কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মাটিরাঙ্গা

পাহাড়ের ঢালে, সেনা ছাউনিতে
ঘাস খাইতেছে কয়েকটা ছাগল

অরা অন্য কোন ড্রিম থিকা আসছে
অরা এই দুনিয়ার নয়

দীঘিনালার রাস্তায়

প্রাইমারি স্কুলে যাবে বইলা তিনটা বাচ্চা
দাঁড়ায়া আছে রাস্তার মোড়ে
স্কুল ড্রেস পইরা

নিরব রাস্তার ঘুম ভাঙ্গায়া কোন চান্দের গাড়ি আসতেছে না,
কিন্তু আসবে তো, তাই না?

আই❤️বাঘাইছড়ি

গাছেদের দুনিয়ায় আমরা বিছা

আঁকা বাঁকা হয়া
ইঞ্জিনের ঠেলায়
উঠে যাইতেছি

বাঘাইছড়ির টিলায়

স্বপ্নের গরু

জীবানানন্দের স্বপ্নের গরু ও বাছুরগুলা ঘাস খাইতেছে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে

রিয়াল ও সুরিয়াল অরা একইসাথে
মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের মতো
আছে এবং নাই
Continue reading

কবিতা: অগাস্ট, ২০২৩

প্লাতেরো

দুখী গাধাটা তার দুঃখ আর না নিতে পাইরা
ফান করতে করতে ফানি হইতে থাকলো

তবে ফান করতে করতেও তো
টায়ার্ড লাগে একটা সময়,
তাই সে দুখী হইতে থাকলো আবার

কিন্তু লোকজন তখন হাইসা দিল
কইলো, “সুন্দর একটা ফান হইছে এইটা, বস!”

দৃশ্য

কড়ই গাছের ডাল’টা ভাইঙ্গা যাওয়ার আগে ম্যাড়ম্যাড় করতেছে
গাছটা তো টের পাইতেছে,
যেন একটা দুক্খ তারে ভাইঙ্গা ফেলতেছে

কড়ইয়ের ডালটা ভেঙ্গে পড়তেছে, কড় কড় শব্দ হইতেছে যেন
অথবা কোন শব্দ নাই আসলে, দেখতে দেখতে খামাখাই মনে হইতেছে আমার
কড়ইয়ের ডালটা ভাইঙ্গা যাওয়ার আগে একটা আওয়াজ তো হবে!

ডাল’টা ভেঙ্গে পড়ছে লেকের পানিতে
এমন ভাবে ভেসে যাইতেছে বৃষ্টি আর বাতাসে
যেন সে সাঁতরাইতেছে

আমাদের ভালোবাসা

আমাদের ভালোবাসা নাই হইতে হইতে গিয়া ঠেকছে তলানিতে
অইখানে পড়ে আছে কিছু গাঁদ;
ঘন কালো পিছলা ময়লা, থক থক কাদার মতো
আমাদের পা আটকায়া যাইতেছে, আমরা ফিরা আসতে চাইতেছি
কিন্তু ঠ্যাং নাড়াইতে পারতেছি না,
একটা চোরা-কাদার ভিতরে ডুবে যাইতেছি
আর ভাবতেছি, আমাদের ভালোবাসা এইসব প্যাক আর কাদা…

Continue reading

কবিতা: জুলাই, ২০২৩

বর্ষাকাল

বিস্টি ভালো, বাতাসও ভালো
ভালো শুয়ে শুয়ে জানালা দিয়া দেখা বিস্টি ও বাতাস
তোমার কথা-ভাবা আর কোনদিনই দেখা-না-হওয়া

সন্ধ্যায় লেখা সকালের কবিতা

কতকিছু যে লেখার বাকি রইয়া গেলো!
তারপরে মনে হয়, এতোসব লেখারও তো কিছু নাই!

সময় যাইতেছে ধীরে ধীরে সকালের রিকশাটার মতো,
তারপরে উল্টায়া যাইতেছে আবার, সন্ধ্যায়

সূর্য যেইরকম উঠলো আর ডুইবা গেল

ওয়েটিং রুম

“কেউ নেই”র হাতে আমরা নিজদেরকে সইপা দিলাম,
টিভি’তে দেখাইতেছিল ক্রিকেট খেলা
কোন কিছুর দিকে তো চায়া থাকতে হবে আমাদেরকে
তাই আমরা দেখতেছিলাম

বাথরুমের দরজার সামনে দুইটা সেন্ডেল
দুইটা চোখ হয়া দেখতেছিল আমাদেরকে
আমরা অদেরকে না-দেখার ভান করতেছিলাম
আর তখন টিভিতে নিউজ-প্রেজেন্টার মেয়েটা
চোখ বড় বড় কইরা মারামারি’র খবর পড়তেছিল

বলতেছিল, এই, তুমি ভয় পাও না কেন! কি সমস্যা তোমার!
আমি কি মজার আরেকটা খবর পড়বো তাইলে এখন?

তাঁর ঝিঁকিমিকি দাঁতের হাসি
কু ঝিকঝিক কু ঝিকঝিক কুঝিকঝিক

প্লাটফর্ম ছাইড়া চলে যাইতেছে ট্রেন

গোরস্থান

এইখানে আছে শিয়ালগুলি
আর এইখানে আছে আমার কবর

অরা মাটি খামচায়া বাইর করতেছে আমার লাশ

চান্দের আলোতে চক চক করতেছে অদের চোখ, ঘৃণায়

আর তাড়াহুড়া করতেছে
স্টেশন থিকা রাত বারোটার লাস্ট লোকাল ট্রেইন
ছাইড়া যাওয়ার আগেই যেন শেষ করতে হবে অদের কাজ

কবরের ভিতরে আমার লাশ
আমার কবর খুঁড়তেছে কয়েকটা শিয়াল, সা রা রা ত

জীবনানন্দ X জসীমউদ্দীন

“পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।”
“কাল সে আসিবে, মুখখানি তার নতুন চরের মতো”
Continue reading

কবিতা: জুন, ২০২৩

বিউটিফুল

সুন্দর হয়া বইসা থাকো,
সুন্দর হয়া থাকা ছাড়া আমাদের তো আর কোন কাজ নাই

তারপরও সুন্দর হয়া থাকতে আমাদের টায়ার্ড লাগে
আমরা তো একসাইটিং হইতে চাই, আন-প্রেডিক্টেবলও
আর এই কারণেই না আমাদেরকে সুন্দর লাগে!

সুন্দর হাসে, সুন্দর হাঁটে
সুন্দর চুপচাপ বইসাও থাকে
বলে, আজকে আমাদের মন খারাপ;

তখন তাঁরে কি আরেকটু বেশি সুন্দর লাগে?
যেইরকম গরমের দিন শেষে আকাশে উঠে চান্দ?

একটা সুন্দর ফটো’র মতো ঘুরতে থাকে,
একটা সুন্দর সুরের মতো মনে পড়তে থাকে
আর তারপরে মন-খারাপ হয় আমাদেরও
কারণ আমার জানি, এই সুন্দর হারায়া যাবে,
হারায়া যাবো আমরাও তার সাথে

হেই সুন্দর,
তুমি সুন্দর হয়া আরেকটু বইসা থাকো!

তিন পাগলের মেলা

একটা পার্ট অফ মি
আরেকটা পার্ট অফ মি’রে বলতেছে,
আমরা দুইজনে মিইলাই পুরাটা, তাই না?

এই কথা শুইনা
আরেকটা পার্ট অফ মি হাসতেছে,
আরো কত কত আয়নাতে যে তারে দেখা যাইতেছে!

অনেকগুলা আমি তখন অনেকগুলা আমি’রে বলতেছে
আমারে তুমি চিনলা না!
যেন এতোই সহজ একটা জিনিস; সহজ ও স্বাভাবিক

নিউ হাওড়া বেকারি

হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে
হাওড়া বেকারি-তে আসছি

এসি’র বাতাসে বইসা খাইতেছি ফালুদা
গোলাপি ও শাদা

যদিও সন্ধ্যা,
তারপরেও গরম, বাইরের বাতাস
যেন দেশি বাংলা-ভাশায়
কেউ খিস্তি করতেছে

ভুস ভুস কইরা গাল ফুলাইয়া
চেততেছে সূর্য, কাছাকাছি কোথাও
আর তার মা পেরেশান হয়া তারে ডাকতেছে,
“ঘুমাইবা না সুরুয মিয়া,
ও সুরুয মিয়া, ঘুমাইবা না…”
Continue reading

নোটস: জুলাই, ২০২৩

জুলাই ০১, ২০২৩

Break Point

১. ঈদের ছুটিতে Break Point’র ১০টা এপিসোড দেইখা শেষ করলাম। স্পোর্টস ডকুমেন্টারি হিসাবে ভালো হইছে জিনিসটা। টেনিসের কয়েকটা গ্যান্ড স্লাম ট্রফি নিয়া বানানো।

২. নরমালি যেইরকম হয়, স্পোর্টস ডকু-তে তো কোন না নো হিরো’রে হাইলাইট করা হয়। এইখানে ঘটনা এইরকম না; মানে, হিরো আছে, হিরোজম-ও আছে; কিন্তু ফেইলওরও আছে। অনেকটা যেন অডিয়েন্স’স পিক; একজনরে ফলো করতে থাকলেন টুর্নামেন্টের শুরুতে, কিন্তু দেখা গেলো সে/শে জিততে পারলো না, শেষে। জয়-পরাজয় না, ইভেন্টস হইতেছে গিয়া সেন্টার ঘটনা।

৩. মাল্টিপল প্লেয়ার আছে এইখানে; বেশিরভাগই টপ টেনের লোকজন; কিন্তু সবাই গ্রেট না। গ্রেট এবং এভারেজের ডিফরেন্সটাও আসলে টের পাওয়া যাইতেছে। যেমন, আমার ভাল্লাগছে Iga Świątek’রে। ফানি, উইটি এবং কম্পোজড বইলা না, এইটা হইতেছে নরমালিটি একটা তাঁর কাছে, এইরকম গ্রেট হওয়াটা। অন্যরা, অনেকেই নরমাল হিসাবে, ইন্টারনাল অবস্থা হিসাবে নিতে পারতেছে না! যেন এইটা বাইরের একটা জিনিস, যা এচিভ করা লাগবে! আর ইগা’র ঘটনাটা হইতেছে ইন্টারনাল; আমার ভিতরে তো আছে জায়গা’টা, অইখানে থাকতে পারতে হবে। আর অন্যরা, অনেকেই অই জায়গাটাতে যাওয়ার ট্রাই করতেছে, এইরকম।

৪. টনি নাদালের জায়গাটাও ইন্টারেস্টিং লাগছে। সে ফ্যামিলি’রে ছাড়তে রাজি না! কয়েকটা দামি কথা বলছে সে; যে, আপনি যদি কাউরে রেসপেক্ট না করেন, তার কাছ থিকা তো কিছু শিখতে পারবেন না! আর যদি কারোর দমের/প্রতিভার উপরে যদি আপনার বিশ্বাস না থাকে, তাইলে তো তারে মন থিকা কিছু শিখাইতে পারবেন না। এইরকম খুচরা কাহিনি সব এপিসোডেই কম-বেশি আছে।

৫. কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান নিক কিওরিঅস’রে যতোই জাস্টিফাই করা হোক, ভাল্লাগে নাই। বরং ফিল করা গেছে যে, এন্টারেটেইনিং ইজ ইরিটেটিং আসলে!

৬. ইন্টারেস্টিং লাগছে বেলারুশের Aryna Sabalenka-রেও। পলিটিকাল ক্রাইসিস কেমনে মানুশের পারসোনাল জায়গাটারে এফেক্ট করে, নার্ভাস-ব্রেক ডাউনের একটা কারণ হয়া উঠতে পারে, সেই জিনিসটারে (অবভিয়াসলি পশ্চিমাকরণের জায়গা থিকা) হাইলাইট করলেও জিনিসটারে ডিগ-ডাউন করা হয় নাই আসলে। যেইরকম Ons Jabeur’র কেইসটা ফার্স্ট আফ্রিকান, আরব ওমেন হিসাবে গ্লোরিফাই করা হইতেছে, সেলিব্রেট করা হইতেছে, কিন্তু একইসাথে টেনিস জিনিসটা যে একটা ইউরোপ-আম্রিকান গেইম, এই জায়গাটা ওভারলুক করতে পারাটা এতোটাই ইম্পসিবল যে, এই কারণেই যেন মিসিং!

৭. তবে গ্রেটনেসের জায়গাটাতে একটা সাজেশন কিছুটা চোখে লাগছে, যেইটা ক্রিস এভার্ট-ও বলতেছিলেন Ajla Tomljanović’র ব্যাপারে অনেকটা যে, টুউ মাচ পোলাইটনেস উইল কিল ইউর থিংকস! Taylor Fritz’র ব্যাপারেও ব্যাপারটা ফিল করা যায় অনেকটা যখন সে তার বাচ্চার সাথে আলাপের ব্যাপারে বলে যে, সে তো দুনিয়ার সেরা টেনিস প্লেয়ার না! এইটা তার পোলাইটনেসই এক রকমের। (সে যে কেন হলিউডের হিরো হইলো না 🙂 ) তো, ব্যাপারটা এইরকম না যে, উনারা পোলাইট বইলা গ্রেট না, বরং উনারা সার্টেন এরিয়ারে পুশ করার বাটনটা খুঁইজা পাইতেছে না আসলে।

৮. তো, টেনিসের ভালো-রকম একটা ডিসপ্লে হইছে ডকু’টা। নেরেটিভের ধরণটা লিনিয়ার না হয়া যে নানান দিক থিকা আগাইছে অইটা ভালো হইছে, সাসপেন্স ক্রিয়েট করতে পারছে। (ডকু-তে সাসপেন্স লাগে না বা না হইলেও চলে – এইটা খুবই ভুল-চিন্তা।)

৯. এমনিতে আমি তো ডকু-লাভার। একটা সময়ে যেইরকম খালি গল্প-উপন্যাস ছিল পড়ার বই, নন-ফিকশন ছিল খুবই পাইনশা; সিনেমাতেও আমার ধারণা ডকুমেন্টারি অই অবস্থাটাতে আছে এখনো; কিন্তু আরো অনেক ভাস্ট এরিয়া এক্সপ্লোর করার বাকি আছে আসলে, এইখানে। Continue reading