নোটস: জানুয়ারি, ২০২২ [পার্ট ৩]

জানুয়ারি ২১, ২০২২

টিভি-সিরিজের লগে উপন্যাসের মিলের ব্যাপারটা অনেকেই একটু তাকাইলে খেয়াল করতে পারবেন। কিন্তু ঘটনা হইতেছে, ভিক্টোরিয়ান আমলের হিউজ ইট-মোটা উপন্যাসের লগে আজকের দিনের লং লং এপিসোডের টিভি-ওয়েব সিরিজগুলার মিলের জায়গাটা এতোদিন খেয়ালই করা হয় নাই।

পুরাপুরি উল্টা জায়গা থিকা মনে হইতেছিল জিনিসটা। যে, এইগুলা তো টাইম-কনজিউমিং জিনিস! পচ্চুর অবসর বা ফ্রি-টাইম না থাকলে পড়তে বা দেখতে পারবেন না।

তো, আমার ধারণা, ভিক্টোরিয়ান নভেলগুলা বিশাল হইতো এই কারণেই না যে, যারা পড়বেন, তাদের অনেক সময় আছে, অই অডিয়েন্সের জন্য; বরং এই বই-পড়ার ভিতর দিয়া একটা এফ্লুয়েন্সি এক্সপ্রেস করা যাইতো আসলে, যেই কারণে বই-পড়া একটা এরেস্টোকেসির ঘটনা হয়া উঠছিল। যেইটা এখনো চালু আছে, আমাদের সোশ্যাল মিনিংয়ের ভিতরে। (অবশ্যই অন্য আরো অনেক ঘটনা তো আছেই।)

‘অফুরন্ত অবসর’ জিনিসটা বেকার-থাকার ঘটনা তো অবশ্যই, কিন্তু না-থাকা’টাও অনেক সময় মিডল-ক্লাস ঘটনা আর কি! 🙂

তবে জিনিসগুলা (উপন্যাস ও টিভি-সিরিজ) এইটুক পর্যন্তই না। ডিটেইলস তো বরং দরকারি জিনিস। ফর্মটা নিয়া আরো কথার বলার জায়গা আছে। এইটা জাস্ট একটা ঘটনা।

#########

অনশন

ভালো বা খারাপের বাইরেই, পলিটিক্যাল টুল হিসাবে হরতাল যেমন হাস্যকর হইছিল, অনশনও একই রকম ভাবে বাতিল হইছে, আরো অনেক আগেই। মানে, অনশন কইরা বাংলাদেশে কোন দাবি’টা আদায় হইছে লাস্ট টাইম? ইন ফ্যাক্ট, পাকিস্তান পিরিয়ডেও, ব্রিটিশ-আমলের পরে?
তারপরেও অনেক মুভমেন্টের পার্ট হিসাবে অনশন হয় বাংলাদেশে এখনো। অনশনের মানে ‘নন-ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট’ নাই এখন আর, বরং একটা ইশারা-ই (স্যাডলি) যে, আমরা নেগোশিয়েট করতে রাজি আছি! কিন্তু কেউ যদি পাওয়ারফুল না হয়, বা মিনিমাম পলিটিক্যাল অস্বস্তিও তৈরি করতে না পারে, সেই মুভমেন্ট কি অথরিটিরে নেগোশিয়েশনের টেবিলে বসাইতে পারবে?

মানে, অনশন করা যাবে না – এইটা কোন কথা না, বরং এইটা করার আগে, বা পরে বা এইটা করার সময়েও নিজেদেরকে পলিটিক্যালি অন্য সব এজেন্সিগুলার লগে এসোসিয়েট করতে পারাটা, মিনিমাম পাওয়ারফুল হইতে পারাটা জরুরি। তা নাইলে নেগোশিয়েশনের টেবিল পর্যন্তও যাইতে পারার কোন কারণ নাই আর কি! 🙁

 

জানুয়ারি ২২, ২০২২

বাংলাদেশে ইন্টেলেকচুয়াল টেনডেন্সির যেই ঘটনা, সেইটারে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মধ্যে রিডিউস করলে প্রবলেমটারে প্রপারলি এড্রেস করা হবে না আসলে।

(আগেও দুয়েক্টা অকেশনে বলার ট্রাই করছি আমি যে,) বাংলাদেশে ইন্টেলেকচুয়াল হওয়া মানে হইতেছে ‘ভালো-মানুশ’ হওয়া। এখন কাউরে ‘খারাপ-মানুশ’ হইতে হবে – এইটা ঘটনা না, কিন্তু এই ‘ভালো-মানুশের’ ক্রাইটেরিয়াগুলা সবসময় পলিটিক্যাল একটা ঘটনা, ডমিনেন্ট আইডিওলজিরও বাই-প্রডাক্ট অনেকটা। যার ফলে, যখনই আপনার ইন্টেলেকচুয়াল কাজকামের ভিতরে অই ‘ভালো-মানুশ’ হওয়ার ঘটনা’টা থাকে, সেইটা একটা অবস্টেকল হিসাবেই কাজ করে। এমনকি আপনার যেই ‘ভালো-মানুশি’ সেইটাতে ফোকাস করলে, সেইটা ইন্টেলেকচুয়ালি সিউডো একটা ঘটনাতেই পরিণত হয় অনেক সময়। আনু মুহাম্মদ, সরদার ফজলুল করিমদের ব্যাপারে বলছিলাম, উনারা তো ভালো-মানুশ, কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু এইটাই যে উনাদের ইন্টেলেকচুয়ালিটির ঘটনা হয়া উঠে – সেইটা বাজে জিনিসই এক রকমের।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল হইতেছেন এই ঘটনা’টার একটা এক্সট্রিম এক্সাম্পল; কিন্তু বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়াল টেনডেন্সি তো এইরকমেরই, কম-বেশি। অইটা খেয়াল করাটা দরকার আর কি।

#########

১৯৯১ সালের পার্লামেন্ট ইলেকশন তো খুবই ইম্পর্টেন্ট একটা ঘটনা বাংলাদেশের জন্য। সবচে ফেয়ার একটা ইলেকশন ছিল। তো, মিডিয়া, বাম-বুদ্ধিজীবীরা মোটামুটি শিওর ছিল যে, আওয়ামী লীগ জিতবে।

শিওর হওয়ার একটা কারণ ছিল, টিভি-ভাষণে শেখ হাসিনার ১৯৭৫ সালের কথা বইলা কান্দা-কাটি করা। উনারা ধইরা নিছিলেন যে, উনার কান্দা-কাটি “বাংলাদেশের মানুশের হৃদয় স্পর্শ” করছে।

কিন্তু তেমন কোন পাবলিক রি-অ্যাকশন আসলে দেখা যায় নাই, বরং বাকশাল আমলের “গোপন” (মিডিয়াতে না-বলা আসলে) জিনিসগুলাও সামনে চইলা আসছিল। স্বাধীনতার জনক’রে খুন করা হয় নাই, নন-ডেমোক্রেটিক ওয়ে’তে তৈরি হওয়া বাকশালরেও বাতিল করা হইছিল। কি কি হইছিল, এইরকমের কথাগুলা বলাবলির মধ্যে চইলা আসছিল। একটা ‘বির্তক’ উসকায়া দিছিলো, আবার। পাবলিকলি বলাবলি হয় নাই এতোটা, কিন্তু অই ডর চইলা আসছিল পাবলিকের মনে, আওয়ামীলীগ আসলে বাকশালি সরকার কায়েম হবে না তো আবার!

এইরকম একটা সন্দেহও ছিল যে, পাবলিক সিম্প্যাথি পাওয়ার জন্য উনি এই কাজ করছেন। হাফ-ট্রুথ বইলা ভিক্টিমহুড প্লে করতেছেন।

এখনো এই ভিক্টিমহুড প্লে করেন উনি মাঝে-মধ্যে, কিন্তু এখন যেহেতু পাওয়ারফুল, সিম্প্যাথি পাওয়ার জন্য করেন না, যেই গুম-খুন-জুলুমের শাসন জারি রাখছেন, সেইটারে জাস্টিফাই করার জন্য করেন।

আমার ধারণা, মানুশ-জন এখন বিরক্তই হওয়ার কথা। এই কারণে না যে অই ঘটনা ঘটে নাই, বরং আপনার সাথে ঘটা একটা বাজে-ঘটনা দিয়া যখন হাজার হাজার মানুশের সাথে জুলুম করাটারে কখনোই জাস্টিফাই করতে যান আপনি, সেইটা অই বাজে-ঘটনা’টারে একটা অজুহাত হিসাবেই সামনে নিয়া আসে, বাজে-ঘটনা হিসাবেও থাকতে পারে না আর। এইভাবে ঘটনা’টারে একটা পলিটিক্যাল টুল-এ রিডিউস করে আসলে।

পারসোনাল গ্রিফ’রে পলিটিক্যাল টুল হিসাবে ইউজ করাটাতে দুঃখ-বোধের ব্যাপার নাই – তা না, কিন্তু চালাকি হিসাবে যে দেখা যায়, সেইটা ইগনোর করাটা কঠিনই কিছুটা।

#########

অবিচুয়ারি: সৌরভ মাহমুদ

সৌরভ মাহমুদ মারা গেছেন। সুইসাইড করছেন। ফেসবুকের নিউজফিডেই এই খবর পাইলাম। উনি আমার ফেসবুক-ফ্রেন্ড ছিলেন। একবার দেখা হইছিল কিনা, শিওর না। ফেসবুক ফ্রেন্ড হইলেও লাইক-কমেন্টের রিলেশন তেমন ছিল না আমাদের। একবার আমার কবিতা একজন শেয়ার দেয়া’তে বলছিলেন, এই কবিতা তো আরেকজনের আরেক কবিতার মতন! 🙂 [কি উইয়ার্ড সব জিনিস যে আমাদের মনে থাকে!] উনি কবিতা লেখতেন। হয়তো কথা-বার্তা হইতে পারতো আমাদের, কোনদিন। যেহেতু বাংলা-ভাষাতেই কবিতা লেখি/লেখতাম আমরা। এখন আর হবে না। মারা-যাওয়া এইরকম স্থির একটা পাথর।

 

জানুয়ারি ২৩, ২০২২

৩৪ টা ভার্সিটি’র কয়টাতে স্টুডেন্টদের ভোটে নির্বাচিত স্টুডেস্ট কাউন্সিল বা ছাত্র-সংসদ আছে এখন (জানুয়ারি, ২০২২-এ)? আমার ধারণা, একটা’তেও নাই।

এই স্টুডেন্ট কাউন্সিলগুলা ভিসি নিয়োগ দিবে না, কিন্তু ভিসি’দের মিনিমাম কোন একাউন্টিবিলিটি যে নাই, এবং থাকার যে দরকার পড়ে না, এর একটা কারণ হইতেছে ভার্সিটিগুলাতে কোন ইলেক্টেড স্টুডেন্ট কাউন্সিল না থাকা।

ছাত্রলীগের গুন্ডামি এবং ইজারাদারি’রও এই কারণে সহজ একটা ঘটনা। একটা ডেমোক্রেটিক সিস্টেম থাকলে এইগুলা বন্ধ হয়া যাইতো না, কিন্তু এটলিস্ট কঠিন হয়া উঠার কথা, কিছুটা।

#########

যে কোন ক্রাইম সমাজে চালু থাকে এক ধরণের অস্পষ্টতার ভিতর দিয়া, আন-ডিফাইনড থাকতে পারার ভিতর দিয়া।

ধরেন, বলা যে হয়, গর্ভমেন্ট ডিসিশান নিছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। তো, “গর্ভমেন্ট” বইলা কোন জ্বীন, ভূত নাই এইখানে! খুুব বেশি হইলে ১৫/২০ জন লোক আছে, যারা এই ডিসিশান নিতেছে। এরা এই কমেডি’টা করতে রাজি হইতেছে। এদের নাম-ধাম যে জানা যায় না – তা না, বরং মিডিয়া এদেরকে আড়াল করে, সেইফ রাখে। কারণ অরাও পার্ট এইটার।

এরশাদের সময়ে মনে আছে কিনা কারো, দালালদের লিস্ট করা হইছিল। এখনো বাকশালিদের লিস্ট করাটা দরকার। ২০ কোটি মানুশের মধ্যে নাম্বারটা ২ হাজারের বেশি হওয়ার কথা না, যেইটা ০.০১%. বাকি লোকগুলা আসলে পাওয়ারের গোলাম। নেকস্ট যেই গ্রুপ’টা (আম্রিকান লিবারাল অর চাইনিজ বিপ্লবী) পাওয়ারের সেন্টারে থাকবে তাদেরকে ‘জ্বী, হুজুর’ করবো। মানে, বাকশালিদের নাম্বারটা খুবই ছোট।
কিন্তু মুশকিল এই টেনডেন্সিটাই, যেইখানে আমরা জাস্টিস বা ন্যায়ের পক্ষে না থাইকা পাওয়ার বা ডমিনেন্ট ট্রেন্ডের পক্ষে থাকাটারে ‘ভালো’ এবং ‘সত্যি’ বইলা নিজেদেরকে বুঝাইতে থাকি। এই জায়গা থিকা যদি আমরা বাইর না হইতে পারি, এরশাদ পতনের পরে যেইরকম আমরা ডেমোক্রেটিক সোসাইটি তৈরি করতে পারি নাই, নয়া বাকশালের পরেও এর শয়তানি-ব্যবস্থা থিকা আজাদ হইতে পারার আশা কম।

এইরকম অস্পষ্টতাগুলারে একটা ট্রান্সপারেন্সি’র জায়গাতে নিয়া যাইতে পারার ভিতর দিয়াই অই জিনিস’টা শুরু হইতে পারে বইলা আমি মনে করি।

 

জানুয়ারি ২৪, ২০২২

সরকারি অফিসগুলাতে চাইর ধরণের লোক আমি দেখছি।*

১. যারা কাজ’টা করার জন্য সরাসরি টাকা চান, এবং খুব তাড়াতাড়ি কাজ’টা কইরা দেন। ফ্রেন্ডলি বিহেভও করেন। উনারা যদিও নিজেদেরকে মানুশ বইলা দাবি করেন, উনারা আসলে ফেরেশতা!

২. যারা শুরুই করেন ঝাড়ি দিয়া, বুঝানোর ট্রাই করেন, কাজ’টা কতো কঠিন, কতো নিয়ম-কানুন আছে, এই-সেই, মানে, হাবে-ভাবে বুঝান যে, টাকা লাগবো! টাকা নেয়ার সময়ও ঝাড়ি দিবেন, আর এমনভাবে কাজ’টা কইরা দিবেন যেন একটা বড় উপকার করতেছেন, এবং আজীবন কৃতজ্ঞ (এইরকম বাংলা-শব্দ না কইলেও ঝাড়ি খাইতে পারেন) থাকা উচিত আপনার। উনারা তো ‘মহামানব’! আপনি জাস্ট বুঝতেছেন না! দোষ আপনার।

৩. থার্ড হইতেছে, শুওরের-বাচ্চা ক্যাটাগরি’র লোক। টাকা খাবে, কিন্তু কাজ কইরা দিবে না। কোন টাকা দিলে সেইটা কোনদিন উদ্ধার করতে পারবেন না। অই চেষ্টা করলে উল্টা মাইর-টাইরও খাইতে পারেন।

৪. এর বাইরেও আরেকটা ক্যাটাগরি আছে, যারা সৎ-লোক। উনাদেরকে নিয়াই কথা বলতে চাইতেছি আমি। উনারা নিয়মের বাইরে এক পা-ও ফেলবেন না। ইনিশিয়ালি উনাদেরকে খুবই ভালো-লোক মনে হইতে পারে। উনারা সেইটাই, মানে, খারাপ-লোক না আসলে; কিন্তু বুঝতে পারবেন, ধীরে ধীরে উনারা এমন একটা জায়গাতে রিচ করছেন, যেইখানে মেইন ঘটনা হইতেছে “নিয়ম মানা”, কোনভাবেই কাজ’টা করা না। যেইটা আসলে ভালো-জিনিস না কোনভাবেই। কারণ, বাংলাদেশে সরকারি নিয়মগুলাই এইরকম যে, নিয়ম মাইনা কোন কাজ আপনি করতে পারবেন না!

ব্যাপারটা এইরকম না যে, নিয়ম মানা যাবে না, বরং নিয়মগুলা আপডেটেড না, বা পিপল-ফ্রেন্ডলি না। যার ফলে, যারা নিয়ম মানতে চান, উনারা কাজ’টা করতে পারেন না আসলে। আর ধীরে ধীরে সেই না-করা’টা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়।

আমাদের চিন্তা-ভাবনায়, সাহিত্যে উনারা ‘ফেরেশতা’, কিন্তু উনারা আসলে বিচার-বুদ্ধিহীন মানুশ। যারা মনে করেন, চিন্তা করা, নিয়ম বদলানো উনাদের কাজ না! আনফরচুনেটলি, দুনিয়াতে বড় বড় শয়তানের পার্টনার হইতেছে এই ক্যাটাগরি’র লোকজন। যারা ছোটখাট জিনিস নিয়া চিন্তা করতে রাজি না। যে কোন ইভিল-সিস্টেম’রে টিকায়া রাখে এরাই, অনেকটা।

তো, আমি আসলে ডিমান্ড করি, ফিফথ ক্যাটাগরির কিছু মানুশ থাকবেন। (আছেন কিনা, আমি শিওর না।) যারা সরকারি নিয়মগুলারে পিপল-ফ্রেন্ডলি করার ট্রাই করবেন। অনিয়ম না কইরা, ঘুষ না খাইয়া, ঝাড়ি না দিয়া যে কাজকাম করা যায়, অই স্পেইসটা ক্রিয়েট করতে পারবেন।

মানে, এইটা এক্সপেক্ট করা তো এটলিস্ট খারাপ-কিছু না, কোনভাবেই।


*আরো অনেক ধরণের লোক থাকতে পারে। ক্যাটাগরিও অনেক রকমভাবে করা যাইতে পারে। অই ভ্যারিয়েশন এইখানে আলাপের ঘটনা না আর কি।

##########

আমারে দুয়েকজন জিগাইছেন যে, রমিলা থাপার নিয়া কোন ক্রিটিক কি আমার নাই? তো, আমার মনে হইছে উনার পজিশনরে ক্রিটিক করার মতো জায়গাতে আমি যাইতে পারি নাই, বরং আমি এতো ক্রিটিকাল ইশারা-ইঙ্গিত পাইছি যে, অই জায়গাগুলারে এক্সপ্লোর করার কথাই মনে হইছে।

যেমন ধরেন, আমার মনে হইতেছিল, ৬শ সাল – ৭শ সালরে যে “মাৎস্যন্যায়” বা “অন্ধকার যুগ” বলা হয় বাংলাদেশের হিস্ট্রিতে, এর কারণ হইতেছে অই সময়ে কোন সেন্ট্রাল রাজা-বাদশা ছিল না; কিন্তু রাজা-বাদশা বা অথরিটি না থাকাটা কেন খারাপ জিনিস হইতে যাবে? অইটা “স্বর্ণযুগ” না হইলেও একটা তো বেটার-টাইম হওয়ার কথা! রমিলা থাপারও শেষের দিকে এইরকমের কিছু কথা কইতেছিলেন, ৯শ সালের ইন্ডিয়ার ব্যাপারে। তো, এইগুলা নিয়া খোঁজ-খবর করলে, কথা বলতে গেলে কিছু ডিফরেন্সের জায়গা এমার্জ করতে পারে।

তো, এইখানে দুয়েক্টা অবজারভেশনের কথা বরং বইলা রাখা যাইতে পারে।

একটা জিনিস হইতেছে, যে কোন হিস্ট্রির আলাপেই স্পেইস বা জায়গা’টা হইতেছে সেন্টার। যেইটার চারপাশে টাইম’টা ঘুরতেছে। মানে, ইন্ডিয়ার হিস্ট্রি, ইউরোপের ইতিহাস, আরবের ইতিহাস, আম্রিকান হিস্ট্রি… সার্টেন জিওগ্রাফিরই জিনিস। এইটা সো ফার ঠিকই আছে, কিন্তু জায়গাগুলাতে স্থির না থাইকা অন্য জায়গাগুলার লগে কেমনে সরতেছে, সেইটারেও ইনক্লুড করাটা দরকার মেবি। কারণ মানুশ এতোটা স্থির তো নাই আসলে।

এই কারণে দেখবেন, হিস্ট্রি জিনিসটা শুরুই হইছে যখন মানুশ একটা জায়গাতে থাকতে শুরু করছে, পশু-পালন আর চাষ-বাস করা শুরু করছে। এর আগে তেমন কোন হিস্ট্রি নাই কারণ মানুশ তখনো ঘুইরা বেড়াইতেছে, একটা জায়গাতে নাই। তো, এই থাকতে থাকাটা যতোটা পারমানেন্ট জিনিস মনেহয়, এতোটা না-ও সবসময়।

দুনিয়াতে, মানুশের সমাজের, লাইফের স্ট্রাকচার যুদ্ধ তো চেইঞ্জ করছেই, কিন্তু যুদ্ধের কারণে, বা বিজনেসের কারণে, নানান কারণেই মানুশ যে মাইগ্রেশন করছে, করতেছে, সেইটা একটা ক্রুশিয়াল ফ্যাক্টর হইতে পারে। যখনই একটা জায়গাতে নতুন নতুন মানুশ আসতে শুরু করছে, তখন অই জায়গাগুলার হিস্ট্রি পাল্টাইতে শুরু করছে। ইন্টারনালি যে কিছু চেইঞ্জ হয় নাই – তা না, কিন্তু ঘটনাগুলা যেইরকম ইন্ট্রিগ্রেটেড ভাবে ঘটতেছে, সেই এনকোয়ারি’র জায়গাতে আরো কিছু ফ্যাক্টর হয়তো অ্যাড করা যাইতে পারে।

মানে, এইটাও রমিলা থাপারের কাছ থিকাই খেয়াল করতে পারছি আমি। উনি মেবি D. D. KOSAMBI’র লিগ্যাসিটারে নিছেন। তো, ব্যাপারটা আসলে তর্ক-করা বা ক্রিটিক-করার না, বরং বেইজটারে আরো স্টাডি করার, একটা টুল হিসাবে নিয়া এপ্লাই করতে গিয়া দেখা, কি কি ইনক্লুশন এইখানে দরকারি, আর কোন জিনিসগুলা এতোটা প্রায়োরিটির জিনিস না। এইরকম আর কি…

#########

নয়া বাকশালের একটা চেহারা বা বৈশিষ্ট্য হিসাবে বলছিলাম, খালি চুরি করলেই হবে না, চুরি করার পরে গলা উঁচাও করা লাগবে!

মোটামুটি সব ঘটনাতেই এইটা দেখতে পাইবেন। সাস্টের ঘটনায় দেখেন, পুলিশ হামলা করার পরে স্টুডেন্টদের নামে মামলা দিয়া রাখছে। পাবলিকের ভোট ছাড়া ইলেকশন করার পরে গলা ফাটায়া “গণতন্ত্রের বিজয়” নিয়া কথা বলতেছে। দালালদের দিয়া টিভি, পত্রিকা, নিউজমিডিয়া দখল করানোর পরে “ফ্রিডম অফ স্পিচ” নিয়া বাকোয়াজি করতেছে।

আইয়ুব খান, এরশাদও এতো বেহায়া ছিল না!

#########

একটা জিনিস ইউজ কইরা অভ্যস্থ হয়া গেলে পরেরবার দরকার না পড়ার আগ পর্যন্ত অইটার অভাব আর ফিল করি না আমরা। জিনিসটা হয়তো অনেক আগেই হারায়া ফেলছি আমরা, কিন্তু অই পরেরবারের দরকারের আগে টেরই পাই না।

ঘটনা’টা হইলো, আজকে মানিব্যাগ খুইলা দেখি ডেবিট কার্ডটা নাই। তো, মনে-ই পড়তেছিল না, কই হারাইলাম জিনিসটা! টাকা তোলা ছাড়া তো এর দরকার পড়ে না। বেশ অনেকক্ষণ পরে মনে হইলো দুইদিন আগে টাকা জমা দিছিলাম কিছু ডেবিট কার্ড দিয়া। নরমালি তো জমা দেয়ার মতো ঘটনা ঘটে না, এই কারণে কার্ড ফেরত নেয়ার কথা মনেও হয় নাই, মেশিন থিকা! হারায়া যে ফেলছিলাম – এইটাই জানতাম না আমি!

যদি দরকার না পড়তো, তাইলে হয়তো হারায়া যাওয়াটা কিছু মিনও করতো না। মানে, অইটা হারায়া যাওয়ার ঘটনা না তখন। অনেক কিছুই হারায়া যায়, বাতিল হয়া পড়ে, কারণ, আমাদের আর দরকার নাই তো!

#########

ধরেন, আপনার (ফিমেইল) চেহারা সুন্দর, লেখেনও ভালো বা যে কোন ধরণের পাবলিক এক্টিভিটিতে আপনার ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। আপনি কি করবেন, চেহারা অসুন্দর বানাইবেন? নাকি অই পাবলিক কাজকাম কম কম করবেন? 🙂

মানে, এইভাবে সুন্দর হওয়া বা না-হওয়াটা নিয়া কথা বলা যাবে-না না, কিন্তু যেইভাবে এইটা ইস্যু হয়া উঠতে থাকে, সেইটা অবস্টেকলই অনেক সময়, প্রেইজ করার ঘটনার চাইতে।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার ইন্দিরা গান্ধীরে নিয়া সেক্সিস্ট একটা কবিতা লেখছিলেন। (উনি নন-ডেমোক্রেটিক শাসন চালাইলেও এইটা তো করা যায় না!) গুলজার যখন আঁধি (১৯৭৫) সিনেমা বানাইছিলেন তখন লোকজন ইন্দিরা গান্ধী বা Tarkeshwari Sinha’র ‘গোপন-কাহিনি’ বইলা সন্দেহ করছিল। কারণ উনারাই হইতেছেন তখনকার ফিমেইল পলিটিশিয়ান।

এইভাবে যে কোন ফিমেইল পাবলিক এপিয়ারেন্সের ব্যাপারটা একটা মেইল-ডিজায়ারের জায়গাতে গিয়া ইস্যু হয়া থাকে। যেইটারে ঠিক প্রাইড বা ইগনোর করার জায়গা থিকা না দেইখা আন-ইম্পর্টেন্ট ঘটনা হিসাবে দেখার করার ট্রাই করাটাই বেটার মনেহয়।

#########

যে কোন ইস্যুতে ভোকাল হওয়া (কথা-বলা) সবসময় ভালো, চুপ কইরা থাকার চাইতে। কিন্তু একটা কথা একবার বলছি বইলা সেই জায়গা থিকা সরতে পারবো না, বা ‘ভুল বলছি’ না-বলতে পারাটা আবার চুপ-কইরা থাকার চাইতেও বাজে-জিনিস আসলে।

মানে, পাবলিকলি একটা পজিশন যেহেতু একবার নিতেছি, সেইটারে পরে ভুল মনে হইলে শরম তো লাগেই। পাবলিকলি বলা যায় না যে, তখন ভুল বলছিলাম, ইমোশনালি দেখছিলাম, বা কয়েকটা ফ্যাক্ট আমি কন্সিডার করি নাই, এইরকম। তাইলে লোকজনের ‘কনফিডেন্স’ কইমা যায়, আরে এই লোক তো একেকবার একেক কথা কয়!

কিন্তু অই রিস্ক নিয়াই পজিশন চেইঞ্জ করতে পারা দরকার আসলে। যেহেতু চুপ কইরা থাকার চাইতে কথা-বলার পথ বাইছা নিছেন আপনি, কথা বলতে গেলে কিছু ভুল আপনার হইতেই পারে, পজিশনও বদলাইতে হইতে পারে, অনেক সময় না বদলাইতে পারাটাও হইতে পারে একটা ভুল।

 

জানুয়ারি ২৫, ২০২২

একটা নিউজ দেখলাম এইরকম, ঢাবি’র শিক্ষক সমিতি কমপ্লেইন করতেছে যে, সাস্টের ঘটনায় কোন “তৃতীয় পক্ষ” আছে। মানে, এইটা ভিসি আর স্টুডেন্টদের ইস্যু হিসাবে নাই, বা থাকতেছে না। এইটারে উনারা একটা দোষ হিসাবে, কন্সপিরেসি হিসাবে মার্ক করতেছেন।*

তো, আমার কথা হইতেছে, যদি কোন ‘তৃতীয় পক্ষ’ না-ও থাকে, আমাদেরকে সেইটা তৈরি করতে হবে। এইটা কোন পারসোনাল ঘটনা বা জামাই-বউ’র ঝগড়া না, ইভেন সেইটাতেও একটা থার্ড-পার্টি থাকা লাগে, সাক্ষী ছাড়া বিয়া হয় না। আর যে কোন পাবলিক ম্যাটার বা সোশ্যাল ইস্যুতে সমাজের অন্য মানুশের কনসার্নই না খালি ইনভলবমেন্টও দরকার। আর সেইটা জাতিসংঘ বা আম্রিকা টাইপের থার্ড-পার্টির বদলে কোন “পিপল এসোসিয়েশন” থাকলে বেটার।

আমি বরং বলবো যে, সাস্টের ঘটনায়, “তৃতীয় পক্ষ” হিসাবে বাংলাদেশের অন্য ভার্সিটির স্টুডেন্টরা, টিচার’রা এবং পলিটিক্যাল দলগুলা ইনভলব হইতে পারতেছে না এনাফ। যার ফলে এই অন্যায়-অবস্থা কন্টিনিউ হইতেছে, এবং হইতেও থাকবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত কোন “তৃতীয় পক্ষ” হিসাবে আপনি ইন্টারভেইন করতে রাজি হইতেছেন।


কারণ বাকশাল হইতেছে ‘গোপন’ এবং ‘ষড়যন্ত্র’-এর একটা ঘটনা, এই কারণে এর দালালরাও দেখবেন খালি কোন ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ আবিষ্কার করতে চায়। আর বাকশাল-বিরোধী যারা কন্সপিরেসি থিওরি’র সাবস্ক্রাইবার, উনারা মোটামুটি একই গোয়ালের গরু।…

#########

বাংলাদেশে বই-টই ছাপাইতে গেলে একটা কাজের অনেক দরকার পড়ে, বাংলায় যেহেতু কোন spell checker নাই; সেই কাজটা করার নাম হইতেছে প্রুফ-রিডিং। তো, আমার পরিচিত কয়েকজন আছেন, যারা এই কাজ করেন, আপনারা আমার পরের কথাগুলারে পারসোনালি নিয়েন না প্লিজ।

মানে, আমি করি না যে, স্পেল-চেকিংয়ের দরকার নাই, কিন্তু এইটা তেমন কোন ভ্যালু অ্যাড করে না আসলে, একটা টেক্সটে; বরং যেহেতু বাংলায় বানান-রীতি একটা ঝামেলারই জিনিস, এই প্রুফ-রিডিং সেই জায়গাতে একটা অবস্টেকলই তৈরি করে, বেশিরভাগ সময়। মানে, বানাম-ভুল তো হয়-ই কিছু, অইগুলা দেখার দরকার আছে; কিন্তু ‘ব্যাকরণ-সম্মত’ হইতে হবে জিনিসটা হইতেছে “মানলে তালগাছ, না মানলে বালগাছ” টাইপের জিনিস। আমি ‘কী’ না লেইখা যদি ‘কি’ লেখি, কারো পড়তে বা বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা না আসলে। কিন্তু ‘প্রুফ-রিডিং’ জিনিসটা টিইকা আছে এক ধরণের দারোয়ানগিরি’র উপরে, ব্যাকরণের। যেইটা বাজে জিনিস।

আমার মনে হইছে, এইখানে দুইটা আলাদা ঘটনা থাকতে পারে, একটা হইতেছে – এডিটর, আরেকটা হইতেছে – রিডার। এডিটর তো হইতেছেন, যেই সাবজেক্ট নিয়া লেখাটা, সেই বিষয়ে জানা-বোঝা একজন লোক; যিনি টেক্সটের মধ্যে কোন মিসিং-লিংক থাকলে, বেটার করার স্কোপ থাকলে, অই জায়গাগুলারে হাইলাইট করবেন। এইরকম। কিছু সাজেশন মেইক করবেন।

আর একজন রিডার হইতেছেন যিনি অনেক পড়েন-টড়েন, বা যার একটা টেস্ট আছে ল্যাঙ্গুয়েজের। টেক্সট পইড়া উনি রিডিং এক্সপেরিয়েন্স নিয়া বলতে পারেন, সাজেশন দিতে পারেন, ভাষার স্ট্রাকচার নিয়া, ধরণ নিয়া। এইরকম।

অবভিয়াসলি, একটা সার্টেন ফরম্যাট উনারা সাজেস্ট করবেন না, সবার জন্য; বরং লেখাটা কেমনে ইম্প্রুভ করতে পারে, সেইটা নিয়া বলবেন।

এখন এইরকম সার্ভিস অনেক দামি হওয়ার কথা। আর এই কারণে টাকা-পয়সা দিয়া জিনিসটা করাটা টাফ-ই হবে হয়তো। ভরসা করার মতো রিসোর্স-পারসনও কমই থাকার কথা। কিন্তু যেইভাবেই হোক, ব্যাপার’টারে ‘প্রুফ-রিডিং’য়ে আটকায়া রাখাটা ঝামেলার একটা জিনিস।

যারা ‘প্রুফ-রিডার’ আছেন, তারা এডিটর হিসাবে সার্ভিস না দিতে পারলেও যদি ‘রিডার’ হিসাবে কাজটা করেন, তাইলে ‘ব্যাকরণ-সম্মত’ হওয়ার চাইতে ঘটনাটা বেটার হইতে পারে বইলা আমার মনেহয়। (মানে, পুরাপুরি হয়তো ক্লিয়ার করা গেলো না জায়গাটা, কিন্তু পয়েন্ট’টা কিছুটা বলা গেলো মেবি…)

 

জানুয়ারি ২৬, ২০২২

(অন্য অনেক কিছুর পাশাপাশি) যে কোন জুলুম টিকায়া রাখার জন্য দুইটা জিনিসের দরকার পড়ে –

১. একটা জরুরি অবস্থা: কোন না কোন “জরুরি অবস্থা” জারি না কইরা জুলুম টিইকা থাকতে পারে না। কোন একটা ‘সিরিয়াস’ অজুহাত লাগে। নয়া বাকশালের শুরুর দিকে এইটা ছিল “ইসলামি জঙ্গী” ধরার নাম দিয়া রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিকিওরিটি চেকপোস্ট বসানো। পরে কিছুদিন ছিল “ড্রাগ বিজনেস নির্মূল” করা। গত দুই বছর ধইরা হইতেছে “করোনা মহামারী”।

মানে, এই সমস্যাগুলা যতোটা না আছে, তার চাইতে এই সিচুয়েশনগুলারে ইউজ করা হইতেছে মানুশের বেসিক রাইটগুলারে সাসপেন্ডেড বা স্থগিত রাখার জন্য। এবং ধীরে ধীরে ‘নরমাল’ কইরা তোলা হইতেছে। এইটা হইতেছে নিউ নরমাল! 🙂 বেসিক হিউম্যান রাইটস না-থাকাটা!

করোনা এই কারণেও শেষ হইতেছে না যে, নেকস্ট “জরুরি অবস্থা”টা তৈরি করা যাইতেছে না।

একটা প্যারনয়া তৈরি না কইরা কোন প্যারনয়েড সিস্টেম বা জুলুম-অবস্থা টিইকা থাকতে পারে না।

২. অনেকগুলা সিউডো তর্ক: বেহুদা তর্ক লাগবে কতগুলা, যেইগুলা দিয়া ক্রুশিয়াল আলাপগুলাতে যাইতে দেওয়া যাবে না। যেমন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ, আস্তিক-নাস্তিক, ধর্ম ও নারী-অধিকার, এইরকম জিনিসগুলা। মানে, এইগুলা তর্কের বিষয় না – তা না, কিন্তু বাংলাদেশে বাকশালি-জুলম কিভাবে চালু আছে, কোন কোন মানুশ এবং ইন্সিটিউশনগুলার উপর ভর দিয়া টিইকা থাকতেছে, এর চাইতে জরুরি কোন পলিটিক্যালের আলাপের জায়গা তো নাই!

কিন্তু খেয়াল কইরা দেখবেন, অই আলাপগুলাতে যাওয়া যাইতেছে না, অন্য অনেক ‘তর্ক’ আইসা হাজির হইতেছে, মানে, এক্টিভ রাখা হইতেছে। এইরকম সিউডো-তর্কগুলাতে চুপ-থাকা, পার্টিসিপেট না-করা, এবং পাবলিক ইস্যু হিসাবে একসেপ্ট না-করাটাও কথা-বলার একটা কাজ। (একটু টুইস্টিং শোনাইলেও।)

#########

আমাদের, যাদের বয়স ৪০/৪৫ পার হইছে, হাফ-লাইফ পার কইরা ফেলছি, ফিউচার বইলা তেমন কিছুর দরকার নাই আসলে আমাদের। মানে, কোন না কোন লাইফ-স্টাইলের প্যাটার্নের ভিতর ঢুকে গেছি, সেইখানে ‘ফিউচার’ জিনিসটা লেস ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস।

কিন্তু যাদের বয়স ১৮, ২০ বা ২৫ বছর, তাদের সামনে একটা ‘ফিউচার’ থাকাটা খুবই দরকারি জিনিস। আর তাদের জন্য বাংলাদেশে কোন ‘ফিউচার’ নাই। এইটা যেন একটা দোজখ! যেইখান থিকা তাড়াতাড়ি বাইর হয়া যাইতে হবে, ‘বিদেশ’ চইলা যাইতে হবে।

এই জায়গাতে শিক্ষিত-অশিক্ষিতের মধ্যে তেমন ফারাক নাই, বরং ইয়াং অনেকেরই মনের অবস্থা এবং ‘বাস্তবতা’ এইরকমের। আমাদের অনেকেরও সার্পোট আছে এইটাতে (না থাকারও তো কোন কারণ নাই 🙁 ) যে, দেশে থাইকা কি করবা! বিদেশে চইলা যাও, সুযোগ থাকলে!

বিদেশ চইলা যাইতে পারা একটা এচিভমেন্ট, একটা রিলিফ, এখন, বাংলাদেশে। সেলিব্রেট করার মতো ঘটনাও। কারো ভালো চাইলে, কেউ যাইতে পারতেছে শুনলে, খুশি-ই হই, মোটামুটি সবাই।

সেলফ-রেসপেক্ট নিয়া দেশে বাঁইচা থাকার কোন উপায় নাই। বাংলাদেশ একটা দোজখের নাম। এই দোজখ একদিনে তৈরি হয় নাই, একদিনে হ্যাভেনও হয়া যাবে না।

 

জানুয়ারি ২৭, ২০২২

বাংলাদেশে নিজের মতো কইরা, ডিগনিটি নিয়া, সেলফ-রেসপেক্ট নিয়া বাঁইচা থাকা কঠিন কাজ। মোটামুটি অসম্ভবই।

আপনি যদি রিকশাঅলা হন, যে কেউ আপনার লগে বাজে-বিহেভ করতে পারে, গালি-গালাজ করতে পারে, চড়-থাপ্পড়ও মারতে পারে। এইটা মোটামুটি কমন একটা সিন ঢাকা শহরে যে, ট্রাফিক পুলিশ রিকশাঅলারে পিটাইতেছে, চাক্কার হাওয়া ছাইড়া দিতেছে। অই ট্রাফিক পুলিশরে থাপ্পড় মারতেছে আবার ছাত্রলীগের কোন পাতি-নেতা। সেই পাতি-নেতা’র বিচি ধরা কোন ‘বড়ভাই’-এর কাছে। ‘বড়ভাই’ উনি হইতে পারছেন কারণ এলাকার এমপি’র ডাইন-হাত উনি, পুলিশের এসপি’র লগে খাতির আছে।

আর এমপি কেমনে সিলেক্ট করা হয়, পুলিশের বড় অফিসার, এমনকি মিলিটারি-চিফের নিয়োগ কেমনে হয়, তা তো আপনারা জানেন। থ্যাংকিউ পিএম!

সবকিছুতেই একটা সিস্টেম আছে, যেইটার বেইজ কোন ‘নিয়ম-নীতি’ না, বরং পাওয়ার। (সেক্টর-অনুযায়ী ডিফরেন্স তো আছেই কিছু, আবার একই সেক্টরেও কিছু একসপেশন তো আছেই, কিন্তু এইটা হইতেছে মোটাদাগে, বাংলাদেশের জেনারেল রুল।)

তো, পাওয়ারফুল মানুশদের পা-চাটা না খালি যাদের কোন পলিটিক্যাল-ইকনোমিক্যাল-কালচারাল পাওয়ার নাই তাদেরকে হেইট না কইরা, তাদেরকে গালি-গালাজ না কইরা, ভিলেন না বানায়া অই পাওয়ারফুল-গ্রুপে এন্ট্রি পাইবেন না আপনি। এই কারণে একদল জম্বি আমরা দেখি।

এখন অইরকম জম্বি না হইতে পারলে, আপনারে তো মাথা-নিচা কইরা, অনেক কিছু না-দেইখা, মাইনা নিয়া বাঁইচা থাকতে হবে। অই ফিলিংসটা মানুশ হিসাবে আপনারে-আমারে আসলে ছোট কইরা রাখে, তা নাইলে জম্বি হয়া উঠার সাজেশন দিতে থাকে সবসময়।

তো, কি করবেন, কোন বিকল্প তো নাই! 🙂

 

জানুয়ারি ২৯, ২০২২

দুইটা এক্টিভিজম নিয়া

দুইটা এক্টিভিজম নিয়া ইন্টারেস্ট আছে আমার। মানে, এই এক্টিভিজমগুলা আমি করতে চাই – এইরকম না, বরং আমার সার্পোট আছে, বা করতে পারলে সেইটা ভালো হবে বইলা মনে করি। দুইটাই সেন্সেটিভ জিনিস। এর মধ্যে একটা কিছুদিন চালুও হইছিল। কিন্তু যে কোন এক্টিভিজমই একটা ফ্যাশন হিসাবে তো টিইকা থাকতে পারে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত সেইটা আমাদের ডেইলি লাইফের মধ্যে ইন্টারনালাইজ হইতেছে। তো, এইটা যেমন না-বুইঝা করতে থাকার ঘটনা না, একইসাথে খালি একটা বুঝতে-পারার ঘটনাও না। একটা বুঝতে-পারা’রে প্রাকটিসরে কনর্ভাট করার এবং রেগুলার বেসিসে করতে পারার জিনিস।

তো, পয়লা ঘটনা’টা হইতেছে, মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়ার ঘটনা। বছর খানেক আগে ব্যাপারটা দেখছিলাম, কিছু মসজিদে মহিলারাও জুম্মার নামাজ পড়তে যাইতেছেন। ঢাকা শহরে দুয়েক্টা মসজিদে তো মহিলাদের আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও আছে মনেহয়। (মহাখালি’তে ব্যক্ষব্যাধি হসপিটালের অপজিটের মসজিদ’টাতে, ঢাবি’র সেন্ট্রাল মসজিদেও কি চালু ছিল কিছুদিন?) কিন্তু অইগুলা একসপেশনাল ঘটনাই। আমাদের সমাজে, এইটা প্রাকটিস হিসাবে নাই। এইটাতে কোন ধর্মীয় বিধি-নিষেধ আছে কিনা, সেইটা নিয়া আলেম’রা আলোচনা করবেন, সাজেশন দিবেন। কিন্তু যদি নিষিদ্ধ ঘটনা না হয়, এইটা চালু করতে পারলে নানান দিক দিয়া পজিটিভ একটা ব্যাপার হবে।

তাই বইলা নিজের মেয়েরে বা বউরে কেউ জোর কইরা নামাজ পড়াইতে নিয়া যাবেন, এইরকম না। ব্যাপারটা তাবলিগী-দাওয়াতের ঘটনা হয়া গেলেও ভজঘটই পাকায়া যাবে হয়তো।…

মানে, জিনিসটারে নারী-অধিকারের জায়গা থিকা দেইখেন না, এমনকি ইসলামি ফেমিনিজমের জায়গা থিকাও না। একটা ফল্ট হিসাবে বরং দেখতে পারলে বেটার, যেইটা আমরা নানান কারণে এফোর্ড করতে পারি নাই। এখন তো চাকরির কারণে অনেক মেয়েদেরকে বাইরে থাকতে হইতেছে। অনেক অফিসে মেয়েদের নামাজ পড়ার আলাদা জায়গা আছে। মানে, সেমি-পাবলিক প্লেইসগুলাতে কিন্তু একভাবে চালু আছে। ইরানি সিনেমা, তার্কিশ সিরিয়ালের কারণেও ব্যাপারগুলা চোখ-সওয়া হয়া উঠার কথা কিছুটা। মানে, অনেকভাবে একটা গ্রাউন্ড বা বেইজ রেডি আছে। এইটা একটা আইডিওলজির আন্ডারে না নিয়া একটা সোশ্যাল প্রাকটিস হিসাবে চালু করতে পারলে পলিটিক্যাল অনেক জায়গারে ডিল করতে পারার কথা।

এইটা নিয়া জার্মানি থিকা, অস্ট্রেলিয়া থিকা, ফ্রান্স সুইজারল্যান্ড ও আম্রিকা থিকা (পরথম আলো আর ডেইলি-স্টার তো বাই-ডিফল্ট সব জায়গাতেই আছেন 🙂 ) অনেক শলা-পরামর্শ, তর্ক ও মিম আসতে পারে। কিন্তু এইগুলা তো আছে, থাকবেই।

সেকেন্ড জিনিসটাও অল্প কিছু চালু আছে, আমাদের সমাজে, কিন্তু গ্রসলি মিসিং-ই। সেইটা হইতেছে মা-বাপ বা জামাইয়ের সম্পত্তিতে মেয়েদের হক দেয়া। দেয়া হয় না – তা না, কিন্তু দান হিসাবে দেয়ার এবং অনেকক্ষেত্রে না দেয়ার ঘটনাই বেশি। এইরকম একটা দাবি-দাওয়া চালু আছে যে, সম্পত্তিতে মেয়ে-বাচ্চারে ছেলে-বাচ্চার সমান ভাগ দিতে হবে। এই নিয়ম করতে পারলে তো ভালোই আর কোন মা বা বাপ চাইলে সেইটা তো মনেহয় মরার আগে কইরা দিয়া যাইতে পারেন একভাবে, কিন্তু যেই আইন বা নিয়ম আছে, সেইটাই প্রাকটিস হিসাবে চালু নাই সমাজে।

এই কারণে যখন সম্পত্তি ভাগাভাগি হবে, বইনদেরকে যখন তাঁদের সম্পত্তির হিস্যা বুঝায়া দেয়া হবে, তখন চারপাশের মানুশজনদেরকে ডাইকা, সবার সামনে সেইটা করা যাইতে পারে। এইটারে কিছুদিন সামাজিক অনুষ্ঠান হিসাবে চালু রাখতে হবে, একটা বা দুইটা জেনারেশন। মানে, বিয়ার প্রোগ্রামের মতোই সম্পত্তি হ্যান্ডওভারের প্রোগ্রাম চালু করা। আশে-পাশের লোকজনরে দাওয়াত দিয়া খাওয়াইলেন। আমার ধারণা, এটলিস্ট দুইটা জেনারেশন যদি এই হ্যান্ড-ওভার/টেইক-ওভার ঠিকঠাক মতো করা হয়, জেন্ডারের জায়গাতে ক্যাওস তৈরি হওয়ার চাইতে রেসপেক্ট জিনিসটা বাড়বে বরং।

তো, বলছি বইলা, কেউ আবার বইলেন না, “বরং নিজেই তুমি লেখো নাকো একটি কবিতা—”

যেহেতু মনে হইছে, ভাবলাম, বইলা রাখতে তো দোষ নাই। এর বাইরে সিরিয়াসনেসও আসলে কমই আমার। স্যাড, বাট ট্রু। 🙁

#########

ধর্ম মানি না – এইটা তো অবশ্যই একটা পজিশন। ‘রিজন-বেইজড চিন্তা করতে পারা’ এবং ”বিজ্ঞান-মনস্কতা’র প্রমাণ দেয়ার বাইরেও মাল্টি-ন্যাশনাল এনজিও বা অ্যাড-ফার্মের চাকরি পাওয়ার জন্য লাগে এইটা। (এখন এই চাপ কমা’র কথা কিছুটা, কিন্তু নাই হয়া যায় নাই মনেহয়, লার্জলি এইরকমের একটা কালচারাল রিকোয়ারমেন্ট তো আছেই ‘আধুনিক’ এবং ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ হওয়ার, HR পলিসিগুলার বাইরেই।)

কিন্তু একটা গ্রুপ অফ পিপল, যারা ধর্ম মানেন, তাদেরকে ‘হেয় প্রতিপন্ন’ না কইরা যে, এই ঘটনা’টা ঘটতে পারে না, এইটা বাংলাদেশে লিবারালদের একটা সিগনেচারও। এই পজিশনটারে প্রাউডলি ম্যানিফেস্ট করতেও পছন্দ করেন উনারা। এইটা খালি একটা পজিশন না, একটা সুপিরিয়র-পজিশন।

তো, এইটা আসলে অই পজিশনের জায়গাটারেই ন্যারো এবং ফাঁপা একটা জিনিস কইরা তোলে। বেইজ হিসাবে কোন না কোন হেইট্রেট ছাড়া এইটা অপারেট করতে পারে না। একভাবে, একটা কলোনিয়াল সুরুতের বাইরেও যাইতে পারে না আসলে।

 

জানুয়ারি ৩০, ২০২২

সব্যসাচী স্যানাল বা Tadogen Girte’র লেখা

ইন্ডিয়ান-বাংলা রাইটারদের মধ্যে সব্যসাচী স্যানাল বা Tadogen Girte’র লেখা যে ভালো, বা ইন্টারেস্টিং, এর একটা কারণ হইতেছে হিন্দি-ইংলিশ নিয়া উনার ঝামেলা কম, বা প্রেজুডিস নাই কোন। ইন্ডিয়ান-বাংলার রাইটার’রা উনার এই ব্যাপারটা খেয়াল করতে পারেন, নিতে পারেন।

মানে, আরো কোন ইন্ডিয়ান-বাংলার রাইটারের মধ্যে এই তাকদ আছে কিনা, খেয়াল করি নাই। সবার লেখা তো বাংলাদেশ পর্যন্ত আসতে পারে না। বা আসলেও খেয়াল করার দরকার পড়ে না তেমন।

হাউএভার, সব্যসাচী স্যানালের লেখা তো এইটুকই না। কিন্তু শব্দের ব্যাপারে উনার ফ্লেক্সিবিলিটি উনার ভাষা ও চিন্তারে নতুন একটা লাইনে তুইলা নিয়া ছুটতেছে মনেহয়। তবে স্পিডের কারণে একটু হিমশিম (আই উইশ হি উইল নট পিক আপ দ্য ওয়ার্ড অ্যান্ড তেলাপোকা মারার মতো বাইড়াইতে থাকবে না উইথ হিজ চপ্পল) খাইতে হয় আমারে মাঝে-মধ্যে।

অই, “রেললাইন বহে সমান্তরাল…” আর কি!

 

জানুয়ারি ৩১, ২০২২

কথাগুলা লেখতে গেলে লিরিক্যাল হয়া যাওয়া’টা তো কোন ভালো-জিনিস না। কথার বা গদ্যের একটা প্রাইমারি কাজ হইতেছে, যতোটা পসিবল স্পষ্টভাবে বলতে পারা; ইল্যুশন তৈরি করা বা ‘এলায়া পড়া’ না। (ভাষা ইটসেলফ পিছলা একটা জিনিস।) শঙ্খ ঘোষ মার্কা (উনি জাস্ট একটা উদাহারণ) কবিদের ফলো কইরা এখনো অনেক কবি গদ্য’রে সেকেন্ড-ক্লাস সিটিজেন বানায়া রাখতে পারা’রে একটা ‘ওয়াও!’ ব্যাপার মনে করেন। এইটা একটা বজ্জাতির ঘটনা।

কবিতা’তে যেইটা স্ট্রেংথ, গদ্যে সেইটাই হয়া উঠতে পারে চিন্তা-না-করতে-চাওয়ার, শ্যালো হওয়ার একটা টুল। উপমা-বহুল, অনুভূতি-ময়, প্রশ্ন-ব্যাকুল জিনিসগুলারে গদ্যের ‘সার্থকতা’ বানানি’টা বাংলা-ভাষারে যতো মিনমিনা কইরা রাখছে, আর কোনকিছু এতো ক্ষতি করতে পারে নাই। কথা কইতে গেলে পোতায়া-যাওয়াটারেই মনে করা হয় ভালো বাংলা-গদ্যের নমুনা।

বাংলা-ভাষাতে চিন্তা করার, কথা কওয়ার যেই জড়তা, সেইটা এইরকম ‘ভালো-গদ্য’ নামের ভূতের হাত থিকা রেহাই না পাইতে পারারও একটা ঘটনা আসলে।

##########

কেন ‘সে’ আর ‘শে’ লেখা বেটার?

গরিবের (যার কোন অথরিটি তৈরি হয় নাই) কথা তো শুনতে কারো ভালো-লাগে না, আর মানার তো কোন প্রশ্নই উঠে না। আমি (আমার আগে কাজল শাহনেওয়াজও লেখছেন) ‘সে’ আর ‘শে’ লেখি দেইখা অনেকে হাসাহাসি তো করেন-ই, চেইতাও যান।
তো, আপনাদের কলোনিয়ান-বাংলার আব্বাদের কথা শুনলে হয়তো ব্যাপারটা মানতে একটু সুবিধা হইতে পারে। এই কারণে দেবেশ রায়ের কোটেশন’টা দিতেছি –

“ইংরেজি ও সংস্কৃতে সর্বনামের লিঙ্গভেদ আছে। ফলে বাক্যে সর্বনাম কোন নামপদের প্রতিনিধিত্ব করছে এ নিয়ে কোনো সংশয় পাঠকের মনে ঘটতে পারে না। বাংলায় সর্বনামে লিঙ্গভেদ নেই; ফলে জটিল বাক্যে সর্বনামের নামপদ নিয়ে একটা বিভ্রাট অনেক সময় দেখা দিতে পারে, তাতে অর্থও বদলে যেতে পারে।”
/উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য (১৯৯০), দেবেশ রায় (পেইজ ৫২৭)

মানে, আমি লেখি বইলা, সেইটা ফলো কইরা ‘শে’ লেখার দরকার নাই। (একটু অথরিটি না থাকলে, কারো কথা নেয়া যায় না, রিয়ালিটি এইটাই।) নিজেরা নিজে নিজে আবিষ্কার কইরাও লেখতে পারেন!

লেখতে গেলে, এইরকম অনেক টেকনিক বাইর করা লাগে। আবার বাদ কইরাও দিতে হয়। রাইটার হিসাবে “স্বতঃস্ফূর্ততা” না দেখায়া কিছু ডিসিশান আপনি নিতে পারেন। আর এই কারণে আপনি ভালো বা খারাপ রাইটার হয়া উঠেন না আর কি। আরো অনেক জিনিসই আছে এইখানে। যা-ই হোক…

#########

যে কোন সমাজেই নানান ব্যাপারে অথরিটি থাকে। (আমার অবজারভেশন হইলো) অথরিটি তৈরি হয় মেইনলি দুইটাভাবে।

মেজর ঘটনা হইলো, সামাজিক পজিশন। আপনার টাকা-পয়সা আছে; বিজনেসে, চাকরিতে উঁচা পজিশনে আছেন; আপার-ক্লাস, আপার-কাস্টে আছেন, আপনার কথার একটা ভ্যালু থাকবে। সমাজে এই জায়গাটা আপনি এচিভ করছেন। যে, কথা বলতে পারার মতো পজিশন আপনি হোল্ড করেন।

এমনি এমনি তো আর হয় না কেউ ডিসি, এসপি, ভার্সিটির টিচার। কিছু না কিছু তো করতে হইছে তাদেরকে, এই পজিশনে আসতে। ইভেন টাকা-পয়সা কামাইতে হইলেও। সচিবের পজিশনে যিনি আছেন, তাদের কথারে গুরুত্ব আমরা বেশি দিবো চাপরাশির চাইতে। এইটা মোটামুটি জেনারেল রুল।

কিন্তু চাপরাশি/দারোয়ানের কথাও শুনবো আমরা, যদি তারা ইম্পর্টেন্ট কথা কয়। এখন এইটা যে ইম্পর্টেন্ট, সেইটা কেমনে সেটেল হয়? (এইটা হইতেছে স্যাড পার্ট’টা) যখন এইরকম অথরিটির কেউ তার কথা’রে ইম্পর্টেন্ট বইলা একসেপ্ট করে। মানে, ভালো’রে বা সুন্দর’রে কারো একজনের আগে ভালো বা সুন্দর বলতে হয়; তখন অন্য’রা যাচাই করতে ইন্টারেস্টেড হয়। যে, এইরকম একজন মানুশ এইটারে ভালো বলতেছে, দেখি তো ভালো কিনা, সুন্দর কিনা…

তো, এই দুইটা জিনিস যখন নষ্ট হয়া যায়। চুরি-ডাকাতি না কইরা বা চোর-ডাকাতদেরকে সার্পোট না কইরা যখন সমাজে অথরিটির জায়গাগুলাতে না যাওয়ার কোন উপায় থাকে না, তখন অর্থব এবং বাজে অথরিটি পাইতে থাকি আমরা। যারা আসলে মেরিটের বেসিসে অথরিটি হয় নাই, হইতেছে চুরি-চামারি আর বদ-খাসলতের বেসিসে।

আর এই অথরিটির লোকজন অন্য লোকজনদেরকে রিকগনাইজ করতেও রাজি নাই, যারা সামাজিক পজিশন এচিভ না কইরাও নতুন কিছুতে কন্ট্রবিউট করতেছেন, বা করতে পারেন। যার ফলে, এই বাজে অথরিটি সোসাইটিরে একটা টোটাল কল্পাসের দিকে যাইতে থাকে।

কিন্তু কল্পাস করে না আসলে, সমাজরে বাঁচায়া রাখতে সমাজের মানুশজন তখন নতুন অথরিটি তৈরি করে। এইটা অনেক লম্বা আর কঠিন একটা সফর হয়া উঠে তখন। সবার জন্যই।

 

Leave a Reply