কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মাটিরাঙ্গা

পাহাড়ের ঢালে, সেনা ছাউনিতে
ঘাস খাইতেছে কয়েকটা ছাগল

অরা অন্য কোন ড্রিম থিকা আসছে
অরা এই দুনিয়ার নয়

দীঘিনালার রাস্তায়

প্রাইমারি স্কুলে যাবে বইলা তিনটা বাচ্চা
দাঁড়ায়া আছে রাস্তার মোড়ে
স্কুল ড্রেস পইরা

নিরব রাস্তার ঘুম ভাঙ্গায়া কোন চান্দের গাড়ি আসতেছে না,
কিন্তু আসবে তো, তাই না?

আই❤️বাঘাইছড়ি

গাছেদের দুনিয়ায় আমরা বিছা

আঁকা বাঁকা হয়া
ইঞ্জিনের ঠেলায়
উঠে যাইতেছি

বাঘাইছড়ির টিলায়

স্বপ্নের গরু

জীবানানন্দের স্বপ্নের গরু ও বাছুরগুলা ঘাস খাইতেছে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে

রিয়াল ও সুরিয়াল অরা একইসাথে
মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের মতো
আছে এবং নাই

সুন্দরী মহিলার ছবি

কারা ভালোবাসে তোমারে? গোপনে
তোমার ছবি দেখে, মাস্টারবেট করে না, শুধু
ভালোবাসে আর তড়পায়, আর
তাদের জন্যই আরেকটু সুন্দর কইরা হাসো তুমি,
অদের জন্য মন-খারাপ হইতেছে তোমার, তারপরও
হাসতেছো, তোমার বেদনার হাসি, তাদের ভালোবাসা
জাগায়া তুলবে না আবার? তুমি ভাবতেছো, না,
আমি তো সেলফ-লাভ করতেছি, নিজেরে নিজে
দেখতেছি, আর যদি কেউ দেখে, দেখতে চায়, দেখুক না!

আমি পদ্ম-পাতার পানি, আমি কচুপাতায় বিস্টির ফোঁটা,
আমি তোমাদের ভালোবাসা, আমি একটা মোমেন্টের ভালো-লাগা

আমি ক্যামেরার লেন্সে তাকায়া আছি
তোমাদের কথা ভাবতেছি, তোমরা
যেই তুমি এই ছবি দেখতেছো – ভুলে যেও না!

পাহাড়ের ঢালে

পাহাড় জটিল
দেখে মন
আমি সহজ হইতেছি

দৃশ্য

না-গজানো দুইটা শিং নিয়া
রাগে গজগজ করতে করতে
মাথা ঠোকাঠুকি করতেছে
দুইটা সুন্দর ছাগল

যেন ফেইসবুকে কারেন্ট কোন ইস্যু নিয়া
তর্ক করতেছে সেমি-সেলিব্রেটি দুইজন

শরতের হাওয়া

খাটের নিচের একটা ছোট টিনের বাক্সেই রাইখা দেয়া যাইতো সব মেমোরি,
এখন মেবি আরএফএলের একটা ছোট সাইজের প্লাস্টিকের বক্স হইলেই হয়

জীবন, ভুল কইরা জমায়া রাখা কিছু কাগজ, কিছু শব্দ, কিছু অক্ষর, কিছু ধূলা
মনে করতে করতেই মুইছা যায়, হারায়া যায়, অ-দরকারি হইতে থাকে সব

কেনা-বেচার পরে পইড়া আছে বাজারের খালি জায়গাটা, রাতের বেলা
কয়েকটা কুত্তা হাঁটতেছে কাস্টমারের মতন, অনেককিছুই যেন কিনতে চাইতেছে
অথচ বাজারে নাই কিছু, বাজারটা ফাঁকা, আছে শুধু আজাইরা ঘুরা-ফিরা

তারপরে ছিঁড়া কাগজে গন্ধ শুঁকা, কি ছিল তাতে – কার কোন ভালোবাসা?

হাসে বাতাস, হাসে হাওয়া, তোমার কি নাই ঘরে মন? তোমার কি নাই বসে-থাকা?

কবি-কাহিনি

সবচে ভালো-কবি হইতেছেন মরা-কবি,
যিনি আর কোনদিন কোন কবিতা লেখতে পারবেন না,
কি যে ভালো উনারা! কি যে ভালো! বইলা বুঝানো যাবে না!

তারপরের ভালো-কবি হইতেছেন, যারা আগে-কবিতা-লেখতেন,
কিন্তু এখন আর কবিতা লেখেন না,
লেখেন স্মৃতি-কথা, তাদের মনে কতো ভালোবাসা!
(মানে, কতোজনরে লাগাইছেন, কতোজনরে লাগাইতে পারেন নাই, এইসব সুগার-কোটিং কথা…)

অই-কবিও ভালো, যার লগে আমার কথা-বার্তা হয় মাঝে-মধ্যে, যিনি
মনেহয় কোন কবিতাও লেখছেন আমারে নিয়া 🙂

এর পরে আছেন ‘সম্ভাবনাময়’ কবি’রা
উনারা সবসময় আছেন, থাকতেই থাকবেন, থাকতেই থাকবেন…
আর একটা সময় পরে হয়া যাবেন সাহিত্য-সম্পাদক হঠাৎ!

আরো কবি আছেন, যারা কবিতা লেখতে চান,
কিন্তু পারেন না!
কি যে কিউট উনারা, কবিদের ভালোবাসেন!
উনারা না থাকলে আমরা জানতেই পারতাম না,
কবিতা লেখা যে একটা ঘটনা!

এর বাইরে আরো অনেক কবি তো আছেন,
যারা আমারে চিনে না, আমিও যাদেরকে চিনি না
আর আমরা তাদেরকে নিয়া তেমন একটা ভাবি-টাবি না, তারাও না…

খারাপ-কবিও আছেন কিছু,
যাদের কবিতা হয় না!
আমরা জানি, কিন্তু বলি না,
কারণ ‘কবিকে দুঃখ দিও না!’
তাইলে তো সে আরো কবিতাই লেখতে থাকবে!

আরো কিছু কবি তো আছেন, মানুশ হিসাবে ভালো না!
কিন্তু কবি হিসাবেও এভারেজ, উনাদের এভারেজ-কবিতা
মানুশ হিসাবে তাদেরকে ন্যারো বানায়া রাখে,
শব্দের ভিতরে আটকায়া রাখে, পাপেট যেন অরা,
অন্ধ উই-পোকা!

তবে দুনিয়াতে সবচে খারাপ-কবি হইতেছেন অই লোকটা,
যে এখনো বাঁইচা আছে, আর ডেইলি ডেইলি কবিতা লেখতেছে
কিন্তু মরতেছে না!

মরলে পরে হয়তো তারে কবি বলতে পারতাম আমরা,
অথবা বলতাম না, কিন্ত সে যে বাঁইচা আছে আর
কবিতা লেখতেছে – এইটা তো সহ্য-ই করা যাইতেছে না!

তার বাঁইচা থাকা আমাদের হৃদয়ে জাগায়া যাইতেছে ঘাস, রইদ, শিশিরের কণা…

সবচে খারাপ এই কবিটারে আমরা কোনদিনই কবি বলবো না!
যদি সে কবি হয়, তাইলে সবচে ভালো-কবিদেরকে, মরা-কবিদেরকে বলতে হবে আমাদের,
বস, আপনার কবিতা তো হয় না!

মরা-কবিরেই ভালোবাসবো আমরা,
যে কবি’র ভাষা নাই, কথা নাই,
কাউকে যে হার্ট করে না!

জ্যান্ত কবি তো ডেঞ্জারাস!
তারে মাইরা ফেলতে না পারলেও
তার মরার জন্য নফল নামাজ পইড়া দোয়া করবো আমরা:
“হে আল্লা, জ্যান্ত কবি’রে তুমি মাইরা ফেলো!
যেন মরা’র পরে তারে ভালোবাসতে পারি আমরা!
আমিন!”

বলেন, সুবানাল্লাহ!

শরতের কথা

এই যে হাই এন্ড হ্যালো
এন্ড হ্যালো আর হাই
আমরা ভেসে যাই

আমরা আসি আসি কইরা হাসি
হাসি হাসি কইরা গান গাই
হাই এন্ড হ্যালো এন্ড হাই

এন্ড এন্ড নাই, কোন এন্ডিং নাই
কালো মেঘে সাজ কইরাছে, নামিছে সন্ধ্যা
ওকে ওকে ওকে এখন আমরা যাই

টুক টুক টুক হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে
চলে যে যাইতেছে চান্দ-মুখ মেঘের আড়ালে
আমি তারে বলবো না, হাই! হ্যালো!

আমি বলতেছি না, আর শে-ও শুনতেছে না!
কথার বাইরে আমাদের কথাগুলা কি নাই!
হায়! হায়! বাতাসে ভেসে যাইতেছে নিরবতা!

বাতাস বলতেছে না কথা, বাতাস চুপচাপ
বইসা আছে গাছের পাতায়, গাছের পাতাগুলা বলতেছে
হাই, হাই! হ্যালো, হ্যালো!

কে তুমি?
কাকে চাই?
বলো, বলো, বলো…

Leave a Reply