নোটস: জুলাই, ২০২৩

জুলাই ০১, ২০২৩

Break Point

১. ঈদের ছুটিতে Break Point’র ১০টা এপিসোড দেইখা শেষ করলাম। স্পোর্টস ডকুমেন্টারি হিসাবে ভালো হইছে জিনিসটা। টেনিসের কয়েকটা গ্যান্ড স্লাম ট্রফি নিয়া বানানো।

২. নরমালি যেইরকম হয়, স্পোর্টস ডকু-তে তো কোন না নো হিরো’রে হাইলাইট করা হয়। এইখানে ঘটনা এইরকম না; মানে, হিরো আছে, হিরোজম-ও আছে; কিন্তু ফেইলওরও আছে। অনেকটা যেন অডিয়েন্স’স পিক; একজনরে ফলো করতে থাকলেন টুর্নামেন্টের শুরুতে, কিন্তু দেখা গেলো সে/শে জিততে পারলো না, শেষে। জয়-পরাজয় না, ইভেন্টস হইতেছে গিয়া সেন্টার ঘটনা।

৩. মাল্টিপল প্লেয়ার আছে এইখানে; বেশিরভাগই টপ টেনের লোকজন; কিন্তু সবাই গ্রেট না। গ্রেট এবং এভারেজের ডিফরেন্সটাও আসলে টের পাওয়া যাইতেছে। যেমন, আমার ভাল্লাগছে Iga Świątek’রে। ফানি, উইটি এবং কম্পোজড বইলা না, এইটা হইতেছে নরমালিটি একটা তাঁর কাছে, এইরকম গ্রেট হওয়াটা। অন্যরা, অনেকেই নরমাল হিসাবে, ইন্টারনাল অবস্থা হিসাবে নিতে পারতেছে না! যেন এইটা বাইরের একটা জিনিস, যা এচিভ করা লাগবে! আর ইগা’র ঘটনাটা হইতেছে ইন্টারনাল; আমার ভিতরে তো আছে জায়গা’টা, অইখানে থাকতে পারতে হবে। আর অন্যরা, অনেকেই অই জায়গাটাতে যাওয়ার ট্রাই করতেছে, এইরকম।

৪. টনি নাদালের জায়গাটাও ইন্টারেস্টিং লাগছে। সে ফ্যামিলি’রে ছাড়তে রাজি না! কয়েকটা দামি কথা বলছে সে; যে, আপনি যদি কাউরে রেসপেক্ট না করেন, তার কাছ থিকা তো কিছু শিখতে পারবেন না! আর যদি কারোর দমের/প্রতিভার উপরে যদি আপনার বিশ্বাস না থাকে, তাইলে তো তারে মন থিকা কিছু শিখাইতে পারবেন না। এইরকম খুচরা কাহিনি সব এপিসোডেই কম-বেশি আছে।

৫. কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান নিক কিওরিঅস’রে যতোই জাস্টিফাই করা হোক, ভাল্লাগে নাই। বরং ফিল করা গেছে যে, এন্টারেটেইনিং ইজ ইরিটেটিং আসলে!

৬. ইন্টারেস্টিং লাগছে বেলারুশের Aryna Sabalenka-রেও। পলিটিকাল ক্রাইসিস কেমনে মানুশের পারসোনাল জায়গাটারে এফেক্ট করে, নার্ভাস-ব্রেক ডাউনের একটা কারণ হয়া উঠতে পারে, সেই জিনিসটারে (অবভিয়াসলি পশ্চিমাকরণের জায়গা থিকা) হাইলাইট করলেও জিনিসটারে ডিগ-ডাউন করা হয় নাই আসলে। যেইরকম Ons Jabeur’র কেইসটা ফার্স্ট আফ্রিকান, আরব ওমেন হিসাবে গ্লোরিফাই করা হইতেছে, সেলিব্রেট করা হইতেছে, কিন্তু একইসাথে টেনিস জিনিসটা যে একটা ইউরোপ-আম্রিকান গেইম, এই জায়গাটা ওভারলুক করতে পারাটা এতোটাই ইম্পসিবল যে, এই কারণেই যেন মিসিং!

৭. তবে গ্রেটনেসের জায়গাটাতে একটা সাজেশন কিছুটা চোখে লাগছে, যেইটা ক্রিস এভার্ট-ও বলতেছিলেন Ajla Tomljanović’র ব্যাপারে অনেকটা যে, টুউ মাচ পোলাইটনেস উইল কিল ইউর থিংকস! Taylor Fritz’র ব্যাপারেও ব্যাপারটা ফিল করা যায় অনেকটা যখন সে তার বাচ্চার সাথে আলাপের ব্যাপারে বলে যে, সে তো দুনিয়ার সেরা টেনিস প্লেয়ার না! এইটা তার পোলাইটনেসই এক রকমের। (সে যে কেন হলিউডের হিরো হইলো না 🙂 ) তো, ব্যাপারটা এইরকম না যে, উনারা পোলাইট বইলা গ্রেট না, বরং উনারা সার্টেন এরিয়ারে পুশ করার বাটনটা খুঁইজা পাইতেছে না আসলে।

৮. তো, টেনিসের ভালো-রকম একটা ডিসপ্লে হইছে ডকু’টা। নেরেটিভের ধরণটা লিনিয়ার না হয়া যে নানান দিক থিকা আগাইছে অইটা ভালো হইছে, সাসপেন্স ক্রিয়েট করতে পারছে। (ডকু-তে সাসপেন্স লাগে না বা না হইলেও চলে – এইটা খুবই ভুল-চিন্তা।)

৯. এমনিতে আমি তো ডকু-লাভার। একটা সময়ে যেইরকম খালি গল্প-উপন্যাস ছিল পড়ার বই, নন-ফিকশন ছিল খুবই পাইনশা; সিনেমাতেও আমার ধারণা ডকুমেন্টারি অই অবস্থাটাতে আছে এখনো; কিন্তু আরো অনেক ভাস্ট এরিয়া এক্সপ্লোর করার বাকি আছে আসলে, এইখানে। Continue reading

নোটস: জুন, ২০২৩

অবিচুয়ারি: সিরাজুল আলম খান

আমাদের চোখের সামনে আমরা যা যা কিছু দেখি তা তো সত্যি না পুরাপুরি; বরং আমাদের দেখাদেখির ঘটনাটাই অনেক বেশি বায়াসড হয়া থাকে; কিন্তু তাই বইলা যা কিছু আমরা দেখি না, বা যা কিছু গোপনে ঘটে, সেইসব কিছু গোপন বইলাই সেইগুলা বেশি সত্যি না আর কি!

মানে, ফ্রন্টলাইনে, নিউজপেপারের হেডলাইনে যা ঘটছে এবং এর বাইরে ‘ব্যাক সাইডে’ যারা আছেন বা ছিলেন – এই গ্রুপ মিইলাই হিস্ট্রির ঘটনাগুলা ঘটান নাই; হিস্ট্রিরে একটা লিনিয়ার লাইন হিসাবে দেখতে গেলেই বরং এই ধরণের ইলুশন/বিভ্রমের তৈরি হয়। যেন কতগুলা মানুশ গোপনে শলা-পরামর্শ কইরা হিস্ট্রি তৈরি কইরা ফেলতেছেন! বা মানুশের করার কিছু নাই, ইতিহাস তার ‘নিজের গতিপথে’ চলতেছে! দুইটাই এইরকম লিনিয়ারিটির কথা।

আমরা যে কোন সময়েই একটা হিস্ট্রিকাল রিয়ালিটির ভিতরে আছি, আর এর ভিতরেই ইন্টারএক্ট করতেছি। হিস্ট্রিরে আমরা কিভাবে দেখতেছি, সেইটাই আবার হিস্ট্রিতে আমরা কি কন্ট্রিবিউট করতে পারতেছি, সেইটারে পসিবল কইরা তুলে। হিস্ট্রিকাল রিয়ালিটিরে বদলানোর জন্য হিস্ট্রির আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা জরুরি একটা জিনিস।

সিরাজুল আলম খান ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান আওমিলিগের স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন ছাত্রলিগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৩-৬৪ এবং ১৯৬৪-৬৫), দুই বছর। কিন্তু অই দুই বছরই ডাকসু ইলেকশনে ছাত্রলিগ জিততে পারে নাই, ছাত্র ইউনিয়নই মেবি জিতছিল। মানে, ছাত্রলিগ বড় স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন না হইলেও এক ধরণের ‘সাংগঠনিক বিস্তার’ হইতেছিল; যার ক্রেডিট সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সিরাজুল আলম খান পাইছেন, উনার কন্ট্রিবিউশনও মেবি ছিল কিছু। তখনকার দিনে তো ‘বিপ্লব’ অনেকবেশি বেচা হইতো; তো, ছাত্রলিগ কইরাও আপনি ‘বিপ্লবী’ হইতে পারেন – এইটাই ছিল সিরাজুল আলম খানের সবচে বড় পলিটাকাল কন্ট্রিবিউশন। পরেও এইরকমের ‘বিপ্লবী-জোশ’ যারা ধইরা রাখতে চাইছেন, তারা তাদের সামনে আইকন হিসাবে সিরাজুল আলম খানরে দেখতে পাইছেন।

কিন্তু ছাত্রলিগ শুরু থিকাই ছিল আওমিলিগের স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন। ছাত্র ইউনিয়ন সৌললি সিপিবি’র জিনিস ছিল না, কিছুটা ইন্ডিপিন্ডেডই ছিল শুরুতে, যেইটারে নানান ধরণের ‘ভাঙন’ বলা হয়, সেইটা আসলে সিপিবি’র কব্জাতে যাওয়ার একটা ঘটনাই।

[তারপরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সিরাজুল আলম খান কি করছেন – এই নিয়া তেমন কোন আলাপ কোথাও দেখা যায় না। যদিও শোনা যায়, উনি ইন্ডিয়ান এম্বেসি’র লগে যোগাযোগ রাখতেন। থিওরেটিকালি আমার আন্দাজ হইতেছে, ইন্ডিয়ান আর্মি নামানোর কাজকামের লগে উনার যোগাযোগ থাকতে পারে, এক রকমের। মুজিব-বাহিনি’র লগে উনি এসোসিয়েটেড ছিলেন, কিন্তু পারসোনাল কোন খোঁজ-খবর আলাপে মিসিংই অনেকটা।]

তো, আওমিলিগ কইরা আপনি তো ‘বিপ্লব’ করতে পারবেন না! যার ফলে, সিরাজুল আলম খানের পক্ষে আওমিলিগ করা পসিবল হয় নাই। উনার ভিজিবল পলিটিকাল ক্যারিয়ার ছাত্রলিগেই শুরু, ছাত্রলিগেই শেষ। জাসদ বানানোর পরেও এর স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের নাম দিছিলেন – ছাত্রলিগ (জাসদ)।

সিরাজুল আলম খান যেই বিপ্লব করতে চাইছেন, মজলুমের একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চাইছেন, সেইটা ততদিনে একটা জুলুমবাজ একটা আইডিওলজিই হয়া উঠছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড। নিজেরাও নিজেদের গদি বাঁচাইতেই হিমশিম খাইতেছিল। যার ফলে, ইন্টারন্যাশনাল হেল্প উনি পান নাই। ইন্ডিয়ার ব্যাক-আপ নিয়াই ‘জাসদ-বিপ্লব’ করতে চাইছেন। অই ব্যর্থ-ক্যু’র পরে উনার পলিটিকাল কোন ইনলভবমেন্ট বা এচিভমেন্টের কথা জানা যায় না। তবে গুরু হিসাবে উনারে নিয়া উনার শিষ্যদের উচ্ছ্বাস এখনো জারি আছে। কিছুটা প্রকাশ্যে, কিন্তু অনেক বেশি গোপনেই। Continue reading

নোটস: মে, ২০২৩ [লাস্ট পার্ট]

মে ২১, ২০২৩

বাকশালি জমিদারির ভিতরেও আরো কয়েকটা জমিদারি আছে। যেমন ধরেন, ডিওএইচএস’গুলা, গুলশান, বারিধারা, তবে সবচে বড় জমিদারি মনেহয় এখন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার। মানে, এইসব জায়গায় রাষ্ট্রের নিয়মের বাইরেও আলাদা আলাদা অনেক নিয়ম আছে।

তো, এইটা দেখেন, যারা ইন্টারনেট সার্ভিস দেন বসুন্ধরা আবাসিকে, তাদেরকে আলাদা ফি (মানে, চান্দা/চাঁদা) দেয়া লাগে। আগে তা-ও কম ছিল, কিন্তু এইটা দিন দিন বাড়াইতেছে। এখন এই টাকা তো আসলে এন্ড-ইউজাররেই দেয়া লাগবে। আর এইটা জাস্ট অনেক ‘নিয়ম-কানুন’-এর একটা।

এইগুলা অপারেট করে বেশিরভাগ কেইসে এক্স-মিলিটারির লোকজন, যাদের গর্ভমেন্ট-অফিসগুলার লগে কানেকশন ভালো। তো, কমপ্লেইন কই করবেন! উল্টা ধরা খাওয়া লাগবে!

নিউজ হিসাবেও এইসব সাফারিংসের কথা কোথাও পাইবেন না। [নিউজের হেডলাইনটা দেখেন, কমেন্টে দিতেছি, কিছু বুঝা যায় কিনা!] নিউজ ছাপাইলেও তো বিপদ!

তো, বাকশালি জমিদারি’র ভিতরেও আরো অনেক জমিদারি আছে এইরকম। প্রজা হিসাবে অনেক জমিদাররেই সালাম দিয়া বাঁইচা থাকতে হয় মানুশের এখন, বাংলাদেশে।

মে ২২, ২০২৩

বাংলাদেশে ছোটখাট ইনভেস্টমেন্টের কোন জায়গা নাই বইলাই জমি-জমা, ফ্ল্যাটের দাম বেশি

কয়দিন ধইরা এইরকমের একটা আলাপ দেখতেছি যে, ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট-টেট কিনা একটা লস প্রজেক্ট। তো, অবশ্যই এইটা একটা লস-প্রজেক্ট, কিন্তু আজকে না, আরো ২০-২৫ বছর আগে থিকাই। কিন্তু তারপরও মানুশ-জন ফ্ল্যাট, জমি-জমা কিনতেছে, আর এর দামও হু হু কইরা বাড়তেছে, এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি বাসা-ভাড়াও।

তবে এইটা আসলে খুবই ভুল-ধারণা যে, মানুশ-জন থাকার জন্য ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনতেছে। এর বড় একটা পারপাস হইতেছে এক ধরণের ইনভেস্টমেন্ট আসলে। ফ্ল্যাট কিইনা বা বাড়ি বানায়া ভাড়া দিবে। এখন ভাড়া দিয়া যে ইনভেস্টমেন্টের টাকা উইঠা আসবে না এইটা যিনি ইনভেস্টমেন্ট করতেছেন, উনিও জানেন। টাকা যেহেতু কামাই করছেন, কিছু মানি-সেন্স তো আছে তাদের, তা নাইলে তো টাকা কামাই করতে পারতেন না মেবি। 🙂 তারপরও ব্যাংকে টাকা না রাইখা, অন্য কোথাও কিছু না কইরা ফ্ল্যাট-বাড়ি তারা কিনেন কেন?

এক নাম্বার কথা যেইটা বললাম, ইনভেস্টমেন্টের কোন স্কোপ নাই। ১-২ কোটি টাকা দিয়া কি বিজনেস করবেন? চাঁদাবাজি তো আছেই, বড়লোক হিসাবে ‘এক্সপোজড’ হয়া যাওয়ার রিস্কও আছে, আর অইগুলা দেখা-শোনাও কে করবে, কারে বিশ্বাস করবেন? শেয়ার-মার্কেটে রাখলে তো দরবেশ বাবার পকেটেই ঢুকবে! এইটা কোন সেইফ ইনভেস্টমেন্ট তো না-ই, বরং সবচে রিস্কি জিনিস।

তো, সবচে বড় যেই সাজেশনটা আসছে যে, অই টাকা দিয়া ফ্ল্যাট-জমি না কিইনা ব্যাংকে রাখেন? কিন্তু ক্যাচ’টা এইখানেই। জমির দাম, ফ্ল্যাটের দাম তো বাড়তেছে! ব্যাংকের ইন্টারেস্টের চাইতেও বেশি বাড়তেছে। মাসে মাসে ভাড়া তো পাইতেছেনই, একটা এসেট হিসাবে ভ্যালুও বাড়তেছে। টাকার ভ্যালু যত কমবে এসেটের ভ্যালু তো তত বাড়তে থাকবে আসলে।

আর যদি ‘অবৈধ-টাকা’ হয় ব্যাংকে রাখাটা তো আরো রিস্কি, যে কোন সময় ফ্রিজ কইরা দিতে পারবে গর্ভমেন্ট, কিন্তু এসেট দখলে নেয়াটা তো এতো সহজ না।

এর বাইরেও যারা ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে না বরং থাকার জন্য ফ্ল্যাট কিনতেছেন, লং-টার্ম লোন নিয়া ভাড়ার টাকা দিয়াই তো এসেট বানাইতে পারতেছেন। বা ঢাকা শহরে একটা ‘ঠিকানা’ তো দরকার – এই সেন্স থিকা করতেছেন। মানে, ইকনোমিকসের হিসাব মনিটারি লাভ-লসের জিনিস তো না, সবসময়!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, মানুশ-জন ফ্ল্যাট-বাড়ি বানায়া যতটা না লস করতেছে, তার চাইতে বেশি সেইফ-ইনভেস্টমেন্ট করতে চাইতেছে আসলে।

আর এর আফটার-এফেক্ট হইতেছে রেন্ট বাড়তেছে, বাসা-বাড়ি খালি পইড়া থাকলেও ঢাকা শহরে বাসা-ভাড়া কমবে না, যতদিন এসেটের ভ্যালু বাড়তেছে। একইসাথে বিজনেস করার কস্টও বাড়তেছে, যার একটা এফেক্ট অ্যাড হইতেছে এন্ড-কনজিউমারের উপরে। এইভাবে একটা ইভিল-সার্কেল ফর্মড হইছে বাংলাদেশে।

তো, এই জিনিসটারে মানুশ-জন ‘ভুল বুঝতেছে’ বইলা পার করতে চাওয়াটা একটা বোকচোদামি-ই না খালি, পিওর ইন্টেলেকচুয়াল হিপোক্রেসিই আসলে।

Continue reading

নোটস: মে, ২০২৩ [পার্ট ২]

মে ১১, ২০২৩

আগে এইরকম মানুশ দেখছি, পড়াশোনা জানা শিক্ষিত কবি-আর্টিস্ট, কিন্তু নিউজ-পেপার পড়তেন না! মানে, এখনকার সময়ে নিউজপেপার না-পড়াটা নরমাল ঘটনা হইলেও, ১৯৬০-৭০, এমনকি ‘৮০ দশকেও কিছুটা ‘উন্নাসিকতা’ শো করার ঘটনা হইতে পারতো। আমি অনেক কিছু মিস করতেছি ঠিকাছে, কিন্তু আমি এইরকমই ‘উদাসিন’ যে, পত্রিকাও পড়ি না! এইরকম ছিল ঘটনা’টা। একটা পারসোনাল রিভোল্ট যেন!
এখন পত্রিকা পইড়া যে আমরা অনেককিছু জানতে পারি – তা না, অইগুলারে জানা’র ঘটনা হিসাবে পোর্টেট করা হইতো আসলে যে, দেশ-বিদেশের এখন কিছু আমি জানি! খোঁজ-খবর রাখি।

এখনকার অনলাইন প্লাটফর্মগুলাতে (ফেইসবুক, ইউটিউব, টুইটার, টিকটক, টেলিগ্রাম…) যা ঘটতেছে সেইটা খোঁজ-খবর রাখার মতো বোরিং জিনিস না, বরং ট্রেন্ডি হইতে পারার ঘটনা। নিউজপেপার না পইড়া আপনি অনেককিছু জানতেন-না না, বরং একটা লেফট-এলোন ফিলিং হইতো যে, অনেকে জিনিসটা জানে, কিন্তু আপনি জানেন না তেমন।

অই জিনিসটা এই নতুন জায়গাগুলাতে বাতিল হয়া যায় নাই, বরং ইনটেনসিফাই হইছে আরো। আগে দিনে একবার কানেক্ট করলেই হইতো, এখন ২৪/৭ কানেক্ট থাকার পরেও অনেককিছু মিস কইরা যাইতে পারেন আপনি।

আর আমরা নেশনাল থিকা গ্লোবাল মিডিয়াতে আপগ্রেটেড হই নাই, বরং ব্যাপারগুলা অনেক বেশি লিনিয়ার এবং একমুখী হইতেছে। যত বড় নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটির মধ্যে থাকতে পারতেছেন তত সেন্ট্রাল ফিলিংস পসিবল। এবং ছোটখাট নেটওয়ার্কগুলা এই ডিজায়ার ফুলফিল করতে পারে না আসলে।

মানে, এই নেটওয়ার্ক কেপাবিলিটিই মনোপলির মনস্টাররে তৈরি করতেছে আসলে, সবক্ষেত্রে।

যেমন ধরেন, মাঝে-মধ্যেই মেজাজ খারাপ হয় ফুড-পান্ডার বাজে সার্ভিসে; কিন্তু আপনি যদি হোম ফুড ডেলিভারিতকে একবার ইউজড-টু হয়া যান, ঢাকা শহরে এর বাইরে আর কোন অপশন তো পাইবেন না তেমন!

অনেকে যেমন ফেইসবুক ছাইড়া যাইতেছেন, কিছুদিন অফ থাকেন, বা রেস্ট্রিকশনও খাইতেছেন, কিন্তু যতদিন এইখানে মানুশের আনাগোনা আছে, নেটওয়ার্ক হিসাবে এক্টিভ থাকতেছেই এইটা, আপনি-আমি ইন্ডিভিজুয়াল হিসাবে এইখানে পার্টিসিপেট করি বা ইগনোর করি।

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, কানেক্টিভিটিটা হইতেছে কী (key) ফিচার, আমাদের সময়ের, এই হিউম্যান সিভিলাইজেশনেরই মেবি। কিন্তু এইটা একইসাথে একটা অবস্টেকলও, যখন লিনিয়ার বা একচক্ষু (বা দাজ্জাল?) হয়া উঠতে থাকে পুরা প্রসেসটা।…

মে ১২, ২০২৩

এইরকম একটা কথা-বার্তা চালু আছে যে, যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাইলে দেশে হাজার হাজার খুন-খারাবি হবে, অরাজকতা তৈরি হবে। কারণ যেই পরিমাণ টর্চার করা হইতেছে, এর শোধ কি এরা নিবে না!

কোন সেন্ট্রাল বা জেলা-শহরের নেতার কথাও বাদ দেন, হাজার হাজার ওয়ার্ডের নেতার নামেও ২০-৩০টা গায়েবি মামলা দেয়া আছে। ইলেকশনের আগে এলাকায় থাকলে বা আসার ট্রাই করলেই জেলে ঢুুকায়া দিবে। এখনো পুলিশের মেইন কাজ হইতেছে, ভাল্লাতেছে না, যাই, দুইটা বিএনপি’র লোক ধইরা নিয়া আসি! মানে, জুলুম করা তো ফান-ই কিছুটা! [আবু-গরিব জেলেখানায় আম্রিকান সৈন্যরা করতো না! এইরকমই অনেকটা।]

তো, বিএনপি সেন্ট্রালি কিছু না করুক, যাদের সাথে এই অন্যায় হইতেছে, তারা কি ছাইড়া দিবে! এই অবৈধ-সরকার যদি ফল করে সবচে আগে দেশ থিকা পালাবে কিছু সরকারি আমলা, পুলিশ আর আদালতের লোকজন। এই কারণে নয়া বাকশাল চাইলেও ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন করতে পারবে না। অই অবস্থাটাই নাই বাংলাদেশে। এই সরকারি লোকজন জান দিয়া হইলেও ফেয়ার ইলেকশন করতে দিবে না।
কিন্তু ঘটনা খালি একটুকই না।

আমি মনে করি, এইবারও যদি পাতানো-ইলেকশন হয়, এই ফোর্সটাই ক্ষমতাতে থাকতে থাকে, তাইলে জুলুমের অবস্থাটা আরো ফেরোশাস তো হবেই, কিন্তু অনেক বেশি ‘নরমাল’ এবং ‘নিরব’ একটা ঘটনা হয়া উঠবে। যেইটা বিএনপি’র রিভেঞ্জের সম্ভাবনার চাইতেও হাজার গুণ বাজে ঘটনা হবে একটা।

এইরকম একটা কথা দেখতেছি যে, চাইলেই সবাই খারাপ-বিহেভ করতে পারে! কিন্তু সবাই করে না। তো, আমার এক্সপেরিয়েন্স থিকা এইটা সত্যি কথা মনেহয় না।

শুধুমাত্র পাওয়ারফুল লোকেরাই বাজে-বিহেভ করতে পারে, এবং সেইটা করতে পারে তার চাইতে ক্ষমতায় দুর্বল এবং গরিব লোকের সাথে। আমি অনেক লোকরে দেখছি যারা অফিসের বস’রে তেল মারতে মারতে শেষ, কিন্তু যখনই তার আন্ডারে কাজ করা লোকজনের লগে কথা কইতেছে তখন চেহারা পুরা অন্যরকম। সবাই খারাপ-বিহেভ করতে পারে কি পারে না অই অপশন শুধুমাত্র পাওয়ারফুল লোকেরই আছে আমাদের সমাজে। যে চাইলে আমি রিকশাঅলারে, হোটেলের বয়রে, অফিসের পিয়নরে দুইটা ঝাড়ি মারতে পারি।

এবং আমি যে তারপরও এইটা করি না, ক্ষমতা থাকার পরেও তারে দুই-চাইরটা চড়-থাপ্পড় মারি না, এইটারে আমাদের কনটেক্সটে ‘উদারতা’, ‘মহত্ব’ হিসাবে তো ভাবা যাইতে পারে-ই। কিন্তু ভালো কোন জিনিস না আর কি!
Continue reading

নোটস: মে, ২০২৩ [পার্ট ১]

মে ০২, ২০২৩

বাক-স্বাধীনতা

বাংলাদেশের নিউজ-এজেন্সিগুলার যে কি পেথেটিক অবস্থা, সেইটা টের পাইবেন ডেইলি স্টারের এই নিউজটা দেইখা। (কমেন্টে লিংক দিতেছি। দেইখা নিতে পারেন আগে।)

নিউজে বলা আছে বসুন্ধরা আবাসিকের এক ফ্ল্যাটে ঢুইকা সিকিউরিটির লোকজন এক মেয়ের মাথার চুল কাইটা দিছে, পরে পুলিশ গিয়া তারে উদ্ধার করছে, এবং পুলিশের ‘ডরে’ সিকিউরিটি’র লোকজন ভাইগা গেছে।

অথচ এই ঘটনা’টার ব্যাপারে যারা দূর থিকাও কিছু শুনছেন, তারা জানেন যে, অই মেয়ে’র লগে বসুন্ধরার মালিকের ছেলের একটা ‘রিলেশন’ ছিল; অই ছেলের বউ সেইটা জানতে পাইরা মেয়েটারে ধইরা নিয়া আইসা পিটাইছে, মাথার চুল কাইটা দিছে। থানা-পুলিশ কোন মামলা নেয় নাই।

এখন মেয়েটারে জিগাইলেও শে হয়তো পুরা ব্যাপারটা এড়ায়া যাবে। মানে, বিচার তো শে কোনদিনও পাবে না বাংলাদেশে, বিচার চাইতে গেলেও যেই বিপদে পড়তে হবে – সেইটা এভয়েড করতে পারলে হয়তো এটলিস্ট জানে বাঁচা যাবে।

অনেক নিউজ-এজেন্সিই নিউজটা করে নাই; কারণ এর চাইতে আরো ইম্পর্টেন্ট নিউজ আছে তো – ব্রাউজের ফাঁক দিয়া পরিমণির ব্রা’র কালার দেখা গেল কিনা, অনন্ত জলিল নতুন কি ইংলিশ কইলেন, আরো অনেককিছুই তো আমাদের জানা দরকার!

কিন্তু ডেইলি স্টার (এবং আরো কয়েকটা এজেন্সি) এই নিউজ’টা ছাপানোর ‘সাহস’ করছে! তো, এই হইতেছে উনাদের সাহসের নমুনা!
খালি পলিটিকালি বাকশালের লোকজনই না, বরং সমাজের যারা পাওয়ারফুল তাদের নাম মুখে নেয়ার ক্ষমতাও তাদের নাই, কোন ইনটেশনও নাই। মানে, নিউজপেপারে, পোর্টালে আমরা যতটুক দেখি, সেইটা খালি ফার ফ্রম দ্য ট্রুথ না, মিছা-কথার চাইতেও আরো বড় মিছা-কথা। মিছা-কথাগুলারে ভেলিডিটি দেয়ার ঘটনা।

বসুন্ধরা নিয়াই যদি এই অবস্থা হয়, তাইলে বসুন্ধরার বাপ বাকশাল নিয়া কি চলতেছে, খালি ভাবেন একটু!

বাক-স্বাধীনতা, মাই ফুট!

মে ০৩, ২০২৩

নিউজ-মিডিয়ার কাজ সত্যি-কথা বলা না, বরং একটা পারসিভড রিয়ালিটিরে তৈরি করা। আর এই পারসিভড-রিয়ালিটি ক্ষমতার ফেভারেই কাজ করে সবসময়। মানে, এইখানে একটা এক্সপেক্টশন আছে, রিয়ালিটির ধারণা আছে, নিউজ-মিডিয়ার কাজ হইতেছে অই রিয়ালিটির জায়গাটারে কনফার্ম করা আসলে। কোনকিছু জানানো না তেমন।

নিউজের কাজ হইতেছে, একটা স্টোরিরে খুঁইজা বাইর করা, যেইটা চেনা-জানা রিয়ালিটি’টারে কনফার্ম করতে পারবে। ঘটনাগুলা ঘটতেছে না – তা না, কিন্তু অই ঘটনাগুলারেই আমরা নিউজ হিসাবে দেখতে পাইতেছি যারা অই রিয়ালিটির লগে এলাইনড থাকতেছে।

একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, যখন একটা বড় আগুন লাগে কোথাও, তখন সারাদেশে একই সাথে আগুন লাগতে থাকে, বড়-ছোট। কোথাও একটা সেনসেশনাল মার্ডার হওয়ার পরে অনেক মার্ডারের নিউজ ছাপা হইতে থাকে। এখন যেমন রেইপের নিউজ নাই, তার মানে এইটা না যে, রেইপ কমে গেছে; বরং অই নিউজ কিছুটা বোরিং হয়া গেছে, খাইতেছে না পাবলিক তেমন! ঘটনা ঘটতেছে বইলাই খালি আমরা জানতেছি না, আমরা জানতে চাই, এইরকম একটা ভ্যাকুয়াম আছে; অই জায়গাগুলা ফুলফিল করাটাই নিউজ-মিডিয়ার সবচে বড় কাজ আসলে।

Continue reading