সাহিত্যের ঘটনা: অব্যক্ততার বয়ান

আল মাহমুদ-এর বইটা পড়ার পর থিকাই ভাবতেছিলাম যে, এইটা নিয়া লিখবো। কিন্তু লিখার কথাগুলি বলতেছিলাম পরিচিত মানুষজনকে তাই আর লিখা হইতেছিল না। যার ঠিক উল্টা কাজটা আল মাহমুদ করছেন বলে আমার মনে হইছে। তিনি বলার কথাগুলিরেই লিখিত করছেন। হয়তো বলা যায় যে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও সামাজিক না, সাহিত্যেরও নিজস্ব ঘটনা ও ইতিহাস আছে, এইগুলি যে কীভাবে সম্ভব হইতে পারে, তার একটা ধারণা হয়তো এই বইটা পড়লে টের পাওয়া যাইতে পারে।  [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

অন্য দিক দিয়া মনে হইতে পারে যে, একটা ‘পাপ’ না করতে পারার সাফল্যই উনারে বাঁচাইয়া দিছে। বইটাতে উনি নিজের বিয়া’র কয়দিন পরেই আরেক মেয়ের প্রতি তাঁর ‌’লোভ’-এর কথা বলছেন, এই ধরনের কনফেশন করতে গেলে এক তো হইলো বুকের পাটা লাগে; কারণ বিয়া করা মানেই তো ‘কাম’-এর শেষ না। ডিজায়ার, মোরালিটি আর লাভ – এইগুলা যে একই জিনিস না, এইটা একটা ব্যাপার; আরেকটা হইলো, বলার ইটসেলফ একটা প্লেজার আছে। শেষমেশ আল্লা তো উনারে বারবার বাঁচায়াই দিছে! এইটা ধরলেও উনার বলতে পারাটা কিছু জিনিস খোলাসা করে যৌনতা বিষয়ে। কট্টুক বলা যায় আর কট্টুক বলা যায় না – এই বেরিয়ারগুলি। শেষমেশ, বলতে পারাটা একটা ঘটনাই। বিয়া’র পরপরই অন্য মেয়ের প্রতি ‘লোভ’-এর লাইগা তিনি যে চড় খাইছেন, সেইটা যে বলতে পারছেন, এইরকম একটা ট্রান্সপারেন্সি’র বোধই হয়তো সোনালী কাবিন-এর জন্ম দিছে।

প্রথমেই বলতেছিলাম সাহিত্যের ঘটনা ও ইতিহাস-এর কথা। আসলে এইটা তো উনার নিজের লাইফের ঘটনা, এইখানে ঘটনাগুলি তিনিই সিলেক্ট করছেন এবং বর্ণনা দিছেন, একইসাথে তিনি নিজেও এই ঘটনা-প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন, তাই এই ঘটনা ও বর্ণনাগুলির নৈর্ব্যক্তিক হওয়ার কোনো কারণই নাই, তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি-ই এর মূল নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ যেইটা ন্যারেশন, সে-ই কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ঘটনার ডিরেকশনটারে ঠিক কইরা দিতেছে। যেমন ধরেন, উনি ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের কয়েকদিন আগে শামসুর রাহমানের সাথে দৈনিক পাকিস্তানের (বাংলার) সামনে এবং ২৫ শে মার্চের পরে ইত্তেফাকের সামনে শহীদ কাদরী’র সাথে দেখা হওয়ার ঘটনার কথা, যেইখানে তিনি নিজেই উপস্থিত, সেই বর্ণনা দুইটা খেয়াল কইরা পইড়া দেখেন:

Continue reading

গাধা

 

গাধা দিয়া হইতেছে হালচাষ

বাক্ষ্মণবাড়িয়া পরবর্তী এরিয়া

চাষী বুড়া

সময় বিকালবেলা।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

তার পাশে

দৃশ্যের বোঝা টানতেছি

আমি আরেক গাধা।

Continue reading

সকালবেলা

ভোরের হাওয়া

অস্থিরতা জড়ো হচ্ছে তোমার গায়ে

একটু পর হাঁটতে বের হবো।

দেখবো কী সূর্যমুখী ক্ষেতে ফুলেদের হাসি?

নমনীয় আলোগুলি জেগে উঠছে আবারো?

শুরু হচ্ছে দিন, ক্রমান্বয়ের পথে? [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

রাত্রির পতনের পর জেগে উঠা ভোর

নিয়া আসলো দিনের প্রান্তে

Continue reading

সত্যবাদী

যেই বাক্যে তোমার অধিষ্ঠান

সেই বাক্যে আমি মরে ভুত

খালি তুমি আছো, মানব-প্রেমিক

 

আমি গ্রুপ-পলিটিকসের শিকার,

আইডেন্টিটিবিহীন আমার বাক্য

আমি তো মরে ভুত, কি আর বাক্য

যেহেতু কে আর আমি

চিঠিগুলি

নিস্তরঙ্গ ঘুমের ভিতর চিঠি-লিখার দিনগুলি ফুরায়ে গেলে আবার, মৃদু পায়ে কারা উঠে আসে?
ডাকঘরের বাক্স থেকে ঘরে ঘরে বিলীয়মান শব্দে, আবারো মুছে যায়;
অস্ফুট আলো আসে জানালা দিয়ে, শীতের নরোম দিন, বানর নাচছে সকালে…

*********

সেলাই মেশিনে করা ফুল-তোলা রুমাল পাঠিয়েছো
(সিঙ্গার কোম্পানীর মেশিনে করা, ১০,০০০ টাকা দাম)

বারান্দায় বসে বসে করা, তাই তাতে নানান আকৃতি, বিক্ষিপ্ত ও চঞ্চল-মন
ফুল আছে ৩টা, লাল রঙের; পাতাগুলা সবুজ আর হলুদ সুতায় তোলা;

সেলাইমেশিনে হাত রেখে অনেক সময় কাটলো তোমার
মেঘনাব্রীজ পার হয়ে ট্রেন চলে গেলো ভৈরব জংশনের দিকে

গাঢ় সেন্টের গন্ধ-মাখা তোমার রুমাল, পোষ্টম্যান দিয়ে গেলো
কি লিখবো এর উত্তর? ‘আর কবিতা না,
তুমি লিখ অনেক দীর্ঘ, দি-ই-র-ঘ আমার চিঠি’

প্রত্যাভিক্ষা তোমার! Continue reading