নোটস: নভেম্বর, ২০২১ [পার্ট ৩]

নভেম্বর ২১, ২০২১

এক্ট অ্যাজ অ্যান মোরাল ক্যাটাগরি

একজন মানুশ কি অন্য আরেকজন মানুশের জন্য ভালো করতে পারে না? এই পোশ্ন আসছিল আমার মনে। আমার মনে হইছে, টাফ এইটা; নিজের ভালো’র কথা না ভাইবা অন্যের ভালো করাটা, সম্ভব এইটা, কিন্তু রেয়ারই হওয়ার কথা। এইটা গ্রেটনেসের একটা কাজ। এখন আমরা সেলফ-ইন্টারেস্ট বাদ দিয়া গ্রেট হইতে পারি না – তা না; কিন্তু এইটা এক্সপেক্ট করাটা ঠিক হবে না, এমনকি নিজের ব্যাপারেও ক্রিটিক্যাল থাকাটা বেটার। আমরা বেস্ট যেইটা করতে পারি সেইটা হইতেছে, অন্যের ক্ষতি না করা।

মানে, কোন কাজ করতে গেলে যদি অন্যের ক্ষতি হয়, নিজেরও ক্ষতি হয় – সেই কাজ যে করি না আমরা – তা না; একদম ডেসপারেট হইলে করি, পরে যদিও আফসোস করা লাগে, আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি, না করলেই ভালো। (এক ধরণের মানুশ আছেন, অন্যের ক্ষতি কইরা আনন্দ পান, উনাদের কথা বাদ দিয়াই বলতেছি। অইটা এক ধরণের রোগ বা অসুখ হিসাবে ভাবতে পারাটা বেটার।) সেকেন্ড জিনিস হইলো, যেই কাজ করলে অন্যের ক্ষতি হয়, কিন্তু নিজের লাভ হয় – সেই কাজ না-করতে নিজেরে রাজি করানোটা দরকার বেশি। আর অই কাজই বেশি বেশি বেশি করতে থাকা যেইটা নিজের এবং অন্যদের জন্য ভালো। এইটা হইতেছে থার্ড এক্ট। এই সেকেন্ড এবং থার্ড এক্ট যিনি করতে পারেন, তারেই আমি ভালো-মানুশ বলতে চাই। এর পরে হইতেছে আসলে, (নিজের ভালো-খারাপ না ভাইবাও) অন্যের জন্য ভালো করা। আগের তিনটা কাজ না খেয়াল করতে পারলে এই ৪ নাম্বার কাজটা খুব একটা করতে পারার কথা না আমাদের। (জেনারেল রুল হিসাবেই বলতেছি।)

তবে আমাদের যে কোন কাজই রিলেটিভ একটা জিনিস, absolute কিছু না। আমি কারো কথা না ভাইবা করলেও যে কোন কাজ একটা কনটেক্সটে, টাইম ও স্পেইসের ভিতরেই এক্ট হয়া উঠতেছে, সবসময়। এই রিলেশনটারে খেয়াল করতে রাজি হইতে হবে আসলে সবচে আগে।

#########

বাংলাদেশের এখনকার রাজনৈতিক ঘটনাগুলার অবজারভার হিসাবে আমার পলিটিক্যাল পরস্তাব তিনটা। দুইটা কাজ করতে হবে, আর একটা কাজ করা যাবে না।

বেশ কয়েকবারই বলছি, নয়া বাকশাল কোন পলিটিক্যাল ফোর্সের লগেই নেগোশিয়েশন করতে রাজি না; সিভিল ওয়ার বাঁধায়া দিবে, মিলিটারি বা নন-পলিটিক্যাল ফোর্সগুলার কাছে পাওয়ার হ্যান্ড-ওভার করবে, কিন্তু কোন পলিটিক্যাল পার্টি (পড়েন, বিএনপি’র) লগে আলাপ করবে না।
উনাদের সবচে বেশি ডর হইতেছে যে কোন পলিটিক্যাল এন্টিটি’রে, এমনকি যে কোন পারসনরেও, যে (পলিটিক্যাল এনালাইসিস না, বরং) পলিটিক্যালি এক্ট করতে চায়। এই কারণে, এক নাম্বার কাজ হইতেছে, পলিটিক্যাল কাজকাম করতে পারা। ইজি না এইটা অবশ্যই। 🙁 (বাম-বাটপারদের মতো বিপ্লব না চুদানো। এর বাকশালের ডামি-বিরোধিতার ভিতর দিয়া এরে আসলে টিকায় রাখার রাস্তা-ই তৈরি করে।)

সোশ্যাল ইস্যুগুলাতে পলিটিক্যাল কনশাসনেস জারি রাখা। নিরাপদ সড়ক মুভমেন্ট বা কোটা-মুভমেন্টের সময় ডরানির ব্যাপারগুলা ভাইবেন। কোনটাই গর্ভমেন্ট ফালায়া দেয়ার মুভমেন্ট ছিল না, তারপরও ব্যাপক ডরাইছিল বাকশালি-লোকজন; কারণ এরা পলিটিক্যালি নেগোশিয়েট করতে রাজি না। নেগোশিয়েশন করলে ক্ষমতার দেমাগ থাকে না। অই দেমাগটা হইতেছে কোর।

আমি মনে করি যে কোন সোশ্যাল ও ইকনোমিক ইস্যুতে (স্টুডেন্টদের হাফ-পাস, ডিজেলের দাম, পুলিশি রিমান্ড…) পলিটিক্যাল মুভমেন্ট করা দরকার। যে কোন ইনসাফের কথা শুনতে যে এরা রাজি না, একটা অবৈধ সরকারের পক্ষে যে পিপলের ডিমান্ড নজরে নেয়ারই দরকার পড়ে না, এইটা বারবার স্পষ্ট করা দরকার।

যে বটগাছ (পড়েন, পাবলিকের গর্ভমেন্ট হইলে), সে নুইতে ডরায় না; কারণ সে জানে তার শেকড় মাটির অনেক ভিতরে (পড়েন, পাবলিক সার্পোট আছে তার)। কিন্তু যেই গাছের গোড়া নরোম, সেইটা একটু নুইলেই উপড়ায়া পড়ার ডরে থাকে সবসময়।

সেকেন্ড হইতেছে, নয়া বাকশালের ন্যারেটিভ বা বানানো ক্যাটাগরিগুলার ট্রাপে না-পড়া।

যেমন অন্যতম একটা ক্যাটাগরি হইতেছে: নারীবাদ ভার্সেস ইসলাম। এখন এই দুইটার মধ্যে যে বিরোধ নাই তা তো না, কিন্তু ‘ইসলামের’ মূল শত্রু যেমন ‘নারী-অধিকার’ না, একইভাবে ‘নারী-অধিকার’র মেইন অবস্টেকল ‘ইসলাম’ না; বরং দুইটা জায়গাতে জুলুমের মেইন কারিগর হইতেছে নয়া বাকশাল।

গত মার্চ মাসে মাদরাসার স্টুডেন্টদেরকে ‘নারীবাদী’রা (চুপ কইরা থাকলেও, বিরোধিতা না করলেও) খুন করে নাই। বাংলাদেশে ক্ষমতার দাপট দেখায়া যত রেইপ হয় সেইটা মাদরাসায় পড়াশোনা করার কারণে কেউ করে নাই, বরং ছাত্রলীগের নাম দিয়াই করা হইছে, হইতেছে বেশি।
আমি বলতে চাইতেছি নয়া বাকশাল ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ‘নারী-অধিকার’ ও ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ নাম দিয়া যেইসব আকাম-কুকাম করে তারে স্পষ্ট করা দরকার পলিটিক্যাল ও সোশ্যাল এক্টিভিটিসের ভিতর দিয়া।

যেমন ধরেন, মসজিদে মেয়েরা নামাজ পড়া শুরু করছিলেন মাঝখানে, এইটা একটা ভালো ইনিশিয়েটিভ ছিল। মানে, এতে কইরা ‘নারী-অধিকার’ প্রতিষ্ঠা হয়া যাবে না, কিন্তু সোশ্যালি একটা ইনক্লুসিভনেসের শুরুয়াত পসিবল। একইভাবে, ইসলাম’রে ১০টা গাইল দেয়ার সময় যদি যদি ‘মূক ও বধির’ না থাইকা ‘সেক্যুলার নারীবাদীরা’ অবৈধ সরকারের ২টা ক্রিটিকও করতে পারেন; তখন এই সিউডো ক্যাটাগরিটার বেনিফিট জুলুমের ফেভারে যাওয়ার কথা না। একটা জুলুমের শাসন যে সবারই দুশমন – এই বুঝ’টা সবসময় সবারই থাকা দরকার। (আরো ক্যাটাগরি আছে এইরকম, ফাঁপা এবং বানানো; যেমন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বিরোধীরা, মানে হাস্যকর, এইগুলা, এখন বুঝতে পারেন তো মোটামুটি সবাই। তো, এইরকম ক্যাটাগরিগুলার মেইন কাজই হইতেছে জুলুমের জায়গাটারে সরায়া ফেলা।) এইরকম সিউডো ‘দ্বান্দ্বিকতা’গুলারে (বালের বাংলা আমার) ভোঁতা কইরা দিতে হবে, আমাদের কাজকামের ভিতর দিয়া। এইটা সেকেন্ড কাজ।

থার্ড এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্ট জিনিস হইতেছে, দুনিয়াতে কোন জালিম-ই শোধরায় নাই, নিজে নিজে জুলুম করা বন্ধ করে নাই। ইতিহাসে কখনো এই ঘটনা ঘটে নাই। সো, জালিমের ও জুলুমের পাপেটদের মুখের কথা বিশ্বাস কইরেন না। অইটা হবে একটা ক্রাইম।

জুলুম কোনদিন নিজে থিকা শেষ হয় না। এর শেষ করতে হয়। একটা রিভেঞ্জের রাজনীতির শেষ আরেকটা রিভেঞ্জ দিয়া করলে একই গর্তেই পড়বো আমরা। বরং আর কোন রিভেঞ্জের রাজনীতি যেন বাংলাদেশে শুরু না হইতে পারে, সেইটা এনশিওর করা লাগবে। খালি কথা দিয়া না, পলিটিক্যাল এক্টিভিটির ভিতর দিয়া সেই রাস্তাটা বানাইতে হবে আমাদেরকে। যেন বাংলাদেশে বাকশাল নতুন চেহারা নিয়া আর কোনদিন ফিরা না আসতে পারে।
Continue reading

নোটস: নভেম্বর, ২০২১ [পার্ট ২]

নভেম্বর ১১, ২০২১

কয়েকজন তো আমারে বলেন পারসোনালি, কেয়ার করেন বইলাই যে, পলিটিক্যালি ডেয়ারিং কথা বেশি বইলেন না! তো, আমি তেমন কোন উত্তর আসলে দেই না, এইরকম ভালোবাসার। কিন্তু আমার ধারণা, আমি যেমন জানি, উনারাও জানেন এবং যেই ভূতদের আমরা ডরাই, উনারাও জানেন। যে, কথা বইলা কিছু হয় না।

একবারে যে কিছু হয় না – তা না, প্রপাগান্ডা বা উসকানিমূলক হইলে বা পপুলার/ভাইরাল হইলে যখন কোন একশনের দিকে ঠেইলা দেয়, তখন ‘বিপদজনক’। আমার কথা মোস্টলি থিওরেটিক্যাল, এক্টিভিজম আমার ধাঁতে নাই তেমন। যার ফলে এইসব জিনিস পলিটিক্যালি পাওয়ারফুল লোকজনের কাছে কখনোই ওরিড মতো ঘটনা না। বরং এই জুলুমের শাসনরে যারা মাইনা নিয়া ‘চিরসুখী’ হইতে চান বা থিওরেটিক্যাল জায়গা থিকা আপহোল্ড করতে চান, উনাদের একটু ‘অস্বস্তি’ হইতে পারে বড়জোর! এদের মধ্যে যদি কেউ আমার লগে ‘জাতশত্রুতা’ না করেন, আমার কথা-বলার কোন ‘রিস্ক’ আসলে নাই, থিওরেটিক্যালি। মানে, আমার কথা দিয়া কারো কোন বাল’ডাও ছিঁড়া যায় না। জাস্ট ইগনোর করতে পারলেই হয়।

ডর হইতেছে তখন, যখন আপনি কোন একশনে যাইতেছেন, কোন কাজ করতে যাইতেছেন, বা এইরকমের ইনিশিয়েটিভ নিতেছেন। এই কারণে দেখবেন, বিএনপি’র থানা-লেভেলের নেতা-কর্মীদের নামেও মামলার শেষ নাই। বা যারাই পলিটিক্যালি এক্টিভ হয়া উঠতে চান, তাদের নামে মামলা দিয়াই শায়েস্তা কইরা ফেলা যায়। (কিন্তু মেঘদলের নামে মামলা করলে খারিজ হয়া যাবে আবার! আর আওয়ামী লীগের কারো নামে মামলা করার চিন্তা মুখে তো দূরের কথা, মনেও আইনেন না। এমন কঠিন আইনের শাসনে আছি আমরা এখন বাংলাদেশে।) মানে, ২৪/৭ পলিটিক্যাল কথা-বার্তা বলেন, সমস্যা হওয়ার কথা না তেমন; অনলাইনে টুকটাক স্লেজিং, হ্যাকিংয়ের ঝামেলা হইতে পারে, খুববেশি হইলে। এর বাইরে, নজরদারিতে তো আমরা সবাই কম-বেশি আছিই।

কিন্তু সাবধান! কোন পলিটিক্যাল এক্টে জড়াইবেন না! মনে রাখবেন, “একটা দুর্ঘটনা, সারাজীবনের কান্না।”

যত খুশি পলিটিক্যাল এনালাইসিস করেন, কিন্তু পলিটিক্যাল এক্ট থিকা দূরে থাকেন! বি সেইফ! 🙂

#########

– আমার বাংলা লেখা (১) –

আমার লেখা বাংলা-ভাষা কেন ভালো? 🙂 মানে, যদি ‘ভালো’ (একইভাবে ‘খারাপ’ও যদি) হয়া থাকে আর কি! তাইলে, কেন?

অনেকে না হইলেও দুয়েকজন তো বলছেন আমারে যে, আমার কথার লগে ‘একমত’ না হইলেও পড়তে ভাল্লাগে আমার লেখা। অনেকের লেখাই অনেকের ভাল্লাগে। সব ভালো-লাগার ঘটনা এক না। একেক জিনিস একেক কারণে ভালো লাগে আমাদের। এমনকি একই জিনিস সব মানুশের বা একজন মানুশেরও সব সময়েই একই কারণে ভালো-লাগার কোন কারণ নাই। অই ভ্যারিয়েশনটা মাথায় রাইখাই বলতেছি।
আরেকটা জিনিস হইতেছে, এইটা কোন ‘অহংকার’ বা প্রাইড থিকা বলা না, বরং বলা যায় গত ১২/১৩ বছর ধইরা কিছু জিনিস কনশাসলি ট্রাই করছি আমি, সেইটারে খোলাসা করার জায়গা থিকাই এইটা বলতে চাওয়া।

এখনো বাংলা-ভাষার ব্যাকরণ বইয়ে এই জিনিসটা আছে মনেহয়, বাক্য-গঠন নিয়া যে, বাংলা ভাষায় লেখতে গেলে এই স্ট্রাকচারে লেখতে হবে: কর্তা > কর্ম > বিধেয়। আগে একটা সাবজেক্ট বা কর্তা থাকতে হবে, যিনি কোন কাজ করতেছেন, কোন উদ্দেশ্যে করতেছেন।

এই নিয়ম আমি সবসময় ফলো করি নাই। বেশিরভাগ সময় হয় কাজ > কথা > সাবজেক্ট, বা কথা > কাজ > সাবজেক্ট, বা কাজ > সাবজেক্ট > কথা… এইরকম ফরম্যাটগুলাতে গেছি। এতে কইরা অনেক সময় ‘সমালোচনা’ শুনতে হইছে যে, ব্যাকরণ-সম্মত হয় নাই, ছন্দ মিলে নাই। কিন্তু বাক্য তো পড়া যায়! যার ফলে লোকজনের বুঝতেও সমস্যা হয় নাই। এইরকম ভ্যারিয়েশনের কারণে এক ধরণের ‘রস’-ও তৈরি হয়। যার ফলে, আমার ধারণা, কমপ্লেইন আরো কইমা আসার কথা দিনে দিনে।

তো, এই জিনিস বাংলা-ভাষায় আমি শুরু করি নাই, অনেকেই এই স্ট্রাকচার মানেন না, বা সম্ভবও তো না আসলে। কিন্তু আমি সচেতনভাবেই অনেক সময় জিনিসটা করতে চাইছি।

আর ভাষার স্ট্রাকচার চেইঞ্জ কইরা ফেলবো – এইরকম ‘বিপ্লব’ করার কোন খায়েশ থিকাও করি নাই। বরং দেখবেন এই কর্তা > কর্ম > বিধেয় স্ট্রাকচারের কারণে ‘ব্যক্তি’ অনেক বড় ব্যাপার আমাদের চিন্তা-ভাবনায়। একজন ‘নেতা’ নাই বইলা যেন সরকার-বিরোধী আন্দোলন হইতে পারতেছে না দেশে! বা কোন ‘বিকল্প নাই’ চিন্তাটাও সাবজেক্টরে বেইজ কইরা করা। এইটা ভুল না অবশ্যই, কিন্তু ভাষার স্ট্রাকচার আমাদের চিন্তারে শেইপ-আপ করে বেশিরভাগ সময়।

তো, ভাষার প্যার্টান চেইঞ্জ করলেই চিন্তার ধরণ পাল্টায়া যাবে – এইটা জরুরি না, কিন্তু দুইটা জিনিসের একটা রিলেশন তো আছে। সেই জায়গাটাতে আমি কনশাস থাকতে চাইছি কিছুটা। তার চাইতে বড় ব্যাপার হইতেছে, ভাষার ফরম্যাটরে আমি আমার কথার চাইতে বড় বইলা ভাবি নাই। এইগুলা সবসময়ই চেইঞ্জ হইতে থাকবে।

আবার যেহেতু কর্তারে কথা বা কাজের আগে বসাই না আমি বেশিরভাগ সময়, ইংলিশ ভাষা পড়ার এক্সপেরিয়েন্স থিকা জিনিসটারে ‘সফিসটিকেটেড’ বইলা দেখেন বা দেখতে পারেন অনেকে; কিন্তু এইভাবে ভাবতে পারাটা ‘কলোনিয়াল হ্যাং-ওভার’রেই ঘটনা আসলে অনেকটা। ভাষার মিল-অমিল অনেক থাকে এইরকম।…

২.
তো, এইভাবে নিজের কথা আমার নিজেরে যে বলা লাগতেছে, এর কারণ এইটা না যে, বাংলাদেশ তেমন ‘ক্রিটিক’ নাই বা তেমন ফ্যান-ফলোয়ার নাই আমার (মানে, আছে – এই দাবি নাই আমার, কিন্তু ২০/২৫ বছর ধইরা চুল কাটার কাজ করলেও কিছু লোকজন তো চিনবেই আপনারে, অইরকম চিন-পরিচয় আছে মনেহয় আমার নামটার) 😛 বরং ‘ভাষা খুব স্বতঃস্ফূর্ত একটা জিনিস’ – এইরকমের ধারণা থিকা বাইর হওয়ার তকলিফটা নিতে আমরা রাজি নাই অনেকেই।

তবে এইরকম অবস্থাটা তো নাই আর এখন পুরাপুরি। অনেকেই ভাষা নিয়া কনশাস হইতে রাজি আছেন বইলা টের পাই আমি। আর এই ফেক্সিবিলিটি’টা জরুরি একটা জিনিস, সবসময়।

[ শব্দ ব্যবহার, ক্রিয়াপদ আর বানাম ভুলের কথা আজকে আর কইলাম না। অইগুলা আরেকদিন! 🙂 ]

Continue reading

নোটস: নভেম্বর, ২০২১ [পার্ট ১]

নভেম্বর ১, ২০২১

এই জিনিসটা ফার্স্ট খেয়াল করছিলাম Dan Ariely’র একটা লেকচারে মনেহয়। উনি একটা এক্মাম্পল দিতেছিলেন কোন স্ক্যান্ডেনেভিয়ার কান্ট্রি’র যে, একটা ফর্মের প্যাটার্ন চেইঞ্জ কইরা কিভাবে হিউম্যান অর্গান ডোটেশন ২০% থিকা ৮০%-এ (মানে, এইরকম একটা জাম্পিং ফিগার) নিয়া যাওয়া গেছিল। ফার্স্টে কোশ্চেনের প্যাটার্নটা মনেহয় না-টাইপের ছিল যে, মরার পরে কোন অর্গান দিতে চান, কেমনে দিতে চান, ডিটেইল বলেন… এইরকম; আর পরের কোশ্চেনটাতে ধইরা নেয়া হইলো যে, আপনি সবকিছুই দিতে চান, কোনটা দিতে চান না – সেইটা বলেন। তো, টেকনিক হইলো, মানুশ এতো ডিটেইলে যাইতে চায় না। তো, এইখানে আমার রিডিং হইতেছে যে, যা আছে, মানুশ-জন সেইটারেই মাইনা নেয় না, বরং যেইটারে আপনি ‘গ্রাউন্ড রিয়ালিটি’ বানায়া দিতে পারেন, তাইলে সেইটা নিয়া কোশ্চেন কম হবে। এইখানে যেমন, ফার্স্টে ছিল ‘কেউ ডোনেট করতেছে না’, পরে সেইখানে গ্রাউন্ড রিয়ালিটি করা হইছে ‘সবাই তো অর্গান ডোনেট করতেছে’। যেমন ধরেন, কাউরে যদি আপনি ‘খারাপ লোক’ বানায়া দিতে পারেন, তাইলে ইর্ম্পটেন্ট কথা কইলেও ধইরা নিতে পারেন, ‘লোক তো খারাপ!’ একইরকম ভাবে, ‘ভালো লোক’ বানায়া দিতে পারলে দেখবেন, ভালো লোক যেহেতু ভালো-কবিতাই তো লেখবে মনেহয়! 🙂 মানে, এইরকম গ্রাউন্ড রিয়ালিটির জিনিসগুলা আছে।

তো, অই জিনিসটা গতকালকে মনে হইলো, আরো দুইটা জিনিস খেয়াল কইরা।

এক হইতেছে, ফেসবুকে যে অপশন আছে, ৫/৬টা রিঅ্যাকশন দেয়ার বা শ’খানেক ইমোজি আছে; অইগুলা দিয়াই আমাদেরকে ফেসবুকে রেসপন্স করতে হয় ব্যাপারটা খালি এইরকম না, বরং যখন আপনি পোস্ট দেয়ার কথা ভাববেন তখন অই ইমোশনগুলার কথাই মাথায় থাকে একভাবে। মানে, অবশ্যই কেউ ভাবেন না যে, একটা এংগ্রি পোস্ট দিবো, একটা লাভ-রিঅ্যাক্টের পোস্ট দিবো, একটা হাহা-রিঅ্যাক্টের পোস্ট দিবো; কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে এই ইমোশনগুলা থাকার কথা একভাবে। এমন জিনিসও পাইবেন যে, দুই-তিনটা রি-অ্যাক্ট দিয়াও জিনিসটারে কাভার করা যাইতেছে না! মানে, তাই বইলা অইটা খুব একসাইটিং জিনিস না (মানে, একসাইটিং তো অবশ্যই); বরং অই ইমোশনাল লুপগুলারে মিলায়া-ঝুলায়া ভাবতে পারার ঘটনাই, তার বাইরে না কখনোই। [এই পোস্ট কি তাইলে ওয়াও-রিঅ্যাক্টের জন্য লেখতেছি আমি 🙂 এইরকম না ভাবলেও, ভাবনাটা চইলা আসে না একভাবে, কিছুটা?]

এইটা খালি ফর্ম দিয়া ভাবতে পারার ঘটনা না, ফর্মের ভিতরে নিজের চিন্তাগুলারে আটায়া ফেলতে পারার একটা ঘটনা। এখন ফর্মগুলা তো আছে সবসময়, শব্দগুলা দিয়াই আমাদেরকে চিন্তা করতে পারতে হয়, কিন্তু এর ভিতরে আটায়া ফেলতে হবে – এইটা যে একটা অবস্টেকল বা বাধা, এইটারে রিকগনাইজ করতে পারাটা দরকার।

এই জায়গায় আসে থার্ড ঘটনা’টা। গতকালকে একটা কবিতা লেইখা নাম দিছি প্যাস্টোরাল (Pastoral) লাইফ। লেখছি কিছুদিন আগেই, কিন্তু ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার আগে ভাবতেছিলাম, ডিকশনারি মিনিং’টা কি দেখি একটু। এমনিতে একটা মিনিং তো জানি-ই, পেইন্টিং-টেইন্টিং দেখছি, বাংলায় যারে বলে, যাযাবর জীবন টাইপের জিনিস, পশু-পালনের দিন…। কিন্তু গুগুল ট্রান্সলেটরে দেখতে গিয়া মোটামুটি ভয় পায়া গেলাম। আমারে দেখাইতেছে, যাজক জীবন! আরে ভাই, না হয় গত কয়দিন থিওলজির কিছু জিনিস নিয়া নাড়াচাড়া করছি, তাই বইলা ধর্মতত্ত্বের জায়গা থিকা আমারে বাইর হইতে দিবে না! এবং আর কোন অপশনাল মিনিংও নাই, এইরকমের একুরেট!

এই জায়গাতে শব্দের মিনিং নিয়া পুরান কথাগুলা মনে হইলো আবার। ডিকশনারিতে যেইরকম প্রসেসে এন্ট্রি দেয়া হয়, যে এর একটা বা ৪/৫টা মিনিং আছে; অথচ ব্যাপারটা তো এইরকম না। শব্দেরও জন্ম-মৃত্যু আছে তো, এবং জায়গা অনুযায়ী ডিফরেন্ট মিনিং। যেমন ধরেন, কুয়া শব্দটা, একটা সময় খুবই ইউজ হওয়ার কথা, যখন গ্রামে-গঞ্চে, প্রতিটা পাড়াতেই একটা কুয়া থাকাই লাগতো; শব্দ হিসাবে আমার ধারণা, ১৯৫০ সালের পর থিকা মরতে শুরু করছে, চাপকল আসার পর থিকা (টাইমলাইন ভুল হইতে পারে); কিন্তু এখনো বাঁইচা আছে। একশ বছর পরে মারা যাবে কিনা বা নতুন কইরা বাঁইচা উঠবে কিনা ডিপেন্ড করে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উপর। কিন্তু ‘উদকুম্ভ’ জিনিসটা কখনো বাংলা-ভাষায় ছিল কিনা আমার সন্দেহ আছে, কলোনিয়াল আমলে সংস্কৃত পন্ডিতরা মেবি এই শব্দটা বাংলা ডিকশনারিতে ঢুকায়া দিছেন। [মানে, সন্দেহই, ফ্যাক্ট হিসাবে জানি না।] এইরকম ‘ডিকশনারি শব্দগুলারে’ আমাদের বাদ দিতে হবে।

আবার ইউজের কারণেই দেখবেন, মিনিং পাল্টায়া যাইতেছে। ইংরেজিতে নেট বলতে মাছ-ধরার জালই বুঝতাম আমরা, আলাদা কইরা ফিশ-নেট বলা লাগতো না, কিন্তু এখন নেট কইলে ইন্টারনেটই বুঝবো আমরা। ‘মেইল করছি তো’ কইলে ইমেইলই বুঝবো, কুরিয়ারে/ডাকে পাঠানো চিঠি না। বাল বলতে হিন্দি’তে চুল, বাংলাতে গাইল; এমনকি ‘বিশ্রী’ কিছু থিকা ‘বিরক্তিকর’ কিছুতেও কনভার্ট হওয়ার কথা এখন।…
এইরকম শব্দের ব্যাপারে আমি বলতে চাই, ফিক্সড কোন মিনিং নাই – এইটা তো আছেই; তাই বইলা কোন মিনিং নাই – এই এক্সটেন্ড পর্যন্ত যাওয়ারও দরকার পড়ে না। একটা শব্দের শুরু যদি ১৭০০ সালে হয়, ১৮০০ সালে আইসা সেইটা চেইঞ্জ হইছে কিনা, ১৯০০, ২০০০-এ এর ইউজ আছে কিনা – এইরকম টাইমের বেসিসে দেখতে পারা দরকার। নিশ্চিতভাবেই ১০/২০ হাজার শব্দ পাওয়া যাবে, যার মিনিংয়ে হয়তো তেমন কোন চেইঞ্জ হয় নাই। আবার, ২০/৩০ হাজার শব্দ হয়তো পাওয়া যাবে জন্মাইছে আর মারাও গেছে। গড়ে বছরে দেখা যাবে ৫/৭ হাজার শব্দ জড়োও হইতেছে। এইরকম ঘটনাগুলা এইখানে আছে।

অথচ ভাষা, শব্দ, মিনিংয়’রে আমরা বুঝতে চাইতেছি ডিকশনারি টাইপ কন্সটেন্ট একটা প্যারামিটার দিয়া! এইটা খালি সমস্যার ঘটনাই না, একটা অবস্টেকলও, গ্রাউন্ডগুলারে খেয়াল করাটা। এইটা খালি ভাষার লিমিটেশন না। অন্য চিন্তাগুলার জায়গাতেও এইটা কাজ করে। ইকনোমিকসে ধরেন, জিডিপি গ্রোথ, ফরেন-ডাইরেক্ট-ইনভেস্টমেন্ট, এইসব হাবিজাবি জিনিসগুলা যে আসলেই হাবিজাবি টাইপের জিনিস, এইটা যে আমরা মানতে পারি না, মোটামুটি এইরকম কন্সট্যান্ট চিন্তারই একটা রেজাল্ট। মানে, এই এক্সটেন্ড পর্যন্ত আমি ভাবতে চাই।…

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২১ [পার্ট ৩]

অক্টোবর ২১, ২০২১

কয়দিন আগে বলছিলাম, নয়া বাকশাল টিইকা থাকে, অপারেট করে একটা ‘গৃহপালিত বিরোধীদল’, বি-টিম বা কিংস পার্টিগুলা দিয়া ‘প্রতিবাদ’ করানোর ভিতর দিয়া। (পোস্ট’টা পাইলে কমেন্টে লিংক দিতেছি, পরে।)

এই কারণে আমরা যারা ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ চাই, আমাদের কাজ কোনটা ‘অরিজিনাল’ বিরোধীদল সেই সার্টিফিকেট দেয়া না; বরং যে কোন পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ, যেইটা বাকশালি জুলুমরে আন-কোশ্চেনড রাখে, ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দেয়, তার একক ক্ষমতার জায়গাটারে শক্তিশালী কইরা তুলতে থাকে, সেইসব জায়গাগুলারে লোকেট করা।

আর আমি মনে করি, এই কাজ কাউরে পারসোনালি শয়তান বানায়া (যেইটা আসলে বাকশালি তরিকা), গালি-গালাজ কইরা, পুপলারিটির জায়গা থিকা করা যাবে না। (ব্যাপারটা নরম-কোমল সাপের মতন ‘অহিংস’ হওয়ার ঘটনা না।…)

নন-ইমোশনাল বা নন-এনগেইজিং কোন ঘটনা না, ফ্যাশনেবল একসাইটিং কোন বিপ্লব করা না, বরং খুবই ফোকাসড, একটানা (অনেকটা একজন রাইটারের লেখতে থাকার মতো), বোরিং পলিটিক্যাল একটা কাজ।

(আরেকটা জিনিস হইতেছে, কন্সপিরেসি থিওরি যদি সত্যিও হয় সেইটা কন্সপিরেসি থিওরি-ই, পলিটিক্স না – এই সত্যি কথাটাও আমাদেরকে বুঝতে পারতে হবে। যে কোন রাজনৈতিক চিন্তা পিপল’রে এর সেন্টার পয়েন্ট কইরা তুলতে পারে না, সেইটা পলিটিক্স হয়া উঠতে পারে না। দিনের পর দিন পলিটিক্সরে যে আমরা কন্সপিরেসি থিওরির ভিতরে রিডিউস কইরা আসতেছি, আজকের রাজনীতি-শূন্যতা অই ইন্টেলেকচুয়ালিটিরও রেজাল্ট একটা।…)

#########

এনজিও কি ভালো? এই নিয়া কিছু কনফিউশন আছে। উত্তরগুলাও আমার ধারণা মিডল-গ্রাউন্ডেই আসে বেশিরভাগ সময়। যে, গরিবের রক্ত শুইষা খায়, ঘরবাড়ির টিনের চাল খুইলা নিয়া যায় এর এগেনেস্টে না, ইকনোমিক কন্ট্রিবিউশন তো কিছু আছেই। বা এনজিও না থাকলে হিউম্যান ওয়েলফেয়ার, বেসিক হেলথকেয়ার এতদূর পর্যন্ত আগাইতে পারতো না। মেয়েদেরকে নিয়া বাড়াবাড়ি ভার্সেস উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট তর্ক থাকলেও ইস্যু হিসাবে আলাপের জিনিস হয়া উঠতে পারতো না এতোটা। এইরকমের একটা অবস্থা।

তো, এইরকমের জায়গা থিকা দেখাটা হইতেছে ইমপ্যাক্টের বেসিসে এক্ট’রে সার্পোট করা বা না-করা। (এইখানে চায়নার আফিমের কথা মনে হইলো ১৮’শ শতকের; যে ট্যাক্স তো আইতেছে, লিগালাইজ করতে কি সমস্যা!) তো, এইটা একটা বিচার অবশ্যই, কিন্তু এইটাই একমাত্র বিচার হইতে পারে না।

বাংলাদেশে এনজিও’র পলিটিক্যাল কন্ট্রিবিউশন হইতেছে, যে কোন সোশ্যাল কজ’রে তার পলিটিক্যাল রুট থিকা বিচ্ছিন্ন করতে পারা। ধরেন, লোকজন খাইতে পাইতেছেন না, এইটার প্রাইমারি সমস্যা হইতেছে কি খাইতে হবে লোকজন তো সেইটাই জানে না! বা লোকজন গরিব, আল্ট্রা-পুওর, তার মানে সমাজের ইকনোমিক্যাল এক্টিভিটিগুলার লগে তাদের তো কোস কানেকশন নাই! এইরকম।

মানে, জিনিসগুলা যে সত্যি না – তা না, বরং সমস্যার নন-পলিটিক্যাল আসপেক্টগুলা নিয়া উনারা কাজ করেন – এইটা বললেও আসলে জায়গাটারে ভুলভাবেই বলা হবে; উনারা পলিটিক্যাল কজ’গুলারে আন্ডারমাইন করেন, লুকায়া ফেলেন, সময়ে সময়ে টাকা-পয়সা দিয়া চাপায়া রাখেন, যেন কোন পলিটিক্যাল কনশাসনেস তৈরি হইতে না পারে। এইটারে এই কারণে ‘এনজিওপণা’ বলি আমরা।

মানে, সোশ্যাল স্পেইসটারে মোর অ্যান্ড মোর নন-পলিটিক্যাল কইরা তোলা এনজিও’দের মোস্ট সিগনিফিকেন্ট একটা কাজ। যেইটা উইথাউট এনি মিডল গ্রাউন্ড আমাদের বলতে পারা দরকার যে, এইটা খারাপ কাজ।

গর্ভমেন্টেরও ডর দেখবেন এই জায়গাটাতেই যে, এনজিওগুলা আবার পলিটিক্যাল কাজকাম না শুরু কইরা দেয়! এই কারণে সবসময় একটা চাপের উপ্রে রাখে। এনজিও’রা সাবধান থাকে। একটা মিচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জায়গা থিকা জিনিসটা এফেক্টিভ থাকতে পারে।…

এখন এর যে ইমপ্যাক্ট হইছে, যেকোন সোশ্যাল-ওয়েলফেয়ার’রে নন-পলিটিক্যাল এবং এনজিও’র কাজ বইলা মনে হইতে থাকে আমাদের। মানে, কোন সামাজিক কাজকামে পার্টিসিপেট করা না, বরং ক্ষমতার জায়গাটা নিয়া কাড়াকাড়ি করাই যে পলিটিক্সের কাজ – এই জিনিসটারে সাকসেসফুললি এস্টাবলিশ করা গেছে, এনজিও-ওয়ার্কগুলার ভিতর দিয়া।

আওয়ামীলীগ-বিএনপি মিইলা, মানে, স্থানীয় পলিটিক্যাল লোকজনের ‘নেতৃত্বে এবং ঐকমত্যের’ বেসিসে পুকুরের কচুরিপণা সাফ করা হইতেছে, এইরকম জিনিস আমরা দেখছি। এখন এই পলিটিক্যাল-কালচার সমাজে নাই না, বরং ধ্বংস যে করা হইছে সেইখানে বাকশালি রাজনীতির বাইরে ‘এনজিও-গিরি’ করার একটা ধারণাও এফেক্টিভ আছে বইলা আমার মনেহয়।

অথচ পলিটিক্যালি সমাজ-সংগঠনগুলারে মোটামুটি কবর দেয়ার যেই ঘটনাটা বাংলাদেশে ঘটছে, সেইটাই হইতেছে: এনজিও-ওয়ার্ক। এই জিনিসটা নিয়া পলিটিক্যাল জায়গাগুলাতেও আলাপ-টালাপ মনেহয় কমই অনেক। ইনিশিয়াল ফেইজে কিছু কথাবার্তা হইলেও এখন মনেহয় আমরা মাইনা নিতে পারছি যে, ব্যাপারগুলা তো এইরকমই। 🙂
Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২১ [পার্ট ২]

অক্টোবর ১১, ২০২১

কথা দিয়া আর কয়টা কথা বলা যায়! আমাদের কথা নিরবতা দিয়াই বলতে হয়। এই কারণে দেখবেন, নিরবতার জায়গাগুলারে ম্যানিপুলেট করা হয় সবসময়।

যে, কই পাবলিক তো মাইনা নিতেছে, দুয়েকজন ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বাদে জিনিসপত্রের দাম যে বাড়ছে এই নিয়া তো কেউ কথা কইতেছে না! মানে, কথা-কওয়ার যে কোন অবস্থা নাই, অই নিরবতাটারে এক্সপ্লেইন করা হইতেছে – মাইনা নেয়া!

পারসোনাল লাইফ থিকা শুরু কইরা পাবলিক হিস্ট্রিতে এইরকম বহুত ঘটনা আছে, যেইখানে ট্রুথরে নিরবতার ভিতরে ঠেইলা দেয়া হইছে, হইতেছে। যেমন তুরস্কে, ১০ লাখ আর্মেনিয়দের খুন করছিল টার্কিশরা, অইটা নিয়া পাবলিকলি কথা বলা নিষেধ। মানে, এইরকম কোন আইন নাই যে কথা বলা যাবে না, কিন্তু কথা না-বলাটা হইতেছে ‘নিয়ম’।

খালি নিরবতারে এক্সপ্লেইন করা না, আপনার কথারেও নিরবতার মতন একটা ঘটনা বানায়া দেয়া হয়; যে, রিপ্রেজেন্টেটিভ বা যার-কথার-দাম আছে, এইরকম কেউ তো কথা বলে নাই!

তো, যারা নিরবতারে ব্যাখ্যা করতেছেন, তাদেরও টের পাওয়ার কথা যে, নিরবতাগুলা কথা হয়া উঠতে পারতেছে না বইলাই বাতিল হয়া যাইতেছে না, বরং নিরবতাটা আরো ছড়ায়া পড়তেছে।… যে কোন কথার মানে তার নিরবতাগুলার ভিতর দিয়া বুঝতে পারতে হবে আমাদেরকে।

#########

বিকল্প ২

কোনকিছুর বিকল্প নাই বইলাই সেই জিনিসটা টিইকা থাকে না।

বাংলাদেশে যখন সাহিত্য পত্রিকাগুলা, দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য সাপ্তাহিক সাময়িকীগুলা একেকটা ট্রাশ হয়া উঠতেছিল, দলবাজি’র আখড়া হয়া উঠছিল তখন অনলাইনে লেখালেখি করার/ছাপানোর স্কোপগুলা ছিল না।

তারপরে, কমিউনিটি ব্লগগুলা (স্পেশালি সামহোয়ারইনব্লগ) ফেসবুক আসছে বইলা ইন-এফেক্টিভ হয় নাই, এর আগেই মোটামুটি বাতিল হইতে পারতেছিল, এর ইমপ্যাক্টসহ। একইরকমভাবে, ফেসবুক/ইউটিউব আসছে বইলা টিভি-নিউজপেপার বাতিল হয়া যাইতেছে না, বরং তারা নিজেদের গোলামির জায়গা থিকা বাইর হইতে পারতেছে না। (কোনকিছুই একবারে হারায়া যায় না, ফর্ম হিসাবে ইরিলিভেন্ট হইতে থাকে, ধীরে ধীরে।)

এখন আমরা বুঝতেছি, ফেসবুকও তার এলগারিদম দিয়া যেমনে আমাদের নিউজফিড কন্ট্রোল করতেছে, যেই রিয়ালিটির ফান্দে ফেলতে চাইতেছে, সেইটার ভিতর আটকায়া থাকা যাবে না।

তার মানে এইটা না যে, একটা বিকল্প’র জন্য ওয়েট করতেছি আমরা; বরং এর ভিতর দিয়াই ‘বিকল্প’র জায়গাগুলা এমার্জ করবে। সবসময় এইরকমটাই হইছে। মানুশ তার কথা-বলার জন্য মোর ফ্রিডমের জায়গাগুলাতে শিফট করবে। তৈরি করার ট্রাই করবে।

কিন্তু কোন কিছুই আগের জায়গাতে ফিরা যাবে না।

কোন ‘বিকল্প’ আইসাও আমাদেরকে উদ্ধার কইরা ফেলবে না। বরং এই রিয়ালিটি’রে যে মানতে রাজি হইতেছি না, সেইটা ‘বিকল্প’র জায়গাগুলারে তৈরি করতে থাকবে। মানে, এইরকমই হয়া আসছে বইলা আমি মনে করি।…

Continue reading