দান্তের অভিশাপ

 

মন কেন লিখলা না দিনলিপি;

যেমন ধরো, ‘হাওয়ায় ভেসে যাই’, পাতলা, আরামের দিনে
লোডশেডিং আর নাই, সিলিং ফ্যানের বাতাস আছে (এসিও থাকতে পারে)
আছে আযানের ধ্বনি, পাশের বাসায় টবে তুলসীর পাতা
অ্যাংরি-বার্ডস খেলতেছে চড়ুই পাখি…

এমনই দিনে হায় হৃদি ভেসে যাইতে চায়
তারে গামছা দিয়া বাইন্ধা রাখে কে? Continue reading

ক্যাসিওপিয়া

 

এইটা গ্রহেরই ফের, বুঝলা…

একতলা দালানের ছাদে সন্ধ্যাবেলা
চিৎ হয়া শুইয়া দেখি
কোন সে তারা নিয়া আসলো তোমারে
আর আমারে, এই গ্রামে…

বললো লিখতে, সিদ্ধ-ধানের গন্ধ
কুয়ারপাড়ে যুবতী বউয়ের কালোচুলে
জ্বীনের পায়ের চিহ্ন

অথবা একটা নৌকা, মসজিদের ঘাটে বাঁধা
মিনারে উঠলে দেখা যায়
ডিগচরে জমি নাই, খালি পানি আর পানি… Continue reading

বিনয় মজুমদারের ফ্যাণ্টাসি

ফ্যাণ্টাসি মানে কি?

কিন্তু তার আগে ‘বিনয় মজুমদার’-এর কথাটা বইলা নেই। অনেকেই হয়তো চিনেন তারে; তারপরও বলি, উনি ইন্ডিয়া-রাষ্ট্রের পশ্চিমবাংলা প্রদেশের বাংলা-ভাষার একজন কবি। উনার বিখ্যাত কবিতার বইয়ের নাম, ফিরে এসো চাকা, অঘ্রাণের অনুভূতিমালা। এই কবিতাগুলা আমি ‘বিনয় মজুমদারের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ নামের একটা বইয়ে পড়ছি। উনার অনেক কবিতা অনেকবার পড়ছি। কিছু লাইন এখনো মনে আছে, যেমন ‘মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়’, ‘বালকের ঘুমের ভিতরে প্রস্রাব করার মতো অস্থানে বেদনা ঝরে যাবে’ এইরকম বেশ কয়েকটা। [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

‘অনুমান’ করি, বাংলাদেশে যাঁরা কবিতা লিখেন, তাঁরা এখনো উনার কবিতা মনোযোগ দিয়া পড়েন। পছন্দ করেন। ভালোবাসেন। আবৃত্তি করেন। ইত্যাদি।

আমি নিজে অনেকদিন ধইরা উনার কবিতা পড়ি না। তার মানে এই না যে, উনার চাইতে ‘ভালো’ বা ‘অন্যরকম’ কবিতা আমি লিখি। বরং, কবিতা লিখা ব্যাপারটা যে ‘এইরকম’ চিন্তার ভিতর একজিস্ট করে না, উনার কবিতা পড়ার অভিজ্ঞতা থিকা সেইটা আমি একভাবে শিখছি। দেখছি যে, উনার কবিতার যেইটা ‘রিয়ালিটি’, সেইটা এক ধরণের ‘ফ্যাণ্টাসি’ হিসাবে পারসিভ করতে পারেন, যাঁরা পড়বেন, উনার কবিতাগুলি।

Continue reading

কবিতার ইশতেহার নিয়া

১.

“ইশতেহার লিখে কখনো কবিতা হয় না।” – সাজ্জাদ শরিফ।

“আসলে কবিতার ইশতেহার কেবল একটি ইশতেহারই, ইশতেহার ছাড়া অন্য কিছু নয়।” – শান্তনু চৌধুরী।

‘কবিতার অর্থ, কবিতার অনর্থ’ নামে সাজ্জাদ শরিফ একটা লেখা লিখছেন, ছাপা হইছিল দৈনিক প্রথম আলোর সাহিত্য সাময়িকী’তে নভেম্বর ১৮, ২০১১ সনে। উনার এই লেখার বিষয় নিয়া উনি আগে বলছিলেন একটা বক্তৃতায়, সেই কথাগুলা শোনার সৌভাগ্য আমার হইছিল। তাই লেখা পড়াটা অনেকটা আবার শোনার মতো ঘটনা। কথার যদি গুরুত্ব থাকে, তাইলে সেইকথা বারবার বলতে এবং শুনতে কোন দোষ নাই। তার উপরে উনার কথার কোন ‘অন্যমত’ বা ‘বিরোধিতা’ও চোখে পড়ে নাই।

কিন্তু আমার কনসার্ন যতোটা না তার কবিতার ‘বাঁকা-তত্ত্ব’ বা ‘শব্দের প্রতিসরণ’ বিষয়ে, তার চাইতে অনেকবেশি ‘কবিতার ইশতেহার’ বিষয়ে। সাজ্জাদ শরিফ এই ‘ইশতেহার’ নিয়া বলার পরে শান্তনু চৌধুরীও এইটা নিয়া কথা বলছেন, দৈনিক প্রথম আলোর সাহিত্য-সাময়িকী’র পাতাতেই।

ত, ‘কবিতার ইশতেহার’ নিয়া উনারা কি বলছেন, সেইটা উদ্ধৃতি আকারে প্রথমে দিছি। উনাদের কথা যদি ‘সত্যি’ হিসাবে ধরি, তাইলে প্রশ্ন আসে, উনারা ‘কবিতার ইশতেহার’ কেন লিখছিলেন বা এইটা নিয়া কথা-বার্তা কেন বলতেছেন? মানে, ‘ইশতেহার’ লিইখা যদি ‘কবিতা’ লিখা না যায় বা এইটার যদি ‘ইশতেহার’ ছাড়া অন্য কোন মানে না থাকে, তাইলে কেন এই ‘কষ্ট’ তারা করছিলেন? Continue reading

কুড়ি বছর পরে ২

 

কুড়ি বছর পরে, তখন তোমারে নাই মনে – জীবনানন্দ দাশ

 

এখনো মনে হয়, কেন যে দাঁড়াই নাই, সকালবেলায়
তোমার প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে

ধরো, দাঁড়ানো ত যাইতো
ইলেকট্রিকের পোলের মতোন, স্থির অব্যয়;
অথবা সঞ্চরণশীল কেঁচোর মতোন
পুরি-পিঠা কিনতে যাওয়ার পথে

যেন আমি তোমারে দেখতেই আসি নাই

দেখতাম, প্রেম হেঁটে যায়, সকালবেলায় Continue reading