading

কবিতা: জানুয়ারি, ২০২৩

বাকশালি-প্রেমের কবিতা

তোমার চুল নীল।
তাই তোমার পাদে গন্ধ নাই।
তোমার হাসি সুন্দর।
তাই তুমি পায়খানা না কইরা থাকতে পারো সাতদিন।
তোমার চোখ মায়াবী, উদাস, গভীর।
তোমার হিসু তাই শব্দহীন।
তোমার শরীর মোম, গলতে গলতে আবার জমা হয়।
তাই কোন ব্যথার আঘাত তুমি পাও না।

তথাপি তুমি অসহায়।
আমি ছাড়া তোমার কোন গতি নাই।

তুমি অসহায় রাজকন্যা।
আমি বীর যোদ্ধা!

তুমি টিভি-উপস্থাপিকা।
আমি টক-শো সেলিব্রেটি!
তুমি বাকশালি-ফেমিনিস্ট।
আমি বাম-বুদ্ধিজীবী!

আমি আমি আর আমরা আমরাই তো এই দুনিয়া!

বাকি যারা আছে সবাই বিএনপি ও জামাত।
অদের পাদে গন্ধ।
খাইতে পায় না তা-ও ডেইলি দুইবার হাগে।
চোখে ইশারা নাই, কথায় ইঙ্গিত-উপমা নাই কোন!
বাড়ি মারলে ব্যথা পায়।
সুফি-প্রেমও বুঝে না।

অদের কথা আমরা বলবো না কবিতায়।
অরা বস্তুজগতের অহেতুক বাস্তবতা।

কবিতা তো হবে লাইফের ফাইনার ফিলিংগুলা।
ঝকঝকা তকাতকা সুন্দর সুন্দর ছবির মতো একেকটা।

আমরা যেই কবিতা লেখবো তারে আবার বইলা বইসো না কিন্তু
বাকশালি-প্রেমের কবিতা!

ভুলে যেও না (ফরগেট মি নট)

যদি তুমি
কখনো
আমার কথা
ভাবতে চাও

এমন ভাবে
ভাববা

যেন একটা
পুরান গানের সুর
তুমি মনে করতে পারতেছো না

তুমি হাসতেছো

তুমি হাসতেছো
তোমার ফেইক হাসি
শীতের সকালের সূর্যের মতো
একটু একটু কইরা
রিয়েল হয়া উঠতেছে

তোমার
এই এইটুক রইদ
আমি কি যে ভালোবাসতেছি

তুমি হাসতেছো

Continue reading

কবিতা: ডিসেম্বর, ২০২২

পিংক ফ্লয়েড

আমরা
দুইটা ফিশ-বৌল

দুইটা আলাদা দুনিয়ায়
একটাই মাছের স্বপ্ন
দেখে যাইতেছি

সা রা জী ব ন

টাকার কবিতা

আমরা টাকা চিবায়া খাবো
অনেক অনেক টাকা থাকবে আমাদের কাছে
ব্যাংকে যদি টাকা না থাকে
নতুন কইরা ছাপায়া দিবে তো গর্ভমেন্ট

টাকা নাই মানে! টাকা ছাপানো কোন ঘটনা নাকি!

টাকা দিয়া ফুলকপি, টমেটো বানাবো আমরা
টাকা দিয়া বাজারে বাজারে ডিসপ্লে কইরা রাখবো
ডিম, মাছ, মুর্গি আর গরুর মাংস
পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ, তেল
আর যা যা কিছু লাগে আমাদের

টাকা দিয়া বানানো ব্যাগে
টাকা-ভর্তি কইরা টাকার জিনিসপত্র নিয়া আসবো!

আর কতো টাকা লাগবে দেশের মানুশের!
এতো এতো টাকা ছড়ানো সারাদেশে
মানুশ টাকা চিবায়া খাইতেছে না কেনো, এখনো!

খালি টাকা আর টাকা আর টাকা দিয়াই তো দুনিয়া ভরা!

এরপরেও গরিব, ছোটলোকগুলা নাকি টাকাঅলা হইতে পারতেছে না!
এরা কোনদিনও বড়লোক হইতে পারবে না!

আমাদের মতো টাকা চিবায়া খাইতে পারে না এরা
খালি ভাত খাইতে চায়, ভোট দিতে চায়

টাকার মূল্য বুঝে না!
আরে, টাকা থাকলেই তো হয়!

অনেক অনেক টাকা ছাপাইতেছি আমরা
এখন থিকা ভাতের বদলে টাকা খাবা তোমরা

এতোদিন উন্নয়ন খাইছো, এখন টাকা খাও,
বাংলাদেশের মূর্খ, অশিক্ষিত জনগণ! Continue reading

কবিতা: নভেম্বর, ২০২২

নওগাঁ শহর

যাওয়ার পথে,
দয়ালের মোড় পার হওয়ার
একটু পরেই রুবীর মোড়
তার আরো পরে মুক্তির মোড়

ফিরার পথে,
মুক্তির মোড় থিকা আরো কিছুদূর গেলে
রুবীর মোড়, আর তার একটু পরেই
দয়ালের মোড়

নওগাঁ শহর অবশ্য তার পরেও আছে, আর আগেও


উকিল পাড়ায়

উকিল পাড়া ঘুমায়।
রাত এগারোটায়।
কয়েকটা শিয়াল ঘুরতেছে রাস্তায়। দুনিয়াটা অদের এখন।


হেমন্তে আমি তোমার গান গাই ৩

বললো শে,
“আমারে তুমি ধইরা রাখো,
শীতের বাতাসে
গাছের শেষ পাতাটার মতো”

আলোগুলা নিবে যাইতেছিল
কুয়াশার ভিতর, বলতেছিল
“আই উইল লেট ইউ গো!”


ছাগলের বাচ্চা

সন্ধ্যাবেলায়
একটা ছাগল
পথ হারায়া
খেতের আলে দাঁড়ায়া
তার মা’রে খুঁজতেছে
ডাকতেছে, মেএএএ, মেএএএ, মেএএএ…

পাশের বাড়ি’র মেয়েটা
হাসতেছে তারে দেইখা
বলতেছে, ছাগলের বাচ্চা একটা!

Continue reading

কবিতা: অক্টোবর, ২০২২

বাকেরগঞ্জে সকাল

পূজামন্ডপের লাইটে
জ্বলজ্বল করতেছে পাশের মসজিদটাও
একজন বুড়া-মানুশ তার নাতিরে নিয়া খেলতেছে,
উনারা কি মুসলমান নাকি হিন্দু? – বুঝা যাইতেছে না,
হাসি, আলো, বাতাস, শান্ত আর নরোম…

রাস্তার মাঝখানে দুইটা বাচ্চা-ছাগল
সামনের দুই ঠ্যাং তুইলা শিং-য়ের লড়াই লড়তেছে
যদিও তাদের শিং পুরাপুরি গজায় নাই এখনো

ক্যাথলিক চার্চের গার্লস হোস্টেল থিকা গল্প করতে করতে বাইর হইতেছে দুইজন নান

বৃষ্টির পরে সকাল

রাস্তার দুই পাশে সবুজ অনেক জীবনানন্দ,
কিছু কিছু কামিনী রায়ও আছে হয়তো
যেহেতু বরিশাল, যেহেতু বাকেরগঞ্জ

আঁকা বাঁকা পথ
কালিগঞ্জ থিকা যাইতেছে সুবিদখালি বাজারে

ধীরে, কোন নতুন গান জাইগা উঠার মতো, ধীরে
রইদ উঠতেছে
ভোরের বিস্টির পরে

তিনটা শালিখ পাখি টিনের চালের উপরে
মেগ’রে বলতেছে, তুমি কি তাইলে হিন্দু-বাড়ির মেয়ের মতো
পূজার দিনে, দুইদিনের নাইওর আইছো?

আশ্বিনের শাদা বাতাসে হেমন্তের দুক্খগুলা জমতেছে
ব্যাটারি-রিকশাগুলা বিজি, খেয়ালই করতেছে না,
বলতেছে, “সাইডে, সাইডে…”

কলাগাছগুলা বেকুব হয়া ভাবতেছে, ওকে, ঠিকাছে
এ-ও এক বাংলা-ভাষা তবু পৃথিবীর বুকে ভাসিতেছে
ধানসিঁড়ি নদীটির তীরে…


সমারূঢ় ৩

যেহেতু আমি তোমারে নিয়া ফান-ই করতে পারি,
তোমারে আমি আর ফলো করবো কেমনে!


দুইটা চাঁদ

“এই বক্রতা কঠিন”
বলতেছিল বাঁকা চাঁদ,
বাঁকা গাঙের পানি

বাঁকা চোখ,
বাঁকা দুই নয়ন
বাঁকা হাসি

বাঁকা কথাগুলা
বাঁকা মিনিংয়ে বলতেছিল,
“এই বক্রতা আলো আর ছায়া
কড়ই গাছের ডালের, সন্ধ্যাবেলা…”

একটা চাঁদ
ঘুরে বেড়াইতেছিল
মেঘে মেঘে

একটা চাঁদ
হাঁটতেছিল একলা
গলিতে গলিতে

দুইটা চাঁদ আকাশে
একটা দেখা যায়
আরেকটা দেখা যায় না Continue reading