০২.০৯.২৩
শহরের মধ্যে এইসব ফ্লাইওভার, ওভার-পাস, আন্ডার-পাস, মেট্রো-রেল, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর পারপাস তো মোটাদাগে দুইটা –
১. মেগা প্রজেক্ট বা “উন্নয়ন” না থাকলে লুটপাট করবো কই থিকা!
২. এইসব স্ট্রাকচার দেখলে, ছবি তুললে তো ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগবে তখন দেশটারে! এই ইমেজের লোভ’টাও একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা।
কিন্তু এই ‘উন্নয়ন’-এ কি লাভ হইলো? ঢাকা শহরে কি ট্রাফিক জ্যাম কমছে কোথাও? বরং তো বাড়ছে আরো। কারণ ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্যও এইসব স্ট্রাকচার বানানো হয় নাই, বানানো হইছে লুটপাট করার জন্য, আর দেখতে যাতে ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগে; আর এই পারপাস-ই সার্ভ করে এই জিনিসগুলা।
শর্ট-টার্মে তো ব্যাপক লস প্রজেক্টই, লং-টার্মেও ‘এই হবে, সেই হবে’ আলাপ দিলেও আল্টিমেটলি তেমন কিছুই হয় না। হিস্ট্রিতে খেয়াল করলে দেখবেন, যে কোন জুলুমের বা ফেসিজমের মেগা-স্ট্রাকচার ফেটিশ আছে; এই এক্সপ্রেস ওয়ে বা মেগা-প্রজেক্টগুলা অই ফেটিশেরই নমুনা আসলে একেকটা।
…
ব্যাটারি রিকশার রেভিউলেশন
দুই-একমাস আগে গুলশান দুই-এর সার্কেল থিকা এম্রিকান এম্বেসি/নতুন বাজার যাওয়ার দিকে দেখি রিকশা দাঁড়ায়া আছে কয়েকটা। জিগাইলাম, যাইতে পারবেন এই রাস্তায়? (মানে, ট্রাফিক পুলিশ কি যাইতে দিবে?) রিকশার ড্রাইভার ইয়াং, একটু হাইসা দিয়া কইলো, উঠেন না! সাথে জিগাইলো, একলাই যাইবেন? মানে, বুঝলাম যে, বেশিরভাগ পেসেঞ্জার শেয়ারে-ই যান। এই অল্প একটু রাস্তার রিকশা ভাড়া ৪০ টাকা। শেয়ারে গেলে ২০ টাকা কইরা দিলে আসলে পোষায়া যায়। আর সিট যেহেতু আছে দুইজনে বসার, একসাথে গেলে তো কোন সমস্যা নাই। একটা ওয়েব-সিরিজ যদি বানায়া ফেলা যায় রিকশা শেয়ারিংয়ের, “কাছে আসার গল্প” নামে, তাইলে “জেন্ডার ইকুয়ালিটি”-ও এচিভ কইরা পসিবল হইতে পারে!
মানে, “শেয়ারি ইজ কেয়ারিং” তো আছেই, কিন্তু রিকশা-ভাড়া যেই পরিমাণ বাড়ছে, রিকশা-শেয়ারিং’টা জাস্ট মিডল-ক্লাসের “ভীরু মনের” জন্য শুরু হইতে পারতেছে না আসলে। আরেকটু “উন্নয়ন” হইলেই এইটা শুরু হয়া যাইতে পারবে আশা করি।
২.
মিরপুর ১০ নাম্বার সার্কেলের পরে দেখলাম চিপা-চাপায় ব্যাটারি-রিকশা চালু হয়া গেছে! রাতের বেলা বেশ কয়টা দেখলাম রাস্তায়। “বিপ্লবীদের” মতো ঘুইরা বেড়াইতেছে। ব্যাটারি-রিকশা আসলে ভালো। অইখানে শেয়ারিং নিয়া কোন সমস্যাই নাই। দুই-চাইরজন ইজিলি বইসা যাওয়া যাইতেছে। ওয়েট করারও কিছু নাই। দুই-চাইর মিনিট দাঁড়াইলে কিছু প্যাসেঞ্জার পাওয়াই যায়।
ঢাকার বাইরে, জেলা ও উপজেলা সদরগুলাতে এই “সাম্যবাদী বিপ্লব” এখন রিয়ালিটি’তে পরিণত হইছে। সব হাইওয়েগুলাতে সার্ভিস রোড চালু করলে আমার ধারণা এই রেভিউলেশন সারাদেশে ছড়ায়া যাবে। এখনই ছড়ায়া গেছে, কিন্তু রোড একসিডেন্টের সব দোষ সার্ভিস-রোড না থাকার উপ্রে না চাপায়া ব্যাটারি রিকশার উপ্রে চাপানো হইতেছে বইলা এখনো একটা না-রাজি এন্টি-পিপল নিউজ-মিডিয়া স্প্রেড করতেছে। কিন্তু এই “বিপ্লব” বেশিদিন দমায়া রাখা যাবে বইলা মনেহয় না।
৩.
এতোসব ফ্লাই-ওভার, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর একটা কারণ আসলে যাতে প্রাইভেট কারওলাদেরকে রাস্তায় রিকশার গরিবি দেখতে না হয়! কিন্তু ব্যাটারি-রিকশার বিপ্লব, আমি আশা করি, ফ্লাইওভারগুলা দখল না করতে পারলেও অই জিনিসগুলারে ইন-ভ্যালিড কইরা দিতে পারবে একদিন। এইটা সেইদিনই হইতে পারবে, যেইদিন গরিব’রে ভালোবাসতে পারবো না আমরা, বরং ভালোবাসা জিনিসটারে এতোটা ‘গরিব’ মনে হবে না আমাদের।
…
সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
ব্যাপারটা এইরকম না যে নিউইয়র্ক টাইমস বলার আগে ঘটনাগুলা ঘটে নাই, বরং বাংলাদেশি গোয়েবলস পিআলো, ডিস্টার যে দিনের পর দিন এই সত্যি-কথাগুলারে গোপন কইরা যাইতেছে, সেইটা এখনো খেয়াল করতে আমরা নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না!
মানে, এই ঘটনা তো বাংলাদেশে ঘটতেছে অনেক দিন ধইরাই; কিন্তু এই জিনিসগুলারে দেখা হইতেছে, বলা হইতেছে, কালার কইরা দেয়া হইতেছে – “বিএনপির অভিযোগ” হিসাবে। এখনো এই নেরেটিভ খুব ভালোভাবেই চালু আছে।
দুনিয়াতে কোন হিটলারই গোয়েবলস ছাড়া সারভাইব করতে পারে না। বাম-আওমি বাকশালিদের গোয়েবলস হইতেছে পিআলো আর ডিস্টার।
…
০৪.০৯.২০২৩
ভদ্রলোকেরা নিজেদের সমস্যারে সমাজের সমস্যা, নিজেদের উন্নতিরে সমাজের উন্নতি, এমনকি নিজেদের রুচিরেই সমাজের রুচি হিসাবে ভাবতে পছন্দ করেন; খালি ভাবতে পছন্দ করলেও কোন সমস্যা ছিল না, এইটারে একটা ‘সার্বজনীন’ এবং ‘অবশ্যই পালনীয়’ একটা শর্ত হিসাবে এস্টাবলিশ করেন; এবং এর থিকা যে কোন বাল (চুল) পরিমাণ বিচ্যুতি’রে ‘সামাজিক অবক্ষয়’ হিসাবে দাবি কইরা ‘সমালোচনা’ ও ‘সাহিত্য’ রচনা করতে থাকেন।
#কালচারালপাওয়ার #ড্রাফট
Continue reading