এই সিরিজটার নাম হইতে পারতো – পুরুষের প্রেম বা অন্য আরো অনেককিছুই। এই টানাগদ্যের ফর্মটাও অনেক কমন একটা ন্যারেটিভ ফর্ম আর সাবজেক্টটাও – না-পাওয়া প্রেম [প্রেম পাওয়া যায়, এই ব্যাপারটাই কি রকম না! এইখানে গরুর (ইদানিং অ্যাট একচুয়াল লিখতে গিয়া লিখে – গাভী’র) দুধের চা পাওয়া যায়’র মতোন]।
তো, আমি হয়তো ভাবছিলাম যে, একটাকিছু ইনসার্ট করতে পারবো, কিছু একটা কি হবে না? – আমি লিখলে? হয় নাই আসলে। এই রায় আমি-ই দিতে চাই। কমপ্লিটও হয় নাই পুরা সার্কেলটা, লেখার। সিরিয়ালটাও হয়তো ঠিক করা লাগবে। কিন্তু অনেক তো হইছে আসলে। ২০১৩-তে শুরু করছিলাম, ২০১৪-তেই লেখা মোস্টলি, তারপরে ২০১৫ আর ২০১৬-তেও লিখা হইছে কয়েকটা। তো, লিখছি যেহেতু থাকলো, একটা জায়গায়। এর বেশি কোনকিছু না।
————————————————
১ ।। ২ ।। ৩ ।। ৪ ।। ৫ ।। ৬ ।। ৭ ।। ৮ ।।
————————————————
হঠাৎ
তোমার বাঁইচা থাকার লাইগা আমারেই কেন মরা লাগবে? শি জিগায় আমারে। মরো নাই তো তুমি! আমরা জাস্ট কথা বলা বন্ধ কইরা দিছি। একটা জিনিসরে কেন এক্সাজারেট করা লাগে তোমার? তোমার বাঁইচা থাকা তুমি চোদাও না গিয়া বাল। হোয়াই ইট হ্যাজ টু বি মি? এইরকম হাউকাউ করতে গিয়াও চুপ কইরা থাকি আমি। যে কোন কনভারসেশনই পসিবল না আর। একজন মানুষরে ন্যাংটা দেইখা ফেলার পরে যতোই তুমি তারে ঢাইকা রাখতে চাও, তার ইমেজ থাইকাই যায়। চোখ বন্ধ কইরা রাখলেও। অন্ধ হয়া গেলেও। একটা ট্রাজিক বা রোমাণ্টিক এন্ডিংয়ের লাইগাই তো ছিল এতকিছু। শি মেবি অপেক্ষা কইরা আছে, মেমোরিটা মুইছা গেলেই হয়। তখন ফোঁস ফোঁস কইরা ফিরা আসতে পারে। আমি ভয় পাই। আমি অন্য আরেকটা শি’র কথা ভাবি যে কখনো টেম্পট হইতে রাজি হয় নাই। অথবা দুই-তিনজন তারা ক্যাফেতে বইসা সিগ্রেট খাইতেছে। এই প্লেইসটা সেইফ। তারপরে সেলফি তুলে। আরেকজন শি আইসা বলে, বিয়া করছি ঠিকই, বাচ্চা তো নিবো না; আমার পেটে বাচ্চা দিয়া সে আরেকটা প্রেমই করতে চায়। ধোঁয়ায় বসে থাকে সবাই। আমি ভাবি যে উইঠা চইলা যাবো। আমি ভাবি, আমি তো মারা গেছি। মানে, আমি যদি মারা না যাই শি আর কেমনে বাঁইচা থাকতে পারে? এইটা এমন একটা দুনিয়া যেইখানে একজনই থাকে। আর আমাদের আইডেন্টিটি পিক করে সবচে নমিনাল এলিমেন্টটারে, যেইখানে ইউনিকনেস ক্লেইম করা যায়। উই আর ডান উইথ আওয়ারসেলফস। সো, একজনই আছে, শি। সামনের দিকে তাকায়া পিছনে হাঁটতে থাকি আমি। তেমন সমস্যা হয় না আসলে। বস্তার ভিতর দুই পা ঢুকাইয়া ব্যাঙের মতো লাফাইতেছে শি। আমি দেখতেছি। কুয়াশায় কিছুটা ঝাপসা লাগে। এখনো সন্ধ্যা আবার? একটা দিনের ভিতর কয়বার সন্ধ্যা হয়? ট্রাফিক জ্যাম কি আজকে ভাল্লাগতেছে? বুকার প্রাইজ পাওয়া বইয়ের পাইরেট কপিটা যদি তোমার গাড়ির জানালায় ধরি তুমি কি কিনতে পারো? পড়বা বইলা না, ধরো তুমি উদাস, ভাল্লাগতেছে না, কারো সাথে কথা বলাই যায়, এইরকম। আর সাথে সাথে ধূলা-বালি যত ঘিইরা ধরলো। ধরো, ৫০ টাকার নেগোশিয়েশন শেষ হইতে না হইতেই সিগন্যাল ছাইড়া দিলো। নীল গাড়ির ড্রাইভার সে। প্রাইড আছে। চইলা গেলো। পরের দিন মেবি দেখা হবে। পরের দিন। পরের দিন। পরের দিন। ধরো, মরার পরেও তো আছে পরের দিন। কয়েকটা পরের দিন পার হইলেই মনে হবে, মারা গেছি। কবরের ঘাসে বাতাস। পাকুড় বটের কাছে গোদারা ঘাটের কিনারে সন্ধ্যাবেলায়, আমি ভাবতেছিলাম, সবকিছুই কিরকম শেষ হয় হঠাৎ।
বইসা ছিলাম
অনেকক্ষণ বইসা থাকার পরে, অনেক অনেক ক্ষণ বইসা থাকার পরে লেখা হইলো, বইসা ছিলাম। “হইছে না এইবার?” শে জিগাইলো আমারে। আমি হাসলাম। কইলাম, ‘বইসা তো ছিলা-ই।’ শে কইলো, “না, না… বইসা থাকারে বসতে যে দিলাম; ঠিকাছে না এইটা?” তার চোখ হাসতেছিল, ঠোঁট নড়ে নাই। আমি বুঝতে পারলাম আর ওর হাসিটা হাসতে থাকলাম নিজেই আবার। কইলাম, ‘বইসা যে আছে, সে কি দাঁড়াইবো না আর… এতো শিওর তুমি কেমনে হইলা?’ “তখন না হয় লিখবো, দাঁড়ায়া গেলাম। 🙂 ” শি’র ঠোঁটও হাসলো এইবার। চোখগুলি ঝলমল। সূর্য ডুবে যাইতেছিল। দূর থিকা ভেসে আসতেছিল বৃষ্টির বাতাস। একটু একটু কাঁপতেছিল টিলার উপরের ঘাসগুলি। হাসিগুলি শেষ হয়া আসলো একটা সময়। ভাবতেছিলাম আমিও, লিইখা রাখবো কিনা, ‘বইসা ছিলাম।’ দূরে, জাহাজের ডেকে দাঁড়ানো শি’র চুলের মতোন উড়তেছিল পাশে বসে থাকা শি’র চুল। তখন।