নোটস: মে, ২০২৩ [লাস্ট পার্ট]

মে ২১, ২০২৩

বাকশালি জমিদারির ভিতরেও আরো কয়েকটা জমিদারি আছে। যেমন ধরেন, ডিওএইচএস’গুলা, গুলশান, বারিধারা, তবে সবচে বড় জমিদারি মনেহয় এখন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার। মানে, এইসব জায়গায় রাষ্ট্রের নিয়মের বাইরেও আলাদা আলাদা অনেক নিয়ম আছে।

তো, এইটা দেখেন, যারা ইন্টারনেট সার্ভিস দেন বসুন্ধরা আবাসিকে, তাদেরকে আলাদা ফি (মানে, চান্দা/চাঁদা) দেয়া লাগে। আগে তা-ও কম ছিল, কিন্তু এইটা দিন দিন বাড়াইতেছে। এখন এই টাকা তো আসলে এন্ড-ইউজাররেই দেয়া লাগবে। আর এইটা জাস্ট অনেক ‘নিয়ম-কানুন’-এর একটা।

এইগুলা অপারেট করে বেশিরভাগ কেইসে এক্স-মিলিটারির লোকজন, যাদের গর্ভমেন্ট-অফিসগুলার লগে কানেকশন ভালো। তো, কমপ্লেইন কই করবেন! উল্টা ধরা খাওয়া লাগবে!

নিউজ হিসাবেও এইসব সাফারিংসের কথা কোথাও পাইবেন না। [নিউজের হেডলাইনটা দেখেন, কমেন্টে দিতেছি, কিছু বুঝা যায় কিনা!] নিউজ ছাপাইলেও তো বিপদ!

তো, বাকশালি জমিদারি’র ভিতরেও আরো অনেক জমিদারি আছে এইরকম। প্রজা হিসাবে অনেক জমিদাররেই সালাম দিয়া বাঁইচা থাকতে হয় মানুশের এখন, বাংলাদেশে।

মে ২২, ২০২৩

বাংলাদেশে ছোটখাট ইনভেস্টমেন্টের কোন জায়গা নাই বইলাই জমি-জমা, ফ্ল্যাটের দাম বেশি

কয়দিন ধইরা এইরকমের একটা আলাপ দেখতেছি যে, ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট-টেট কিনা একটা লস প্রজেক্ট। তো, অবশ্যই এইটা একটা লস-প্রজেক্ট, কিন্তু আজকে না, আরো ২০-২৫ বছর আগে থিকাই। কিন্তু তারপরও মানুশ-জন ফ্ল্যাট, জমি-জমা কিনতেছে, আর এর দামও হু হু কইরা বাড়তেছে, এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি বাসা-ভাড়াও।

তবে এইটা আসলে খুবই ভুল-ধারণা যে, মানুশ-জন থাকার জন্য ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনতেছে। এর বড় একটা পারপাস হইতেছে এক ধরণের ইনভেস্টমেন্ট আসলে। ফ্ল্যাট কিইনা বা বাড়ি বানায়া ভাড়া দিবে। এখন ভাড়া দিয়া যে ইনভেস্টমেন্টের টাকা উইঠা আসবে না এইটা যিনি ইনভেস্টমেন্ট করতেছেন, উনিও জানেন। টাকা যেহেতু কামাই করছেন, কিছু মানি-সেন্স তো আছে তাদের, তা নাইলে তো টাকা কামাই করতে পারতেন না মেবি। 🙂 তারপরও ব্যাংকে টাকা না রাইখা, অন্য কোথাও কিছু না কইরা ফ্ল্যাট-বাড়ি তারা কিনেন কেন?

এক নাম্বার কথা যেইটা বললাম, ইনভেস্টমেন্টের কোন স্কোপ নাই। ১-২ কোটি টাকা দিয়া কি বিজনেস করবেন? চাঁদাবাজি তো আছেই, বড়লোক হিসাবে ‘এক্সপোজড’ হয়া যাওয়ার রিস্কও আছে, আর অইগুলা দেখা-শোনাও কে করবে, কারে বিশ্বাস করবেন? শেয়ার-মার্কেটে রাখলে তো দরবেশ বাবার পকেটেই ঢুকবে! এইটা কোন সেইফ ইনভেস্টমেন্ট তো না-ই, বরং সবচে রিস্কি জিনিস।

তো, সবচে বড় যেই সাজেশনটা আসছে যে, অই টাকা দিয়া ফ্ল্যাট-জমি না কিইনা ব্যাংকে রাখেন? কিন্তু ক্যাচ’টা এইখানেই। জমির দাম, ফ্ল্যাটের দাম তো বাড়তেছে! ব্যাংকের ইন্টারেস্টের চাইতেও বেশি বাড়তেছে। মাসে মাসে ভাড়া তো পাইতেছেনই, একটা এসেট হিসাবে ভ্যালুও বাড়তেছে। টাকার ভ্যালু যত কমবে এসেটের ভ্যালু তো তত বাড়তে থাকবে আসলে।

আর যদি ‘অবৈধ-টাকা’ হয় ব্যাংকে রাখাটা তো আরো রিস্কি, যে কোন সময় ফ্রিজ কইরা দিতে পারবে গর্ভমেন্ট, কিন্তু এসেট দখলে নেয়াটা তো এতো সহজ না।

এর বাইরেও যারা ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে না বরং থাকার জন্য ফ্ল্যাট কিনতেছেন, লং-টার্ম লোন নিয়া ভাড়ার টাকা দিয়াই তো এসেট বানাইতে পারতেছেন। বা ঢাকা শহরে একটা ‘ঠিকানা’ তো দরকার – এই সেন্স থিকা করতেছেন। মানে, ইকনোমিকসের হিসাব মনিটারি লাভ-লসের জিনিস তো না, সবসময়!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, মানুশ-জন ফ্ল্যাট-বাড়ি বানায়া যতটা না লস করতেছে, তার চাইতে বেশি সেইফ-ইনভেস্টমেন্ট করতে চাইতেছে আসলে।

আর এর আফটার-এফেক্ট হইতেছে রেন্ট বাড়তেছে, বাসা-বাড়ি খালি পইড়া থাকলেও ঢাকা শহরে বাসা-ভাড়া কমবে না, যতদিন এসেটের ভ্যালু বাড়তেছে। একইসাথে বিজনেস করার কস্টও বাড়তেছে, যার একটা এফেক্ট অ্যাড হইতেছে এন্ড-কনজিউমারের উপরে। এইভাবে একটা ইভিল-সার্কেল ফর্মড হইছে বাংলাদেশে।

তো, এই জিনিসটারে মানুশ-জন ‘ভুল বুঝতেছে’ বইলা পার করতে চাওয়াটা একটা বোকচোদামি-ই না খালি, পিওর ইন্টেলেকচুয়াল হিপোক্রেসিই আসলে।

তানভীর ফুয়াদ রুমি

আমরা যারা বাঁইচা আছি, তারা তো এক রকমের দায়ী থাকি আসলে, যারা মারা গেছেন, তাদের কাছে। এইটা মেবি বাঁইচা থাকারই একটা দায়। যেইটা পুরাপুরি এক্সপ্লেইন করাটা মুশকিল।

তানভীর ফুয়াদ রুমি মারা যাওয়ার পরে উনার ফেইসবুক আইডি’তে গিয়া দেখলাম, উনি মনেহয় কোন সময় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইছিলেন আমারে, রেসপন্ড করার বাটন’টা দেখা যাইতেছে। কিন্তু উনি তো মনেহয় ফ্রেন্ড ছিলেনও আমার। কারণ উনার নাম এবং লেখা-পত্র কিছুটা পরিচিত আমার কাছে। যা-ই হোক, মাঝখানে হয়তো কিছু একটা হইছিল। কিন্তু কখনো কোন আলাপ হইছিল বইলা মনে পড়ে না আমার। আলাপ হইতে পারতো – এইরকম একটা পসিবিলিটি তো ছিলই; আমি নিজে থিকা কারো সাথে কথা-বলার এনার্জি তো পাই না আসলে। আর এইটাও মনে করি যে, অনেকের সাথেই অনেক ধরণের এসোসিয়েশন তো তৈরি হইতে পারতো আসলে আমার। আর এইভাবে সম্ভাবনার ভিতর থাকতে থাকতে অনেককিছুই শেষ হয়া যায় একটা সময়।

তানভীর ফুয়াদ রুমি বাঁইচা থাকলে হয়তো যোগাযোগ হইতে পারতো আমাদের। অথবা আমিও হয়তো একটা সময় তার লেখালেখি নিয়া ইন্টারেস্টেড হইতে পারতাম। আমি শিওর না সেইটা ভালো হইতো নাকি আরো খারাপ। মানে, উনি বাঁইচা থাকলে এইসব কথা তো উঠতোই না কখনো।

মানে, কোন পারসোনাল ফিলিংসের চাইতে একটা কালেক্টিভ ফেইলওরের কথা আমার মনেহয়, যে কোন মরণের ব্যাপারেই। এমন না যে, আমি কিছু করতে পারতাম; বরং আমরা তো একটা সময়ে, কাছাকাছি জায়গায়, কিছু চিন্তার ভিতর দিয়া কানেক্টেড থাকি সবসময়; সেইখানে ভুল কিছু করতেছি কিনা আমরা, বা যতটুক করার, তার সবটুক ট্রাই করতেছি কিনা – এর একটা দায় তো থাকেই, সবসময়। সেই অভিমানে, বা দোষেই কেউ সুইসাইড করে না অবশ্যই। কিন্তু আমরা নিজেদের কানেকশন এবং ডিস-এসোসিয়েশনের ভিতর দিয়াও একটা জায়গা তো তৈরি করতেছি আমাদের বাঁইচা থাকার। যেইটা শুধুমাত্র সাইকোলজি, সমাজ-সভ্যতা, ইকনোমিকস, পলিটিক্সের মতো কম্পার্টমেন্টাল কোন ঘটনা না। সেইখানে একটা রিকগনিশনের জায়গা বা একটা এটাচমেন্ট কখনো কোন হেল্পই করতে পারে না। আবার একটা আন-নোন জিনিসও বাঁচায়া ফেলতে পারে। আর যখন সেইটা ঘটে না, আমরা জাস্ট একটা মারা-যাওয়ার দিকে যাইতে থাকি। আমরা শেষটা দেখতে চাই। দ্য এন্ড বইলা কোনকিছুর কাছে পৌঁছায়া যাই। কোন মিনিং নাই বা অনেক মিনিং খুঁইজা পাই।

এখন আমি ভাবতে পারি যে, এইটা সত্যি না। যার ফলে আমারে বাঁইচা থাকতে হবে – এইটা না, বরং আমি দেখি যে, মারা-যাওয়া এমন একটা কিছু না যা আমারে এচিভ করতে হবে। এইটা জাস্ট আছে। আমার আশে-পাশেই। আমরা বাঁইচা থাকি আর আমরা মারা যাই।

আমরা মারা যাবো বইলাই আমরা বাঁইচা থাকি না, কিন্তু মারা-যাওয়াটাই তো বাঁইচা থাকাটার শেষ। এইটা বাইনারি না, এইটা রিভার্স হইতে পারে না। আমরা শুধু জন্মাইতে পারি। জন্মানোর পরে মারা যাইতে পারি। কিন্তু মারা-যাওয়ার পরে যদি জাইগাও উঠি কোথাও, সেইটা আর এই দুনিয়া না।

আমরা মারা যাই। আমাদের মইরা যাওয়াটা ইরিভার্সেবল। আমরা আর ফিরা আসবো না।

মে ২৩, ২০২৩

মিথ্যার কাজ সত্যি হয়া উঠা না, বরং কিছু সময়ের জন্য ইলিউশন তৈরি করা একটা, মানুশরে বোক বানায়া রাখা। বাকশালি-মিডিয়া এবং সোশাল-মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং যেই কাজটা করতেছে এখন। যেই কাজটা গোয়েবলস করতো, হিটলারের লাইগা।

যে কোন কথা আপনি শুনেন বা দেখেন, আপনার-আমার ফার্স্ট রেসপন্স হইতেছে সেইটারে শোনা বা দেখা, তারপরে যাচাই করা যে, সেইটা সত্যি নাকি মিছা। এখন যে কোন মিছা’র একটা টাইম-লেংথ আছে, ৫-১০ মিনিট আপনারে পাজলড কইরা রাখা, বোকা বানায়া রাখা; বা ধরেন ৫-১০ দিন, বা ৫-১০ বছরই। পারপাসটা হইতেছে বোকা বানায়া রাখা। সত্যি-কথা বলা বা সত্যি হয়া উঠা না কখনোই।

এই জায়গা থিকা দেখলেও আর্টের ট্রুথ আসলে মিছা-কথা হইতে পারে না। বা সেইটা মিছা-কথা হইলে সেইটা আর আর্টের ট্রুথ হয়া উঠতে পারে না। ট্রুথ ইজ বিউটি, বিউটি ইজ ট্রুথ এইভাবে সত্যি কথা আসলে। উল্টাভাবেও বলা যায়, ফলসহুড ইজ আগলি, আগলি ইজ অ্যা ফলস।

মে ২৪, ২০২৩

ইমরান খানের পুরান একটা ভিডিও-আলাপ কিছুটা ভাইরাল হইছে ইউটিউবে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাকিস্তানি স্টুডেন্টদের সামনে লেকচার দিতেছেন। তো, অইখানে উনি নেলসন মেন্ডেলার উদাহারণ দিয়া বলতেছিলেন, এতো বছর জেল-খাটার পরেও উনি উনার দাবি থিকা একটু সরেন নাই, সেইটা হইতেছে – এক লোক, এক ভোট। এই মিনিমাম ডেমোক্রেসির জন্য উনি এতো বছর জেল খাটছেন, সাফার করছেন।

তো, আমার মনে হইতেছিল, আমরা লিবারাল ডেমোক্রেসির মারা-যাওয়াটা দেখতেছি এখন। পিপলরে যারা রিপ্রেজেন্ট করার কথা, সেই এজেন্সিগুলাই এন্টি-পিপল হয়া উঠছে। অইগুলা ঠিক হওয়ার চান্স কমই। মানে, এই এজেন্সিগুলা এন্টি-পিপল হয়া উঠার ভিতর দিয়া সারভাইব করতেছে, টিইকা আছে এখন।

এক লোক, এক ভোট – এইটা বাংলাদেশে থাইকা কারো পক্ষে স্বপ্নেও পসিবল বইলা ভাবতে পারা কঠিন। কারণ এইটা তো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন না! বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন হইতেছে বাকশাল! জয় বঙ্গবন্ধু! হেইল হিটলার!

মে ২৫, ২০২৩

দুনিয়াতে কোন জালিমেরই বিদায় সম্মানজনকভাবে হয় নাই, হওয়ার কোন কারণও নাই। কিন্তু কোন জালিমই নিজের পরাজয় মাইনা নেয় না, কোন না কোন ম্যাসাকার করার ট্রাই করে, মরণ-কামড় দিতে চায়।

অন্য জালিমদের মতোই, নয়া বাকশালের লোকজন বড় কোন নাশকতা কইরা, একটা ‘জরুরি অবস্থা’ তৈরি কইরা ক্ষমতা ধইরা রাখতে চাওয়ার ট্রাই করবে, শেষমেশ। ষড়যন্ত্র কইরাই আওমি লিগ ক্ষমতায় আসছে, ষড়যন্ত্র কইরাই ক্ষমতা ধইরা রাখতে চাইবে। (পলিটিক্স করার নৈতিক সাহস ও সততা তাদের নাই।)

বাকশালি-মিডিয়া ও বাম-বাটপার-বুদ্ধিজীবীদের দিয়াই এই কাজ করার ট্রাই করা হবে। যার ফলে, সরকারি-গুজব ও ভুয়া-নিউজ থিকা আমাদের সাবধান থাকা সবচে বেশি জরুরি।

সন্ধ্যাবেলায় বাকশালি টিভি-গুলাতে নাটক চলতেছিল, ইলেকশনের নাটক। কয়েকজন দেখি, ক্রিকেট খেলার স্কোরের মত নাম্বার গুণতেছিল, ‘ভুল’ ধরতেছিল। মেজাজ-টেজাজ ছিল খারাপ, দিলাম ঝাড়ি; কইলাম, এই নাটক কেমনে এনজয় করেন! শরম করে না একটু। বাজারে কয় টাকা নিয়া যান, আর কয়টা জিনিস নিয়া ফেরত আসেন!

পাবলিকলি এইসব কথা তো বলি না নরমালি। কথা শুইনা সবাই ভয়-ভয় চোখে তাকাইতেছিল। আরো কেউ শুনলো কিনা, দেখতেছিল। আমি আসলে এখন আর অবাক হই না, বরং বিরক্ত; ডর’টা কিসের ভাই আপনার! বিচি তো বহুত আগেই বন্ধক দিয়া রাখছেন। বাকশালের পা চাটতে চাটতে জিব্বাও তো শুকায়া যাইতেছে। তারপরও বলে কথা কইতে ডরান!

এইগুলা ডর-না না, এইগুলা হইতেছে চিন্তা করতে না চাওয়া। কোন একশনে যাইতে না-চাওয়া। গাছ থিকা ফল পড়বে ডেমোক্রেসির, আর সেইটা বইসা বইসা খাবো আমরা! এইরকম ভাবতে থাকা আসলে। এইগুলা যে নাটক – এইটা যে আমরা জানি না – তা না; কিন্তু যেহেতু গোয়েবলসের দুনিয়াতে, বাকশালি-মিডিয়ার রিয়ালিটিতে থাকতেছি আমরা, বাতাবিলেবুই আমাদেরকে খাইতে হবে! এর থিকা বাইর হইলে যেন ‘সমাজ-বিচ্ছিন্ন’ হয়া যাবো আমরা! এইরকম একটা ঘটনা।

তো, এর থিকা বাইর হইতে হবে। ইব্রাকর ঝিল্লী’র কথাটা পছন্দ হইছে আমার – “নির্বাচনের ফলস কম্পিটিশন দেখায়া, যারা নির্বাচনী উত্তেজনা খাওয়াইতে চাইতেছে আপনেদের, তাদের চোখা চোখা এনালিটিকাল এবিলিটির গায়ে আপনি মুতে দিতে পারেন।”-না খালি আপনি, মুইতা দিতে হবে আসলে।

বুঝতে পারলেই হবে না, বলতেও পারতে হবে যে, খালি আওমিলিগই বাকশাল না; জাতীয়-পার্টিই বাকশাল না; সিপিবিও বাকশাল, চরমোনাইও বাকশাল; জালিম একলাই জুলুম করতেছে না, এর পাইক-পেয়াদারাও এর পার্ট, দালালরাও ইনোসেন্ট না।

মে ২৭, ২০২৩

আম

আম কবে থিকা যে রাজশাহীর একটা জিনিস হইলো!

মানে, রাজশাহী, নওগাঁ’র দিকে একটু বেশি হয়, কর্মাশিয়ালি চাষ হয়; কিন্তু মোটামুটি সারাদেশেই তো কম-বেশি হয়। আমাদের দিকে (কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহে…) কাঁচা আম বেটার, টক হয়; আচার বানানোর জন্য পারফেক্ট। এইরকম নানান ভেরিয়েশন তো আছে। এইসব ভেরিয়েশন বাদ দিয়া আম’রে রাজশাহীর জিনিস বানায়া ঠিক ‘ব্রান্ডিং’ করা হয় নাই, বরং আমের ভেরিয়েশনরে কিছুটা রিডিউসই করা হইছে আসলে।

দই যেমন খালি যেন বগুড়াতেই বানানো হয়! তো, এইগুলা যতোটা না সত্যি তার চাইতে ঢাকাইয়া ‘আদিখ্যেতা’র ঘটনাই বেশি আসলে।

মে ২৮, ২০২৩

আমার কানে তো একটু সমস্যা আছেই, মুখেও তিতা বেশি; মনেও কালা মেবি; যার ফলে কোকস্টুডিও রিসেন্ট ‘ফোক সং’ ‘নদীর কূল নাই’ আমার ভালো লাগে নাই। মানে, দোষ’টা আগেই নিজের ঘাড়ে নিয়া নিতেছি। তারপরে ‘গানের দোষ’ ধরি।

একটা জিনিস খেয়াল কইরা দেখবেন, ‘ফোক সং’ মানেই হইতেছে ‘দুক্খের গান’ বগা তালেব তো কাইন্দাই দিতেছে! [এইটা দেইখা অবশ্য হাসি-ই চইলা আসছে আমার ক্রুয়েল মনে।] মানে, গান তো অবশ্যই পারফরমেন্সের একটা ঘটনা, গাওয়াটা তো আছেই; সেইটারে পারফর্মও করা লাগবে তো! তো, এই পারফরমেন্সটা হইতেছে মোস্টলি ‘দুক্খ’-রে ইলাসট্রেট করা, ‘ফোক সং’-এর ব্যাপারে।

এখন এইটা (নদীর কূল নাই) ‘দুক্খের গান’ না – এইটা আমার কথা না; কয়দিন আগে একটা কথা উঠছিল ‘প্রভার্টি প – র্ন’ নিয়া; তো, ‘ফোক সং’-এর ‘দুক্খ’ আসলে প্রভার্টি প – র্ন হয়া উঠছে এইখানে, কিছুটা। এইটা কোন রিয়ালিটি না আর, রিয়ালিটি’টাই হইতেছে যেন – দুক্খ-কষ্ট!

তো, এই জিনিসটা ভাল্লাগে নাই। যে, একটা কিছুরে রিপ্রেজেন্ট করতেছি আমরা, ‘বাংলা সংস্কৃতি’রে তুইলা ধরতেছি, এইটা ইটসেলফ একটা ‘হাস্যকর’ জিনিস।

এখন এই জিনিস আগেও ছিল; ‘ফোক’ আইডেন্টিফিকেশনের ভিতরই এইটা এমবেডেড আছে। কিন্তু এইটা প – র্ন পর্যন্ত এক্সটেন্ডেড হইতে পারে নাই মেবি, এক ধরণের ‘ফিউশন’-এর ভিতর ছিল, যেইটারে ‘অথেনটিক’ এবং ‘অরিজিনালিস্টরা’ ‘জাউরামি’ হিসাবে হিসাবে ট্রিট করতেন। কিন্তু অই জাউরামিগুলা বেটার ছিল, আমার মতে। কারণ অই জিনিসগুলা ‘অথরিটির’ জায়গাটারে ডিসপ্লেইড কইরা তুলতে পারতেছিল একভাবে।

এখন কথা বইলা তো সবকিছু বুঝানো মুশকিলই। অর্নবেরই আরেকটা গান শুনেন। ফোক-গানই, কিন্তু মাস্তি-সং; এবং সারপ্রাইজিংলি ‘ইরোটিক’-ও না তেমন! নাও দৌড়ানির গান। জসীমউদ্দীনেরই লেখা মনেহয়।

এখন তো জসীমউদ্দীনরে সেলিব্রেট করার একটা সময় আসছে। কিন্তু মনে রাখা ভালো যে, এইগুলা কিন্তু উনার সুর না, সুরগুলা অনেক পুরানই; উনি জাস্ট ‘কালেক্ট’ করছেন, এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি, এইগুলা যে সেলিব্রেট করা যাইতে পারে, এর পক্ষে ওকালতি করছেন। উনার ওকালতিটা আমরা কিছুদূর পর্যন্ত মানতে পারতেছি এখন। এইখানে উনার ক্রেডিট অবশ্যই আছে। কিন্তু উনারে মালিক বানায়া ফেললে উনি নিজেও কিছুটা শরমিন্দা হওয়ারই কথা মেবি।

যা-ই হোক, এইটা মনে রাখলে ভালো যে, আমার মনে কালা, মুখে তিতা, কানেও একটু সমস্যা আছে মনেহয়। [মানে, এইভাবে নিজেরে বুঝ দেয়া ছাড়া আমার কোন উপায়ও তো নাই তেমন! 🙂 ]

“We must make ourselves visible, even when we lose” – Arundhati Roy

২০১৯ সালে “My Seditious Heart: Collected Non-Fiction” বইয়ের ইন্ট্রুতে এই কথা লেখছিলেন উনি, “নমর্দা বাঁচাও” আন্দোলন যে সাকসেসফুল হইতে পারে নাই, ডেম বানানো বন্ধ করা যায় নাই; সেই কথা বলতে গিয়া, যে আমরা বন্ধ করতে পারি নাই, কিন্তু আমরা তো ট্রাই করছিলাম; আর এই ট্রাই করার দরকার আছে। কথাগুলা বলতে পারতে হবে আমাদেরকে, আমাদের লড়াইটারে ভিজিবল করতে পারতে হবে। তো, আমরা কথা হইতেছে এই ভিজিবিলিটির জায়গা নিয়াই।

কোন জায়গায় আর কিভাবে ভিজিবল কইরা তুলতে পারেন আপনি নিজেরে, বা এই লড়াইয়ের কথাগুলারে? তখনো, মানে, ৩-৪ বছর আগেও, দুইজন এডিটর ছিলেন, যারা উনার লেখা আন-কন্ডিশনালি ছাপাইছেন; এখনো লিবারাল-মিডিয়া এবং স্পেইসগুলা উনার লেখা ছাপাইতে রাজি আছে; কিন্তু একজন সেলিব্রেটেড ফিকশন-রাইটার হিসাবে অই স্পেইসগুলা উনি পাইতেছেন বইলা, ডামি-পাবলিকদের হেইট্রেটও উনারে নিতে হইতেছে। এইটা মেবি হইতেছে উনার ভিজিবিলিটির কস্ট।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, লড়াইটা জারি রাখাটাই ঘটনা না, বরং লড়াইটারে ভিজিবল করতে পারাটাও একটা স্ট্রাগল এখন। এই আন্ডারস্ট্যান্ডিং উনার ছিল, কিন্তু রিসেন্ট টাইমে এইটা ইটসেলফ একটা ফেনোমেনা হয়া উঠছে। যে, কথা আপনি তো বলতেই পারেন, বলেন! কিন্তু সেইটা ভিজিবল হয়া উঠতে পারবে না। আপনার কথাগুলা মিউট হয়া থাকবে, আপনার চেহারা ক্যামেরার বাইরে চইলা যাবে। এখন এই স্পেইসগুলা (নিউজ-পেপার, নিউজ-মিডিয়া, ফেইসবুক, টুইটার, ইভেন একাডেমিয়া…) কোন ‘লিবারাল’ পজিশনের জায়গা থিকা অপারেট করেন। সার্টেন মিনিমাম সাবমিশনের বাইরে আপনি এই নেটওয়ার্ক-স্পেইসগুলাতে ‘ভিজিবল’ থাকতে পারবেন না।

আপনি থাকতেই পারেন, কথাগুলা বলতেই পারেন, কিন্তু সেইটা নেটওয়ার্কের লগে এক ধরণের ডিস-কানেকশনও তৈরি করতে থাকবে, বা ব্যাপারটা অনেক দূর পর্যন্ত কন্ট্রোলেবল এখন। যার ফলে, কথা বলতে পারাটাই এনাফ না, ভিজিবল হইতে পারাটাই হইতেছে ঘটনা। তো, কেমনে ভিজিবল থাকতে পারি আমরা, কেমনে রিলিভেন্সগুলারে ক্রিয়েট করতে পারি আমরা?

অইটা সার্টেন টেকনিকাল ইস্যু না, অইটা ইটসেলফ স্ট্রাগলের মধ্যে ইনক্লুডেড এখন। এইটা আমার ফুটনোট।

আজকে কথায় কথায় ওয়াজ করতেছিলাম (মানে, বলতেছিলাম) যে, নেকস্ট ইলেকশন নিয়া আমার প্রেডিকশন তিনটা –

১. ইলেকশন আসলে হবে না। কোন একটা ইস্যুতে, নেশনাল ডিজাস্টারের কারণে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা দিয়া এই পুতুল-পার্লামেন্ট আরো দুই-এক বছর কন্টিনিউ করা। (বড় আগুন-টাগুন, পাহাড়ে কাউরে দিয়া স্বাধীন ঘোষণা, বা মোস্ট সার্টেনলি দুর্ভিক্ষ হইতে পারে; দুর্ভিক্ষ তো আসলে চলতেছেই দেশে, জিনিসটারে ভিজিবল কইরা তোলা আর কি!)

কিন্তু এইটাতে রিস্ক বেশি। দুই-এক বছর কন্টিনিউ কইরাও কোন লাভ হবে না আসলে। খামাখা ইকনোমিক ক্রাইসিসটা আরো ভিজিবল হয়া উঠবে। তবে ভিক্ষা কইরা দুই-এক বছরের ফান্ড উঠলে পরে এই রিস্ক নিবে আসলে নয়া বাকশালের লোকজন।

২. সেকেন্ড পসিবিলিটি হইতেছে, ডামি-বিরোধীদল। এইটা সব চাইতে ‘গ্রহণযোগ্য’ ব্যাপার হইতে পারে। অলরেডি নেগোশিয়েশন চলতেছে বইলা আমার ধারণা। কিছু ‘ইসলামী দল’ তো আসছেই। গণ-অধিকার পরিষদও এক ঠ্যাং বাড়ায়া রাখছে। কিছু সিট দিলে আরো দুই-চাইরজনরে (যারা যতটা না পলিটিকাল দল, তার চাইতে বেশি পলিটিকাল-ফিগার) আনা যাবে। এমনকি বিএনপি’র কিছু কেন্ডিডেট’রেও কনভিন্স করা যায়, তাইলে তো আরো ভালো। এই ফ্রন্টে কাজ চলতেছে। একটা হিসাব-কিতাব হয়া যাবে, আমার ধারণা, জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই; যদিও ইলেকশনের আগে ‘চমকগুলা’ রিভিল করা হবে।

এইটা সবচে ভায়াবল অপশন। কিন্তু হেইস্ট (ব্যাংক-ডাকাতি) মুভিগুলাতে দেখবেন, প্যাঁচটা লাগে ডাকাতির পরে, ভাগ-বাটোয়ারা নিয়া। এইখানেও নয়া বাকশালরে বিশ্বাস করার মতো রিস্ক নিয়া কয়জন কুরবানির গরু হইতে রাজি হবে, সেইটা একটা দেখার ঘটনাই হবে। যেইভাবে সিপিবি, জাসদ, জাতীয় পার্টি ইনভেলিড হয়া গেছে, এইরকমের কিছু নতুন পলিটিকাল দল আমরা পাবো বইলা আমার বিশ্বাস আছে। মানে, এইখানে বেশ কিছু ‘ইফ’ এন্ড ‘বাট’ ইনভলব আছে।

৩. ইলেকশনে কি হবে বা কেমনে হবে – এইটা যতটা না বাংলাদেশের পলিটিকাল দলগুলার কনসার্ন, নয়া বাকশালের যারা কোর স্টেকহোল্ডার তাদেরও চিন্তার ব্যাপার আসলে। (পুলিশ-রেব-ডিজিএফআই, সরকারি-আমলা, মিলিটারি, মিডিয়া-পিপল যারা।) এখন উনারা খালি আওমি-লিগের লগেই নেগোশিয়েট করবে না, (খালেদা জিয়া না, বরং) তারেক রহমানের লগেও নেগোশিয়েট করতে চাইবে তো। চলতেছে কিনা, সেইটাও তো আমরা জানি না। মানে, ইলেকশনের আগে একটা পোলারাইজেশন তো হবে, একটা মিনিমাম লেভেলে হইলেও।

কিন্তু দেয়ার ফোর্সেস যারা তারেক জিয়ার লগে নেগোশিয়েট করতে চাইবে না, এদের জানের ডর আছে; মাফ কইরা দিবে বললেও বিশ্বাস করবে না, কারণ এরা তো জানে, কি কাজ এরা করছে। যার ফলে, আওমিলিগের লগে নেগোশিয়েশনে আসাটা খুচরা পলিটিকাল দলগুলার জন্য যতটা সহজ; নয়া বাকশালের দালাল ফোর্সগুলার জন্য সেইটা ততটাই কঠিন। নানান ধরণের রি-এরেঞ্জমেন্টের মধ্যে দিয়া যাইতে হবে তখন। আর এইটার জন্য তারা প্রিপেয়ার্ডও না তেমন।

তারপরও এইরকম কিছু যদি হয়; মানে, তারেক জিয়ার লগে নয়া বাকশালি ফোর্সগুলা যদি নেগোশিয়েট করতে রাজি থাকে, সেইটারেই আমাদেরকে “ডেমোক্রেসির বিজয়’ হিসাবে ধইরা নিতে হবে।

মানে, এইটাই বেস্ট, দ্যাট ক্যান হেপেন! (নয়া বাকশালি ফোর্সগুলার এই দাবি করতে পারতে হবে যে, পিপলের ভোটে না, বরং আমরা চাইছি বা রাজি হইছি বইলা তারা ক্ষমতায় আসতে পারছে। এই বাহাদুরিটা আসলে থাকতেই হবে। এইটা সর্ট অফ নন-নেগোশিয়েবলই এক রকমের।) এর বাইরে আশা করার মতো বেশড কিছু আমি দেখি না, লজিকালি ভাবতে গেলে। এখন এই তিনটার একটাও না ঘটতে পারে। আরো বাজে কিছুও হইতে পারে। (যেমন, আওমি লিগ তো ইলেকশন আসলেই গৃহযুদ্ধের হুমকি দেয়, নিজেরাই আরেকটা উইং বানায়া ‘জরুরি সরকার’ গঠন করতে পারে। মিডিয়া-মিলিটারি ব্যাকড ‘ইন্টিরিয়াম গর্ভমেন্ট’ ফর্মড করতে পারে, যারা একটা ‘ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন’ দিবে 🙂 এইরকম নানান কিছুও ইম্পসিবল না।…) সেইগুলার কথা আর না বলি বরং।

মে ২৯, ২০২৩

“… তো এই কারণে ওয়ার্কার তখনই খালি নিজেরে ফিল করতে পারে যখন সে কাজের বাইরে থাকে, আর তার কাজ হইতেছে তার বাইরের জিনিস। যখন সে কাজ করে না তখনই সে ফিল করে যে সে বাসায় আছে আর যখনই সে কাজ করতে থাকে ফিল করে যে সে বাসায় নাই।”

– কার্ল মার্কস, ইকনোমিক এন্ড ফিলসফিকাল মেনুস্ক্রিপ্ট, ১৮৪৪

[আমার পড়া ২০১৪ সালে]

ওয়ারকার্স: দ্যান এন্ড নাউ

মার্কসের এই কথা তো এখনো কম-বেশি সত্যি। কাজ (চাকরি বা বিজনেস) হইতেছে এমন একটা জিনিস, যা আমরা একটা ‘বাহ্যিক’ ব্যাপার হিসাবে করি। যদি অপশন হিসাবে দেয়া হয় যে, আপনি চাকরি করতে পারেন, না-ও করতে পারেন – তাইলে অনেকেই করবেন না; এই কারণে না যে, এইখানে করার মতো কিছু নাই; বরং ব্যাপারটা এইভাবে কন্সট্রাক্টেড হয়া আছে যে, এইটা যে কোন সেলফের বাইরের একটা ঘটনা।

আর আইরনিকালি, আপনার চাকরি-বিজনেসের জায়গাটারে সোশাল-আইডেন্টিটি হিসাবে মার্ক করা হয় সবসময়। ‘আপনি কি করেন?’ 🙂 হোয়ারঅ্যাজ, আমি যা করি, সেইটা কখনোই আমি না; ‘আমি’ কোন না কোনভাবে এর বাইরের একটা ঘটনা!

এখন কাজ’রে ভালোবাসতে হবে; বা যা কিছু করতে আপনি ভালোবাসেন, সেই কাজ করতে হবে – এই মোটিভেশনাল-গুয়ের কথা আমি বলতেছি এইখানে। মার্কসও বলেন নাই। এইটা একটা ইকনোমিক এবং ফিলসোফিকাল কন্সট্রাকশন। যেইটা গত ১৫০-২০০ বছর ধইরা এফেক্টটিভ ছিল; এখন সেইটা নাই হয়া যায় না, বরং নতুন কন্সট্রাকশনের দিকে যাইতেছে।

যেমন, হোম-অফিস করতে পারেন তো আপনি! ফেক্সিবল অফিস-টাইমও নিতে পারেন। ফ্রি-লেন্সিং। প্রজেক্ট-বেইজড কাজ। ও, স্টার্ট-আপ! মানে, কনসেপচুয়ালি, কাজ জিনিসটারে লিভিংয়ের লগে মিক্স-আপ কইরা ফেলা হয় নাই; বরং কাজের বাইরে কোন দুনিয়া তো নাই! এইরকম একটা জায়গায় গিয়া রিচ করছে। আপনি বাঁইচা আছেন কেন? কোন না কোন কাজ করার জন্যই তো! 🙂

[ইভেন, আইলসামিও তো একটা কাজ! আমি যে কাজ করতেছি না, এইটা তো আরো বড় কাজ!]

অনেক কাজ করতে হবে আমাদেরকে। অনেক অনেক কাজ!

দুইটাকা-পাঁচটাকা

রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পরে বিল আসলো ৩৩৫ টাকা। ৫০০ টাকার নোট দেয়ার পরে ১৬০ টাকা ফেরত দিল। মানে, ৫ টাকার কয়েন/নোট নাই রেস্টুরেন্টে। আর এইটা এইরকম নরমালই যে বলারও তেমন দরকার নাই এখন।

মুদির দোকানে কিছু জিনিস কিনলাম বিল আসলো ১৮৮ টাকা। (১০০ টাকার দুইটা নোটে) ২০০ টাকা দিলাম। ১০ টাকা ফেরত দিল। সাথে কোন লজেন্স/চকলেটও নাই! 🙂 মানে, ২ টাকা তো কেউ চায় না এখন!

আরেক দোকানে ১৯২ টাকার জিনিস ১৯০ টাকা রাখল। ২ টাকা যে কম রাখলো, সেইটা বলতেও চায় নাই; কিন্তু ১৫ টাকার জিনিসে তো আর ৫ টাকা কম রাখা যায় না, কইলো খুচরা ১০ টাকা বা ২০ টাকা দেন! ১০ টাকা, ২০ টাকার নোট থাকে পকেটে। দেয়ার পরে অনেক খুঁইজা ৫ টাকার একটা কয়েন ফেরত দিল।

এখন এই ৫ টাকার কয়েন নিয়া বিপদই, ভিক্ষাও দেয়া যায় না! দিলে, কিছু কয় না, কিন্তু মুখ কালা কইরা রাখে; মানে, ৫ টাকা দিয়া কি কিনা যায়! একটা বনরুটি/বাটারবানের দামও তো মিনিমাম ১০ টাকা।

১ টাকার, ২ টাকার তো দাম-ই নাই দুই-চাইর বছর ধইরাই; এখন ৫ টাকার ভেলুও নাই হয়া যাইতেছে আসলে বাজারে।

মানে, আমরা বড়লোক্স হইছি না! 😎

আর খেয়াল কইরা দেখেন, ১০০ টাকার নিচে তেমন কোন ট্রানজেকশনই করা যাইতেছে না। পুরাই বড়লোক আমরা এখন!

(দুই)

বিকালে এক রিকশা-রাইডের ভাড়া ছিল ১৫ টাকা; ২০ টাকা দেয়ার পরে সে হাইসা দিল। কইলো, পাঁচ টাকা কই পামু! তার হাসি ছিল সুন্দর। তারপরও বিকালবেলা বইলা কথা।

সন্ধ্যার পরে আরেক রিকশা-রাইডে ভাড়া চাইলো ৩০ টাকা। কইলাম, ২৫ টাকা দেই! রাজি হইলো। আসার পরে ৫০ টাকার নোট দিলাম। সে ৩০ টাকা ফেরত দিল। কিন্তু আমার কাছে তো ৫ টাকার নোট/কয়েন নাই! সে মাইনা নিল। মানিবেগ খুঁইজা দেখলাম ২ টাকার একটা নোট পাইলাম। কইলাম, এইটা নেন! সে কইলো, থাক! লাগবো না! তার মুখ ছিল অন্ধকার। লোডশেডিংয়ের কালো রাত চারপাশে তখন।

এখন ৫ টাকার একটা কয়েন খুঁজে বাইর করছি। ৫ টাকা, তোমারে হারায়া যেতে দিবো না আমি! এইরকম ভাবতেছি তারপর।

মে ৩০, ২০২৩

আওমি-লিগের মানে এই নয়া বাকশালের ফর্মেশনে কি কোন চেইঞ্জ আসছে? বা ফান্ডামেন্টাল কোন বদল কি আসছে? তা তো না, বরং যেইটা হইতেছে মোরালি ডিফিট হইছে; মানে পত্রিকার ভাষায় যারে বলে, নৈতিক পরাজয় ঘটছে। এর মেকাপ খইসা পড়তেছে, আরো উদলা, মানে নেকেড হয়া গেছে। নিজেদেরকে আর ডিফেন্ড করতে পারতেছে না নিজেরাও। যেইসব ভাড়াটে বুদ্ধিজীবীরা এই কাজ করতে যাইতেছে, তারাও আরো ইরিলিভেন্ট হয়া পড়তেছে।

নয়া বাকশালের ফেসিস্ট শাসন খালি ইকনোমিকালি বাংলাদেশরে রুইন করে নাই, মোরালিও সোসাইটিরে করাপ্টেড করে ফেলছে।

এখন পাওয়ারফুল এবং মোরালি-ডিফিটেড মানুশ-জন কি নিজের পরাজয় মাইনা নেয়? নরমালি নেয় না তো। হয় নতুন কোন ফন্দি-ফিকির করে, নাইলে আরো ফেরোশাস হয়া উঠে। একসাথে দুইটা কাজই করে। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, এই জুলুমের-শাসন মোরালি কল্পাস করছে, যেইটারে পলিটিকাল ডিফিট পর্যন্ত নিয়া যাইতে হইলে আরো অনেক কাজ বাকি আছে। ইভেন, এইটা ব্যাক-ফায়ারও করতে পারে।

মে ৩১, ২০২৩

দুইটাকা পাঁচটাকা (তিন, লাস্ট পার্ট)

ও, পাঁচটাকা’র কয়েনটা ইউজ করতে পারছি আমি পরে। ট্রেনে এক ভিখারি’রে দিছি। পাওয়ার পরে শে খুশি হইছে যে, তাঁরে নেয্য ভিক্ষা দেয়া হইছে।

এমনকি সাথে সাথে তাঁর লাভও হইছে। একটু দূরে একজন তাঁরে ভিক্ষা দেয়ার জন্য পকেটে হাত দিয়া টাকা বাইর করতে করতে বলতেছে, পাঁচটাকা দে! পাঁচটাকা দেয়ার পরে তাঁরে ১০ টাকার নোট দিল সে।

যেই লোকটা পাঁচটাকার কয়েনটা নিল সে নেয্য ভিক্ষাই দিতে চাইছে, কিন্তু পাঁচটাকাও দরকারি জিনিস মোটামুটি, পাওয়া যায় না তো এখন মার্কেটে; কারণ তেমন কোন জিনিস নাই ৫টাকার, কিন্তু মিনিমাম ডিনোমনিশন হিসাবে তো রয়া গেছে – ১৫ টাকা, ২৫ টাকা, এইরকম। অইসব ট্রানজেকশনে তো লস হইতেছে!

এই কারণে মুদি দোকানদারে’রা ভিখারিদের কাছ থিকা ৫টাকার নোট/কয়েন কিনে অনেক সময়। কিন্তু সার্কুলেশন তো এইভাবে ধইরা রাখা যাবে না, মিনিমাম বেইজ ১০টাকারই হবে কয়দিন পরে – ১০টাকা, ২০টাকা, ৩০টাকা, এইরকম; ৫টাকা, ১৫টাকা, ২৫টাকা বইলা কোন প্রাইস-টেগিং থাকবে না আসলে।

তো, আপনার ৫টাকার নোট/কয়েন’রে ঠিকঠাক মতো দেখে নেন, গুডবাইও বলে রাখতে পারেন। “হইতেই পারে এই দেখাই শেষ দেখা।”

ছোটবেলায় যারা উত্তর দেইখা অংক করছেন, তারা বাজেটের নাম্বারগুলার ব্যাপারটা ঠিকঠাক বুঝতে পারবেন অনেকটা। মানে, অংকটার উত্তর যদি হয় ৫ তাইলে তো একভাবে করতে হবে অংকটা; আর যদি হয় ৫০, তাইলে তো আরেকভাবে করতে হবে তখন। আসল কথা হইতেছে, রেজাল্ট বা উত্তরটা মিলাইতে হবে।

বাজেট জিনিসটাও অনেকটা এইরকমই। ৮% জিডিপি গ্রোথ দেখাইতে হবে, তারপরে নাম্বারগুলা অইভাবে সাজাইতে হবে। এইরকম।

এখন রিয়ালিটির সাথে মিললো কিনা, এচিভেবল কিনা, এইগুলা মোটামুটি ‘আজাইরা’ আলাপই 🙂 কারণ ঠিকঠাক নাম্বার প্রেডিক্ট করাটা তো উদ্দেশ্য না, উদ্দেশ্য হইতেছে অই উত্তর’টা মিলানো!

সুইসাইড নোট

মুরাদ নীল কি আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড ছিলেন নাকি কখনো? আমি মনে করতে পারতেছি না এখন। মানে, থাকলেও সুইসাইড করার আগে আমারে আন-ফ্রেন্ড করে গেছিলেন।

কিন্তু উনি যেহেতু আমার অনেক ফেইসবুক ফ্রেন্ডের ফ্রেন্ড, উনারে নামে চিনতাম আমি। উনি মারা যাওয়ার পরে আমার এক ফেইসবুক ফ্রেন্ডই ইনবক্সে জানাইলেন তার সুইসাইড করার কথা। “দুধ চা খেয়ে গুলি করে দিবো” কি উনার লাইন? আই লাইকড দ্যাট।

উনি আমার লেখা পড়ছেন বা পছন্দ করছেন – এইরকম কিছু আমার জানা নাই। পাবলিকলি কোন ক্রিটিক বা নিন্দা করছেন বইলাও মনে পড়ে না। যেইরকম ধরেন, আরেকজন কবি সৌরভ মাহমুদ (উনিও সুইসাইড করছিলেন) আমার কোন একটা কবিতা একজন শেয়ার দেয়াতে সেইখানে কমেন্ট করছিলেন যে, এই কবিতা তো ইন্ডিয়ান-বাংলার অই কবি’র অই কবিতার মতো! মানে, সেইটা হয়তো হইতেই পারে। কিন্তু জীবনে আমি তো আর অই একটা কবিতাই লেখি নাই; কিন্তু উনি যে আমার এই একটাই ক্রিটিক করছিলেন, সেইটাই আমার মনে রয়া গেলো! 🙁

আমি ফিল করি, বাংলাদেশে যেইসব ইয়াং-কবিরা কবিতা লেখেন তাদের অনেকরেই মেবি আমার কবিতা-রে নিন্দা-মন্দ করতে হয়, পারসোনাল-লেভেলের আড্ডাগুলাতে। এখন এই প্রেশার না নিতে পাইরা উনারা দলে দলে সুইসাইড করতেছেন (😝) – এইটা আমার কথা না। কিন্তু একটা ‘সাহিত্য-সমাজের’ অংশ হয়া-উঠার বা না-হইতে-পারার প্রেশার মেবি উনারা ক্যারি করেন; যেই চাপ আমি নিজেরে কখনো দেই নাই।

তাই বইলা একটা ‘সাহিত্য-দলের’ এগেনেস্টে আরেকটা ‘সাহিত্য-দল’ বানানো কখনোই আমার উদ্দেশ্যের মধ্যে ছিল না, বা নাই; এমনকি এর বিপরীতে কোন ‘অবজেক্টিভ বিচার’ এর বেইজ তৈরি করার মধ্যেও আমি নাই; এবং আমি মনে করি যে, এই স্পেইসটারে অনেকেই ব্ল্যাংক মনে করেন, আর এম্পটিনেস বইলা ভাবেন; এইটা পসিবল হয় কারণ পলিটিকাল এজেন্ডারে না-দেখা না, বরং না-দেখতে-চাওয়ার কারণে। এই জায়গাগুলা থিকা, বেইজগুলা থিকা না সরতে পারার কারণে। একজন ইন্ডিভিজুয়াল সবসময় উইক এবং ভারনারেবল একটা স্পেইস, যদি না সে কোন কালেক্টিভনেসের আইডিয়ার লগে নিজেরে এসোসিয়েট করতে পারে। আমি মনে করি, বাংলাদেশে যারা ‘সাহিত্য’ করতে আসতেছেন, এই স্পেইটারে উনাদের ভাষার ভিতরে আর্টিকুলেট পারতে হবে। ‘লিটমেগের’ লেটো-গান গাইয়া অই কাজ করা যাবে না আর।

আই গেইস, যারা ‘সাহিত্য’ করতে চান, তাদের বড় একটা অংশ সাহিত্য-সমাজে ‘নিজেদের স্থান’ করে নিতে পারতেছেন-না না; এইসব স্থান-টানের জায়গাগুলারে ছাইড়া দিতে পারতে হবে, কোন না ভাবে; তা নাইলে নিজেদের লেখালেখির জায়গাটারে খুঁইজা পাওয়াটা টাফ হবে।

যা-ই হোক, অইগুলা তো কথা না কোন… মুরাদ নীলের কথা শুইনা এইসব জিনিস মনে হইলো আর কি!

২.
আমি অনেকগুলা সুইসাইড নোট পড়ছি, এর মধ্যে আমার পছন্দের সুসাইড নোট হইতেছে সিজার পাভিজির। সিজার পাভিজি হইতেছেন ইতালিয়ান পোয়েট। উনার ফ্রেন্ডরা যখন নোবেল-টোবেল পাইতেছে তখন ধরেন উনি বাংলা-একাডেমিও মেনেজ করতে পারতেছেন না, এইরকম একটা সিচুয়েশন।

উনার সুইসাইড নোট’টা ছিল এইরকম: “আমি সবাইরে মাফ করে দিছি আর সবার কাছে মাফ চাইয়া রাখতেছি। ঠিকাছে? এইটা নিয়া বেশি মাতামাতি কইরো না।”

কি পিসফুল একটা জিনিস!

Leave a Reply