কবিতা: মে, ২০২৩

আরেকটা দুনিয়া

আরেকটা দুনিয়া থিকা তুমি হঠাৎ চলে আসলা,
যেইরকম ভিনগ্রহের লোকজন আসে দুনিয়াতে,
যেইরকম শহরের লোকজন যায় গ্রামে, ঈদের ছুটিতে

ইশারা-সংকেত পাঠায়, মাইপা মাইপা কথা কয়,
যেন আমাদের ইগো হার্ট না হয়, যেন আমরা মনে কষ্ট না পাই

এইরকম আরেকটা দুনিয়া আছে তাইলে, আমি ভাবি;
যেইখানে তুমি থাকো, থাকে তোমার সমস্ত কথা আর নিরবতা,
আর একদিন আইসা বলে, তুমি তো আমারে ভুলেই গেছো, তাই না?

দুপুর

সকাল থিকা দুপুর হইলো
দুপুর থিকা বিকাল হইতেছে
বিকালটা পরে সন্ধ্যা হবে;
আমি শুয়ে শুয়ে দেখতেছি
সময় চলে যাইতেছে

পানের দোকানে পান বানাইতেছে দোকানদার
কচু’র পাতাগুলা দুলতেছে বাতাসে
এক ফোঁটা বিস্টির পানিও বসবে না তাতে

আমি শুয়ে আছি, যেমন পাহাড় শুয়ে আছে পাহাড়ে

ফিশ-বৌল

তুমি চলে যাইতেছো একটা সিমুলেশন থিকা একটা না-থাকার দিকে।
আমি চলে যাইতেছি তোমার না-থাকা থিকা একটা সিমুলেশনের দিকে।

আমরা দুইজন একটা থাকা আর না-থাকা, বদ্রিয়ার চিন্তার দুনিয়াতে।

Continue reading

কবিতা: এপ্রিল, ২০২৩

অনেকগুলা বন্ধ দরজা

অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি। দরজাগুলারে দেখতেছি। কোন দরজাই আপনা-আপনি খুইলা যাবে না। আমারে বলবে না, আসো! আমার কাছেও চাবি নাই কোন। বইসা থাকতে থাকতে ভাবতেছি আমার মরণ হইতেছে সেই চাবি। যেই চাবি থাকলে পরে সবগুলা দরজাই খুইলা যাবে। তার আগ পর্যন্ত অনেকগুলা বন্ধ দরজার সামনে বইসা আছি আমি। থাকবো।

একটা না-লেখা কবিতা

ধরো, অন্য রকমের একটা কবিতাই লেখলাম আমি
(মানে, যেইটারে কবিতা বলা যায়,
পারবো না আমি জানি,
তারপরও ধরো, লেইখা ফেললাম)
আমার কবিতাটা কি কবিতা হইতে পারবে?

“আপনার উঠান তো বাঁকা!”
কমলা-সুন্দরী তখন বলবেন।

আমি জানি, একটা কবিতা আমি
লেখতে পারবো না আর কোনদিনই

বাল্য শিক্ষা

ডিএসএ অই আসছে তেড়ে
সাংবাদিকতার-স্বাধীনতা’টি আমি খাবো পেড়ে
Continue reading

‘ছোটদের’ জিয়াউর রহমান

[ছোটদের বলতে ঠিক বাচ্চাদের না আসলে; বরং যারা সার্টেন-ভঙ্গিমার বাইরে, ট্রেডিশনের বাইরে চিন্তা করতে শিখে নাই, অইরকম ‘ছোটদের’ জন্য লেখা। পুরান বামপন্থীদের কিছু বই-টই আছে না – ‘ছোটদের রাজনীতি’ ‘ছোটদের অর্থনীতি’ অইটার রিভার্স-ভার্সন টাইপের। আরেকটু এডিট-টেডিট করা লাগবে হয়তো পরে, কিন্তু এই ছোট বইটা পড়তে পারেন, ইনিশিয়াল আইডিয়া হিসাবে।]

১.
বাংলাদেশে এমন হাজার-হাজার ইন্টেলেকচুয়াল পাইবেন, যারা দাবি করেন যে উনারা আওয়ামী-লীগ/বাকশাল করেন না, কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানরে পছন্দ করেন।

কিন্তু এমন একজন ইন্টেলেকচুয়াল পাওয়া মুশকিল, যিনি বিএনপি করেন না, কিন্তু জিয়াউর রহমান’রে পছন্দ করেন।

এইটা খালি রেয়ার-ই না, আমাদের পলিটিক্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের যেই বেইজ, সেইখানে এইরকম একটা পজিশন মোটামুটি ইম্পসিবল একটা ঘটনা।

২.
– জিয়াউর রহমানের শাসন-আমল (১৯৭৯ – ১৯৮১) হইতেছে বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক শাসনের শুরুয়াত –

বাংলাদেশে ফার্স্ট ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন হইছিল ১৯৭৯ সালে। অই ইলেকশনে দেশের মানুশের ভোটে বাংলাদেশের ফার্স্ট ইলেক্টেড রাষ্ট্রপ্রধান হইছিলেন জিয়াউর রহমান। [ সেকেন্ড হইতেছেন বেগম খালেদা জিয়া, ১৯৯১ সালে। ]

সো-কল্ড বামপন্থীরা দেখবেন জিয়াউর রহমানরে “সামরিক-শাসক” কইতে কইতে মুখে ফেনা তুইলা ফেলে। অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কোন ইলেকশনের ব্যবস্থা করা হয় নাই, দেশের গর্ভমেন্ট ফর্ম করার জন্য দেশের মানুশের ম্যান্ডেট নেয়া হয় নাই। ১৫ মাস পরে, ১৯৭৩-এর মার্চ মাসের ইলেকশনে বাংলাদেশের মানুশরে ভোট দিতে দেয়া হয় নাই। ১৯৭৫-এ সব বিরোধীদল নাই কইরা দেয়া হইছিল। বাংলাদেশের মানুশের ভোট দেয়ার, রাজনীতি করার কোন অধিকার ছিল না।

এই নন-ডেমোক্রেটিক শাসন নিয়া কোন কথা শুনবেন না এই বাটপারদের মুখে। কারণ সো-কল্ড কমিউনিস্টরা ছিল অই জুলুমের শাসনের ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট। এরা বিপ্লবী না, এরা নন-ডেমোক্রেটিক, এন্টি-পিপল ফোর্স, বাংলাদেশের রাজনীতিতে।

জিয়াউর রহমানের ইকনোমিক ইনিশিয়েটিভগুলা উনার পলিটিক্যাল আইডিওলজিরই কন্সিকোয়েন্স। উনি ডেমোক্রেটিক ছিলেন। এইটারে ‘পাকিস্তানি করণ’ বইলা প্রমাণ করতে চায় নন-ডেমোক্রেটিক বাম-বাকশালিরা। Continue reading

নোটস: এপ্রিল, ২০২৩ [পার্ট ২]

এপ্রিল ১৬, ২০২৩

এসি-বিপ্লবীরা

গত বছর যখন ইলেকট্রিসিটির ক্রাইসিস’টা ফার্স্ট শুরু হইলো তখন পাখি সব কিছু রব শুরু করছিল যে, “বিদ্যুত ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে” (যারা এইরকম বাংলা কয়, তাদের পাছায় না জানি কতো কারেন্ট!)। এমনো সাজেশনও আসছিল যে, অনেক সুইচবোর্ডে লালবাত্তি জ্বলে, অইগুলাও তো “নিষিদ্ধ” করা দরকার এখন!

মানে, কারেন্টের নামে যে হাজার হাজার কোটি লুটপাট হয়া গেছে, এখনো হইতেছে সেইটা নিয়া আলাপ নাই-না, অই আলাপগুলা নাই কইরা দেয়ার লাইগা এই লেভেলের বোকচোদামিগুলা করা হইছিল আসলে।

তো, এখন আসছেন এসি-বিপ্লবীরা। বাংলাদেশের কতো পারসেন্ট হাউজহোল্ড এসি এফোর্ড করতে পারে? ২%? ৫%?

বরং ঢাকার বাইরে কারেন্টই থাকে না! লোডশেডিংয়ের কি অবস্থা? গড়ে কয় ঘন্টা কারেন্ট থাকে, ঢাকার বাইরে জেলা-উপজেলা-গ্রামগুলাতে? সিলিং ফ্যান কি চালানো যায় ২৪ ঘন্টা? আইপিএস আছে কয়টা বাড়িতে? কতোক্ষণ ব্যাক-আপ দিতে পারে? রিচার্জেবল টেবিল ফ্যানের মার্কেটের কি অবস্থা?

[যারা বাসায় ও অফিসে এসি চালাইতে পারেন, তারা জেনারেটরে গ্যালন গ্যালন ডিজেলও ঢালতে পারেন। এইরকমের গরিব-মার্কা আলাপ করার দরকারও পড়ে না আসলে।]

এই আলাপগুলাই নাই! কারণ তাইলে রিয়ালিটি বাইর হয়া আসবে, রাজনীতি নিয়া কথা কইতে হবে। আর আমরা তো পলিটিক্স নিয়া কথা কইতে পারি না! তাই না? 🙂

যারা রুটি খাইতে পায় না, তাদের কেক খাওয়া উচিত কি উচিত না – এই নিয়া “বির্তক অনুষ্ঠান” আয়োজন করতে পারি বরং আমরা!

বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে এই যে rage, ভার্চুয়াল গণপিটুনি চলতেছে সেইটা এই কারণে না যে এরা দুই নাম্বারি করতেছে! (সেইটা তো কিছুটা করছে বা করতেছে।) বরং এরা বাংলাদেশে সরকারি-জুলুমের সহযোগি-প্রতিষ্ঠানে পরিণত হইছে, তাদের সোশাল এক্টিভিটির ভিতর দিয়া। অবৈধ-সরকারের চিহ্নিত দালালদেরকে তারা তাদের ব্যান্ড-এম্বেসেডার বানাইছে। আর সেইটা না-বুইঝা করছে – এইটা ভাবার কোন উপায়ও নাই আসলে।

সমাজে দান-খয়রাত একটা বড় বিজনেস। বড় বড় ইন্সিটিটিউশনাল ফান্ডিংগুলা ধরতে হইলে সরকারের লগে ভালো খাতির আছে বা ম্যানেজ করতে পারবে, সেইটাও মেবি দেখানো লাগে। কিন্তু সরকারি-দালাল হয়া উঠলে সেইটা পসিবল না, বরং ব্যাক-ফায়ার করার কথা।

আমার ধারণা, বিদ্যানন্দের কাজকাম এমনিতেই অগোছালো ছিল। অর্গনাইজেশনাল গোল, স্টেটমেন্ট বা অপারেশনাল প্রসেসের পাবলিক কোন ডকুমেন্ট দেখি নাই। এন্টি-পিপল একটা রেজিমের পক্ষে থাইকা আপনি পিপলের ফর-এ কাজ করতেছেন – এইটা বিশ্বাস করানোটা এখন কঠিন-ই হওয়ার কথা আরো, ডোনারদেরকে এবং দেশের মানুশদেরকেও।

Continue reading

নোটস: এপ্রিল, ২০২৩ [পার্ট ১]

এপ্রিল ১, ২০২৩

এইটা মনে হইতেছিল John Wick 4 দেখতে গিয়াই যে, আসল ভিলেনের লগে মারামারি কিন্তু খুব অল্পই হয় নায়কের। যে কোন একশন-মুভিতে ভিলেনের চেলা-চামুন্ডা, ছোট ছোট ভিলেনরে সামলাইতেই আসলে টাইম লাগে বেশি।

আগে তো ভাবতাম যে, সিনেমারে লম্বা করার লাইগা এইগুলা করে। এখন অইটা তো আছেই, কিন্তু তারপরও ভিলেন নরমালি দলবল নিয়া থাকে, একলা থাকে না। অই দলবল সামলাইতেই টাইম বেশি লাগে আসলে। অই ছোট-মাস্তানগুলারে সাইজ কইরা ফেললে পরে দেখা যায়, ভিলেন এতো “প্রবল পরাক্রমশালী” কিছু না! মানে, একটা লাস্ট ফাইট তো হয়-ই। কিন্তু ভিলেনের সাঙ্গাতগুলারে সাইজ করা লাগে আগে।

মানে, বাংলাদেশের পলিটিকাল অবস্থার লগেও এই জায়গাটারে একটু মিলায়া দেখতে পারেন।

এপ্রিল ২, ২০২৩

– নুন-ভাত হোক, ফেন-ভাত হোক বা মাছ-মাংস-চাইল
গরিবের চাওয়া দালালদের কাছে সবসময় ‘ফানি’ ঘটনাই –

বাকশালি বাটপারগুলা ঘটনাটারে এইভাবে দেখাইতে চায় যে, ১৯৪৩’র সময়ে মানুশ নুন-ভাত চাইতো, ১৯৭৪’র সময়ে চাইতো ফেন-ভাত, আর এখন চাইতেছে মাছ-মাংস-চাইল! তো, এইটা হইতেছে উন্নয়ন!

মানে দেখেন, এরা কিন্তু একসেপ্ট কইরা নিতেছে আজকে বাংলাদেশের অবস্থা ১৯৪৩ বা ১৯৭৪’র মতোই। যে, মানুশ নিজে আর যোগাড় করতে পারতেছে না, কিনতে পারতেছে না! চাইতেছে, হাত পাততেছে! এই পয়েন্টটারে মিস কইরা যাওয়াটা ঠিক হবে না।

সেকেন্ড হইতেছে, ফুড হ্যাবিটের ব্যাপারটারেও কন্সিডার করেন। ঢাকার কোন হোটেলে কি সবজি-ডাল দিয়া খাইয়া আসতে পারবেন, মাছ বা মাংসের কোন আইটেম ছাড়া! মানে, তাইলে তো হোটেল-বিজনেসই বন্ধ হয়া যাবে! আগের দিনে তো পোল্ট্রি ছিল না, ফার্মিং ছিল না; মানুশ নুন-ভাত, ফেন-ভাতই খাইছে। এখন ফকিন্নির বাচ্চাগুলা কেন মাছ-মাংস খাইতে চায়! চেত’টা আসলে এইখানেও! (নুন-ভাত বা ফেন-ভাত খাইতে চাইলে যেন খাইতে দিত, বা তখন দিছে!)

দুইদিন আগেও ভিখারিরা ২টাকা ভিক্ষা চাইতো, এখন ১০ টাকা ভিক্ষা চায়। (পরে পলিসি বদলাইছে, কয় খাওয়ার টাকা দেন। একটা রুটি খাইতেও তো ১০ টাকা লাগে।) এতে কইরা ভিখারিদের ‘উন্নয়ন’ হয় নাই, লিভিং স্যান্ডার্ড বাড়ে নাই, খরচ বাড়ছে, টাকার দাম কমছে। নুন-ভাত, ফেন-ভাত এবং মাছ-মাংস-চাইলের ঘটনাটা এইরকমেরই।

থার্ড বা মেইন ঘটনা হইতেছে, ব্যাপারটা এইরকম না যে, এরা ‘ভুল-কথা’ বলতেছে, এরা জাইনা-শুইনা এই হাউকাউ করতেছে, যাতে কইরা মানুশের দুরাবস্থার কথা কেউ না বলে। এইটা কোন লজিকাল কথা বা পজিটিভ-প্রপাগান্ডাও না, এই স্রেফ একটা থ্রেট!

একটা আগলি ফান! যে, এইগুলা নিয়া কথা বলা যাইবো না! বললে তোমাদেরকে নিয়া সুশীল-হাসি হাসবো, ফান করবো আমরা! তোমাদেরকে আমাদের দলে নিবো না।

মানে, এইটা লজিকাল কোন আর্গুমেন্টই না, বরং এক ধরণের ক্লাস মেনিফেস্ট করা যে, তোমাদের হায়-হুতাশ নিয়াও আমরা হাসি-ঠাট্টাই করি! যার ফলে এই দালালদের কথার কোন জবাব হয় না, এর যে বড় “ফান” কইরাই এর জবাব দেয়া লাগে। আর হইতেছেও সেইটাই।

Continue reading