নভেম্বর ২১, ২০২১
এক্ট অ্যাজ অ্যান মোরাল ক্যাটাগরি
একজন মানুশ কি অন্য আরেকজন মানুশের জন্য ভালো করতে পারে না? এই পোশ্ন আসছিল আমার মনে। আমার মনে হইছে, টাফ এইটা; নিজের ভালো’র কথা না ভাইবা অন্যের ভালো করাটা, সম্ভব এইটা, কিন্তু রেয়ারই হওয়ার কথা। এইটা গ্রেটনেসের একটা কাজ। এখন আমরা সেলফ-ইন্টারেস্ট বাদ দিয়া গ্রেট হইতে পারি না – তা না; কিন্তু এইটা এক্সপেক্ট করাটা ঠিক হবে না, এমনকি নিজের ব্যাপারেও ক্রিটিক্যাল থাকাটা বেটার। আমরা বেস্ট যেইটা করতে পারি সেইটা হইতেছে, অন্যের ক্ষতি না করা।
মানে, কোন কাজ করতে গেলে যদি অন্যের ক্ষতি হয়, নিজেরও ক্ষতি হয় – সেই কাজ যে করি না আমরা – তা না; একদম ডেসপারেট হইলে করি, পরে যদিও আফসোস করা লাগে, আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি, না করলেই ভালো। (এক ধরণের মানুশ আছেন, অন্যের ক্ষতি কইরা আনন্দ পান, উনাদের কথা বাদ দিয়াই বলতেছি। অইটা এক ধরণের রোগ বা অসুখ হিসাবে ভাবতে পারাটা বেটার।) সেকেন্ড জিনিস হইলো, যেই কাজ করলে অন্যের ক্ষতি হয়, কিন্তু নিজের লাভ হয় – সেই কাজ না-করতে নিজেরে রাজি করানোটা দরকার বেশি। আর অই কাজই বেশি বেশি বেশি করতে থাকা যেইটা নিজের এবং অন্যদের জন্য ভালো। এইটা হইতেছে থার্ড এক্ট। এই সেকেন্ড এবং থার্ড এক্ট যিনি করতে পারেন, তারেই আমি ভালো-মানুশ বলতে চাই। এর পরে হইতেছে আসলে, (নিজের ভালো-খারাপ না ভাইবাও) অন্যের জন্য ভালো করা। আগের তিনটা কাজ না খেয়াল করতে পারলে এই ৪ নাম্বার কাজটা খুব একটা করতে পারার কথা না আমাদের। (জেনারেল রুল হিসাবেই বলতেছি।)
তবে আমাদের যে কোন কাজই রিলেটিভ একটা জিনিস, absolute কিছু না। আমি কারো কথা না ভাইবা করলেও যে কোন কাজ একটা কনটেক্সটে, টাইম ও স্পেইসের ভিতরেই এক্ট হয়া উঠতেছে, সবসময়। এই রিলেশনটারে খেয়াল করতে রাজি হইতে হবে আসলে সবচে আগে।
#########
বাংলাদেশের এখনকার রাজনৈতিক ঘটনাগুলার অবজারভার হিসাবে আমার পলিটিক্যাল পরস্তাব তিনটা। দুইটা কাজ করতে হবে, আর একটা কাজ করা যাবে না।
বেশ কয়েকবারই বলছি, নয়া বাকশাল কোন পলিটিক্যাল ফোর্সের লগেই নেগোশিয়েশন করতে রাজি না; সিভিল ওয়ার বাঁধায়া দিবে, মিলিটারি বা নন-পলিটিক্যাল ফোর্সগুলার কাছে পাওয়ার হ্যান্ড-ওভার করবে, কিন্তু কোন পলিটিক্যাল পার্টি (পড়েন, বিএনপি’র) লগে আলাপ করবে না।
উনাদের সবচে বেশি ডর হইতেছে যে কোন পলিটিক্যাল এন্টিটি’রে, এমনকি যে কোন পারসনরেও, যে (পলিটিক্যাল এনালাইসিস না, বরং) পলিটিক্যালি এক্ট করতে চায়। এই কারণে, এক নাম্বার কাজ হইতেছে, পলিটিক্যাল কাজকাম করতে পারা। ইজি না এইটা অবশ্যই। 🙁 (বাম-বাটপারদের মতো বিপ্লব না চুদানো। এর বাকশালের ডামি-বিরোধিতার ভিতর দিয়া এরে আসলে টিকায় রাখার রাস্তা-ই তৈরি করে।)
সোশ্যাল ইস্যুগুলাতে পলিটিক্যাল কনশাসনেস জারি রাখা। নিরাপদ সড়ক মুভমেন্ট বা কোটা-মুভমেন্টের সময় ডরানির ব্যাপারগুলা ভাইবেন। কোনটাই গর্ভমেন্ট ফালায়া দেয়ার মুভমেন্ট ছিল না, তারপরও ব্যাপক ডরাইছিল বাকশালি-লোকজন; কারণ এরা পলিটিক্যালি নেগোশিয়েট করতে রাজি না। নেগোশিয়েশন করলে ক্ষমতার দেমাগ থাকে না। অই দেমাগটা হইতেছে কোর।
আমি মনে করি যে কোন সোশ্যাল ও ইকনোমিক ইস্যুতে (স্টুডেন্টদের হাফ-পাস, ডিজেলের দাম, পুলিশি রিমান্ড…) পলিটিক্যাল মুভমেন্ট করা দরকার। যে কোন ইনসাফের কথা শুনতে যে এরা রাজি না, একটা অবৈধ সরকারের পক্ষে যে পিপলের ডিমান্ড নজরে নেয়ারই দরকার পড়ে না, এইটা বারবার স্পষ্ট করা দরকার।
যে বটগাছ (পড়েন, পাবলিকের গর্ভমেন্ট হইলে), সে নুইতে ডরায় না; কারণ সে জানে তার শেকড় মাটির অনেক ভিতরে (পড়েন, পাবলিক সার্পোট আছে তার)। কিন্তু যেই গাছের গোড়া নরোম, সেইটা একটু নুইলেই উপড়ায়া পড়ার ডরে থাকে সবসময়।
সেকেন্ড হইতেছে, নয়া বাকশালের ন্যারেটিভ বা বানানো ক্যাটাগরিগুলার ট্রাপে না-পড়া।
যেমন অন্যতম একটা ক্যাটাগরি হইতেছে: নারীবাদ ভার্সেস ইসলাম। এখন এই দুইটার মধ্যে যে বিরোধ নাই তা তো না, কিন্তু ‘ইসলামের’ মূল শত্রু যেমন ‘নারী-অধিকার’ না, একইভাবে ‘নারী-অধিকার’র মেইন অবস্টেকল ‘ইসলাম’ না; বরং দুইটা জায়গাতে জুলুমের মেইন কারিগর হইতেছে নয়া বাকশাল।
গত মার্চ মাসে মাদরাসার স্টুডেন্টদেরকে ‘নারীবাদী’রা (চুপ কইরা থাকলেও, বিরোধিতা না করলেও) খুন করে নাই। বাংলাদেশে ক্ষমতার দাপট দেখায়া যত রেইপ হয় সেইটা মাদরাসায় পড়াশোনা করার কারণে কেউ করে নাই, বরং ছাত্রলীগের নাম দিয়াই করা হইছে, হইতেছে বেশি।
আমি বলতে চাইতেছি নয়া বাকশাল ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ‘নারী-অধিকার’ ও ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ নাম দিয়া যেইসব আকাম-কুকাম করে তারে স্পষ্ট করা দরকার পলিটিক্যাল ও সোশ্যাল এক্টিভিটিসের ভিতর দিয়া।
যেমন ধরেন, মসজিদে মেয়েরা নামাজ পড়া শুরু করছিলেন মাঝখানে, এইটা একটা ভালো ইনিশিয়েটিভ ছিল। মানে, এতে কইরা ‘নারী-অধিকার’ প্রতিষ্ঠা হয়া যাবে না, কিন্তু সোশ্যালি একটা ইনক্লুসিভনেসের শুরুয়াত পসিবল। একইভাবে, ইসলাম’রে ১০টা গাইল দেয়ার সময় যদি যদি ‘মূক ও বধির’ না থাইকা ‘সেক্যুলার নারীবাদীরা’ অবৈধ সরকারের ২টা ক্রিটিকও করতে পারেন; তখন এই সিউডো ক্যাটাগরিটার বেনিফিট জুলুমের ফেভারে যাওয়ার কথা না। একটা জুলুমের শাসন যে সবারই দুশমন – এই বুঝ’টা সবসময় সবারই থাকা দরকার। (আরো ক্যাটাগরি আছে এইরকম, ফাঁপা এবং বানানো; যেমন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বিরোধীরা, মানে হাস্যকর, এইগুলা, এখন বুঝতে পারেন তো মোটামুটি সবাই। তো, এইরকম ক্যাটাগরিগুলার মেইন কাজই হইতেছে জুলুমের জায়গাটারে সরায়া ফেলা।) এইরকম সিউডো ‘দ্বান্দ্বিকতা’গুলারে (বালের বাংলা আমার) ভোঁতা কইরা দিতে হবে, আমাদের কাজকামের ভিতর দিয়া। এইটা সেকেন্ড কাজ।
থার্ড এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্ট জিনিস হইতেছে, দুনিয়াতে কোন জালিম-ই শোধরায় নাই, নিজে নিজে জুলুম করা বন্ধ করে নাই। ইতিহাসে কখনো এই ঘটনা ঘটে নাই। সো, জালিমের ও জুলুমের পাপেটদের মুখের কথা বিশ্বাস কইরেন না। অইটা হবে একটা ক্রাইম।
জুলুম কোনদিন নিজে থিকা শেষ হয় না। এর শেষ করতে হয়। একটা রিভেঞ্জের রাজনীতির শেষ আরেকটা রিভেঞ্জ দিয়া করলে একই গর্তেই পড়বো আমরা। বরং আর কোন রিভেঞ্জের রাজনীতি যেন বাংলাদেশে শুরু না হইতে পারে, সেইটা এনশিওর করা লাগবে। খালি কথা দিয়া না, পলিটিক্যাল এক্টিভিটির ভিতর দিয়া সেই রাস্তাটা বানাইতে হবে আমাদেরকে। যেন বাংলাদেশে বাকশাল নতুন চেহারা নিয়া আর কোনদিন ফিরা না আসতে পারে।
Continue reading